গতকাল পশ্চিম লন্ডনের কেন্সিংটন এলাকায় অবস্থিত 'ভারতীয় বিদ্যা ভবন'-এ অনুষ্ঠিত হলো দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে নাটক, নাচ আর গানের একটি চমৎকার অনুষ্ঠান।
গতকাল পশ্চিম লন্ডনের কেন্সিংটন এলাকায় অবস্থিত 'ভারতীয় বিদ্যা ভবন'-এ অনুষ্ঠিত হলো দুই বাংলার শিল্পীদের নিয়ে নাটক, নাচ আর গানের একটি চমৎকার অনুষ্ঠান। স্বদেশ ছেড়ে এতো দূরে এসেও বাঙ্গালী শিল্পীদের - যারা প্রায় সবাই পার্ট-টাইম শখের শিল্পী, বেশীর ভাগেরই অন্যান্য চাকরি-ব্যবসা আছে - তাদের এরকম প্রফেশনাল একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপন দেখে সমাগত দর্শকরা প্রচুর কড়তালি দিলেন, এবং অনুষ্ঠান শেষে বেশ আনন্দের হৈচৈ করলেন।
লন্ডনের সাউথ এশিয়ান কমিউনিটি (এদেশের পরিভাষায় বাদামীদের বলে শুধু 'এশিয়ান') তারা সংখ্যায় বেশ ভারী। রাস্তা-ঘাট টিউব-বাসে সর্বত্রই বাদামী চেহারা চোখে পড়ে। বহুকাল আগে থেকেই এদেশে উপমহাদেশীয়দের আনাগোনা - অনেকে অনেকভাবে এখানে এসেছেন, বসতি গেড়েছেন। যদি বাংলাদেশীদের কথা ধরি - এককালে চট্টগ্রাম আর সিলেট থেকে আগত জাহাজের লস্করেরা টেম্স নদীবন্দরে এসে ভিড়তেন, কেউ কেউ তীরে নেমে আর ফিরতেন না। ৫০-৬০'এর দশকে শুরু হয় সিলেট থেকে ঢালাও হারে অভিবাসন, যা আজ অব্দি চলছে। 'কারি' (curry) ব্যবসা তথা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট বাণিজ্য প্রায় পুরোটাই সিলেটিদের দখলে। একদম দূরবর্তী শহর বা টাউনগুলোতে গেলেও - যেখানে শাদা ছাড়া আর কোন চেহারা চোখে পড়বেনা - সেখানেও আপনি কমপক্ষে একটি করে সিলেটি মালিকানাধীন রেস্টুরেন্ট পাবেনই। ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগে যেই সিলেটিরা এখানে এসেছিলেন, সেই শেফ-ওয়েটারদের দ্বিতীয়-তৃতীয় প্রজন্ম এখন এখানে এস্টাব্লিশ্ড। তারা অনেকে অনেকরকম ভাবে আছেন, ভালো মন্দ মিলিয়ে - কিছু লোক কাজ-বাজ বাদ দিয়ে সরকারী বেনিফিট খেয়ে দিনাতিপাত করছেন, তবে আজকে আর তাদের কথা না বলি। ব্রিটিশ-বাঙ্গালীদের বিচিত্র জীবন নিয়ে আসলে এক-একটা বই লিখে ফেলা যায়! (এবং অনেকে লিখছেনও।)
দ্বিতীয় প্রজন্মের অনেকে বাবা-কাকাদের রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ছেড়ে প্রপার্টি ব্যবসায় অনেক উদ্যোগী হয়েছেন - ঘর-বাড়ি-ফ্ল্যাট কিনে সেই সব ভাড়া দিয়ে মিলিয়নেয়ার হয়ে গেছেন, এরকম উদাহরণ একেবারে কম নেই। ইদানীংকালে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর পরিমানে ছাত্র-ছাত্রী আসছেন, ঢাকা বাদেও অন্যান্য জেলা থেকে, তারা সিলেটিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা কিছুটা হলেও কমাতে সক্ষম হচ্ছেন। ৯/১১-এর ঘটনার পরে আমেরিকা বাদ দিয়ে অনেক দেশীয় ছাত্র লন্ডনের দিকে নজর দিচ্ছেন। ২৫ নম্বর বাসে উঠলে, যেটা প্রধান বাঙ্গালী পাড়াগুলোর ভেতর দিয়ে চলে যায়, তাতে উঠলে বাংলা আর সিলেটির মিশ্রিত কলকাকলি শোনা যায়। আর কিছু লোক আছেন প্রফেশনাল যারা - ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যাংকিং, আইটির চাকরি করে বেশ ভালো অবস্থায়ই আছেন। কেউ কেউ অনেককাল আগেই এসেছেন, কেউ কেউ এসেছেন সম্প্রতি।
ভারতীয়দের মধ্যে একটা বিরাট জোয়ার এসেছিলো সত্তরের দশকে যখন উগান্ডার স্বৈরাচারী শাসক ইদি আমিন দেশ থেকে রাতারাতি সমস্ত ভারতীয়দের বিতাড়ন করেন। আমিনের কথা ছিল এই যে উগান্ডার অর্থনীতি-ব্যবসা-বানিজ্যের প্রায় পুরোটাই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীরা কব্জা করে রেখেছেন, স্থানীয় কালোদের উপেক্ষা করে। (ভীষণ বড়লোকও ছিলেন তারা, সত্তরের দশকে ঐ দেশে বেশ কিছুকাল আমার পিতাজী চাকুরিরত ছিলেন, ছোটবেলায় বাবা-মার মুখে শুনতাম গুজরাটের বিখ্যাত মাধবানী পরিবারের মালিকানাধীন সুবিশাল কফিবাগানে বন্ধু-বান্ধব মিলে পিকনিকে যাবার গল্প।) ইদি আমিনের মাথা যখন চাড়া দেয়, তখন এই ব্যবসায়ীরা সর্বস্ব খুইয়েছিলেন। তাদের ব্যবসাপাতি বাজেয়াপ্ত করা হয়, এবং মাত্র ৯০ দিনের ঘোষণা দিয়ে একপ্রকার লাথি মেরেই তাদের উগান্ডা থেকে বের করে দেয়া হয়। সেই কাহিনীর কিছুটা বিবরণ 'দ্য লাস্ট কিং অফ স্কটল্যান্ড' মুভিটিতে আছে।
তো যাই হোক, উগান্ডা সদ্য-স্বাধীন হওয়াতে সে সব ভারতীয়-উগান্ডানদের অনেকেরই পুরান ব্রিটিশ পাসপোর্ট রয়ে গিয়েছিলো। তারা সেই পাসপোর্ট বগলদাবা করে, বাক্স-পেটরা-বৌ-বাচ্চা নিয়ে ব্রিটেনে চলে আসেন কপর্দকহীন অবস্থায়। আবার শূন্য থেকে শুরু করেন জীবন - অনেক প্রতিকুলতা তাদের পেরুতে হয়েছিলো। ব্রিটেনের জনগণ আর রাজনীতিকদের মধ্যে অনেকেই চাননি যে হাজারে হাজার ভারতীয় ব্রিটেনে উড়ে এসে জুড়ে বসুক। সেসময়ের এক বৃটিশ রাজনীতিবিদ ইনোক্ পাওয়েল (Enoch Powell) একটি বিখ্যাত ভাষণ দিয়েছিলেন ভারতীয়দের আসার প্রতিবাদে, যেটি আজো 'রক্তের নদী' ভাষণ হিসেবে ব্রিটেনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিচিত হয়ে আছে। ('As I look ahead, I am filled with foreboding. Like the Roman, I seem to see the River Tiber foaming with much blood.') পাওয়েল আর তার সহমতদের কুদৃষ্টি উপেক্ষা করেই এখানে সদ্যাগত ভারতীয়রা বসবাস করতে শুরু করেন। তীক্ষ্ণ ব্যবসায়িক মেধা হোক আর কঠিন পরিশ্রমই হোক, সেই ভারতীয়-উগান্ডান এবং তাদের বংশধরেরা আজকে আবারও ব্যবসা-বানিজ্যের ক্ষেত্রে প্রচন্ডভাবে সফল হয়েছেন। প্রতি বছর এখানকার সান্ডে টাইম্স পত্রিকা ব্রিটেনের টপ ১০০০ বড়লোকের তালিকা সংকলন এবং সেই রিচ লিস্টে প্রচুর ভারতীয় (pdf) এবং একজন বাঙ্গালীরও নাম থাকে (সিলেটি মৎস্য ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদ)। অন্যদিকে ভারতীয়রা চলে যাবার পরে উগান্ডার অর্থনীতিতে যে কি লংকা-কান্ড বেঁধেছিল, তা আরেক লম্বা কাহিনী।
পাকিস্তানিও আছে এদেশে অনেক অনেক - তাদের নিয়ে আরেক দিন লেখবো - তবে কেউ যদি হাতে পান, ব্রিটিশ-পাকিস্তানি লেখক নাদিম আসলাম-এর রচিত 'Maps for Lost Lovers' উপন্যাসটি পড়ে দেখতে পারেন, এদেশে অভিবাসী অল্প-শিক্ষিত ধর্মান্ধ পাকিস্তানিদের জীবনের অসাধারণ শৈল্পিক এক বর্ণনা, এবং আমার জীবনে পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর একটি।
*
তো যাই হোক - আসলে কথা একটা কইতে গেলে ৫০টা বাড়তি কথা চইলা আসে, এইটাই সমস্যা! কাইল্কার অনুষ্ঠানের গল্পই আর কওয়া হইতাছে না - তাই মূল কথাটায় ফিরা আসি। 'ভারতীয় বিদ্যা ভবন' - সবাই একে 'ভবন' নামে চিনে - লন্ডনে উপমহাদেশীয় নাচ-গান-বাদ্যযন্ত্র শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র। ভারতের ইতিহাস-শিল্প-সংস্কৃতি-দর্শন এসবের উপরেও ক্লাস নেয়া হয়। বিল্ডিং-টি আগে একটি পুরাতন গীর্জা ছিল, সেটি ২০০২ সালে এখানকার কিছু ভারতীয়রা মিলে কিনে নেন এবং ভবন-এর প্রতিষ্ঠা করেন। বিল্ডিং-এর প্রধান অডিটোরিয়ামের ভিতরে একটি বোর্ড টাঙ্গানো দেখছিলাম - বড় বড় অনুদান এবং দাতাদের তালিকা। অনেক নামজাদা ভারতীয় শিল্পী ইতিমধ্যে এখানে অনুষ্ঠান করেছেন এবং অনুদানও দিয়ে গেছেন, যেমন লতা মুঙ্গেশকর, পন্ডিত রবি শংকর, হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া প্রমুখ।
গতকালের অনুষ্ঠানের পিছনে দত্ত দম্পতি ছিলেন মুখ্যশক্তি। কোলকাতা থেকে আগত এই দুইজন লন্ডনের বাঙ্গালী সাংস্কৃতিক অংগনে প্রচুর অবদান রেখেছেন এবং রাখছেন। লাইট-সাউন্ড থেকে শুরু করে মঞ্চের সমস্ত টেকনিক্যাল ব্যাপার পরিচালনা করেন সৌমিল্য দত্ত, আর তার স্ত্রী সঙ্গীতা দত্ত হলেন একাধারে অভিনেত্রী, নাট্যকার, এবং সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানের আর্টিস্টিক ডিরেক্টর। তাদের দুই ছেলে সৌমিক আর সৌভিদ দত্ত - একজন তবলাবাদক, আরেকজন বাজায় সরোদ। মোটামুটি অল্পবয়স্ক এই দুই ভাই, কিন্তু এদেশে বড় হলেও একদম দেশীয় সংস্কৃতির সাথে মিশে আছে। সৌমিক তো ফাটাফাটি সরোদ বাজায়, আর চমৎকার মিউজিক কম্পোজিশনও করে। কাল তার বাজানো আর রচিত মিউজিক, উভয়ই শুনলাম, অপূর্ব। পশ্চিমে নিতিন সহ্নি (Nitin Sawhney) আর তাল্ভিন সিং যেমন কম্পোজার হিসেবে সুনাম অর্জন করেছেন, আমার মনে হয় সৌমিক নামের এই বাচ্চা ছেলেটা একদিন তাদের সমানে পৌঁছে যেতে পারবে।
তিন্খান নাটক ছিল। প্রথমটি ঢাকা আর ময়মনসিংহে অবস্থিত দুই বোনের মধ্যে চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যমে একে অপরের জীবন-বর্ণনা। তারপর ৪০ মিনিটের জন্যে ইফতার আর নামাজের ব্রেক নেয়া হলো। ব্রেকের পরে দ্বিতীয় নাটক - দৃষ্টিপাত ক্রিয়েটিভ-এর প্রযোজনা। উপস্থাপন করেন এখানের বাংলাদেশী বন্ধুরা। তাহ্মিমা আনাম যিনি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের উপর 'আ গোল্ডেন এজ' শীর্ষক ইংরেজী উপন্যাস লিখে দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করেছেন, সেই তাহমিমার বইয়ের নাট্যরূপ পরিবেশন করা হয়। ঔপন্যাসিক নিজেই ভূমিকা দিয়ে একটি ছোট্ট ভাষণ দেন, এবং তারপর ছয় তরুণ বাংলাদেশী - আহসান, ফয়সাল, সোহিনি, ঈষিতা, ঝরা এবং লিসা - এই নাটকে অভিনয় করেন। কেউই প্রফেশনাল অভিনেতা নন, কিন্তু অসাধারণ কাজ দেখালেন গতকাল - বিশেষ করে সোহিনির গায়কী আর লিসা আপার অভিনয় দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে। লিসা আপা এককালে ঢাকায় গ্রুপ থিয়েটার করতেন, কিন্তু এমন অসাধারণ অভিনয় জানেন তা কারোরই জানা ছিলোনা, হাউজফুল দর্শক তাকে হাততালি দিয়ে সম্বর্ধিত করেন।
তৃতীয় নাটকটিও ভালোই ছিল, তিনজন দেশীয় নারীর প্রবাসজীবনের চাওয়া-পাওয়ার গল্প। কিন্তু একটু বেশি লম্বা হয়ে গিয়েছিল - শেষ হতে হতে রাত ১০টারও অনেক বেশী বেজে যায়। আবারো সবাই দারুণ অভিনয় দেখালেন। মঞ্চের চমৎকার ব্যাকড্রপ্টি ছিল রবীন্দ্রনাথের একটি বিশালাকৃতির পেইন্টিং (ফটোতে যেটা দেখছেন)। তো অনেক রাতে অনুষ্ঠান শেষ হলো, শিল্পীরা পেলেন প্রচুর বাহ্বা, এবং ভবিষ্যতে এই শিল্পীদের নিয়ে আরো কাজ করার আগ্রহ দেখালেন অনেকেই। বিশেষ ধন্যবাদ প্রাপ্য ছিল শিরীন খানের - এখানের সর্বজনপ্রিয় শিরীন আন্টি - গতকাল যে বিরাট দর্শক সমাগম হয়েছিলো, বোধ করি তার ৭০%-ই শিরীন আন্টির বন্ধুবান্ধব, সাঙ্গো-পাঙ্গো হবে! নিরন্তর খেটেছেন তিনি। সবাইকে বিদায় জানিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত ১২টা বেজে গেলো...
মন্তব্য
তাই নাকি? দক্ষিন আমেরিকানদের এমনকি অনেক মেইনল্যান্ড স্পেনিশদের গায়ের রঙ ও কিন্তু বাদামী । এদেরকে ও কি 'এশিয়ান' বলা হয় নাকি এই দেশের পরিভাষায়?
ঐ কিছু লোকের তালিকায় শুধু সিলেটীরাই কিংবা শুধু বাংলাদেশীরাই আছে এমনটা বললে তা বড় একপেশে হয়ে যায় । লন্ডন নগরী থেকে বের হয়ে উত্তর ইংল্যান্ডের শহরগুলোতে আসলে দেখা যায়- সাদা চামড়ারা ও ব্যাপক হারেই এই সুযোগ নেয় ।
পুরো লেখাটা ভালো লেগেছে ।
-----------------------------------
মানুষ এখনো বালক,এখনো কেবলি সম্ভাবনা
ফুরোয়নি তার আয়ু
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
শুনে ভাল লাগলো।
==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।
বাহ! দারুন লিখলে - পরে খুব ভাল লাগ্ল। ইতিহাশের-অ ক্লাস পেয়ে গেলুম। এখন কীবোর্ড পুরপুরি দাখল করি নি, কিন্তু করব। ভাল থেক।
সুবিনয় দা,
আবারো ভাল লিখেছেন। আপনি লন্ডনীদের ওপর নিজস্ব কয়েকটি অভিজ্ঞতাসহ লিখুন না। অপেক্ষায় রইলাম।
(মনে আছে, একদিন গভীর রাতের চ্যাটিং। বিরানী ইন ব্রিকলেন!)
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিপ্লব ভাই, ধন্যবাদ। পাবলিক ফোরামে সব অভিজ্ঞতা শেয়ার করা যাবে না!! সামনাসামনি আড্ডায় বলতে হবে আর কি...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
দারুণ প্রাণের মেলা। ভাল্লাগলো।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
নতুন মন্তব্য করুন