প্রতিভাবান প্রকৌশলীদের প্রতি

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
লিখেছেন সুবিনয় মুস্তফী (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০৭/২০০৮ - ৩:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

বিশ্ব জুড়ে অর্থনৈতিক মন্দার খবরটি সত্য হলেও সব কিছুই দুঃসংবাদ নয়। সত্য বটে যে কোন কোন দেশ এবং কোন কোন সেক্টর একদম কাবু হয়ে পড়েছে - যেমন ধরেন যুক্তরাষ্ট্র, অথবা ব্যাংকিং সেক্টর। আবার এরই পাশাপাশি কোন কোন দেশ এবং কোন কোন অর্থনৈতিক সেক্টর একদম বহাল তবিয়তে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে। মন্দার লেশমাত্র তাদের ছোঁয় না, বরং তাদের জনবলের চাহিদা বাড়ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজ করার লোক না পাওয়ায় রীতিমত দক্ষ (skilled) শ্রমিকের সংকট দেখা দিচ্ছে!

এরকম চার-পাঁচটি উদাহরণ এই লেখাতে দেবো। বিবিধ শ্রেণীর প্রকৌশলীদের জন্যে বর্তমান সময়টা এক রকম স্বর্ণযুগ বলতে পারেন। এর পেছনে কারনও বিবিধ -

- দিন যত যাচ্ছে, তত উন্নত বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধ হচ্ছে (ইউরোপ, আমেরিকা, জাপানে)। কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যা কমে আসছে। যত লোক রিটায়ার করছে, তত ইয়াং লোক উঠে আসছে না। এই সংকট আরো দুর্বার হয়েছে টেকনিকাল সমস্ত ফিল্ডে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য বা জার্মানির মত দেশে ছেলেপেলেদের "কঠিন" বিজ্ঞান পড়াতে অরুচি এক বিশাল ক্রাইসিসের সৃষ্টি করেছে। গণিত, ফিজিক্স, রসায়ন - এসবে অনাগ্রহ বা অনীহা থাকলে বিজ্ঞানে অগ্রসর হওয়া সম্ভব না। তাই এইসব দেশে জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চা ভবিষ্যতে যেমন রুদ্ধ হবে, ঠিক তেমনই অতি প্রয়োজনীয় নির্মান কাজ, বা বৈজ্ঞানিক গবেষনা কাজও বাধাপ্রাপ্ত হবে। এবং দেখা যাচ্ছে বাস্তবে হচ্ছেও তাই।

- আরেকটি মূল কারন তেলের মূল্যবৃদ্ধি। এর সবচেয়ে বড় বেনিফিশিয়ারী কে হয়েছে? নিশ্চয়ই মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। চল্লিশ টাকার তেল যেহেতু ১৪০ হয়েছে, সেহেতু ওদের এখন বারো মাসই ঈদ লেগে আছে। অন্যান্য দেশে ক্রেডিট ক্রাঞ্চ এবং লিকুইডিটির প্রকট সংকট চলছে (তারল্য, বা ক্যাশ টাকা, বা সহজলভ্য ঋণ অর্থে)। কিন্তু আরবদের তেল যেহেতু খোদাপ্রদত্ত, তা শুধু মাটির নীচ থেকে উঠিয়ে ব্যারেলে ভরে বিশ্ব বাজারে বিক্রি করলেই ব্যাংকে জমা পড়ে বিলিয়ন এমন কি ট্রিলিয়ন ডলার। সেই টাকা দিয়ে এককালে আরবরা চরম ভোগবাদী জীবনযাপন করতো। বিলাসবহুল প্রমোদতরী, রেসকোর্সে ঘোড়া, মোনাকোর ক্যাসিনোতে জুয়া, কিম্বা লাস ভেগাসের গণিকা - সবাই আরবদের টাকার খনি থেকে এককালে লাভ করেছে।

মদ/মাগীবাজি যে এখনো চলছে না, তা না। কিন্তু ৭০-এর দশকের তেলের বুমের সময় যথেচ্ছ বিলাসিতার পাশাপাশি আরবরা যেই কাজটা করেনি, সেটা তারা এখন করছে। বিভিন্ন উৎপাদনশীল বা ভবিষ্যতমুখী খাতে তারা টাকা ইনভেস্ট করছে - শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো, এবং তেল ছাড়াও অন্যান্য ব্যবসায়িক সেক্টর - সব কিছুতেই এখন তারা মনোযোগ দিতে চাইছে।

*

আজকের লেখার টার্গেট নবীন প্রকৌশলী ভাইয়েরা যারা অনেকেই হয়তো পড়াশোনা করছেন এখনো। দেশে তো বটেই, বিদেশে থাকা ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্টরাও। সারা দুনিয়াতে যেই পরিমাণ টেকনিকাল কাজের জোয়ার এসেছে, তার থেকে আমাদের প্রকৌশলীরা কেন বঞ্চিত হবেন? ভারতীয়রা আজকে যেমন মোটামুটি বিশ্ব আইটি সেক্টর-কে কব্জা করে ফেলেছে। তার পেছনে একটি মূল সঞ্চালিকা শক্তি ছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে - প্রধাণত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে - ভারতীয় টেক বিশারদদের আধিপত্য।

ভারতীয় টেকিরা যে কেবল নিজের পকেট ভরেছিলেন, দেশের বাড়িতে শুধু নিজের জন্যে বাড়ীঘর করেছিলেন তা কিন্তু না। বরং তারা নেটওয়ার্ক গড়েছেন নানান দেশে। বিদেশে বসে বিভিন্ন দুরূহ প্রজেক্ট সম্পাদন করেছেন, বিশ্বমানের প্রজেক্টে কাজ করেছেন, এমন কি সে সব প্রজেক্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যখন দেশে অনুকূল পরিবেশ পেয়েছেন, উপযুক্ত কাজের ডাক পেয়েছেন, সেই ডাকে সাড়া দিয়ে দেশে চলে গেছেন, দেশকে এগিয়ে নেওয়ায় তাদের অবদানটাও যেন রাখতে পারেন।

এই লেখা পড়ে হয়তো কেউ কেউ ভাবতে পারেন যে আমি ব্রেন ড্রেন-এর সমর্থনে লেখছি। তা নয়। আমি বাংলাদেশের মেধা আর প্রতিভার পূর্ণ বিকাশের সমর্থনে লেখছি। আমাদের যেই জেনারেশনের প্রকৌশলীরা বেরিয়ে আসছে, তাদের মেধাপ্রকাশের ক্ষেত্র হতে পারে কিন্তু গোটা বিশ্ব। এবং তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা থেকে লাভবান হতে পারে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ।

এই লেখার টার্গেট তাই কলেজ পড়ুয়া ছাত্ররাও। এবং তাদের ভাই, বোন, কাজিন, বাবা, মা, আত্মীয়, যারা তাদের গাইড করতে পারে। দেশের ছেলেপেলে এখন আগাছার মত বিবিএ পড়ে। আমি নিজে বিবিএ-র ছাত্র ছিলাম, সেই বিধায় বিবিএ পড়াশুনার মান সম্পর্কে সম্পূর্ণ জেনেই বলছি। এই পড়াশুনা করে হয়তো ঢাকার বিদেশী ব্যাংক বা মাল্টিন্যাশনালের সাবান-শ্যাম্পু বা বিড়ি বেঁচার কাজ সহজে পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু দেশের সমস্ত মেধাবী ছাত্ররা কেন এই লাইনে যেতে চাইবে? কারন সঠিক দিক নির্দেশনার অভাব। সামনে আশার আলোর অপ্রতুলতা। এই কারনে ছেলেমেয়েদের কাছে উচ্চ মাধ্যমিকের পরে বিবিএ পড়তে চাওয়াটা একটা ডিফল্ট অপশন হয়ে গেছে।

আমরা বরং চাইবো, আমাদের ছেলেমেয়েরা সবরকম পড়াশোনা করুক। বিশেষ করে যে সব টেকনিকাল লাইনে আমাদের ছেলেপেলেদের এতো মেধা, সেই মেধা পূর্ণ বিকাশ পাক। কিছু বিবিএ-র দরকার আছে জ়ানি, আর অর্থনীতির মারপ্যাঁচ শেখা তার থেকেও জরুরী! কিন্তু ঠিক ততখানি জরুরী এক নতুন বিজ্ঞানমনস্ক, প্রকৌশল-পারদর্শী জেনারেশন। নতুন নতুন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাই ভবিষ্যতের দুনিয়াটাকে চালাবেন। এই ব্যাপারে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। আমাদের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক এমন কি সরকারের দরকার এই সব ট্রেন্ডের দিকে নজর রাখা এবং এর থেকে পূর্ণ লাভ নিজের এবং দেশের জন্যে তুলে আনা।

উদাহরন ১)
তেল প্রকৌশলীর অভাবে মরে যাচ্ছে তেল ইন্ডাস্ট্রি! New Oil Crisis: An Engineer Shortage! আমার কথা না, বরং টাইম ম্যাগাজিনের কথা। এই আর্টিকেলটা পড়ে দেখুন। সাম্প্রতিক একটি রচনা, খুবই প্রাসংগিক। খুব সংক্ষেপে এর সারমর্ম - পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রি এক বিরাট প্রকৌশলী ক্রাইসিসে ভুগছে। বাৎসরিক ১০ থেকে ১৫% ইঞ্জিনিয়ার কমতি হচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায়। তেলের দাম বাড়ার ফলে এখন বিশ্বের ইতি-উতি তেল আবিষ্কার এবং উত্তোলনের কাজ পুরোদমে চলছে। কানাডা থেকে আজারবাইজান, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ব্রাজিল পর্যন্ত। সবাই তেল খুঁজছে।

কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার কই? নেই নেই নেই! জানা গেছে যে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার সমিতির সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ এখন চল্লিশোর্ধ। অর্ধেকের বেশী আগামী দশকের মধ্যে রিটায়ারমেন্টের মেয়াদের ভেতর চলে যাবেন।

কিন্তু নতুন ছেলেপেলে সেই পরিমানে আসছে না। সদ্য পাশ পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার তাই এখন বাঘের দুধের মত দুর্লভ, তাদের বেতনও এখন ওয়াল স্ট্রীটের কাছাকাছি চলে গেছে! এই সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কি করতে পারি? আমাদের কি তেল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয় বুয়েটে বা অন্যত্র? যদি না হয়, তাহলে এমন কোন ধরনের প্রকৌশল পড়া দরকার, যেখানে থেকে পেট্রোলিয়ামে সাইডওয়াইজ চলে যাওয়ার অবকাশ থাকবে। অনেকেই বিদেশে মাস্টার্স করতে চলে যান গ্র্যাজুয়েশান শেষে। যদি এমন হয় যে ভবিষ্যত ক্যারিয়ার অপশনের কথা চিন্তা করছেন, তাহলে পেট্রোলিয়ামকে মাথার সামনে রাখুন। আখেরে নিশ্চিত লাভবান হবেন!

(আগামী খন্ডে সমাপ্য)


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

বুয়েটে মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টে পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি অপশনাল বিষয় আছে চর্তুথ বর্ষে। বাংলা বিষয় (মানে বেশীর ভাগই মুখস্ত করার জিনিস) বলে আমরা নাক সিটকে সে বিষয়টি না বাছাই করে পড়েছি রিনিউএবল এনার্জি, রোবোটিক্স।

আমাদের সাথের একটি মাত্র ছেলে যে কিনা ওই বিষয় পড়েনি, সে ইউনোকল বাংলাদেশে পাশ করার পরপরই আমাদের প্রায় ৮/৯ গুন বেতনে চাকুরী পায়। তারপর তাদের ওখানে কাজ করতে করতে, তাদের আর্থিক সাহায্যে কলারাডো স্কুল অফ মাইনসে এখন মার্স্টাস করছে।

১৩০ জন ছাত্রের মধ্যে ওই একজনই এই বিষয়ে পড়েছে এবং খুব ভালও করছে। প্রথম প্রথম ওকে মাটি কাটা ইঞ্জিনিয়ার (মাইনিং করত) বললেও এখন বুঝি ভাল পথই বেছে নিয়েছিল।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

লেখাটা শেষ কইরা ওয়াইড সার্কুলেশানে পাঠায় দিমু যদি পারি। পোলাপাইন পইড়া যদি এট্টুখানিও উপকৃত হয়।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

তবে নবায়নযোগ্য শক্তিও কিন্তু একটা বড় বিষয় হতে যাচ্ছে শিঘ্রী। যদিও সেটা কতটা কাজের হবে সে বিষয়ে সন্দেহ আছে। হিমু এই বিষয়ে মাস্টার্স করছে। কিছুদিন পরে তাকে একটা ফ্যান হাতে ঘুরতে দেখা যাবে হয়ত।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

হিমু এর ছবি

ফ্যান না রে ভোটকা, হারিকেন নিয়া ঘুরতে হইবো। কই যে যাই, কী যে করি :(।

তেল তোলার চান্স তো মিস করলাম জীবনে, তেল মাখাইয়া দেখি কাজ হয় কি না। প্রশ্ন একটাই, কারে মাখাই?


হাঁটুপানির জলদস্যু

মনজুরাউল এর ছবি

পরের খন্ডে কি কি থাকবে জানিনা,তবে ফালতু কিছু বিষয় নিয়ে সচলে কেউ কেউ যেভাবে সরব হয়েছেন,যেভাবে সমালোচনাকে নিজের ওপর নিয়ে বিষয়ের বাইরে যেয়ে অধিকারের মাত্রা ছাড়িয়ে অন্য ব্লগের অযাচিত রেফারেন্স টেনে আনছেন এবং সচল থেকে ‘সমূলে উচ্ছেদের’(!) অনভিপ্রেত হুমকি দিচ্ছেন তাতে করে ঠিক এই সময়ে এরকম একটা চিন-াকে নাড়া দেওয়ার মত বুদ্ধিদীপ্ত লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।পরের পর্ব দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

হিমু এর ছবি

মনজু ভাই, আপনার লেখায় খালি গোল্লা গোল্লা দেখি কেন? আপনি কি কোন কনভার্টার ব্যবহার করে মন্তব্য লেখেন? আপনার লিটল ফাইটার উইথ আর্মস প্রসঙ্গে দুটো লেখার কথা বলেছিলেন, তারপর তো খেলাপি হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সে লেখাগুলির কী হবে?


হাঁটুপানির জলদস্যু

মনজুরাউল এর ছবি

অভ্র কনর্ভাটার ব্যবহার করলে গোল গোল তো হবেই।এখনোতো প্রক্সি দিয়ে ঢুকতে হচ্ছে। তা ঠিক,খেলাপি।সরকার বদলালে যেমন খেলাপিদের মাফ করা হয়,তেমন করা যায়না ভাই? লেখা দুটো কাগজে। দেখে দেখে টাইপের মত বিটকেলে কাজ আর আছে? শিগগির ই দিচ্ছি।

.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......

হিমু এর ছবি

আপনি কি এস এম মাহবুব মুর্শেদ ও অরূপ কামাল নির্মিত, বাংলা ব্লগোস্ফিয়ারের কয়েকজন নগণ্য সদস্য কর্তৃক পরিক্ষিত, সোর্সফর্জে আপলোডিত, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে ব্যবহৃত সেই কনভার্টারটি আদৌ কখনো ব্যবহার করেননি?

http://bnwebtools.sourceforge.net এ একবার ঢুঁ মেরে দেখবেন সুযোগ পেলে। যদিও ১০০% ত্রুটিমুক্ত নয়, কিন্তু বেশ কাজের জিনিস।


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঢাকা-নারায়নগঞ্জ!! থাবড় খাবিরে কাউলা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

হিমু এর ছবি

যা ভাগ, ব্যাটা শিক্ষানবিশ কোথাকার!

বাই দ্য ওয়ে, হালকা কিছু বাগ নোট করে রেখেছিলাম জানুয়ারিতে কাজ করার সময়, কিন্তু সেই কেশের খাতা হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু আমি অবশ্যই ওগুলি আবার বের করে পাঠাবো। লাখ দেড়েকের মতো শব্দ নিয়ে কাজ করতে বসলে সমস্যাটা যে কতটা বিকট সেটা টের পাওয়া যায়।


হাঁটুপানির জলদস্যু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

"হালকা বাগ" জিনিসটা বুঝলাম না!

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

হিমু এর ছবি

আলগানো যাবে সহজে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ভাইরে অতীতমুখী প্যাঁচাল তো অনেকই হইলো। এইবার একটু ভবিষ্যতমুখী হই, না কি কন? আসলে জাতি হিসাবে আবেগী আর ভোক***দ বইলাই এখনো আমরা দুনিয়াতে খাবি খাইতাছি। এই দোষে আমি, আপনে সবাই দোষী। তয় এট্টু ট্রাই করা উচিত নতুন প্রজন্মরে জানানোর যে আমরা ভোক হইলেও ওদের ভোক হওয়া ফরজ না। শেষ বিচারে ব্লগ এখনো আমার কাছে সচেতনতা বৃদ্ধির যন্ত্র। মনের দুয়ার লাত্থি মাইরা খুইলা দেওয়ার মেশিন। গুটিকয় আঁতেলের কারনে সেই মেশিনের এফেক্টিভ্‌নেস কি নষ্ট হইতে পারে?
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

হিমু এর ছবি

পোস্টের শুরুর কথাটা দেখেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো। প্রকৌশলী হিসাবে একটা সার্টিফিকেট কামাই করেছি, আরেকটা করতে যাচ্ছি, কিন্তু প্রতিভা পাই কই? কে দিবে আমাকে সে সার্টিফিকেট? কার শিক্ষানবিশি করলে এমন একটা কাগজ অর্জন করতে পারবো?

তেল ছেড়ে বাতাস ধরার ধান্ধায় আছি। কিছু আশার বাণী শোনান।


হাঁটুপানির জলদস্যু

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দরকারী পোস্ট। ভাল লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। "প্রতিভাবান" অংশটুকুতেই আটকে গেলাম আমিও। সত্যিকার ভবিষ্যৎমুখী লেখার জন্য ধন্যবাদ।


রাজাকার রাজা কার?
এক ভাগ তুমি আর তিন ভাগ আমার!

রাফি(লগইন করতে পারছি না) এর ছবি

জনাব,
আগামী পর্বে পরিবেশ প্রকৌশলীদের সম্পর্কে আশার বাণী শুনতে চাই।
পুরকৌশল হতে নির্মাণ কৌশল বাদ দিয়ে শেষ লেভেলে পরিবেশ নিয়ে মাথা ঘামানোতে অনেকেই বাগড়া দিচ্ছে। দেশে ও বিদেশে এই সেক্টরের আশা ও আশঙ্কার কথা লিখলে আমার মত হবু ইঞ্জিনিয়ারদের উপকার হত।
এমন একটা দরকারী বিষয় অবতারণার জন্য ধন্যবাদ।

দ্রোহী এর ছবি

—কৌশলীদের নিয়ে লিখলেন কিন্তু —জ্ঞানীদের কী হবে?


কী ব্লগার? ডরাইলা?

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

জ্ঞানী লোকের ভাত নাই ভাইজান। জাহেলিয়াতের যুগ কিনা। যখন ইকনমিক্সে ঢুকি, এক ব্যাটা আমারে কইছিলো - ও তোমরা আমগো অর্থনীতি বুঝাইবা, তাই না? যখন সুদিন, তখনও মাইনষের কাছে সুসংবাদ বেইচা পয়সা বানাইবা, আর যখন দুর্দিন, তখনও দুঃসংবাদ বেইচা পকেট ভরবা।

ডরে ডরে আছি, কবে মাইনষে আমগো ভোলটা টের পাইয়া যায়!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সৌরভ এর ছবি

হুমম, চাকুরি নাকি সব এখন তেলের দুনিয়ায়। ইন্ডিয়ার ব্যাকঅফিস বিজনেস ইকোনোমির সাথে সাথে পড়তির দিকে। সফটওয়্যার ফার্মেরা নাকি এখন চোখ ঘুরাচ্ছে মিডল ইস্ট আর আফ্রিকার দিকে।
টাকা ঘুরতেসে অন্য জায়গায়। না, চীন, ইন্ডিয়া, রাশিয়া এরা নয়, এখন হটপয়েন্ট নাকি ঘানা, ভিয়েতনাম, কাজাখস্তান

কই যে যাই! যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলা অসম্ভব।
এইসব ইনফরমেশন মাথায় ঢুকলে ভয় করে। তাই আর পত্র-পত্রিকা পড়ি না।
প্রকৌশলীর ডিগ্রি আছে, কিন্তুক কোন কৌশল প্রকৃষ্টভাবে শিখছি বইলা মনে পড়তেছে না।


মাস্টরে কইসে, আম্রা সব শিক্ষানবিস


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

দিগন্ত এর ছবি

আহা, লেখাটা হল বিনিয়োগ নিয়ে। এইসব দেশের স্টক মার্কেট বুম হবার কথা। চাকরি এখনও চিন ভারতেই আছে, কারণ লোক এখানেই পাওয়া যায় সহজে।

এরকম একটা দেশের কথা বলি। দেশটার নাম ইকুয়টেরিয়াল গিনি। তাদের মাথাপিছু গড় আয় এখন ৩০,০০০ ডলার (পিপিপি)এরও বেশী, যাতে তারা কিনা বিশ্বে নবম। অথচ এদের আশেপাশের দেশগুলো যথারীতি গরিব। এমনকি এদের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সেও পেছনের সারীতেই রাখা হয় - ভারত বা বাংলাদেশের সাথেই। আসলে ১৯৯৬ সালে তেল আবিষ্কারের পরের এদের এত রমরমা - ১৯৯৭ সালে জিডিপি ১০৫% বাড়ার পরেও এদের মাথাপিছু গড় আয় ছিল মাত্র ১০০০ ডলার।

এবার বক্তব্য হল, এরকম একটা দেশ তো নিজেদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার আর হিউম্যান ডেভেলপমেন্টে ইনভেস্ট করবেই ... বিনিয়োগে লাভের সম্ভাবনাও তাই খুব বেশী। ভেবে দেখুন ১৯৯৬ নাগাদ যারা এই দেশে বিনিয়োগ করেছিলেন, তারা এখন কেমন টাকা গুনছেন।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

শামীম এর ছবি

লেখাটা ছাপিয়ে ইউনিভার্সিটিতে (যেখানে চাকুরী করি) ঝুলিয়ে দেব। ২য় পর্বের অপেক্ষায়।

মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষ করে দুবাইয়ে যেই রকম মেগা প্রজেক্ট চলছে সেগুলোতে অনেক প্রকৌশলীর দরকার বলেই মনে হয়।
==========
আজ প্রথম আলোর পৃষ্ঠা-১১, খোলা কলম এ মত প্রকাশের স্বাধীনতা হিসেবে "নাড়ির যোগ ছিঁড়ে দেবেন না" শিরোনামে সচলায়তন বিষয়ে ইশতিয়াক রউফ-এর চমৎকার একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

দিগন্ত এর ছবি

পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং যতটা নেই নেই ভাবছেন ব্যাপারটা ততটা মনে হয় না। আন্তর্জাতিক সংস্থার অ্যাক্রেডিশনের তালিকায় আমি তো বুয়েটের নামও পাচ্ছি ... বরং এখানে নামজাদা কলেজ ইন্সটিটিউট অব পেট্রোলিয়াম টেকনলজির নামই পেলাম না।

আমার ধারণা তেলের বাণিজ্য ঘিরে তিনটি শাখার খুব ভাল চাহিদা হবে -
১) জিওলজি/জিওফিজিক্স - তেল খোঁজার জন্য
২) পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং - তেল তোলার জন্য
৩) এনার্জি ইঞ্জিনিয়ারিং - তেলের বিকল্প শক্তির জন্য


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

এই খবরটা খুব ইর্ম্পট্যান্ট: http://www.pontealdia.com/index.php?option=com_content&task=view&id=626&Itemid=1&ed=15

ক্যানাডার আলবার্টাতে তেল উত্তোলনের বুম লেগেছে। তারা ইমিগ্রেশন পদ্ধতি শিথিল করেছে। আমেরিকার H1B থাকলে সরাসরি পার্মন্যান্ট রেসিডেন্সী দিয়ে দিচ্ছে। আমেরিকার ইমিগ্রেশন নিয়ে বেশ ঝামেলা চলছে। ফাঁকতালে ফায়দা লুটছে ক্যানাডা।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

১) শুধু আলবার্টা না, সাসকাচুয়ানেও ওয়েল বুম শুরু হইছে ... এই মূহুর্তে কোন লিংক নাই হাতে, খুঁজতে ইচ্ছা করতেছে না, বাট কথা সত্য হাসি

২) কানাডা সরকার এই বছর ইমিগ্রেশন পলিসি খুবই উদার করে দিছে ... এরা চায় যত বেশি সংখ্যক স্কিল্ড প্রফেশনাল এইখানে আসুক ... যেমন গত এপ্রিলে সরকার ঘোষণা দিছে, বিদেশী পুলাপান পাস করা মাত্র এপ্লাই করলেই তিন বছরের ওয়ার্ক পারমিট পাবে, তার জন্য হাতে কোন জব অফার থাকতে হবে না এবং নিজের ফিল্ডেই কাজ করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতাও নাই ...
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

সবজান্তা এর ছবি

প্রতিভাবান শব্দটা দেইখা ঢুকুম নাকি ভাবতেছিলাম। পরে শুধু লেখকের নামের কারণে ঢুকলাম হো হো হো

ভাই ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রীদের নিয়েও কিছু আশার কথা শোনান।যোগাযোগ ফিল্ডে বাইরে দাম কেমন, কোথায় কোথায় গুঁতাগুঁতি করলে আখেরে কিছু লাভ হবে সেইগুলান নিয়াও কেউ কিছু বলেন।

গর্তে পড়তে আমার বাকি আর মাত্র ৬ মাস !!


অলমিতি বিস্তারেণ

অতিথি লেখক এর ছবি

"গণিত, ফিজিক্স, রসায়ন - এসবে অনাগ্রহ বা অনীহা থাকলে বিজ্ঞানে অগ্রসর হওয়া সম্ভব না।"

- বাংলাদেশের শিক্ষা ও শিক্ষাপরবর্তী অবকাঠামো এমন যে গণিত, পদার্থ, রসায়ন এই বিষয়গুলোতে পড়াশুনা করলে প্রতিষ্ঠা পাওয়া যায় না। সবার চিন্তা কিভাবে প্রকৌশলী হওয়া যায়......কারণ বিজ্ঞানী হলে বাংলাদেশে যে ভাত নেই। বাইরে যাবার সুযোগ আর কজন পায়! দেশে কিছু করতে পারলেও পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া যায় না। কাজেই গণিত, পদার্থ, রসায়ন কেউ পড়তে চায়না। অথচ মেধাবী ছাত্রগুলোকে সবচেয়ে বেশি দরকার এগুলোতেই।

-টিকটিকির ল্যাজ

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

কি যে করি !! মনেহয় পড়াশুনা ছাইড়া দেওয়া লাগবো শ্যাষের দিকে আইসা । আমিও তো কেরানী হওনের লাইগা পড়তাছি। মিস্ত্রী হওনের বড় সাধ আছিল কিন্তু পড়া হইলোনা।
খুব সময়োপযোগী লেখা দিয়েছেন মুস্তফী ভাই। ভাল লাগল পড়ে। বাকিটা পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।

--------------------------------------------------------

ক্যামেলিয়া আলম এর ছবি

বিশাল আশার বানী---------!

.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........

.....................................................................................
সময়ের কাছে এসে সাক্ষ্য দিয়ে চ'লে যেতে হয়
কী কাজ করেছি আর কী কথা ভেবেছি..........

বিপ্রতীপ এর ছবি

বুয়েটে তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন পেট্টোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাস্টার্স করার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু শেষ বর্ষে পেট্টোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ারিং রিলেটেড যে কয়টা কোর্স করেছি বুয়েটে, শিক্ষকদের পড়ানোর ধরনটা এতোটাই হতাশাজনক ছিল যে এবিষয়ে পড়ার আগ্রহটাই নষ্ট হয়ে গেছে... মন খারাপ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
http://biprodhar.com

স্বপ্নাহত এর ছবি

আইইউটিতে মেকানিক্যাল ইন্জিনিয়ারিং এ আমার চলতি সেমিসটার এই ফসিল ফুয়েল ইনজিনিয়ারিং নামে একটা কোর্স আছে।

যারা থার্ড ইয়ারে ওঠে স্পেশালাইজেশনের জন্য এনার্জি সেকশন বাছাই করে তাদের এই রিলেটেড আরও কিছু কোর্স করতে হয়।
---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

স্বপ্নাহত এর ছবি

পোস্টটার জন্য বিশাল একটা ধন্যবাদ।

প্রতিভাবান না হইলে কি হইবো, স্বপ্ন দেখতে তো বস বেশি প্রতিভাবান হইতে হয়না। দেঁতো হাসি

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।