গরমের দিনে লন্ডনের পাতাল রেলে ভ্রমণ করা রীতিমতো নারকীয় ব্যাপার। নাখালপাড়া কাঁচাবাজারে মুরগীওয়ালার পোলোর ভেতরে যেমন দেখতাম, মুরগীগুলো একে অপরের ঠ্যাং-পাখা-মাথা-গলার ভেতর মিশে যাচ্ছে, একটার থেকে আরেকটা আলাদা করে চেনার উপায় নেই। রেলযাত্রীদের অবস্থা ঠিক অতটা খারাপ না হলেও গাদাগাদি আর ঠেলাঠেলি, ভ্যাপসা গরম আর অপরিচিত বগলতলার সুবাসের চোটে প্রতি বছরই বেশ কিছু পরিমাণ লোক নিয়মিত টিউবে ফিট হয়ে যায়।
তাই বার্সেলোনার পাতাল রেলে আমরা যখন প্রথমবারের মত নামি, আমি স্বভাবতই বেশ অভিভূত হয়ে পড়ি। প্রতিটা বগিতে এসি! বাহ, কি ভাগ্যবান এই শহরের বাসিন্দারা, কি সভ্য এদের সিস্টেম। লন্ডনে এমন কেন করা যায় না? প্ল্যাটফর্মে আরো একটা জিনিস দেখলাম যেটা ভালো লাগলো - সেটা হলো কাউন্টডাউন-ওয়ালা ঘড়ি। ঠিক কত মিনিট কত সেকেন্ড পরে ট্রেন আসবে, সেটার হিসাব দিচ্ছে। লন্ডনের টিউব এখনো সেই পর্যায়ে যেতে পারেনি - এমনকি কোন কোন স্টেশনে সাধারণ ঘড়িই নেই, কাউন্টডাউন তো পরের কথা।
পরিবহণ অবকাঠামোর দিক থেকে যতটুকু টের পেলাম, স্পেন অনেক এগিয়ে গেছে। আমরা হাই-স্পীড রেল AVE-তে চড়িনি, কিন্তু এই ক্ষেত্রে স্পেন খুব অল্প সময়ে দ্রুত অগ্রসর হয়ে প্রচুর বাহবা কুড়িয়েছে। আভে'র বয়স মাত্র ১৭ বছর, অথচ ২০১০ সাল নাগাদ এরা প্রায় ৭০০০ কিলোমিটার দ্রুত-গতির রেল দিয়ে পুরো দেশ ছাপিয়ে দেবে। ওদিকে জাপান আর ফ্রান্সে হাই-স্পীড রেল চলছে গত ৪০-৫০ বছর ধরে। আর বৃটেন? জেমস ওয়াটের জন্মভূমি বৃটেন? প্রথম বাষ্প-চালিত ইঞ্জিন, প্রথম আন্ত-নগর রেলের দেশ বৃটেন? এখানে আজ পর্যন্ত এক মিটার হাই-স্পীড রেলও বসলো না, আর কবে বসবে তারও কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। সেদিন খবরে পড়লাম সুদূর ২০৩০ সাল নাগাদ কিছু একটা পাওয়া যেতে পারে। এই খবরে খুশী না হয়ে তিতিবিরক্ত হয়েছে বেশীর ভাগ লোক।
ক্রিস্তোবাল কলোনের চূড়ায়
যাই হোক, বার্সেলোনা ফিরে আসি। রামব্লার মাঝপথে এসে আমরা একটা পাতাল রেল স্টেশনে ঢুকে যাই। মাত্র এক স্টপ পরেই নেমে যাবো, ভূমধ্য সাগরের তীর ঘেষে দ্রাসানেস (Drassanes) স্টেশনে। দ্রাসানেস বিরাট লম্বা চওড়া এক চৌরাস্তার মোড়। স্কোয়ারের তিন পাশে রয়েছে পুরনো প্রাসাদ আর সেকেলে দালান - সিটি হল, মিউজিয়াম, ইত্যাদি। আর একদিকে রয়েছে সুনীল সাগর। স্কোয়ারের ঠিক মাঝখানে ২০০ ফুট উঁচু এক খাম্বা - তার চুড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন স্বয়ং ক্রিস্তোবাল কলোন। কে এই কলোন? আর কেউ না - নাবিক, অভিযাত্রী, আমেরিকার আবিষ্কারক, যাকে আমরা কলম্বাস নামে চিনি, তারই স্প্যানিশ নাম কলোন। হাত উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি, হয়তো সমুদ্রের ওপারে অজানা মহাদেশের দিকে আঙুল তাক করে আছেন। মূর্তির পাদদেশে পাহারা দিচ্ছে আটটি বিশাল কালো সিংহ, ব্রোঞ্জের তৈরী।
জানা গেলো যে কলম্বাস আসলে ভূল দিকে (মানে পূর্বদিকে) আঙুল নির্দেশনা করে আছেন। আমেরিকা তো পশ্চিমে, আটলান্টিক পেরিয়ে। তাহলে কেন এই রকম সহজ ভূল? এর জন্যে দায়ী সম্ভবত ভূমধ্য সাগরের অবস্থান। কলম্বাস যদি সত্যিই ঘুরে দাঁড়িয়ে পশ্চিম দিকে হাত তুলতেন, তাহলে তাকে সমুদ্র থেকে মুখ ফিরিয়ে শহরের দিকে ঘুরতে হতো। তাতে হয়তো মূর্তিটা আরো 'সত্য' হতো, কিন্তু তার নাটকীয় ভাবটা অনেক কমে যেতো!
খাম্বার ভেতরে লিফট আছে, সেটায় চড়ে একদম চূড়ায় ওঠা সম্ভব। আজকের মত অপূর্ব সুন্দর একটা দিনে ২০০ ফুট উঁচু থেকে ভূমধ্য সাগর আর বার্সা শহর দেখতে কেমন লাগবে - তা জানার বাসনা আমাদের তিনজনেরই। টিকেট কিনে ফেললাম তিনটে। ভেতরের লিফটটা একদম পিচ্চি। ঠেসেঠুসে হয়তো ৪-৫ জনের জায়গা হবে। তবে মিনিটখানেক পরে যখন অভিযাত্রীর পায়ের কাছে এসে লিফটের দরজা খুলে গেল, বেরিয়ে অতি সরু ব্যালকনিতে পা রাখলাম, সেই নিসর্গের দৃশ্য দেখে চোখ একদম জুড়িয়ে গেলো।
আদিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্র। আকাশের নীল প্রতিফলিত হয়েছে সাগরের জলে, আরো ঘণীভূত হয়েছে সাগরের নীলে। তীরের অদূরে দেখা যাচ্ছে ছোট ছোট পোকার মত শাদা পাল-তোলা ইয়ট। আরো দূরে দৃষ্টি ফেলে দেখা যায় জাহাজ, বিশাল ট্যাংকার। মনে পড়লো যে বার্সেলোনার বন্দর নেহায়েত ছোট নয়। ভূমধ্য সাগর এলাকার আমদানী-রপ্তানী আর শিপিং বাণিজ্যে এই বন্দরের বেশ ওজন আছে।
ফিরলাম শহরের দিকে। দূরে বাঁয়ে মন্টজুইক পাহাড়, যেখানে অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই পাহাড়ে উঠতে হয় কেবেল কার-এ (cable car) চেপে। এই তো আমাদের সামনেই শূন্যে ভাসছে দুটি ধাতব ক্যাপসুল, ভেতরে ডজনখানেক লোক দেখা যাচ্ছে, গুটি গুটি করে তার বেয়ে বগি উপরে উঠছে, আরো উপরে, পায়ের নীচে কিছু নেই, শুধুই আকাশ, কোন দুর্ঘটনা ঘটলে একদম পপাত ধরণীতল - আর সেই ধরণীও কম সে কম ২০০ থেকে ৩০০ ফুট নীচে।
বিকালে এই জিনিসে চড়তেই হবে, একদম ফরজ কাজ।
ডান দিকে মাইল দুয়েক দূরে শহরের হিজিবিজি হাজারো দালানের ছাদ পেরিয়ে দেখা যাচ্ছে বার্সেলোনা'র সবচাইতে নামকরা নিদর্শন - সাগ্রাদা ফামিলিয়া গীর্জা। আর আমাদের পায়ের ঠিক নীচে এটা কি? একটা আঁকাবাঁকা সবুজ ফিতার মত চলে গেছে দেখতে পাচ্ছি - এটাই কি রামব্লা?! সবুজ রংটা আর কিছুই না, রাস্তার দু'পাশে প্লেন গাছের চুড়াগুলো, মার্চ করে চলে গেছে শহরের অভ্যন্তরে।
বেশ কিছু ছবি তুললাম। এই রকম টাওয়ারের উপর উঠে বহু নীচে চাদরের মত পেতে রাখা শহর দেখতে দারুণ লাগে, এই নিয়ে দ্বিতীয়বার উপভোগ করলাম। আমি সত্যিকারের আইফেল টাওয়ার দেখিনি, তবে একবার লাস ভেগাসের নকল আইফেল টাওয়ারে উঠেছিলাম, তাও রাতের বেলা। যে দৃশ্য চোখের সামনে খুলে গিয়েছিল, তা যেন CSI-এর ওপেনিং সিকোয়েন্সে দেখেছি বহুবার। টিভি পর্দা থেকে বেরিয়ে এসে রাতের ভেগাস অবশেষে জীবন্ত ধরা দিল। তবে ভেগাস কেবল রাতে দেখেই শান্তি। দিনে দেখার কোন মানে হয় না। আর বার্সেলোনা? দিন আর রাত, বরাবরই সুন্দর।
নেমে গেলাম। নামার সময় লিফট-এর ছেলেটা জানতে চাইলো - তোমরা কোথা থেকে এসেছো? জবাব শুনেই সে বললো, ওহ বাংলাদেশ! দোনোবাদ দোনোবাদ! শুধালাম - বাহ এত সুন্দর (!) বাংলা কই শিখলে? বললো যে - এই শহরে আমার অনেক বাংলাদেশী বন্ধু আছে, ওদের থেকে শিখেছি। স্পেনে বাংলাদেশী অভিবাসন সম্পর্কে হালকা ধারণা আগে থেকে ছিল - তবে পরোক্ষ সাক্ষাত এই প্রথম হলো। ছেলেটা বললো যে বেশীর ভাগ বাংলাদেশীই থাকে শহরের পশ্চিমে, সান্তস (Sants) এলাকায়।
সাত নম্বর ছবিটা কলোন'এর উপর থেকে দেখা আঁকা-বাঁকা রামব্লা
পোর্ট ভেল-এর অলিতে গলিতে
কলোনের কলাম থেকে বেরিয়ে আমাদের লাঞ্চ নিয়ে চিন্তা হলো। দুপুরে কোথায় খাবো, সেই হিসাব মাথায় রেখে আগামী দেড় দুই ঘন্টা ঘোরাঘুরি হবে। জানি যে বন্দর নগরীর রেস্তোরাগুলোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হয় তাদের সী-ফুড মেনু। কক্সবাজার হোক বা আলেক্সান্দ্রিয়া, বস্টন কি বার্সেলোনা - এই নিয়মের বাত্যয় সহজে হয় না। প্রথম দিনের লাঞ্চ আমরা তাই সী-ফুড দিয়েই সারতে চাই, এমন সিদ্ধান্ত হলো। গাইডবইটা বের করলাম। পেছনের দিকে লিস্টিং দেয়া আছে। দামী, মাঝারি আর কমদামী - সব রকম বাজেটের জন্যেই কিছু রেস্তোরার সাজেশান রয়েছে। পকেটের ওজন এবং দ্রাসানেস থেকে দূরত্ব - এই দুই হিসাব করে আমরা ঠিক করলাম যে আগেকার দিনের যে জেলেপাড়া ছিল, নাম পোর্ট ভেল, সেখানে আমরা লাঞ্চ সেরে নেবো। তার আগে এই পাড়াটা আরেকটু ঘুরে দেখি।
দ্রাসানেসের পুরো এলাকাটাই ডক-জেটি দিয়ে ভরা। গন্ডায় গন্ডায় জাহাজ প্রতিদিন নোঙ্গর ফেলে। তবে শহর কর্তৃপক্ষ আর ডেভেলপার'রা মিলে দ্রাসানেসের একপাশের আমূল পরিবর্তন করে ফেলেছেন। পর্যটকদের কথা মাথায় রেখে বসানো হয়েছে পানির উপর দিয়ে পায়ে-হাঁটা কাঠের ব্রিজ, নানান রকম মূর্তি আর শিল্পকলা। শপিং অনুরাগীদের সুবিধার্থে তৈরী করা হয়েছে বিরাট এক মল - কাঁচ আর স্টীলের বানানো এই প্রকান্ড আকৃতির নাম মারেম্যাগনাম (Maremagnum, বিশাল সমুদ্র)। এই পর্যটক পাড়ার আরেকটা বড় আকর্ষণ হলো এর আইম্যাক্স থিয়েটার - ত্রিমাত্রিক বা থ্রি-ডি চলচ্চিত্র দেখার জন্য।
জেটিতে বাঁধা আছে শত শত শ্বেত-শুভ্র নৌকা, মটর চালিত, শহরবাসীদের প্রমোদতরী। সাগরের মৃদু ঢেউয়ে দোল খাচ্ছে। পর্যটকদের জন্য আরো বড় লঞ্চ আছে কিছু, সেগুলো ছাড়ে প্রতি আধ ঘন্টা পর পর। পুরো বন্দরের এক মাথা থেকে আরেক মাথা আপনাকে ঘুরিয়ে দেখাবে দেড় ঘন্টা সময় নিয়ে। এদিকে টলটলে পানি আর ঝকঝকে রোদের সাথে লুকোচুরি খেলছে সামুদ্রিক পাখী আর সী-গাল। মাঝ-গগনের সূর্য আলো ঝড়াচ্ছে পুরনো প্রাসাদের দেয়ালে, সুমধুর বাতাসে পাম গাছের পাতাগুলো নড়ছে। চওড়া রাস্তা দিয়ে লাল-শাদা রঙ্গের সাইকেল চালিয়ে উড়ে চলে যাচ্ছে ছেলে-বুড়ো আর সুন্দরী তরুণী।
এই লাল-শাদা সাইকেলগুলো পুরো শহরেই দেখতে পাই। সবগুলোর গায়ে লেখা bicing। সাগরের পারে টানা লোহার র্যাকও দেখেছি কিছু, সেখানে অনেকগুলো সাইকেল বাঁধা। চালাতে তো আমারও ইচ্ছা করছে। একজনকে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, এই বাইক আমি কিভাবে ভাড়া নিতে পারি? সে জানালো - এই বাইক তো আসলে যেভাবে সেভাবে ভাড়া নেয়া যায় না, কর্তৃপক্ষ থেকে একটা কার্ড করতে হয়। তার জন্য এখানে কিছুদিন থাকা লাগে। বুঝলাম যে লাল-শাদা বিসিং বাইক এই যাত্রায় আমার চালানো হবে না। (bicing নামটা এসেছে biciclete আর biking শব্দ দুটোর মিশ্রণ থেকে)। তবে স্বল্পকালীন পর্যটকদের কাছে সাইকেল ভাড়া দেয়ার জন্য অনেক দোকান আছে আশেপাশে। সাইকেলে করে শহর দেখার জন্য বার্সেলোনার রাস্তাঘাট যতটা সুন্দর ঠিক ততটাই নিরাপদ। আর আবহাওয়া যে কি জোশ, তা তো দেখতেই পাচ্ছি! কালকে বেরুতে হবে দুই চাক্কা নিয়ে।
হাঁটতে হাঁটতে পোর্ট ভেল চলে এলাম। স্থানীয় কাতালান ভাষায় Port Vell-এর অর্থ 'পুরাতন বন্দর'। এখানে Vell-এর সাথে ফরাসী শব্দ vieille বা স্প্যানিশ viejo-র খানিকটা মিল আছে। এই পাড়াটা এককালে ছিল জেলে আর নাবিকদের বসতি। এখন এর সরু অলি-গলিতে সাধারণ বার্সা-বাসীরাই থাকেন, মাঝে মাঝে ছড়ানো ছিটানো আছে পাড়ার দোকানপাট, ছোট সুপারমার্কেট। রেস্তোরাও আছে কম না, তবে আমরা চাইছিলাম ট্যুরিস্ট-ট্র্যাপগুলো এড়িয়ে চলতে। একটু ভেতরে গেলে স্থানীয়দের পরিচিত রেস্তোরা পেয়ে যাবার কথা, সেখানে খাবারের মান ও দামের ব্যাপারে আমরা আরেকটু নিশ্চিন্ত হতে পারবো।
প্রথমে খুঁজছিলাম কান মানিয়ো (Can Maño) নামে একটা সী-ফুড রেস্তোরা। কিন্তু দশ মিনিট ধরে ঘুরেও যখন কিছু চোখে পড়লো না, তখন এক বুড়োকে ধরলাম - 'পের্দোনে, দোন্দে এস্তা কান মানিয়ো?' জবাবে বুড়ো হড়বড় করে অনেক কিছু বলে ফেললো, যার বেশীর ভাগই বুঝিনি। তবে আসল দুটো দরকারী শব্দ কানে এসে বাজলো - cerrado আর vacaciones। মানে গ্রীষ্মের ছুটির জন্যে রেস্তোরা বন্ধ আছে। মনোরথ একটু ভগ্নই হলো। কি মুশকিল! তবে আসার পথে একটা সুন্দর প্লাসা (স্কোয়ার) ছিল, সেখানে আরো দুটো রেস্তোরা আমাদের চোখে পড়েছে। ৩০০ বছর পুরনো গীর্জার ছায়ায় বসে খোলা আকাশের নীচে লাঞ্চ করছিলো ডজন তিনেক লোকাল লোক। তার মধ্যে ছোট-বড় পরিবারও দেখেছি কিছু, নানু-দাদু থেকে শুরু করে নাতি-নাতকুর পর্যন্ত সবাই একসাথে ভোজনে মশগুল। সেখানেই আবার ফেরত যাওয়া যাক। লোকালরা যেখানে যায়, সেখানে খেতে বসলে ঠকার কথা না।
তবে কান মানিয়ো বন্ধ কেন, সেটা নিয়ে আরেকটু বলা যায়। পুরো উইকেন্ডে 'সেরাদো পারা ভাকাসিওনেস' সাইনবোর্ডটা কয়েকবারই চোখে পড়ে আমাদের। রেস্তোরার বন্ধ দরজায়, কাপড় আর জুয়েলারীর দোকানে, এমনকি স্যুভেনির-শপের শাটার-মারা জানালাতেও এই সাইন দেখেছি। আসলে মেইনল্যান্ড ইউরোপের সর্বত্রই লোকজন তাদের বাৎসরিক ছুটিটাকে খুব সিরিয়াসলি নেয়। মেরিকা বা ইউকে'র তুলনায় ইউরোপে ছুটির দিনও বেশী। মেরিকা'তে আমার বন্ধুরা যে সারা বছরে দুই সপ্তাহ ছুটি পেতো, সেটা ভাবলে এখন বিস্ময় লাগে। ইউরোপে পাঁচ সপ্তাহ মিনিমাম, ইটালির মত দেশে শুনেছি আরো বেশী। জুলাই/আগস্ট মাস এলে অনেকেই টানা তিন সপ্তাহ বা এক মাসের ছুটি নিয়ে হাওয়া হয়ে যান, গন্তব্য হতে পারে সমু্দ্র সৈকত বা সামার কটেজ। এই সময়ে চাকরি-বাকরি কাজ-বাজ ব্যবসা-বাণিজ্য - সব কিছুর গুল্লি মারি, সময়টা শুধু আমার আর আমার পরিবারের জন্যে বরাদ্দ। অফিসে ডেস্কের পর ডেস্ক খালি পড়ে থাকে। কোন এমার্জেন্সী বা ঝামেলা হলে ফিরে এসে দেখা যাবে, এই হচ্ছে এদের ভাবনা -- সমস্যা আর কত সিরিয়াসই বা হবে যে কিছুদিন অপেক্ষা করতে পারবে না? প্রথম প্রথম মনে হতো যে ইউরোপীয়রা বেশ অলস। খালি ছুটির ধান্ধায় ব্যস্ত থাকে, অফিস ছেড়ে বেরিয়ে যায় সাড়ে পাঁচটা বড়জোর ছয়টা নাগাদ, আর মেরিকার মত ২৪-ঘন্টা দোকানপাট শপিং খোলা রাখতে চায় না। তবে আজকাল মনে হয় যে না, এদের চিন্তা-ভাবনা অনুযায়ী এইসব ধ্যাণ-ধারনা আসলে খারাপ না।
নীচে আরো কিছু ছবি জুড়ে দিলাম।
বার্সেলোনা পোর্ট বিল্ডিং
বিসিং বাইক, পেছনে কলম্বাস
মারেম্যাগনাম মলের কাঁচে প্রতিফলন - ব্যাগ কাঁধে আমি, বাঁয়ে ক্যামেরা হাতে মাতু
মন্তব্য
অসাধারণ বর্ণনা। ছবিগুলো তাড়াতাড়ি এ্যাড করেন প্লিজ। লেখার মাঝে কিভাবে ছবি এ্যাড করতে হয় শেখাবেন? এখানে পড়েছি কিন্তু বুঝতে পারিনি।
রেনেসাঁ
ছবি যোগ করার জন্য HTML tag ব্যবহার করতে পারেন।
<টেবিল>
<টিআর><টিডি>ছবির লিংক ১< / টিডি>< / টিআর>
<টিআর><টিডি>ছবির লিংক ২< / টিডি>< / টিআর>
<টিআর><টিডি>ছবির লিংক ৩< / টিডি>< / টিআর>
...
< / টেবিল>
স্পেস দিলে দেখা যায় না দেখে জুড়ে দিলাম। ইংরেজিতে লিখলে দেখতে পেতেন না, তাই বাংলায় দিলাম।
তিনটাই পড়া হলো এটা জানিয়ে গেলাম।
স্বাদু হইতেছে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
ধন্যবাদ, কিছু ছবি জুড়ে দিলাম, হয়তো স্বাদ আরেকটু বাড়বে!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
হ, স্বাদ বাড়ছে। তবে ঝাল। বুকে জ্বলে এইসব দেখে।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
- বস, ফটুক দিলেন না যে এই বার!
খালি লেখায় কি আর পেট ভরে?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বেশ লাগছে পড়তে। আগের অনেকবারের মত এবারো মনে হচ্ছে চলে যাই স্পেন ঘুরতে....
বিসমিল্লাহ বইলা রওনা দেও। দেখার মত দেশ।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ক্রিস্তোবাল কলোনের খাম্বার উপর থেকে নিচের ছবি তুলেন নাই ?
ন্যু ক্যাম্প-এ না যেয়ে থাকলে বড়ই দুঃখের ব্যাপার।
পড়লাম, ভালো লাগলো
...........................
Every Picture Tells a Story
ধন্যবাদ।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ajke jacchi barcelona
...........................
Every Picture Tells a Story
১। হিংসা
২। ছবি চাই
৩। অসাধারাণ বর্ণনা, চোখের সামনে দেখছি মনে হলো
৪। আগামী সামারে যদি বার্সিলোনা না গেছি...
=======================
ছায়ার সাথে কুস্তি করে গাত্রে হলো ব্যাথা!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
রচনা সুপাঠ্য।
----------------------------------------
শুধু শরীরে জেগে থাকে শরীরঘর
মধ্যবর্তী চরকায় খেয়ালী রোদের হাড়
http://meghpalki.blogspot.com/
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
ধূগো, ফাহিম, অমিত সহ যারা ছবি চেয়েছেন, তাদের জন্যে কিছু ছবি বসিয়ে দিলাম। আশা করি ভালো লাগবে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
- ভালো লাগার মতো ফটুক দিছেন একটাও? ভালো লাগবো ক্যামনে? আপনারে পবল দিক্কার!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভালো লেগেছে। বর্ণনা বেশ হয়েছে। ছবিগুলো ভালো হয়েছে।
ছবিগুলো চরম
স্পেইনে যাবো যাবো করেো যাওয়া হলোনা
আচ্ছা এমেরিকায় কি বছরে ছুটি সত্যি দুসপ্তাহ?
কী করে সম্ভব?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
দারুন বর্ণনা! ছবির মতোই সুন্দর!!
সুন্দর, তবে আগের পর্বটা বেশী সুন্দর ছিলো। মাতু= মাহতাব?
মাতুই মাহাতাব। আপনারা কি পরিচিত?? ও-ও আইবিএতি ছিল।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
মনে হয়।
এতো চমৎকার সিরিজটার প্রথম দুই পর্ব কেমনে মিস করলাম, বুঝতে পারছি না। যাই এখনই গিয়ে পড়ে আসি।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
পড়লাম বললে বেশি বলা হয়ে যাবে, স্কিম করলাম বললে কম। কাজের চাপে সিরিজ স্কিম+ করে যাচ্ছি। মজা লাগছে।
ফ্লিকর ব্যানের কারনে ছবি দেখতে পেলাম না। ব্যাপার না, সুবিনয় মুস্তফির সব পুরানো লেখাই পড়ার কথা, পড়ছিও, সুতরাং এটাও একসময় জালে আটকা পড়বে।
ওদিকটায় যেতে হবে একবার। আপনার বর্ণনা ও ছবিগুলো অসাধারণ! ভালো থাকবেন!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
বর্ণনা ও ছবিগুলো দুইই অসাধারণ! ভালো লাগলো [বুকও জ্বলে গেলো! ]
-----------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
হেহে জ্বালাটাকে মোটিভেশান বানায় ফেলেন, তাইলেই হয়ে যাবে!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
ছবি আর লেখা মিলিয়ে কয়েক কিস্তিতে শেষ করলাম। দারুণ একটা সিরিজের জন্য দোনোবাদ। ছুটির কথা ভাবলেই মনে হয় ইউরোপই ভালো ছিলো। লেবার ডে-র ছুটিতে ল্যাব ফাঁকি মেরেই বুক দুরুদুরু করে...
চমৎকার ভ্রমণকাহিনী! কয়েকটা দেশে যাওয়ার বড়ই সখ, স্পেন তার মধ্যে একটা
পড়তেসি ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
নতুন মন্তব্য করুন