কলকাতা শহর থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে হলেও এই জায়গাটাকে কোনমতেই শহর বলা যাবে না। শহরতলী? তাও বোধ হয় না। একই উচ্চতার এই সব চারতলা নতুন ফ্ল্যাটবাড়িগুলোকে বাদ দিলে এ এক গ্রামই। অন্তত চারপাশের অসংখ্য গাছ, পুকুর আর শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে ছড়িয়ে ছিল গ্রামেরই আবহ। মিনিট দশেক হেঁটে গেলে বাসষ্ট্যান্ড, যেখানে মিনিট পনের পরপর বাস আসে কলকাতা থেকে। যাত্রী নামিয়ে খানিকটা দাঁড়ায় ট্রাম কোম্পানীর বাস, একে একে কলকাতার যাত্রীরা সব বাসে ওঠার পরে বাস আবার বেরিয়ে যায় কলকাতার পথে। ট্যাক্সিষ্ট্যান্ডে সারসার দাঁড়িয়ে থাকে ট্যাক্সি, যদিও তারা আপনার পছন্দমত গন্ত্যব্যে যে যাবে এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। বিদ্যাসাগর সেতুর ফ্লাইওভার যেখানে শেষ হয়েছে বাস আর ট্যাক্সিষ্ট্যান্ডটা ঠিক সেখানেই। সেতু ধরে গঙ্গা পেরুলেই ওপারে প্রবল বেগে ছুঁটে চলা কলকাতা।অক্লান্ত।
পশ্চিমের জানলার ওধারে পাশাপাশি তিনখানি পুকুর। কবে কে কাটিয়েছিল কে জানে। অযত্নে পড়ে থাকা পুকুরের জল শ্যাওলায় সবুজ। জলে ভাসে পাশের ফ্ল্যাটবাড়ি থেকে ছুঁড়ে ফেলা ময়লাভর্তি পলিব্যাগ, খালি মিনারেল ওয়াটারের বোতল আরও কত কি। কোনো পার বাঁধানো নয় এই সব পুকুরের। সহজে কেউ নামেও না ওই সবুজ শ্যাওলা পড়া জলে। তবুও বস্তিবাসী কিছু দূরন্ত ছেলেপুলে দুপুরবেলায় এসে নামত ওই জলে। দাঁপিয়ে স্নান করত পলি পড়া প্রায় মজা পুকুরের কোমরজলে। একটা পুকুরে বাস ছিল তিনটে পানকৌড়ির। মাঝে মাঝেই তারা উড়ে যেত এক পুকুর থেকে আরেক পুকুরে। কখনো বা পুকুরের গায়ে নুয়ে পড়া ছোট্ট এক জংলী গাছে বসে রোদ পোয়াত, ডানা ঝাপটে ঝাপটে গা থেকে ঝরিয়ে দিত জল। খানিক বসে থেকে দিক ঠিক করত, এবার কোন পুকুরে যাবে। তারপর উড়ে যেত সেদিকপানে আর ডুব দিত পুকুরের জলে। আসত কিছু হাঁসও। কোথা থেকে, কার বাড়ি থেকে আসত কে জানে। পুকুরে ভেসে বেড়াত তারা, জলকেলি করত। কখনো বা পারে উঠে বসে থাকত। মাঝে মাঝেই নিজেরা কথা বলত নিজেদের ভাষায়। আমি শুনতে পেতাম, কো্য্যাক কোয়্যাক। কি বলত? হয়তো নিজেরা বলবালি করত, এই পুকুরও আর কদ্দিন থাকবে কে জানে!
যেহেতু পুকুর, তা সে মজাই হোক আর ভরা, মাছ তো তাতে থাকবেই। কেউ ওখানে মাছের চাষ করুক বা নাই করুক। সেই মাছ ধরতে ছিপ হাতে বসে থাকত কিছু নাছোড়বান্দা টাইপ ছেলে। বলা বাহুল্য এরঅ বস্তিবাসী। ঠিক বস্তিবাসীও নয়। এদের বাস ফ্লাইওভারের তলায়, সরকারী জমির খানিকটা জায়গা পলিথিন দিয়ে ঘিরে নিয়ে এদের মা-বাবাদের সংসার। এদের মায়েরা কাজ করে ফ্ল্যাটবাড়িগুলোতে, ঠিকে ঝিয়ের কাজ। বাবারা কেউ রিকশা চালায় কেউ বা পুরনো কাগজ, ফেলে দেওয়া নানান জিনিসপত্র কুড়িয়ে বেড়ায়। হাতে লোটা আর সরু কঞ্চির ছিপ নিয়ে এরা বসে থাকে পুকুরধারে। কখনো বড়শীতে আটকায় ছোট্ট এক মাছ। হই হই করে ওঠে ছেলেটি। উল্লাস! এদিক ওদিক তাকিয়ে সাবধানী সতর্ক হাতে বের করে ছোট একটা বোতল, পাশে রাখা পলিব্যাগ থেকে। বেরোয় ছোট ছোট কাঁচের গেলাস। বোতল থেকে দেশী মদ গেলাসে ঢেলে এক চুমুকে খেয়ে নেয় মাছ ধরতে আসা ছোট্ট ছেলের দল, আবার মন দেয় জলে ভাসা ফাৎনার দিকে। খালি বোতলটি জায়গা পায় পাশের কচুবনে।
পুকুরের ধার ধরে গেছে সরু পীচরাস্তা, খানিকটা দূরে দূরে ল্যাম্পপোষ্ট, যাতে বিকেল থেকে জ্বলে টিমটিমে হলুদ মরা বাতি। সরকারী বাতি। রাস্তার উপর পরপর সব গেট। ফ্ল্যাটবাড়ির গেট। নতুন গজানো সব ফ্ল্যাটবাড়ি। আজকাল আর ব্যাঙের ছাতা গজায় না কোথাও। যেখানে ব্যাঙের ছাতারা গজাতো সেখানেই সব ফ্ল্যাটবাড়ি গজিয়েছে যে। যেখানে এসে বাসা বেঁধেছে ছিটকে পড়া মানুষেরা। পুরনো সব বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবারে যারা একসাথে অভিন্ন হয়ে বাস করতো আর দশজনের সাথে। এখন সব নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি। হাসব্যান্ড ওয়াইফ এন্ড দ্য ওনলি ওয়ান চাইল্ড। সেইসব ফ্ল্যাটবাড়ি থেকে উড়ে আসা ময়লার ব্যাগেরা ভাসে শ্যাওলা ভর্তি পানাপুকুরে। মাঝে মাঝেই উড়ে এসে জলে পড়ে ববহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন দোতলা তিনতলার খুপরি জানলা থেকে। জলের রঙ খানিকটা বদলায়। তারপর আবার যে কে সেই। গাঢ় সবুজ।
সন্ধের পরে এখানে বড় একটা মানুষজন দেখা যায় না ওই সরু রাস্তায়। নীরব নিস্তব্ধ হয়ে যায় রাত হতে না হতেই। ল্যাম্পপোষ্টের মরা আলোয় অন্ধকার যত না কাটে ছড়ায় তারচেয়ে বেশি। জংলা মাঠ, চেনা-অচেনা সব গাছে অন্ধকার ঘন হয়ে চেপে বসে থাকে। জোনাকপোকারা উড়ে বেড়ায় ঝিকিমিকি ঝিকিমিকি আলো জ্বালিয়ে। ঝিঁঝি পোকার একটানা ডেকে যাওয়ার শব্দ, গাছের পাতায় বাতাস বয়ে যায় সরসর সরসর। ফ্ল্যাটবাড়ির জানলায় জানলায় নানা রঙের আলো। নানা রকমের যান্ত্রিক আওয়াজ ভেসে আসে নীরব রাতে। কোথাও টেলিভিশনে খবর পড়া, কোথাও বা ধুম তারা রা রা নাচের ছমছম। এরই মাঝে রেডিওতে গান বাজে কার বাড়িতে যেন ... তোমায় গান শোনাবো...
তিনটে পুকুর ঠিক পাশাপাশি নয়। বাঁদিকে একটা পুকুর আর তারপরের দুটো পুকুর একটার পর একটা, লম্বালম্বি অবস্থানে। মাঝে খানিকটা করে খালি জায়গা। জঙ্গলমত। সরু লম্বা তালগাছ, নারকেল, সুপুরি আর খেজুর গাছ। আর আরও নানারকম গাছে ভার্তি ছিল জায়গাটা এই সেদিনও। জানলার ঠিক পাশেই ছিল বিশাল এক নাম না জানা গাছ। কমলা রঙের ফুল ফুটত তাতে। ফুলভর্তি কৃষ্ণচূড়া গাছের মতই লাগত সেটাকে। চেনা অচেনা কত পাখি যে আসত সেই গাছে। কিচির মিচির কিচির মিচির। দিনের বেলা ঘুমুনোর উপায় নেই! শুধু দিনের বেলা? মাঝরাত্তির থেকে শুরু হত তাদের কথোপকথন, আমি শুনতাম শুধু নানা রকমের কান ঝালাপালা করা কিচির মিচির। আর সেই কোকিল দুটো? তাদের কি সমস্যা ছিল কে জানে! একজন কুউ উ উ কুউ উ উ ডেকে চলত একটা নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে আর আরেকজন মাঝে মাঝে সাড়া দিত। শেষ জানুয়ারী থেকে নিয়ে একেবারে সেই জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত! আমার তো ওদের চেহারা পরিস্কার মনে আছে! কালো কুচকুচে চেহারায় ততধিক কালো গভীর দুটো চোখে কি যে মায়া! দক্ষিণের ওই জামগাছটায় তাদের ডেরা ছিল এই মাসখানেক আগে পর্যন্ত। আর ওদের নজর থাকত পাশের তালগাছের কাকজুটির বাসার দিকে! চারতলার এই চিলে বারান্দার ঠিক পাশেই সমান উচ্চতার তালগাছটাতে ফলে থাকে অসংখ্য তাল। আর সেই তালের ছড়ার মাঝখানে কাঠি-কুটো যোগাড় করে প্রতিবছর বাসা বাঁধে কাক দম্পতি। যেন হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে ফেলা যায় ডিমে বসে থাকা কাকিনীটিকে কিংবা একটা আলতো ছোঁয়া দিয়ে দেওয়া যায় ওই নীলচে রঙের জোড়া ডিমে!
পুকুরের মাঝের খালি জায়গায় গজিয়ছিল কচুবন। ফ্ল্যাটবাড়িতে বসত করতে আসা ছোট্ট ছেলেটি টারই মত আরও কিছু ছেলেকে সাথে নিয়ে একদিন নেমে পড়ল ওই কচুবনে। সে সেখানে ক্রীকেট খেলবে বন্ধুদের নিয়ে। তার যে খেলার জায়গা নেই, কোথায় সে মাঠ খুঁজতে যাবে? পরিস্কার হয়ে গেল কচুবন। নিজেরাই পরিস্কার করে দিল সব আগাছা। ছুটির দিনের সকাল বিকেল দু'বেলাই তারা ক্রীকেট খেলত নিজেদের বানানো এই ছোট্ট মাঠে। কিন্তু আজকের বাজারে এই চিলতে জমিটুকুরই বা দাম কম নাকি? খানিকটা করে দু'পাশের পুকুর বুজিয়ে দিলেই দিব্যি দাঁড়িয়ে যাবে একখানা চারতলা বিল্ডিং! লোক এল। লস্কর এল। এল মুটে মজুর। আর এল পুরোহিত। ঘটা করে ভূমিপুজো করে পাড়ার কেবলওয়ালা ওখানে খুঁটি পুঁতে দিয়ে গেল। ট্রাকে করে মাটি এল। বুজল আধখানা করে পুকুর। কাটা পড়ল কমলা ফুলে ঢেকে থাকা বিশাল সেই গাছ। ঘরছাড়া হল পাখিরা। ওরা বুঝতে পারছিল না কি হল। ওদের বাসার খোঁজে ওরা মাটিতে পরে থাকা গাছের আশে পাশেই ঘুরঘুর করল দিনকতক। কমলা রঙের ফুলগুলো সব ঝরে গেল গাছ থেকে। সবুজ পাতা প্রথমে হলুদ পরে বাদামী রঙের হয়ে এল। শুকিয়ে গিয়ে ঝরে পড়ল সব পাতারা গাছ থেকে। পানকৌড়িগুলো তখনও ছিল পুকুরে। ওরা মাঝে মাঝেই সেই পুকুরের গায়ে নুয়ে পড়া ছোট্ট গাছের ডালে উঠে গিয়ে বসে থাকত।
পশ্চিমের জানালাটা এখন আর খোলা যায় না। একের উপরের এক থাম দাঁড় করিয়ে চারতলা বিল্ডিং এখন আমার জানালার ওপাশে। এখন এখানে পাখির কলতান আর নেই। জানালা খুললে কোন গাছ কোন পুকুর আর দেখা যায় না। মিস্ত্রীদের ঠক ঠক ঠকাস শব্দ ছাড়া সারাদিন আর কোন শব্দ নেই। ঘরহারা পাখিরা, পুকুরের সেই পানকৌড়িগুলো কোথায় উড়ে গেছে কে জানে...এই বসন্তেও কোকিলেরা এসেছিল। দক্ষিণের জামগাছটিতে বাসাও বেঁধেছিল আর সেই একইভাবে কুউ উ উ, কুউ উ উ করে ডেকে ডেকে কানও ঝালাপালা করেছে তারা আমার। প্রতিদিন ভোররাতের সুখের ঘুম ভাঙিয়ে দিয়েছে ওরা এবারও বরাবরের মতই। পরের বছর থেকে ওরা আর এখানে আসবে না। সেদিনের কালবৈশাখী ঝড়ে উপড়ে পড়েছে কালো কালো ফলে ভরা জামগাছটি...
মন্তব্য
এভাবেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে গাছপালা, মাঠঘাট আর মুক্ত বাতাস সভ্যতার বিষাক্ত ছোবলে। ভালো লিখেছেন!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ধন্যবাদ তীরন্দাজ'দা..
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
শ্যাজা আপু, তোমার লেখা পড়তে পড়তে একদম সবকিছু চোখের সামনে দেখতে শুরু করেছিলাম। খুব সাবলীল ঢঙ্গে বর্ণনা করেছ পুরো লেখাটি। ভাল লাগছিল পড়তে। কলকাতা বলো, ঢাকা বলো সবখানেই এক দশা। কেউ এক চিলতে ফাঁকা জমি কোথাও ফেলে রাখতে চায়না। আর কাক ছাড়া অন্য পাখিদের দেখার আশা বাদ দেওয়াই যৌক্তিক। অপরিকল্পিত নগরায়ন আর আমাদের স্বার্থপরতার জন্য আজ এই দশা।
--------------------------------------------------------
ভুঁতের বাঁচ্চা মানে বাচ্চা ভুত?
ঠিকাসে
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
ইসস আমরা মানুষ সব তছনছ করে দিচ্ছি এই পৃথিবীটার
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
আপনার লেখা পড়লে আমি বক্তব্যের ভেতর কখনও প্রবেশ করতে পারি না, লেখার ভঙ্গি আর বর্ণনার সৌন্দর্য্য এতোটাই মুগ্ধ করে রাখে আমাকে! এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না।
অনেক ধন্যবাদ স্নিগ্ধা।
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
মনজুরাউল
এত বড় লেখার মন্তব্য করাই দুষ্কর । আপনি যা বললেন সেটা এক কোলকাতা । অন্য আর এক কোলকাতা কী এমন ?...................
কেওড়া তলায় কবে থেকে ইলেক্ট্রক চুল্লি হয়েছে কেউ যানে না । তবে হয়েছে এটা সত্যি । বিদ্যাসাগরের,রণদেব বসুর, চিত্তরন্জন,শরৎ চাটুজ্জেদের সমাধিগুলোর ওপর অকৃপণ পাখিরা আগেও বসেছিল - ত্যাগ করেছিল , এখনো বসছে - ত্যাগ করছে.... কিছুই বদলায়নি । শুধু বদলে গেছে দেওয়াল লিখণগুলি.......।"মন্টু দা কি লাইফ অমর রহে."...." ঘনসা দা যুগ যুগ জিও....." অথচ সত্তরের দশকে লেখা থাকত........."কমরেড মন্টুর খুনের বদলা নেব."..." ১০১৯ নম্বর মার্ডার হলো আমার ভাই গনেশ........গনেশের রক্ত বৃথা যেতে দেব না........" ক্রান্তি কালের আধুনিক মানুষেরা ছেনালি বজ্জাতি মাগিখোরিকে বলে বিন্দাস মর্ডানাইজেশন....!!!
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
মনজুরাউল,
আপনার মন্তব্যের জবাবে আমি কি লিখব বুঝতে পারছি না।
দুটো কথা বলি-
গতবছর ইউনিভার্সিটি ইনষ্টিউট হলে এক ( দিন তারিখ আমার মনে থাকে না বলে লিখতে পারলাম না) অনুষ্ঠান হয়েছিল কবীর সুমন আর মৌসুমী গান গেয়েছিলেন। প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেছিলেন মহাশ্বেতা দেবী। অনুষ্ঠানটি ছিল নন্দীগ্রামে গনহত্যার প্রতিবাদে। সুমন আজকাল তাঁর প্রায় সব অনুষ্ঠানেই বামফ্রন্ট সরকারকে যেমন খিস্তি করেন, সেদিনও করেছিলেন। সকলকে আহ্বান জানিয়েছিলেন- যে যেখানে পার যেভাবে পারো সিপিএম কে প্রত্যাঘাত করো। বলেছিলেন, একসময় যারা ছিল বিরোধী, যারা তখনকার স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিল আজ তারাই তিরিশ বছর ধরে সরকারে আছে এবং তখনকার সরকারের থেকেও বেশি স্বৈরাচার চালিয়ে যাচ্ছে! গণহত্যা করছে!
মহাশ্বেতা দেবী'র কথা বলি। তিনি কাগজে কাগজে বিজ্ঞাপণ দিয়ে ফান্ড তুলেছিলেন নন্দীগ্রামের মানুষদের জন্যে, নন্দীগ্রামে বারে বারে গেছেন সেই সাহায্য নিয়ে, নিজ হাটে পৌঁছে দিয়েছেন সেই সব সামগ্রী-টাকা-ওষুধ। সেদিনকার অনুষ্ঠানে মহাশ্বেতা দেবী নিয়ে এসেছিলেন নন্দীগ্রামের কিছু মানুষকে, কিছু শিশুকে, যারা নিজেদের মুখে বর্ণনা করেছিল তাদের দুর্দশার। সেদিন ওই ভরা সভাঘরে মহাশ্বেতা দেবী অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছিলেন সিপিএমকে।
সময় খুব বেশি গড়ায়নি। কতদিন হবে? বছরটাক? কানে এসেছে- মহাশ্বেতা দেবী সিপিএমের মুখপত্র গণশক্তিতে লিখছেন। আরও কানে এসেছে তিনি বেশ কিছুটা জমির মালিকও হয়েছেন খুব সাম্প্রতিক কালে
এসব নিয়ে এখন আর কেউ আশ্চর্য হয় না, হওয়া সাজে না। সবই বদলায়। দিন বদলায়, মানুষ বদলায়, দেওয়াল লিখনও বদলায়।।
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
আপনার দুটো কথা বুদ্ধিদীপ্ত। সম্পূর্ন এক মত। আজ সময় নেই। এ বিষয়ে পরে লেখার ইচ্ছা রইল।
.......................
মন্তব্যের জবাবের জন্য ধন্যবাদ
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
আহ্... দারুণ...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আহ্... দারুণ... তবে দুঃখজনকও...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আগে আমরা থাকতাম গাছ-মাটি-পতঙ্গ-পাখিসহ প্রতিবেশের সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে। সেগুলোকে রিপ্লেস করেছে, নানারকম গ্যাজেটস, গাড়ি, পার্টি সেন্টার, মল, আইপড, ল্যাপটপ। আগে আমরা সবকিছুর আস্বাদন নিতাম এখন সামগ্রি আমাদের চেখে খায়।
আপনার লেখার গতিছন্দ সর্বদাই টানে। মনে হয় কেউ আলতো করে কথা বলছে। আর কথার তলায় শতজল ঝর্ণার ধ্বনি।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
অনেক ধন্যবাদ ফারুক।
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
ভাল লাগল।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।
বৃক্ষ কাইটা নগর দিলা
সেই নগরে টব বসাইলা
এক হাতে কাটো রে বৃক্ষ
আরেক হাতে লাগাও না
আমি যারে ভালবাসি
তারে আবার বাসি না
তারে ভালো লাগে না, লাগে না, গো...
---
অসাধারণ! লেখায় (বিপ্লব)
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বাড়বে নগরে বাড়ি
কমবে আকাশ
জাদুঘরে ঠাঁই পাবে
ঘুড়ির বাতাস....
০১ ঘুড়ির বাতাস মানে কি ভাইয়া?
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
মনজুরাউল
....যাদুঘরে ঠাঁই পাবে ঘুড়ির বাতাস......।
..................................................................
তোফা। এমন ওজনদার শব্দ বহুদিন শুনিনি...........এধরণের শব্দ ঠেসে একটা কৌটোয় পুরতে পারলেই বোমা...............................
.......................................................................................
আমাদের মাতৃগর্ভগুলি এই নষ্ট দেশে
চারদিকের নিষেধ আর কাঁটাতারের ভিতর
তবু প্রতিদিন রক্তের সমুদ্রে সাঁতার জানা
হাজার শিশুর জন্ম দেয় যারা মানুষ......
ভালো লাগছে। এমনতর আরো আরো পড়তে চাই।
-পথিক
আজকাল লিখতেই পারছি না..লিখব বলে বসে থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা.. দু চার লাইন লিখি, মুছে ফেলি.. মনে হয়, ধুশশ.. কী হবে..
আর যেটুকু লিখি নিজের কাছেই আবজাব বলে মনে হয়..
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
Thats great.
khub shundor laglo lekhata|
নতুন মন্তব্য করুন