ফাইভ সিক্সেই ধার করা ক্যাসেট আর সামনের বিল্ডিঙের তিনতলার ভাইয়াটার জোরালো স্টেরিওর কল্যাণে মুখস্থ বেলা বোস আর বারান্দায় দাঁড়ানো রঞ্জনার গান। আম্মা পত্রিকার পাতায় দেখান ইন্টারে স্ট্যান্ড করা ছাত্রের বচন। আমি দিনে সাত ঘন্টা পড়াশোনা করেছি আর বড় হয়ে দেশের সেবা করতে চাই জাতীয় আজাইরা কথার মাঝে চোখ আটকে যায় আরেকটা লাইনে। অবসরে গান শুনি- অঞ্জন দত্তের।
নিজে ক্যাসেট কিনলাম মনে হয় ক্লাস এইটে। নিউমার্কেটের নীচতলার ওভারব্রিজের সাথের দোকানটার নাম ‘গীতাঞ্জলি’ ছিলো মনে হয়, মনে নেই। মনে আছে দিনরাত বাজিয়ে বাজিয়ে অস্থির করে ফেলছি বাসার সবাইকে ক্যাসেটের এপিঠ-ওপিঠ। সবচেয়ে মিষ্টি লাগে ‘তুমি না থাকলে’ গানটার গিটারে হাত বোলানো, সবচেয়ে মনখারাপ হয় শংকর হোটেলের নীলচে পাহাড়ের মেয়েটার জন্যে গাওয়া ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’ গানটা শুনলে। বুকের ভেতরে সবচেয়ে বেশি ভারী হয় ‘শুনতে কি চাও তুমি’ গানটা শুনতে গেলে- কেনো, কে জানে।
ক্লাস নাইনে অত্যন্ত যুক্তিসঙ্গত ভাবে জীবনকে অত্যন্ত অর্থহীন মনে হয়। নতুন স্কুলের নতুন বন্ধুদের সাথে খাতির জমে, আব্বাকে দিয়ে দেশের বাইরে থেকে আনাই ওয়াকম্যান। খাতার ভেতর চ্যাপ্টা গোলাপ খুঁজে পাই না আমরা, মাথার ভেতরে এলভিস প্রিসলিকে নিয়ে উদাস মুখে ঘুরে বেড়াই। ছুটির দিনে দুপুরবেলায় খুব মনটন খারাপ হলে ক্যালসিয়ামের গানটান বাজিয়ে মন ভালো করার চেষ্টা করি। খোঁজখবর করে জানলাম বন্ধুদের সবার অবস্থা একই রকম, ল্যাংচে হেঁটে- ডিগবাজি দিয়ে- ভেঙচি কেটে আজকাল নাকি কারোরই খ্যাকখ্যাক হাসি পায় না। ভালোই মুসিবত। এরমাঝে কোন এক বদমাশ স্কুলের ব্যাগ থেকে চুরি করে নিয়ে গেলো সাধের ওয়াকম্যান।...
এই ওয়াকম্যান চিনিয়েছিলো মালা, মেরি এন আর ঢাকা-১২১৫ এর জয়িতাকে। মৌলালির মোড়টা মনে হতো খুব চেনা, ফেলুদার গোরস্তানে সাবধান পড়তে গিয়ে আর্কাস সাহিব-মার্কাস সাহিবের সময় মনে পড়ে এংলো পরিবারের নোনা দেয়াল থেকে ঝোলানো মলিন যিশুর কথা। এলোমেলো কত সব, অন্য লোকের গানে অঞ্জন আমাদেরকেই খুঁজে নিয়েছেন তার পুরোনো গীটারে।
নটরডেমের করিডোরে গেলে দুনিয়া বদলায় ম্যান। ডিজুসের রাত জেগে কনফারেন্স মাত্র চালু হয়েছে সে সময়, সাইন্স ফেয়ারের দিন গোণে ছেলেরা। অঞ্জন দত্ত অটুট ইস্টার্ণ প্লাজার বিগ বাইটের মতন, সত্যজিতের ছবি দেখতে বসে আধুনিক সিনেমায় দুষ্টু গানের প্রভাব ধরে হাসাহাসি। ঘুরেফিরে সাত দিন দাশবাবুর ও কেবিনের মতোই ছেলেপিলে খুঁজে নিয়েছে কত ফাস্টফুড শপ, প্রচুর জায়গা আমাদের চারশো বছরের পুরোনো এই ঢাকায়।
ঢাকার বুকেও পরিবর্তন আসছে, টের পাই। নর্থ সার্কুলার রোডের বাড়িগুলো ভেঙ্গে নতুন এপার্টমেন্ট উঠে। রিকশায় পাশ দিয়ে যেতে যেতে টের পাই এরকম কোন বাড়িতেই হয়তো বেহালার মাস্টার জেরেমি না হলেও শহীদুল জহিরের বান্দরের দুধ খাওয়া পোলা চানমিয়া আর জুলি ফ্লোরেন্সের ছায়া পড়ে আছে। ঢাকা বদলাচ্ছে, বখাটে ছোকরার ঠাট্টা তামাশা করার জায়গা নেই আর ভূতের গলিতে।
সব মিলে যায়। টার্ম ব্রেকের মাঝের সময়ে রাত জেগে ঢাকা শহরে হাঁটাহাঁটির সময়ে বিমলাদের চোখে পড়ে, কলাবাগানের জামে আটকে থাকা সময় ডিজেলের ধোঁয়া অগ্রাহ্য করা টোকাই আর আজিমপুর কলোনীতে দুপুর বেলা বেহালা বাজিয়ে আসা লোকটা- সব মিলে যায়। কীভাবে ??
পাগল করা সুর নেই গানে, গায়কীও চলনসই বড়জোর- তারপরেও কে জানে কোন ইন্দ্রজালে অঞ্জন দত্ত মাতিয়ে রাখেন আমাকে- আমাদের কয়েকজনকে। ফাঁকা ক্যাম্পাসের ড়্যাগ কর্ণারে ২৪৪১১৩৯ এর সুরে সিগারেটের ধোঁয়া ঘন হয়ে উপরে ওঠে শুধু, দীপ্তের সাথে হঠাৎ হেঁটে টিএসসি বিকেলেও লোকটা পিছু ছাড়ে না। জয়িতার সবুজ রঙ বিকেল ছোট করে দেয়। একদিন বৃষ্টিতে হঠাৎ কারো কাছে ধরা পড়ে যেতে বড় ইচ্ছে করে।
কয়েকদিন ধরে মন বিক্ষিপ্ত খুব। ইটারনাল সানশাইন অফ স্পটলেস মাইন্ড- নিয়ে এসেছি দেখবো বলে। দু’মিনিট দেখে বন্ধ করে দিলাম। পেলের আত্মজীবনী পড়া শুরু করেছিলাম, অর্ধেক গিয়ে আটকে গেলাম। ফেসবুক গুঁতাই, টি-টুয়েন্টি দেখি- মন বসে না কিছুতে। আমাদের ফিউচার খুবই অপরিষ্কার, ভরসা পাচ্ছি না কোনো...
তারপর একটু আগে ছেড়ে দিলাম প্লে লিস্ট, অঞ্জন দত্তের। শুনে যাচ্ছি।
কতকিছু পালটে গেছে। মেজোমামা নেই, আজিমপুরের টেপ-টেনিসের বল আর চোট্টা আম্পায়ার নিয়ে টেস্ট ম্যাচ নেই, তিন গোয়েন্দা নেই, এডাম গিলক্রিস্ট নেই। অঞ্জন দত্ত থেকে গেছেন দেবলীনা, ববি রায় আর ঝগড়াঝাঁটির গান নিয়ে। অনুভব করি এই শহরেরই অন্য কোথাও কেউ একজন গভীর আবেগে শুনছে চ্যাপ্টা গোলাপের গান, কেউ হয়তো সাদাকালো শহরের লাল-নীল সংবাদটা দিচ্ছে বেলা বোস’কে। তাল কেটে যাচ্ছে সদ্য গীটার বাজাতে শেখা ছেলেটার, কেটে যাচ্ছে আঙুল, দেখতে দেখতে আরো একটা দিন কেটে যাচ্ছে।
এই অসময়ে; এই টি-টুয়েন্টির ব্যস্ত সূচির মাঝে- এই ভড়ং ধরা এপেক আর ন্যাম সম্মেলনের মাঝে- এই প্রচণ্ড অস্থির বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সময়ের মাঝেও অঞ্জন দত্ত একটা জানালার মতন। সেই জানালায় পাশে বাড়ির কান্না শোনা যায়, সেই জানালায় বিকেলের রং হেমন্তে হলুদ আর কেরালার আকাশ একটু বেশি নীল।
অঞ্জন দত্ত আমার মন খারাপের মেঘের মাঝে সেই আকাশ দেখার জানালা। আমার নিজের জানালা-মানুষ...
মন্তব্য
ফিনিশিং টাচ টা দারুন !! মন খারাপ নাকি রে?
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
এই অল্পস্বল্প
দিলি তো ইমোশনাল করে।।।। তুই কুব কারাপ!!! আমার ও কিসু ভালো লাগে না ছাই
অঞ্জন দত্ত আমারো খুব প্রিয় একজন গায়ক। শুধু গিটার আর খালি গলাতেই মাত করে দিতে পারেন।
লেখা চমৎকার হয়েছে সুহান ব্রাদার।
(য-ফলা আসে নাই - নাকি আমার ব্রাউজার ফায়ারফক্সে এমন দেখাচ্ছে?)
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
খুবই প্রিয় আমার।
(য-ফলা দেক্তে পাচ্ছি তো।)
দারুণ... আমার অনেক কিছুও বলে দিলেন...
অঞ্জন আমারও জানালা মানুষ । সময়ে-অসময়ে, মন ভাল বা খারাপে, গুনগুন করে- চিল্লিয়ে, চুপচাপ বা ক্যাচক্যাচ করা সময়ে, রাস্তায়-আড্ডায়, ঘরের কোণে আপন মনে... কখন নয়... সবসময়... সবখানে... অঞ্জন গান গেয়ে যায়... আমি শুনে যাই- অবাক হয়ে শুনে যাই...
ঠিক কথা। "আর যদি দেখ তার কপালে সিঁদুর বলোনা কিছুই তাকে আর, শুধু এই সত্তর টাকা তুমি যদি পার গুঁজে দিও হাতে তার / ট্রেনের টিকিটের ভাড়াটা সে দিয়েছিল কানের মাঁকড়ি বেচে, ভালোবাসার সেই দাম তুমি দিয়ে দিও আমার কাঞ্চনকে"
..................................................................
#Banshibir.
এই চারটা লাইনেই কী সুন্দর একটা গল্প বলে দেয়া যায়
চমৎকার চমৎকার চমৎকার লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ তাসনীম ভাইয়া
নাহ সচলে মন খারাপ করা লেখার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। একবার তাসনীম ভাই তো এইদিকে সুহান! উদাসদা কিছু গরম লেখা না নামাইলে কিন্তু না! লেখায় পাঁচতারা।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
হুহ, চরম উদাস ছাড়া চলছে না।
অঞ্জন আমারও খুব প্রিয়- প্রায় সব গানই চমৎকার লাগে। তবে সবচে বেশি যে গানটা পছন্দের, গানটা বোধহয় একটু আনকমন কারণ অনেকেই দেখি শুনেনি- "বহুদিন পরে হঠাৎ দেখা হলো" । আরেকটা প্রিয় গান- আমার জানলা দিয়ে গোটা পৃথিবী। এই গানটার মতো চমৎকার কথা খুব কম গানে পাইসি।
অলমিতি বিস্তারেণ
'অবান্তর প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করতেই...'- শুন্সি গানটা। এটা অতটা প্রিয় ছিলো না। আর এলবামটার নাম মনে হয় অসময় ছিলো।
সুহানও দেশান্তরী নাকি?
...........................
Every Picture Tells a Story
হাহাহা। এই মন্তব্য পড়ে হেসে দিলাম ভাইয়া।:)
দেশে থাকলেও ইট্টু মনটন খারাপ হইসে আরকি
অঞ্জন দত্তর গান আমার জীবনেরও অনেক সময়টা জুড়ে আছে । গুছিয়ে হয়তো কখনোই লেখা হবে না, আপনার লেখাটা পড়ে একটু শান্তি পেলাম।
গুছিয়ে লিখতে পারলাম না তো। স্কুলের কত কত স্মৃতি পড়ে আছে ওই গানগুলার সাথে
মনটা খারাপ হয়ে গেল।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
সক্কালসক্কাল এত্ত ভালো একটা মনখারাপ করা লিখা পড়লাম। অনেকগুলা পুরানো গানের কথা মনে পড়ে গেছে এখন। আমি ও স্কুলে থাকতে বাসার টুইনওয়ান্টা বগলদাবা করে ঘুমাতাম, তোমার মতই এইপিঠ-ওপিঠের গান শুনতে শুনতে সবারে বিরক্ত করে মারতাম ।ইস কীসব দিন ছিল।
টুইন-ওয়ান নিয়ে লিখে ফেলেন ওয়ান্টু করে।
অসাধারণ লাগলো। যখন খুব একা থাকি ' টিভি দেখনা ' শুনি।
এই গানটাও চমৎকার ছিলো।
অঞ্জন আমার খুবি প্রিয় একজন গায়ক। অসম্ভব ক্ষমতা আছে তার প্রতিটা গানেই। যখন মন খারাপ অথবা কারো সাথে ঝগড়া চলছে অথবা হারিয়ে যেতে মন চাইছে দূরে কোথাও , অথবা নির্জন কোন রাতে জেরিনের বেহালা আরও নানা সময়ে নানা রঙে রাঙিয়ে দেয় তার মাতাল করা গান।
অসম্ভব ভালো একটি লেখা। সংগ্রহে রেখে দিলাম। ভালো থাকুন সুহান দা।
অঞ্জন দত্তের গান একসময় খুব ভালো লাগত। তবে আমি ওঁর অভিনয়ে বেশ অনেকটা সময় ধরে মুগ্ধ ছিলাম।
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
আমার কাছে অভিনয় অতটা ভালো লাগে নি। তবে ছবি পরিচালনায় তার মুন্সীয়ানা দেখে অবাক হয়েছিলাম।
"তুমি না থাকলে রবীন্দ্রনাথ কালির দোয়াত মাথায় থুকে হত কুপোকাত" এই লাইনটা প্রথম শুনে হাসতে হাসতে গরাগড়ি দিয়েছিলাম। তার সাথে আমার পরিচয় "ভালোবাসি তোমায়" অ্যালবাম এর মাধ্যমে আর প্রথম যে গানটি শুনেছিলাম সেটা হলো "শেষ বলে কিছু নেই"
এখনো যখন সবকিছু বিচারে, চাওয়া-পাওয়ার হিসাবে নিজেকে ভীষণ ভীষন রকম ব্যর্থ মানুষ মনে হয়, নিজেকেই নিজে বলি, শেষ বলে কিছু নেই।
'মনখারাপের দিস্তা' ছড়িয়ে গেল সবখানে।
তুমি না থাকলে তোমার চিঠি জমানোই হতো না
সুহান যে বছর জন্মেছে এমিল ভাই সে বছর বুয়েটে ভর্তি হবার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। সময়ের পার্থক্য এতোটা হলেও বুয়েটের র্যাগ কর্নারে এমিল ভাইরা ২৪৪১১৩৯ বাজিয়েছেন, আমরা বাজিয়েছি, সুহানরাও বাজিয়েছে। অঞ্জন দত্তের ক্যারিশমাটা এখানেই।
অঞ্জন দত্ত নাকি চল্লিশ বছর বয়েসে গীটার হাতে নিয়েছিলেন। আমার আশা ছিল আমিও চল্লিশ বছর বয়স হলে গীটার হাতে নেবো। তারপর কী হলো সেটা বলার দরকার পড়ে না। আমি যে অঞ্জন দত্ত হবার যোগ্যতা রাখি না সেটা সবাই জানেন।
নিজের সন্তানের দিকে যখন তাকাই তখন অঞ্জন দত্তের "টিভি দেখোনা" গানটার কথা মনে পড়ে। আমার বুকটা হাহাকারে ভরে যায়....
নিজের শহরে যখন ফিরে যাই তখন অঞ্জন দত্তের "খাদের ধারের রেলিঙটা" গানটার কথা মনে পড়ে। আমার বুকটা হাহাকারে ভরে যায়....
নিজের হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার দিকে যখন তাকাই তখন অঞ্জন দত্তের "মালা" গানটার কথা মনে পড়ে। আমার বুকটা হাহাকারে ভরে যায়....
নিজের দিকে যখন তাকাই তখন অঞ্জন দত্তের "হরিপদ" গানটার কথা মনে পড়ে। আমার বুকটা হাহাকারে ভরে যায়....
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
'আমি বৃষ্টি দেখেছি' মনে পড়ে না?
লেখা ও কমেন্ট
যাচ্ছে হলদে হয়ে এলবামে ছবিটা, যাচ্ছে ভুলে যাওয়া কতকত কবিতা
আহা! লেখাটার সবখানেই তো অঞ্জন! কাঞ্চনজঙঘা কাঞ্চনমন!
আরেকদিন তোর সাথে গলা খুলে গান গাইতে হবে টিএসসিতে
সুহান,
অঞ্জনকে নিয়ে লিখবো বলে কতদিন ভেবেছি, এত সুন্দর হয়ত লিখতে পারবোনা, তাও লিখে ফেলবো একদিন,নিশ্চয়।
নিশ্চয়ই লিখবেন পিএমো। এটা তো গান শুনতে শুনতে লিখে ফেলেছি, আপনি সময় নিয়ে- সবদিক কাভার করে লিখে ফেইলেন
আহ! মালা....গানটার সাথে ফজলে রাব্বি হলে রাত জেগে আড্ডায় গানের কথা মনে পড়ে গেল। এমন কে আছে যার যৌবনের দিনগুলির সাথে অঞ্জনের জ্ঞান মিশে নেই?
-একমত, একমত, একমত
-অয়ন
সুহান ভাই ........... কত কিছু যে মনে করিয়ে দিলেন। অঞ্জন দত্তের প্রতিটি গান একেকটা যেন ছোট গল্প। কিন্তু ইদানিং সেই অঞ্জনকে আর খুজে পাচ্ছি না। কোথায় যে হারিয়ে গেলো লোকটা।
ধন্যবাদ আপনাকে আমার অসম্ভব প্রিয় একজন গায়ককে নিয়ে লেখার জন্য।
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
মন খারাপ খুব সংক্রামক; সংক্রমণের দায়ে আপনাকে দুষ্ট করা হল।
লেখা নিয়ে আর কি বলব?
হিল্লোল
গতকালই পড়েছিলাম, বেশী ভাল লাগায় আচ্ছন্ন হওয়ায় মন্তব্য করা হয় নি।
( মিয়া পাইছেন কি, এক তাসনীমের রক্ষা নেই, সুহান দোসর! )
facebook
এই বুড়ো পুরোনো গিটার এবং অসময় গান-এ গানদুটি এখনও অসম্ভব ভালো লাগে।লেখা পড়ে মনে এল "ফেলে আসা গল্প" গানটা।
অঞ্জন এক অদ্ভুত লোক। আমার কলেজের ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেড়ানোর দিনগুলোর সঙ্গী।
আইচ্চা তোমার তাইলে মন খারাপ? ফ্যাসীবাদী বকছে?
মন খ্রাপ করে না, নফলার শুনো, এ আরেক অদ্ভুত লোক
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ভাই, গাঁইয়া মানুষ- এতোদিন শুনি নাই তাই
আচ্ছা, যোগাড় করি তাইলে
হাহাহা সারকাজম? (একটি শেলডনীয় প্রশ্ন)
জানি শুনছো, আমার লেখার ভঙ্গীতে ভুল বুইঝো না
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ধুর, কীসের সার্কাজম !! খোমাখাতার টোকা চেক
তখন কেবল কলেজে উঠেছি। ছাত্র-মানুষ, হাতে টাকা-পয়সা নাই।
কিশোরপত্রিকায় 'গোয়েন্দা ঝান্ডু' নামের একটা কমিকস এঁকে পেলাম ৭৫ টাকা।
জীবনের প্রথম আয় যেভাবেই হোক ভাল কাজে লাগাতে হবে। কী করা যায়?
তখন বাজারে সদ্য এসেছে অঞ্জনের প্রথম অ্যালবাম শুনতে কি চাও।
তারপর আর কী লাগে? সারাদিন শুধু বেলা বোসকে শোনানো চাকরী পাওয়ার গান।
আহা, কী দিন ছিল আমাদের !
প্রথম এলবাম তো অনেক আগে বের হয়েছিলো !! আমার জন্মের আগে মনে হয় !!
... লিখে ফেইলেন একদিন স্মৃতিগুলা।
অঞ্জনের প্রথম অ্যালবাম শুনতে কি চাও-৯৪ এর পুজোয় বেরোয়।
সুহান বয়স লুকাচ্ছেন না তো?
হাহাহা। যদিও বয়েস আমার হাজার বারো- মনের বয়েস আমার সবে আঠারো
না- আসলেই জানতাম না এই তথ্য। আমার ধারণা ছিলো আরো বছর দশেক আগে বেরিয়েছে ওটা। তার ওপরে আমি মোটামুটি সব ক্যাসেটই একসাথে কিনেছিলাম, শেষের কয়েকটা বাদে। এজন্যে শুরু দিকেরগুলোর নামই জানি খালি- কখন বেরিয়েছে জানতাম না
তোর কালামুখ দেখি না বহুদিন সেরিওজা, পলাশীর দিকে আসিস। এই লেখার জন্য তোর একটা চুম্মা পাওনা আছে।
স্যার মতি নন্দা অম্লালুল তো কালকেই একপ্রস্থ চা খাইয়ে দিলো আমায়- ছিলি কোথায় ??
... রবিসোমের দিকে আসতে পারি। থাকিস।
রঞ্জনার হাত ধরে অঞ্জন দত্তের শুরু আমার জীবনে, সবচেয়ে বেশি ভাল লাগত কালো সাহেবের মেয়ে ম্যারিয়ানকে। আর এখন অঞ্জন দত্ত 'ফেলতে ফেলতে কিছু কথা রয়ে গেছে যেমন ভালবাসি তোমায়'।
লেখা
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
(লেখা এবং মন্তব্য পড়ার পর ভাষা হারিয়ে গেছে, পড়ে আছে খালি ইমো - সেটাই দিলাম।
-অয়ন
আজ সকালে বাড়ি থেকে আসার সময় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো। বেরোনোর আগে বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল আর অঞ্জনের আমি বৃষ্টি দেখেছি শুনে বেরিয়েছি।
আমারও মন খারাপের সঙ্গী অঞ্জন দত্ত।
কালো মেম গান টা খুব মনে পড়ে। খুব মনে পড়ে,খুব মনে পড়ে।
চমৎকার লেখা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আহ। সেই টেপ টেনিস বল আর চোট্টা আম্পায়ার। মুহূর্তেই কত স্মৃতি কড়া নেড়ে গেল। আর লিখার বাকি লাইনগুলো চোখের সামনে থেকেও কেমন যেন ঝাপসা হয়ে গেল।
গ্রেট সুহান বস।
অঞ্জন দত্ত আমারো খুব প্রিয় গায়ক ছিল এককালে
লেখাটা খুব ছুঁয়ে গেল ।
এই গানটা শুনে অঞ্জনের উপর একটু রাগ হৈসিল-
----- তারপরও----
ক্লান্ত মেঘের ফোঁটায় ছাতা ছাড়াই ঝুপ বৃষ্টি নেমে এলে--
আর সেই বৃষ্টি আড়ালে নিতে গলির মোড়ে কেউ আমার জন্য দাড়িয়ে নেই- তা মনে পড়লে--
কিংবা চিলেকোঠার ছোট্ট জানালা গলে বিরাট আকাশটা ঢুকে গেলে--
তখন পাশের ছাদের নীল মোজা আর সাদা জামা বাতাসে দুলতে থাকলে--
বৃষ্টি আর কুয়াশায় জানলার কাঁচ ঝাপসা হয়ে এলে--
আর দশটা পাঁচটার হরিপদ কেরানির মতন খুব অকাজের আর অপদার্থের জীবন বয়ে বেড়ানোর কথাটা মনে পড়ে গেলে--
অঞ্জনকে মনে পড়ে যায়------
নাহ! আর দীর্ঘশ্বাস ফেলবোনা।
সুহানের আরেকটা দূর্দান্ত লেখা।
এর থেকে ভালোভাবে হয়ত আর ভালোবাসার কথা বলা যায় না
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
চমৎকার একটি স্মৃতিচারণ। মনটা বিষণ্ণতায় ছেয়ে গেল।
সেই কোন ছোট্টবেলায় প্রথম অঞ্জনের গান শুনেছিলাম ভার্সিটি পড়ুয়া মামাদের জন্য। সব আড্ডাতেই বেলা বোস রঞ্জনারা জায়গা করে নিতো।
মন খারাপের একটা স্রোত যাচ্ছে মনে হয় সচলের উপর দিয়ে। মাত্রই তাসনীম ভাইয়ার লেখা পড়ে মন খারাপ করে এখানে এলাম। সেই এক বিষণ্ণতা!
লেখা অসাধারণ লাগলো।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
মন খারাপ করে দেয়া ভয়াবহ ভালো একটা লেখা।
সুহান ভাই,
আইজ কি বিশ্ব বিষণ্ণ দিবস নাকি?
আপনি, তিথী আপু, তাসনীম ভাই কি শুরু করছেন আপনারা?
চরম ভাই কই?
নির্ঝরা শ্রাবণ
অঞ্জন দত্ত আমাদের অনেকেরই জানালা মানুষ মনে হচ্ছে... ...
পড়বার এবং মন্তব্য করবার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ সবাইকে।
আমার বয়স ৫০ আর মেয়ের বয়স ১৭ -আমরা দুজনেই অঞ্জন দত্ত একসাথে শুনতাম । দুই জেনারেশন কে একসাথে মাত করা- কম কথার বাত নয় । সুহানের এই সুন্দর পোস্টটির মন্তব্য লেখার কথা আমার সেই মেয়ের -কিন্তু সে তো আর নেই ।
জানিনা যেখানে সে স্বেচ্ছায় গেছে- ওখানে অঞ্জন আছে কিনা । সেখানে গান কেউ শোনে কিনা জানিনা ।শুনেছি ওখানকার ভাষা আরবী - গান হয় কিনা বা কেউ গায় কিনা তাও জানি না। তবে আমি নিশ্চয়ই জানি ওখুব মিস করবে বাংলা গান- অঞ্জন দত্তের গান-' আকাশ আজ বড়ই নীল- আজ আমায় পিছু ডেক না---
সফিউদ্দিন আহমাদ
‘শুনতে কি চাও তুমি’ এই গানটা আমাকে এখনও চুপ করিয়ে দেয়, আর ‘মন আমার’। অন্যরকম ভালো লাগলো লেখাটা সুহান।
নতুন মন্তব্য করুন