ডিরেক্টরের বিদায়

সুহান রিজওয়ান এর ছবি
লিখেছেন সুহান রিজওয়ান (তারিখ: শনি, ২৮/০৪/২০১২ - ১২:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আজ বিকালে ক্লাব সভাপতি সান্দ্রো রাসেল নিশ্চিত করেছেন খবরটা, ফুটবল ক্লাব বার্সেলোনার কোচের দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়েছেন জোসেপ গার্দিওলা। পরিসংখ্যানের হিসাবে ক্লাব ইতিহাসের সফলতম কোচ, সমর্থকদের প্রিয় ‘পেপ’ এই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিচ্ছেন চলতি মৌসুমের শেষেই- ৩০ জুনে। দায়িত্বকালের চার বছরে ক্লাবের শো-কেসে পেপ জমা করেছেন ১৩টি শিরোপা- তেরো সংখ্যাটিকে অশুভ করতে আগ্রহী পরিসংখ্যানবিদেরা তাদের সর্বশেষ উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন এই তথ্যটিকেও।

জোসেপ গার্দিওলাকে আগেই চিনতো বার্সেলোনার লোকেরা। ক্রুইফের স্বপ্নের দলের অপরিহার্য অংশ ছিলেন এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। ইয়োহান ক্রুইফ এই শিষ্য সম্পর্কে বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে, ‘এই ছেলের পা’র চাইতে মাথাটাই অনেক দ্রুত চলে মাঠে।’ বার্সেলোনার দায়িত্ব নিয়ে এই কথাকেই সত্য প্রমাণ করে দিলেন পেপ। নিজে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হলেও নিজের অধীনে বার্সেলোনার ফুটবল দর্শন করে তুলেছিলেন তিনি একটি ছোট্ট বাক্য। ‘আক্রমণ, আরো বেশি আক্রমণ।’ প্রখর দূরদৃষ্টিতে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মাশকেরানোকে তিনি বানিয়ে দিলেন দারুণ এক ডিফেন্ডার, দানি আলভেজকে প্রায়ই দেখা গেলো স্ট্রাইকার হিসেবে ডানপ্রান্তে, সার্জিও বাস্কুয়েটস কখনো মাঝমাঠে আক্রমণ শানাচ্ছে- কখনো কাজ করছে পুরোদস্তুর ডিফেন্ডার হিসেবে। এইরকম ছোটাখাটো উদ্ভাবনে পিছপা কখনোই ছিলেন না পেপ, যার আরেকটি উদাহরণ হতে পারে রোমের সেই উয়েফা ফাইনালের আগে খেলোয়াড়দের উদ্বুদ্ধ করতে ‘গ্লাডিয়েটর’ থিমের এই ভিডিওটা দেখানো।

পথের শুরুটা সহজ ছিলো না গার্দিওলার। ফ্রাঙ্ক রাইকার্ডের গরম জুতোতে পা গলানোর পরের প্রথম কয়েক হপ্তা সুবিধের কাটেনি বার্সেলোনার। সাংবাদিক গ্রায়েম হান্টারের ‘বার্সা- দ্যা মেকিং অফ দি গ্রেটেস্ট টিম’ বইতে বললেন সামান্য একটা ঘটনার কথা- যেটি পালটে দিলো পুরো দলের দর্শনটাই। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নক-আউট পর্বে জায়গা করতে হলে হারাতে হবে সুইস ক্লাব বাসেলকে- তাদের নিজের মাঠে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ঠিক ম্যাচের আগের দিনেই বাবার মৃত্যু সংবাদ পেলেন দলের গোলকিপিং কোচ জুয়ান কার্লোস। সেদিকে যেতে হলে ৫০০ কিমি বাড়তি ঘুরতে হবে বার্সেলোনা দলকে। সিদ্ধান্ত নিয়ে দেরী করেননি পেপ। হ্যাঁ, অন্ত্যস্টিক্রিয়ায় যেতে হবে পুরো দলকেই। বার্সেলোনা দলটা শুধু একজনের নয়, দলটা সবার। ছোট্ট ঘটনাই বটে, তবে খুব সম্ভব রোনালদিনহো আর ডেকোর মত দুই দারুণ গুরুত্বপূর্ন খেলোয়াড়কে হারানোর পর এলেমেলো হয়ে পড়া দলকে একতাবদ্ধ করতে দরকার ছিলো এটার।

গার্দিওলার অর্জনের ফিরিস্তিটা পরিসংখ্যানের কাছেই থাক। এক মৌসুমে ছয়টি শিরোপা জেতা একমাত্র কোচ, সর্বকনিষ্ঠ কোচ হিসেবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়, প্রথম কোচ হিসেবে টানা চারটি এল ক্লাসিকো জেতার রেকর্ড- এরকম আর বহু উদাহরণ থাকতে পারে। অন্যদের থেকে তাকে আলাদা করে দিচ্ছে তার ফুটবল দর্শনটা। রাইকার্ডের অধীনে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলে যাওয়া বার্সাকে পেপ ভুলিয়ে দিলেন বহুক্ষণ বল পজেশন রেখে খেলার তত্ত্ব দিয়ে, সাথে রইলো ক্রমাগত উপরমুখী প্রেস করতে থাকা ডিফেন্স লাইন। সরলতম ভাবে ফুটবল খেলাটা হাতেকলমে শিখাতে চাইলে বিজ্ঞাপণ হতে পারতো গার্দিওলার বার্সেলোনাই। ছন্দময় এই পাসিং ফুটবলের নাম হয়ে গেলো টিকি-টাকা।

এই টিকি-টাকা জাদুতেই ভর করে প্রথমবারের মতোই স্পেন জিতে নিলো বিশ্বকাপ। ভিসেন্তে দেল বস্কের একাদশে ৭টা বার্সেলোনার খেলোয়াড় ছিলো বলেই নয় শুধু- যে কায়দায় খেললো বিশ্বকাপে স্প্যানিশরা, এর আড়ালেও চাইলে খুঁজে পাওয়া যাবে গার্দিওলার দর্শন।

৪ বছরে এখনো পর্যন্ত ১৩টি শিরোপা জিতে সর্বকালের সেরা ফুটবল দলের ছোট্ট তালিকাতে উঠে এসেছে পেপের দল। ওয়েম্বলির ফাইনালে ৩-১ গোলে বার্সেলোনার সাথে পরাজয়ের পর ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিটি হাসিমুখে সায় দিলেন এই তত্ত্বে। স্যার এলেক্স বলেই দিলেন, সিকি শতাব্দীর কোচিং ক্যারিয়ারে এতো আক্রমণাত্বক- এতো অসাধারণ দল আর দেখেননি তিনি। গার্দিওলা চিরকালের বিনয়ী। 'সর্বকালের সেরা হতে চাই না, লোকে ১০-১৫ বছর মনে রাখলেই আমরা খুশি'।

এই চিরকালের গুডবয় ইমেজটাই ট্রেডমার্ক গার্দিওলার। চুইংগাম চিবোনো স্যার এলেক্সের ব্যক্তিত্বের প্রকটতা নেই তার মাঝে, নেই জোসে মরিনহোর মতো সর্বজয়ী আভিজাত্য। টুইডের হাল ফ্যাশনের স্যুট আর সরু টাইতে ডাগ-আউটের পেপ একদম সাধারণ ছিলেন; ছিলেন দর্শক আর খেলোয়াড়দের প্রিয়মুখ। মনে পড়ে ৫-০ এল ক্লাসিকোর সেই দৃশ্য। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো থো-ইনের বল নিতে গেয়ে ধাক্কা মেরেছেন গার্দিওলাকে, মুহুর্তে উত্তেজনা মাঠে, বার্সার খেলোয়াড়েরা মারমুখী হয়ে ঘিরে ধরেছে ক্রিশ্চিয়ানোকে। আর এত হট্টগোলের মাঝে থাকা খোঁচা খোঁচা দাঁড়ির পেপ মাথা চুলকাচ্ছেন আনমনে- কী ঘটেছে, সেটা স্পর্শই করেনি তাকে যেন !

অগ্রজ ইশতিয়াক রউফ গার্দিওলার দর্শনের তুলনা দিতে গিয়ে ব্যবহার করেছেন একটা চমৎকার উপমা। কায়রোর রাস্তায় ইন্ডিয়ানা জোনসের মুখোমুখী এক চাবুক হাতের ডাকাত। চাবুক ঘোরাচ্ছে সে কায়দা কানুন দেখিয়ে। ইন্ডিয়ানা জোন্সের এতো সময় নেই হাতে। ঝটপট গুলি করে উত্তেজনায় পানি ঢেলে দিলো সে। গার্দিওলা, শেষ পর্যন্ত একবিংশ শতাব্দী ছিলেন ওই চাবুকওয়ালাই। তার কায়দা বুঝতে হয়তো সময় নিয়েছে সাফল্যকামী ফুটবল বিশ্ব, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই সুন্দর ফুটবলকে দ্রুত ফলকামী ফুটবল হারিয়েছেই একসময়। গার্দিওলার বার্সেলোনাকে তাই সময়ে সময়ে মনে হয়েছে অসহায়। তাই বলে এতে করে প্রতিপক্ষের কৃতিত্ব ছোট হয়ে যাচ্ছে না অবশ্যই, দিনের শেষে টিকে থাকেন তো ইন্ডিয়ানা জোনসই !

তবুও ফুটবল রোমান্টিকদের দায় থেকেই সবসময়েই কিছু চাবুকওয়ালা আসেন। একবিংশ শতাব্দীতে এই দায়টা মিটিয়েছিলেন জোসেপ গার্দিওলা।

রাতের পর রাত জেগে দেখা সেই ছন্দময় বার্সেলোনার ফুটবল অর্কেস্ট্রার সেই পিছনের মানুষটি আজ বিদায় নিলেন, তাকে সশ্রদ্ধ ধন্যবাদ জানাই। টিকি-টাকা ফুটবলকে অপছন্দ করতেই পারেন অনেকে, কিন্তু শ্রদ্ধা না করার উপায় নেই আপনার।

ধন্যবাদ জোসেপ গার্দিওলা। ডাগ-আউটের পাশে দাঁড়িয়ে আপনার হাত-পা ছোঁড়া কখন যে আমাদের দিনযাপনের অংশ হয়ে উঠেছিলো, বুঝিনি সজ্ঞানে।

আপনার অর্কেস্ট্রা আমাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলো গত কয়েক বছর, যেমনটা ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই করবে আরো অগুনতি ফুটবলপ্রেমীকে। ভবিষ্যতে হয়তো আপনাকে আবার ডাগ-আউটে দেখা যাবে কোনদিন। ততদিন রইলো শুভকামনা। আর বিদায়।

গুডবাই, দ্যা ডিরেক্টর।


মন্তব্য

হিল্লোল এর ছবি

পেপ গার্দিওলার প্রতি এখানে শ্রদ্ধা জানালে তার জানার সম্ভাবনা কম; তাই সেটা মনেই থাক। তবে আপনার লেখার প্রতি এই বেলা শ্রদ্ধাটা জানিয়ে যাই।

তারেক অণু এর ছবি

আশা করি ছুটি কাটিয়ে আবার একদিন তিনি ফিরে আসবেন ন্যু ক্যাম্পে, মাতিয়ে তুলবেন ফুটবল বিশ্ব।

অনিকেত এর ছবি

স্যালুট গার্দিওলা---এই গ্রহের এগারোটি মানুষকে দিয়ে অন্য গ্রহের খেলা দেখিয়ে দেবার জন্য
স্যালুট গার্দিওলা---সাফল্যের বিষে নিজের অন্তর-আত্মাকে বিষাক্ত না করার জন্যে
স্যালুট গার্দিওলা---দিনের শেষে নেহাৎ-ই এক খেলা পাগল বল-পায়ে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো 'সেই লোকটা' হয়ে থাকার জন্য!!

অনেক সুন্দর লেখা সুহান, এমন এক মুহূর্তে এমন একটা লেখারই দরকার ছিল।

দিফিও-1 এর ছবি

ক্লাব ফুটবলে এর থেকে ভাল রুপকথা রচনা করা আসলে মুশকিল----কোটি কোটি টাকা ওড়ে যে খেলায়, "টাকা-যার-খেলোয়াড়-তার" মূলমন্ত্রে আজকাল লীগগুলিকে যেভাবে চলে, তার মধ্যেও ক্লাবে ফুটবল একাডেমীর সেই ছোট্ট ছেলেটা, যে কিনাএকসময় তাদের বলবয় ছিল, ধীরে ক্যাপ্টেন হল, সে আবার কোচও হল এমন একটা দলের যার মেরুদন্ডটা সেই একাডেমীরই তৈরী, আর তার উপর সেই মোহনীয় টিকিটাকা ফুটবল দিয়ে বিশ্বজয়----নাহ, প্রায় রুপকথাই বটে।

মরিনহোর শত প্ররোচনা স্বত্তেও নিজের ভদ্রতা রক্ষা করে চলেছেন সবসময়। এই ধরনের লোক ফুটবলে আরো বাড়ুক।

Man in the Iron mask এর ছবি

পরঠম আলু কি লিকসে েদখুন-
সফল কোচ হতে হলে নামী-দামি খেলোয়াড় হতে হবে, এমন কথা অবশ্য নেই। গার্দিওলা নিজেই এর প্রমাণ। বার্সার ইতিহাসে সফলতম এই কোচ ফুটবলার হিসেবে মোটেই সফল ছিলেন না। সাবেক এই মিডফিল্ডার স্পেন জাতীয় দলের হয়ে ৪৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলেছেন। গোল করেন মাত্র পাঁচটি। ফুটবলার গার্দিওলারও ক্লাব জীবন শুরু হয়েছিল বার্সেলোনা ‘বি’ দল দিয়ে।

http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-04-28/news/253713। বাবা রে বাবা। পেপ রে দেখি সব খেলায় গোল দিতে হইব। সারসে হলডিং মিডফিলডার রে গোল করতে হইব না হইলে বাজে খেরোয়াল।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অসম্ভব ভালো লাগলো পোস্টটা। চলুক

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কীর্তিনাশা এর ছবি

গার্দিওলা নতুন যে টিমের দা‌‌য়িত্ব নিতে যাচ্ছেন সেই টিমের খেলা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে বসে আছি।

বার্সাও নিশ্চই তাদের খেলাটা ধরে রাখতে পারবে, তাদের নতুন কোচ তো গার্দিওলার সহকারী ছিল।

ধন্যবাদ সুহান লেখাটার জন্য। ক্রীড়া বিষয়ক লেখায় আপনি একজন বস !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তানজিম এর ছবি

হ্যাটস অফ টু পেপ। মুগ্ধতার রেশ থাকতে থাকতেই সৃতির সোনালি ফ্রেমে যিনি নিজেকে বাঁধাই করে ফেলেছেন।
সুহানের আরেকটা দুর্দান্ত পোস্ট, আশা করি স্যার অ্যালেক্সের মত দীর্ঘদিন আপনি আমাদের জন্য লিখে যাবেন।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

হিল্লোল, ঘণুদা, অনিকেতদা, দিফিও, লৌহমুখোশ মানব, অপ্রদা, রাতস্মরণীয়দা, কীর্তিনাশা ভাই, তানজিম- সবাইকে মন্তব্য করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

পেপকে নিয়ে অনেক কিছুই লেখার ছিলো, হঠাৎ করে লিখতে বসে তার প্রতি মুগ্ধতাটা ঠিক প্রকাশ করতে পেরেছি বলেও মনে হচ্ছে না। আশা করি আবার একদিন ন্যু-ক্যাম্পের দায়িত্বে ফিরে আসবেন তিনি।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সেই কতকাল আগে, সম্ভবত ১৯৮২র বিশ্বকাপ ফুটবলে সাম্বার ছন্দে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল দেখে সেই ছন্দোময় ফুটবলের ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। তারপর এক সময় ব্রাজিল তার ফুটবল দর্শন পাল্টে ফেললো। সুন্দর ফুটবল নয়, দিনশেষে কাপ জেতাটাই মূল উদ্দেশ্য হয়ে উঠলো তাদের।
অনেক দিন পরে আরেক ধরনের ছন্দোময় ফুটবল উপহার দিলো বার্সা, যার মূল কারিগর পেপ গার্ডিওলা আর মাঠে এর অনুবাদ করলো মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তা সহ দলের আর সবাই।
পেপ, তোমাকে ফুটবল দর্শকরা অনেকদিন মনে রাখবে শুধু 'পেপ সিস্টেম' এর জন্যই নয়, ডাগ আউটে তোমার নম্র, ভদ্র আচরনের জন্যও। পেপ, যেখানেই থাক ভালো থেক।
সুহান, সময়োপযোগী সুন্দর লেখাটির জন্য আপনার প্রতি রইল মুগ্ধতা।

Md. Mujib Ullah এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন। পেপের জন্য শুভকামনা। পেপ নতুন মিশনে সফল হতে পারবেন কিনা তা নির্ভর করবে তিনি কোথায় আগামীতে কোচ হবেন তার উপর। লেখককে ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।