"I have now understood that though it seems to men that they live by care for themselves, in truth it is love alone by which they live."
- Leo Tolostoy [ What Men Live By (1881)]
গতরাতে কুয়াশা নেমে এসেছিলো। অপার্থিব, ভীতিপ্রদ সে কুয়াশা - যার সাথে গঞ্জের মানুষদের পরিচয় হতো কেবল মাওলানা ইদ্রিস আলীর বিশেষ অভিযানের রাতগুলোতে। সেইসব রাত, যে সব রাতে মাওলানা ইদ্রিস আলী বেরোতেন গঞ্জের পথে, কুয়াশা নামিয়ে আনতেন। আনতেন ব্যাখ্যাতীত আরো কিছু। গতরাতের কুয়াশা তাই মাওলানা ইদ্রিস আলীর একমাত্র পুত্র ইউসুফ আলীর মনে একধরণের স্মৃতিকাতরতা জাগিয়ে তোলে। সে স্মৃতিতে আসে কুয়াশা, আসেন মাওলানা ইদ্রিস আলী, আসে তাঁর মৃত্যুদৃশ্য। কিন্তু দেখা যায়, এই স্মৃতিকাতরতাই ইউসুফ আলীকে ভীত করে তোলে। এই ভীতির উৎস কুয়াশা, এই ভীতির উৎস ব্যাখ্যাতীত আরো কিছু।
গঞ্জের ইমাম ইদ্রিস আলীর শবযাত্রায় কি গঞ্জের অগণিত মানুষের সাথে কুয়াশাও এসেছিলো ?? হাজিরা দিয়েছিলো নাকি সে, মৃত্যু আর মাওলানা ইদ্রিস আলীর মধ্যেকার অন্যান্য বৈঠকগুলোর মতোই ??......ইউসুফ আলীর তা মনে পড়ে না - বরং ইউসুফ আলীর কাছে শবযাত্রা পাটীগণিতের নামতার নামান্তর হয়ে ধরা দেয়। খাটিয়ার চারকোণে চারজন। তাঁরা দশ পা এগোয় এবং এরপর তাঁরা স্থান পরিবর্তন করে। সামনের ডানপাশে থাকা ইউসুফ জায়গা করে নেয় নীচের ডানপাশে মহিউদ্দীনের জায়গায়। মহিউদ্দীন সরে যায় তার বামপাশে আজগর মৃধার ছেড়ে দেয়া জায়গা নিতে। আজগর মৃধা সামনে চলে যায় জমির মুন্সীর জায়গায়, যে স্থান জমির মুন্সী ছেড়ে গিয়েছিলো ইউসুফ আলীর রেখে দেয়া শূণ্যস্থান পূরণ করতে। তাঁরা আবার দশ পা এগোয় এবং তাঁরা আবার স্থান পরিবর্তন করে। জমির মুন্সী- ইউসুফ আলী- মহিউদ্দীন- আজগর মৃধা। পুনরায় আবর্তন হয়, চক্র পূর্ণ হয়। সে চক্রে ইদ্রিস আলী থাকেন, থাকে ইউসুফ আলী এবং থাকে কুয়াশা।
গঞ্জের লোকজন কথা বলে- নানা বিষয়ে কথা বলে। সে আলোচনায় তাদের নিজেদের কথা থাকে, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের কথা থাকে, জমির মুন্সী- মহিউদ্দীন থাকে, থাকে আজগর মৃধা প্রসঙ্গ। ঘুরেফিরে সেটি হয় আজগর মৃধার পুত্র আলতাফ মৃধা প্রসঙ্গ। চৈত্র মাসের সেই সকালে উজ্জ্বল রোদ থাকা সত্ত্বেও আলতাফ মৃধার আয়ূ থাকেনি- ফলে বাদ আসরের জানাজার নামাযের পরে মসজিদ সংলগ্ন মাওলানা ইদ্রিস আলীর বাড়ির দরজায় আজগর মৃধাকে দেখা যায়। "অঁনর ফা ধরি কইদ্দি বদ্দা, অঁনে আর ফোঁয়ারে আনি দেওন...অঁনে ইতেরে আনি দেওন..."- আজগর মৃধার এই আর্তনাদ অনেকে শুনতে পায় বোধ করি, শুনেছিলেন ইদ্রিস আলীও। "ওঁয়া, বাড়িত য গুই।..আঁই হায়াতুর মালিক না ওঁয়া ?? তুঁই বাড়িত য গুই। ... দরুদ ফড়ো। "
... ইদ্রিস আলী এর বেশিকিছু বলেন না, আজগর মৃধাও ক্রন্দনরত অবস্থায় বাড়ি ফিরে যায়। তবুও এশার আযানের জামাত শেষে বাড়ি ফিরে মাওলানা বলেন - " আজিয়ে খোয়া ফড়িবু। " খোয়া হলো কুয়াশা এবং অনিবার্য কোন কারণে সে রাত হয়ে উঠে কুয়াশামুখর রাত। অবর্ণনীয়, অবিশ্বাস্য সে কুয়াশার মাঝে ইদ্রিস আলী হারিয়ে যান- একসময় ফিরেও আসেন। হারিয়ে যাওয়া আলতাফ মৃধাও ফিরে আসে, পরের দিন বাদ আসর। ......
অজানা সে কুয়াশার মাঝ থেকে মাওলানা ইদ্রিস আলীর ডাকে উঠে আসে কেনো একেকটা মৃত মানুষ ?? মাওলানা কি জ্বীন চালান দিয়ে থাকেন ?? নাকি কুফরি-কালাম পাঠে অথবা অন্য কোন উপায়ে তাঁর এই মন্ত্রের সাধনা ?? গঞ্জের লোকের কাছে সেটা অবোধ্যই থাকে। ঘুরেফিরে তাই তারা নিজেদের মতোই আলোচনা চালায়। সে আলোচনায় তারা নিজেদের কথা বলে, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের কথা বলে, জমির মুন্সী- আজগর মৃধার কথা বলে, এমনকী মহিউদ্দীনের কথাও বলে। চৈত্র মাসের স্থলে শ্রাবণ মাস আসে এবং আলতাফ মৃধার স্থলে আসে খাদিজা খাতুন- মহিউদ্দীনের বোন। অথচ এইবার "আজিয়ে খোয়া ফড়িবু " বলে মাওলানা ইদ্রিস আলী বের হবার পর তুমুল বৃষ্টি আসে। কুয়াশা ধুয়ে মুছে যায়। মাওলানা ফিরে আসার পরেও খাদিজা খাতুন ফিরে আসেনা। ...গঞ্জের লোক সিদ্ধান্তে পৌঁছে- ইদ্রিস আলী মানুষই বটে। উনি ঈসা মসীহ নন।
গঞ্জের জীবনযাত্রা ঢিমেতালে চলতে থাকে। মাওলানা ইদ্রিস আলী জামাতে নামায পড়ান, মানুষকে কোরান শিক্ষা দেন, সৎপথে আসতে বলেন সবাইকে। তবুও মাঝে মাঝে এশার নামাযের পর মাওলানা মসজিদেই থেকে যান রাত্রিযাপন করবার জন্যে এবং গঞ্জের লোকের কাছে তিনি কী করেন তা অজানাই থাকে কুয়াশাজনিত কারণে। গঞ্জের লোক ইদ্রিস আলীকে কী চোখে দেখে তা অবশ্য কোন প্রকার কুয়াশা ছাড়াই আড়ালে থাকে। কারণ আলতাফ মৃধার পরেও অনেকে ফেরত এসেছিলো; সারোয়ার মিঁয়া- শৈলেন মিত্র- মরিয়ম বিবি। যেমন আসেনি মিজানুর রাহমান- আদিল হুসেন, যেমন আসেনি মাওলানার ছোট ছেলে ইয়াকুব আলী। শোনা যায় পুকুরের পানি হতে ইয়াকুবের মৃতদেহ উদ্ধারের পর হতে তার দাফন পর্যন্ত ইদ্রিস আলী শোকের কোন লক্ষণ প্রকাশ করেননি। বরং সন্ধ্যার একান্ত প্রতীক্ষায় থাকা মাওলানা সেদিন নামাযে বসে " মাবুদ, আজিয়ে যেন খোয়া ফড়ে..." বলে প্রার্থনা পর্যন্ত করেছিলেন। তবুও কুয়াশা আসেনি, ফেরত আসা হয়নি ইয়াকুব আলীরও। কাজেই মাওলানা ইদ্রিস আলীর অলৌকিক ক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যায়। সকলের কাছে।
...এবং প্রমাণ হয়ে যায় মাওলানা ইদ্রিস আলী অসামান্য, অমরণশীল কেউ নন। কারণ কৃষ্ণপক্ষের এক গভীর রাতে বুকের বামপাশ চেপে ধরে আর্তনাদ করা ইদ্রিস আলীর সে আর্তনাদে ইমাম বাড়ি বিলীন হয় এক কর্তব্যবিমূঢ়তায়। ইদ্রিস আলী সেদিনও কলেমা পড়েন, তবে পরেরদিন ভোরে ফযরের নামায আদায় করা তাঁর হয় না। গঞ্জের মানুষের ঢল নামে। ঢল নামে ভীতি, কৌতুহল, ভালোবাসা, বিস্ময়ের। মাওলানা ইদ্রিস আলীর সাথে মৃত্যুর বৈঠক বসে আরেকবার, শেষবারের মতো। তারপর পাটীগণিতের নামতা গুণন। জমির মুন্সী- ইউসুফ আলী- মহিউদ্দীন- আজগর মৃধা। তারা দশ পা এগিয়ে স্থান পরিবর্তন করে। মাওলানা কবরে শায়িত হন।
গঞ্জের জীবনযাত্রা থেমে থাকে না। তারা নিজেরাই নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে, সেখানে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়, আলতাফ মৃধা- সারোয়ার মিঁয়া- শৈলেন মিত্র- মরিয়ম বিবিরা হেঁটে চলে বেড়ায়। এখন ইউসুফ আলী জামাতে নামায পড়ায়, মানুষকে কোরান শিক্ষা দেয়, সকলকে সৎপথে আসতে বলে। মাঝে মাঝে ইউসুফ আলীর স্মৃতিতে কুয়াশা আসে, সেইসব দিন আসে, সেই শবযাত্রা আসে। পিতার প্রশ্নবিদ্ধ অলৌকিকত্ব সত্ত্বেও সে অভিভূত হয়। সে বলে বেড়ায় যে তার পরলোকগত পিতা বড় ভালো মানুষ ছিলেন। সকলেই সে কথায় সাড়া দেয়। তবুও কুয়াশা নামে মাঝেমধ্যেই, যেমন নামতো ইদ্রিস আলীর ডাকে। গতরাতেও কুয়াশা নেমেছিলো। ভীতিপ্রদ সে কুয়াশায় ইমাম বাড়ি আবারো বিলীন হয় কর্তব্যবিমূঢ়তায়।
... তবুও ঘন কুয়াশার মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ছয় বছর পর মাওলানা ইদ্রিস আলীর ফিরে আসা কেউ মেনে নিতে পারে না।
মন্তব্য
সুহান, অসাধারণ !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
মাত্র ছুটি শুরু হয়েছে।... সকালে চা খেয়ে সচলে লগিন করে প্রথম মন্তব্যটাই যদি এরকম আশাপ্রদ হয়, তাহলে কীরকম লাগে বুঝতেই পারেন...
ধন্যবাদ।
_________________________________________
সেরিওজা
যাক্ তোমার গল্প পাওয়া গেল! আমাদের বকাবকির চোটে তুমি নাকি গল্প লেখা ছেড়ে দিয়েছ এমন অভিযোগ শুনতে হয়েছে খোদ ধর্ম্মপুত্রের কাছ থেকে।
**********************************************
আমি আনন্দ ও বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করছি যে, তোমার নিজস্ব ভাষা ও গল্প কাঠামো তৈরি হচ্ছে। শহীদুল জহিরের দীর্ঘ ছায়া থেকে যে বের হয়ে আসতে পারছো সেটা অভিনন্দনযোগ্য। শেষের বাক্যে বা শেষের অনুচ্ছেদে মার খাবার ব্যাপারটাও ভালোভাবে কাটিয়ে উঠেছ। এই ছোট ছোট আখ্যানগুলো থেকে বড় উপন্যাস নির্মাণের স্বপ্নটা মাথায় রেখো।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তবে তো ধর্মপুত্রকে আমি ভালু পাই ...
**********************
এখনো চেষ্টাই চলছে। পরিপূর্ণ কিছু হয়নি। আপনাদের উপদেশ না হলে এটুকুও হতো না...
_________________________________________
সেরিওজা
বাবা সুহান
অনেকদিন পর সচলে ঢুকেই তোর এমন লেখা! খুব খুব ভালো।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
সিমন ভাই, দীর্ঘদিন পরে এটা আমারো 'কিছু লিখে' সচলে ঢুকা। অচিরেই আড্ডার আশা রাখি...
থ্যাঙ্কো...
_________________________________________
সেরিওজা
অসাধারণ! তুমি ফুল টাইম গল্প লেখা শুরু কর। তোমারও লাভ, আমাদেরও লাভ।
খিকজ। ... ফুলটাইম ব্লগারের অনুবাদ কী হবে ?? - পেশাদার ব্লগার ??
ধন্যবাদ।
_________________________________________
সেরিওজা
অঁনে ইতেরে আনি দেওন..."
'ইতারে' হবে বোধ হয়।
"আজিয়ে খোয়া ফড়িবু "
'আজিয়া' হবে যদ্দূর জানি।
খোয়া হলো কুয়াশা এবং অনিবার্য কোন কারণে সে রাত হয়ে উঠে কুয়াশামুখর রাত।
খোয়া হলো কুয়াশা - না দিলে ও চলত।
এক জায়গায় ইউসুফ ইয়সুফ হয়ে গেছে। আয়ু বানান ু কার। নাকি?
ম্যাজিক রিয়ালিজমের ভাষা অল্পে কম ফোটে। গল্প পড়ে তাই মনে হল। শহীদুল জহিরের ছায়া থেকে বেরোতে এখনো কিছুদিন লাগবে।
এই পর্যন্ত সমালোচনা।
এখন ভালু কথা।
পাঁচালাম। সচলের একজন প্রধান গল্পকার পিচ্চি সুহান।
প্রথম কথা হচ্ছে, মন্তব্যে বুইড়াঙ্গুল। আমার মত যারা নতুন নতুন লেখার চেষ্টা করছে, তাদের জন্যে এই রকম বিশ্লেষণ খুব প্রয়োজন বলে মনে করি আমি।
...চট্টগ্রামের অঞ্চলভেদে একটু পরিবর্তন হতে পারে কি ?? আমি ও ভাষা বলতে খুব পক্ক নই, কিন্তু বুঝি পুরোদমে। 'ইতে' আর 'আজিয়ে' শুনেই অভ্যস্ত।
খোয়া যে কুয়াশা-এটা বের করতে আমার নিজেরই কষ্ট হয়েছে। সে জন্যেই সরাসরি ব্যবহার কর্লাম।
...ভালু কথার জন্যে দাঁতকেলানি...
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান, আজকাল সমালোচনা করতে বড়ই বাধো বাধো ঠেকে - 'নিজে পারিনা আবার অন্যকে বলতে যাই!' এই সঙ্কোচ বেশ জোরেসোরে কাজ করে। আপনি কি আবার গল্পটা পড়বেন একবার, কিছুক্ষণ পর, যখন লেখাটা ততটা আচ্ছন্ন করে নেই আর? আপনার সব গল্পে মন্তব্য হয়তো করা হয় না, কিন্তু পড়ি অবশ্যই। শহীদুল জহির, অর নো শহীদুল জহির - আপনার গল্পে সাধারণত একটা 'গল্প' থাকে, স্টাইলটা যাইই হোক না কেন। এটাতে কেন যেন সেটার একটু অভাব বোধ করছি।
মানবেন নিশ্চয়ই, ব্লগের মজাই (অথবা বে-মজা) এটা - ওপরে দেখুন এতো জনের গল্পটা এতো ভালো লেগেছে, আর আমি একজন এসে ফট্ করে অন্যরকম একটা কথা বলে দিলাম! তবে, স্পষ্ট করে এটাও এই সুযোগে জানিয়ে যাচ্ছি - যে ক'জন গল্পকারের লেখা আমার বিশেষ পছন্দ, এবং যাদের বাংলা/বাংলাদেশের সাহিত্যে বলার মতো অবদান থাকবে বলে আমি মনে করি, আপনি তাদের একজন, নিঃসন্দেহে
জানেন না বোধ করি, আপনার মন্তব্যটা খুব প্রার্থিত থাকে।কারণ সোজা- লিখতে জানা যত সহজ, লিখাতে জানা তত সহজ নয় ()...
ইয়ে, গল্পটাই অস্পষ্ট বল্লেন ?? উম্ম... মাথা চুল্কানি কেবল...
মন্তব্যের পরের অংশ বাহুল্যদোষে দুষ্ট...
_________________________________________
সেরিওজা
পিচ্চি সুহান কি করে এরকম গল্প লেখে????
দারুণ... দারুণ!
--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ...
_________________________________________
সেরিওজা
পাংখা
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
_________________________________________
সেরিওজা
চমতকার।
একটা গাধার মত প্রশ্ন করি, শহীদুল জহিরটা কে? আপনি কেন তার ছায়ায় বসবাস করেন?
উম্ম, উত্তরটা আসলে আমার মতো গাধার পক্ষে দেয়া সম্ভব না...
এই গল্পটা এবং তার সংশ্লিষ্ট মন্তব্যগুলো দেক্তে পারেন বস...
_________________________________________
সেরিওজা
দুর্দান্ত,
আপনি ফান করে জিজ্ঞেস করলেন নাকি জানি না। উনি কে? - এই প্রশ্নের উত্তরে নাক গলিয়ে লিঙ্ক দিলাম।
১
২
৩
৪
৫
৬
৭
৮
৯
মজা করি নাই। আমি আসলেই এনার কথা জানতাম না।
আপনাকে ও সচলায়তনকে অনেক ধন্যবাদ।
গল্পটা ঠিক বুঝিনি। তবে আপনার লেখা পাকা। গল্পটা না বুঝলেও 'পাকা' বুঝলাম কেমনে সেটার ব্যাখ্যা কেউ চাইলে হয়তো দিতে পারবোনা। হয়তো পারবো। কিন্তু দেবনা। আমার যা ভালো লাগলো তাই বললাম।
শব্দশিল্পী। আপনার সেই নামটাই যুতসই ছিল।
পিপি'দার সাথে পুরোপুরি একমত।
শেষ লাইনটাসহ। (লেখাটা পড়তে পড়তে আমি এই কথাটাই চিন্তা করছিলাম।)
...........................
কেউ আমাকে সরল পেয়ে বানিয়ে গেছে জটিল মানুষ
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
পিপিদা, গল্পটা বস মনে হয় পরিষ্কার কর্তে পারি নাই, স্নিগ্ধাপাও বললেন দেখি...
বাকি মন্তব্যের জন্যে কেবল দাঁতকেলানি...
শিমুল আপার জন্যেও সম্পূর্ণ এককথা
_________________________________________
সেরিওজা
আপনার গল্পটা পড়ে They Came Back (Les Revenants) মুভিটার কথা মনে
হল। খুব আগ্রহ নিয়ে সিনেমাটা দেখতে বসেছিলাম কিন্তু হতাশ হয়েছিলাম।
তবে এই গল্পটা দারুণ লাগল।
এত সিনেমা দেখি; ঘটনা নাম সব প্যাঁচ খেয়ে যায়। মনে করিয়ে দেয়ার জন্য আপ্নেরে থ্যাংকু।
ছবিটা দেখা হয়নি... জীবনে বহুত কিছু অপঠিত,অদেখা, অজানা রয়ে গেছে...
ধন্যবাদ।
_________________________________________
সেরিওজা
গল্পটা দারুণ লাগলো।
রজার্দ্যাট বস।
_________________________________________
সেরিওজা
অসম্ভব ভালো লাগলো।
শহীদুল জহিরের সব বই কিনে নিয়ে এসেছি ঢাকা থেকে, কিন্ত ওনার ছায়া নিয়ে এত হই চই শুনতে শুনতে মাঝে মাঝে মনে হয় এই লেখকের বই নাই পড়ি। কী হবে এই একজন লেখকের লেখা না পড়লে? এই ছায়ার ভয় ঢুকিয়ে একজন তরুণ উদীয়মান লেখকের স্বতস্ফূর্ততা নষ্ট করার কী প্রয়োজন সেটা আমি কখনোই বুঝিনি।
সুহান, যে মানের লেখা তুমি লিখলে বা আগে লিখেছো, আমার মনে হয় না কারো ছায়া তোমাকে কোনদিন আটকে রাখতে পারবে। যা কিছু সেরকম মনে হবে সেটা খুবই সাময়িক। আমি তোমাকে অনুরোধ করবো যে কোন রকম দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে লিখে যেতে। তোমার এই বয়সটা নিজেকে কোনকিছু দিয়েই আটকে রাখার বয়স না - কয়েক সেকেণ্ডের জন্যও না। মন খুলে প্রান খুলে যা লিখতে তোমার আনন্দ হয় সেটাই লিখে যাও। ছায়া আর ভুত নিজ দায়িত্বেই সটকে পড়বে।
ধর্মপুত্রের মুখে ফুলচন্দন পড়ুক...
পুরোটা মন্তব্য পড়ে মনে হচ্ছে, আপনাদের কাছে স্নেহের অনেক বেশি ঋণ করে ফেলেছি, আর কিছু না পেলেও চলে।
_________________________________________
সেরিওজা
একবার পড়লাম। ভীষণ ভালো লাগলো। এখন বেরুচ্ছি। বাসায় ফিরে আরেকবার পড়ব।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
থ্যাঙ্কুপা।
_________________________________________
সেরিওজা
মৌলিক লেখা এমনিতেই কষ্টের । সুহান এর সবগুলা লেখাই আমার কাছে বেশি জোস লাগে। প্রতিটা লেখাতেই দেখি একটার চেয়ে আরেকটায় ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রয়াস এবং যত্ন নিয়ে লেখা । কি সব শহীদুল- জহিরুল - সুহান তুমি এসব কথায় কান দিও না
তুমি তোমার ঝাঁ-ঝাঁ লেখা চালিয়ে যাও ঃ-)
প্রাচ্চ্যের ভিনদেশি
এইডা কেরা র্যাঁ ?? হাবিবুল- ইমামুল ভাই নি ??
থাঙ্কুশ বস।
_________________________________________
সেরিওজা
----------------------------------------------------------------------
জগতে সকলই মিথ্যা, সব মায়াময়,
স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয় ।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
_________________________________________
সেরিওজা
গতকাল মেলায় একটা কথা বলছিলাম মনে আছে? মনে থাকলে ভাল না থাকলে আর ভাল কিন্তু আশা করি কথাটা একদিন সত্য হবে
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
নিবির্ভাই, আপনি লুক্ষারাপ...কোলনপি।
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান, আমার খুব খুব ভালো লাগলো তোমার এই গল্পটা । বলতে কি, আক্ষরিক অর্থেই সার্থক আর পূর্ণাঙ্গ একটা গল্প এটা । কিন্তু এইসব উজিয়ে, আমার সর্বাগ্রে যা মনে হয়েছে, সেটা পাণ্ডব দা'র এই কথাটা __আমি আনন্দ ও বিস্ময়ের সাথে লক্ষ করছি যে, তোমার নিজস্ব ভাষা ও গল্প কাঠামো তৈরি হচ্ছে। শহীদুল জহিরের দীর্ঘ ছায়া থেকে যে বের হয়ে আসতে পারছো সেটা অভিনন্দনযোগ্য।
আর কে কি বলছেন, জানি না,কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে জানি, এই শক্তিমান লেখক কি নিষ্ঠুর হন্তারক ! কতো তরুণ লেখকের নিজ পথে তিনি প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন !
অভিনন্দন তোমাকে ।
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
সুপান্থ'দার বিগত মন্তব্যটা মাথায় গেঁথে নিয়েছিলাম। এটাও নিলাম...
ধন্যবাদ আপনাকে।
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান,
আমি ছোটগল্প পছন্দ করি যে ঠিক তা না, তাও এটায় আটতারা দেখে পড়তে আসলাম।
দুইবার পড়েও আমি ঠিক বুঝতে পারি নাই। খালি টলস্টয়ের উদ্ধৃতিটা ভাল লাগসে।
এটা আংশিক তোমার ব্যর্থতা, আর অনেকাংশেই আমার ব্যর্থতা। সচলায়তনের এই ধারাটার রসাস্বাদন মনে হয় না আমারে দিয়ে হবে।
ইনার মিনিং আমি বুঝি না। সা'টল ক্লু আমি নেই না। একেবারে সারফেসে লেখক গড়গড় কইরা বুঝায় না দিলে এত কষ্ট আমি করি না। হয়তো সেই কারণেই।
ব্যাপার্না সিরাত ভাই, সবাই কি আর সবেতে মজা পায় ?? যেমন আপ্নাএর গেমিং নিয়া লেখা গুলান পইড়াতো আমার মাথা আওলায় যায়...
ধন্যবাদ, কষ্ট করে পড়েছেন বলে।
_________________________________________
সেরিওজা
। মাইন্ড খাও নাই দেইখা আশ্বস্ত হইলাম ভাই। তোমার এ্যাটিচুড দারুণ!
গল্পটা আমার কাছে খুব বেশি পরিষ্কার হয় নাই ।
আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার, গল্পের নিজস্ব ভাষা...অনেক পরিপক্ক লেখা।
তোমার কিছু করার প্রবল আগ্রহ আছে, পরিষ্কার বোঝা যায়, তোমার লেখায় ই তা ফুটে উঠছে । কাউকে বলে দিতে হয় না ।
তোমার আশা পূরণ হোক ।
চেষ্টা যে অব্যাহত থাকবে তা অন্যদের বলে দিতে হবে না ।
বোহেমিয়ান
ধন্যবাদ বোহেমিয়ান ভাই।
_________________________________________
সেরিওজা
ভালো লাগল গল্পটি। আপনার লেখা আগে পাঠ করি নি, ইচ্ছে রাখি।
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
ইচ্ছে রেখেছেন বলে আশ্বস্ত হলাম আশরাফ ভাই। ধন্যবাদ।
_________________________________________
সেরিওজা
ভালো লাগলো গল্পটা। একটা ছোট খটকা,
প্রথম প্যারায়ঃ
পঞ্চম প্যারায়ঃ
প্রথম ক্ষেত্রে কি 'একমাত্র জীবিত পুত্র' অর্থে বললেন? নাকি কোথাও কিছু মিস করলাম? আমি পাঠক হিসেবে নিম্নশ্রেণীর।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
জ্বী বস, জীবিত পুত্রই বুঝিয়েছিলাম। ...
_________________________________________
সেরিওজা
ধর্মপুত্রের মত-এ তথাস্তু দিলাম আমিও। তোমার নিশ্চয়ই মনে আছে তোমার ওই গল্পের পিতার গল্পেও আমি কি বলেছিলাম।
পড়তে বেশ ভালো লাগে ওই ভাঁজগুলোর জন্য।
তবে সুহান, আমার মতো শুধু শুধু কঠিন শব্দক্রীড়ার দোষ তোমার যদিও নেই, তবু এই গল্পের ভিতরের পাঠোদ্ধার একটু মুশকিলই বোধ হ'লো আমার কাছেও। ভাঁজ ক'রে সুন্দর হ'তে হবে যেমন, তেমন কিন্তু আবার ভাঁজ-খোলার তরজমায় অর্থটাও পরিষ্কার হওয়া দরকার, না? অন্যেরা হয়তো বুঝেছেন, আমারই কুলায়নি কি না জানি না।
আশা করি আমার কথা পরিষ্কার। মানে, ফর্মের সৌন্দর্যের জন্য কন্টেন্ট কি বেশি ভিতরে গুম হয়ে গ্যালো?!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
মাথা পেতে নিলাম বস...মনে হয় আমিই বোঝাতে পারি নাই, গুছিয়ে লিখতে পারি নাই। চেষ্টা বজায় রাখবো...
_________________________________________
সেরিওজা
ডোন্ট টেক ইট দ্যাট হার্ড ইদার!
আসোলে একটা পর্যায়ের পরে ব্যাপারটা হয়তো শ্রেফ মাত্রাগত। শুধু একটু কমবেশির ব্যাপার। আবার বলি, ধরনটা নিঃসন্দেহে অনেক সুন্দর এবং শক্তিশালী।
আর, কাল বলতে ভুলে গিয়েছিলাম শেষে,- নানাভাইয়ের শরীরোর্ধ্ব স্মৃতির প্রতি অনেক শ্রদ্ধা থাকলো আমারও।
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
এই গল্পটা নিয়ে আমার মত স্নিগ্ধার সাথে মেলে। তবে তোমার লেখার হাত আমি বড়োই ভালু পাই, আর সব গল্প সমান হবে এমন আশা করি না বলেই এ যাত্রা ছেড়ে দিলাম।
আরেকটা অন্য কথা: তোমার মন্তব্য পড়ে মনে হয় তোমার রসবোধের অভাব নেই। এমন লেখা লিখতে থাকো, কিন্তু সাথে একটা রম্যরচনা কি ফচকে লেখা ট্রাই করে দেখবে নাকি?
ইয়ে, মুলোদা- ফচকে বা রম্যলেখার জন্যে ব্যাডভেঞ্চার সিরিজ তো আছেই... আর সাধ্যে কুলালে মাঝে মাঝে অণুগপ্পো ছেড়ে দেবো খন...
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান। গল্পের অলংকরন এবং প্রকাশভংগীর সৌন্দর্য অসাধারণ। কিন্তু এগুলোর চাপেই লেখাটার মুল অর্থ লুকিয়ে পড়ল বলে মনে হচ্ছে। পাঠক হিসেবে যাচ্ছেতাই, তাই হয়তো মাথায় ঢোকে নাই।
মুলোদার কমেন্টে সমর্থন।
বেশি চিনি দিয়ে বানানো এক কাপ চা খেয়ে কষিয়ে একটা রসালো গল্প লেখে ফেল দেখি এইবেলা।
---- মনজুর এলাহী ----
গল্পটি কিছুটা অস্পষ্ট লাগল। হয়তো বোঝার সাদ্ধ নেই।
কিন্তু লেখাটির structure বেশ॥
মনজুর এবং বৃষ্টি মেয়ে, আপনাদের মন্তব্য দেরীতে দেখলাম বলে এতোদিন জবাব দেয়া হয়নি।
ধন্যবাদ পাঠ করবার জন্যে।
_________________________________________
সেরিওজা
আবার পড়তে গিয়ে ভাল জিনিস মনে পড়েছে।
এবারের মেলা থেকে শহীদুল জহিরের রচনাসমগ্র কিনতেই হবে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
নতুন মন্তব্য করুন