স্মৃতি গ্রহের বরষাত

সুমন সুপান্থ এর ছবি
লিখেছেন সুমন সুপান্থ (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/০৮/২০০৮ - ৮:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অবশেষে ড্রপস্ক্রিন পড়ে যায় ! শূন্য মঞ্চ থেকে দেখি হলভর্তি সারি সারি নিরবতা,সুনসান ! একদিন যে মঞ্চ থেকে ছুঁড়েছি বিদীর্ণ সব স্বপ্নরাজি; আজ সেখানে খুব একলা দাঁড়িয়ে টের পাই বহুদুরে, গৌহাটির সড়ক ধরে ঢাকা,ফেনী,বরিশাল অথবা বাকুড়া-জয়সেলমির জানালাগুলো নিভে আসছে একে একে ! আরো দূরে, কান্নার মতো ভিজে দুপুরে সুদর্শন ফিরে যাচ্ছে ঘরে,নিঃসঙ্গ !

নিঃসঙ্গতার একটা মন্ত্র জানা ছিলো । নামের আড়াল নেয়া অভিমানি এক কন্যা চট্টলার নাতিউচ্চ পাহাড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে একদিন বলেছিলো, ‘মানুষ কাছে এলে প্রকৃত সারস উড়ে যায়। জানো কেন ?’ আর জানা হলো কই ! জেনে কী না জেনে, আরো একজন সুমন্ত আসলামকে দেখি একের পর এক সিঁড়ি ভেঙে চলেছে । তারও আগে কতো যে যৌথমন্ত্র যে জপেছি আমরা এই প্রান্তরে ! একজন পরবাসী । নামের আড়াল নিয়ে নিজেকেই যেন আড়ালে নিয়ে যাওয়া ! শেষবার জেনেছি নাটোরে ছিলো আস্তানা । তারপর... । মান্নার মতো ? ছাতকের মান্না, সিলেটে এসে অর্জুন মান্না ! মহাভারতের পুরুষ, মাঝে মাঝে তবু মনে হয় সেইসব দিন, জীবন গিয়েছে চলে আমাদের বহু বহু বছরের পার ! জ়ীবন এসে দাঁড়িয়েছে দুয়ারে ও কোথাও ! সন্নাস্যের ব্রত নিতে গিয়ে জোছনামাতাল হাসান মোরশেদ, দেখি, সেই পার্থিব সংসারেই পেতেছে ভবিতব্য ! শুধু মাঝে-মধ্যি মনে পড়ে যায়, নিশি কি আগের মতোই ভর করে রে ! বরফ বরফ এই সন্ধ্যায় কতো শতো মুখের আদল বদলে গিয়ে আরো কোথাও স্থির হয়ে যায় – সুরজিত সুমন, নজমুল আলবাব, আরিফ জেবতিক, আসিফ মনি , রিয়াদ আঊয়াল এমনি কতো সব মুখ খুঁজি ! খোঁজতে খোঁজতে একদিন দেখা হয়ে যায় মনুকন্যা তাহমিনা ওয়াহিদ – ‘রুপোলী মাছ পাথর ঝরাতে ঝরাতে চলে গেলে, একবার তুমি গান গেয়ে ওঠো’ ।
সুস্মিতা চিত্রা, ঝুমুর রায়, কিংবা নিজ শহরের প্রিয় সব মুখ । একজন ফয়সল ফরিদ, বন্ধুর খোলস ভেঙে আপাদমস্তক সহোদর এখন- যেন একই গর্ভে ঘুমিয়েছি জন্মপুর্বকাল ! কবিতার মতো স্নিগ্ধ এক কিশোর শায়ের আমান । কতোটা চিঠি যে লিখেছে ! সব বার উত্তর করা হয় না । তবু মনে পড়ে সেই লাইন-‘ লিখুন না হয় একটা হৃত্ কলম । পুরোনো সবাই জাগুক ।’ কে কারে জাগায় ! আমি নিজেই যে ঘুমিয়েছি পাহ্নের বেভুল পথিক !

আর একটা মধ্যরাত ভেঙে দেখি উঠোনময় নীল নীল ঘাসফুল । বেদনায় আকীর্ণ সব নীল মুখ ! অতোটা ঝাপসা এখন ! পাহাড়ের মেয়ে অন্তরিকা চাকমা, অজান্তা ইলোরা, মেমে , নকু চাকমা, কিংবা জেসমিন এলি, বৃষ্টি মালিথা; এই যে এখানে নতুন বন্ধুরা , তারেক রহিম , আরণ্যক সৌরভ,পান্থ রেজা, আনোয়ার সাদাত শিমুল, ব্রাম্মপল্লীর মৌ, ঢাকার নওরীন সুলতানা কিংবা আরো আরো দুরপাল্লার অই মেঘদলেরা কি জানে, কী বিষাদে, কী ভালোবাসায় আমরা পরষ্পর পরষ্পরের অস্তিত্বে জড়িয়ে ছিলাম একদিন ! তবু কেউ কেউ ছিটকে পড়ি বৃত্ত থেকে । বুকভর্তি অভিমান নিয়ে সেই দুরপাল্লার মেঘ, কাতর নদী- সব হই । তিথি, লাবণী, শাম্মী- টাঙ্গাইলের তিন কন্যা, শেখর দা, জিনিয়া, অভিমানী তানিয়া, সবাইকে বলি-‘ তুচ্ছ’র সঙ্গে পাল্লা দিতে নেই । তাতে নিজেদেরই মহত্ব ক্ষুণ্ণ হয় ।’
কতো গল্প লিখি ! কতো মুখ আজ জানলায় ! একদিন ভাবতাম জীবন আর জগত্ জুড়ে বুঝি এইটুকুই সঞ্চয় । এঁদের ভালোবাসা, এঁদের হয়ে যাওয়া ! দক্ষিণের হাওয়া ধরে একদিন ভেসে গিয়ে চিনেছি বন্ধুত্বের নতুন চর, বিশ্বাসের আশ্চর্য সুত্র । হাতিয়ার শিমু, হ্যাপী, শিল্পী, সেহেলী, আর মুশতাক জুয়েল- মনে থাকবে আমৃত্যু । অনেক কিছু মনে থাকে । কিছু কিছু মনে মনে থাকে । বাসের ছাদে বসে একদিন আমি আর মেসবাহ য়াযাদ, শ্রীমঙ্গল ট্যু সিলেট । আরো এক বিষাদমাখা বিকেলে নাজনীন, মামুন,পপি, বিদিশা- রংপুরের সব বন্ধু; হুডতোলা রিক্সায় প্রিয়তায় সঙ্গে সৈয়দপুর রোড ধরে- এক জন্মে এতো স্মৃতি কোথায় যে আজ রাখি !

লাল মাঠির পথ ফেলে তবে, ফাউগান- শিলা দেবনাথ, মিলা, ইলা- কতোবার যে ডাকলো ! বৃষ্টিতে ভেসে যায় ময়মনসিংহ, পিন্টুর চোখেও। রবিনের স্টুডিও থেকে আমাদের যাত্রা শুরু । অভিজিত্ রাজু, আমি, মুন্না, সুমন সাহা, এনাম ভাই । অলি-গলি, পাকস্থলী । জয়নুলের ব্রহ্মপুত্র দেখি । তসলিমা নাসরীন ব্রাহ্মপ্ললীর বাড়িটা দেখি । ... আয়েশা পারভীন পুরোদস্তুর গৃহিণী তখন, রত্না বসাকের বিয়ে সমাগত । তবু যেন কাকে কাকে পাই না ! দেখা হয় না তটিনী – এই জন্মে আর কি হবে ? ভালো থেকো ঘাস ফড়িং, ভালো থেকো কাকলী তালুকদার ।
এমনি আধেক চেনা জীবন । এক দুপুরের স্মৃতি ধরে ঘুরতে ঘুরতে হালভাঙা নাবিক- প্রিয় অরুন্ধতী ঝিলি , মানুষ কাছে এলে সত্যি তবে প্রকৃত সারস উড়ে যায় ? আজ পারু ভাবী নেই । পিন্টু চলে গেলো না ফেরা গ্রহে। আর আমি ও নেই বৃত্তে ! তবু, ডানাকাটা হিমের ভেতর হবিগঞ্জের বন্ধু এনাম উজ্জ্বলের ফোন আসে একদিন, ‘সুমন ভাই, আমি সাউদাম্পটনে’। কতো কাছে । তবু দেখা হয় না । একদার চিঠিপুত্র(!) মোরশেদ খান লিটন এখন রাণীর ছবিওয়ালা চিঠি বাছাই করেন । কার্ডিফে । গুলশানা রহমান অ্যালেন ও একই শহরে । সামুয়েল ইকবাল। আ.ন.ম জুবায়ের – লন্ডনে । হায় বিচ্ছেদ...হায় সানিধ্য – আমাদের ! কতো কী যে হ্যারিটেজ হয়ে যায় ! বাচ্চাদের মতো হাতের লেখা নিয়ে সকল বেদনা সেলাই করে পাঠাতো যে সিপা সুলতানা; বন্ধু মুজিব ইরমের বউ এখন । বার্মিংহামে ।

একটা লেখায় কি এই গল্প ফুরায় ? মাঝে মাঝে ভাবি – একদিন না হয় ছুটি নেব সব কিছু থেকে... এই চাকুরী...এই গার্হস্থ্য যন্ত্রণা থেকে । তারপর প্রার্থনার মতো লিখবো আমাদের মিলেসিস আখ্যান ! সেই রাশি রাশি চিঠি । তাতে বন্দি হয়ে আসা সব স্বপ্ন ! নিজেকে ছদ্মনামে ঢেকে খুলনার আকাশলীনা, বরিশালের পপি , কিংবা ফেনীর সুকন্যা রাশীদা আফরোজ,রাশেদ মাযহার, দারা ভাই,ঢাকা/পটুয়াখালীর ববি, নিজ শহরের সুশান্ত কায়সার, আশফাক মাহমুদ, সাজু, শাহী, মনিকা, সিঁথি, সাখাওয়াত লিটন, প্রিয় শ্রীলা দি’.. হালদার পাড়া ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার পপি, চবি’র ফারহানা পপি, সিলেটের ফারহানা সালাম, কেয়া চৌধুরী, এনিলা ইমু, রোকসান তাজীন, খুলনার হেলেন- কেউ একজন একদিন খুঁড়ে দেখবেই জেনো আমাদের প্রস্তর ভালোবাসা । খননে খননে আরো কতো পোর্টফলি ! ঢাকার পারিসা ইসলাম, মৌসুমী, ফারহানা হাসনীন রিমি , হিটলার এ হালিম, কিংবা বগুড়ার অবন্তি, গাইবান্ধার তাহেরা সুলতানা, রংপুরের ফারজিয়া হক বৃষ্টি, খুলনার ফারহানা ইসলাম জয়া, দিবা আফরোজ (টিবি পর্দায় লাক্সের ফেনা মাখতে দেখলে মনে পড়ে পুনরায় ), চৈতি দাস মিতা, সিরাজগঞ্জের ইসমত আরা ইভা, পটুয়াখালীর শিল্পী, নোয়াখালীর মোনতাসির রাসেল, আর বিশ্ব চষে বেড়ানো আফরিন আহমেদ, কিংবা জীবননান্দের ম্লানকন্যা শর্মিষ্টা বিশ্বাস, - এই হাওয়া, এই দীর্ঘ দীর্ঘ দিবস-রজনী, অভিমানে থুবড়ে থাকা ড্যাফোডিলের কসম । মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে আজও আমি কেঁদে উঠি । প্রতি ভোরে উঠি এই ভেবে যে-আজ বুঝি একটা চিঠি এলো । আজ আবার লিখলো কেউ, সেই কিশোরীর মতো-‘বলো পথিক বলো বলো বলো তুমি কার ?’ কী বলতে পারি আর আজ ? বনশ্রী রোডের সেই একতলা বাড়িটা, সবুজ বোগেনভেলিয়ার ঝাড়, আর পথে হারিয়ে ফেলা নীল বোতাম সাক্ষী- পাতার শিরায় মুদিত জীবন ! আমি বলি, ‘ তোমাতে আমাতে হয় নি যে কথা / মর্মে আমার আছে সে বারতা’... প্রিয় কবি উত্ পল কুমার বসু বলেন,
মন মানে না বৃষ্টি হলো এতো
সমস্ত রাত ডুবো নদীর পাড়ে
আমি তোমার স্বপ্নে পাওয়া আঙুল
স্পর্শ করি জলের অধিকারে...

কোন অধিকারে ! স্বপ্ন...বন্ধুত্ব...ভালোবাসা ! ভাবি, আবার একটা শোরগোল, মৈন মৈন খেলা উঠোনজুড়ে ।
আবার একটা চিঠি আসে – ‘কেমন আছো’

[ শিরোনামটি অগ্রজপ্রতিম কবিবন্ধু সাহেদ কায়েস'র কবিতা থেকে নেয়া ]


মন্তব্য

আরিফ জেবতিক এর ছবি

মন্তব্য নেই ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

....নিশ্চুপ চেয়ে থেকেছি
দেখেছি মধুর যতো মুখ,
সেই সব মুখে আমি শুধু চন্দন মাখাই....

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মন্তব্য নিস্প্রয়োজন! শুধু এটুকু বলতে পারি, আপনার গদ্য অনেক কবিতার চেয়েও অনেক অনেক সুন্দর। পুরো পদ্যময় লেখা হাসি

সুমন সুপান্থ এর ছবি

ধন্যবাদ অতন্দ্র প্রহরী ।
কোনও কোনও স্মৃতি কবিতার চেয়েও হৃদয়-জাগানিয়া, কোনও ভাষাতেই যে ধরা যায় না তারে !

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সৌরভ এর ছবি

এইভাবেই পুরনো মঞ্চ ভেঙে যায়। আবার গড়ে। থাকে শুধু আমাদের পোড়া স্মৃতি।

অনেক পুরনো নাম দেখলাম অনেকদিন পর।
আমি পাঠক।



২৭. বেহেস্ত যাওনের খায়েশ হগ্গলের, আপত্তি শুধু মরনে


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সুমন সুপান্থ এর ছবি

পুরোনো অনেক কিছু ভাঙে আর তার ঢেউ এসে লাগে আরও কোন দূর সমুদ্রতটে ! আমরা বলি,'ইস্ '....
ধন্যবাদ সৌরভ ।

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সবজান্তা এর ছবি

সুপান্থ ভাই, অসাধারণ লিখেছেন ভাই। ভাষার স্নিগ্ধতা স্পর্শ করে গিয়েছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

সুমন সুপান্থ এর ছবি

কৃতজ্ঞতা সবজান্তা ।
স্পর্শ টা-ই শেষ কথা , কাছে আনাটা-ই....

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

হাসান মোরশেদ এর ছবি

'কে হায় এমন কাকডাকা ভোরে প্রিয়জন ছেড়ে আসে'
আমাদের আসতে হয় ।

তোর এই লেখাটা পড়ে অনেক কিছু অনেককে মনে পড়ে গেলো, বেশ একটা দীর্ঘসময় আমি যা কিছু এবং যাদেরকে ভুলে থাকতে চেয়েছিলাম ।

রাজুদের বাড়ী গিয়েছিলাম, আয়েশার বিয়ে হয়নি তখনো, মুন্নার ক্যাফে করাচীতে তুমুল আড্ডা হয়েছিল পিন্টু সহ ।
পিন্টুটা মরে গেলো এর কিছু দিন পর ।

ফিরতি ভ্রমনে ওরা আমার বাড়ি এসেছিল ৫ বছর পর । সেই এক ক্ষন, আমার নীলগেট ঠেলে ঢুকছে অভিজিৎ সাহা রাজু এবং আরো কে কে যেনো ,আর আমি সিড়ি বেঁয়ে নেমে আসছি বাবার লাশ কাঁধে নিয়ে। সেদিন ২০ এপ্রিল ২০০১ ।

এইসব নাটকীয়তা ঈশ্বর মহাশয় বড় যত্ন করে লিখেছেন হে...

-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

স্মৃতি মানেই এমন বিষাদাখ্যান কি না, বিগত মানেই কি কেবলই হাহাকার ? মাঝে মাঝে , খুব কোলাহল ঠেলে, একটু শ্বাস নিতে গেলে যখন টের মিলে 'দম কেন বন্ধ হয়ে আসছে রে ! "

নিয়তি এই, মানুষেরা তবু স্মৃতিতীর্থেই ব্রত নিয়ে ছুটে যায় একটা জীবন ! তুই,আমি, আর আমাদের মতো স্মৃতিদাসেরা !!

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

সুপান্থ দা, আপনার লেখাটি পড়তে পড়তে এক লহমায় ফিরে এলো আমাদের সময়ের উজ্জ্বল মঞ্চটি। আর তার কতো শতো স্মৃতি জাগানিয়া উপাখ্যান। উপাখ্যানে ডুবে যেতে যেতে ঝাপসা হয়ে গেলো কম্পিউটার স্ক্রিন। প্রকৃতির মতোই আমার নয়ন জুড়ে এখন মুষল বৃষ্টির দাপাদাপি।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

পান্থ রে ভাই !
ঝাপসা হয়ে আসা সব কিছু... এই আকাশ... মনিটর... আর অন্যান্য সব কিছু....
উজ্জ্বল কেবল কিছু পুরাতন-গাঁথা !

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

তারেক এর ছবি

আমার বন্ধুদের এখনো হারাইনি পুরোপুরি... হারাতে চলেছি। একদিন বিযুক্ত হয়ে যাবে সব, বিচ্ছিন্ন গ্রহ হয়ে প্রদক্ষিণ করে যাব নিজ বলয়ে... সুখ, দুঃখের সংজ্ঞাগুলো ও হয়ত বদলে নেব নিজেদের মত করে, আমি কিংবা আমাদের বন্ধুদের কেউ একদিন হয়তো এরকম লিখে একটানে খুঁচিয়ে বের করে আনবে "স্মৃতিমাতৃক খুচরো কষ্ট" সমূহ...
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

সুমন সুপান্থ এর ছবি

তারেক,
স্মৃতিমাতৃক খুচরো কষ্ট" সমূহ...!!!

সেই-ই

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সুরভি এর ছবি

সুরভি
অনেক অনেক ভাল লাগা রেখে গেলাম

সুরভি

সুমন সুপান্থ এর ছবি

অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ফিরিয়ে দিলাম, সুরভি ।

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

তানবীরা এর ছবি

পুরনো সব বন্ধুরা এক হলেই কি আর সেই সুর বাজবে? সময়ের সাথে সুরও হারিয়ে যায়।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সুমন সুপান্থ এর ছবি

না বাজবে না , তানবীরা ।
বাজবে না বলেই মিছে মিছি আর যা বাজাই, সেটা- বুকের পাঁজর দিয়ে তুলে আনা সুতীব্র বেদনার ঠুমরি !
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য ।

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আপনি মানুষটা বেশি ভালো না, সুপান্থদা।
আপনার লেখাগুলো বড়ো বেশি নস্টালজিক করে তোলে। মন খারাপ

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সুমন সুপান্থ এর ছবি

মনে হয় তাই-ই, মানুষটা আমি মনে হয় ভালোই না , একেবারে ! কেবলি নষ্টালজিক কথাবার্তা বলি , না ? কিন্তু আমার আশেপাশে যারা, তারা তো ভীষণ ভালো ! এই যেমন আপনি শিমুল , নষ্টালজিক লেখা পড়ে কষ্টালজিক বোধ পেলেন, আমার সঙ্গে !
ভালো থাকুন ।

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

অতিথি লেখক এর ছবি

এটা সেই লেখা না???
অন্তঃরিেক্ষ যাওয়া এক একাকি বালককে মনে পড়ে খুব !
কিন্তু এই ক'টি লাইন কথা কতোদিন ভুলে ছিলাম......
মন মানে না তবু বৃষ্টি হলো এতো
সমস্ত রাত ডুবো নদীর পাড়ে
আমি তোমার স্বপ্নে পাওয়া আঙুল
স্পর্শ করি জলের অধিকারে...

-মেঘদূত।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

হ্যা, একাকী বালক.......

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

নিঘাত তিথি এর ছবি

সব পুরনো ভালোলাগা নাম।
আচ্ছা পরবাসী এত ভালো লিখত, তার সত্যি নাম-সন্ধান কিচ্ছু পাওয়া গেলো না, না?
অভিজিৎ সাহা রাজু কি ফটোগ্রাফি করছেন এখনও?
মাইনুল এইচ সিরাজী অনেক লিখতেন, তারা এখন কি লিখছেন না কেউ কোথাও?
এই প্রশ্নগুলো মাঝে মাঝেই মনে আসে, জানো কি না জানি না তবু রেখে গেলাম।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

সুমন সুপান্থ এর ছবি

তিথি, নিজের কম্পিয়্যুটার খানা বিগড়ে আছে রে ! ধার করা কম্পু থেকে লিখছি । তোর মন্তব্য দেখে কতো কী লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে ! সেই সব কথা, সেই-ই দিনগুলির বয়ান !
পরবাসী, পরবাসী-ই রয়ে গেলো ,সবার কাছে । নাম-ধাম কিচ্ছু না জানিয়ে । রাজু এখনো ছবি তুলে , নিজের মতো করে ! সিরাজী কাপ্তাইয়ের কোন এক কলেজে বাংলা পড়ায় । এই আর কি !

---------------------------------------------------------

আমার কোন ঘর নেই !
আছে শুধু ঘরের দিকে যাওয়া

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

জল এর ছবি

আস্ত লেখাটা মোর মুখস্ত। শিরোনাম বদল এবং একজনের নামে মুখোশ পরানো হয়েছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।