ঠিক তিন বছর আগের কথা। আমি তখন সদ্য স্কটল্যান্ডের গ্লাস্গো শহরে গিয়েছি। ইরাকে তখন ঘোরতর সংঘর্ষ চলছে - মার্কিন জোট বনাম গেরিলা বাহিনী। অনেকের হয়তো মনে আছে সে সময় পশ্চিমা জিম্মিদের মাথা কেটে সেটা ভিডিও করার হিড়িক পড়েছিলো। জঘন্যরকম রক্ত পানি করা সব ভিডিও। ২০০৪-এর শেষের দিকে কেন্ বিগ্লি নামের এক বয়স্ক ব্রিটিশ ভদ্রলোক, লিভারপুল শহরে তার বাসস্থান, সেই বিগ্লি সাহেব গেরিলাদের হাতে ধরা পড়েন। স্বভাবতই ব্রিটেনের পেপার-পত্রিকা টিভি-রেডিও তার খবর দিয়ে সয়লাব হয়ে যায়। বিগ্লি-কে কি মেরে ফেলবে না ছেড়ে দেবে ইরাকি গেরিলারা, এই নিয়ে প্রচন্ড জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। জিম্মিদশায় তার রেকর্ড করা কথাবার্তার কয়েকটি ভিডিও টিভিতে প্রচারিত হয়, তাতে মানুষের উতকন্ঠা আরো বাড়তে থাকে।
তো আমি গিয়েছি গ্লাস্গোতে সেই সময় - সেখানে বছরখানেকের মতো থাকার প্ল্যান। উঠলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে যে মসজিদ, তার ঠিক পাশের বিল্ডিং-এ। (মসজিদ কমিটিই সেই বিল্ডিং-এর মালিক, সেটার ফ্ল্যাটের ভাড়া থেকে মসজিদের খরচ ওঠে, তিনতলা বিল্ডিং-এর প্রতিটা ফ্ল্যাটই হয় বাঙ্গালী নয় পাকিস্তানির কাছে ভাড়া দেওয়া।) উপরতলার বাঙ্গালী ভাবীর পরামর্শ মতো পাতাল রেলে চেপে একদিন চললাম হাড়ি-পাতিল বাজার-সদাই করার উদ্দেশ্যে। আমার গন্তব্য শহরের পার্টিক (Partick) নামের এলাকা, এদেশের পরিভাষায় নিতান্তই ওয়ার্কিং-ক্লাস এলাকা। অল্প-শিক্ষিত, অল্প আয়ের লোকজন সেখানে থাকে, তাদেরই ঘর-বসতি, তাদেরই দোকান-পাট।
(শহরের গরীব পাড়া সহজ়েই চেনা যায় পশ্চিমে - পরিত্যক্ত দালানকোঠা, রাস্তাঘাটে ময়লার প্রাদুর্ভাব, দেয়ালে বা দরজায় গ্রাফিটি, এসব তো আছেই। তা ছাড়াও দোকানপাটের চরিত্রও একটু ভিন্নতর হয়। অনেক বেশী ডিস্কাউন্ট স্টোর থাকে - ডলার স্টোর বা পাউন্ড স্টোর, সেখানে জুতার ফিতা থেকে শুরু করে পোষা কুত্তার খাবার, সব কিছুই কম দামে পাওয়া যায়। জুয়া খেলার দোকান থাকে, ঘোড়দৌড় বা ফুটবল খেলার উপর জুয়া - থাকে অতি-সস্তা মদের দোকান। এই দুইটা নেশাই এদের গরীবদের মজ্জাগত। আরো থাকে চেক ভাঙ্গানোর দোকান - অনেক লোকের ব্যাংক একাউন্ট থাকে না, তাই যতসামান্য বেতনের চেক্ দালালের কাছে হস্তান্তর করে ক্যাশ টাকা নিয়ে নেয়, কিছুটা মাশুল দিয়ে। সংখ্যালঘু-পরিচালিত দোকান থাকে অনেক, আর থাকে পন্-শপ (pawnshop)। ঘরের জিনিস বা নিজের জিনিস পন্ করে বা বন্ধক রেখে টাকা তোলার দোকান। এই হলো উন্নত দেশে গরীব পাড়ার সুরত।)
তো রেলে চড়ে আমি যাচ্ছি পার্টিক-এ, এমন সময় কামরায় এক বুড়ি মহিলা উঠলো। সে ওঠার সময়ই আমার দিকে কটমট করে তাকাচ্ছিলো - ট্রেন ছাড়তে ছাড়তে শুরু হয়ে যায় তার বাক্যবান। কামরাশুদ্ধ লোকের মধ্যে আমাদের যে 'কথোপকথন' হয়েছিল, তার কিছুটা বিবরণ দিলাম। বুড়ি শুরু করে -
- তুমি কি চাও এখানে, কেন এসেছো আমাদের দেশে?
- এক্সকিউজ মি?
- আমি বল্লাম তুমি কেন এসেছো আমাদের দেশে? তোমরা আমাদের সহ্য করতে পারো না, আমাদের এত ঘৃণা করো, তাও কেন এসেছো? ঐ নিরীহ বুড়ো লোকটাকে কেন মেরে ফেলতে চাও তোমরা? তোমাদের কি ক্ষতি করেছে সে?
- আপনি কি বলছেন, আমি ঠিক বুঝতে পারছি না... (এহেন অপ্রত্যাশিত আক্রমণে আমি বেশ থতমত খেয়ে গিয়েছিলাম। কামরার কিছু লোক আমাকে ইশারায় আশ্বাস দেয়ার চেষ্টা করছে তখন।)
- তুমি কি ইরাকি?
- জ্বী না, আমি মোটেও ইরাকি না।
- তুমি কি প্যালেস্টাইন থেকে, বা পাকিস্তান থেকে?
- না, আমি দুইটার একটাও না।
- তাহলে তুমি কোথাকার? তুমি কি মুসলিম?
- হ্যা, আমি মুসলিম।
- তোমরা মুসলিমরা এত হিংস্র কেন? তোমাদের সবার এতো জল্লাদ প্রবৃত্তি কেন? তোমরা আমাদের সবাইকে আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত খুন করে ফেলতে চাও, তাই না? আমাদের সবাইকে মেরে ফেলার জন্যেই কি এই দেশে এসেছো তুমি?
(এতক্ষন কোনভাবে সামলে ছিলাম, এখন মেজাজ খারাপ হতে শুরু করলো। উলটা দিকে আন্টি গোছের এক মহিলা চোখের ইঙ্গিতে আমাকে বলছে - পাত্তা দিয়ো না এই বুড়িকে, কথা বাড়ালেই কথা বাড়বে অযথা। কিন্তু আমি কথা বাড়ালাম।)
- আপনি আমার সম্পর্কে কিছু না জেনেই এতসব আজেবাজে কথা কেন বলে যাচ্ছেন?
- তোমার সম্বন্ধে আমি কিছুই জানতে চাই না। তুমি মুসলমান, তোমরা আমাদের শুধু খুন করতে চাও, এটাই সত্যি কথা। ঐ বুড়োকে কি করবে তোমরা শেষমেষ? গলা কেটে আরেকটা ভিডিও বানাবে? তুমি বাপু আমাদের দেশে থেকো না, আমরা তোমাদের এখানে চাইনা।
- আপনি আবারো বাজে কথা বলে যাচ্ছেন। আমি এখানে পড়তে এসেছি, কারো সাথে ঝামেলা পাকাতে আসিনি।
- তুমি কি আল-কায়দার সদস্য?
(মাথায় বাজ পড়ার মতো প্রশ্ন। আমি চেঁচানো শুরু করলাম।)
- আপনি তো মহা ফালতু লোক! আমি বিগ্লি-কে ধরিনি, যারা তাকে ধরেছে তারা ইরাকে আর আমি এখানে! আমি আল-কায়দারও সদস্য না।
- তাইলে তুমি কোথাকার, আমাকে বলো!
- আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। নাম শুনেছেন কখনো?
- না, শুনিনি। এটা কোথায়? এটা কি প্যালেস্টাইন বা ইরাকের ধারে-কাছে কোথাও? তোমাদের দেশের লোকও কি সবাই টেররিস্ট, খুনী?
- আপনি তো আসলেই কিছু জানেন না, শুধু-শুধুই আমাকে উত্যক্ত করছেন। আমার দেশ এসবের ধারে কাছেও নয়, আমি আরব বা টেররিস্টও নই। বাংলাদেশ ভারতের পাশের দেশ।
- সে যেখানেই হোক বাপু, তোমরা এখান থেকে তাড়াতাড়ি চলে যাও। তোমাদের আমরা চাই না। (ট্রেন থেমে আসছে, বুড়ি নামার জন্যে প্রস্তুত হয়। শেষ কথাগুলো বলেই সে গট-গট করে বেরিয়ে গিয়ে প্ল্যাটফর্ম ধরে হাঁটতে থাকে। আমি তার পিছু নেই।)
- দাঁড়ান, আমাকে এতো কথা শুনালেন, এইবার আপনার শোনার পালা। দাঁড়ান।
- তোমার সাথে কোন কথা নেই আমার।
- অবশ্যই আছে। খুব তো বল্লেন চলে যাও চলে যাও। আমাদের দেশে যাওয়ার আগে অনুমতি নিয়েছিলেন কারও?
- মানে? আমি তোমাদের দেশে যাইনি কখনো। তোমার দেশ কই, তা চিনিওনা।
- আপনি যাননি, কিন্তু আপনার পূর্বপুরুষ গিয়েছিলো। ১৯০ বছর যাবত আমাদের শাসন করে ছিলো আপনার দেশের লোক - ব্রিটিশ রাজত্বের নাম শুনেছেন না? ১৯০ বছর ধরে শোষন করেছিলো আমাদের। তো সেটার অনুমতি নিয়েছিলেন কার থেকে?
- তুমি কি এসব বানিয়ে বলছো না জেনে বলছো? কোন বইয়ে পড়েছো এসব?
- এইসব ইতিহাস সবারই জানা। আপনারই জানা নেই মনে হচ্ছে।
- তুমি কি ছাত্র? কোন কলেজে পড়ো? তোমার কথায় মনে হচ্ছে তুমি বই-টই জাতীয় পড়েছো।
- জ্বী হ্যাঁ, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। আপনাদের দেশে উড়ে আসিনি, বৃত্তিতে পড়তে এসেছি, আপনার ট্যাক্সের কোন পয়সা আমি খরচ করছিনা। অচেনা মানুষের নামে কিছু বলার আগে ভেবে চিনতে বলবেন এরপর থেকে।
- তোমার সাথে আমি আর কোন কথা বলতে চাই না। তোমরা সবাই এই দেশ ছেড়ে বিদেয় হও।
বুড়ি হেঁটে চলে গেলো। আমি চেয়ে চেয়ে দেখলাম। মুখের ভেতর তেতো-তেতো স্বাদ। মাথা ঝাঁ-ঝাঁ করছে।
এরপরের দু'তিনদিন মন-মেজাজ বেশ খারাপ ছিল। এর আগের চার বছরে এমন কখনো হয়নি, এমনকি গেঁয়ো টেক্সাসেও না। চেনা বাঙ্গালীদের যখন বল্লাম, তারা আশ্বাস দিতে চাইলো। তুমি মন খারাপ করো না, এরকম ঘটনা খুবই অল্প ঘটে, আমাদের তো কখনো ঘটেই না বলতে গেলে। বুড়ি নিশ্চয়ই পাগল বা মাতাল ছিল।
অনেক পরে স্থানীয় দুই-একজন স্কটিশ বন্ধুকে যখন বলেছিলাম এই ঘটনা, তারা সবাই খুব করে 'সরি' বলেছিলো, বলেছিলো তোমার কপালে খারাপ লোক জুটেছে। তুমি তো দেখছোই, স্কটল্যান্ডের বেশির ভাগ লোক এর থেকে অনেক উদারমনা। এবং ঠিকই, পরে আর কখনো এই রকম অপ্রত্যাশিত, অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হইনি।
*
সেই বুড়ির কুঞ্চিত চেহারা আর রাগী উঁচু গলা এখনো মনে করি মাঝে মাঝে। অতীতের তুলনায় এই ঘটনা আসলে কিছুই না যদিও - ৭০, ৮০, ৯০র দশকে এখানের বাদামী রং-এর লোকদের সরাসরি বর্ণবাদের সম্মুখীন হতে হতো। স্কিন্হেড্-রা রাস্তায় পেলে মানুষ পিটাতো। স্কুলে বাচ্চাদের শারীরিক বা মানসিক অত্যাচার চলতো। রাস্তাঘাটে দৈনিক গালি খেতে হতো বাদামী চামড়াদের - 'পাকি'! আসল দেশ-টেশ আর কে জানতে চায়, সবার জন্যে একটাই গালি - পাকি (পাকিস্তানি'র খন্ডিত সংস্করণ)। ইউ ফাকিং পাকি। ইউ ডার্টি পাকি। ইউ ফিল্থি পাকি। পাকিজ আউট!
পূর্ব লন্ডনে একটা আস্ত পার্কই আছে - আলতাব আলি পার্ক। কে ছিল সেই আলতাব আলি যার স্মরণে এই মনোরম পার্ক? সে ছিল বাঙ্গালী সিলেটী এক যুবক, ১৯৭৮ সালে বর্ণবাদিদের হাতে খুন হয়েছিলো। সেই বছর এরকম আরো সাতটি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিলো। তাদের মতো নিরীহ মানুষের জীবন-বলির কারনেই আজ আমরা মাথা তুলে হাঁটতে পারি, নির্বিঘ্নে চাকরি-বাকরি, স্কুল-কলেজ-ভার্সিটি এসব করতে পারি। তবুও গ্লাস্গো-র বুড়ির কথা ফাইল করে রেখে দিয়েছি মাথার ভেতর। হাজার বছর বিদেশে থাকলেও এটা চিরকাল বিদেশই রয়ে যাবে।
মন্তব্য
জনাব, কষ্ট করে প্রবাসের বইয়ে যোগ করে দিন। নাহলে সুমনদাকে দিয়ে জেবতিক ভাইয়ের মত করে গুঁতা দেওয়াবো কিন্তু!
সেটা কই?
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
বইয়ের তালিকায় গেলে পাবেন। লেখালেখি-তে ক্লিক করলে 'বইয়ের পাতা' দেখবেন। ওখানে 'অন্য ঘর, অচেনা শহর' নামের বইয়ের পৃষ্ঠা হিসেবে সংযোজন করে দিন। পেইজের নিচে 'মডারেশন'এর অপশন দিতে পারেন চাইলে। তাহলে একই পোস্ট একাধিকবার দেখাবে না। অন্যথায় প্রথম পাতা অথবা নিজের ব্লগে দুবার দেখাবে (যদি ভুল না জেনে থাকি)।
হায় রে সভ্যতা!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
চলুক। এরকম লেখা নিয়মিত চাই।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বর্ণনা খুব ভালো লাগলো।
বিশেষ করে উন্নত দেশে গরীব এলাকার সুরতের তালিকা।
তবে একেক লেখা প্রকাশের বোধ হয় উপযুক্ত সময় আলাদা আলাদা। প্রথম আলো আর ২০০০ নিয়ে উত্তেজনায় এই লেখাটা একটু আড়ালে থেকে যাচ্ছে।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
আমারও দুঃখ লাগছিলো এই লেখাটার জন্য। অসাধারণ একটা লেখা, কিন্তু অবান্তর কিছু কারণে আড়াল থেকে গেল। আমার মতে, এটাই উল্লুকগুলোর সবচেয়ে বড় সাফল্য। কী অবলীলায় ওদের পর্যায়ে নামিয়ে আনে সৃজনশীল, বর্ধনশীল লোকেদের।
গরীব পাড়ার বর্ণনাটা বেশি ভালো লেগেছে।পুরো লেখাটিই ভালো লেগেছে অবশ্য।
অসাধারণ লেখা।
আমার মনে হয় মহিলাকে দু'কথা শোনানোটা উচিত কাজই হয়েছে। কয়েক শ' বা হাজার বছরের ব্যবধানে উন্নত আর অনুন্নত (বা অবনত!) দেশের লোকেশন পরিবর্তন হয়েছে -- আর আবারো হতেই পারে।
উন্নত হোক, অনুন্নত বা আধা-উন্নতই হোক, বাংলাদেশীদেরকে মনে হয় 'আমাদের দেশে কী চাও' ধরনের মনোভাব সহ্য করতেই হয়। প্রশ্নকর্তারা মনে হয় প্রায়ই ভুলে যান যে বাংলাদেশীরা সেদেশে এসেছে ভিক্ষা করতে নয় -- কাজ করতে।
ভাল লাগল খুব।
আসলেই বিদেশ বিদেশ-ই। এখানে আমারো কিছুদিন আগে চাকরি নিয়ে বিশ্রী একটা অভিজ্ঞতা হল। বাংলাদেশী বলে আমার ওয়ার্ক পারমিট নিতান্ত অবহেলা করেই হিউম্যান রিসোর্স ডিপার্টমেন্ট ফেলে রেখেছিল চাকরির অফার দেয়ার পরে আরো দু'মাস, যেন আমার বস ডেডলাইন ধরতে গিয়ে আমার জন্য আর বসে না থেকে কোন লোকাল কাউকে নিয়ে নেয়। গত দু'বছর ছাত্র হিসেবে এসবের মুখোমুখি হতে হয়নি, তাই বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছিলাম। বুড়িকে কথা শুনিয়ে খুব ভাল করেছেন। আমিও HR এর যে মহিলা আমাকে দু'মাস বসিয়ে রাখার পরে ফোন করে মিথ্যা বলেছিল তাকেও শুনিয়েছি যে প্লিজ আমি জানতে চাই মালেশিয়ায় চাকরির সিস্টেম কি এই...এরকম একটা অফার দিয়ে ভুলে যায় আর একজনের দু'মাস সময় নষ্ট করে...এরকমই কি এক্সপেক্ট করব কিনা সবখানে। পরে এটা নিয়ে অবশ্য অনেক তোলপাড় হয়েছে, কিন্তু তারপরেও বিদেশ যে বিদেশই - এই ধারণাটা আরো শক্তভাবে মনে গেঁথে গেছে।
৬০-এর দশকে গ্লাসগোতে আমার বাবা পিএইচডি করতে গিয়েছিলেন। তখন মনে হয় পরিবেশ বেটার ছিল বা তিনি লাকি ছিলেন কারণ খারাপ কোন স্মৃতিচারণ মনে পড়ে না। অবশ্য আমার বাবাকে দেখেছি সবসময় দেশে থাকার পক্ষপাতী। গ্লাসগোর কোন অভিজ্ঞতা কি এর পিছনের কারণ কিনা কে জানে!
ভাল আছি, ভাল থেকো।
ভাল আছি, ভাল থেকো।
অসাধারণ লেগেছে লেখাটা। নিখুঁত মনে হয়েছে বর্ণনা।
তবে বিদেশে ভিনজাতীর কাছে বৈষম্যের শিকার হওয়ার চেয়ে দেশে সেকেন্ড ক্লাস পাওয়া ক্যাডারকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে দেখা, যেখানে ক্লাসের প্রথম দিকে থেকেও শিক্ষক হওয়া গেলো না, আমার কাছে অনেক বেশী অপমানের মনে হয়। পার্থক্য একটাই, দেশে সান্ত্বনা দেয়ার মত পর্যাপ্ত সংখ্যক আপনজন থাকেন, যেটা পরবাসে অনেকেরই থাকে না।
পুনশ্চ - কেন বিগ্লি বাঁচেননি শেষমেষ। তারও মাথা কেটে ফেলার ভিডিও বেরিয়েছিল।
http://news.bbc.co.uk/2/hi/uk_news/3728594.stm
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আমি কেলোডোনিয়ানে ছিলাম । গ্লাসগো আমার প্রিয় শহর গুলোর একটি । না,শুধু গ্লাসগো নয়-এডিনবারা এবং আবারডিন ও আমার খউব পছন্দের- লন্ডন,বার্মিঙ্ঘাম,ম্যানচেষ্টারের তুলনায় স্কটিশ নগরী গুলো অনেক শৈল্পিক ও রুচিসম্মত ।
সৌভাগ্য-রেসিজমের কোনো উদাহরন দেখতে হয়নি কখনো ।
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
নতুন মন্তব্য করুন