অথচ বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসের সবচেয়ে সাফল্যমন্ডিত দিন এই ২২শে মার্চ, ২০১২। ঘরের মাঠে এশিয়া কাপের আয়োজক শুধু নয়, বিজয়ীও আমরা হতে পারি- এই বিশ্বাস নিয়েই আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেছে পঞ্চগড় থেকে সেন্ট-মার্টিন। ক্রিকেট পরিবারের দরিদ্রতম সন্তান বাংলাদেশ হঠাৎ যেন হাতে পেয়ে গেছে মিডাসের স্বর্ণ পরশ- যা কিছু স্পর্শ করছেন টাইগারেরা, পরিণত হচ্ছে সাফল্যে। টানা তিন ম্যাচে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপ বিজয় হলে সেই মিডাসকে নিয়েও সিনেমাও বানানো যায়। আশুতোষ গোয়াড়িকার হয়তো টাইগার বাহিনীর সাথে যোগাযোগ করতেন আরেকটি ‘লগান’ এর চিত্রনাট্য প্রস্তুতের আশায়।
দিনের শুরুতে সমস্তটা অবশ্য হয়েছে বাংলাদেশের চিত্রনাট্য অনুযায়ী। মুশফিকুর রহিম টসে জিতে ব্যাট করতে পাঠিয়েছেন পাকিস্তানকে। চেপে ধরেছেন মাশরাফি, নাজমুল আর রাজ্জাক। ইনফর্ম হাফিজ রান তুলতে ঘেমে নেয়ে একাকার। স্বল্প সময়েই বিদায় নাসির জামশেদ, ইউনিস খান আর অধিনায়ক মিসবাহের। শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তখন যেন ফিল্ডিং করছে এগারটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সিঙ্গেল নিতেও পেরিয়ে যাচ্ছে ওভার।
২৯ ওভারে ১০০র কোটা পেরুলো পাকিস্তান। পার করালেন উমর আকমল আর হাম্মাদ আযম। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে দুইজনকেই ফেরালেন সাকিব-রিয়াদ। উইকেটে এলেন অফফর্ম শহীদ আফ্রিদী। এলোপাতাড়ি মারে রানের গতি বাড়িয়ে দিয়ে আফ্রিদী যখন বিদায় নিলেন, তখনো বোঝা যায়নি কতটা যেতে পারে পাকিস্তান। বিপজ্জনক হিটার গুলের দ্রুত বিদায়ের পরেও পাকিস্তানের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২৩৬ পৌঁছলো শেষ উইকেটে আইজাজ চিমা আর সরফরায খানের ৩০ রানের খুবই গুরুত্বপুর্ণ এক জুটিতে। চিরকালের খরুচে শাহাদাত হোসেনের শেষ ওভারে ১৯ রান খরচ হয়ে গেলো এই অনন্যসাধারণ ম্যাচের প্রচুর টার্নিং পয়েন্টের একটি।
অথচ বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেও বোঝাই যায়নি ক্রিকেট কতটা নাটক জমিয়ে রেখেছে এই ম্যাচের জন্যে। বুঝতে দেননি তামিম ইকবাল। খান তনয় একেকটা বাউন্ডারি হাঁকান, বাংলাদেশের যাবতীয় লোডশেডিং এর আঁধার গিয়ে চাপে উমর গুলেদের মুখে। নাজিমুদ্দিন আটকে গেছেন অপরিচিত খোলসে, তামিম ইকবাল তা বুঝতেই দিচ্ছেন না। ভাগ্যের ছোঁয়াও মনে হচ্ছিলো বাংলাদেশের সাথেই আছে আজ। আইজাজ চীমার বাউন্সার তামিমের ব্যাটের পেছনে লেগে চলে যাচ্ছে সীমানা পেরিয়ে, নাজিমুদ্দিনের পাগলা শট হাতে গিয়েও জমা পড়ছে না হাম্মাম আজাদের। এর মাঝেই দারুণ এক উদযাপনের মাঝে দিয়ে টানা চার নম্বর ফিফটি করলেন তামিম।
নাটকের শুরু এরপরেই। ইউনিস খানের হাতে জমা পড়ে ফিরে এলেন নাজিমুদ্দিন, তামিম আর জহুরুল। বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন বিজ্ঞাপণ নাসির হোসেন আর বাংলাদেশের জান সাকিব উইকেটে এলেন। চাপ বাড়ছে।
চাপ বাড়াচ্ছেন আফ্রিদী, আজমল, হাফিজ। ইনফর্ম নাসিরকে দেখালো বিপন্ন, সাকিবকে মনে হচ্ছিলো নিরুপায়। তিন স্পিনার সুযোগ বুঝে বল ফেলতে লাগলেন মাপা লাইন লেংথে। আস্কিং রেট উঠে এলো সাতের ঘরে। একটা দুটো চার মারছেন ব্যাটসম্যানেরা, কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সেটাকে খুবই স্বল্প মনে হচ্ছে।
দশ ওভারে প্রয়োজন চুরাশি। এমন সময়েই, প্রথমবারের মতো, সাকিব নাসিরকে জুটিকে মনে হচ্ছিলো কী করতে হবে তারা তা জানেন। মনে হলো না বেশিক্ষন। নাসির গেলেন। অগোছালো আইজাজ চিমার শিকার হয়ে সাকিব আল হাসান প্রমাণ করলেন তিনি মানুষই, মার্ভেল কমিকসের পাতা হতে নেমে আসা কোন মিউট্যান্ট নন। শেরে বাংলা স্টেডিয়াম তখনো উত্তাল। ক্যাপ্টেন আছেন এখনো।
সেই স্টেডিয়ামের শ্মশানের নীরবতা নামলো যখন মিড উইকেটের উপর তুলে মারতে গিয়ে বিদায় নিলেন মুশফিকও। আশা নেই আর। ৪০ বলে ৬০ দরকার। আশা এলো সম্পূর্ন অন্যদিক হতে। মর্তুজাপুত্র মাশরাফি বোধহয় পণ করেই এসেছিলেন গত বছর দুয়েক সমস্ত বড় জয়ে হাতে-কলমে অনুপস্থিত জ্বালা আজ জুড়োবেন। সে পণে উমর গুলের এক ওভারেই এলো চৌদ্দ রান। নিজের শেষ ওভারে ছোবল মেরে মাশরাফিকে তুলে নিলেন অবোধ্য আজমলই। সমীকরন দাঁড়ালো দুই ওভারে ১৯ এ।
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর রাজ্জাক কেবল এক-দুই এর খেলাতেই এই প্রয়োজন নিয়ে এলেন ২ বলে চার রানে। শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম তখন অবর্ণনীয়। কেউ কাঁদছেন, কেউ প্রার্থনা করছেন, কেউ পাগলের মতন চ্যাঁচাচ্ছেন। এ এক অবিশ্বাস্য দৃশ্য !! এতোটা একতাবদ্ধ থেকে, এতোটা আবেগ শেষ কবে বুকে বুকে ধরেছিলো পদ্মার এই পলিদ্বীপের মানুষ ??
আইজাজ চিমাকে ফাইন লেগের উপর দিয়ে ওড়াতে গিয়ে বোল্ড হলেন রাজ্জাক। শেষ বলে এক রান তুলে পরাজয়ের ব্যবধান দুই রানে নামালেন শাহাদাত। এশিয়া কাপের এবারের বিজয়ী দলের নাম পাকিস্তান লেখা হলো।
সঞ্জয় খানের বহুল জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘সোর্ড অফ টিপু সুলতান’ এর শেষ দৃশ্যে মনে আছে, একলা টিপু দাঁড়িয়ে আছেন মহীশুরের দূর্গের শেষ রক্ষাকর্তা হিসেবে, তার বিশাল তলোয়ারের আওতায় না এসেই তাকে বুলেট ছুঁড়ে ঝাঁঝরা করে দিচ্ছে সাধারণ ইংরেজ সৈনিকেরা।
মাহমুদ্দুলাহকে মনে হলো টিপু সুলতান রুপী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রতীক। ব্যাটে ভর দিয়ে হাটুঁ গেড়ে বসে পড়েছেন পিচের উপরেই। টিভি ক্যামেরায় নীরবে ধরা পরছেন কাঁদতে থাকা নাসির হোসেন। অঝোরে কাঁদছেন অধিনায়ক স্বয়ং। ডেভিড এটেনবরো জানি না জানেন কী না, বাঘেরাও কাঁদে।
রাশভারী আব্বা বলছেন- ছেলেরা দারুণ খেলেছে। ক্রিকেট না বোঝা আম্মা তাকিয়ে আছেন শুণ্য দৃষ্টিতে। ছোটবোন কাঁদছে সশব্দে।
কাঁদছে পুরো বাংলাদেশ।
অথচ আজ তো কাঁদার কথা নয়। ১৬ কোটি মানুষকে নীরব অথচ একাত্ম করে দেয়া ছেলেদের কি কান্না শোভা পায় ??
আজ তোমরা পরাজিত নও টাইগাররা। আজ তোমরা জয়ীই। আজ থেকে বিশ্বের কোন মাঠেই তোমরা ‘অর্ডিনারী’ নও, আজ থেকে এই মহাদেশে ঘোষণা দিয়ে আবির্ভুত হলো আরেকটি ক্রিকেট পরাশক্তি।
ইংরেজ সেনারা অপরিচিত বীরের মৃতদেহের সামনে গিয়ে তার তলোয়ারের খোদাই করা বাঘের মুখ দেখে অনুধাবন করেছিলো, তিনি টিপু সুলতান। অস্ফুটে একজন বললো,’ তিনি তো বাঘই ছিলেন !’
আজ থেকে বহু বহু বছর পর যখন লাল-সবুজের এগারোটা জার্সি ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করবে, তখন হয়ত কোন ক্রিকেট ঐতিহাসিক লিখতে বসবেন সর্বজয়ী সেই দলের ইতিহাস। তিনি দেখবেন ২০১২ সালের ২২শে মার্চের দিনটি সেই ক্রিকেট পাগল জাতির ইতিহাসে খুব উজ্জ্বল হয়ে লেখা। তিনি অবাক হবেন।
আজকের ১৬০ মিলিয়ন বাংলাদেশীর একজনও যদি জীবিত থাকেন সেইদিন, তিনি সেই অনামা লেখককে জানাবেন- অবাক হবার কিছু নেই।
‘ওরা তো বাঘই ছিলো।’
মন্তব্য
ব্যাটিং দেখতে পারিনি, ঘুমিয়ে গেছিলাম। অফিসে এসে থেকে একেকটা রিপোর্ট পড়ি আর চোখে পানি চলে আসে। এই লেখা পড়ে আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলাম না।
জয় বাংলা, সবে তো শুরু।
আর কাঁদিওনা সুহান।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
'ওরা তো বাঘই ছিলো।'
বহু ঝামেলা করে অফিস টাইমে বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখেছি। পরাজয়ে হতাশা আছে কিন্তু এই লড়াইয়ে প্রাপ্তিও কম নয়। আমি ক্রিকেট বোদ্ধা নই, সাধারণ দর্শকমাত্র। কিন্তু বুঝতে পারি টাইগাররা তাদের এই অদম্য স্পিরিট ধরে রাখতে পারলে সামনের দিনগুলো উজ্জ্বল হবে। এক উজ্জীবিত বাংলাদেশকে দেখলাম পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে, ঠিক যেই দেশকে স্বপ্নে দেখি।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ঠিক বলেছেন।
বাঘের হুঙ্কারে কাঁপবে ক্রিকেট বিশ্ব।
আজ থেকে আমরা আরেকটি এশিয়ান ক্রিকেট পরাশক্তি। ইনশাল্লাহ।
আজ কেঁদেছি, আগামী দিন হাসব।
একটু একটু করে বাংলাদেশ হয়ে উঠছে ক্রিকেট পরাশক্তি।
জয় বাংলা, জয় বাংলার ক্রিকেট দল।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
"আজ তোমরা জয়ীই"
এটিই সত্যি হবে একদিন। হবেই হবে।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আমরা করব জয়- একদিন
facebook
_________________
[খোমাখাতা]
কি পরিমান খারাপ লাগছে লেখার ভাষা নাই। মনে পড়েনা শেষ কবে চোখ ভিজেছে, হাত পা ছড়ায়ে কিছুক্ষণ কাঁদতে পারলে হয়তো কিছুটা হাল্কা লাগতো। আপনাদেরতো তবু ও আসে পাশে বন্ধুরা আছে সান্ত্বনা দেবার আমার সেটাও নেই। এখানের বাঙ্গালীদের বাসায় পাকিস্তানীরা আমন্ত্রিত হয়, এরা বলে ভাইয়ে ভাইয়ে ক্রিকেট হার জিত সবই আমাদের। আমি বলেছিলাম পাকিস্তানীদের যারা ভাই বলেন তাদের মুখে মুতে দিতে আমার এতটুকু বাধবেনা
আফসোস! বার বার মনে হয় শাহাদাত বোলিং খারাপ করেছে তো কি শেষ বলে ৪ পিটায়ে নিলেই সব ধুয়ে মুছে যাবে।
হলনা... বড়ই মন খারাপ। বিশেষ করে ফেইস বুকে সাকিব আর মুশফিকের ভেজা চোখের ছবিটা দেখলে স্বাভাবিক থাকা খুব কষ্টের
রান তাড়া করার সময়ে বাংলাদেশের ব্যাডলাক ছিল। নাজিমুদ্দিনের ক্যাচ পড়ল, এল-বি-ডাব্লিউ নাকচ হল, বরং ও তাড়াতাড়ি আউট হলেই ভাল ছিল। শাহাদাতের তিনটে নো-বল, যেখানে পাকিস্তান করেছে একটা। ফ্রন্টফুট নো বলে এখন এত পেনাল্টি যে ওটা ক্ষমাহীন অপরাধ। শেষ বলের আগের বলে রাজ্জাক সরে জায়গা করে নিল, ফাইন লেগে খেলার মত বল ছিল, বলটা ব্যাটেও লেগেছিল। বলটা উইকেটে না লাগলে কয়েক সেন্টিমিটার এদিক-ওদিক হলেই বাউন্ডারিতে চলে যেত।
ইউনুস খান কিছুদিন আগে বলেছে আই সি সি-র উচিত বাংলাদেশের টেস্ট খেলার অধিকার কেড়ে তা আফগানিস্থানকে দেওয়া উচিত। উত্তরটা মুখের ওপরেই দেওয়া গেল না। অথবা তোলা রইল ছাব্বিশে সেপ্টেম্বরে আবার যখন বাংলাদেশ খেলবে পাকিস্তানের সাথে - টি-২০ বিশ্বকাপে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
শাহাদাতরে দোষ দিয়ে লাভ নাই আসলে। সে পুরো টুর্নামেন্টেই এক্সপেন্সিভ ছিলো। এরপরেও তাকে শেষ ওভারে বল করতে দেয়াটা অনেক বড় জুয়া ছিলো, যেখানে জুয়ার দানটা প্রতিকূলে যাওয়ার সম্ভাবনাই ছিলো বেশি। এর পরেও অনেক কিছুই হতে পারতো, হলো না। কেনো হলো না, সেই সবের হিসেবে মন মানে না। থেকে থেকে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে বারবার। আর সেই মন খারাপটা বের হচ্ছে চোখ দিয়ে, এ্যাকুয়া ভিট্রিয়াস হয়ে! কেমনে মেনে নেই...?
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সুহান ভাই, সাত সকালে আবার কাঁদালেন
কাল কেঁদেছি খেলা শেষের পর, আজ আবারো কাঁদলাম আপনার লেখা পড়ে।
তবে এইতো সবে শুরু "বদলে যাওয়া বাংলাদেশ ক্রিকেট" এর।
জানি এরপর এদের খেলা দেখে আবারো কাঁদব, তবে সেটা হবে আনন্দাশ্রু ।
নির্ঝরা শ্রাবণ
যে চোখের পানিটা অনেক কষ্টে আটকে রেখেছিলাম, আপনার লেখা পড়ে সেটা আর আটকে রাখা গেল না!
ব্যাপার্না, এটা সবে শুরু। ইতিহাস আমরাই গড়বো
--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।
কখনো ভাবিনি একটা ম্যাচের পরাজয় এভাবে একটা সমগ্র জাতিকে এত বিরাট একটা অনুভুতির স্বাধ দিতে পারে। ঢাকার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত, বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, পশ্চিমবঙ্গ থেকে আসাম, এশিয়ার শেষ সীমা থেকে আমেরিকার শেষ সীমা পর্যন্ত বাঙালিকে এভাবে আমি কখনো এক সাথে জিততে দেখিনি। ভাবছি, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর এটাই কি আমাদের সবচেয়ে বড় বিজয়?
আজ থেকে বহু বহু বছর পর যখন লাল-সবুজের এগারোটা জার্সি ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করবে, তখন হয়ত কোন ক্রিকেট ঐতিহাসিক লিখতে বসবেন সর্বজয়ী সেই দলের ইতিহাস। তিনি দেখবেন ২০১২ সালের ২২ মার্চের দিনটি সেই ক্রিকেট পাগল জাতির ইতিহাসে খুব উজ্জ্বল হয়ে লেখা। তিনি অবাক হবেন।
আজকের ১৬০ মিলিয়ন বাঙ্গালীর একজনও যদি জীবিত থাকেন সেইদিন, তিনি সেই অনামা লেখককে জানাবেন- অবাক হবার কিছু নেই। ওরা তো বাঘই ছিল।"
সুবিশাল হিন্দুস্থান (!) অতিক্রম করে পাকিস্তান হতে বাংলাদেশিদের জন্য যে পরিমাণ ভালবাসা আসছে তাতে মনে হচ্ছে হায় এই ভালবাসার এক কণাও যদি ৭১ এ থাকত।
ভূতের মুখে রাম নাম-
Returning to Pakistan, in GEO news interview, Pakistan Cricket Team captain said, "Asia Cup win, what is it? I won the Cup, but Bangladesh has won all hearts. They are the real champion. I do not think any team had won this much popularity by losing any final in any format of game." He also said, "seeing everyone's love and affectionate towards Bangladesh Cricket Team, we are feeling guilty of winning the Asia Cup. Game is all about winning or losing. I just guess it was not their day but they had taken their cricket to another level and I wish I could be a part of Bangladesh Cricket Team right now."
বাংলাদেশ ক্রিকেটের সুদিন চলে এসেছে। গতকাল মুশফিকের কান্না দেখে খুব খারাপ লেগেছে।
খেলায় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের শেষ ১০ ওভার দেখেছি, অসাধারণ অনুভূতি, শেষ বল পর্যন্ত আশা ছিলো জিতবেই, কিন্তু হলোনা, আফসোস নেই, ওরা করে দেখিয়েছে, আবার করেই দেখাবে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
দিনের পর দিন নিজেকে বেশ অনুভূতিহীন মনে হতো আজকাল। কিন্তু গতকালের ম্যাচ আর তোর এই লেখা পড়ে এখন মনে হচ্ছে, সব অনুভূতি এখনো ভোতা হয়ে যায়নি।
ধন্যবাদ টাইগারদের।
ধন্যবাদ লেখককেও।
আমরা ক্লাস ওয়ান থেকে ইউনিভার্সিটির তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া সব ভাইবোন মিলে লেখাটা একসাথে পড়লাম। তারা সবাই প্রতিক্রিয়া জানাতে চায়।
মাইশা-বাংলাদেশের খেলা দেখে মন ও চোখ দুটোই ভরে গেলো। আনন্দ ও কান্নায়! তাই আমরা সবাই কান্নাটাকে ভুলতে বেড়াতে যাবো।
লাবিব ও রামিশা- মুশফিকের দল কান্না করে লাভ নেই। আমরা তোমাদের পাশেই আছি।
মীম- আমরা এর পরে আরো ভালো খেলা দেখার আশায় আছি।
নীলম- বাঘেরা সবসময় বাঘই থাকে। বাঘেরা কখনো হার মানেনা।
Last koiek ta line share dite chai...lekhoker aunomuti chaitechi plz
এখনো পর্যন্ত ব্লগার হিসেবে যত ব্লগ লিখলাম, আমার মনে হচ্ছে এই মন্তব্যটা প্রাপ্তি হিসেবে সকলের সেরা।
এতোগুলো বিভিন্ন বয়েসের মানুষকে কীভাবে যেন আমাদের ক্রিকেট দল একত্রিত করে দিলো- এটাই তো কালকের ম্যাচের সবচেয়ে বড় পাওয়া, তাই না ??
মাইশা, লাবিব, রামিশা, মীম, নীলম- আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
সব ম্যাচের ফলাফল স্কোরকার্ডে লেখা থাকে না ।
সাবাশ বাংলাদেশ ।
এই টিমের প্লেয়াররা কবে দুঃস্বপ্ন ছাড়া ঘুমাতে পারবে কে জানে!
শাহাদাতকে হয়তো আমৃত্যু তাড়িয়ে বেড়াবে।
রাজ্জাক ভাববে কেন বল্টা ওভাবে খেললাম।
রিয়াদ ভাববে কেন আমি স্ট্রাইক রাখলাম না।
সাকিব ভাববে কেন দুইটা রান বেশি করলাম না।
তামিমও তাই। নাজিমুদ্দিন ভাববে কেন স্লো খেললাম, কেন পারলাম না!
নাসির ভাববে, কেন স্লো খেললাম এত!
মাশরাফি ভাববে কেন আউট হলাম।
মুশফিক ভাববে, কেন শাহাদাতকে শেষ ওভার দিলাম, কেন নিজে তুলে মারলাম, কেন টিকে থাকলাম না।
জহুরুল ভাববে কেন বুঝলাম না বলটা!
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
অসাধারন!!! আহা আমি যদি এমন লিখতে পারতাম!!!
বাঘগুলার কৃতিত্ব এখানেই, আজকে আমার এক বন্ধু মন্তব্য করল, "আমি যদি মেয়ে না হয়ে একজন ছেলে হতাম, তাহলে হয়তো একজন ইঞ্জিনিয়ার না হয়ে একজন সাকিব আল হাসান হতে চাইতাম!!"
মন খারাপ না করতে টানা ৮ ঘন্টা ঘরদোর বন্ধ করে তাশ পিটাইলাম,৪০ ঘন্টা নেটবিহীন থেকেও লাভ হইলো না,মনটা খারাপই থেকে গেল।
যাকগে,ব্যাপার না,এই বার কাদি নাই,নেক্সট বার কাদবো,মাগার খুশীতে।দেখিই না অপেক্ষা করে,কি হয়
নতুন মন্তব্য করুন