বন্ধ দরজা খুলে শেখ মুজিবুর রহমান বেরিয়ে এলেন। দেরী হয়ে গেছে। বেলা আড়াইটায় রেসকোর্সের সভা আরম্ভ হবে কথা ছিলো। রুদ্ধদ্বার বৈঠকের নানা আলোচনায় এই ৩২ নম্বরেই আড়াইটা বেজে গেলো।
বাইরে বেরিয়ে শেখ মুজিব গাড়িতে গিয়ে উঠলেন। হাত ইশারা করে তার সাথে পেছনে ডেকে নিলেন তাজউদ্দীনকে। তাজউদ্দীন উঠতে উঠতে চালকের পাশের আসনে গিয়ে বসলেন গাজী গোলাম মোস্তফা। সাদা রঙের মাজদা গাড়িটি যাত্রা করলো রেসকোর্সের দিকে।
রাস্তায় চোখে পড়ছে অগণিত মানুষ। দল বেঁধে, ছোট ছোট মিছিলে ভাগ হয়ে তারা সবাই চলছে রেসকোর্সের দিকে। তারা মুজিবুরের মুখের কথা শুনতে চায়, তারা জানতে চায় বঙ্গবন্ধুর চূড়ান্ত নির্দেশ। প্রতিটি মানুষের মুখ খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে শেখ মুজিবের বুকের ভেতরে কেমন করে ওঠে। এতো এতো মানুষ তার মুখের দিকে চেয়ে কী শুনতে চায় আজ ?
অস্বস্তি কাটাতে শেখ মুজিব পাশে বসা তাজউদ্দীনের দিকে তাকান। দেখেন, তাজউদ্দীন দুই হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে তার তর্জনী স্পর্শ করছেন বারবার। পুরোনো অভ্যাস এটা, গভীরভাবে কিছু চিন্তা করবার সময় তাজউদ্দীন প্রায়ই করেন। মুজিব বোঝেন, তারই মত অদ্ভূত এই অনুভূতি ভর করেছে তার এই পুরোনো সাথীকেও। ‘খসড়াটা ভালো হইছে তাজউদ্দীন।‘ জলদ্গম্ভীর স্বরে তাজউদ্দীনকে বলেন শেখ মুজিব।
তাজউদ্দীন ভাবনা থামিয়ে শেখ মুজিবের দিকে তাকান। মুজিব ভাই কী বলছেন বুঝতেই তার কিছুটা সময় চলে যায়। এরপর তিনি মাথা ঝাঁকান, কোন কথা বলেন না। গত দুইদিন ধরে তিনি, আবদুস সামাদ আজাদ আর আবদুল মমিন ধানুমন্ডির ৩১ নম্বরে সিএসপি অফিসার ফজলুর রহমানের বাসায় একটা খসড়া প্রস্তুত করেছিলেন মুজিব ভাইয়ের আজকের ভাষণের জন্যে। মুজিব ভাই সেটার কথাই বলেছেন। তাজউদ্দীন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। কোন খসড়াই আজকে সম্ভবতঃ মুজিব ভাই অনুসরণ করতে পারবেন না।
তাজউদ্দীনের দিক হতে মুখ ফিরিয়ে চলমান গাড়ির জানালা দিয়ে বাইরে তাকালেন শেখ মুজিব। পরিস্থিতি পালটাচ্ছে খুব দ্রুত। গতকাল রাতে ইয়াহিয়া ফোনে সতর্ক করে দিয়েছে তাকে, পাঠিয়েছে একটি টেলিপ্রিন্টার বার্তাও। হঠকারী কোন সিদ্ধান্ত যেন মুজিব আজ ঘোষনা না করেন, এটাই বক্তব্য ইয়াহিয়ার।
সকালে এসেছিলো ছাত্রনেতারাও। রব, রাজ্জাক, মণি, সিরাজুল আলম- ওরা সবাই। তাদের দাবি স্বাধীনতার ঘোষণা, বাংলার মানুষ স্বাধীনতার ডাক আজ শুনতে চায় শেখ মুজিবের কন্ঠে। কিন্তু এই মুহুর্তে স্বাধীনতার সরাসরি ঘোষণা কি করে দেয়া যায় ? বিশ্বজনমত হারাবেন না তিনি এতে ? আর এই মুহুর্তে সশস্ত্র সংগ্রামের পরিস্থিতি এলে সেটায় নামার জন্যে প্রস্তুত কি বাঙালিরা ? …শেখ মুজিব ভাবেন, শেখ মুজিব ভাবতে থাকেন। আজ এতোগুলো মানুষকে রক্ষা করা যাবে তো ঠিকঠাক ? সামরিক জান্তা যে ট্যাঙ্ক নিয়ে প্রস্তুত, সে খবর তারা তো জানে না- জানেন শেখ মুজিব।
রেসকোর্সে পোঁছে গেলেন তারা। ময়দানের উত্তর পাশে বসানো হয়েছে বিশাল মঞ্চ। নিশ্চয়ই চাঁন মিয়াঁ মঞ্চ বানিয়েছেন প্রতিবারের মতো, ভাবলেন শেখ মুজিব। সেই মঞ্চে এখন স্লোগান দিচ্ছে নূরে আলম সিদ্দিকী, আবদুর রাজ্জাক, আবদুল কুদ্দুস মাখনেরা। সেই স্লোগান ফিরে আসছে লক্ষ লক্ষ স্বরে প্রতিধ্বনিত হয়ে। ‘জয় বাংলা।‘ ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।‘ ‘হুলিয়ার ঘোষণা- মানি না, মানবো না।‘ ।
গাজী গোলাম মোস্তফার পেছনে মঞ্চে উঠে শেখ মুজিব সামনে চাইলেন। যতদূর চোখ যায় কেবল মানুষ আর মানুষ। এই জীবনে ভাষণ কম দেননি মুজিব, কিন্তু আজ বুঝলেন, জনসমুদ্র-শব্দটা এতদিন কেবল বইয়ের পাতায় পড়ে এসেছেন। শেখ মুজিব আজ প্রথম অনুধাবন করলেন মানুষের সমুদ্র কতটা বিশাল হতে পারে আর অবাক বিস্ময়ে শুনলেন সেই সমুদ্রের গর্জন। কত মানুষ এসেছে আজ ময়দানে- সাত লাখ ? আট লাখ ? দশ কিংবা বারো লাখ ? ভাবনার জাল ছিঁড়ে যায় যান্ত্রিক শব্দে। আকাশের দিকে চাইলেন মুজিব। সেখানে চক্কর দিচ্ছে সামরিক হেলিকপ্টার। কী চায় ঐ কপ্টারে বসা সৈন্যেরা ? সবদিক আজকে রক্ষা করা যাবে তো ?
মাইকের সামনে প্রথম গিয়ে দাঁড়ালেন তাজউদ্দীনই। স্বল্পদৈর্ঘ্যের এক ভাষণের শেষে তিনি বললেন- এবার আপনাদের সামনে ও জাতির উদ্দেশ্যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেবেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সেই মুহুর্তে পুরো জনসমুদ্র নীরব হয়ে গেলো বড় অলৌকিক ভাবে। শ্বাস ফেলতে পর্যন্ত ভুলে গেছে যেন লাখো মানুষ। অধীর- ব্যাকুল এখন সকলে। কী হবে এখন, কী বলবেন নেতা।
শেখ মুজিব একটা লম্বা শ্বাস চেপে রেখে মাইকের সামনে এসে দাঁড়ালেন। অজস্র ভাবনাকে গুছিয়ে নিতে তিনি চোখ বুজলেন এক পলকের জন্যে। কী আশ্চর্য- গতরাত ৩২ নম্বরের বারান্দায় নীরব পদচারণায় তিনি গুছিয়ে রেখেছিলেন এক একটি লাইন, অথচ এই মুহুর্তে সেগুলোর কিছুই মনে পড়লো না তার। শুধু মনে পড়লো তার স্ত্রীর মুখ। ফজিলাতুন্নেসা তার মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, ‘কারো পরামর্শ শুনার দরকার নাই। তোমার যা মনে আসে, তুমি তাই বলবা।‘
শেখ মুজিব তাই চোখ খুললেন। বজ্রের স্বরে তিনি শুরু করলেন তার ভাষণ। “ ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে এসে হাজির হয়েছি। আপনারা সবই জানেন এবং বোঝেন। ...”
ঢাকা শহরের অপরপ্রান্তে রানওয়ে স্পর্শ করবার চেষ্টায় ব্যস্ত একটি বিমান। সেই বিমানের যাত্রী রাও ফরমান আলী এবং পূর্ব পাকিস্তানের নয়ানিযুক্ত সামরিক প্রশাসক টিক্কা খান। রেসকোর্সের অগণিত মানুষের মাথা দেখে টিক্কা খানের কপালে ঘামের ফোঁটা দেখা দিলো। ফরমানের চোখের আড়ালে সেই ঘাম মুছে টিক্কা গম্ভীর স্বরে কেবল বললো, ‘সো দিস ইজ হোয়াট হ্যাপেনিং ইন ঢাকা।‘
টিক্কা খান যখন বিমানের জানালায় চোখ রেখে ঘাম মুছে যাচ্ছে প্রাণপণে, তখন রেডিও পাকিস্তানের ঢাকা কেন্দ্রের আঞ্চলিক পরিচালক আশফাকুজ্জামান খান ফোনের রিসিভার তুললেন। শেখ মুজিবের ভাষণ রেডিওতে প্রচারের ঠিক পূর্ব মুহুর্তে ফোন করেছেন মেজর সিদ্দিক সালিক। ‘বানধ কারো ইয়ে সাব। নাথিং অফ শেখ মুজিবুর রহমান উইল গো অন এয়ার আনটিল ফার্দার অরডার।‘ আশফাকুজ্জামান খান অবাক। কিন্তু তিনি দৃঢ়স্বরে বললেন, ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষের কণ্ঠ যদি প্রচার করা না হয়, তাহলে অন্য কিছুও এই কেন্দ্র থেকে আর প্রচার করা হবে না।‘ আশফাকুজ্জামানের নেতৃত্বে ঢাকা কেন্দ্রের বাঙ্গালিরা বেরিয়ে এলেন অফিস থেকে- রেডিও হয়ে পড়লো অচল।
এলিফ্যান্ট রোডের বাড়ির বারো ব্যান্ডের রেডিওটি তাই চুপ হয়ে গেলো ‘আমার সোনার বাংলা’ গানটি বাজিয়েই। রুমীর মা জাহানারা ইমাম আর চেষ্টা করেও শুনতে পেলেন না মুজিবের ভাষণ।
তবে শুনলো আর সবাই। ময়দানের উত্তর কোণের একটা দোতলা বাড়ির বারান্দা হতে ছোট্ট রিমি দূরবীন দিয়ে দেখছে মানুষের মুখ আর শুনছে শেখ মুজিবের ভাষণ।
ভাষণ শুনছে এসএম হলের তারেকুল আলম, তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো বহু বহু ছাত্র। শেখ মুজিব বলে চলেছেন।
পিয়ন আবদুল বাতেন ভাষণ শুনছে। সে রাজনীতি বোঝে না, সে বোঝে না অর্থনৈতিক বৈষম্য। সে কেবল জানে মঞ্চের মানুষটি কথা বলছেন তার মতো আরো সাড়ে সাত কোটির হয়ে।
ভাষণ শুনছেন সাংবাদিক সারির আবদুল গাফফার চৌধুরী, কামাল লোহানী, আনোয়ার জাহিদ। আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে ভাষণ শুনতে এসেছেন রাশেদ খান মেনন।
চব্বিশ ঘন্টার পায়ে হাঁটা পথ হেঁটে এসেছে ঘোড়াশালের মানুষ, তাদের গামছায় বাঁধা চিড়ে আর গুড়- তারা ভাষণ শুনছে। মহিলা সমিতির মেয়েরা আর নেত্রীরা শুনছেন ভাষণ। সাদা লাঠিতে ঠুকঠুক করে পথে আঘাত করে যারা চলে, সেই অন্ধ ছেলেরাও এসেছে দল বেঁধে মিছিল করে।
মঞ্চে বসে তাজউদ্দীন অবাক হয়ে শুনছেন মুজিব ভাইয়ের ভাষণ আর ভাবছেন, কী অদ্ভূত- কী অবিশ্বাস্য এই কন্ঠটি। তাজউদ্দীনের হঠাৎ মনে হয় শেখ মুজিব যেন বইয়ের পাতা থেকে উঠে আসা টলোমলো কোন জাহাজের ক্যাপ্টেন, যিনি ঝড়ের আঘাত- নষ্ট বেতার আর বুলেটবিদ্ধ সহযাত্রীদের নিয়েও সমস্তদিক রক্ষা করে জাতিকে দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন জাহাজের মাস্তুলের পাশে দাঁড়িয়ে। ক্যাপ্টেন বলছেন তাদের কালে কালে সঞ্চিত ক্ষোভের কথা, ক্যাপ্টেন বলছেন তাদের অধিকারের শব্দ। সহসা আঙ্গুল তুলে সেই ক্যাপ্টেন বললেন, ‘এবারের সংগ্রাম- আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম- স্বাধীনতার সংগ্রাম।‘
সেই মুহুর্তেই ঝড় উঠলো সমুদ্রে- আকাশ বাতাস তুচ্ছ হয়ে উঠলো- উত্তেজনায় উন্মাদ হয়ে উঠলো সুস্থিরতম মানুষটিও। তাজউদ্দীন গর্জনরত সামনের সমুদ্রের দিকে চেয়ে অনুধাবন করলেন, এই মুহুর্তটিতেই শেখ মুজিবের তর্জনীতে পদ্মার পলিদ্বীপের অভিধানে যোগ হয়েছে আরো একটি শব্দ। স্বাধীনতা।
জনসমক্ষে মনোভাব প্রকাশে তীব্র আপত্তি তাজউদ্দীনের, তবুও তার চশমার কাঁচ ঘোলাটে হয়ে যায়। ঘোলা চোখে সমুদ্রের গর্জন শোনা যায় খালি- সমুদ্র দেখা যায় না।
মন্তব্য
অন্য একটা লেখার অংশ থেকে নেয়া। সাতই মার্চের রাতে হুট করে তুলে দিতে ইচ্ছা হলো। বর্ণনা অসংলগ্ন লাগলে দুঃখিত
দরকার আছে। এখনি বেশি দরকার।
_____________________
Give Her Freedom!
হাজার বছর পরেও কোন বাঙালি শিশু যদি এই ভাষণ শুনে তবে সে তার অস্তিত্ব বুঝে নিবে, নিজেকে চিনে নিবে, এতই অমর এই ভাষণটি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই ভাষণের আবেদন কমবে না। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এই অমূল্য সম্পদ হস্তান্তর করে যেতে হবে আমাদের...........
(ভাষণের ইউটিউব লিংকটা যুক্ত করে দিলে কেমন হয়, শেষে....)
_____________________
Give Her Freedom!
ছোট্ট একটা অনুরোধ, ‘এবারের সংগ্রাম- আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম- স্বাধীনতার সংগ্রাম।‘ এর পরে, 'জয় বাংলা' শব্দযুগল যোগ করে দিন। তা না হলে বাক্যটি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। পরবর্তী সময়ে এটা নিয়ে কিছু বিতর্কও সৃষ্টি করা হয়েছে, তাই বলছি......
লেখায়
জয় বাংলা নিয়ে কোন সংশয় আদৌ আছে কি প্রৌঢ়'দা?? ভাষণের ভিডিওই তো কথা বলে দেয়
অন্য লেখাটার অপেক্ষায়!! আশা করি সেটা পুস্তক হিসেবেই আসছে
কেন জানিনা চোখে জল চলে আসলো।
এমন একটা অভাগা দেশকে ভালবাসি যে দেশের মাথামোটা রাজনীতিবিদ, হর্তাকর্তাবিধাতারা ইতিহাস’কে অস্বীকার করে আমাদের বড় হতে শেখায়। এমন একটা দেশ যেখানে ৭ই মার্চের ভাষণের জায়গায় শিশু পার্ক হয়, সবকিছু রাজনীতি’র হাতিয়ারে পরিণত হয়। পৃথিবীর আর কোন দেশে কি এইভাবে ইতিহাস হত্যা করা হয়, ধর্ষণ করা হয়? তবুও কি ভীষণ স্বপ্ন দেখে যাই এই দেশ নিয়ে!
বাংলাদেশ নিজেকে ফিরে পাক ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে!
সহমত
দারুণ লাগলো
চমৎকার লাগল।
দারুণ, অসাধারণ...
'অন্য লেখা'টার অপেক্ষায় থাকলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
অসাধারণ ভাই অসাধারণ লেখা
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
অসাধারণ!
সেলিম আল দীন এর একটা ওয়ার্কশপ করেছিলাম - ওখানে পারফর্ম করার সময় অনেকেরি আঙ্গুল ঊচিয়ে ডায়ালগ দেয়ার প্রবণতা দেখতাম (সিরাজুদ্দৌলা দেখে বড় হওয়া সব অভিনেতা/অভিনেত্রী ) - তর্জনী কেউ উঠালেই স্যার খুব রেগে উঠতেন - এসেই সরাসরি চেপে ধরে বলতেন - বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এই ইশারায় - এটা উচিয়ে এইসব ডায়ালগ দেয়া যাবেনা - - -
বুকিং
অসাধারণ সুহান।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
অসাধারণ! মোটেও অসংলগ্ন লাগে নাই।
থাঙ্কিউ অমিত ভাই, অনেক দিন পর আপনার মন্তব্য পাইলাম
দারুণ লিখসো সুহান, এবার অন্য লেখাটাও দাও
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
দেরী আছে মিঁয়া
অন্য লেখাটার জন্যে আর তর সইছে না রে ভাই। কবে নাগাদ আসবে?
ঠিকাছে সুহান ভাই
আজকের দিনেই দরকার ছিল
কিসের অসংলগ্ন, জীবন্ত বর্ণনা পড়লাম! 'অন্য লেখাটা' যেন শেষ হয়
দারোয়ানের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ স্যার অবশ্যই চেষ্টা করবো
এবার অন্য লেখাটাও...
সচলায়তনে একটা সমস্যা হইলো, এই যে অন্য লেখার গান শুনাইলেন এইটার জন্য তিন-চার দিন রেগুলার আসবো, দিবেন না, যেই সপ্তাহে ঢুকবো না, ওই সপ্তাহেই লেখাটা আসবে। তারপর আমি আর খুজে পাবো না। লেখাটা তাড়াতাড়ি দিয়েন/ একটা টাইম দিয়া দিয়েন, আমার মত অচলদের তাইলে সুবিধা হয়
আইলসা,
আইলসামি ছাইড়া নিয়মিত সচলে আসলেই তো সমস্যার সমাধান!
তাহলে তো সচলায়তনের রিডারশিপ বাড়াতে আপনাকে টোপের উপর রাখতে হয় আইলসা ভাই। আপনি যেদিন সচলায়তন পড়বেন না, সেদিনই কিন্তু আসবে
লেখাটা পড়ে কেন জানি বোকার মত চোখে জল চলে আসল। আর এইটা যদি আপনার অসংলগ্ন লেখা হয়, তাইলে আপনি অসংলগ্ন-ই লিখতে থাকেন।
অসাধারণ । ২০১৩এ এই লেখাটা যেন আরও বেশী প্রাসঙ্গিক । অন্য লেখাটা কবে আসবে ।
কি অদ্ভুত সুন্দর একটা লেখা। চোখে পানি আসল, পড়তে পড়তে অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছিল যেন আমি নিজেই উপস্থিত থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনছি।
আপনাকে স্যালুট!
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
অসাধারন লেখা। চোখে পানি চলে আসলো, তাজুদ্দিনের মতই।
/----------------------------------------------------
ওইখানে আমিও আছি, যেইখানে সূর্য উদয়
প্রিয়দেশ, পাল্টে দেবো, তুমি আর আমি বোধহয়
কমরেড, তৈরি থেকো,গায়ে মাখো আলতা বরণ
আমি তুমি, আমি তুমি, এভাবেই লক্ষ চরণ।।
তিনবার তর্জনী দেখালাম।
দুর্দান্ত লেখা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অসাধারন লাগল
লেখা পড়ে মনে হলো যেন ৭মার্চ আমার চোখের সামনে এখন। আর এইরকম হুটহাট অসংলগ্নতা খারাপ না। চলুক।
তবে একটা প্রশ্ন, "বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে রাজ্জাকের স্মৃতিচারণ" য় পড়েছিলাম রেসকোর্সে যাওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু আব্দুর রাজ্জাকদের গাড়িতে করে গিয়েছিলেন। কিন্তু আপনার লেখা পড়ে মনে হলো না সেটা ।
স্মৃতিচারণটা কী কোন বইতে পড়েছিলেন, না পত্রিকায় ?? সূত্রটা জানাতে পারেন ?? ... এই লেখায় ব্যবহৃত রেফারেন্স আমি দিতে পারি- আপনি অন্য রেফারেন্স দিলে ক্রসচেক করে নেয়া যায়
এইখানে একটা লিঙ্ক আছে।
আরে ভাই, রেফারেন্স চাই নাই, জাস্ট জানতে চাইলাম। আমিও বিডিনিউজ২৪ এই দেখছি।
না সেটা বলিনি, ইতিহাস আশ্রয় করে লেখা তো- এজন্যে রেফারেন্সের কথা বললাম। কোথাও কোন ভুল পেলে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন, সংশোধন করে নেবো। আমাদের ইতিহাস মেহেরজানীয় না হোক
ইন্টারেস্টিং। ... আমার রেফারেন্স হলো 'স্বাধীনতার স্বপ্নঃ উন্মেষ ও অর্জন' নামের বই, লিখেছেন আবদুল আজিজ বাগমার। তাজউদ্দীন সাহেবের প্রতিবেশি ছিলেন, ২৫শে মার্চের রাতে তার বাড়িতেই আশ্রয় নেন জোহরা তাজউদ্দীন। তবে রাজ্জাক সাহেব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধাণ ছিলেন। ছাত্রনেতাদের স্বাধীনতার ঘোষণার দাবিও কিন্তু মিলছে
কিন্তু গাড়ির বিষয়টা কি হবে? আব্দুর রাজ্জাকের কথা তো ফেলে দেয়া যায় না
শুধুমাত্র একজন পাঠক হিসেবে আপনি কোন রেফারেন্সটা নিবেন?
বইটাই নেবো। কারণ দুইটা ক্রস রেফারেন্স।
১। আর্চার কে ব্লাডের ক্রুয়েল বার্থ অব বাংলাদেশ। শেখ সাহেবের আগে তাজউদ্দীন ভাষণ দিয়েছিলনে, বলা আছে। এই লেখায় সেটা নেই।
২। মুক্তিযুদ্ধের অপ্রকাশিত কথা, মূলত মার্চের দিনগুলোর বিবরণ সাংবাদিক আতিকুর রহমানের কাছে। সেটা অনুসারে রাজ্জাক, আসম রব, তোফায়েল আহমেদ, তাজউদ্দীন সহই বঙ্গবন্ধু ৭মার্চ ময়দানে হাজির হয়েছিলেন। (রাজ্জাক ও রব ওনার কাছে পৃথক সাক্ষাৎকারে তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি)
দারুণ হয়েছে লেখাটা।
অনবদ্য সুহান!
লেখাটা পড়তে পড়তে একদম কেঁপে উঠলাম। এর আগে তাজউদ্দীনকে নিয়েও তোমার এমন একটা লেখা পড়েছি। থেমো না। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলো তোমার হাত দিয়েই আসুক। সেই কামনা রইলো। "অন্য লেখা" টা চালিয়ে যাও।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
থ্যাঙ্কিউ ভাইয়া, চেষ্টা থাকবে
চোখের পানি তো আর লিখতে পারিনা। সেই তখন থেকে কানতেছি।
অসাধারন লেখা । মনের ভিতরে যেন সেই সময়ের ঝড়
বরাবরের মতোই সুন্দর। সুহান ভাই আপনার ঐতিহাসিক ছোটগল্পের একটা সংকলন চাই আগামী বইমেলার মধ্যেই।
প্রতিটি লাইন স্পর্শ করে দেখা যায়...
ডাকঘর | ছবিঘর
জয় বাংলা
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
অন্য একটা লেখার অপেক্ষায় থাকলাম। আর এইটার জন্য
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
খোদা কে অভিশাপ দিতে ইচ্ছা করে, কেন যে ৭ ই মার্চের রেসকোর্সে ছিলাম না! অসাধারণ হয়েছে!
অসাধারন !
লেখাটা ছুঁয়ে গেল।
সুহান, কী যে বলব বুঝতে পারতেছিনা। হরতালে অফিসে কাজ কম থাকে। সচলে ঢুকে একটা একটা লেখা পড়ছিলাম। তোর নাম দেখে খুশি মনে ঢুকে পড়া শুরু করলাম। শিরোনাম পড়েই পটভুমি বুঝেছিলাম, কিন্তু ট্যাগে গল্প দেখে অন্যরকম একটা আমেজ নিয়েই পড়া শুরু করেছিলাম।
কিন্তু কিছুটা পড়েই যেন এক ঘোরের মধ্যে পড়ে গেলাম। তুই বর্ণনা দিয়ে চললি স্মৃতিচারণের মত করে আর আমার মস্তিষ্কের প্রতিটি কোষ যেন অনুভব করতে শুরু করলো ৭ই মার্চ ১৯৭১ এর এক ইতিহাস সৃষ্টি হবার মূহুর্ত। চোখের সামনে কম্পিউটর স্ক্রিন, কিন্তু মাথার ভিতরে যেন লক্ষ লক্ষ মানুষের সমুদ্র। সেই সমুদ্র গর্জায়! ঘুর্ণিঝড়ের মত সবকিছু ওলট পালট করে দিতে থাকে একটি বাক্য- 'আমরা যখন মরতে শিখেছি- তখন কেউ আমাদের দাবাতে পারবেনা।' এই কথাটা আজকের এই সময়ের জন্য কত যে গুরুত্বপূর্ণ তা পুরো জাতি রন্ধে-রন্ধে উপলব্ধি করছে।
তাজঊদ্দীন আহমদ এর মত চশমার কাচ ঘোলা হয়ে যায় এই ভয়ে পড়ার শেষ পর্যায়ে চশমা খুলে চোখে টিস্যুচাপা দিলাম। জানি না, কেন যে এই লেখা পড়ে এত আবেগ ভর করলো। আশেপাশের সব ডেস্কের কলিগরা তাকিয়ে ছিলো। তবু থামতে পারি নাই। পরে সবার সাথে লেখাটা শেয়ার করলাম। পুরো অফিস জুড়ে কিছুক্ষণ পরই থমথমে নিরবতা। সেই নিরবতার একটা আলাদা অর্থ আছে। রৌদ্রে ভরা এই দিনটাতে তুই আকাশজোড়া মেঘ ভরে দিলি সুহান!
অন্য সবার মত আমিও তোর পুরো লেখাটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকলাম।
ভালো থাকিস।
--- মনজুর এলাহী ----
এই মন্তব্য টি লেখার মতই ছুঁয়ে গেল
ঠিক বুঝতে পারছি না, এই মন্তব্যের জবাবে কী লেখা যায়
... ৭১' বেঁচে থাক, এর বাইরে আর কিছু খুঁজে পেলাম না ...
মৃত্যুময় ঈষৎ, প্রিয়ম ভাই, তানিম ভাই, ফরিদ ভাই, চরম উদাস, ধূসর জলছবি, নজু ভাই, রাজিব মোস্তাফিজ, মেঘা, ত্রিমাত্রিক কবি, ফয়সল, কিষাণ, ঊর্ণনাভ, কড়িকাঠুরে, নাম না জানা অতিথি লেখক, অচল, বনজোছনা, সাফিনাজ আরজু, কানাবাবা, তিথীডোর, বাপ্পী হায়াত, মিথুন, অরিত্র অরিত্র, সাদ, অরণ্যের হুঙ্কার, হিল্লোল, তাপসদা, শান্ত ভাই, রিশাদ, রংতুলি, রাহী, কালামিয়া, নীপবন, সুমাদ্রীদা, দ্রোহীদা, বেচারাথেরিয়াম, তারানা_শব্দ...
আপনাদের সবাইকে একসাথে একটা বড় ধন্যবাদ দিয়ে দিলাম
দুর্দান্ত ।চোখে পানি চলে আসলো ।স্যালুট
অসাধারণ সুহান। পড়তে গিয়ে আবেগে শরীরে শিহরণ খেলে গেছে বারবার।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
অসাধারণ লাগলো সুহান, অসাধারণ!
গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠলো! আহ! কী অসাধারণ!!!
একটা রিকোয়েস্টঃ
ভাষণটার ভিডিও লিঙ্ক কেউ কি দিতে পারবেন?
--------------------------------------------------------------------------------
"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"
অনেক অনেক ভাল লাগলো গল্পটা পড়ে।
চমতকার
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
দুর্দান্ত।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
অসাধারণ!
অনন্য সাধারণ সুহান।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
যতবার শুনি ততবারই শিহরণ জাগায় এই ভাষণ, রক্ত যেন টগবগ করে ফুটতে থাকে!
অসাধারণ লিখেছেন!
দারুণ!
..................................................................
#Banshibir.
সুহান ভাই,
ভাষায় প্রকাশ করা যাবেনা এমন এক লেখা এটি। আপনার ইতিহাস নির্ভর এইসব গল্প নিয়ে একটা বই বের করে ফেলুন তাড়াতাড়ি, সবার সংরহে রাখা যাবে।
চালিয়ে যান
কুর্ণিশ তোমাকে সুহান---
দুই চোখে জল, তাই আর বেশি কিছু লিখতে পারছি না---
তোমার সকল লেখাই আমার কাছে অসাধারণ লাগে---কিন্তু এই 'অসংলগ্ন' লেখাটা বাকী সবক'টাকেও ছাড়িয়ে গেল-- তিরিশ লক্ষ তারা, তোমার জন্যে---
জয় বাংলা---
অসাধারণ!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
অসাধারণ বললেও কিছুই বলা হয় না
রানা মেহেরাপু, তাসনীম ভাই, সুপারম্যান মুর্শেদ ভাই, ধুগোদা, অতিথি লেখক, সত্যপীর, নির্ঝরা শ্রাবণ, অনিকেতদা, রাতঃস্মরণীয়, সাবেকা, সাকিন উন আলম ইভান-
আপনাদের সব্বাইকে একগাদা থাঙ্কিউ
লেখক নিজে সবচাইতে ভালো জানেন, অসংলগ্নতাটুকু কোথায়। পাঠক হিসেবে এটুকু বলতে পারি যে বেশ ভালো লেগেছে।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
পোস্ট করার পরপরই পড়েছিলাম গল্পটা, কিন্তু মন্তব্য করা হয়নি। এই লেখাটা পড়ে কী পরিমাণ মুগ্ধ হয়েছিলাম, বলার মতো না। অসাধারণ একটা লেখা, সুহান। তোমার "অন্য লেখা" গতি আর প্রাণ পাক, এই শুভকামনা করি।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখার সাহস আমার নেই বললেই চলে। এখনও সে সাহস করে উঠতে পারিনি। তবে আমার ব্লগার বন্ধু চমৎকারভাবে তাঁকে উপস্থাপন করেছেন। লেখায় প্রতিফলিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর অনন্য ব্যক্তিত্ব। সেজন্যে তিনি সত্যিই কৃতজ্ঞতার দাবিদার।
পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল সময় পরিভ্রমণ করে ঐ সময়টায় চলে গেছি!
চমৎকার ভাবে উঠে এসেছে পারিপার্শ্বিক দৃশ্যগুলো।
শুভেচ্ছা
টাইপো ছিল: "ধানুমন্ডির ৩১"
নতুন মন্তব্য করুন