'প্রতিটি শিশুর জন্যে একটি ল্যাপটপ' (OLPC) প্রজেক্টটি সম্প্রতি খবরে এসেছে। আমেরিকার প্রখ্যাত MIT বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই প্রজেক্টটি সম্পাদন করা হয়, এবং এর লক্ষ্য হলো অনুন্নত বিশ্বের প্রতিটি শিশু ও কিশোরের হাতে একটি করে সস্তা শক্ত পোক্ত এবং সহজ়ে ব্যবহারযোগ্য ল্যাপটপ তুলে দেওয়া। ইতিমধ্যে কিছু দেশের সরকার এই ল্যাপটপ পাইকারী হারে কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। কিন্তু এই তালিকায় বাংলাদেশ আছে কিনা জানা নেই। প্রবাসী ইন্টারনেট ব্লগারদের যাদের দেশ নিয়ে ভাবনা চিন্তা আছে তাদের জন্যে এইটা কি একটা ভাববার বিষয় হতে পারে? দেশে কোন সাহায্য সংস্থা কিম্বা স্কুল কলেজের সাথে জড়িত হয়ে এরকম একটি প্রজ়েক্ট করার কি রকম অবকাশ আছে বলে আপনাদের মনে হয়?
মন্তব্য
এই ধরনের একটা প্রজেক্ট নিয়েই তো কাজ করছে ইন্টেল-গ্রামীনের যৌথ গুষ্ঠি।
তবে ১০০ ডলারের ল্যাপটপ কি আদৌ এই দেশের প্রায়োরিটি হওয়া উচিত না কি তারেক-কুকু মার্কা মানুষের পকেট ভরার জন্য বেশী প্রয়োজন।
বাংলাদেশের গ্রামের দরিদ্র শিশু কিশরোর জন্য এই ল্যাপটপ অপ্রোয়জনীয় এই পর্যায়ে।
মাগনা ল্যাপটপ পাওয়া গেলে আমি আবার শিশু হইতে রাজি আছি
-----------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ভাত দে হারামজাদা
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
হাহাহা এই কমেন্টটা পছন্দ হইছে...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
গরীবের আবার ঘোড়া রোগ!
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
১০০ ডলার ল্যাপটপ প্রজেক্ট ইতিমধ্যে বিফল হওয়ার পথে।
কাজের শেষে এসে দেখা যাচ্ছে দাম দাঁড়াবে ১৮৮ ডলার।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা আগে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো দরকার , ল্যাপটপ দিয়ে শিক্ষার মান বাড়ানো কিন্তু যায় না।
আপাত প্রয়োজন দেখছি না।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
পজিটিভলি ভাবলে একশ ডলারের ল্যাপটপ চমৎকার একটি উদ্যোগ। ভাবতে ভাল লাগে আমাদের দেশের ছোটছোট ছেলেমেয়রাও প্রযুক্তি, জ্ঞানবিজ্ঞানে সাবলীলভাবে এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা নিয়ে যখন ভাবতে যাই, হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। আমরা এখনো এমন পাঠ্যবই করতে পারলাম না যেখানে সত্য কথা লেখা থাকবে, আমরা এখনো এমন শিক্ষাব্যবস্থা করতে পারলাম না যে ব্যবস্থায় সবাই মোটামুটি সমান সুযোগ পাবে, ল্যাপটপতো অনেক পরের ব্যাপার। এমন উদ্যোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের মূলত ভাবতে হবে অনগ্রসর গ্রামের শিক্ষার্থীদের কথা, ইংলিশ মিডিয়ামের বড়লোকের সন্তানরা পিসি কেনার সামর্থ রাখে ল্যাপটপের তাদের প্রোয়জন নাই। গ্রামের ছেলেমেয়েরা কি পড়ে আর কি শেখে সে সম্বন্ধে আমাদের কোন ধারনা আছে কি? আমাদের মত গরীব দেশে শিক্ষা ব্যাপারটা বড়লোকদের দখলে চলে যাচ্ছে, এটা খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।
==============================
আমিও যদি মরে যেতে পারতাম
তাহলে আমাকে প্রতি মুহূর্তে মরে যেতে হত না।
দৃষ্টিপাতে একজন এই কথাই বলেছেন, যে দেশের কোন কামেল প্রোগ্রামার যদি ইন্টারফেস্টাকে বাংলায় রূপ দিতে পারেন (ধরেন এই সচলের মত), তাইলে এই ল্যাপটপ-টা ক্লাসরুমের শিক্ষা সহায়িকা তো বটেই, টেকনোলজি শেখার ক্ষেত্রেও ভাল ভূমিকা রাখতে পারে। সেটা গরীবের জন্যে হোক বা নিম্ন মধ্যবিত্তের জন্যে। যাক, যদি গ্রামীন একটা পাইলট প্রজেক্টও করে দেখে, এটার এফেক্টিভ্নেস বোঝা যাবে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
শুরুতে খুব মহান উদ্যোগ মনে হয়েছিলো...কিন্তু এখন দেখছি ধনী দেশের শিশুরাই আগে এই ল্যাপটপ স্পর্শের সুযোগ পাবেন(কাল একটি পত্রিকায় এমন সংবাদ দেখলাম)। এখন বিষয়টির পেছনে বড় ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য আছে বলেও মনে হচ্ছে।
কিছুদিন আগে এ ব্যাপারে ড.কায়কোয়াবাদ স্যারের সাথে কথা বলছিলাম এ ব্যাপারে। তার মতে আমাদের দেশে ১০০ ডলারের ল্যাপটপ আনলে ব্যবহারের চেয়ে অপব্যবহার হবার সম্ভাবনা খুব বেশি। কারন, আমাদের দেশে এসব প্রযুক্তিকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেই বেশি ব্যবহার করা হয়। এমনও দেখেছি...অনেকে গেমস খেলার জন্য হাই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ কিনেন।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
গ্রামের স্কুলগুলিতে কী পড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে কারো প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা আছে কি? থাকলে দয়া করে জানান।
হাঁটুপানির জলদস্যু
প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা বলতে আমার এক ফুপাতো বোন প্রাইমারি স্কুলের মাস্টারনি।(মহান এরশাদ সাহেব প্রাইমারী স্কুলে শুধু মাস্টারনি রাখা যাবে,এমন আইন করেছিলেন।)
তার কথা বলি।
তিনি সিলেট শহরে থাকেন এবং গর্বের সাথে বলেন যে উনার স্কুলে (অবশ্যই সেটা গ্রামে)উনিই সব চেয়ে নিয়মিত উপস্থিত হন কারন গত মাসেও উনি ৮ দিন গিয়েছিলেন।
সেখানে তাকে যেতে হয় কারন গ্রামের শাকসব্জি এবং হাসের ডিম উনার খুব পছন্দ।
তিনি ছাত্রছাত্রীদের কাছে আবেদন জানান এই গুলা অমুক তারিখে (যেদিন উনি আবার যাবেন) নিয়ে আসতে ।অবশ্য এজন্য উনি টাকা দেন।(এটাকে যদি গ্রামীন অর্থনীতির চাকা সচল রাখার একটি সিস্টেম হিসেবে গন্য করা যায়,তাহলে মন্দ না।)
এই অর্থনীতি সচল জাতীয় গুরুদায়িত্বের পাশাপাশি ভোটার লিস্টের দায়িত্ব,থানা সদরে এমপি সাহেব মন্ত্রী সাহেবের প্রোগ্রামে দলবেধে চকচকে শাড়ি পরে হাজিরা দেয়া জাতীয় নানাবিধ দায়িত্বও তাকে পালন করতে হয়,এই সব কারনে উনি শিক্ষার ক্ষেত্রে বেশি সময় দিতে পারেন না।
ক্লাসে গিয়েই উনি একপাশ থেকে সবাইকে রিডিং পড়তে হুকুম দেন।
যে কোন একজন ছাত্রী অবশ্য এই হুকুমের আওতার বাইরে থাকে ,কারন সেই ছাত্রী তো শিক্ষয়িত্রীর চুলের উকুন বাছাই করতে করতেই ক্লাসের সময় পার করে দেয়।
একটা ছোট প্রকল্প করে দেখা যায়। আমাদের পাঠ্যসূচী নিয়ে অনেকেরই নানারকম আপত্তি আছে। কয়েকটি নির্দিষ্ট স্তরের জন্য কেউ বিকল্প পাঠ্যসূচী প্রস্তাব করতে পারেন কি? প্রয়োজনে আমি এই বিকল্প পাঠ্যসূচীর জন্য অনলাইনে উপাদান সংযোজনের স্বেচ্ছাশ্রমে রাজি আছি।
এই গরীবের ল্যাপটপ দিয়ে কোন একটা গ্রামে এক বছর শিশুদের বিকল্প শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেখা যেতে পারে, আদৌ কোন ফল পাওয়া যাচ্ছে কি না। টানা এক বছর গ্রামে গিয়ে কারো বসে থাকা লাগবে না, সপ্তাহে একবার গেলেও চলবে। অন্তত কোন একটা কিছুর ওপর ৫২টা ক্লাস নিতে হবে।
যদি গ্রামে যাওয়ার ঝোল কারো না থাকে, বাসায় যে ছেলেটা বা মেয়েটা কাজ করে, তাকে গরীবের ল্যাপটপ দিয়ে বসিয়ে দিতে পারেন।
দুয়েকজন পেডাগোগকে সচল করা দরকার মনে হচ্ছে :)।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ভাষাটা একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তবে যদ্দুর জানি, ল্যাপটপে open source software ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে কি বাংলা ঢোকানো সম্ভব?
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
তাহলে এটা নিয়েই প্রথম পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে।
এ ব্যাপারে মেহদী হাসান খান, এস এম মাহবুব মুর্শেদ আর রাগিব হাসানের মনোযোগ আকর্ষণ করছি।
হাঁটুপানির জলদস্যু
গরীবের ল্যাপটপের মহান উদ্যোক্তারা এই ল্যাপটপ নির্মাণ/সংযোজন কি ধনী দেশেই করছেন? এই কাজটা কোন গরীব দেশে আউটসোর্স করা গেলে বোধহয় ব্যাপারটা আরো ভালো দেখাতো। নাহলে এটাও গরমের দিনে সস্তায় কম্বল বিক্রির মতো দেখায়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে গরীবকে মুলা দেখিয়ে শোষণ করা মনে হয়েছে।
প্রথমত, বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে (গ্রোস লেভেলে, গ্রামের স্কুলগুলোতে) ল্যাপটপ টেকনোলজির কোনোই দরকার নেই। প্রতিবছর শহর এবং গ্রামের স্কুলের রেজাল্টের পরিসংখ্যান নিলেই দেখা যাবে, শিক্ষার ক্ষেত্রে কি ভয়াবহ বৈষম্য কাজ করছে শহর ও গ্রামের মধ্যে। আশঙ্কার বিষয় হলো, এ বৈষম্য দিনদিন বাড়ছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে ডিসিশান নেওয়া লোকগুলো হয় গ্রাম সম্পর্কে ভাবে না, না হয় গ্রামের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা নেই।
অর্থনৈতিক বিচারে, আমার স্বল্পবুদ্ধিতে যা বুঝি, এই ল্যাপটপ কেনার অর্থের বিনিময়ে আউটপুট যা হবে, তা অতি নগণ্য। কয়টা ছেলেমেয়ে কম্পুটার শিখবে আর সেই শেখা বিদ্যা প্রয়োগ করার ক্ষেত্রটা কই, সেটা ভাবার বিষয়। আর যারা শিখাবে তাদের কম্পিটেন্স তো শূন্য। এখন এরকম এখটা প্রজেক্টে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হবে। কম্পুটারগুলোর উৎপাদক কিন্তু আমরা না, আমরা শুধু ভোক্তা। এবং এটা এখানেই শেষ নয়। মোবাইল কম্পানিগুলোর মাধ্যমে গ্রামে গ্রামে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়া হবে। তাদের ব্যবসায় বাড়বে, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের পকেট খালি হবে।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প। কোন মানে নাই। ৫ম শ্রেণীতে উইঠা গুণ,ভাগ কিংবা নিজের নাম ইংরেজীতে লিখতে পারে না গ্রামে এমন অনেক ছাত্রছাত্রী আছে। তাদের জন্য ভালো শিক্ষক ল্যাপটপের চেয়ে অনেক বেশী দরকারী।
নতুন মন্তব্য করুন