করুণ সেই প্রথম রাতের কাহিনী।
অনেকক্ষণ রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে থাকার পরে অন্ধকার থেকে আবির্ভাব হলো এক জোড়া কপোত-কপোতীর। নৈশভ্রমণ সেরে তারা হোস্টেলে ফিরছিলো। সদয় হয়ে তারা আমাদের গেটের ভেতরে ঢুকতে দিলো। অন্ধ সিঁড়ি বেয়ে আমরা চলে যাই রিসেপশনে। কিন্তু সব খা-খা। একটা বাতিও জ্বলছে না কোথাও, ডেস্কে লোক থাকা তো দূরের কথা। (পরের দিন সকালে জানতে পারি যে ডেস্কের লোক আমাদের জন্য রাত একটা অব্দি বসে ছিল। এরপরেও আমাদের দেখা না পেয়ে তারা তালা-তুলা লাগিয়ে বাড়ি চলে যায়।)
তো এখন ঘুমাবো কই? রাত প্রায় আড়াইটা বেজে গেছে। আমাদের রুম নাম্বার জানি না। কোন চাবি-টাবিও নেই কোথাও। সারাদিন কাজের পরে দীর্ঘ প্লেন ভ্রমণ সেরে লাগেজ টানতে টানতে আমরা তিনজনই বেশ ক্লান্ত। কিন্তু ঘুমের কোন সুব্যবস্থা এই রাতে হবে বলে তো মনে হচ্ছে না।
হোস্টেলের লবিতে দুটো ঢাউস সাইজের কাউচ দেখা যাচ্ছে। বুঝতে পারছি, আজকে রাতে এটাই আমাদের বিছানা। বাকি দুজনের জন্য এহেন হোস্টেলে থাকা নতুন অভিজ্ঞতা, তাই তারা সহজ়ে মেনে নিতে পারছে না। আমি এর আগে লন্ডনে আর পোল্যান্ডের ক্রাকোভে ইয়ুথ হোস্টেলে থেকেছি। তখন থেকেই জানি যে আর যাই পাই, পাঁচ-তারা হোটেলের সার্ভিস এখানে আশা করা বোকামি। তাই বললাম যে হাত-মুখ ধুয়ে চল, বাকি রাতটা অন্তত ঘুমানোর চেষ্টা করি। কারন এখন রেস্ট না নিলে আগামীকাল পুরাটাই মাঠে মারা যাবে, এবং সেটা আমি হতে দিতে সম্পূর্ণ নারাজ। বেরাতে এসেছি, তাই বেরানোটাই সবার উপরে। খাওয়া-দাওয়া-ঘুমানো এইসব জিনিস মোটামুটি ঐচ্ছিক।
তাই করলাম। একটু চোখে-মুখ পানি দিয়ে কাউচে ঘুমানোর চেষ্টা চললো। সেই চেষ্টা মোটামুটি বিফলই ছিল বলতে হবে। যাতাযাতি, চিপাচাপি, তার উপর লবির ভেতর গুমোট গরম - এসি নাই, ফ্যানও নাই। আমাদের চারিপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে আমাদের ব্যাগ-বাক্স-স্যুটকেস ইতাদি। তারপরেও কি করে যেন রাতের ঘন্টাগুলো এক এক করে পার হয়ে গেলো।।।
*
হঠাৎ চোখ মেলে দেখি আটটার মত বাজে - এক চ্যাংড়া ছেলে আমাদের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে, যে এই উদ্ভট আদমিগুলো কারা। বার্সেলোনায় প্রথম সকালটা বেশ অদ্ভূতভাবে শুরু হলো।
এরপরের এক ঘন্টা ছিল বাকবিতন্ডা আর তার মীমাংসার পালা। আসল সমস্যা হলো এই যে আমাদের রুমটাই নাকি আর নাই। আমরা জানতে চাই সেটা কিভাবে সম্ভব?! আমাদের তো গতকাল রাতেই রুম পাওয়ার কথা ছিল। এই কয়েক ঘন্টার মধ্যে রুম গায়েব হয়ে যায় কি করে? কোন সদুত্তর পাওয়া গেলো না। নেই তো নেই। শেষমেষ ছেলেটা বললো, দেখো আমি তোমাদের আরেকটা হোটেলে তোমাদের চাহিদা মত একটা রুম বের করে দিচ্ছি, একই দামে। এমনকি সেখানে যাবার ট্যাক্সি ভাড়াটাও আমি তোমাদের দিয়ে দেবো। তোমরা কি এতে রাজী হবে ?
এই শুনে আমরা কিছু শলা-পরামিশ করে ফেলি নিজেদের মধ্যে। ঠিক করলাম, যে এইখানে বেহুদা ঝগড়া করে আর সময় নষ্ট করে লাভ কি? ওদিকে বার্সেলোনা শহর একাগ্রে অপেক্ষা করছে আমাদের জন্যে। আমরা রাজী হয়ে গেলাম, ছেলেটা মাল নামিয়ে দিতে সাহায্য করলো। দেখতে দেখতে হলুদ-কালো ডোরাকাটা ট্যাক্সি চলে এলো আমাদের। দশ মিনিট পরে আমরা হাজির হলাম হোটেল রে দন হাইমে উনো-তে (Rey Don Jaime I, রাজা প্রথম হাইমে)।
হোটেলের পয়সা দিলাম, নাম ঠিকানা দিলাম। রুমে উঠে গেলাম - বাহ! এইবার রুমটা বেশ পছন্দ হলো। সুন্দর তিনটা বিছানা ছিমছাম পাতা। সফেদ শাদা বিছানার চাদর যেন ডাকছে - দেখেই মনে হয় ধপাস করে শুয়ে পড়ি। রুমের ভেতর বিশেষ কোন আড়ম্বর নেই, তবে তিনদিনের জন্য যা যা প্রয়োজন তা সবই আছে। রুম থেকে বেরিয়েই আমাদের দোতলার বারান্দাটা চমৎকার - নীচে পুরান টাউনের অলিগলি (ঢাকার পুরান টাউনের মতই চিপা, যদিও মানুষ পুরান ঢাকার থেকে অবশ্যই কম)। গলির ঠিক উল্টো দিকে দেখা যাচ্ছে একটা কাফে, তার কাচের জানালায় থরে থরে শোভা পাচ্ছে দুনিয়ার একশো রকমের মিষ্টি, কেক, ক্রোয়াসোন্ট, আরো কত কি। মনে হয় বারান্দা থেকে লাফ দিয়ে নেমে যাই, এমন টানছে।
সবাই গোসল টোসল সেরে শেভ টেভ করে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। (হাল্কা মাঞ্জাও মারলাম একটু - টি-শার্ট বা বাহারী শার্ট, শর্টস, সানগ্লাস, চুলে এক চিমটি জেল।) কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে দরকারী সব জিনিস - পাসপোর্ট, টাকা, পানির বোতল। ম্যাপ, গাইডবই, ক্যামেরা। চলো এবার তাহলে!
উনা অর্শাতা, পোর ফাভোর
প্রথম গন্তব্য হোটেলের পেছনের সেই কাফে। চটপট মাফিন, ক্রোয়াসোন্ট সহকারে নাস্তা করে নিলাম। ড্রিংকস আমরা অর্ডার দিলাম অর্শাতা (orxata)। এটা একটা স্থানীয় পানীয় - টাইগার-নাট দিয়ে বানায়। খেতে এবং দেখতেও অনেকটা পাতলা লাসসির মত। ঠান্ডা, টাটকা। এই লোকাল শরবত খেয়ে বেশ তৃপ্তি পেলাম।
এই কাফেতে ঢুকেই আমি আমার ভাঙা-ভাঙা স্প্যানিশ প্র্যাক্টিস করা শুরু করে দেই। খুবই করুণ হাল - ওদের কথা ছেড়া-ছেড়া কিছু বুঝি, কিন্তু বলার সময় মাথা পুরাই আউট হয়ে যায়। একটা কথাও মনে থাকে না, শুধু 'সি' (হ্যাঁ) আর 'গ্রাসিয়াস' (ধন্যবাদ) বাদে! (অবশ্য শেষদিনের দিন ঠিকই পেরেছিলাম, পুরো লাঞ্চই অর্ডার করেছিলাম এক কলোম্বিয়ান রেস্তোরার ওয়েটারের সাথে ভাঙা স্প্যানিশ বলে, বড় আনন্দ পেয়েছিলাম। তবে সেই কাহিনী পরে।)
লা রামব্লা এবং বোকেরিয়া বাজার
বার্সেলোনায় যদি শুধু একদিনের জন্যেও যান, তাহলেও অন্তত তিনটে জিনিস না দেখে ফিরবেন না। প্রথমটা হলো পুরান টাউনের প্রধাণতম সড়ক, লা রামব্লা (La Rambla)। ইউরোপে হাতে-গোণা এমন কয়েকটি রাস্তা আছে - যুগ যুগ ধরে এরা বিখ্যাত, এক নামেই পরিচয় - প্যারিসের শঁজ এলিজে, বার্লিনের কু'ডাম, লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রীট। নাম-যশের দিক থেকে বার্সেলোনার রামব্লা এদের কোন অংশে কম নয়।
কাফে থেকে বেরিয়ে পাঁচ মিনিট হাঁটতেই আমরা উঠে গেলাম রামব্লা'তে। শনিবার সাড়ে দশটা তখন - ঝলমলে সুন্দর ছুটির সকাল - অজস্র লোক গিজগিজ করছে, স্থানীয় লোক আর পর্যটক দুই-ই। চমৎকার দেখতে লা রামব্লা - নামের সাথে তাল মিলিয়ে বেহুদা rambling-এর জন্য উৎকৃষ্ট! রাস্তার দু'পাশ দিয়ে টানা চলে গেছে দুই সারি প্লেন গাছ, আমাদের ছায়া দিচ্ছে, পুরো এক মাইল দৈর্ঘ্য জুড়েই গাছের পাতার সাথে খেলা করছে সূর্যের আলো-ছায়া। রাস্তার দুই ধারে পুরাতন প্রাসাদ, গীর্জা, অভিজাত থিয়েটার, অপেরা হাউস। এখানকার সেরা থিয়েটার 'গ্রান তেয়াত্র দেল লিসেউ' (বা শুধু লিসেউ, Liceu) ১৫০ বছর ধরে সঙ্গীতপ্রেমী আর অপেরা-অনুরাগীদের চিত্তরঞ্জন করে আসছে।
লিসেউ'র থেকেও অনেক পুরাতন, তার থেকেও ব্যতিক্রমী আর বৈচিত্র্যময় হলো মের্কাত বোকেরিয়া বা বোকেরিয়া বাজার। ইউরোপের সবচেয়ে বড় কাঁচা-বাজারগুলোর অন্যতম, আটশো বছর ধরে এখানে সদাই করছেন নগরবাসীরা। সে এক দৃশ্য বটে! তিল-ধারণের জায়গা নেই, মানুষ আর মানুষ, গাদাগাদি আর ধাক্কাধাক্কি। এরই মাঝে শত শত দোকানের দোকানীরা বিক্রি করছেন হাজার হাজার রকমের খাদ্যদ্রব্য। রং-বাহারী ফল-ফুল, তরি-তরকারী, মাছ-মাংস। এদিকে জুসের নহর, ওদিকে থরেথরে সাজানো শূকরের পায়া, আবার অন্যদিকে আস্ত ছেলা খরগোশ ডজন ডজন শুয়ে রয়েছে মরা চোখ নিয়ে কাঁচের পেছনে।
আর কিছু লাগবে? মাশরুম? পাইন গাছের নাট? নাম না জানা গাছের শেকড়-বাকড়? ৫০ পদের মশলা, দামী জাফরান? এমনকি ভাজা পোকা-মাকড়ও মিলবে, যদি খেতে চান! সত্যিই, বোকেরিয়াতে পাওয়া যায় না, এমন খাবার বোধ হয় ইউরোপ/ভূমধ্য অঞ্চলে খুব বেশী নেই। সাগরতীরের বার্সেলোনা তার সুস্বাদু সামুদ্রিক মাছের জন্যেও বিখ্যাত। সবচেয়ে ফ্রেশ, তরতাজা, মজাদার মাছগুলো ভোরবেলায় এই বোকেরিয়াতেই চলে আসে। স্যামন, ব্রীম, সোল, হেইক, স্কেট, ট্রাউট, অক্টোপাস, স্কুইড -- আরো কত রকমের মাছ যে আছে, নামও জানি না তার! স্প্যানিশরা যথার্থই নাম দিয়েছে এর - frutos del mar - সাগরের ফসল।
বাজার থেকে খোলা গারদ
বোকেরিয়া থেকে বেরিয়ে হাঁপ ছাড়লাম। বাপ রে বাপ। এইবার একটু ধীরে-সুস্থে পদব্রজ হোক। রামব্লা'র মাঝখান দিয়ে যে আইল্যান্ড'টা গেছে, সেটা রাস্তার সবচেয়ে চওড়া অংশ। গাড়ী চলাচলের জন্যে দুইদিকে শুধু দুটো সরু লেন রেখে বাকি পুরো রাস্তাটাই পথিক-বান্ধব বা pedestrianized করে দেয়া হয়েছে। পোষা পাখির বাজার বসেছে সড়ক-দ্বীপের উপরে, তাদের কিচির-মিচিরে বাতাস মশগুল। পর্যটকদের স্যুভেনিরের দোকান আছে গন্ডায় গন্ডায় - আর এদের ৫০% মালামালই হলো এফ সি বার্সেলোনা' ফুটবল টীমকে ঘিরে। বার্সা'র স্কার্ফ, মগ, জগ, মেসির গেঞ্জি তো অঁরির লুঙ্গি। কি নেই, সবই বার্সা!
এরই মাঝে সাক্ষাৎ মিললো রামব্লা'র বিখ্যাত জীবন্ত মূর্তিগুলোর। এই সড়কে অনেক অভিনেতা, নাট্যশালার ছাত্র, উদীয়মান অভিনেতা বা ব্যর্থ অভিনেতা (অথবা স্রেফ উন্মাদ আর পাগল) সকাল থেকে উদ্ভট কস্টিউম আর মেক-আপ লাগিয়ে নেমে যায়। কেউ মাথা থেকে পা পর্যন্ত তামাটে রঙ্গের মেকাপ মেখে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের জেনারেল সেজে বসে আছে। কেউ রাক্ষস সেজেছে, কেউ খোক্কস। কেউ আদ্যোপান্ত শাদা রঙ মেখে বসে পড়েছে টয়লেট সীটের উপর, কোট পরিহিত, প্যান্ট নামানো। কেউ পরী, কেউ রাণী, কেউ বা ডাইনী। বিচিত্র সব খেয়াল। পর্যটকদের ভালো লাগলে কেউ দুটো পয়সা দেয়, বেশীর ভাগই এক মিনিট তামাশা দেখে আবার হাঁটা দেয়। বাচ্চারা এই মূর্তিদের সাথে দাঁড়িয়ে ছবি তোলে, রাক্ষস হঠাৎ 'ভেউ!' করে উঠলে ভয়ে চিৎকার দেয়, বাপ-মা হাসতে হাসতে ভিডিও রেকর্ড করে নেয়। বড় হলে পরে কোন একদিন হয়তো সবাই মিলে ফটো আর ভিডিও দেখবে, হাসবে আর বলবে, 'মনে আছে বার্সেলোনায় সেই দানব দেখে কি ভয়টাই না পেয়েছিলে?'
(এই লেখা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে, শুরুতে বুঝতে পারিনি, এখনো প্রথম দিনের সকালই পার হলো না। চেষ্টা করবো গল্প বেশী লম্বা করে আপনাদের ধৈর্য্যচ্যুতি না ঘটাতে। কিন্তু শহরটা আসলে এতো বেশী ভালো লেগেছে, যে অল্প কথায় বলেও পারছিনা। মুশকিল!)
মন্তব্য
দুর্দান্ত
বস ধীরেসুস্থে টাইম নিয়ে ল্যাখেন, তাও সংক্ষেপ কইরেন না ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
সফর ঝটিকা - লেখা তার পুরা উল্টা
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
- নিচে থেকে দুই নাম্বারের বালিকাটা (মতান্তরে তেনার হাসিটা) সেইরম! আর কুনো ফটুক নাই ইনার?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
দাদা, বার্সেলোনায় গেলে তো স্রেফ ঈমান নষ্ট হইবো! এই মহিলা টপ ৫০,০০০-এও আসবেনা, সত্য কইলাম।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
লেখার দৈর্ঘ্য নিয়ে মাথা ঘামিয়েন না। বার্সেলোনার মত জায়গা নিয়ে লেখা ছোট হবে কেন? সেখানকার সকাল সহজে শেষ হয়ে যাবারও কোন যৌক্তিক কারণ নেই।
বেশ ভালো লাগছে। চলুক।
দারুণ! একদম একটানে পড়ে ফেলছি। চুমুক দিয়ে পান করে ফেলতে ইচ্ছে করে ভ্রমণকথাগুলো, এত স্বাদু আর এত সুন্দর! ছবিগুলো তো তুলনাহীন।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
দ্বিতীয় ছবিটাই চামড়া-ছেলা খরগোশের, conejo লেবেল দেয়া। এর আগে কখনো এইভাবে খরগোশ সাজানো দেখিনি।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
মজা তো। ঐখানে বলে কনেহো আর এইখানে বলে কোনাইন (konijn)। তবে এখানেও খোলাবাজারে এইজিনিস দেদারসে বিক্রি হয়। আসে নাকি আর্জেন্টিনা থেকে।
তোর বানানো রোস্ট খরগোশ যে খাইছিলাম ১০-১২ বছর আগে, তার পরে আর কনেহো'র মাংস টেস্ট করা হইলো না।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ছাপ্পড়টা লাগা, এপর খরগোশ, কোয়েল স-ব হবে। মাতু আইতাসে জানসতো।
বস আজকে নিউইয়র্কে একটা হটটটট ল্যাতিনো নারী দেইখা মাথা খারাপ হয়ে গেছে। আপনে আর হতাশ কইরেন না। ছবি চাই, ছবি।
কাহিনী ভালো হইতেছে। তয় মাঝে মাঝে উপদেশ ছাইড়েন দুই একটা। যেমন প্রথম হোটেল অলার সাথে ঝগড়ার পর যখন দ্বিতীয় হোটেলে যাইতে রাজি হইলেন সেক্ষেত্রে অন্যরা হইলে কি করা উচিৎ ছিল সেইটা বলতে পারেন। তাইলে ভবিষ্যতে আমাগো উপকারে আসব।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
৫০০ডি'টা আসলে আমার হাতে ছিল না, মালিক মাতুর হাতে ছিল। প্রায় হাজারখানেক ছবি, এর ভেতর হয় তো কিছু লাতিনা হটি'র ছবিও পাবো।
আর উপদেশ আসলে তো সবই পরিস্থিতি বুঝে। প্রথম হোটেলে আমাদের যেমন ৩০ পাউন্ড ডিপোজিট দেয়া ছিল, সেটা ফেরত পাবো কি না, তা এখনো নিশ্চিত না। কিন্তু সকালে এক ঘন্টা কাইজ্যা করে যখন বুঝে ফেললাম এখানে সুব্যবস্থা হচ্ছে না, তখন ওদের অফার'টা নিয়ে নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ মনে হয়েছিলো, আর কপাল জোরে সেটা ঠিক সিদ্ধান্তই প্রমাণিত হয়। তবে কিছু ঝগড়া-ঝাটি না করে ছাড় দেয়া উচিত না।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
শিখছি ভ্রমণ কাহিনী কীভাবে লিখতে হয়। আমি তো এতদিন শুধু ছবি দিয়েই খালাস!
বস ছবি + রসালো বর্ণনা...
এইটা পড়ে সবচে বেশি হাসছি ---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
দুই পর্ব এক সাথে পড়লাম। দুর্দান্ত! লেখা ছোট করার চিন্তাও করবেন না। এই লেখাটা বার্সা ভ্রমণের আগে খুঁজে বের করতে হবে। আহা, কত্তদিন পর সুবিনয় মুস্তফীর লিংকময় লেখা!!
হেহে এর আগের ভ্রমণ সিরিজটার লিংক এবিউজের কথা মনে পড়লো। কথার চেয়ে লিংক বেশী দিসিলাম মনে হয়!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
জোস লাগতেসে, বস। লেখা যতটা পারেন ডিটেইলে লেখেন। কমায়েন না।
বর্ণনা এবং তথ্যের সমাবেশ দেখে বোঝা যাচ্ছে ঝটিকা হলেও গোছানো সফর ছিলো, আর লেখাও ততোধিক গোছানো।
এই রঙ মেখে সং সেজে থাকাদের দল বোধহয় পুরো ইউরোপেই ভর্তি, ইতালির সব ট্যুরিস্ট সিটিতেই দেখেছি এদের। ছুটির দিনে হাজার হাজার পর্যটকের মাঝে খুব মানিয়ে যায় এরা, সাজটা পদের হলে পয়সাও কম কামায় না।
ইতালিতে কিন্তু মোটামুটি সব শহরের Duomo বা সেন্ট্রাল ক্যাথেড্রাল থেকে সবাই ঘোরাঘুরিটা শুরু করে। স্পেনের কথা জানিনা।
অপেক্ষায় থাকলাম; বেশি বেশি ছবি আর বড় বড় পর্বের।
"Life happens while we are busy planning it"
সফর পুরাপুরি গোছানো না হলেও এটা ঠিক যে আমার দিক থেকে অনেক পূর্ব পরিকল্পনা ছিল। এর পেছনে ছোট্ট ইতিহাস আছে। গত বছর জানুয়ারীতে পোল্যান্ড গিয়েছিলাম, সেটা নিয়ে একটা চার পর্বের সিরিজও লিখেছিলাম সচলে। ফিরে ভাবলাম, আহা তিনদিনে অনেক কিছু দেখতে পেলাম। কিন্তু যখন জানতে পারলাম যে আমি শিন্ডলার্স লিস্ট খ্যাত অস্কার শিন্ডলার-এর বাড়ী আর কারখানা না দেখেই ক্রাকোভ ঘুরে এসেছি, তখন নিজের উপর প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়েছিল। এইটা আমার খুব প্রিয় মুভি/বই। আর ঐতিহাসিক নিদর্শন সবই আমাকে দারুণ টানে। কোথায় কোন লেখক বসে চা খাইসিলো, কোন রাজা তার রক্ষিতার সাথে আকাম করসিলো, সেগুলা সরেজমিনে দেখতে বরাবরি মঞ্চায়।
তো তারপর থেকে কোথাও যাওয়ার আগে আমি Rough Guide সিরিজের প্রয়োজনীয় বইটা কিনে নেই, কমপক্ষে দুই-তিন সপ্তাহ আগে। এদের গাইডবই-এর তুলনা নাই আসলে, খুব গোছানো এবং মনোগ্রাহী করে লেখা থাকে। ঝটিকা বা দীর্ঘ সফর, দুইয়ের জন্যেই যথেষ্ঠ পরিমাণে তথ্য থাকে, আর প্র্যাক্টিকাল বিষয়াদি যেমন যাতায়াত, থাকা-খাওয়া এইসব নিয়ে তথ্যও সব আপ-টু-ডেট, বিশেষ করে আমাদের মত বাজেট ট্যুরিস্টদের জন্যে। আর সবচেয়ে সেরা হলো প্রতিটা বইয়ের শুরুতেই একটা চমৎকার ফুল-কালার লিস্টিং থাকে কয়েক পাতা জুড়ে - 21 Things Not to Miss in Barcelona, এই জাতীয়। হাতে যদি মাত্র দুইদিন সময়ও থাকে, তারপরেও আপনে বুঝে যাবেন যে টপ টেন কি দেখা যায়।
এরপরে আরো তিনটা ভ্রমণের জন্যে রাফ গাইড ব্যবহার করলাম, এবং প্রতিবারই দারুণ ফল দিয়েছে। বার্সেলোনা তার ব্যতিক্রম হয়নি।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ভ্রমণ কাহিনী সংক্ষেপ করবেন না সুবিনয়দা যত পর্ব লাগে লাগুক
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
ভালো লাগছে পড়তে, মনে হচ্ছে এখনই বেড়িয়ে পড়ি
...........................
Every Picture Tells a Story
পড়লাম। ডিটেইল থাক, ছোট করার দরকার নেই।
ছবির সংখ্যা বাড়ায় দেয়া যায়না ভাইডি?
এই ব্যাগ গোছানোর কথা চলছিল ফেইসবুকে?
লেখা বড়সড়ই থাকুক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
লেখা শেষ হওয়ার পর বার্সা ঘুরতে যাওয়ার গাইডলাইন লিখে দিয়েন
------------------------
আমার ফ্লিকার
---------------------
আমার ফ্লিকার
আগামী সামারে যদি বার্সিলোনা না গেসি...!!!
=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
নতুন মন্তব্য করুন