সাইকেল আর পায়ের বদৌলতে ইশকুলে যাওয়া কারু মাস্টারের মেয়েকে এখন যেমন সকলেই সুচিত্রা সেন বলে চেনে, অস্থির চল্লিশের সেই উত্তপ্ত পাবনায় সকলেই কি তাকে চিনতো সে ভাবে- সে নামে- সে ভালোবাসায় ?? নাকি চিনতো পাবনা টাউন গার্লস স্কুলের কৃষ্ণাকে - করুণাময় দাশগুপ্তের মেয়েকে- অথবা রমাকে ?? তুমি রমাকে চিনতে, জানি। আর আমিও কৃষ্ণাকে চিনতাম। সেনবাবুদের বাড়ির পাঁচিল আর পায়ে হেঁটে রমার ইশকুলে যাবার সময়ের মাঝে আশ্চর্য সমাপতন হতো তখন প্রায়শই। বালিকাদলের মাঝে আমাদের কেউ নাকি খুঁজে ফেরে নূরজাহানকে, পাঁচিলে পা ঝোলানো ছেলের দল আর তুমি বলতে। সে বলায় ভুল ছিলো না। পাবনায় কেউ তো তখন সুচিত্রা সেন ছিলো না, আমিও তাই সুচিত্রা সেনকে চাইনি। কাজেই আমার চোখ ফিরে ফিরে যায় কোন এক চপল নূরজাহানকে দেখতে একপলক। জগতের সকল আলো তখন সেই মাঝদুপুরে ইশকুলের ঘণ্টা আর পাঁচিলে পা দোলানোর মুহুর্তখানার। সেই পাবনা-সেই গোপালপুর- সেই ফাঁকা মাঠের দক্ষিণ প্রান্তের বাড়ি-সেই ঘণ্টা; যোগসূত্র হয়ে আমি-তুমি আর সুচিত্রা সেন এখনো।
তোমার ঘরে জমতে থাকে তুলোভেজা মেঘের র্যাপিং পেপার- তুমি বলেই তো। কারণ তোমায় ঈশ্বর ভালোবাসেন। এর মাঝে রহস্য খুঁজে পাওয়া যায় না কিন্তু। কাজেই একদিন উত্তর পাওয়া যায় তলস্তয়ের ছোট গল্পের 'মানুষ কী নিয়ে বাঁচে' প্রশ্নের। পাবনা শহর জানে না, বৃষ্টিতে টালমাটাল গোপালপুরের কেউ জানেনি, বৃষ্টি জেনেছিলো। ইশকুল ঘরে অবরুদ্ধ তুমি জেনেছিলে, জেনেছিলো তোমার সাথে আটকে পড়া রমা দাশগুপ্ত। আহা, কী ছিলো সেই চম্বলদস্যুর মতো বৃষ্টির তেজ। পথেঘাটে কাগজের নৌকা, আমি বাঙ্গালীর ছেলে- কবিতা লেখার চেষ্টা করছিলাম তাই। সেই কবিতায় নিয়মানুসারে কাব্যলক্ষ্মী ধরা দেন না সেদিন- অথচ ইশকুল ঘর- পা বাড়ালেই পৌঁছে যাই, সেখানে তুমি-সেখানে সুচিত্রা সেন-সেখানে আফ্রোদিতি।... আমি কী কথা হয়েছিলো শুনিনি। আমি সেনবাবুদের বাগানের একটা গোলাপের বৃষ্টিভেজা হাতবদল দেখিনি। আমি কেবল বৃষ্টির শব্দ শুনেছিলাম। পরে জেনেছিলাম- সেই আধঘণ্টার বৃষ্টিকাল তোমার জীবনের সেরা সময়টা কেটে নিয়ে গেছে আয়ূর ব্ল্যাকবোর্ড হতে। আর আমায় দেখো, এখন আমার সাথে নূরজাহানের সকাল-সন্ধ্যা-রাত্রি যাপন; অথচ আমার জন্যে- কেবল আমার জন্যে বৃষ্টি নামেনি কখনো।
আমাদের শহরে কোন কফির দোকান ছিলো না, আইসক্রীম-পার্লার হীন পাবনা। আধঘণ্টা নিরিবিলিতে কাটিয়ে দেয়ার এটসেট্রা বুকস্টোর নেই- দূরালাপন তখনো দূর কল্পনা। এরপরেও, এ সময়ের অবিশ্বাস্য বিশ্বাসেও, তুমি ছিলে। তোমরা ছিলে। এক আর তিনের মাঝে অনিচ্ছুক কাঁটা হয়ে আমাদের দোতলা, এরপরেও তো ছাদ থাকে- চিলেকোঠা থাকে। আমি যদি প্রশ্ন করি, রাতের কবিতা আবৃত্তি কী কারণে ছিলো; উত্তর হয়ে আসে অনিদ্রা। কৃষ্ণা কেন আজকাল ফিরে ফিরে আসে বারান্দার মৃত রোদে- এর উত্তরে তোমার নিঃশব্দ হাসি। পাবনা শহরে জানেনি এবারো, সেই বর্ষার গোপালপুর জানেনি, কেবল আমি জেনেছিলাম- ঠিক জেনে নয়- বুঝে নিয়ে। বাড়ির পাঁচিলে ছেলেরা পা ঝোলায়, নূরজাহানেরা হেঁটে বাড়ি ফেরে আর অবসরে; সকলের অজান্তে গোলাপ ফোটে একতলা আর তেতলার বারান্দায়।
গণিতে দক্ষ ইংরেজ জাত, রেডক্লিফের স্লাইড ক্যালিপার্স ততোধিক সূক্ষ- নির্ভুল। আর তোমার সমীকরণে রমা দাশগুপ্ত নামের পূর্বে ঋণাত্বক চিহ্ন। এক-আধবার রমা যশোরে যায় ফিরে আসতে। কিংবা কৃষ্ণা যেতো শান্তি নিকেতন, সেও ফিরে আসবার জন্যে। অথচ এইবার, সে আর ফেরে না। ১৯৪৭- সমাপ্তি ঘটায় পাবনা অধ্যায়ের, সুচিত্রা সেনের জীবনে- অথচ তোমারও একটা জীবন ছিলো। এরপরেও তাই তোমার একটা জীবন থাকে। পাবনা শহরে অনেক লোকে নতুন করে বাঁচতে আসে, অনেক মানুষ আগুণপাখির মতো নিশ্চিত দহন জেনেও শেকড় উপড়ায়। তুমি জানলে না জন সিরিল রেডক্লিফ, এই গোপালপুরে দশ বছরের বালকদ্বয় মধুসূদন আর সেলিমের মাঝে কখনো আলাদা না হবার রক্তশপথ ছিলো; এই গোপালপুরে সাতসকালে ঘুমজাগা গিয়াসউদ্দীন পাশের বাড়ির নরেন্দ্রকে 'ভাই' থেকে 'উদ্বাস্তু' হয়ে যেতে জেনে শিশুর মতো কেঁদেছিলো। এরপরেও পাবনা শহর রেডক্লিফকে ভুলে গিয়ে বাঁচতে চেষ্টা করে, আমি তরুণ থেকে যুবক হয়ে উঠতে চাই নূরজাহানকে মনে রেখে আর তুমিও বেঁচে থাকো। গভীর রাতে বিছানায় এপাশওপাশ করে কান পেতে শুনতে চাও, ওপারের রমা দাশগুপ্তও জেগে আছে কি না ভালোবাসায়।
ইতিহাস ফিরে আসে শুনি, ফিরে আসে দিনশেষে ঘড়ির কাঁটা; ফেরে না দাঙ্গায় নিহত নক্ষত্র হয়ে যাওয়া মানুষেরা- ফেরেনি নরেন্দ্র হালদার। অথচ, ... কী আশ্চর্য !! মাষ্টারের মেয়ে রমা দাশগুপ্ত পাবনার গোপালপুরে ফিরে আসে সাত বছর পর, ১৯৫৪তে। টাউনহল অবাক হয় এ প্রত্যাবর্তনে, যুবকেরা সিটি দেয়- তরুণীরা স্বপ্ন দেখে- নবদম্পতিরা রোমাঞ্চিত। উত্তম কুমার !! অগ্নিপরীক্ষা !! ... কিন্তু সুচিত্রা সেন কে ?? আমাদের রমা নয় ?? তাই তো, আমাদের রমা অথবা কৃষ্ণাই তো !! গোপালপুরের রমা দাশগুপ্ত এখন সুচিত্রা সেন !!
এ শহরে আনন্দের উপলক্ষ কম বলে মানুষেরা বড় খুশি হয়। সেই তিনতলার কারু মাস্টারের মেয়ের নাম আজ সবার মুখে মুখে ফেরে। চায়ের দোকানে ম্যাগাজিনের কাটা কাগজের সুচিত্রা, বাড়ির রকে সুচিত্রা, উত্তরের মাঠে অলস আড্ডায় সুচিত্রা, গৃহিণীদের 'হারানো সুর', 'সপ্তপদী' আর 'সাগরিকা'র সুচিত্রা... গোটা শহর তার ভালোবাসায় উন্মত্ত। আমিও, সাথে আর সবাই। সকলেরই ভালোবাসা এক প্রকৃতির। অথচ তুমি, যেমনটা (হয়তো) ভালবাসতে তাকে- সে ভালোবাসা কি অক্ষুণ্ণ থাকে আর ?? কেউ তো কখনো জানে না, জানতো না- এ গল্প অলিখিত থেকে গেলে জানবেও না- তুমি সুচিত্রা সেনকে নয়, রমা দাশগুপ্তকেই ভালোবেসেছিলে। যুবকেরা এখন যেমন ভালোবাসে সুচিত্রা সেন, তেমনটা নয়- আরো নিষ্কাম করেই তুমি রমাকে চেয়েছিলে। সিনে ম্যাগাজিন থেকে কাটা ছবিতে সুচিত্রা সেনের হাতে অগণিত ফুলের তোড়া, এরচেয়ে প্রাচীনতর একটা গোলাপ ছিলো না তোমার ?? বইয়ের পাতায় তুমি গুঁজে রেখেছিলে যেটা ?? সে গোলাপ কুঁকড়ে গেছে। সময়ের সংকোচন। আর সময়ের উলটো প্রসারণে রমা দাশগুপ্ত এখন দিবানাথ সেনের স্ত্রী- সব বাঙ্গালির সুচিত্রা সেন। তোমার ভালোবাসা কীভাবে এখনো ছুঁয়ে থাকে তাকে ?? আদৌ থাকে কি ?? রমা কি নিজেই খুলে নিয়েছিলো সে বাঁধন, নাকি তুমি খুলে নেবে ?? তুমি ব্যর্থ, দুভাবেই।
সিনেমা জনিত উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে ফেলে আমাদের তেতলা বাড়িতে আবার ফিসফিস শোনা যায়। এ বলে, সে বলে, সবাই ফিসফিসিয়ে বলে। গভীর রাতে নাকি দুইজন লোক আসে আজকাল তোমার ঘরে। তারা অন্ধ, ঘোরতর কৃষ্ণবর্ণের। আমি প্রশ্ন করলে তুমি স্বীকার করো না। ধীরে ধীরে এই আগন্তুকেদের কথা বাড়ি পেরিয়ে জেনে যায় শহরের লোকেরা। কারণে-অকারণে সর্বত্র তোমার ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকে দুই অন্ধ। লোকের সাড়া পেলে তারা বাতাসে মিলিয়ে যায়, আবার নাকি গভীর রাতে দেখা যায় তাদের চিলেকোঠায়। এখন তো রাত গভীর হলে তোমার কবিতা অনুপস্থিত, সেইসব অতীত। অতঃপর লোকের কথা যাচাই করে নিতে আমি লুকিয়ে বসে থাকি ছাদের কার্ণিশে এবং আবিষ্কার করি পাবনার লোকে এখনো সত্য কথাই বলে। কী ভয়ানক কালোবর্ণের অন্ধদ্বয়, কী কুৎসিত !! আড়াল ছেড়ে আমি বেরিয়ে এলে তুমি হয়তো অপ্রস্তুত হও, এরপরেও সেটা চেপে রেখে বলো, "ওহ, তুমি !! আমি ভেবেছিলাম... আচ্ছা, বাদ দাও। এসো, পরিচিত হও। এরা আমার বন্ধু মানুষ। এর নাম স্বরে-অ। ওর নাম স্বরে-আ। ... কী চমৎকার দেখতে দুইজন, তাই না ?? কী লম্বা, কত্ত ধবধবে ফর্সা আর কেমন নিখুঁত !!"
শহরজুড়ে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে বারংবার। আমার সন্দেহ বাড়ে। তোমার অনুপস্থিতিতে আমি চিলেকোঠায় লুকিয়ে তোমার বাক্স ঘাঁটি। দেখি, লুকিয়ে রাখা চিঠির র্যাপিং পেপার- মেঘ দিয়ে যেগুলো তৈরী ছিলো- সমস্তই জল হয়ে গেছে। বাক্সে কেবল থই থই জল আর কেমন বিশ্রী গন্ধ। তোমায় একথা বলতেই তুমি অস্বীকার করো, রীতিমাফিক। তুমি বলো, আমি মিথ্যেবাদী, কাফের। তুমি বলো, আমি আর সুবিমল- যারা তোমার সাথে বাক্সটা বয়ে এনেছিলাম তেতলার চিলেকোঠায়- আমরা তোমার জমাট মেঘগুলো চুরি করে নিয়ে গিয়েছি। তোমায় পালটা উত্তর দেবার যুক্তি থাকে না আমার, তুমি যে অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে তর্ক করো।
অতএব, দূরত্ব বাড়তে থাকে। আমরা তোমায় এড়িয়ে চলি। আমরা মধ্যবয়সী হই, আমার আর নূরজাহানের দাম্পত্যের বয়স বাড়তে থাকে। লোকমুখে শুনি, অন্ধেরা তোমার সঙ্গী হয়ে আছে এখনো। শুধু তোমার নয়,আরো অনেকের।
গতকাল গভীর রাতে গল্পটা লিখে ফেলার পরে তাই আজ সকালে যখন তোমার সাথে দেখা হয়ে গেলো আমার, আমি অবাক হলাম। দেখলাম, পড়লাম- তোমার এবং তোমার মতন আরো অনেকের কথা। যেহেতু গল্পটা ঈশ্বরের- আর ঈশ্বর সর্বত্রই থাকেন-সেহেতু তোমরাও পৃথিবীর সর্বত্র বিরাজমান। গুজরাটে বা নোয়াখালীতে।
প্রশ্ন একটাই। আরো অগণিত মানুষের মতন ভুল করে স্বেচ্ছায় অন্ধদ্বয়ের পেছনে ছোটা তুমি, স্বেচ্ছা নির্বাসিতদের পেছনে ফেলে পত্রিকার প্রথম পাতায় উঠে আসা তুমি, সুচিত্রা সেনের জীবনের সিনেমার বৃষ্টিভেজা প্রথম নায়ক তুমি-হায়দার হোসেন-গতকাল আত্মঘাতী বোমা হামলায় ভিনধর্মের উপাসনালয় উড়িয়ে দেবার মুহুর্তে তোমার কি একটিবারও সুচিত্রা সেনকে মনে পড়েছিলো ??
মন্তব্য
মাঝখানে তাল হারিয়ে ফেলেছিলাম, শেষে এসে শুরুর সুতোর নাগাল পেলাম আবার। গল্পের সূক্ষ্ম কারুকাজগুলো ভালো লাগলো। তবে শিরোনামটা ভালো লাগে নি।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
ধন্যবাদ।
...
অগোছালো লেখা। কিছু অংশ যে ভালো লেগেছে, এতেই খুশি হলাম।
কথার খেলায় শেষ পর্যন্ত এক টানে পড়ে ফেললাম।
ধর্ম মানুষের জন্য। ধর্মের জন্য মানুষ নয়। মানবধর্ম আরও অনেক বড়। আমাদের মাথায় কুলায় না। আমরা তাই ধর্মের খোলশটা নিয়ে'ই চেচামেচি করি। সময় কেটে যায়। আমাদের অন্ধকারে ধর্ম আরও জাকিয়ে বসে।
সুচিত্রা সেন'রা তাই পর্দাতেই সুন্দর।
লেখা খুব ভাল লাগলো।
অধর্ম ধর্মের মুখোশে এসে চেপে বসলে সেটাকে সরানো মুশকিল হয়ে পড়ে...
অনেক ধন্যবাদ পড়বার জন্যে।
শেষ দিকে এসে একদম ভড়কে গেলাম। গল্প কেমন হয়েছে- থাক- ইউ ক্যান্ট হ্যান্ডল দ্যা ট্রুথ।
বটে, তোকে ভড়কে দেয়া তাহলে খুবই সহজ কাজ মনে হয় !!
... আর তুই ট্রুথ হান্ডল করতে পেরেছিস জেনে আনন্দ প্লাম।
একটানে গল্প পড়তে পারলে বড্ড আরাম লাগে...জানি না কার কেমন লাগলো, কিন্তু আমার ভালোই লেগেছে।
সুন্দর গল্প উপহার দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ...
আপনাকেও ধন্যবাদ মেঘদূত, একটানে পড়েছেন বলে।
সুন্দর।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
থ্যাঙ্কস।
একটানে পড়িনি(মাঝে মাঝে নিঃশ্বাস না নিলে দম্ আঁটকে মরে যাবোনা বুঝি ) থেমে থেমে পড়েলাম। মনে ভাবনা এলো, এভাবে গল্পের সুতো ছেড়ে দিয়ে কী নিখুঁতভাবেই না গুটিয়ে নিতে জানেন আপনি (মাঝের অংশের কিছুটা মেদ দিব্যি ঝরিয়ে নেয়া যায় কিন্তু) ! অনেক ভালো লাগা জানাই
মাঝের মেদভুঁড়ি নিয়ে কী যে করি
যাক, থেমে থেমে পড়ে মন্তব্য করলেন বলে ধন্যবাদ আয়নামতি।
আমাদের আকাশ আজ স্বর্গ, বেহেশত আর এডেনের কাঠায় কাঠায় বন্দী....জানেন ঋতিক ঘটকের একটা সাক্ষাৎকার পড়ে মনে হয়েছিল দুনিয়াটা ফালি ফালি করে কেটে ফেলি...কি ভয়ংকর নি:শেষ সে দিনগুলি, নিজের শেকড় উপড়ে মানুষ পরজীবী হয়ে বাঁচতে চায়, আর সারাক্ষণ তার নিজের আলো হাওয়া ফিরে পাবার আকুতি.........
মানুষের ভেতরে মানুষ, করিতেছে বিরাজন...
মাথা চুলকাচ্ছি...
... মাথা চুলকানির কী হইলো ?? নাহ, আপনি লোকটাকে অপছন্দ না করে পারা গেলো না
অনিকেতদার সম্প্রসারিত মন্তব্য পড়ে ততোধিক সংকুচিত হয়ে পড়ি
নিয়মিত টুকটাক গল্প বানানোর চেষ্টা করি কেবল, অদক্ষ হাত। কাহিনীবিন্যাস কি ভাষাশৈলীর অপূর্ণতা- যাই বলুন, সমস্তই আপনাদের মতো ক্ষমাশীল পাঠকেরা ক্ষমা করে দেন।
গল্প পড়েছেন ও মন্তব্য করেছেন বলে অসীম কৃতজ্ঞতা অনিকেতদা। ভালো থাকবেন
সুচিত্রা সেনকে ভালো না লাগলেও গল্প ভালো লেগেছে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সুচিত্রা সেনের চেয়ে অড্রে হেপবার্ণের দিকেই ভালোবাসা বেশি আমার...
গল্পপাঠের জন্যে ধন্যবাদ।
সচলে আমার প্রিয়তম গল্পকারের আরো একটি প্রভূখন্ড!!
সুহানের লেখার শক্তি কেবল কাহিনী বিন্যাসের কৌশলে নয়, পরতে পরতে কাবতা আর গদ্যের সীমারেখা মুছে দেয়ার অলৌকিক ক্ষমতায় নয়---সুহানের লেখনীর সবচাইতে ঈর্ষনীয় অংশটুকু বোধকরি তার অননুকরণীয় বর্ণনা-ভঙ্গীতে। কিছু উদাহরণ দেখুন নীচে
তোমাকে একটা স্যালুট ঠুকে গেলাম বস।
তুমি সচলায়তনের শ্রেষ্ঠ গল্পকার--অন্তত আমার চোখে!
ফেসবুকের সূত্র ধরে এলাম, পড়লাম। অনেক ভাল লাগল।
ধন্যবাদ ফেসবুকার্বাগ
গল্প বলার ধরনটা দারুণ, পুরো গল্পটা পড়ার সময় মনে হচ্ছিলো কোন একটা রহস্য গল্প পড়ছি। গল্পের কথক বা যে গল্পটা বলছে তার অবস্থান চমকিত করলো। আপনার বাক্য গঠন, শব্দের ব্যবহার ভীষণ ম্যাচুউরড, এই কথা নিশ্চই আগে অনেকে বলেছেন। আমার কাছে গল্পটা অগোছালো লাগেনি, মনে হয়েছে অনেক যত্ন নিয়ে লেখা। মাঝে মাঝে কিছু লাইনে কবিতা ঝলসে উঠেছে, কিন্তু আরোপিত কিছু মনে হয় নি। কিন্তু, গল্পের কাহিনীটা একটু কেমন যেন মার খেয়ে গেছে ভাষার কাছে, মনে হল।
সমানতালে ভাষা আর কাহিনীকে আকর্ষণীয় করে তৈরী করার যোগ্যতা এখনো হয়নি যে
... গল্পটা যত্ন নিয়েই লেখার চেষ্টা করা, তবে ভবিষ্যতে এটা আরো কাটছাঁট করার আশা রাখি। কি করবো, আপনারা গল্পকারেরা নীড়পাতায় কিছু দেন না যে, সেইজন্যেই তাড়াহুড়ো করা
এই অংশটুকু দারুণ.. ঈর্ষনীয়!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ তিথীডোর।
স্রেফ দুর্দান্ত!!!!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
হ, পুরাই রয়েলের শর্বত
দারুণ গল্প লেখ ভাই। একবারে পড়ে ফেললাম, অবাধ প্রবাহ। সুচিত্রা সেনের নির্বাসন-অন্য বিষয়কে ছাপিয়ে গল্পের অন্য একটি সত্ত্বা-সুন্দর গড়ে উঠেছে। তবে গল্প পড়ার আগে সুচিত্রা সেনের সংক্ষিপ্ত জীবনবৃত্তান্ত পড়ে আসতে হল। উনি ভালো থাকুন।
[ আর একটি অপ্রয়োজনীয় অংশ, আমি জানি লেখকদের ইথার খুব প্রিয় একটি শব্দ, অযাচিতভাবে চলে আসে, তবু পারলে শব্দটি বাদ/পরিবর্তন করে দিও। :D]
নিয়মিত গল্প চাই।
অনেক ধন্যবাদ ভায়া, কবিতাপ্রেমী হয়েও অগপ্পো পড়বার জন্যে।
...অমিতাভ চৌধুরীর নেয়া সুচিত্রা সেনের একটি সাক্ষাৎকার পড়ে এই গল্পের ধারণা মাথায় আসে আমার। সিনেমা দেখার মুগ্ধতা তো ছিলোই।
[ ইন্টারেস্টিং, সম্ভবতঃ এর আগে যে কয়েকবার গল্প লেখার অপচেষ্টা করেছি- তার কোনটিতেই ইথার শব্দটা আমি ব্যবহার করিনি। এটা লেখকদের প্রিয় শব্দ, জানতাম না।]
...আবারো ধন্যবাদ ভায়া
কী বিনয়, কী বিনয়, অগপ্পো-অপচেষ্টা কত কিছুই না বলছে দেখ!!! অনিকেতদার মন্তব্য পড়ে আমারই ভালো লাগছে যে এরকম কেউ আমার সহপাঠী। জয়যাত্রা অব্যাহত থাকুক।
[ইথার বলতে যা বুঝাত একসময়, সেটার অন্তর্গত কোনকিছু ব্যবহার করলে লেখকদের ইথার শব্দ ব্যবহার করতে দেখেছি, এঅর্থে প্রিয় বলেছি। তবে অত্যুক্তও হতে পারে।]
আর কবিতাপ্রেমী হা হা, কারণ ইহা লিখতেও কম সময় লাগে, পড়তেও। আজন্ম ফাঁকিবাজ বলে কথা!!!
দারুণ!!!
ধন্যবাদ শিমুল ভাই। (এবং অভিনন্দন )
নতুন মন্তব্য করুন