মাঝে মাঝে কিছু লেখা চোখে পড়ে যেগুলো দিন-দুনিয়া সম্পর্কে নিজের পুরনো ধারণাগুলোকে বদলে দিতে পারে। এই লেখাগুলো চোখের সামনে নতুন দিগন্ত মেলে ধরে, পৃথিবীকে নতুন এক আলোয় দেখতে সাহায্য করে। অনেকদিন পরে গতকাল এমনই একটা লেখা পড়লাম মনে হয়।
এর আগের পোস্টে ব্লগার জেরোম সম্পর্কে কিছু বলেছিলাম। ভদ্রলোক ফরাসী, লেখেন দুর্দান্ত। Anglo disease নিয়ে তাঁর লেখা প্রথম যেদিন পড়েছিলাম, মনে হচ্ছিলো এ আমি কিসের হদিশ পেলাম, কি বুঝে ফেললাম। হঠাতই পায়ের তলার মাটিটা সেদিন কেমন টলে উঠেছিল, মনে হয়েছিল আসলে আমি তো চোরাবালির উপরে দাঁড়িয়ে আছি। যে দেশে থাকি আর কাজ করি, সে দেশের ভূত-ভবিষ্যত যে আসলে কতটা দুর্বল, সেটা সম্পর্কে একটা প্রখর ধারণা সেদিন অর্জন করেছিলাম, মঁশিয়ে জেরোমের কল্যাণে।
এরপরে থেকে কাজে টীমে আমার দুর্নাম হয়ে যায় নিরাশাবাদী নামে। গত দুই বছরে যতবার ইউকে অর্থনীতি নিয়ে আমাদের আলাপ আলোচনা হয়েছে (মানে মাসে অন্তত কয়েকবার), প্রতিবারই অন্যান্যদের থেকে আমার চিন্তা অনেক বেশী নেগেটিভ থাকতো। সেটা বাড়ির দাম নিয়ে হোক, বেকারত্ব হোক, বা প্রবৃদ্ধি হোক - আমার মনে হতো যে অবস্থা আরো অনেক খারাপ হওয়ার চান্স আছে। শুরুতে তাই টীমের লোকজন আমাকে নিয়ে বেশ ঠাট্টা করতো, আমি কেন এতো gloomy, এইসব নিয়ে মশকরা আর কি।
কিন্তু আমার মনের পেছনে তখন আটকে ছিলো ব্লগের সেই ধারালো বিশ্লেষণ - এংলো ব্যাধি। সত্যিই তো! এদেশের কারখানা ফ্যাক্টরি সব চলে গেছে বহুদিন আগে, কিছুই তৈরী হয় না এখানে আর। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি শিক্ষার চর্চা নাই হয়ে গেছে, স্কুলের বাচ্চারা গণিত বাদ দিয়ে শেখে মিডিয়া স্টাডিজ-এর মত অন্তঃসারশুন্য হাস্যকর সাবজেক্ট। কাজের কাজ বলতে এদের আছে ১) হাউজিং - মানে একে অপরের কাছে দুইদিন পর পর বাড়ি বিক্রি করা, ২) রিটেইল - মানে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে এক গাদা অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে (সব সস্তা, মেইড ইন চায়না) দেনার পাহাড় তৈরী করা, আর ৩) ফাইন্যান্স - মানে প্রকৃত প্রডাকশন বাদ দিয়ে টাকা চালাচালির খেলাটাকে মূল্যবান এক্টিভিটি হিসাবে ভূল করা।
আমার প্রিয় কলামিস্টদের একজন মার্টিন ঊলফ একবার একটা লেখা শুরু করেছিলেন এই বলে যে The British people cannot hope to grow rich by selling each other more and more expensive houses in perpetuity. এর থেকে সত্য ভাষণ আর কি হতে পারে? কলিগরা যতই হাসুক, এদের ভবিষ্যত তো একেবারেই অন্ধকার!
হয়তো এদের অর্থনীতির চেহারা আমি যতটা ভাবছি, তার থেকে আরেকটু আশাব্যঞ্জক। হয়তো তাড়াতাড়িই বাউন্স-ব্যাক করতে পারবে। কিন্তু এটা সত্য যে গত কয় মাস ধরে কলিগরা আর আগের মত হাসে না!
*
গতকাল তেমনই আরেকটা দামী লেখা পড়লাম। পড়ার পরে আমার যে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, সেটা একটু পরে বলছি। আপাতত লেখাটার নীচে একটা ভিত্তি দেওয়ার চেষ্টা করি।
লিকুইডিটি নিয়ে পুরান এক পোস্টে ব্যাখ্যা করেছিলাম যে লিকুইডিটি কখনো অলস বসে থাকে না, সব সময় সে খুঁজে বেড়ায় সম্পদ বা অ্যাসেট। Liquidity chases assets - always. অর্থনীতিতে লিকুইডিটি অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটাকে যদি সময়মত নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তাহলে সেটা কোন না কোন উপায়ে প্রকাশ পাবেই।
বাড়তি লিকুইডিটির কারনে কি কি অ্যাসেটের দাম বাড়তে পারে?
- স্টক বা শেয়ার হতে পারে - ৯৬-এর ঢাকা বা ২০০১-এর ডটকম ক্র্যাশ।
- ঘর-বাড়ির দাম হতে পারে, যেটা বর্তমান মন্দার প্রধানতম উৎস। (ফিনিক্স থেকে বসুন্ধরা)।
- কমোডিটিস হতে পারে, যেমন বিভিন্ন খনিজদ্রব্য আর কৃষিপণ্য - স্টিল, টিন, কপার, কফি, হেনতেন।
আর অতিরিক্ত লিকুইডিটি-ওয়ালা কারবারীদের কারনে তেলের দাম কত বেড়ে গিয়েছিল গত বছর, তা এখনো সবার পরিষ্কার মনে আছে। তেলের ডিমান্ড-সাপ্লাই নিয়ে কিছু ঝামেলা ছিল, বুঝলাম, কিন্তু তার কারনে ১০০ ডলারের তেল তো আর রাতারাতি ১৫০ ডলারে চলে যেতে পারে না! (আর এখন সেই তেল কিনা ব্যারেল প্রতি ৩৫ ডলারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে।)
*
কিন্তু asset price বাদেও লিকুইডিটি আরেকটা জায়গায় গিয়ে আঘাত হানতে পারে। সেটা হলো সাধারণ ব্যবহার্য জিনিসপত্রের দাম বা general price level. (এখানে আবারও বলি যে সাপ্লাই ডিমান্ডের মূল ব্যাপারটা কিন্তু উপেক্ষা করতে পারবেন না। যদি খরার কারনে চাল উৎপাদন খারাপ হয়, তাহলে চালের দাম বাড়বেই। সেটা লিকুইডিটি থাকুক বা না থাকুক।)
কিন্তু যেখানে সাপ্লাই-ডিমান্ডে্র বিশেষ কোন ঝামেলা নেই, সেখানে অতিরিক্ত লিকুইডিটি সাধারণ মূল্যমানকে ঠেলে উপরে পাঠিয়ে দিতে পারে। এরই নাম মূল্যস্ফীতি বা ইনফ্লেশান। তাহলে সারমর্ম কি?
1. Excess liquidity --> higher asset prices
2. Excess liquidity --> higher inflation
*
অর্থনীতি মেশিন না, অর্থনীতি একটা শরীর। আর জিনিসপত্রের দাম এই শরীরের টেম্পারেচার।
মূল্যস্ফীতি জিনিসটাও ব্যাপক ইন্টারেস্টিং। গত পোস্টে বলেছিলাম অর্থনীতি একটা মেশিনের মত। আর লিকুইডিটি তার গ্রীজ।
মূল্যস্ফীতি বুঝতে গিয়ে এরকম আরেকটা উপমা আমার কাছে আরো বেশী ভালো লাগে। সেটা হলো অর্থনীতি হলো একটা মানব-শরীরের মত। বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি হলো তার হাত-পা-মাথা। আর লিকুইডিটি বা পুঁজি? সেটা হলো শরীরের রক্ত। পুরো বডিকে চালু রাখছে এই রক্ত।
আমরা জানি যে শরীরের একটা স্বাভাবিক তাপমাত্রা আছে। মানব শরীরে সেটা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন ভাবুন যে অনেক দৌড়-ঝাপ-ব্যায়াম করলে কি হয়? শরীর গরম হয়ে যায়, বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়।
মূল্যস্ফীতি জিনিসটা ঠিক একই রকম না হলেও এর বেশ কাছাকাছি। অতিরিক্ত লিকুইডিটি সঞ্চালনের ফলে ইকনমির তাপমাত্রা - মানে জিনিসপত্রের দাম - সেটা বেড়ে যেতে পারে। শরীরে অতিরিক্ত গরম অর্থাৎ জ্বর হওয়াটা যেমন খারাপ, অর্থনীতিতে বাড়াবাড়ি মূল্যস্ফীতিও তেমন খারাপ। এ কারনেই অনেক সময় বিবিসি বা সিএনএন-এর খবরে শুনবেন অমুক economy is overheating. ঠিক এই ঘটনাটাই বোঝায় তখন।
আবার উল্টোভাবে চিন্তা করলে শরীরে যখন রক্ত কম, তখন শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়, ম্যান্দা মেরে যায়। অর্থনীতিতে যখন লিকুইডিটি কম, তখন অর্থনীতিও হয়ে পড়ে অথর্ব। আর জিনিসপত্রের দাম যদি নাও কমে, তাহলে অন্তত থিতু হয়ে যায়। কারো কাছে টাকা নেই, দাম বাড়িয়ে কি লাভ। বরং একই রাখো, সম্ভব হলে কমাও।
*
এখন আমরা আসছি ধীরে ধীরে গত ত্রিশ বছরের অর্থনীতির ইতিহাসের দিকে। সত্তরের দশকে পশ্চিমা দেশগুলো এক বিষম সংকটে পড়ে গিয়েছিল। ধুমধাম করে মূল্যস্ফীতি হচ্ছিল আমেরিকা আর ইউরোপে - বছরে ১০-১২% কোন ব্যাপারই ছিল না। (নীচের গ্রাফ)
এখন আপনি বলতে পারেন তো কি হয়েছে। মানুষের তো টাকা আছে। কিন্তু সেটাও আবার পুরোপুরি ঠিক না। জিনিসের দাম বাড়লো ১০%, আর আপনার বেতন বাড়লো ৫% - তাহলে কিন্তু আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হলেন। প্রকৃত বিচারে (real terms) আপনি আগের থেকে কিছুটা হলেও লোকসান খেলেন।
এই মূল্যস্ফীতির বিভিন্ন রকম কারুকাজ আছে। আজকের মতো সোজা চলে যাই কি ঘটেছিল তার উপর।
Enter Mr Volcker
১৯৭৯ সালে ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট আর অসন্তোষের মুখোমুখি হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। অর্থনীতির ১২টা বেজে ১৩টা বাজার পথে। আরবরা কথায় কথায় তেল আটকে দেয় - আর পেট্রল পাম্পে লাগে লম্বা লম্বা লাইন। চাকরি-বাকরির অবস্থা ভালো না - ট্রেড ইউনিয়ন ক্ষণে ক্ষণে ডাকে স্ট্রাইক। ওদিকে মুদ্রাস্ফীতির কারনে মানুষের উঠেছে নাভিশ্বাস। ভিয়েতনামে পরাজয়ের দগদগে ঘা মার্কিনদের শরীরে তখনো ফ্রেশ। রাশিয়া আফগানিস্তানে আক্রমণ করে দেশটাকে কব্জা করে ফেলেছে। আর তাবেদার ইরান-ও হাতছাড়া হয়ে গেছে। মার্কিন চামচা ইরানের প্রাক্তণ শাহ বিতাড়িত। ইসলামী বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। ইমাম খোমেনির ভাষায় আমেরিকা হলো the great Satan. খোমেনি সাহেব ৫২জন মার্কিন নাগরিককে আটকে রেখেছেন তেহরানের দূতাবাসে।
মানে সব কিছু মিলিয়ে একটা ব্যাড়া-ছ্যাড়া অবস্থা। ১৯৮০ সালের আসন্ন নির্বাচনে কার্টারের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। সুনিশ্চিতভাবে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে চলে আসবেন রোনাল্ড রেগান। এর মধ্যে কার্টার এক কাজ করলেন।
ফেডারেল রিজার্ভের প্রধাণের পদ তখন খালি হয়েছে। কার্টার এই গুরুদায়িত্ব দিলেন প্রিন্সটন আর হার্ভার্ডে শিক্ষিত এক অর্থনীতিবিদকে। তার নাম পল ভোকার। ভদ্রলোক বেজায় লম্বা - ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি - তাকে ঠাট্টা করে ডাকা হয় Tall Paul!
এর পরে আট বছর পল ভোকার ফেড প্রধাণের দায়িত্ব বিশেষ নৈপুণ্যের সাথে পালন করেন। এবং অনেকের বিচারে তিনি আধুনিক যুগের অর্থনীতির অন্যতম একজন কান্ডারী। তার মত সাহস, দৃঢ়তা আর ধীশক্তি সম্পন্ন ফেড চেয়ারম্যান এর পরে আর মিলেনি। বরং তার পরে আমরা পেয়েছি গ্রীন্সপ্যানের মত এক কুলাঙ্গার, যার অধীনে ১৮ বছরে মিলেছে একটি ডটকম বাবেল, একটি হাউজিং বাবেল, একটি সাবপ্রাইম ক্রাইসিস আর অল্প সময়ের মধ্যে দুটো বিশাল ক্র্যাশ! (গতকাল এই উজবুকের স্বীকারোক্তি উঠেছে পত্রিকায় - আমি তো সাবপ্রাইম জিনিসটা বুঝতেই পারিনি! হাস্যকর ব্যাপার...)
কি করেছিলেন ভোকার? এক কথায় তিনি যেটা করেন, তার নাম inflation targetting। তিনি বলেন যে ১০-১২% মূল্যস্ফীতির মত ক্ষতিকর জিনিস অর্থনীতিতে আর কিছু নেই। জিনিসপত্রের দামের ঊর্ধ্বগতির কারনে মানুষ বেদিশা হয়ে পড়ে, ভবিষ্যতের উপর আস্থা হারিয়ে ফেলে। জীবনের বড় বড় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে তারা দ্বিধা করে, লং-টার্ম প্ল্যান করতে ভয় পায়। জিনিসপত্রের দামের এই রকম অনিশ্চয়তা খুব বেশী খারাপ।
তাই যে কোন মূল্যে মূল্যস্ফীতি বিষয়ে একটা নিশ্চয়তা ফিরিয়ে আনতে হবে।
সেটা কিভাবে করবেন? বাৎসরিক inflation কে একটা সীমানার মধ্যে বেঁধে দিতে হবে। যেমন ধরেন ১% থেকে ৩%। বা ২% থেকে ৫%। এর থেকে বেশীও যেতে পারবে না, আবার এর কমও না। মূল্যস্ফীতির পরিষ্কার টার্গেট নির্ধারণ করে দেয়া হলো। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কাজই হবে ইনফ্লেশান-কে এই দাগের ভেতরে রাখা।
এই কারনে পলিসির নাম ইনফ্লেশান টারগেটিং।
*
গল্প বেশী লম্বা হয়ে যাচ্ছে, তাই পরের খন্ডে শেষ করার চেষ্টা করবো। আমার কাছে এই গল্পটা এতোই মজার - যে পুরো ব্যাপারটা একটা স্পাই গল্পের মতই টানটান লাগে! তাও চেষ্টা করবো প্যাঁচাল কমিয়ে নেক্সট টাইম শেষ করে দিতে। আর যারা এতো বক-বক না শুনে সেই সুপার চাল্লু লেখাটা পড়ে ফেলতে চান - তাদের জন্যে লিংক।
মন্তব্য
অসাধারণ একটা লেখা
কিন্তু চল্লিশবার পড়ার পরেও পাবলিক কমেন্টায় না কেন? ভয় পাইছে নাকি?
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
কিং ভাই, সহজ করেই রান্না করছিলাম। তবে একটু গুরুপাক হয়ে গেল কি না কে জানে!!!
আপনার সাহসের তারিফ
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
সুবিনয়দা, মনে কিছু নিয়েন না, আপনি কট্টর নৈরাশ্যবাদি লোক :D।
লেখা ভালো হয়েছে, পরের পর্ব চাই দ্রুত।
আগে থেকেই আশার বাতি নিভিয়ে রাখলে পরে গিয়ে হতাশ হওয়া লাগে না
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
মিয়া .... এইসব ক্লাইমেক্স লেখকদের স্টাইল ছাড়েন .... লিংক দিয়েই খালাস হইলে হবে না ... মানি না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আমার কাছে আজকেরটা গত দিনের চেয়ে সহজপাচ্য হইছে ... ইকনমিক্সের পাঠ চলতে থাকুক বস্
প্রশ্ন:
এই যে ওবামা স্টিমুলাস প্যাকেজের নামে প্রায় ট্রিলিয়ন ডলার নামাচ্ছে
১। এই কৃত্রিম হস্তক্ষেপে আগের পোস্টের আলোচনার ইকুইলিব্রিয়ামে আসাটা দেরী হয়ে যাবেনা? ... নাকি ইকুইলিব্রিয়ামে যাওয়ার প্রসেসটারে স্লোডাউন করাটাই এদের আপাতঃ পলিসি?
২। স্টিমুলাসের নামে বিশাল পরিমাণ টাকা বাজারে আসলে তো ভয়াবহ ইনফ্লেশন হওয়ার কথা ... ফেডেরাল ব্যাংক সেইটারে ঠেকাবে কি কি স্টেপ নিয়ে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আমার মনে হয় ওবামা খুব বেশি চিন্তিত বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে। এখন যদি সে ইকুইলিব্রয়ামের কথা ভেবে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে, তাহলে রাস্তা ঘাটে রায়ট লেগে যাবে। মার্কিন পাবলিক এমনিতেই প্রচন্ড দুর্দশায় আছে, গত দুই বছরে ওদের অর্থনৈতিক জীবনব্যবস্থা মোটামুটি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। আর ওকে ভোট দিয়েছেই কিছু একটা করার জন্যে। সফল হবে কি না কেউ হলফ করে বলতে পারবে না, কিন্তু চেষ্টা ওকে চালিয়ে যেতে হবে। স্টিমুলাস নিয়ে অলরেডি অনেক সমালোচনা হয়েছে। এতে কি আসলেই জব সৃষ্টি হবে না কি, এই সব। দেখা যাক। সময়ই সব বলে দিবে কারন কেউ কিছু জানে না!
ইনফ্লেশানের উত্তরটাও কাছাকাছি। যখন হবে, তখন ট্যাকেল করা যাবে। সেটা নিয়ে এখন ভেবে কোন লাভ নেই, কারন মানুষের চাকরি আর বেতন, তাদের পরিবারের পেটে ভাত আর মাথার উপরে ছাদ নিশ্চিত করাটাই এখন বেশী জরুরী।
আর অর্থনীতির ডিমান্ড যেখানে নেগেটিভ, সেখানে ইনফ্লেশান নিয়ে চিন্তা করার আপাতত কোন দরকার নেই। মানুষ তো ভয়ের চোটে কেনাকাটা একদম কমিয়ে দিয়েছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়তে এখনো তাই অনেক দেরী। তবে হ্যাঁ, ভবিষ্যতের একটা রিস্ক তৈরী হয়ে গেল।
রিসেশনে দাম যে পড়েছে, সেই নিয়ে একটা NYT আর্টিকেল।
------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
অর্থনীতি নিয়ে এমন সহজপাঠ আর হয় কি না সন্দেহ ।
-
বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে কিছু বিশ্লেষন করলে কেমন হয় ? যেই যে বসুন্ধরা নিয়ে দুই কলম লিখেছিলেন , তারপর আর কিছু পেলাম না ।
গ্যাপটা আসলে আমারই। ইচ্ছা করে লিখতে কিন্তু সোর্স বা রিসোর্স পাই না বেশী। মন্দা নিয়ে এই পোস্টগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক লেখা আর আর্টিকেল পড়ার ফসল। তাই গল্পটা মোটামুটি ভালোমত জানা। দেশের রিসোর্সগুলো নিয়ে আমারই পরিচিতির অভাব আছে। তাও চেষ্টা করেছি গার্মেন্টস/রেমিট্যান্স আর কয়লা/ফুলবাড়ি নিয়ে একটা-দুটো লেখা দিতে। যদিও খুব বেশী কনফিডেন্ট ফিল করি না। (যত বেশী লিংক, তত বেশী কনফিডেন্স পাই আর কি!)
দেশে যারা আছেন, ফারুক ওয়াসিফ বা আপনি, তারা যদি একটা কিছু বিষয়ে ডিসকাশন শুরু করতেন, তাহলে সেটা ধরে আগানো যেতো। আশায় থাকলাম...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
বস, আরেকটা মারাত্মক জিনিশ ছাড়লেন।
পরের পর্ব ছাড়তে দেরি কইরেন না।
আচ্ছা একটা খুবই উজবুকি প্রশ্ন, এই ক্রেডিট ক্রাঞ্চ কি এতোটাই শক্তিশালী হতে পারে না যে উন্নত বিশ্বের দেশগুলি আর কখনোই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না ? না কি যতো যাই হোক, সবাই আবার মাথা তুলে দাঁড়াবে (সেটা দেরিতে হলেও) এ'টা নিশ্চিত ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
দাদা এইটাই তো সবার মুখে প্রশ্ন। এর উত্তর জানলে আমি স্লামডগ ছাড়াই মিলিয়নেয়ার হইতে পারতাম! মূল দুইটা রাস্তা আর কি - বিভিন্ন সরকারী প্রচেষ্টা সফল হলে দেড়-দুই বছরের মধ্যে বাউন্স-ব্যাক। আর অসফল হলে জাপানের মত আগামী এক দশক ধরে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হবে। বাস্তবে কোনটা হবে, উপরওয়ালা মালুম। আগের পোস্টে মুকিত ভাই জাপানের হারানো দশক সম্পর্কে কিছু মন্তব্য দিয়েছিলেন। সেই অবস্থা আমার মনে হয় ইউকে-তে আসলেও আসতে পারে। কালকে এফ,টি-র জোনাথান গাথ্রি (Jonathan Guthrie) একটা ভালো (এবং হাসির) লেখা দিয়েছেন। যে অর্থনীতির তাড়াতাড়ি সেরে ওঠার ক্ষমতা সম্পর্কে আমাদের পুরানো ধ্যান-ধারণা অনেকগুলোই বাদ দিতে হতে পারে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
লিঙ্ক ধরাইয়া কাইটা পইড়েন না। বকবকই পড়তে চাই।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আপনার অবগতির জন্য তথ্য যোগ করি ।
বাংলাদেশে ক্রেডিটক্রাঞ্চের চাপ পড়া শুরু হয়েছে গার্মেন্টস সেক্টরে ।
এইচএন্ডএম আমার সাথে তাদের যে চুক্তি , তার চাইতে ২০% কম পোষাক কিনবে বলে জানাচ্ছে । মে জুন মাসের দুইটা বড় শিপমেন্ট অলরেডি ক্যানসেল ।
আরো কিছু ফ্যাক্টরীতেও এরকম হয়েছে ।
তবে এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা কী না , তা আরো কয়েকদিন পরে স্পষ্ট হবে ।
মন্দা নিয়ে কিছু সেরা রিসোর্স এখানে দিয়ে রাখি।
- ব্লগারদের মধ্যে ডেইলি কসের জেরোম এক বাক্যে অসাধারণ
http://jerome-a-paris.dailykos.com/
- সদ্য নোবেলপ্রাপ্ত পল ক্রুগম্যান অর্থনীতি বিষয়ে ক্ষুরধার লেখা লেখেন। তার ব্লগটাও ট্রাই করে দেখুন
http://krugman.blogs.nytimes.com/
- খবরের কাগজের মধ্যে লন্ডনের ফিনানশিয়াল টাইমস অতুলনীয়। আর যে কোন পেপারের থেকে ওদের চিন্তাধারা পরিষ্কার আর লেখার মানও খুবই উন্নত। সকালে ইমেইল চেক করে ওদের উপসম্পাদকীয় পাতা দেখাটা নিত্য ফরজ কাজ!
http://www.ft.com/comment
শুধুমাত্র এই তিনটা রিসোর্স নিয়মিত দেখলেই মন্দার অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। ফেভারিটসে রেখে দিন। আর সব একবারে না বুঝলে দমবেন না। এক জিনিস হাজারবার না পড়ে আমি কখনো কোন কিছুই বুঝিনি!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ভালো লাগলো। সকালেই পড়া হয়েছিল, মন্তব্য করা হয়নি। এরকম লেখা আরো চাই।
নতুন মন্তব্য করুন