তীব্র হয়ে হিম নেমে এসেছে এখানে। মাঝে মাঝেই অমল-ধবল তুষারে ঢেকে যাচ্ছে সব। গাছ-পালা। চরাচর। সব। রক্তের ভেতর যেটুকু উষ্ণতা বা ছিলো অবশিষ্ট, এমন ডানাকাটা হিমের ভেতর সেটা যেন ঘুমিয়ে না পড়ে তাই আমরা কেউ কেউ গরম পানিতে অন্দর মহল ভেজাতে যাচ্ছি দুরের শুড়িখানায়!
আর গ্রামে আমার যে বোনের নাম রাহেলা, আমার যে বোন বহ্নিশিখা, মায়ের ঔষধের টাকা, ছোটভাইয়ের স্কুলের ফিস, বাড়ি ভাড়ার টাকার হিসেবের সঙ ...
ফাল্গুনের 'ছয়' সর্বানন্দ ভবনের আলো হাওয়া, নিয়ম-নীতিহীন খামখেয়ালীতে, ধাঁনসিড়ির বুক জুড়ে এমন কল্লোল তুলে দিয়েছিলো যে, বহু বছর পর তেমনি এক বসন্ত রাতে ‘আমাদের দেশের সেই ছেলে’ দেখে ফেলে
এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে___ সবচেয়ে সুন্দর করুণ;
যেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকূপী ঘাসে অবিরল
তারও আটাত্তুর বছর পর একই দিনে জন্ম নেবার, জন্ম নিয়ে আনন্দবেদনাভালোবাসার ব্যাখ্যারহিত পুলকে মেয়েটি ভাসতে ...
সন্ধ্যার আকাশ জুড়ে পাষাণ তারাদের মেলা দেখতে দেখতে একই আকাশের নীচে কোথায়, কোন দুরতম জানলায় অস্পষ্ট মুখের আদল বদলাতে বদলাতে কার চেহারায় স্থির, তার হদিস এই জন্মে আর নাই জানা হলেও, এইটুকু হাতড়ে হাতড়ে পাওয়াই যায়, সাইকেলের বয়স ছিলো ষোলো, দুই বেণীর তখন সবে মাত্র তেরো...মাথা পাগল হাওয়ায় হাওয়ায় সেই মাফলার উড়ে যাবার কিছুদিন আগে শেষবারের মতো গ্রামে এসেছিলো দুরদেশী যাত্রাদল...দুই বেণীর রজঃপা...
সেই প্রথম কিছু রাত আর দিন; যুদ্ধ ফেরত রজব আলী নিজের মতো করে পেয়েছিলো আছিরন। তারপরই ধীরে ধীরে বদলাতে লাগলো মানুষটা! শেখ মুজিব, আওয়ামীলীগ এসবের নামে একদিন জান কোরবান করে দিতো যে রজব আলী, সে-ই আগের মতন কোনো উচ্ছ্বাস দেখায় না এসব নিয়ে। বরং এদের বিপক্ষেই বলে বেশি। তার চেয়ে বরং জাসদ, গণবাহিনী-এই জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করে ঘন ঘন আর বলবার ভঙ্গি আর বিষয় পাল্টিয়ে নিজের বদ...
(মহান পাঠক,পড়ুন আপনার ধৈর্যের নামে,আপনার অপরিসীম ক্ষমার গুনে)
মধ্য পৌষের ভরা মধ্যরাতের হিম হিম নির্জনতা ভেঙ্গে দিয়ে মেজর রফিক উল্লাহ খানের সামরিক কায়দায় উচ্চারিত প্রশ্নটা আছড়ে পড়ে এদিক ওদিক। তখন ধাইসার গ্রামের সারা গতর জুড়ে ঘন শীত নামে। অথবা শীত তখন হয়তো মাঠ অব্দিই নেমে গেছে। কিন্তু কোথাও দাঁত কাঁপানির শব্দ শুনতে পাওয়া যায় না ! যদিও অল্প শীতেই কাতর কিছু শেয়াল একটা শোরগোল তোলে...
১.বেদনার্থ মোরগের নিদ্রাহীন জীবন ফুরালো বলে বহুদুরে শিমুলতলা গ্রামে বুড়ো বিনয় জেনেছিলো বেদনার গাঢ় রসে কদাচিত্ আপক্ক রক্তিম হয়ে উঠে ফল ! এখানে পাতা ঝরার শুরু । এখানে পর্বের শেষ । শীত এসে বলছে, বাসনা তার মাছরাঙার ডানায় উড্ডীন । আর ম্যাপলের ডালে ডালে এ শূন্যতা; মনে পড়ে যাচ্ছে বকুল ফুটে শুধু শীতকালেই । শীতকালেই মানুষ ছেড়ে আসে নিজ বসত । আবার শীতেই তো কেউ কেউ ফিরে নিজস্ব সীমান্তরেখায়...
এমন হলে চলে ! দেখ্ দলে দলে ছেলেরা চলে গেলো সব ...আমার তবু ঘুম ভাঙ্গে নি মা ! না সেদিন , না আজ । সকাল বিকাল ডিউটিমাখা এই দিনগুলি, এই নিশিপাতা...ক্লান্ত-শ্রান্ত `পর-বাস` শেষে কে কবে আর এমন করে ফিরে পেয়েছে তার হারানো চুনি-পান্না ! এইবার না যাই, আগামীবার তো বটেই, ঈদের সেমাই ফিরনির ঘন দুধের মতো যাহা কিছু চির ঘনয়মান, সেই আবছা স্মৃতিগুলো উজিয়ে আরো একবার তাকালে, দেখা যায় আমার গোসলই শেষ হয় নি ...চুলগুল...
গান, নিজের মুখের মতো চিরচেনা নীল শিরা, সবুজ বিভ্রমের পাড়ে দাঁড়িয়ে, মানুষকে আর কতোই বা খেলতে হয়, খেলে, হেরে গিয়ে, কান্না লুকাতে লুকাতে, সন্ধ্যার ক্লান্ত সাগর পাড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আচমকা, তার নোনা জল মাখতে মাখতে, কখনো কখনো হরিৎ দিনগুলি, বরিষনজর্জর রাতগুলি, মাথার উপর একলা অই সী-গার্লের ডানায়, মৃত্যুর অধিক এক বেদনায়, প্রিয়তম মার্বেল হারানোর শোক, ফিরে ফিরে এলে এই শব্দ শব্দ খেলা, নিজের কাছে, প্র...
গ্রামের ভেতরে,গাছে গাছে,আকাশে আগুন লাগিয়ে বসন্ত এসেছে কি,আসে নি - কবিতায় পড়া সেই বনলতা সেন, কোথায় যেন তার নিজস্ব পুরুষের কাছে বসে শান্তি বিলাচ্ছে দু'এক দণ্ড। মনুতে তখন হাঁটুঅব্দি জল ...