০১।
"মুসলমানমঙ্গল" বইটি পাঠের পর জাকির তালুকদার সম্পর্কে খোঁজ নিতেই হলো। লোকমুখে শোনা ভদ্রলোক একজন গল্পকার। ছোটগল্প লেখেন। গুগলে খোঁজ নিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে তাঁর লেখা গল্পের কিছু পাঠপ্রতিক্রিয়ার সন্ধান পাওয়া গেলো। দারুণ লাগলো একটি অপঠিত ছোটগল্পের প্রেক্ষাপট, যেটির নাম 'বিশ্বাসের আগুণ'। কেউ একজন পবিত্র কোরান মাজিদ পুড়িয়ে ফেলছেন ঘৃণায় বা ক্রোধে নয়- স্থির বিশ্বাসে, যে বিশ্বাসে তিনি জানেন কোরান মাজিদ পোড়ে না, সেটি অবিনশ্বর।...
"মুসলমানমঙ্গল" উপন্যাস এক বন্ধুর কাছ থেকে ধার করে আনা। আকারে বড় হওয়ায় ইতস্ততঃ করছিলাম এতে মন দেয়া সহজ হবে কী না। হালকা চালেই তাই শুরু করেছিলাম। বইয়ের প্রকাশক রোদেলা প্রকাশনী ফ্ল্যাপে দাবি করছেন- এই ধরণের উপন্যাস বাংলাভাষায় এটাই প্রথম। একই মত পোষণ করি আমিও।
সেই সাথে এতেও সায় দিচ্ছি যে- জাকির তালুকদার, কারো কারো মতে, হয়ে উঠতে যাচ্ছেন, বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের সবচেয়ে অগ্রগামী চিন্তার কথাসাহিত্যিক।
০২।
সুবিশাল এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইউসুফ আহমেদ। পার্শ্বচরিত্র গুলোর মাঝে কাউকেই তেমন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়নি। লেখক খুব সম্ভব সচেতন ভাবেই এইসব চরিত্রের সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস আর তথ্য প্রদানের মাধ্যম রুপে। একালের তথ্য আর বিগতকালের ইতিহাস।
লেখক স্বয়ং উপন্যাসকে ভাগ করেছন দুটি পর্যায়ে। আত্নসমালোচনা পর্ব এবং মোকাবেলা পর্ব। এইরকম নামকরণের কারণ খুব সম্ভবতঃ এই পর্যায় দুটির অন্তর্নিহিত সমস্ত আলোচনার জন্যে। তবে সাধারণ পাঠকের চোখে উপন্যাস পাঠ করতে গিয়ে আমার কাছে মনে হয়েছে উপন্যাসটির ঘটনাক্রমকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগে থাকে চলনবিলের গ্রাম্য পরিবেশে ইউসুফের ঘুরতে যাওয়া। দ্বিতীয় ভাগে থাকে নিজের মফস্বল শহরে মদনের চায়ের দোকানে সাদী ওস্তাদ-মোটকা বাবু- বাপ্পী- ধীমানদের আড্ডায় ইউসুফের উপস্থিতি। সর্বশেষ এবং তৃতীয় ধাপে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক শ্বেতাঙ্গিনী লিসবেথের আগমন এবং তার সাথে ইউসুফের আলোচনা।
উপন্যাসের কাহিনী বেশ শ্লথ, গতি ঝুলে পড়েছে প্রায়ই। তবে এর সঙ্গত কারণ আছে বলেই মনে করি- কেনো মনে করি, তা পরে বলছি। বিশালাকার কাহিনীর শেষ ঘনিয়ে আসে কোন ইঙ্গিত না দিয়েই, বড় তাড়াতাড়ি যেন, এই সমাপ্তি সাথে করে নিয়ে আসে এক অশুভ আশঙ্কা।
০৩।
... সংক্ষেপে এই হলো উপন্যাসের মূল ঘটনাপ্রবাহ। এমন আহামরি কিছু মনে হয় না পাঠ করে, যদি না উপন্যাসে থাকতো আরো কিছু। এই অংশটুকু হচ্ছে ইসলামের ইতিহাস, ইতিহাসের অজানা অপঠিত চাঞ্চল্যকর সব দিক। গল্পের সমান্তরালে একই সাথে এগিয়েছে এই ইতিহাসের পর্যালোচনা, যা অনেক ক্ষেত্রেই মূল গল্পকে ছাপিয়ে পাঠককে টেনে নিয়েছে কেবল ইতিহাস অংশে। উপন্যাসটি যদি হয় ক্লান্ত ময়াল অজগর তবে এই অংশটুকু হলো তার নির্মম পেষণ ক্ষমতা, শিহরণ জাগায় অক্লান্ত ভাবে।
চলনবিলের গ্রাম্য পরিবেশে চারিদিকের কাঠমোল্লা এবং তাদের ফতোয়ার আগ্রাসন দেখে পার্শ্বচরিত্রগুলোর সাথে মুক্তমনা ইউসুফের আলাপে উঠে আসে ইসলামের একবারে প্রাথমিক পর্যায়ের ঘটনাবলী। আমাদের চোখে এতদিনের জমে থাকা যে ধূলোর আস্তরণে প্রাচীন আরবের সকলকেই দেবদূত বলে মনে হতো, সে আস্তরণ ধুয়েমুছে যায়। আমরা অবহিত হই সেকালেও মানুষ ছিলেন মর্ত্যের সমস্ত সীমাবদ্ধতা নিয়ে। মানবীয় ত্রুটি আর পরিস্থিতির কারণে অনেকেই বিচ্যুত হন মুহাম্মদ (সঃ) এর দেখানো পথ থেকে, যার ফলে ইসলামে আসে অবিশ্বাস-ভুল-একাধিক মতের উৎপত্তি; যার দায়ভার এখনো বয়ে চলতে হচ্ছে মুসলিমদের। অনেক ক্ষেত্রেই অবিশ্বাস্য ঠেকে এই অংশ। যেটির নিরসনে সুবিশাল এক সহায়ক গ্রন্থের তালিকা সংযোজিত হয়েছে। আর লেখক বলেছেন- মানুষ খোঁজ করে না, পড়ে না, তাই জানতে পারে না। এই সকল বই তো বাজারেই পাওয়া যায়। সেগুলো নিষিদ্ধও নয়। মানুষ যেভাবে চলছে সেভাবেই দিন কাটিয়ে দিতে পারলে খুশি হয়। নতুন কিছু জিনিস মানেই নতুন চিন্তা। আর নতুন চিন্তা করার ধাক্কা সব মানুষ সহ্য করতে পারে না।
উপন্যাসের দ্বিতীয় ভাগে, মদনের চায়ের দোকানের আড্ডায় উঠে আসে মধ্যযুগ, ইউরোপীয় রেঁনেসা, ইংরেজ শাসনের অধীনে বাঙালি মুসলমানদের জাগরণ, দ্বি-জাতি তত্ত্ব, সাম্প্রদায়িকতা, ভারত বিভাজন।
আর উপন্যাসের শেষ অংশে, লিসবেথের সাথে আলোচনায় এসেছে সাধারণভাবে পশ্চিমাদের চোখে মুসলমানদের অবস্থান, নাইন এলেভেনের অব্যবহিত পর পাশ্চাত্য সভ্যতার আগ্রাসন আর এগুলোর যৌক্তিকতা- বিরোধিতা প্রসঙ্গে মুসলিমদের কী অবস্থান হওয়া উচিৎ এই সমস্ত বিষয়।
০৪।
ইতিহাস আর গল্পের এমন চমৎকার সহাবস্থান দেখেছি খুব অল্প। কল্পনার সাথে তথ্যের সংমিশ্রণ ঘটানোটা নিশ্চিতভাবেই খুব কঠিন কাজ। প্রচুর ঢোল পিটিয়েও শ্রদ্ধেয় হুমায়ূন আহমেদ এই কাজটি করতে পারেননি ''জোছনা ও জননীর গল্প"-তে। পাশ্চাত্যের ড্যান ব্রাউনের "দি 'দা ভিঞ্চি' কোড" আর পশ্চিমবঙ্গের সুনীল গাঙ্গুলীর "পূর্ব-পশ্চিম" অথবা " সেই সময়" উপন্যাসে দেখেছি এই মিশ্রণ খুব ভালোভাবে ফোটাতে।
বাংলাদেশে এই জাতীয় উপন্যাসের উদাহরণ আর দুর্লভ হয়ে থাকলো না। "মুসলমানমঙ্গল" এই ধারায় একটা চমৎকার সংযোজন হয়ে রবে বলে ধারণা করি।
০৫।
বাঙালি মুসলমান পরিচয়ে অবিরাম রক্তাক্ত হচ্ছি আমরা। উন্নত বিশ্বের উন্নাসিকতা, কাঠমোল্লাদের স্বপ্রয়োজনের নিমিত্তে ইসলামী বিধানের যথেচ্ছা প্রয়োগ, ধর্মের নামে প্রতারিত হতে উন্মুখ হয়ে থাকা সমাজ নিয়ে এই অসময়ে "মুসলমানমঙ্গল" একটু হলেও ভাবনার উদ্রেক করে। সাহস দেয় আরেকটু গভীরে তলিয়ে দেখার।
...আশা দেয়, সাগর মন্থনে অমৃতই উঠে আসবে শেষতক- গরল নয়।
মন্তব্য
আপনার লেখা পড়তে শুরু করছিলাম অনেক আগ্রহ নিয়া, মুসলমানমঙ্গল আমি খুব আগ্রহ নিয়া পড়তে শুরু করছিলাম। পড়তে পড়তে আমার বিরক্তি এত উঁচাতে উঠছে যে আপনের লেখাটা যতকিঞ্চিত মনে হইছে। এইটা কখনোই উপন্যাস হইতে পারে নাই বইলা আমি মনে করি। আমাদের দেশের মুসলমানরে বারে বারে খৎনা করানোর কিছু লোক আছে। জাকির তালুকদার সেইখানে নাম লেখাইলেন। আর তার রাজনৈতিক মুর্খতা দেইখা নিদারুন বিরক্ত হইছি। আমার হাতে এখন বইটা নাই, থাকলে তথ্য প্রমাণ হাজির করতে পারতাম। নিজের মত কইরা তিনি যে সমস্ত ইতিহাস আর যুক্তি হাজির করছেন তাতে ওনারে গোঁড়া মনে হইছে। নিজের মত কইরা নিজের কথা বলার জন্যে উপন্যাস একটা ভালো জায়গা- তালুকদার সাহেব তা চোখে আঙ্গুল দিয়া দেখাইলেন।
তিনি যে ইসলাম বানাইবার চেষ্টা চালাইছেন এই গ্রন্থে তা কার জন্যে এবং কি জন্যে। আমার ব্যাখ্যায় তারে রীতিমত সন্দেহ করা যায়। এছাড়াও ইসলামের পতনমুখীনতার কারণ উপস্থাপনে তিনি কোমর সমান গর্তে পতিত হয়ে এমন একটা ভাব নিলেন যে তিনি আসলে নিজের পায়ে দাঁড়ায়া আছেন। আর সেই অবস্থায় দাঁড়ায়া থাইকা হাতের নাগালে যারে যারে তার কাছে খারাপ মনে হইছে তারে খারাপ আর যারে ভালো মনে হইছে তারে ভালো বইলা চালায়া দিছেন। ওই কোটেশন সর্বস্ব বই বগলদাবা করে বাঙ্গালী মুসলমানের ঘোরা উচিত। ইহজাগতিক বিসিএস পরীক্ষার কাজে আসবে ভালোভাবেই।
মঙ্গলে থাকুন।
পাঠপ্রতিক্রিয়ায় পাঠকের মতামতে ভিন্নতা থাকবেই।
... মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
_________________________________________
সেরিওজা
ইসলামী ইতিহাসের কোন দিকগুলো উঠে এসেছে আরেকটু জানতে পারলে ভালো হতো। তাহলে কেনার চেষ্টা করতাম।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।
ফ্যাক্ট এবং ফিকশনের মিলনের প্রসঙ্গে- হুমায়ুন আহমেদের "মধ্যাহ্ন" পড়েছেন নাকি? বইটিতে ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্যগুলো সঠিক কিনা জানি না তবে বইটা বেশ সুখপাঠ্য ছিল।
...'মধ্যাহ্ন ' বইটা আমার কাছে আরো নিম্নস্তরের বলে মনে হয়েছে।
_________________________________________
সেরিওজা
মধ্যাহ্ন বইটা আসলেই নিমস্তরের। কিন্তু "জোছনা ও জননীর গল্প" আমার বেশ ভাল লেগেছে। আমি বলব হু. আ. এর সেরা কাজ এই বই। রিভিউটা বেশ লাগল।
তার্কিক
এইটা একদম একটা ফাঁকা কথা। "জোছনা ..." কখনোই হুয়া এর সেরা কাজগুলার মধ্যে পড়ে না...
তার হিমু/ মিসির আলি/ অন্যান্য সাধারণ বইগুলার প্রথম চারপাঁচটাই তাকে আলাদা করবে, "জোছনা ..." না...
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান, আগ্রহ জাগায় এমন একটা রিভিউ। পড়েই মনে হল বইটা অবশ্যই পড়তে হবে।
সালাহ উদ্দিন শুভ্রের প্রতিক্রিয়াটাও ইন্টারেস্টিং বলে মনে হল। আপনার লেখা এবং চিন্তাভাবনার সাথে কিছুটা পরিচয় আছে হয়ত। পড়ার পর হয়ত সালাহ উদ্দিন শুভ্রের দৃষ্টিকোণটা বুঝা যাবে। পড়ব...।
ছফার 'অলাতচক্র' উপন্যাসে ইতিহাস আর গল্প গলা জড়াজড়ি করে আছে।
---------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
'অলাতচক্র' পড়তে হয় তবে...
ভালো কথা। 'মুসলমানমঙ্গল' পড়তে গিয়ে এক পর্যায়ে আপনার ছফাগিরির দুটো কিস্তিতে কাল চোখ বুলিয়েছিলাম কিছু আলোচনার জন্যে। জাকির তালুকদারও বঙ্কিমচন্দ্রকে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
_________________________________________
সেরিওজা
সুহান, অভিযুক্তর কিছু নাই। বঙ্কিমচন্দ্র সরাসরিই লেখা দিয়া উস্কাইছে সাম্প্রদায়িকতারে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বস, কপালকুন্ডলা আর দুর্গেশনন্দিনী ছাড়া বঙ্কিমে আমার দখল নাই। কাজেই এ বিষয়ে আমার ধারণা একেবারে আবছা-পরোক্ষ- ধার করা।
_________________________________________
সেরিওজা
চিপা দিয়া আনন্দমঠটা পড়ে ফেলেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
বস, এই তালিকায় আরো কিছু নাম যোগ করে দিতে পারতেন। বিশেষ করে ইলিয়াসের উপন্যাস দুইটা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
জাকির তালুকদার এর দুই তিনটা গল্প পড়েছিলাম সাহিত্য সাময়িকি বা ঈদসংখ্যায় । অনেক নতুন লেখকের গল্পই পড়েছি আমি সেই সব জায়গায়, নাম সেভাবে মনে থাকে নি এই নামটা মনে ছিল তার মানে ভালই লেখেন ।
পড়ে দেখার ইচ্ছে রইল ।
তোমার এই রিভিউতে যা লক্ষ্যণীয় তা হচ্ছে অথরিটেইটিভ টোন আছে।
রিভিউ এর স্টাইল ভালো লাগল ।
_________________________________________
ৎ
_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!
বইটা কেমন জানি না, তবে রিভিউ বেশ ভালো লাগলো। বইটা পড়ার আগ্রহ জাগলো। দেখি সুযোগ হলে পড়বো। তখন নাহয় বিস্তারিত মন্তব্য করা যাবে একটা।
এই বইটা নিয়ে আগেও একটা পাঠ প্রতিক্রিয়া পড়ছিলাম কোন এক পত্রিকায়। তখনই সিদ্ধান্ত নিছিলাম বইখান পড়ার। কিন্তু তারপর ভুলে গেছি। ইশ্, আপনার লেখাটা আজকে দুপুরের আগে পড়লে আজকেই বইখান বগলদাবা করে নিয়ে আসতাম আজীজ থেকে।
কী আর করা, অপেক্ষায় থাকি। তবে পড়ে ফেলবো শীঘ্রই।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
রিভিউ তো চমৎকার লাগল! বইটা পড়তে হয় তাহলে!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!
বইটা পড়ার আগ্রহ হচ্ছে...রিভিউ চমৎকার হয়েছে সুহান:)
আনন্দমঠ পড়েন, বঙ্কিমচন্দ্রের উপর সাম্প্রদায়ীকতার দায় এমনি এমনি দেওয়া হয় নাই। স্পষ্ট বুঝতে পারবেন। আপনার রিভিউ বেশ চমতকার লেগেছে, কিন্তু যে লিঙ্কটা লেখায় ছিলো সেটা ফলো করে দুই পেজ পড়ার পর তেমন কিছু মনে হয়নি। লিসবেথের সাথে আলোচনার এই অংশটুকু একেবারে সাদামাটা কথোপকথোনের অংশ মনে হয়েছে।
সম্পূর্নটা না পড়ে কিছু বলা যাচ্ছে না যদিও। দেখি পারলে পুরোটা পড়ার চেষ্টা করবো।
অসাধারণ লাগলো লাইনটি ।
বইটি পড়িনি, তবে সাবলীল কিন্তু সুন্দর এই রিভিউটি পড়ে মনে হচ্ছে আর না পড়ে থাকাটা উচিত হবে না ।
''চৈত্রী''
সুহান, বইটা কেমন তা না পড়ে মন্তব্য করা অনুচিত হবে। কিন্তু যে আবেগ নি্য়ে আপনি রিভিউ লিখেছেন তাতে মনে হয় বইটা অসাধারণ। সেই আশা নিয়ে excerpt-এ পড়তে গিয়ে বেজায় বিরক্ত হলাম। অতি সরলিকৃত বোকা বোকা প্রশ্ন-উত্তর এবং আ্যানালিসিস পড়ে সন্দেহ হল লেখক পাঠকদের বুদ্ধিবৃত্তি সম্মন্ধে আদপেও অবহিত নন। আমার মনে হয় এই excerptটি যদি বই-এর বাকি অংশের প্রতিফলন না হয় তবে লিঙ্কটি সরিয়ে দেওয়াই ভাল আর যদি হয় তবে বইয়ের বিষয়বস্তু, লেখকের মানসিকতা এবং বাংলাসাহিত্যে ও বাঙালি পাঠকমননে তাঁর অবস্থান সম্মন্ধে সুগভির অশংকায় ফেললেন আপনি।
---------------------------------------
"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"
ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে
ধন্যবাদ।
... বইটি পড়ে আমি মুগ্ধ অবশ্যই, এবং সেটার কারণ যদি আমি পরিষ্কার করতে না পারি, তবে সেটি আমার ভাষাগত দুর্বলতা। আমার মুগ্ধতার কারণ বইয়ের ইতিহাস সংশ্লিষ্ট অংশগুলো এবং একটি বিশেষ শ্রেনীর উপন্যাস নিয়ে লেখকের অগ্রসর হওয়া, যেটির উদাহরণ প্রচলিত সাহিত্যে বিশেষ নেই। লেখকের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ অতিসরলীকরণে দুষ্ট- এ উপলদ্ধিটা মনে হয় আমার রিভিউতে যোগ করা উচিৎ ছিলো। তবে তার ইতিহাসভিত্তিক আলোচনাগুলো সত্যিই উপভোগ করেছি।
লিঙ্কের অনুসরণে প্রাপ্ত পৃষ্টাদ্বয় বইয়ের একেবারেই শেষপ্রান্তের দিকে এবং এই উপন্যাসের সমাপ্তি নিয়ে আমি নিজেও সন্তুষ্ট নই।
_________________________________________
সেরিওজা
ইতিহাস সংশ্লিষ্ট বিষয় গুলো যদি শুধু মুসলমানদের কেন্দ্র করেই হয় তাহলে এই বই পড়ার কোন খায়েশ নেই আমার। আর মুসলমান ইতিহাস ঘেটে কি 'অমৃত' উদ্ধার হতে পারে তা আমার জানা নেই।
পু্নঃ হু।আ এর 'মধ্যাহ্ন' উপন্যাসটি আমার কাছে তার সেরা কাজগুলোর মধ্যে একটি মনে হয়েছে। সে তুলনায় 'জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প' অনেক ঢাকঢোল পেটানো সত্ত্বেও তেমন কিছু মনে হয়নি, সে ব্যাপারে আপনার সাথে সহমত।
দুঃখিত, ইতিহাস জানার আগ্রহ যাদের নেই, তাঁদের জন্যে এই পোস্ট দেয়া আমার খায়েশ ছিলো না। আর ইতিহাস অগৌরবের হলে তা গরলসম হবে বৈকী...
পুনঃ আপনার মত জেনে রাখলাম।
_________________________________________
সেরিওজা
নতুন মন্তব্য করুন