"লা ফুরিয়া রোজা"দের ফুটবলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, তাঁরা খেলে। ...
কথাটা অদ্ভূত শোনায়। বিশ্বকাপের অংশ নেয়া আরো ৩২টি দেশও তো ফুটবলই খেলে। কথাটা সত্যি। কিন্তু স্পেন খেলে কেবল খেলবার জন্যেই, শুধুই খেলা। ফলাফল প্রত্যাশী এই আধুনিক ফুটবলের যুগে বাকি সমস্ত দলগুলো যখন যেনতেন ভাবে জয় করায়ত্ত করতেই 'সুন্দর ফুটবল', 'জোগো বনিতো' জাতীয় শব্দগুলো ফুটবলীয় মিথে পরিণত করে ফেলেছে, তখনো বিশ্বকাপ ফুটবলে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই সুইজারল্যান্ডের কাছে হেরে বসে অঘটনের জন্ম দিয়ে প্রবল চাপের মুখে পড়ে যাওয়া স্পেন দলের সবাই বলছিলো সেই কথাই- "যত যাই হোক, সুন্দর ফুটবলের সাথে কোন আপোষ নয়।"
কোচ ভিসেন্তে দেল বস্কের এই কথায় সাংবাদিকেরা মুচকি হাসেন, বড় বড় অক্ষরে পত্রিকায় হেডিং দেন। আমরা গণমানুষেরা সেই খবর পড়ে অবাক হই- অবজ্ঞার মুচকি হাসি দিই- ভাবি, এই 'সোনালী প্রজন্ম'ও কাগজে কলমে বাঘ হয়েই থাকবে। শিরোপা লড়াই থেকে স্পেনের বাদ পড়তে আর বেশি দেরী নেই... এই চলে গেলো বলে।
এরপরে একেকটা ম্যাচ যায়। স্পেন দল কেবল খেলেই যায়, শুধু খেলার আনন্দে। খেলবার আনন্দেই মুগ্ধ করতে থাকে বিশ্বের অগণিত ফুটবল সৌন্দর্য্য-পিপাসু দর্শকেদের। লাতিন আমেরিকান সৃষ্টিশীলতা আর ইউরোপীয়ান ঘরানার সুশৃঙ্খল ফুটবলের মিশেলের এই ফুটবল কেবল দর্শকদের তৃপ্তি দিয়েই সন্তুষ্ট করে না, স্কোরবোর্ডেও এগিয়ে থাকে প্রতিপক্ষের চাইতে। "লোহিত অঙ্গার" ডাকনামের স্পেন দল জবাব দিতে থাকে যুগে যুগে তাঁদের বিপক্ষে জমা হওয়া সমস্ত অপবাদের, দূর করতে দিতে থাকে সুন্দর ফুটবল খেলে বিশ্বকাপ জিততে না পারার তাদের চিরকালীন বৈষম্য...
এবারের বিশ্বকাপে আসার আগে থেকেই হট ফেভারিটের এই বিষম চাপ সঙ্গী স্পেনের। ১৯৬৪ সালের ৪৪ বছর পর ২০০৮ সালের ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা এই স্পেনের গায়ে লেগে গেছিলো "সোনালী প্রজন্মের" তকমা। তা, সোনালী প্রজন্মই বটে। মাঠে নামা ১১ জনের নামটা দেখুন একবার। বারের নীচে ইকার ক্যাসিয়াস, রক্ষণভাগ সামাল দিচ্ছেন- জেরার্ড পিকে আর কার্লোস পুয়োল। রক্ষণ থেকে দুই উইং দিয়ে অনবরত উপরে ছুটে গোলমুখে হানা দিচ্ছেন সার্জিও রামোস আর জোয়ান ক্যাপডেভিলা। মাঝমাঠে স্পেন চাইলে সারাদিনই বোধহয় বল ধরে রাখতে সক্ষম। জাভি আলোনসো আর সার্জিও বুসকেটসের সাথে সেখানে যে আছেন জাভি আর আন্দ্রেই ইনিয়েস্তা !!! এরপরে আক্রমণভাগে দুনিয়া কাঁপানো দুই স্ট্রাইকার ডেভিড ভিলা আর ফার্নান্দো তোরেস। এখানেই শেষ নয়, রিজার্ভ বেঞ্চটা দেখুন একবার ... বসেই থাকতে হবে সেস ফ্যাব্রিগাস, পেদ্রো, পেপ রেইনা আর ভিক্টর ভালদেসকে। অথচ যে কোন শীর্ষ পর্যায়ের ইউরোপিয়ান ক্লাব দলে এদের স্থান অনিবার্য !! "ড্রিম টিম" কাগজে কলমে বোধহয় বলা হয় অনেক দলকেই, কিন্তু কারো ক্ষেত্রেই বোধহয় এই ট্যাগিং এতোটা সপ্রযুক্ত হয় না।
অথচ স্বপ্ন থেকে বাস্তবে নেমে আসতে দেরী হয় না একদমই। কাগজে কলমে গ্রুপ এইচের থেকে পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত ছিলো স্প্যানিশদের। ১৬ জুন রাতে সুইজারল্যান্ডের সাথের খেলাতেও থাকলো স্প্যানিশ মধ্যমাঠের প্রাধাণ্য। আক্রমণের পর আক্রমণ সাজিয়েও কেনো যেন ঠিক সুবিধে করতে পারছিলো না স্পেন। প্রথমার্ধে গোলশুণ্য ড্র নিয়ে দুই দল বিরতিতে গেলেও বিরতির পর খেলা শুরু হতেই সুইস খেলোয়াড় ফার্নান্দেসের গোলে পিছিয়ে পড়লো স্পেন। খেলার ধারার সম্পূর্ণ বিপরীতে এই গোল খেয়ে পালটা আক্রমণে উঠতে সময় নেয়নি স্পেন। কিন্তু সুইসদের ডিফেন্সের সাথে সাথে তাঁদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ালো ভাগ্যও। দুই-দুইবার বল পোস্টে লাগালেও গোলের দেখা পেলো না তাঁরা।
ভিসেন্তে দেল বস্কের উপর হামলে পড়তে সময় নিলেন না নিন্দুকেরা। গুঞ্জন উঠলো বেশ জোরেই। 'হট ফেভারিটেরা বিশ্বকাপে ফ্লপ করে'- বহুল জনপ্রিয় এই তত্ত্ব বাতাসে ভাসতে শুরু করলো। ' এই স্পেন ইংল্যান্ডের মতোই কাগুজে বাঘ- এদের খেলোয়াড়েরা কেবল ক্লাবের জন্যেই খেলে।' এই কথাও শোনা গেলো। স্প্যানিশ টিভি চ্যানেল টেলেসিনকোর সুন্দরী সাংবাদিক সারা কারবোনেরো'কে নিয়ে ছড়ালো সবচেয়ে রসালো গুজবখানা। স্প্যানিশ গোলরক্ষক এবং অধিনায়ক ইকার ক্যাসিয়াসের এই বান্ধবী নাকি লাইভ খবর সম্প্রচার করছিলেন ঠিক গোলবারের পেছনে দাঁড়িয়ে। সুন্দরী প্রেমিকার উপস্থিতি ক্যাসিয়াসের মনোযোগে বিঘ্ন ঘটিয়েই নাকি হারিয়েছে স্পেনকে। কর্তব্যে গাফিলতির দায়ে মিডিয়ায়
অভিযুক্ত হতে লাগলেন ক্যাসিয়াস।
সমস্ত অভিযোগের জবাব পাওয়া গেলো পরের ম্যাচে, ২১ জুনের রাতে - হন্ডুরাসের বিপক্ষের ম্যাচে। যথারীতি পাসিং ফুটবল খেলে শুরু করেছিলো স্পেন, কিন্তু গোলপোস্টের সামনে এসে মুখ থুবড়ে পড়ছিলো দলীয় সমঝোতা। প্রয়োজন ছিলো বিশেষ কিছুর, আর সেই কাজটিই করলেন ডেভিড ভিলা। বামপ্রান্ত থেকে ম্যাচের ১৭ মিনিটের সময় একক প্রচেষ্টায় দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকেই মারলের জোরালো এক শট... বিশ্বকাপে স্পেনের প্রথম গোল !! এই এক গোলেই নিজেদের স্বাভাবিক চাপমুক্ত খেলাটা খেলতে শুরু করেছিলো স্পেন, কিন্তু গোলের সুযোগ নষ্ট করেও মিস করছিলেন প্রায় সকলেই। ৫১ মিনিটের সময় দ্বিতীয় গোল করে স্পেনের জয় নিশ্চিত করেন ভিলা। নাটকের এখানেই শেষ নয়। ৬২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়ে নিজের হ্যাট্ট্রিক মিস করেন এই ভিলাই। ২-০ গোলেই ম্যাচ জিতে স্পেন জানান দিলো, বিশ্বকাপে তারা এখনো টিকে আছে।
২৬ জুন, গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্পেনের প্রতিপক্ষ ছিলো লাতিন আমেরিকার গতিময় ফুটবল খেলা দল চিলি। কোচ মার্সেলো বিয়েলসার অধীনে চিলি গ্রুপ পর্বের আগের দুই ম্যাচেই জয় লাভ করে তখনো পর্যন্ত গ্রুপ শীর্ষে। স্বভাবতই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের পর্বে যেতে চাইছিলো দুটো দল, কারণ গ্রুপে দ্বিতীয় হলে পরের রাউন্ডে ফিফা'র শীর্ষ বাছাই ব্রাজিলের মুখোমুখি হবার সম্ভাবনা। খেলার শুরুতেই আগুয়ান তোরেসের কাছ থেকে গোল বাঁচাতে বার অরক্ষিত রেখে বেরিয়ে আসলেন গোলরক্ষক ভেলাডেরাস, তোরেসের কাছ থেকে বল ক্লিয়ার করলেও গোল বাঁচাতে পারলেন না শেষতক। অরক্ষিত গোলপোস্টে প্রায় মাঝমাঠ থেকে অসাধারণ ফিনিশিং দক্ষতা দেখিয়ে গোল করেন সেই ভিলা। এরপরে ইনিয়েস্তার চমৎকার ফিনিশিংয়ে প্রথমার্ধেই দুই গোলে এগিয়ে গেলো স্পেন। দ্বিতীয় গোলের সময় চিলির মারকো এস্ত্রাদাকে বিতর্কিত এক লাল কার্ড দেখিয়ে রেফারি চিলিকে পরিণত করেন ১০ জনের দলে। তবুও দর্শকদের তৃপ্ত করে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে স্পেনকে কঠিন পরীক্ষার সামনেই ফেলেছিলো চিলি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এক গোল ফিরিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলেই হার মেনে মাঠ ছাড়তে হয় চিলিকে। স্পেন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং চিলি রানার-আপ হয়ে উন্নীত হয় নকআউট পর্বে।
২৯শে জুন রাতের খেলায় নকআউট পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্পেনের মুখোমুখি হলো পর্তুগাল। গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচে পর্তুগাল খেলেছে অসম্ভব রকম নেতিবাচক-রক্ষণাত্বক ফুটবল। তিনম্যাচের দুটোতেই গোল না দিয়েও পর্তুগাল হয়েছে গ্রুপ রানার-আপ। এহেন পর্তুগাল এই বাঁচা-মরার ম্যাচেও 'গোল না হয় নাই দিলাম, গোল যেন না খাই' এই নীতি মেনেই খেলা শুরু করলো। স্পেন যথারীতি পাসিং ফুটবল খেলে গেলো এটাকিং থার্ডে তাদের পুরোনো সমস্যা অনুযায়ী ফিনিশ করতে পারছিলো না- আর দশজনের পর্তুগাল ডিফেন্স ভেদ করেও আটকে যাচ্ছিলো পর্তুগীজ গোলরক্ষকের অসামান্য দৃঢ়তার কাছে। ...কিন্তু ঐ যে, 'তারা তিনজন' আছেন না ?? ভিলা-ইনিয়েস্তা-জাভি ?? পর্তুগালের বাঁধা পেরিয়ে গেলো স্পেন এই তিনজনে ভর করে। ইনিয়েস্তা বাড়ালেন ডিফেন্স চেরা এক পাস, নিখুঁত পাস সম্পন্ন করাকে যিনি নিয়ে গেছেন শিল্পের পর্যায়ে- সেই জাভি হার্নান্দেজ ইনিয়েস্তার বাড়িয়ে দেয়া বলটা ধরে রাখলেন একটা প্রয়োজনীয় মুহূর্ত; ঠিক যেটুকু সময় প্রয়োজন ছিলো বক্সের বাম প্রান্ত থেকে ভিলার দ্রুত গতির দৌড়ের জন্যে, এরপরেই জাভি আলতো ব্যাকহিলে বলটা ঠেলে দিলেন আগুয়ান ভিলার উদ্দেশ্যে। ভিলার প্রথম শট গোলরক্ষক ফিরিয়ে দিলেও ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে পর্তুগালের দুর্গ পতন ঘটালেন। অবশিষ্ট ম্যাচে পর্তুগাল চেষ্টা করেও তেমন কিছুই করতে পারেনি।
৩রা জুলাই, প্যারাগুয়ের সাথে কোয়ার্টার-ফাইনালের ম্যাচের চিত্রনাট্য মোটামুটি পর্তুগালেরটাই অনুসরণ করেছে। নাটক যা হবার, তা হলো দ্বিতীয়ার্ধে। জেরার্ড পিকের ফাউলের কারণে ৫৮ মিনিটে পেনাল্টি পায় প্যারাগুয়ে। কার্ডোজার নেয়া পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দেন 'সেইন্ট ইকার' ক্যাসিয়াস। অথচ মিনিট পরেই মাঠের অপর প্রান্তে ডেভিড ভিলাকে ফাউল করায় পেনাল্টি পায় স্পেন, জাভি আলোন্সোর নেয়া প্রথম শটে গোল হলেও রেফারি গোল বতিল করে দেন- কারণ শট মারার পূর্বেই বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন স্পেনের খেলোয়াড়েরা। ফিরতি শট ঠেকিয়ে আবার ম্যাচে সাম্যবস্থা বজায় রাখেন প্যারাগুয়ের গোলরক্ষক জুস্তো ভিলার। ৮২ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় পেদ্রো মাঠে নামার খানিকপরেই তার শট ফিরে আগে পোস্টে লেগে, গ্যালারীতে মাতম ওঠার পূর্বেই ফিরতি বলে শট করেন ভিলা- দুই দিকের দুই পোস্টে চুমু খেয়ে সেই বল ঢুকে যায় জালে !! ন্যুনতম ব্যবধানে জিতেই সেমিতে ওঠে স্পেন।
জার্মানি বনাম স্পেন !!!! ৭ই জুলাই বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে ম্যাচপূর্ব আবহ একে পরিণত করলো বিশ্বকাপ ফাইনালের চেয়েও আকর্ষণীয় ম্যাচে। জোয়াকিম লো'র অধীনের তরুণ জার্মান দল এই বিশ্বকাপে খেলেছে সবচেয়ে বিধ্বংসী ফুটবল। গত দুই ম্যাচে ইংল্যাণ্ড এবং আর্জেন্টিনাকে যথাক্রমে ৪-১ এবং ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে জার্মানি বুঝিয়ে দিয়েছে তারা বিশ্বকাপ ঘরে তোলার সামর্থ্য রাখে। অপরদিকে দুই বছর আগে এই জার্মানিকেই হারিয়ে ৪৪ বছর পর ইউরোপ সেরা নির্বাচিত হয়েছিলো স্পেনের এই 'সোনালী প্রজন্ম'। দুই দলের লড়াইকে তাই ভাবা হচ্ছিলো ফাইনালের আগের ফাইনাল। ... মাঠে কী দেখা গেলো তবে ??
মাঠে অনুদিত হয়েছিলো এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ফুটবল। ভিসেন্তে দেল বস্ক প্রণয়ণ করলেন এক উঁচু মাত্রার ট্যাকটিক্স এবং এই ট্যাকটিক্স বাস্তবায়নে তিনি পেয়েছেন একঝাঁক অসাধারণ প্রতিভাবান ফুটবলার। খেলার শুরু থেকেই জার্মানির অর্ধ থেকে এটাকিং থার্ড পর্যন্ত নিজেদের ভেতর বলের আদানপ্রদান শুরু করলো স্পেন, মাঝে মাঝেই ডিফেন্সের ফাঁক গলে বারে শট। বলের পেছনে ছুটে ছুটে জার্মানদের মস্তিষ্ক আর পা হলো ক্লান্ত, রণকৌশল গেলো হারিয়ে। ওজিল-শোয়াইন্সটাইগার- খেদিরা-পোডলস্কি সমৃদ্ধ জার্মান মাঝমাঠকে কার্যত অদৃশ্য হতে হলো। কাউন্টার এটাকে পারদর্শী জার্মানেরা মাঝে মাঝে বিক্ষিপ্ত আক্রমণ করছিলো বটে, তবে সেগুলো ঠেকাতে তেমন অসুবিধে হয়নি স্পেনের। তবুও জার্মানির বিপক্ষে গোলের দেখা পেতে স্পেনকে অপেক্ষা করতে হলো ৭৩ মিনিট পর্যন্ত। জাভির কর্ণারে দুর্দান্ত এক হেড করে দলকে এগিয়ে নিলেন বহুদিন ধরে স্পেনের রক্ষণভাগের অক্লান্ত যোদ্ধা- বার্সেলোনা অধিনায়ক, দ্যা টারজান, কার্লোস পুয়োল। এই এক গোলেই ইতিহাস রচনা করে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো স্পেন। স্কোরবোর্ড বলছিলো ১-০। কিন্তু হায়, পরিসংখ্যানের সাধ্য কী স্পেনের খেলার সৌন্দর্য্য ব্যাখ্যা করে...
সদ্যসমাপ্ত ফাইনালের বর্ণনা আর কীভাবে দেবো। শুরু থেকেই গা-জোয়ারি ফুটবল খেলে স্পেনের স্বাভাবিক খেলা বিনষ্ট করতে চেয়েছে নেদারল্যান্ড এবং তারা সফলও হয়েছে। খেলা শুরুর ৫০ সেকেন্ডের মাথায় সেই যে ফাউলের বাঁশি বাজা শুরু হলো, পুরো ১২০ মিনিট ধরে তা রেফারিকে বাজাতে হলো ৪৩ বার। বিশ্বকাপ ফাইনাল বলেই রেফারি লালকার্ড প্রদর্শনে ইতস্ততঃ করছিলেন, আর এর পূর্ণ সুযোগ নিয়ে ফাউল করে গেছে নেদারল্যান্ড। রেফারি হাওয়ার্ড ওয়েব বাধ্য হয়েছেন আট-আটজন ডাচকে হলুদ কার্ড দেখাতে। স্পেনের স্বাভাবিক ফুটবল বাঁধা পেয়েছে আর এই ফাঁকে ডাচেরা চেয়েছে গোল দেয়ার কাজটি সেরে ফেলতে। দুই-দুইবার একা গোলরক্ষককে একা পেয়েও পরাস্ত করতে পারেনি ডাচ উইঙ্গার রোবেন। এই একই ভুল করেছেন স্পেনের সেস ফ্যাব্রিগাসও, একবার। নিস্ফলা ম্যাচ তাই গড়িয়ে যায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। গোলের সুযোগ আসছিলো দ'দলের জন্যেই- কিন্তু সুযোগটা নিতে পারছিলো না কেউই। আকাঙ্খার সেই গোল এলো ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ের ২৫ মিনিটের মাথায়, নেদারল্যান্ড দশ জনের দলে পরিণত হবার পরে। সুন্দর ফুটবলের বাহক স্পেনের যে খেলোয়াড়টির পায়ে সবচেয়ে সুন্দর করে ফোঁটে ফুটবলের শিল্প, সেই "ডন" আন্দ্রেই ইনিয়েস্তা ফ্যাব্রিগাসের বাড়িয়ে দেয়া বলে ভাংগলেন ডাচ ডিফেন্স , করলেন গোল, ইতিহাস লিখলেন নতুন করে।
পাঁচ মিনিট পরেই রেফারির বাঁশি জানালো বিশ্ব ফুটবলে নতুন চ্যাম্পিয়ন স্পেন। স্পেনের সেই প্রজন্ম, যাদের গল্প নিশ্চিতভাবেই করা হবে আরো বহু বছর পরেও, সেই "সোনালী প্রজন্মের" মাথায় তুলে নিলো বিশ্বসেরার মুকুট !!!
অভিনন্দন স্পেন !!!!
সুন্দর ফুটবলের পূজারী স্পেন কতটা পরিচ্ছন্ন খেলেছে এই বিশ্বকাপে, তা বোঝাতে হলে কেবল পরিসংখ্যানটা উল্লেখ করলেই চলে। সেমিফাইনাল পর্যন্ত ছয়টি ম্যাচে স্পেনের অর্জিত হলুদ কার্ডের সংখ্যা মাত্র ৩টি। বিশ্বাস হয় ?? সাফল্যের জন্যে মরিয়া এই যুগেও যে কেবল পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলেই সাফল্য পাওয়া যায়- স্পেন তো তাই প্রমাণ করলো...।
সুন্দর ফুটবলের চূড়ান্ত রুপ দেখিয়ে দর্শকদের হৃদয় জিতে নিয়েও ১৯৭৪-এ বিশ্বসেরা হতে পারেনি ইয়োহান ক্রুইফ, রেনসেনব্রিঙ্কের নেদারল্যান্ড। ১৯৫৪-এ হাঙ্গেরীর হয়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন ফেরেঞ্চ পুসকাস,ন্যান্দর হিদেকুটি,স্যান্ডর ককসিসে'রাও। এই স্পেন পেরেছে। এই স্পেন দর্শকদের ভালোবাসার সাথে সাথে শিরোপা জিততে ব্যর্থ হয়নি।
ফুটবল ইতিহাসে কখনো প্রথম ম্যাচে হেরে কোন দল বিশ্বসেরার আসনে বসতে পারেনি। এই স্পেন পেরেছে। এই স্পেন অঘটনে দমে যায়নি, এই স্পেন ইতিহাস নতুন করে লিখে নিতে চেয়েছে।
...১১ জুলাই,২০১০ রবিবার রাতে দঃআফ্রিকার জোহানেসবার্গ সকার সিটি স্টেডিয়ামে স্পেনের জয় তাই ফুটবলেরই জয় !!!
মন্তব্য
মন্তব্য দিয়ে নেই আগে
ধুত্তোর আমার আগে পিপিদা মন্তব্য পেড়ে বসে আছেন।
যাউক গা, লিখা ভালৈছে সুহান!
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আজকে স্পেন হারলে সুন্দরের ওপর থেকে ভক্তি উঠে যেত আমার।
কুটুমবাড়ি
অভিনন্দন স্পেন।
ডাচদের কল্যাণে আমার দেখা সবচেয়ে জঘন্য ফাইনাল দেখলাম। এই খেলা টাইব্রেকারে গেলে খুব খারাপ হোত। এরচেয়েও খারাপ হোত যদি ডাচরা টাইব্রেকারে জিতে যেত।
শেষ পর্যন্ত ভালো ফুটবলেরই জয় হয়েছে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
দারুণ লিখসো সুহান দারুণ! আমিও বলি আরেকবার-
১১ জুলাই,২০১০ রবিবার রাতে দঃআফ্রিকার জোহানেসবার্গ সকার সিটি স্টেডিয়ামে স্পেনের জয় ফুটবলেরই জয়
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
দারূণ লেখা সুহান ...
টুর্নামেন্টের শুরুর থেকে চাচ্ছিলাম স্পেন জিতুক, কিন্তু সত্যিই পারবে ভাবি নাই ... হ্যাটস-অফ টু বার্সেলোনাইজড স্পেন
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
এই বার্সেলোনা জায়গাডা ঠিক কুন কান্ট্রিতে পড়ছে?
কুটুমবাড়ি
কইসে তোমারে
স্পেন জিতার জন্য খেলে যাক, আমরা দেখে মজা পাই। হল্যান্ডের গুন্ডাগুলাকে ধরে চাবকানো দরকার। এদের গভর্নমেন্ট ইরাকের মত হলে ভাল হত।
দারুণ লিখছোস সুহান।
এ জয় আসলেই ফুটবলের জয়।
পলাশ রঞ্জন সান্যাল
স্পেন ভালো খেলে জিতেছে।
পোস্ট ভালু পাইলাম।
---------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার
অসাধারণ বিশ্লষণ!!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আচ্ছা, উনি ভিলা বা ভিয়া?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
উনি ডেভিড ভিলা... অনেকের উচ্চারণে ভিয়া শোনায়...
_________________________________________
সেরিওজা
স্প্যানিশরা ডাবল এল এ কে ইয়া উচ্চারণ করে
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি যতদূর জানি স্প্যানিশ "ll"-এর উচ্চারণের নিয়ম অনুযায়ী ভিয়া হওয়ার কথা, যদিও বানান ভিলা।
এখানে দেখতে পারেন।
উইকিপিডিয়াও বলছে ভিয়া।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হালকা এডিট মার্লাম... ফটুও দিলাম একখান...
_________________________________________
সেরিওজা
ভাল পোস্ট। টেনশনে ছিলাম, স্পেন না জিতলে খুবই খারাপ লাগতো।
স্পেন আরো একটা রেকর্ড করছে। সবচেয়ে কম গোল দিয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন --- সাকুল্যে ৮ খান মাত্র।
সুন্দর ফুটবল আর গোল কী তবে পরস্পরের ব্যস্তানুপাতিক? (মহা চিন্তিত ইমো)
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
দুর্বল দলকে চারপাঁচ গোল দিয়ে জিতে বড় ম্যাচে হেরে যাবার চাইতে এক গোলে নিয়মিত জেতাটাই মনে হয় বেটার...
আর সুন্দর ফুটবল আর গোল ব্যস্তানুপাতক কখনোই না... তবে সবসময় কয়টা ছবি আঁকলো, এ নিয়ে শিল্পীর ছবির বিচার করা যায় না...
_________________________________________
সেরিওজা
তোরেস না কী ফ্যাব্রিগাস?
----------------------------------------------
আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।
তোরেস। অকার্যকর হয়ে পড়া ভিয়াকে তুলে দিয়ে তোরেসকে নামান কোচ। একটু দেরিতে হলেও... সব ভালো তার, শেষ ভালো যার!
কুটুমবাড়ি
হ ভাই, ফ্যাব্রিগাস...ঠিক কর্তেসি...
আবেগে তাড়াহুড়া করতে গিয়া ভুল হয়া গেসে
_________________________________________
সেরিওজা
- কার্লোস পুয়োল না, পিজোল (জ আর ঝ এর মাঝখানের উচ্চারণ, একটু কোমলভাবে)। আর হিস্পানিকরা 'এল' এর উচ্চারণ করে কেমনে জানি। ক্যাসিল্লাস হয়ে যায় 'ক্যাসিয়াস', ভিল্লা হয়ে যায় 'ভিয়া'। (হিমু বোধ'য় উচ্চারণ গুলো ধরে দিতে পারবে ভালো করে।) নো অফেন্স, প্লিজ।
কালকে খেলাটা দেখার সময়েই ভাবছিলাম, সুহান এর একটা লেখা মনে হয় রেডি হচ্ছে।
চমৎকার।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
অফেন্সের কি আছে বস...
ভিলা'র (আমি ইংরেজী বানানে ভিলাই বলি) উচ্চারণের ব্যাখ্যা তো উপ্রে মামু আর টিউলিপ দিয়েছেনই...
আরে, তাইতো, ক্যাসিয়াসের নামে যে দুইটা L এইটা তো এদ্দিন খিয়াল করি নাই- দুইটা i ধরে নিসিলাম... এদ্দিনে ভুল ভাংলো...
_________________________________________
সেরিওজা
প্রথম আলোর ক্রীড়াসাংবাদিক রাজীব হাসান লিখেছেন, "এক টানে খুলে ফেললেন জার্সি। বুকে স্প্যানিশ ভাষায় লেখা একটা লাইন—‘স্পেনের শিরোপা জয় নিয়তি-নির্ধারিত’।"
ইনিয়েস্তার গেঞ্জিতে প্রকৃতপক্ষে লেখা ছিলো, দানি খারকে সিয়েম্প্রে কন নোসোত্রোস [দানি খারকে সবসময় আমাদের সাথে]।
দুনিয়া ভেঙে পড়ে যাবে, এমন কোনো ভুল নয়। এই ভুল নিয়ে কথা বলাও নিটপিকিঙের পর্যায়েই হয়তো পড়ে। কিন্তু কথা হচ্ছে, ক্রীড়াসাংবাদিক মহাশয় কোন জায়গা থেকে চোথা মারতে গিয়ে এই ভুলটা করলেন? নাকি আঙুলের আগায় যা আসে তা-ই পত্রিকার পাতায় ঢেলে দেয়া যায়?
আবার অন্যভাবে চিন্তা করলে, এটা একটা মারাত্মক ভুল। একজন স্বনামধন্য মিডফিল্ডার হলুদ কার্ড পাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে জার্সি খুলে স্মরণ করছেন অকালমৃত সহফুটবলারকে, সেই আবেগের কথা পত্রিকায় এলো না, এলো একটা স্বকপোলকল্পিত অথবা বলদের গোয়া দিয়ে বের হওয়া দাম্ভিক বুলি।
আমি নিশ্চিত, এ নিয়ে কোনো শুদ্ধিপত্র আসবে না। কারণ তারা জানে তাদের "ছোটোখাটো" ভুলগুলো কেউ চ্যালেঞ্জ করবে না, এবং এক পর্যায়ে সেটাই হয়ে যাবে সংস্কৃতি। আলু যা বলে সেটাই হয়ে যাবে ফ্যাক্ট।
সাংবাদিকের নাম রাজীব হাসান। উনি নিজের অজ্ঞতা দেখিয়ে জনগণকে একটু হাসাতে চেষ্টা করেছেন।
এমনিতেই দেশে বিনোদনের অভাব। আলুর সাংবাদিকের সমালোচনা করে জাতিকে বিনোদন থেকে বঞ্চিত করায় আপনাকে দিক্কার।
কি মাঝি, ডরাইলা?
শ্বেত-শুভ্র-উৎপাতকে দেখি না অনেকদিন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
যা ধারণা করছি, সেই কথাটাই বলে নেই...
ইনিয়েস্তা জার্সি খুলে গোল উদযাপনের সময় ধারাভাষ্যকার সময়ের স্বল্পতা ইঙ্গিত করে বলেছিলেন- 'নিয়তি বোধহয় স্পেনেরই জয় চায়' বা এই জাতীয় একটা কথা...
আমাদের আলোচ্য স্পোর্টস রিপোর্টার এটাকেই অনুবাদ ধরে লিখে দিয়েছেন...
অথচ ইন্টারনেট না থাকলে আমার মত আরো অনেকেই এটাকেই সত্যি ধরে নিতো...
_________________________________________
সেরিওজা
কোন দেশি ধারাভাষ্যকার? অস্ট্রেলিয়ান ধারাভাষ্যকারদের এমন কিছু কইতে শুনি নাই।
কি মাঝি, ডরাইলা?
- বাংলাদেশে যে খেলাটা দেখানো হয়, সেটা মনেহয় হংকং বা সিঙ্গাপুর থেকে প্রচার করা হয়। বিশদ জানেন নাকি এ ব্যাপারে? ধারাভাষ্যকার তাদেরই হওয়ার কথা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ইএস্পিএনেই তো...
যখন মাঠের কোণায় গিয়ে একজন আরেকজনের ঘাড়ে উঠতাসিলো, তখন...
_________________________________________
সেরিওজা
- ইয়েস্পিয়েন ওয়ার্ল্ড কাপের খেলা দেখায়? ক্যাম্নে?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বাংলাদেশে যে ইয়েস্পিয়েন দেখায় ওটা ভারতীয় ইয়েস্পিয়েন না? নাকি হংকং ভিত্তিক?
কি মাঝি, ডরাইলা?
- আগে হংকং ভিত্তিক ছিলো, পরে সেটা ইন্ডিয়া (স্টার সম্ভবত) কিনে নিছে। কিন্তু কথা হলো, ইয়েস্পিয়েন তো ভারতের জাতীয় সম্প্রচার মাধ্যম না, ভারতে বিশ্বকাপ দেখানোর স্বত্ত্ব কেবল ডিডি'র পাওয়ার কথা, স্টার বা ইয়েস্পিয়েনের না।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমরিকায় এইবার ইএসপিএন খেলা দেখিয়েছে। তবে লোকাল চ্যানেল এবিসি দেখিয়েছে কয়েকটা, ফাইনাল সহ।
আসলেই কালকের ফাইনালের আগে কল্পনাও করি নাই খেলাটা এমন ফাউল স্বর্বস্ব খেলা হবে! স্পেনের সুন্দর খেলার ছিটেফোঁটাও দেখতে পাই নাই
জার্মানীর সাথে তারা যেভাবে খেলেছিল তার সামান্যটুকু ছিল না কালকের ফইনালে। ডাচদের এমন মারদাংগা ফুটবলের বিপরীতে তারা হয়ত নতুন কোন স্ট্র্যাটেজি নিয়ে আরও দারুন কিছু করতে পারত। কিন্তু বিশ্বকাপ ফাইনাল বলেই বোধহয় রিস্ক নেয়নি।
তারপরও সব ভাল তার শেষ ভাল যার- জয়তু স্পেন।
এবার যদি নেদারল্যান্ডস কাপ জিততো তাহলে আগামী ওয়ার্ল্ডকাপে মুয়ে থাই কিক বক্সাররা চ্যাম্পিয়ন হত।
কি মাঝি, ডরাইলা?
বড় ভাইরা মন্তব্য করেছেন, এখানে আমার মন্তব্যের কোন প্রয়োজন নেই।
রফিক
এদের গোলের খরার কারণ হলো মেসির অনুপস্থিতি। এই টিমের অনেকগুলাই নাকি বার্সাতে খেলে (কিংকু বলছে, আমার পোস্টে)। তার মানে ঘটনা সত্যি। এরা বল বানাতে পারে, দখলে রাখতে পারে, কিন্তু গোল দিতে খুব একটা পারে না। তাই গোলের খরা।
(আমার মন্তব্য কিন্তু কোন রকম বিশ্লেষণ নয়, ধারণা মাত্র )
পিপিদার এই কথাটা কিন্তু পুরাই সত্যি ... স্পেনের এই টিমে সবই আছে কিন্তু ভিয়া ছাড়া বলার মত স্কোরার নাই ...
বার্সাতে এই সীজনে যত গোল হয়েছে তার নব্বই ভাগই মেসি-ইব্রা আর পেদ্রোর; এরপর বোজান ... লক্ষ্যণীয় হচ্ছে জাভি-ইনিয়েস্তা-বুসকেটস এর বলার মত কোন গোল নাই; এরা গোল বানায়, কিন্তু গোল দেয় না ...
স্পেনের হয়ে গোল দেয়ার কাজটা করতো ভিয়া আর টরেস; এইবার টরেস পুরাই অফ; সো পুরা প্রেশার গেছে ভিয়ার উপর দিয়ে ...
মিডফিল্ডারদের মধ্যে গোল করার অভ্যাস আছে শুধু ফ্যব্রিগাসের, তাকে বেশিরভাগ ম্যাচে নামায়ই নাই; জাবি আলোনসো দূর থেকে কিছু শট নেয় মাঝে মাঝে কিন্তু তাতে এবার কাজ হয় নাই ...
পেদ্রো অনভিজ্ঞ, তার থেকে গাদা গাদা গোল এখনই আশা করা যায় না ...
সো আলটিমেটলি ডেভিড ভিয়া ছাড়া উপায় নাই ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
সেইটাই, তোরেস ফর্মে থাকলে গোল সংখ্যা এতো কম হৈতো না...
ফিনিশারের এই অভাবটারে ধরেও আমি যদ্দিন ধরে বিশ্বকাপ দেক্তেসি (৯৮ থেকে) তার মাঝে এই দল্টাই সেরা "দল"...
তবে বার্সার গত দুই সিজনের দলটা আরো অমানবিক...
_________________________________________
সেরিওজা
আছে ভিয়া, যে গোল দিতে পারে। কিন্তু বল বানাতে পারে না। তারে উঠিয়ে তোরেসরে নামানোর পরই কিন্তু স্পেন গোল পাইসে। এইটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, ভুল অইলেও বকা দেয়া যাবে না (ভয়ে পালিয়ে যাবার ইমো)!
কুটুমবাড়ি
যোগ্যতম দল হিসেবেই স্পেনের ঘরে কাপ গেছে। স্পেনের ধারে কাছেও কেউ খেলতে পারেনি।
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
হ্যাটস অফ সুহান! অসাধারণ প্রতিবেদন।
তুমি প্রফেশনালি ক্রীড়া সাংবাদিকতা শুরু করতে পারো। তাহলে এরকম বড়বড় আসর গুলোতে প্রেসবক্সে বসে খেলা দেখতে পারবা
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হ, জিএমটির লগে ভাব কইরা আলু পত্রিকার রম্য ম্যাগাজিনে লিখা শুরু করতে হৈবো...
তবে আমার একজন খুব প্রিয় লেখক কিন্তু ক্রীড়া সাংবাদিক ছিলেন, সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে তাঁর- মতি নন্দী ...
_________________________________________
সেরিওজা
জাভি আলোনসো না, জাবি আলোনসো হবে ...
আর প্যারাগুয়ের সাথে গোলটায় পেদ্রোকে পাস দেয়ার আগে ইনিয়েস্তার মাঝমাঠ থেকে টান দেয়ার কথাটা না বললে অসম্পূর্ণ থেকে যায়
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
এন্ডি গ্রে আর জন ডাইক্সের উচ্চারণে তো 'জাভি আলোনসো'ই লাগে...
আর ঐ পাসের কথা আর কী বল্মু... ওস্তাদ ছিনিমিনিয়েস্তা'র জাত ঐ এক পাসেই চেনা যায়...
_________________________________________
সেরিওজা
কিন্তু আমি তো শুনি খালি "শাবি আলোনজো"
হ আমিও শাবি'ই শুনছি
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছিলো মনে হয়
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
এইটা কালকের ম্যাচের পর; মজা পাইলাম দেখে
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
এইটাতো স্প্যানিশে লেখা...
পড়তে পারলাম না, তবে দেখে... হেহেহেহ ...
_________________________________________
সেরিওজা
নির্মলেন্দু গুণ আমার খুব প্রিয় কবি। কিন্তু ইদানিং তিনি প্রথমালোর কল্যাণে ফুটবল নিয়েও লেখা শুরু করেছেন। ওনার আজকের লেখাটা পড়ে তব্ধা খেয়ে বসে রইলাম। একটা অংশ কোট করি এখানে-
কবি সাহেবকে সম্ভবত ভুল দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবার। অন্তত আমার তা-ই মনে হলো।
-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
কী বলেন? কবি সাহেব আর বাংলার ফ্যাবিয়ানো শেখ মুহম্মদ আসলাম এইবারের বিনোদনের সবচে বড় দুই উৎস
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
প্রতিষ্ঠান হলো একটা টেমপ্লেট, সেখানে যে-ই যাক, প্রতিষ্ঠানের বৈশিষ্ট্য ধারণ করবেই।
বাংলার সাংবাদিকেরা ক্লোজেকে কোসা বলে কেন, এটা বুঝতে পারলাম না।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
স্পেনকে অভিনন্দন। হল্যান্ডের মারমুখিতার মধ্যেও যে তারা পুরোপুরি ধৈর্য্যহীন না হয়ে খেলতে পেরেছে, এজন্য বাড়তি ক্রেডিট প্রাপ্য।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
সুহান, লেখাটা অসম্ভব ভালো লাগসে। খেলা নিয়ে এতো সুন্দর, গোছানো, পরিপাটি, সর্বোপরি তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ঠ লেখা শেষ কবে পড়সি, মনে পড়ে না।
আলু পত্রিকার অনুবাদমূর্খগুলার চাইতে তোমার মতো মানুষের, যারা খেলা বোঝে এবং মন থেকে ভালোবাসে, লেখা উচিত।
নতুন মন্তব্য করুন