ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি
লিখেছেন সাক্ষী সত্যানন্দ [অতিথি] (তারিখ: সোম, ০৯/০৯/২০১৩ - ৫:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১।
ইদানীং মাথার কুলিং ফ্যানটা নষ্ট, অল্পেই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। কোয়ান্টামের রাজ্যের আগের কিস্তিতে প্রোফেসর সা’ব জিগাইছিলেন উপ শিরোনাম কেন দেই। এই নিয়া ভাবতে ভাবতে “টাইটেল রাইটার্স ব্লকে” পড়ে গেছিলাম। প্রথমে এই শিরোনামটাই পরের পর্বের জন্য ঠিক করেছিলাম- কিন্তু বিষয়ের সাথে মিলিয়ে নিজেরই কেমন যেন পছন্দ হচ্ছিল না। গত কয়েক দিন এই নিয়ে ভাবতে ভাবতে খালি গেটের হাতিমার্কা তালাটাকে লকারের চাবি দিয়ে সুড়সুড়ি দিচ্ছিলাম, আর লকারের বাচ্চা তালাটাকে গেটের চাবি দিয়ে নির্যাতন করে ফেলছিলাম। ভাগ্যিস আমার বৌ-টৌ নাই, থাকলে নির্ঘাত নিশিরাইতে রোমান্টিক মুহূর্তে সে চোখ সরু করে জিজ্ঞাসা করতঃ “পড়াশুনা জানি কই? মাদ্রাসা না মিলিটারি ইস্কুল? সারাজীবন বয়েজ ইন্সটিটিউশনে পড়ে আসলে তো এই কাজই করবা!” ধুত, আবার যথারীতি বেলাইনে চলে যাচ্ছি। যাকগে, আজকে অর্ণবের একটা গান শুনতে গিয়ে ধুম করে নাম পেয়ে গেছি, কিন্তু নামের পরে যা লিখব ভেবে গুছিয়ে রেখেছিলাম সব হাওয়া। কারন কিছুই না, খবর দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে আবার।

২।
আচ্ছা, যে লোক ব্লগ খায় না মাথায় দেয় সেইটাও জানেনা অথচ ব্লগের গুষ্টি উদ্ধার করার জিহাদে রত তারে কি করা যায়? কিংবা ফেলানীর জন্য কেদে জারজার হয়ে যাওয়া যে লোকটাকে কোনমতে স্টারপ্লাস দেখা বন্ধ করানো যায়না, তাকে? আমি পদার্থবিজ্ঞানের মানুষ, সমাজবিজ্ঞান নিয়ে বোধহয় আমার মাথা ঘামান উচিত না। কিন্তু সমাজ যখন “আমিতো প্রেমে পড়িনি, প্রেম আমার উপরে পড়েছে” টাইপের কমান্ডো স্টাইলে ঘাড়ে এসে পড়ে তখন উপায়? আশেপাশে সবাই চোখ বন্ধ করেও চাঁদে সাইদীকে দেখে ফেলে, আমার খোলা চোখেও জোছনা ছাড়া কিছুই ধরা পড়েনা। জোকারের (তাস কিংবা ব্যাটম্যানের সাথে ইহার কোনও সম্পর্ক নাই) জ্ঞানগর্ভ জোক শুনে সবাই আহ্লাদে মাথা নাড়ে, আমার কেন জানি হাসি পায় (জোক শুনে হাসব না? ভদ্রতা বলেও তো একটা কথা আছে) আর মনুর কথা মনে পড়ে। মনুকে চেনেন না বুঝি, মনু থাকত আমাদের পাশের বাসায়। তেল চকচকে দুখানা শিং আর একগাছা দাড়ি নেড়ে নেড়ে যখন এগিয়ে আসত, ভয়ই পেতাম। বাছুরের সমান রামছাগল দেখলে ভয় পাব নাইবা কেন? তখন ভয় পেলে তবু বড়দের কোলে চড়ার একটা অপশন থাকত, এখন তাও নেই। জানি হতাশা একটা বিলাসিতা মাত্র, তবু মাঝে মাঝে বড্ড হতাশ লাগে।

৩।
মেজাজ খারাপ থাকলে খাবলা খাবলা বই পড়ি। কখনও মেজাজ ভাল হয়, কখনও উল্টোটা। আজকে দ্বিতীয়টাই হল। কেন? কিছু শেয়ার করি বরং। অল্প যে কয়জন মানুষকে জাতিগত ভাবে পাকিস্তানী হওয়া সত্বেও শ্রদ্ধা করি তার মাঝে পদার্থবিজ্ঞানী আব্দুস সালাম একজন। তাঁর “আইডিয়াজ এন্ড রিয়ালিটিজ” পড়ছিলাম, একজায়গায় চোখ আটকে গেল। তিনি ইবনে খালদুনকে কোট করেছেনঃ “এটা স্পষ্ট যে আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারে পদার্থবিজ্ঞানের কোনও গুরুত্ব নেই, অতএব সেগুলোকে আমরা বাদ দিতে পারি।” এর প্রেক্ষিতে সালাম দুঃখভরে মন্তব্য করেছেনঃ “ইবনে খালদুন কোনও কৌতূহল প্রকাশ করেননি, কোনও আগ্রহ দেখাননি। শুধু ঔদাসীন্য দেখিয়েছেন যা প্রায় বৈরীতার কাছাকাছি”। ইসলামের ইতিহাসের বইগুলো ঘেটেঘুটে দেখলাম, প্রাচীন গৃসে এরিস্টটল যেমন এখানে ইবনে খালদুন প্রায় তেমন গুরুত্ববাহী। আচ্ছা, এই জাতটার হজের ব্যাবসা আর তেলের পয়সার টাকা যেদিন ফুরিয়ে যাবে তখন ফুটানি আসবে কোথা থেকে? জানতে বড় ইচ্ছে হয়।

৪।
এরপর আহমেদ ছফার “বাঙ্গালী মুসলমানের মন” পড়ে মেজাজ আরও খারাপ হয়ে গেল। ছফা লিখেছেনঃ “বাঙালি মুসলমানের মন এখনও একেবারে অপরিণত। সবচেয়ে মজার কথা যে এই কথাটা ভুলে থাকার জন্য সে প্রানান্তকর চেষ্টা করতে কসুর করেনা। যেহেতু আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং প্রসারমান যান্ত্রিক কৃৎ-কৌশল স্বাভাবিকভাবে বিকাশলাভ করছে এবং তার একাংশ তার সুবিধাগুলো ভোগও করছে, ফলে তার অবস্থা দাঁড়াচ্ছে ইঁচড়ে পাকা শিশুর মত। অনেককিছুরই সে সংবাদ জানে, কিন্তু চিন্তা দিয়ে, যুক্তি দিয়ে, মনীষা দিয়ে আপনার করতে জানেনা।” ছফার এই প্রবন্ধটি প্রকাশ পায় ১৯৭৬ এ। তারপর সাইত্রিশ বছর কেটে গেল, এরা আর বড় হলনা। কেবল বিকলাঙ্গের মত বংশবৃদ্ধিই করে গেল, আফসোস।

৫।
অধ্যাপক কাজী নুরুল ইসলামের “সমকালীন জাপানীদের ধর্মবিশ্বাস” শীর্ষক একটা প্রবন্ধ পড়ে জাপানীদের হিংসেই হল। সেখানে বলাঃ “জাপানের সংবিধানের ৮৯ ধারা মোতাবেক সরকারী কোষাগার হতে কোনও টাকা বা সম্পদ ধর্মীয় খাতে ব্যায় করা সম্পুর্ন বেআইনি। এমনকি ধর্মীয় সংস্থা দ্বারা পরিচালিত দাতব্য চিকিৎসালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও কোনও সরকারী ব্যয় করা যাবেনা।” আর আমাদের বোধহয় উল্টোটা না করলে ভাত হজম হয় না। প্রবন্ধটিতে আরও বলাঃ “জাপানের সংবিধানের ২০ ধারার তৃতীয় অধ্যায়ে বর্নিত আছে যে- কোনও মানুষকে বিশেষ কোনও ধর্মীয় কাজে বা আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধ্য করা যাবে না। এখানে একটি ঘটনা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। এক খুনী আসামীকে জেল কর্তৃপক্ষ নিয়মিত ধর্মীয় বানী শোনানোয় উক্ত আসামী অধিকার ক্ষুন্ন হবার অভিযোগে জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে। ১৯৮৮ সালে অসাকার মাননীয় জজ এই মর্মে রায় দেন যে ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে।” আমাদের দেশে যারা যুদ্ধবিদ্ধস্ত জাপানের শনৈ শনৈ উন্নতির বিপরীতে আমাদের দেশের কিচ্ছু হবেনা সিন্ড্রোমে বড্ড ব্যাথিত- তারা কি এই ক্ষেত্রেও জাপানের পথে যেতে রাজী আছেন? কারো কারো মুখের ওপর প্রশ্নটা করতে বড় সাধ জাগে।

৬।
গনমানস বড্ড ভয়ানক জিনিস। ১৯৭০ তে যেই ঐক্যবদ্ধ গণমানস বাঙ্গালীকে এগিয়ে দিয়েছিল, ২০১৩ তে সে একইরকম আছে ভাবার কোনই কারন নেই। জামায়াত-শিবিরের লাখো গোয়েবলসের মিঠেমুখের কাছে আমাদের তেতোমুখের সত্যিকথা গুলো যে নস্যি। যতদূর মনে পড়ে আলবদর নেতা মতিউর রহমান নিযামী প্রথম গ্রেপ্তার হয় তারই পেয়ারা- “ব্লাস্ফেমী আইনে”। আচ্ছা, কোরানের প্রথম কথা না ছিল ইকরা- পড়। তাহলে এদের বিরুদ্ধে ইসলাম বিরোধিতার দায়ে বিচারের দাবি- মানে, কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা যায় কি? মনে হয় যায়না। নাহলে শয়ে শয়ে কোরআন পুড়িয়েও হেফাজতীরা দিব্যি ইসলাম কে হেফাজত করে চলেছে। আর জেলে যাচ্ছে, মামলা খাচ্ছে ব্লগাররা। যেহেতু পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে লিখি, কদিন পরে তারা নিশ্চয় ইবনে খালদুনকে সাক্ষী মেনে আমার “ইসলাম বিরোধী” কাজের অভিযোগে আমার কোমরে দড়ি বাঁধতে আসবে। আর আমি বোধহয় বিড়বিড়িয়ে কবিতা পড়বঃ “Then they came for me--and there was no one left to speak for me.”

৭।
আমাদের এক বিশ্বপ্রেমিক বন্ধু ছিল। তার কাছে জীবনটা ছিল ছেলেখেলা মাত্র, অর্থাৎ কিনা- লাইফ ওয়াজ জাস্ট এ প্লেবয়! নতুন বান্ধবীদের জন্য তার সবচেয়ে প্রিয় কোটেশন ছিল নির্মলেন্দু গুণের একটা কবিতা- “চাবি দিয়ে তালা খোলা শিখিয়েছি, তালা দিয়ে খোলো দেখি চাবি।”

চাবি দিয়ে তালা খুলেছিলাম সেই ফেব্রুয়ারি মাসেই, এখন কি তালা দিয়ে চাবি খুলতে হবে?


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল বলেছেন, আশেপাশের শিক্ষিত মূর্খদের যখন ধর্ম নিয়ে বানী দিতে দেখি তখন গালে জোরসে একটা থাপ্পড় মারতে মন চায় কিন্তু দুঃখের বিষয় যে কিছু করা ত দূর বলতেও পারিনা। আসলে আমাদের লেখাপড়া এখন শুধু ডিগ্রি অর্জনের জন্য, মানুষ হওয়ার জন্য না। এই জন্যই ডাক্তারি পাশ করে কেউ জোকার হয় আর তথাকথিত পড়ালেখা না জানা একজন হয় আরুজ আলি মাতবর।
ইসরাত

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

বানানটা "আরজ আলী মাতুব্বর" হবে হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

বানান ভুলের জন্য দুঃখিত লইজ্জা লাগে
ইসরাত

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ব্যাপার না হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আলতাইর এর ছবি

হেহেহ!! অনেক ধর্মপ্রান ভাই আমারে কুরআন শরীফের অনেক রেফারেন্স দিয়া যায়। কিন্তু একটু নাড়া দিলে বুঝা যায়, ওই রেফারেন্স পর্যন্তই তার দৌড়, এর বাইরে কিছু জিগাইলে হয় উলটা দৌড় দিবো নয় প্রশ্ন কমন পড়ে নাই কইয়া হাউকাউ কইরা পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা কইরা দিবো। (ইয়ে...আমি নিজেও এককালে এই গোত্রভুক্ত ছিলাম মন খারাপ ) তবে মাদ্রাসা পাস মফস্বলের এক মুয়াজ্জিন আমারে বিশাল এক চমক দিলো একবার। তাঁর ভাষায়, "আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারের সাথে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের অনেক মতপার্থক্য আছে। তাই বইলা কেউ যদি বিরোধীমতরে ফালতু কয়া উড়ায়া দ্যায় সেইটা বেকুবি। কোন একদিন এই বিভ্রান্তি দূর হবে। সত্য যেটা সেইটা সামনে আসবে। আর এই যে সত্যের সন্ধান, এইটারেই এলেম বলা হয়। এই জন্যই বিদ্যা শিক্ষা করা এত দরকারী"। আমার মতন ঘাড়ত্যাড়া অতি পন্ডিতও কনফুশন খায়া গেসিলাম তার কথা শুইনা।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এই রকম মুয়াজ্জিন পাড়ায় পাড়ায় থাকলে তো সমস্যা ছিল না... কিন্তু কই?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

১৯৭০ তে যেই ঐক্যবদ্ধ গণমানস বাঙ্গালীকে এগিয়ে দিয়েছিল, ২০১৩ তে সে একইরকম আছে ভাবার কোনই কারন নেই।

১৯৭০ এ বাঙ্গালী গণমানস ঠিক কি ভাবতো, সে নিয়ে অনেক চিন্তা করেছি, এখনও করি, সারা জীবনেই বোধ এই ভাবনা থেকে মুক্তি পাব না। আমার উপলব্ধি হলো সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙ্গালী মূলতঃ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বাধীকারের বোধে আচ্ছন্ন হয়েছিল, মুক্তবুদ্ধির চেতনা ছিল কেবলমাত্র অল্পসংখ্যক ছাত্র ও যুব নেতার মধ্যে। সেই অল্পসংখ্যক ছাত্র ও যুব নেতাও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে রাজনীতির বাঁকা পথে হেঁটে প্রকারান্তরে কূপমন্ডুকতাকেই পরিপুষ্ট হতে সহায়তা করেছেন। পরিনামে তারা নিজেরাও ডুবেছেন, জাতিকেও ভাসিয়ে দিয়েছেন অনিদ্রিষ্ট অথৈ সাগরে।
কিন্তু হতাশ হওয়ার কারন নেই, মানুষ এত সহজে ডুবে মরে না, নিরন্তর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একদিন ঠিকই পৌঁছে যায় কোন তটরেখায়।

আব্দুল্লাহ এ এম

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ছায়াবৃত্ত এর ছবি

একটি নামকরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিএসই তে পাশ করা আমার এক বন্ধুর সাথে অনেকদিন পর দেখা।
ধর্ম অন্তপ্রান মুসলমান হিসেবে তাদের পরিবারের ভালো সুখ্যাতি। তার সাথে নানা প্রসঙ্গে কথা বলে একসময় ধর্ম নিয়ে কথা হল। এক পর্যায়ে সে বলল যে, "পৃথিবীতে ইমাম মেহেদীর আবির্ভাব হয়ে গেছে ২০০০ সালের পরপরই এবং ২০৫০ সালের মধ্যে সে সৌদিআরবের ক্ষমতায় আরোহণ করবে, শুধু তাই নয়, ২০ বছরের মধ্যে সমগ্র পৃথিবী তার পদানত হবে।"
শুনে আমার আক্কেল গুড়ুম !!

সে যেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে একথা বলছিল, তার সাথে বিতর্কে যাওয়াটা অর্থহীন মনে হল।
তার দৃষ্টি দেখে বুঝেছিলাম, মানুষ অন্ধ হলে শোকগ্রস্ত হয়, আর ধর্মান্ধ হলে সে মানুষই থাকেনা।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আরও ৫৭ বছর কি বাচুম? পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

"ধর্ম অন্তপ্রাণ" জিনিষটা কেমন শুনি? "ইক্বরা সহ?" নাকি "ইক্বরা ছাড়া?"

আমার প্রতিবেশী একজন "ধর্ম অন্তপ্রান" পাতি প্রোফেসর আছেন... থালা কয়বার চাইটা খাইতে হবে... লুঙ্গি হাঁটুর নিচে পিন্ধতে হবে নাকি মাথায়... বৌরে ডান কাইতে চুম্মা দিতে হবে নাকি বাম কাইতে... এইসব মাসআলা (নাকি মাসালা) তার আত্মস্থ... ... কিন্তুক ২ দিন কলেজে আইসা ছ্যাঁচড়ার মত ৩১ দিনের বেতন বিল করতে তার একটুও হাত কাপেনা...... এই রকম না তো? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ছায়াবৃত্ত এর ছবি

ইক্বরা সহ। এজন্যইত চিন্তিত

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ছায়াবৃত্ত এর ছবি

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধর্ম এইখানে এখন ব্যাধির মতো ছড়াচ্ছে দিন দিন।আপনি ধার্মিক শুনলে আপনার সব দোষ মাফ,তখন ঘুষ খাওয়া,দুর্নিতি করা,আরো আরো ১০০১টা খারাপ কাজ করলেও সমাজ,রাষ্ট্রের কোন ক্ষতি নেই।শুধু আপনি যদি ধর্ম বিশ্বাসী না হন তাহলে খাইছে গুল্লি
শিক্ষিত বলে কিছু পরীক্ষায় পাশ করা মহা জ্ঞানীরা দেখি ফেসবুকে আয়াতের রেফান্স দেয়,আকাশের মেঘের মাঝে,গরুর পেটের মাঝে,আলুর ভিতরে,মাছের পেটের ভিতর,গাছের শিকড়ে তারা তাদের সৃষ্টিকর্তাকে খুজে পায়।দু:খজনক ঘটনা হলো হিন্দু-মুসলিম সবাই এটা দেখতে পায়,কিছুটা সাঈদীকে চাদে দেখার আষাড়ের গল্পের মতো।
বাঙালি আর বাঙলাদেশ দিন দিন খাটি মুসলমানদের দেশ হওয়ার পথে হাটছে,খাটি মুসলমানদের দেশগুলোর আজ কি অবস্থা আমরা দেখছি চোখের সামনে,সাদ্দাম-গাদ্দাফি-মুরসি এমন একটার পর একটা নাম,যুদ্ধ,রক্তপাত এইতো।আমি সব সময় বিশ্বাস করি আরব বিশ্ব নামক যে অন্ধকার একটা বিশ্ব আছে পৃথিবীতে তার চেয়ে আমাদের দেশ আর আমরা বাঙালিরা অনেক বেশি আলোকিত,এখানে এখনো আলোর পথের মানুষ আছে অনেক অনেক।যারা চেতনায় অসম্প্রদায়িক,বোধে মননশীল।যারা মানবতাকে মানুষের প্রধান ধর্ম মনে করে,সেই বিশ্বাস প্রচার করে।তাদের কারনেই বাঙলাদেশ এখনো বাঙলাস্থান হয়নি,মিশর-ইরাক-ইরান হয়নি।কিন্তু চারদিকে ভাড়ছে ধর্মের আনাগোনা,বাড়ছে খাটি মুসলমানের সংখ্যা।খাটি মুসলমান মানেই ধর্মের জন্য শহীদ হও।শহীদ হতে হয় অন্যের রক্ত নিয়ে এটা একটা শিশুও জানে,তবু যারা বলে ধর্ম মানে শান্তি তাদের ভন্ডামি আর অজ্ঞতায় বিস্মিত আর ক্ষুদ্ধ হই।কিন্তু চুপ থাকি,চুপ থাকতে হয়,ধর্ম বিশ্বাসীদের চুরির আঘাতে এই সুন্দরেএকমাত্র জীবনটাকে হারাতে চাইনা বলে।জেগে উঠুক মনুষ্যত্ব,বাঙালি আবার বাঙালি হয়ে উঠুক,বাঙালি মুসলমান নয়।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

০১

ভাগ্যিস আমার বৌ-টৌ নাই, থাকলে নির্ঘাত নিশিরাইতে রোমান্টিক মুহূর্তে সে চোখ সরু করে জিজ্ঞাসা করতঃ “পড়াশুনা জানি কই? মাদ্রাসা না মিলিটারি ইস্কুল? সারাজীবন বয়েজ ইন্সটিটিউশনে পড়ে আসলে তো এই কাজই করবা!”

হায় হায় আমিও বিয়া করি নাই আর অল বয়েজ ইন্সটিটিউটস !!!!!
এরাম কথা কি শুনার চান্স আছে??
০২

ধর্ম একটা সংস্কারের কম্বিনেশানের মতো, অনেকটা মালটিপল ইউজ সফটওয়ারের মতো- প্যাকেজ।
একবারে ধর্মে বিশ্বাসী হলে, আলাদা আলাদা করে একট একটা করে সংস্কার ইনস্টল দিতে হয় না।
ধর্মহীনতা মানুষকে এতটাই ফেরোশাস আর লোভী করে তুলতে পারে যা সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর।
আবার, ধর্মোন্মাদনার জন্যও একই কথা প্রযোজ্য।
আমাকে আমার মুফতি হুজুর একদিন বলছিল, যারা ধর্ম সম্বন্ধে প্রকৃত জ্ঞানের সন্ধান পায় নি- তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বাদ বঞ্চিত।
ধর্মের স্তর আছে- যারা প্রথম স্তরের; তারা কেবল আচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।
জগতের অপার রহস্যের সমাধানের সন্ধান বিজ্ঞানের রথে চেঁপে খুঁজতে চাইলে- ধর্মীয় সংস্কার শক্তিসালী ইঞ্জিনের ভূমিকা নেয়।
তুলনামূলক ধর্মততত্ব আমার প্রিয় বিষয় এবং আমি একজন রসায়নের শিক্ষক।
জেনেই বলেছি উপরের কথাগুলো- ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষনের আলোকে।

-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।

হিমু এর ছবি

নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।

আপনার এই মন্তব্য পড়ে বুঝলাম আপনি ভুল জায়গায় চলে এসেছেন।

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

হিমু ভাই, নো অফেন্স। এইটা আমার ব্যক্তিগত মতামত; আপনার আরেকরকম মত থাকতেই পারে!!
নানান মতের মানুষ আছে বলেই পৃথিবী এত রঙিলা।
তো, ফান্ডা হলো- নিজের মত প্রকাশ করো- কিন্তু অন্যের উপর চাঁপিয়ে দিও না।
আমি আমার জীবনে এই বিষয়টা সব সময় মেনে চলি- গণতন্ত্রের সংজ্ঞাও তাই।

ঐ যে বললাম, জগত রহস্যময়। কার কাছে কিরূপে ধরা দেবে তা বোঝা মুশকিল-
আপনার আগ্রাসী মতামতের সাথে আমি পূর্বপরিচিত (সচলের বিভিন্ন লেখায় প্রকাশিত মন্তব্য পড়ে)।
তবে, আপনার হিউমারের আবার আমি এক নাম্বার ভক্ত।

কি আর করা যাবে বলেন।
নানা মুনির নানা মত।

আপনার এই মন্তব্য পড়ে বুঝলাম আপনি ভুল জায়গায় চলে এসেছেন।

বুঝলাম না? আমি সচলের নিয়ম-কানুন মন দিয়ে পড়েছি।
কোন রুল ভায়োলেট হলো কী?

আর আপনার কোট করা অংশটা নিয়ে মুখোমুখি আলোচনা হলে- উদাহরন দিয়ে বলতে পারতাম।
লিখে কুলানো যাবে না।
পছন্দ না হলে- ভুলে যান।
তর্ক-বিতর্ক আমার প্রিয় বিষয় না। সারাদিন- যুবা বয়সের ছাত্রদের সাথে আর কলিগদের সাথে এই করেই কাটাতে হয়, সচলে আসি, ভয় শূন্য চিত্তে উচ্চ শিড়ে নিজেকে শেয়ার করতে।
এভাবে বাঁধা পেলে তো মুশকিল।

-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।

হিমু এর ছবি

আসলেই মুশকিল।

দিগন্ত এর ছবি

"এইটা আমার ব্যক্তিগত মতামত; আপনার আরেকরকম মত থাকতেই পারে!!"

আপনি কিন্তু মতামতের বাউন্ডারি থেকে বেরিয়ে ফ্যাক্টের আওতায় মতামত দিচ্ছেন। ওপরের বক্তব্যটা কিন্তু উঁচু, মধ্যম ও নিচু শ্রেণীরে বিজ্ঞানীদের ধর্ম সম্পর্কে মতামতের ওপর ভিত্তি করে লেখা।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

"নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।"

একই বস্তু আমারও চোখে লাগল। আপনার কাছে কোনো পরিসংখ্যান আছে? কত শতাংশ বিজ্ঞানীর কি মত? আপনি গত ২০-২৫ বছরের নোবেল-জয়ী বিজ্ঞানীদের মতামত নিয়ে কোনো সার্ভে বা পাবলিকেশন পড়েছেন?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ধর্মহীনতা মানুষকে এতটাই ফেরোশাস আর লোভী করে তুলতে পারে যা সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর।

কিভাবে? ব্যাখা করবেন? উদাহরন সহ, ত্যানা ছাড়া পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।
জগতের অপার রহস্যের সমাধানের সন্ধান বিজ্ঞানের রথে চেঁপে খুঁজতে চাইলে- ধর্মীয় সংস্কার শক্তিসালী ইঞ্জিনের ভূমিকা নেয়।

শমসের আলী'র ছায়া পড়ল মনে হয় চিন্তিত

জেনেই বলেছি উপরের কথাগুলো- ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষনের আলোকে।

অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষন নিয়ে পোস্ট দেন পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব আমার কাছে প্রিয় বিষয় না হলেও ইন্টারেস্টিং বিষয়, তবে নৃতাত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে।

কেন জানি মনে হচ্ছে "অবিশ্বাস" জিনিষটাকে আপনি "অপরাধের পর্যায়ে" দেখেন... অবস্থান পরিস্কার করলে ভাল হত...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

"শমশের আলীর ছায়া" হো হো হো হাততালি

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

তালি বাজায়া হাসেন ক্যান? ভুল কইচ্চি? আমার কাছে তো ছায়াডারে সিরামই লাগল ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সত্যপীর এর ছবি

হেল্লিগাই তালি দিলাম। ঠিকাছে।

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

কথা সত্য মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

সাক্ষী বউদি(উদাস দা'র),আপনের কমেন্ট পড়ার আগেই ঠিক কাকতালীয় ভাবে এই কথা গুলোই আমার মাথায় আসছিল!!!
কি 'কুইঞ্ছিডেন্স'(মতি)!!!!
চলুক

স্বপ্নহীন এর ছবি

আমি একজন রসায়নের শিক্ষক।
জেনেই বলেছি উপরের কথাগুলো- ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষনের আলোকে।

আপনার অভিজ্ঞতাটা জানতে মুঞ্চায়। কতজন 'সেইরাম' লেভেলের বিজ্ঞানীর সাথে বেক-তি-গত অভিজ্ঞতা আছে জানলে লাইনে আসার চেষ্টা তদবির করতাম !

আর হিমু ভাইয়ের প্রথম মন্তব্যে একমত।

এক লহমা এর ছবি

কি কান্ড! বিজ্ঞানীদের এই রকম শ্রেণীবিভাগ হয় বুঝি! তা কিসের কিসের ভিত্তিতে এই শ্রেণীবিভাগ-টা হল? অত‌্যন্ত লড়াই করে বিজ্ঞান সম্বল করে বেঁচে আছি। তাও মেনে নিতে প্রস্তুত আছি যে অতি নিম্ন স্তরের-ই বিজ্ঞানী আমি। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে ঈশ্বরে বিশ্বাস থাকা না থাকার মত বিজ্ঞান-অসম্পর্কিত কারণে ব্যক্তিগত স্তরের এই কুৎসিত গালি খাইলাম, সেইটা জানাইবেন কি?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

অত‌্যন্ত লড়াই করে বিজ্ঞান সম্বল করে বেঁচে আছি। তাও মেনে নিতে প্রস্তুত আছি যে অতি নিম্ন স্তরের-ই বিজ্ঞানী আমি। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে ঈশ্বরে বিশ্বাস থাকা না থাকার মত বিজ্ঞান-অসম্পর্কিত কারণে ব্যক্তিগত স্তরের এই কুৎসিত গালি খাইলাম, সেইটা জানাইবেন কি?

চলুক
আমিও জানতে চাই পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।

আপনি একজন শিক্ষক বলে অনুরোধ করছি। আপনি নিজে এই অদ্ভুত ধারণা থেকে বের হতে চেষ্টা করুন; না পারলে দয়া করে এটা নিজের ভেতরেই রাখুন। আপনার ক্লাসের ছাত্র-ছাত্রিদের মগজে ঢোকাবার চেষ্টা করবেন না।

কী কমু এর ছবি

ধর্মে বিশ্বাস আনতে গেলে কিছু উপজ্ঞাবিরোধী (counter-intuitive) বিষয় প্রশ্নাতীতভাবে বিশ্বাস করতে হয়, যেমন ধরুন ছ’শ ডানাওয়ালা আগুনের তৈরি জীবের মাধ্যমে ঈশ্বর মানুষের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন, কিংবা একজন রক্তমাংশের মর্ত্যের মানুষ ডানাওয়ালা গাধায় চড়ে মহাশূন্যে ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। এ জাতীয় বর্ণনানির্ভর তথ্যের (anecdotal evidence) ওপর নির্ভর করতে যতখানি চিন্তার শৈশবত্ব (intellectual moronity) প্রয়োজন হয়, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিজ্ঞানীদের (আপনার বর্ণিত যে-স্তরেরই হোন না কেন) সেটা অনেকেরই থাকে না। সে-কারণেই তাঁরা নাস্তিক। আমেরিকার জনগণের অধিকাংশই ঘোরতর আস্তিক, নাস্তিকদের তারা বিশ্বাস করে না, এমনকী রাষ্ট্রীয় পদে দেখতেও নারাজ, কিন্তু বিজ্ঞানীদের ৯৩% ভাগই ঘোষিত নাস্তিক। বাকী সাত ভাগ প্রকাশ্যে বলেন না তাঁরা আস্তিক, চাপে পড়ে স্বীকার করেন কেবল। কেননা বিজ্ঞানীদের মূলস্রোতে তাঁদের করুণার চোখে দেখা হয় প্রমাণব্যতিরেক তথা বিজ্ঞানবিরোধী উদ্ভট বিশ্বাস লালন করেন বলে। এঁদের অনেকেই আবার বিজ্ঞান ও ধর্ম দুটি আলাদা ভুবন (স্টিফেন জে গুল্ডের separate magisterium তত্ত্ব স্মরণীয়), এ যুক্তিতে বিজ্ঞান চর্চায় একেবারেই ধর্ম বা ঈশ্বরকে টেনে আনা সমর্থন করেন না। মহাকাশবিজ্ঞানী পল ডেভিস, জীনবিজ্ঞানী ফ্রান্সিস কলিন্স, পদার্থবিজ্ঞানী ইয়েন হাচিনসন, জীববিজ্ঞানী কেনেথ মিলার প্রমুখ এ ঘরানার (আপনার ভাষায় উঁচু স্তরের) বিজ্ঞানী। এঁদের মধ্যে শেষের জনকে ঘোরতর খ্রিস্টবিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও ডোভার স্কুলের মামলায় intelligent design তত্ত্বের বিরুদ্ধে বিবর্তনের পক্ষে সাক্ষ্য দিতে আনা হয়েছিল (ঐ মামলায় intelligent design তত্ত্বওয়ালারা হেরে যান)।

মানুষ বুড়ো হলে শিশুদের মত মৃত্যুভয়ে আক্রান্ত হন (পৃথিবীর সবচেয়ে সাহসী মানুষটিও ব্যতিক্রম নন, সাধারণতঃ, তবে ক্ষেত্রবিশেষে অনেকেই অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুকে মেনে নেন)। তখন কেউ কেউ ধর্মে বা ঈশ্বরবিশ্বাসে ফিরে আসার চেষ্টা করেন। তবে সেটা ঘটে তাঁদের চিন্তার শৈশবত্বের কারণেই। এ জন্য বিজ্ঞানী হিশেবে তাঁদের কদর বেড়েছে বলে শুনিনি কখনও। মূলধারার ঔষধ প্রসঙ্গে একটা কথা বলা হয়, হয় এটা কাজ করে, নয় করে না। কাজ করলে তা মূলধারার ঔষধ, না করলে তা ঔষধ নয়। বিকল্প ঔষধ (alternative medicine) বলে কিছু নেই। এ হিশেবে homeopath, naturopath ইত্যাদি সবই ভুয়া। তেমনই মূলধারার বিজ্ঞান মানে যা বিজ্ঞানে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতিতে উত্তীর্ণ। প্রচলিত পরীক্ষাপ্রমাণের বাইরে যা কিছু, তা বিজ্ঞান নয়। বিজ্ঞানীরা যখন প্রমাণব্যতিরেক ধর্ম বা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন, তখন তাঁরা আর বিজ্ঞানী থাকেন না, তা তিনি যে-স্তরেরই হোন না কেন।

মগজসম্পন্ন মানুষ যখন প্রার্থনালয়ে প্রবেশ করেন, তখন ভক্তিতে জুতো খুলে বাইরে রেখে যান। তিনি টের পান না বা জানেন না, তিনি আসলে মগজটিও বাইরে জমা রেখে যান। ধর্মে বিশ্বাসের জন্য মগজ লাগে না।

কেননা মগজ মানেই প্রশ্ন, যা ধর্ম সহ্য করে না। ধার্মিকেরাও করেন না।

নিতান্তই গেরস্ত মানুষ, চারপাশে কেবল
শস্যের ঘ্রাণ পাই।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।

চরম বললেন গড়াগড়ি দিয়া হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

চরম উদাস এর ছবি

নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।

নীচু স্তরের নাস্তিক বিজ্ঞানিদের অফিসিয়াল লিস্ট এখানে দেখতে পারেন ( লিস্ট আরও অনেক বড় তবে এরা মনে হয় বলে কয়ে নাস্তিক বলে অফিসিয়ালি এদের নাম দেয়া হয়েছে - publicly identified themselves as atheists) -

List of atheists in science and technology

আপাতত কয়েকটা নীচু মানের বিজ্ঞানীর নাম উল্লেখ করি, হয়ত কাউকে কাউকে চিনতেও পারেন - Thomas Edison, Niels Bohr, Richard Feynman, Stephen Hawking, Peter Higgs, Pierre-Simon Laplace, John Forbes Nash, Alfred Nobel, Erwin Schrödinger, Alan Mathison Turing ...............

এরা থাকায় কার কি লাভ হয়েছে জানিনা, তবে এদের অনেকে না থাকলে আমাদের ম্যাট্রিক ইন্টারের কষ্ট অনেক কমে যেত। গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ইত্যাদি সাবজেক্টও থাকতোনা, এর পরীক্ষাও দিয়ে হতো না। বাংলা, ইংরেজি, আরবি প্রথমপত্র -দ্বিতীয় পত্র, ইসলামিয়াত প্রথমপত্র দ্বিতীয় পত্র ... ব্যাস ঝামেলা শেষ।

এবারে ধর্ম আর বিজ্ঞানের মেলবন্ধন ঘটানোর চেষ্টা করা কয়েকজন উঁচু শ্রেণীর বিজ্ঞানী -
ডক্টর মরিস বুকাইলি (বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞানের লেখক), ডক্টর জাকির নায়েক, ডক্টর বাঁশেরকেল্লা ... ... ...

সবশেষে বলি,
অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী হয়, অতি অল্পবিদ্যা প্রলয়ঙ্করী হয় আর শূন্য বিদ্যা মায়া-বড়ি হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১।
চলুক উত্তম জাঝা! হো হো হো আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- কোলাকুলি

২।
আপ্নে মিয়া বদলুক... আমার সাধের সিরিজটারে নাস্তিক বানায়া দিলেন খাইছে বোর, শর্ডিঙ্গার, ফাইনম্যান, হিগস এইসব নিম্নমানের বিজ্ঞানী ছাড়া আমার কোয়ান্টামের রাজ্য অসম্পুর্ণ থাকে যে মন খারাপ

৩।
উন্নতমানের বিজ্ঞানী দের লিস্টে এম শমশের আলী, হারুন ইয়াহিয়া, কাজী জাহান আলী বাদ পড়ল কেনু? চিন্তিত জাফর ইকবাল জবাব চাই... হিংসামী করেন না? নিম্ন মানে র বিজ্ঞানী দেখান অন্তত ৯ জন, আর উন্নত মানের বিজ্ঞানী দেখান মাত্র ৩ জন... খেলুম না

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

চরম উদাস এর ছবি

বিজ্ঞান বিষয়ে ভালো পড়াশুনা নাই বলে উন্নতমানের বিজ্ঞানীদের নাম বলতে পারিনা ... লইজ্জা লাগে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হো হো হো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

স্পর্শ এর ছবি

গুল্লি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

স্পর্শ এর ছবি

উত্তম জাঝা!
লেখাটা ভাল্লাগলো।
গুণ দেখি সেই মাপের কবি!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী হয়, অতি অল্পবিদ্যা প্রলয়ঙ্করী হয় আর শূন্য বিদ্যা মায়া-বড়ি হয়

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

সাইদ এর ছবি

অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী হয়, অতি অল্পবিদ্যা প্রলয়ঙ্করী হয় আর শূন্য বিদ্যা মায়া-বড়ি হয়।

চলুক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ইদানীং মাথার কুলিং ফ্যানটা নষ্ট, অল্পেই মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে।

আস্তিক-নাস্তিক বিতর্কে হয়রান। জানেননা সব ব্লগারই নাস্তিক !

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বিতর্ক আর কই... আজকাল চুপচাপ খালি শুনে যাই... কিন্তু কতদিন? ব্ল্যাক-বডিরও তো রেডিয়েশন হজম করার একটা লিমিট আছে মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

চলুক
পাঁচ তারা।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

“এটা স্পষ্ট যে আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারে পদার্থবিজ্ঞানের কোনও গুরুত্ব নেই, অতএব সেগুলোকে আমরা বাদ দিতে পারি।”

- এই বাক্যটা তো ঠিকই আছে। ধর্ম আর পদার্থবিজ্ঞান তো পারস্পারিক সম্পর্কযুক্ত নয়। তারা একে অন্যের পরিপূরকও নয়। সুতরাং ধার্মিক ব্যক্তি পদার্থবিজ্ঞানকে গুরুত্ব দেবেন কেন? আর ধর্ম যদি নিজেকে 'কমপ্লিট কোড অভ লাইফ' বলে দাবী করে তাহলে ধার্মিক ব্যক্তির উচিত জীবনসংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য পদার্থবিজ্ঞান বা অন্যত্র খোঁজ না করা।

“ইবনে খালদুন কোনও কৌতূহল প্রকাশ করেননি, কোনও আগ্রহ দেখাননি। শুধু ঔদাসীন্য দেখিয়েছেন যা প্রায় বৈরীতার কাছাকাছি”

- প্রফেসর সালামের মনোকষ্টের কারণটি বুঝতে পারলাম না। ইবনে খালদুন পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন কিনা সেটা আজ আর প্রমাণ করার উপায় নেই। কিন্তু তিনি ইতিহাস আর সমাজবিজ্ঞানের মৌলিক ব্যাপারগুলোতে যে প্রশ্নগুলো তুলেছেন ও তার উত্তর খুঁজে বের করেছেন সেটা চরম বস্তুবাদী কনটেক্সট থেকে - যেটা পড়াশোনা ছাড়া সম্ভব নয়। তাছাড়া তিনি বিজ্ঞানমনস্ক না হলে এই প্রশ্নগুলোতে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতেন না। ইবনে খালদুন পদার্থবিজ্ঞানের বৈরী হবার কাছাকাছি ছিলেন এটা কষ্টকল্পনা মাত্র। ইবনে খালদুনের পদার্থবিজ্ঞানী হবার দরকার ছিল না।

ইবনে খালদুন যদি বলতেন -

এটা স্পষ্ট যে আমাদের ধর্মীয় ব্যাপারে পদার্থবিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। সুতরাং ধর্মীয় ব্যাপার-স্যাপার ভালো করে বোঝার জন্য পদার্থবিজ্ঞান অধ্যয়ন ও চর্চা আবশ্যক।

তাহলে কি প্রফেসর সালাম খুশি হতেন?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পান্ডব'দা এই কমেন্টটা জোকার-শমশের গংকে পড়াতে পারলে ভাল লাগত

ওই প্যারাটা বোধহয় ভালভাবে লিখতে পারিনি... কয়েকদিন আগে আমাদের উচ্চ মাধ্যমিক সিলেবাসের "ইতিহাসঃ দ্বিতীয় পত্র (ইসলামের ইতিহাস)" শীর্ষক একটা বই পড়ে দেখলাম... পুরা সিলেবাস জুড়েই কোন খলিফাকে হটিয়ে/খুন করে/ষড়যন্ত্র করে পরের খলিফা গদিতে বসল এই আলাপ... আমারও চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করেঃ "এটা স্পষ্ট যে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে আরব্য সম্রাটদের কোনও গুরুত্ব নেই, অতএব সেগুলোকে আমরা বাদ দিতে পারি।"

ইবনে খালদুনকে নিয়ে আমার পড়াশুনা নাই... যদি ভুলভাবে উদ্ধৃত করে থাকি তবে দুঃখিত... পড়েশুনে আসি... (ইতিহাসের দুই শিক্ষকের কাছে বই চেয়েছিলুম, এখন দেখা হলে পাওনাদারের মত করেন... নিজেই খুজে দেখব এবার)

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি কোন ভুল করেছেন বলে তো মনে হচ্ছে না। আপনি প্রফেসর সালামের বই থেকে কোট করেছেন। প্রফেসর সালাম বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করেছেন তার দায় প্রফেসর সালামেরই, আপনার নয়।

আমাদের সিলেবাস ও টেক্সটবুক প্রণেতারা 'ইসলামের ইতিহাস' আর 'মুসলিমদের ইতিহাস' এই দুই বিষয়কে এক করে ফেলেন। বস্তুত এই দুইটার কোনটাই আমাদের বিশেষভাবে পাঠ্য করার দরকার নেই। পৃথিবীর ইতিহাস পাঠ্য হলে সেখানে আরব-পারস্য-ইউরোপ-আফ্রিকা-আমেরিকা-চীন-এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া সব ইতিহাসই আসতে পারে। উচ্চতর পর্যায়ে 'মুসলিমদের ইতিহাস' নামে আলাদা বিষয় থাকতে পারে। আমাদের পাঠ্য হওয়া উচিত বাংলার ইতিহাস। আরো কতো বছর গেলে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়কালের (এই সময় পর্যন্ত) ইতিহাস পাঠ্য হবে তা জানি না। আকবর বাদশাহ্‌ কী করেছিল সেটা জানার চেয়ে বঙ্গবন্ধু কী করেছিলেন, জেনারেল জিয়া-জেনারেল এরশাদ কী করেছিল সেটা জানা জরুরী। সলঙ্গা হত্যাকান্ডের কথা আমরা অবশ্যই পড়বো, তবে তার সাথে সাথে ১৪ই ফেব্রুয়ারীর হত্যাকান্ডের কথাও পড়বো। বক্সারের যুদ্ধের বিবরণের চাইতে কামালপুরের যুদ্ধ বা লেছড়াগঞ্জের যুদ্ধের ইতিহাস জানা বেশি দরকার।

কখনও সময় পেলে ইবনে খালদুনের 'মুকাদ্দিমা' পড়ার চেষ্টা করতে পারেন। মুকাদ্দিমা পড়ার আগে সেটার ওপর অন্যদের লেখা ছোটখাটো প্রবন্ধ পড়ে দেখতে পারেন। ইন্টারেস্টিং জিনিস।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আমাদের সিলেবাস ও টেক্সটবুক প্রণেতারা 'ইসলামের ইতিহাস' আর 'মুসলিমদের ইতিহাস' এই দুই বিষয়কে এক করে ফেলেন। বস্তুত এই দুইটার কোনটাই আমাদের বিশেষভাবে পাঠ্য করার দরকার নেই। পৃথিবীর ইতিহাস পাঠ্য হলে সেখানে আরব-পারস্য-ইউরোপ-আফ্রিকা-আমেরিকা-চীন-এশিয়া-অস্ট্রেলিয়া সব ইতিহাসই আসতে পারে। উচ্চতর পর্যায়ে 'মুসলিমদের ইতিহাস' নামে আলাদা বিষয় থাকতে পারে। আমাদের পাঠ্য হওয়া উচিত বাংলার ইতিহাস। আরো কতো বছর গেলে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়কালের (এই সময় পর্যন্ত) ইতিহাস পাঠ্য হবে তা জানি না। আকবর বাদশাহ্‌ কী করেছিল সেটা জানার চেয়ে বঙ্গবন্ধু কী করেছিলেন, জেনারেল জিয়া-জেনারেল এরশাদ কী করেছিল সেটা জানা জরুরী। সলঙ্গা হত্যাকান্ডের কথা আমরা অবশ্যই পড়বো, তবে তার সাথে সাথে ১৪ই ফেব্রুয়ারীর হত্যাকান্ডের কথাও পড়বো। বক্সারের যুদ্ধের বিবরণের চাইতে কামালপুরের যুদ্ধ বা লেছড়াগঞ্জের যুদ্ধের ইতিহাস জানা বেশি দরকার।

সম্পুর্ণ একমত... মুনতাসীর মামুন স্যার চেষ্টা করেছিলেন... কাজ হয়নি পুরোপুরি মন খারাপ

রেফারেন্সের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- অবশ্যই খুজে দেখব হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Emran  এর ছবি

আপনি এই বইগুলি দেখ্তে পারেন।

Albert Hourani: A History of the Arab Peoples

Ernest Gellner: Muslim Societies

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Emran  এর ছবি

বেচারা প্রফেসর সালাম! নিজেকে সাচ্চা মুস্লিম হিসেবে প্রমান করতে প্রায়ই কোরান থেকে কোট করতেন; কিন্তু মারা গেলেন কাদিয়ানি হিসেবেই।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সালাম কে পুরো পড়ে উঠতে পারিনি, তবে একজায়গায় পেয়েছিঃ

আপনাদের প্রায় ষাট বিলিয়ন ডলারের মত আয়। আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে এসব দেশগুলোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জন্য বছরে অন্তত এক বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা উচিৎ।... ... ... অন্যান্যেরা না করলেও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানের জন্য আপনারা বিলিয়ন ডলার খরচ করুন। একটি প্রতিভা তহবিল সৃষ্টি করুন। প্রতিভাই একমাত্র জিনিস যা প্রগতি নিয়ে আসে। এই প্রতিভা তহবিল শুধু ইসলামী দেশের কিংবা আরব দেশের জন্যই হবে না, বরং সকল উন্নয়নশীল দেশের জন্যই সেটা সৃষ্টি করা উচিৎ

আরব দেশগুলোর উদ্দেশ্যে এমন ভয়ানক কথা বললে মুসলিমদের পোপ তথা আরব বাদশারা তার মুসল্মানিত্ব বজায় রাখবে কোন সাহসে?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Emran  এর ছবি

সালামের মুসলমানিত্ব তো আরবরা ক্যান্সেল করে নাই, করসে পাকিরা।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হ, তয় রসুনের গোয়া একখানেই রে ভাই

কাগজে কলমে মৌলানা মোউদুদী'র ফাঁসির রায়ও তো বাতিল করে পাকিস্তান

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মেঘলা আকাশ এর ছবি

"ধর্মহীনতা মানুষকে এতটাই ফেরোশাস আর লোভী করে তুলতে পারে যা সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর"
- আমি 'ধর্মহীন ' কিছু মানুষকে চিনি যারা এই স্টেটমেন্ট এর বিপরীত চরিত্র। মানবতাই যাদের বড় ধর্ম।
আপনার তুলনামূলক ধর্মতত্ব পড়ে মুগ্ধ (!) হয়েছি।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমাকে আমার মুফতি হুজুর একদিন বলছিল, যারা ধর্ম সম্বন্ধে প্রকৃত জ্ঞানের সন্ধান পায় নি- তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বাদ বঞ্চিত।

আমার এক গাঁজারু বন্ধু একদিন আমাকে বলেছিল- যে কখনো গাঁজা খেয়ে দেখে নি, সে এ পৃথিবীর সবচেয়ে মহাত্মপূর্ন উপলব্ধি থেকে বঞ্চিত। তখন পাত্তা দেই নি, এখন দেখছি খুবই খাঁটি কথা- "নানান মতের মানুষ আছে বলেই পৃথিবী এত রঙিলা।"

আব্দুল্লাহ এ এম

চরম উদাস এর ছবি

হো হো হো

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

গুল্লি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

বন্দনা এর ছবি

আপনি তো জোহরা আপার সিরিজের নাম নিয়ে ফেলছেন সত্যানন্দ মশাই ইয়ে, মানে... । যাকগা গুণের কবিতা ও ভালো, অর্নবের গান ও ভা্ল,‌ সাথে আপনার কুলিং ফ্যান নষ্ট হওয়া মাথার থেকে যেই লেখা পয়দা করছেন সেটা ও মারাত্তক হইছে।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

জোহরাপ্পুর সিরিজের নাম ধইরা আমি টান দেই নাই তো... রবিবুড়ায় দিছে... ৫৭ ধারায় ব্যাটার নামে মামলা ঠুক্তে হবে শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রাসেল  এর ছবি

রাসেল নাস্তিকতা ও একটা ধর্মের মতো,

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

খাইসে! "রাসেল নাস্তিকতাটা" আবার কি বস্তু? শিয়া-সুন্নি, ব্রাহ্মন-শুদ্র, ক্যাথলিক-প্রটেস্টান্ট এইরকম? নাকি ঠিক যেন লাঙ্গলের ঈশ?

টিভিতে "অফ" চ্যানেলটা খুব বেশি দেখেন বুঝি? হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

কেমনে কি? নাস্তিকতা হইল যুক্তি আর ধমর্ হইল বিশ্বাস। যুক্তি আর বিশ্বাস এক জিনিষ হইল?!!!

হিমু এর ছবি

ঠিক বলেছেন, সুস্থ থাকা যেমন একটা অসুখ।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হু, বহুদিন এই অসুখে ভুগছি মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রাসেল  এর ছবি

রাসেল নাস্তিকতা ও একটা ধর্মের মতো,

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চোখে দেখি তো, দুদুবার করে না বললেও হত হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

রাসেল নাস্তিকতায় দুদুবারকরে বলতে হয় বুঝি?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হো হো হো হো হো হো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

আপনার লেখা বরাবরের মতই দারুণ।
চলুক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আমার কমেন্টের জন্য আপনার “টাইটেল রাইটার্স ব্লক” হয়েছে! ভাবতে গিয়েই তো আমার কমেন্ট রাইটিং ব্লক হয়ে যাচ্ছে!! ওরে বাবারে, সাক্ষী দাদার লেখায় যতি! এটা একটা বিশাল ক্ষতি!!

যাই হোক, লেখা তো বরাবরের মত হয়েছে। শুধু একটা কথা না বলে পারছি না। আমি যতদুর জানি ইবনে খালদুন সম্পর্কে, তাতে করে মনে হয় তিনি জ্ঞান অন্বেষনের ক্ষেত্রে মুক্তমনা ছিলেন। ধর্মের দোহাই টেনে জ্ঞানের পথে বাধার সৃষ্টি করেন নি।

আপনার বিজ্ঞানের রসালো গল্পের পাশাপাশি এরাম লেখা মাঝে মধ্যেই চাই।

____________________________

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১।
আসলে লেখা শুরু করতে একটা না একটা উসিলা লাগে... কোনদিন সেইটা অণু'দা, কোনদিন পীরবাবা, কোনদিন উদাস'দা, কোনদিন হিমু ভাই... কালকে এন্টেনায় ছিলেন আপনি... লেখায় যতি না, গতিই এসেছে... স্বপ্নীল ভায়ার কমেন্ট থেকে যেমন পরের লেখাটা দাঁড়া করিয়ে ফেলেছি দেঁতো হাসি

২।
"ইবনে খালদুন" প্রসঙ্গে আমার অজ্ঞানতার জন্য আবারও ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। সালাম একভাবে লিখেছেন... আমি একভাবে (ভুলভাবে অবশ্যই) বুঝেছি... ব্যাপারটা সম্ভবত তৃতীয় এক রকম... পান্ডব'দা আর আপনাকে অনেক ধন্যবাদ... হাসি

৩।
এরাম লেখা লিখতে চাইনারে ভাই... যদিও এরাম লেখার উপলক্ষই বেশি পাওয়া যায় মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এনালিস্ট এর ছবি

আসলেই অনেকের ধারণা নাস্তিকতা একটা ধর্ম। যদিও ধর্মহীনতাকে কোন লজিকে ধর্ম বলা যায় তা আমার এন্টেনার বাইরে।

নাস্তিকদের যদি ধার্মিক বলা যায় তো অ্যাগনস্টিকদের তো ধর্মান্ধ বলতে হবে তাইনা? মুরব্বীরা কি বলেন?

ধর্ম আমাদের এত প্রিয় হবার একটা কারণ আমি অনেক চিন্তা করে বের করেছি --

আমরা বড়ই পরশ্রীকাতর।

এই যে আমার কলিগের প্রোমোশন আমার আগে হয়ে গেলো, সামনে দাঁত বের করলাম, সবার আগে পিঠ চাপড়ে কংগ্র্যাচুলেট করলাম, সবচেয়ে উচ্চস্বরে হাসাহাসি করে তার পার্টিতে খানা-পিনাও করলাম। কিন্তু বাড়ি গিয়ে বউয়ের কাছে তার সম্পর্কে শুধু আজেবাজে কথা বললাম এবং তাকে আসলে আমি ঘৃণা করা শুরু করলাম।

আবার ধরেন, আমার ছেলে আর তিনবাড়ি পরে কালাম সাহেবের ছেলে একই ক্লাশে পড়ে। ম্যাট্রিকে যখন আমার ছেলে গোল্ডেন পেল কালাম সাহেবের ছেলে তখন A-। অথচ আজ যখন আমার ছেলে চান্স পেল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, কালাম সাহেবের ছেলে তখন রাজশাহী মেডিকেলে। কালাম সাহেবের চৌদ্দ গুস্টির উপর আমার ঘৃণা জন্মে গেল।

এভাবে নানা কারণে আমরা মানুষের প্রতি ঘৃণা বাড়াতে থাকি।

এবার ধর্মে আসেন। ধর্মগ্রন্থে যদি ১বার বলা হয় মানুষকে ভালবাসতে, তার বিপরীতে ১০বার বলা হচ্ছে মানুষকে ঘৃণা করতে। বিধর্মী ঘৃণা কর, নিধর্মী ঘৃণা কর, নারী, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, পশু-পাখি, স্থান --- ঘৃণার বস্তু থেকে কোন কিছু বাদ নেই।

পরশ্রীকাতর আমরা ধর্মপ্রিয় তো হবই।
মুসলিম না হলে কি বলতে পারব, শালার মালাউন খারাপ বা সব ইহুদী/নাসারাদের চক্রান্ত?
হিন্দু না হলে কি বলতে পারব, যবন/নেড়ে সব শালা বাঞ্চোত
ইহুদী না হলে কি হঠাৎ করে শক্তিশালী একটা দেশের মালিক হয়ে আদিবাসীদের কচুকাটা করতে পারব?
আমাদের ধর্ম চাই। যেকোন একটা হলেই চলে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখা এমনিতেই অসাধারণ, বোনাস হিসেবে পেলাম এই পোষ্টের কমেন্টগুলো। ধর্ম ব্যাপারে আমার নিজস্ব চিন্তা ভাবনা আছে, সেটা আমার নিজের ভিতরেই থাকুক। শুধু এটুকু বলি, আমি প্রচন্ড রকমভাবে আস্তিক, কিন্তু তাই বলে প্রতিক্রিয়াশীল নই, আমার মধ্যে কোনো গোড়ামী নেই আর ধর্মকে আমি বিজ্ঞানের সাথে মিশানোর চেষ্টা করি না। আমি মনে করি, ধর্ম মানতে গেলে কিছু ব্যাপারে আপনাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতেই হবে। দিন শেষে বা কোনো বিপদে আপদে নিজের অজান্তেই যখন ইশ্বরকে ডাকি, সেই হিসেবে সেইসব আপাতদৃষ্টিতে অবৈজ্ঞানিক জিনিসগুলো আমি অন্ধভাবে বিশ্বাস করি। 'আপাতদৃষ্টিতে' শব্দটি লিখেছি- কারণ আমি নিজেও বিজ্ঞানের আলোকে আমার এই স্বল্প জ্ঞানে সেগুলোর ব্যাখ্যা পাইনি, বা বলা যেতে পারে ব্যাখ্যা পাওয়ার চেষ্টাও করিনি- এই জায়গায় বিশ্বাসের কাছেই নিজেকে সমর্পন করেছি। সবচেয়ে বড় কথা, একজন চিকিৎসক হিসেবে কোনো কোনো সময় আমি এই বিশ্বাসটাকেই আকড়ে ধরি (এখানে শুধু আমার কথাই বলেছি, ডাক্তারদের জেনারালাইজড করিনি)।

আমার একান্তই অভিমত হচ্ছে, যার যার বিশ্বাস, তার তার কাছে। কেউ আস্তিক হতে পারে, কেউ নাস্তিক হতে পারে- আমার কি বলার থাকতে পারে? আমি শুধু দেখতে পারি, আমার কোনো কথা বা লেখা দ্বারা অন্য বিশ্বাসের কেউ যেনো আক্রান্ত না হয়।

যে কমেন্টটি নিয়ে এতো পাল্টা কমেন্ট, আমার কাছে মনে হয়েছে, কমেন্টদাতার উচিত ছিলো আরো সতর্ক হয়ে এইরকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে কথা বলা। উপরে এক প্রতিকমেন্টে দিগন্ত ভাইয়া বলেছেন, বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে মন্তব্যটা ফ্যাক্টের আওতায় পড়ে গেছে, আমিও তাই মনে করি। আর তাই, এইরকম মন্তব্য করার আগে ফ্যাক্টগুলো হাতের কাছে রেখেই করা উচিত ছিলো। ব্যাক্তিগতভাবে আমার প্রচন্ড বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে, স্বপ্নীল ভাইয়াও এতোকিছু ভেবে মন্তব্যটি করেনি, তার কাছে যা মনে হয়েছিলো সেটাই বলেছেন।

অফটপিকে একটি কথা বলতে ইচ্ছা করছে, ব্লগ সমাজ এমনিতেই এক কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখানে আমাদের সবাইকে এক থাকতে হবে। কোন স্তরের বিজ্ঞানী আস্তিক, কোন স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক, ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলার সময় এখন না। এখন সময় হচ্ছে ৫৭ ধারা বাতিলের সময়, এখন সময় হচ্ছে ব্লগিংকে নিয়ে আম-জনতার ভ্রান্ত ধারনাকে নির্মূল করার সময়। ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ব্লগিং করার জন্য অনেকের কাছেই নাস্তিক উপাধি শুনতে হয়েছে, সেটাতে আমার দুঃখ নেই, আমার কষ্ট হচ্ছে কেনো সবার মনে এই বদ্ধমূল ধারণা হবে যে, ব্লগার মানেই নাস্তিক?

অনেক কথা বলে ফেললাম, হয়তো অপ্রাসঙ্গিক, কেউ তার আস্তিক বা নাস্তিক ধর্মানুভূতিতে আঘাত পেয়ে থাকলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ভালো থাকুন সবাই, সব সময়ের জন্য।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

হিমু এর ছবি

ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ব্লগিং করার জন্য অনেকের কাছেই নাস্তিক উপাধি শুনতে হয়েছে, সেটাতে আমার দুঃখ নেই, আমার কষ্ট হচ্ছে কেনো সবার মনে এই বদ্ধমূল ধারণা হবে যে, ব্লগার মানেই নাস্তিক?

ব্লগার মানেই নাস্তিক, এই সরলীকরণে যারা নিমজ্জিত, তাদের কাছে বরং একটি প্রশ্ন রাখতে পারেন, নাস্তিক হলে সমস্যা কোথায়?

অতিথি লেখক এর ছবি

হিমু ভাইয়া, আমার মনে হয় এখানে আসলে দুইটি প্রশ্নই করা যেতে পারে। এক, আমি যেটা করেছিলাম- ব্লগার মাত্রই কেনো নাস্তিক বলা হবে? দুই, আপনি যেটা বলেছেন- নাস্তিক হলে সমস্যা কোথায়? কিন্তু আমি যদি আস্তিক হই, তাহলে নিশ্চয়ই আমার প্রশ্ন হবে - কী কারণে আমাকে নাস্তিক বলা হচ্ছে? আর আমি যদি নাস্তিক হই, তাহলে আমার প্রশ্ন হবে - নাস্তিক হলে সমস্যা কোথায়?

আমি যেহেতু বলেছিলাম, আমি আস্তিক, তাই আমার দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশ্নটা করেছি। এবং আমার প্রশ্নটার মূল ব্যাপারটি ছি্লো এটাই যে, (যেটা আপনার মন্তব্যে বলেছেন)কেনো এই সরলীকরণ? আমার কাছে আস্তিক- নাস্তিকে কোনো সমস্যা নেই, সেটা আমি আমার প্রথম মন্তব্যেই বলেছি (কারণ আমি মনে করি, আস্তিকের মতো নাস্তিকও একটি মতবাদ এবং একজন আস্তিকের মতো তারও নিজস্ব মত প্রকাশের সমান অধিকার আছে)।

আমি আবারো বলছি, আস্তিক/নাস্তিক নিয়ে আমার কোনো কথা নেই, আমার আপত্তির জায়গাটা ছিলো আমজনতা যেভাবে ব্লগারদের সরলীকরণ করে নাস্তিক উপাধি দিচ্ছে সেই ব্যাপারটায়। এবং মন্তব্যে আম-জনতার প্রতি আমার অসহায়ত্বের কথাই প্রকাশ করেছি। তবে আপনার প্রশ্নের প্রতিও আমার পূর্ণ শ্রদ্ধা আছে- কারণ অন্য কেউ নাস্তিক হলে অন্ততপক্ষে আমার কোনো সমস্যা নেই।
আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা, আমি আমার বক্তব্যটা ঠিকমতো বোঝাতে পেরেছি কি না। যদি কোন কারনে মনে আঘাত দিয়ে থাকি, আমি খুব লজ্জিত।
ভালো থাকুন খুব, সব সময়ের জন্য।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

হিমু এর ছবি

ব্লগারদের "নাস্তিক উপাধি" দেওয়ার কাজটা শুরু করেছে মাহমুদুর রহমান, আমজনতা নয়। এই কাজটা যারা চালিয়ে যাচ্ছে তারা পরিষ্কারভাবেই আন্তর্জাতিক অপরাধের চারটি ধারায় অভিযুক্ত জামাতি নেতাদের অনুসারী। আমজনতার ঘাড়ে এই দায়টা চাপানো অনুচিত।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার সাথে আমি একমত হলাম হিমু ভাইয়া। মাহমুদুর রহমান এই কাজটা শুরু করেছেন, এটাকে উস্কে দিয়েছে হেফাজত সহ কিছু উগ্রপন্থী গোষ্ঠী এবং তারা সফলভাবেই অধিকাংশ আম-জনতার মধ্যে এই ধারণাটিকে রোপন করতে সমর্থ হয়েছে- ব্লগার মানেই নাস্তিক। আমি আমার মন্তব্যটা মডিফাই করছি- আমজনতা নয়, অধিকাংশ আম -জনতা, যারা মাহমুদুর গংদের ফাঁদে পা দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে, আমার অসহায়ত্ব হচ্ছে কেনো এই অধিকাংশ আম-জনতা মাহমুদুর গংদের ফাঁদে পা দিবে? ব্লগে যেমন একজন নাস্তিক লিখে, তেমনি একজন আস্তিকও লিখে, লিখে খ্রীষ্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু- ইত্যাদি। এই দেশটাও আমাদের সবার সমান। কেনো সেটা তারা বুঝবে না? এই বোঝানোর ব্যাপারে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিয়েছি কি না?

যখন এই আস্তিক/নাস্তিক ইস্যু রাজীব হত্যার পর জনসমক্ষে আসে, আমি দেখেছি- অনেকেই প্রমাণ করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিলো রাজীব নাস্তিক নয়, নাস্তিকতায় পূর্ণ লেখা গুলো রাজীবের নয়। অথচ তখন উচিত ছিলো, এটা বলা যে, নাস্তিক হলেই কি যুদ্ধপরাধীদের বিচার দাবী করতে পারবে না? একজন হিন্দু যদি পারে, কেনো একজন নাস্তিক পারবে না? আমার কাছে মনে হয়েছে, বাংলাদেশের ব্লগিং ইতিহাসের যারা মাথা, তারা এই ব্যাপারটা ভালোভাবে উপস্থাপন করতে পারেন নি। সে যাই হোক, প্রসঙ্গান্তরে চলে গিয়েছি আমি।

আবারো আপনাকে ধন্যবাদ- আমার অভিযোগের তীরটি নির্দিষ্ট করে দেওয়ায়। ভালো থাকুন ভাইয়া, খুব।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য দু:খ প্রকাশ এবং কারও অনুভূতিকে আঘাত দিয়ে থাকলে ক্ষমাপ্রার্থি:
বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে কিছু কথা:
এই কমেন্টটা নিয়ে আমি যথেষ্ট বিব্রত এবং যদি বলেন যে উইথড্র করতে; তাহলে করে নিলাম।
অতশত ভেবে বলিনি কিংবা বিষয়টা এমনভাবে সবাইকে আঘাত করতে পারে, ভাবিনি।
আমি আন্তরিকভাবে দু:খিত।

আমাকে আমার মুফতি হুজুর একদিন বলছিল, যারা ধর্ম সম্বন্ধে প্রকৃত জ্ঞানের সন্ধান পায় নি- তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বাদ বঞ্চিত।
ধর্মের স্তর আছে- যারা প্রথম স্তরের; তারা কেবল আচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যায়।
বিজ্ঞানীদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।
নীচু স্তরের বিজ্ঞানী নাস্তিক হয়। মধ্যম স্তরে আবার আস্তিক হয়। উপরের স্তরে আবার নাস্তিকতার সংশয় দেখা দেয় এবং সর্বশেষ জ্ঞানের স্তরে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একই সুঁতোয় গাঁথা পাওয়া যায়।
জগতের অপার রহস্যের সমাধানের সন্ধান বিজ্ঞানের রথে চেঁপে খুঁজতে চাইলে- ধর্মীয় সংস্কার শক্তিসালী ইঞ্জিনের ভূমিকা নেয়।

এতটুকু অংশ মুফতী সাহেবের মতামত; লেখার সময় '' '' না দেবার ফলেই যত বিপত্তি। আমার মুফতি হুজুর বলতে, আমি ওনার চ্যালা বা ঐ পন্থী এমন না; তিনি আমাদের মসজিদের ইমাম এবং মাঝে সাঝে দেখা হলে- তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে আমার সাথে আলোচনা করেন নতুন আবিস্কারের কথা জানতে; সেই ফাঁকেই এমন বলেছে- আমি ভাবলাম- এটা জানাই সবাইকে!! কাউকে হেয় করা বা ছোট করার জন্য নয়।

ধর্মহীনতা মানুষকে এতটাই ফেরোশাস আর লোভী করে তুলতে পারে যা সভ্যতার জন্য ক্ষতিকর।
আবার, ধর্মোন্মাদনার জন্যও একই কথা প্রযোজ্য।

এইটুকু আমার ধারণা তাই লিখেছি- সত্যি তো নাও হতে পারে।

তুলনামূলক ধর্মততত্ব আমার প্রিয় বিষয় এবং আমি একজন রসায়নের শিক্ষক।
জেনেই বলেছি উপরের কথাগুলো- ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষনের আলোকে।

এর মানে, সাক্ষী সত্যানন্দের কথামতো আমিও নৃ-তাত্ত্বিক দৃষ্টিতেই দেখি- এবং পড়াশোনার ফলাফল স্বরূপ এবং আশেপাশের কিছু মানুষের উপর পর্যবেক্ষণ করে লেখা। এইটা সর্বাংশে সত্যি বলে দাবী করি না।
এস এম নিয়াজের কথা অনুযায়ী,

যে কমেন্টটি নিয়ে এতো পাল্টা কমেন্ট, আমার কাছে মনে হয়েছে, কমেন্টদাতার উচিত ছিলো আরো সতর্ক হয়ে এইরকম একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে কথা বলা। উপরে এক প্রতিকমেন্টে দিগন্ত ভাইয়া বলেছেন, বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে মন্তব্যটা ফ্যাক্টের আওতায় পড়ে গেছে, আমিও তাই মনে করি। আর তাই, এইরকম মন্তব্য করার আগে ফ্যাক্টগুলো হাতের কাছে রেখেই করা উচিত ছিলো। ব্যাক্তিগতভাবে আমার প্রচন্ড বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে, স্বপ্নীল ভাইয়াও এতোকিছু ভেবে মন্তব্যটি করেনি, তার কাছে যা মনে হয়েছিলো সেটাই বলেছেন।

ঠিক, আমি অতটা ভাবতে পারিনি- আর ফ্যাক্টের আওতায় পরে গেছে বুঝনি।
তো- কোন ফ্যাক্ট আসলে নেই।
আমি প্রজন্ম চত্বরে রাতের পর রাত কাটিয়েছি; জামাত/শিবির/হেফাজত কে মল-মূত্রের চেয়েও বেশি ঘৃণা করি।
বিজ্ঞানীরা আস্তিক-না নাস্তিক তা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার তেমন আগ্রহ নেই। তাই শ্রেনীবিভাগ সমর্থনের প্রশ্নই আসে না।
তবে হ্যাঁ, আমি গড়পড়তা মুসলিম; আল্লাহকে বিশ্বাস করি এবং এটা নিয়ে গর্ব আছে আমার; তা বলে, কে মানলো আর কে মানলো না তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই।
আমার মন্তব্যে আমি নির্দিষ্ট কোন ধর্ম নিয়ে বলিও নি।
অনভিপ্রেত ঘটনাগুলোর জন্য আবার দু:খ প্রকাশ করছি।
(টেকনিক্যাল কারনে নিজের আইডিতে প্রবেশ করতে পারছি না বলেই- এভাবে লিখলাম।)
স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

প্রিয় স্বপ্নীল (যদি আসলেই স্বপ্নীল হয়ে থাকেন),
কোটেশন মার্কের কথাটা যদি হিমু ভাইয়ের প্রথম কমেন্টের সঙ্গে সঙ্গে আসত, তবে অনেক গ্রহণযোগ্য হত হাসি

তারিখ: মঙ্গল, ১০/০৯/২০১৩ - ১:১৬পূর্বাহ্ন এই সময়ে যুদ্ধংদেহী ভাবে কমেন্টের উত্তর দিয়ে ফেলেছেন, এখন কি আর করা? এই দুঃখপ্রকাশটাকে আন্তরিকভাবে নিতে পারলাম না বলে দুঃখিত। ভাল থাকুন।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

চলুক
সাক্ষী সত‌্যানন্দ-র সাথে একমত

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

নিয়াজ মাওলা ভাই আপনি আস্তিক,এবং চিলে কান নেওয়া আস্তিক যে না সেটা আপনার মন্তব্য পড়ে বুঝলাম।কিন্তু আপনি বললেন কোন বিপদে পড়লে আমরা ইশ্বরকে ডাকি,তার কাছে যাই আস্থা হিসাবে।আপনি এটার ব্যাখায় যাননি,কারন খুজেননি,তাই বিশ্বাসের কাছে আশ্রয় নিয়েছেন।ভালো কথা,তা নিতেই পারেন।সে অধিকার সবার আছে।আমরা কেন ঈশরকে ডাকি তার একটা ব্যাখা আছে।বৈজ্ঞানিক ব্যাখা দিলাম না,মানবিক আর সামাজিক ব্যাখা টাই দেই।কোন মানুষ যখন ব্যাথা পায় কিংবা কষ্ট পায় তখন কি করে?প্রথমেই যে শব্দটা সে উচ্চারন করে সেটা হলো ”ও মা”।মা কিন্তু সেই ব্যাথাকে দূর করতে পারে না সবসময় কিংবা মা কাছে ও না থাকতে পারে।কিন্তু আমরা তো ডাকি প্রথম মা কে?কেন ডাকি তাহলে।একটু ভাবলে উত্তরটা পাবেন,মা হলো আমাদের শ্রেষ্ঠ আশ্রয়ের জায়গা,ছোটবেলা থেকেই আমরা মাকে পাই আশ্রয়ের শ্রেষ্ঠ মানুষ হিসাবে।এই আশ্রয় আর ভালোবাসার গল্প একদিনে হয়নি,হয় না।ঠিক তেমনি আমাদের সমাজ,আমাদের রাষ্ট্র ছোটবেলা থেকে আমাদেরকে শিখিয়েছে ধর্ম,সৃষ্টিকর্তা।আমাদের রক্তে ঢুকে গেছে,আমাদের মস্তিষ্কের নিউরনে লেখা হয়ে গেছে এই নাম।দীর্ঘকাল চলতে থাকা এই আশ্রয় হঠাৎ আপনি না চাইলে মুখে আসবে।এই কারনেই বেশি ভাগ মানুষ হয়তো বিপদে পড়লে নিজের অজান্তে ঈশ্বরকে ডেকে বসে,কিন্তু সেটা বিশ্বাস কিংবা মুক্ত করার জন্যে নয়।সেটা হয় সমাজের শিখিয়ে দেওয়া বুলির প্রকাশ।

আপনি বললেন “আমি শুধু দেখতে পারি, আমার কোনো কথা বা লেখা দ্বারা অন্য বিশ্বাসের কেউ যেনো আক্রান্ত না হয়। এই কথাটি আমার কেমন জানি দিগভ্রান্ত লাগছে।বিশ্বাস আক্রান্ত বলতে আপনি কি বুঝালেন?যে যার বিশ্বাস নিয়ে থাকবে এমন উদার সহমতে যদি থাকেন তাহলে তো আমাদের আর অগ্রসর হওয়ার দরকার নেই।যে যার বিশ্বাস নিয়ে থাকুক,যে বোম মারছে তারও নিশ্চয় একটা বিশ্বাস আছে এখন তাহলে কি কিছু বলা যাবে না,তার ভুল ধরিয়ে দেওয়া যাবে না,তার বিশ্বাস আক্রান্ত হবে বলে।বিশ্বাস স্থায়ী কিছু নয়,কোন বিশ্বাসী চিরকাল টিকে থাকে না,থাকেনি,থাকবে ও না।বিশ্বাস যত আক্রান্ত হবে ততো বেশি জানার পরিধি বাড়বে, বিশ্বাস যতবার আক্রান্ত হয়েছে মানুষ ততোবার নতুন কিছু শিখেছে।তাই বিশ্বাস আক্রান্ত হওয়া খারাপ কিছু নয়,আপনি চাইতে পারেন কারো মতের/বিশ্বাসের জন্যে আমরা যেন কাউকে শারীরিক আঘাত না করি।ভালোথাকবেন

মাসুদ সজীব

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

যে বোম মারছে তারও নিশ্চয় একটা বিশ্বাস আছে এখন তাহলে কি কিছু বলা যাবে না,তার ভুল ধরিয়ে দেওয়া যাবে না,তার বিশ্বাস আক্রান্ত হবে বলে।বিশ্বাস স্থায়ী কিছু নয়,কোন বিশ্বাসী চিরকাল টিকে থাকে না,থাকেনি,থাকবে ও না।বিশ্বাস যত আক্রান্ত হবে ততো বেশি জানার পরিধি বাড়বে, বিশ্বাস যতবার আক্রান্ত হয়েছে মানুষ ততোবার নতুন কিছু শিখেছে।তাই বিশ্বাস আক্রান্ত হওয়া খারাপ কিছু নয়,আপনি চাইতে পারেন কারো মতের/বিশ্বাসের জন্যে আমরা যেন কাউকে শারীরিক আঘাত না করি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি

বিশ্বাস যত আক্রান্ত হবে ততো বেশি জানার পরিধি বাড়বে, বিশ্বাস যতবার আক্রান্ত হয়েছে মানুষ ততোবার নতুন কিছু শিখেছে।তাই বিশ্বাস আক্রান্ত হওয়া খারাপ কিছু নয়,আপনি চাইতে পারেন কারো মতের/বিশ্বাসের জন্যে আমরা যেন কাউকে শারীরিক আঘাত না করি।ভালোথাকবেন

চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

মাসুদ সজীব ভাইয়া, বেশ দেরীতে আপনার মন্তব্যটা আমি দেখলাম।

ভাইয়া, আমি আমার প্রথম কমেন্টে বলেছিলাম- বিপদে আপদে পড়লে আমি ইশ্বরকে ডাকি, একজন চিকিৎসক হিসেবে কোনো কোনো সময় ইশ্বরকে আকড়ে ধরি----এইভাবে ইশ্বরকে ডাকার বা ধর্ম মানার আমি কোন কারণ ব্যাখ্যা করিনি, (কিন্তু আমি বলিনি যে, আমি ব্যাখ্যা খোঁজারও চেষ্টা করিনি, যেখানে আমি বলেছি, ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করিনি- সেটা হচ্ছে ধর্ম মানতে গেলে কিছু অলৌকিক ব্যাপারে বিশ্বাস করতে হয়, যা বিজ্ঞানের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয় এবং তাই আমি বিশ্বাসের কাছে নিজেকে সমর্পন করেছি, যেহেতু আমি ধর্ম মানি, ব্যাখ্যার পিছনে ছুটেনি) এবং এটি শুধু আমার নিজের ক্ষেত্রেই বলেছি, জেনারালাইজড করে বলিনি। বিপদে আমি কেনো ইশ্বরকে ডাকি, সেটার আমার একান্ত ব্যক্তিগত কারণ আছে, যেটা আপনার দেওয়া মানবিক কারণের সাথে মিল নেই। সে ব্যাপার নিয়ে আমি আসলেই কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে আপনি যে মানবিক আর সামাজিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন- আমার কাছে মনে হয়েছে খুবই চমৎকার বলেছেন, হয়তোবা এই কারণেই মানুষ ইশ্বরকে ডাকে বিপদে পড়লে (আমি আবারো বলছি- আমার কারণটি ভিন্ন), আপনার লজিকটি আমার কাছে জোরালো মনে হয়েছে। যদি এই মন্তব্যটি আপনার চোখে পড়ে- বিপদে পড়লে ইশ্বরকে ডাকার বৈজ্ঞানিক কারণটি জানতে চাচ্ছি। এটি আমার একান্ত ব্যক্তিগত কৌতুহল, আমি এই কারণটি আসলেই জানি না।

"আমার কোনো কথা বা লেখা দ্বারা অন্য বিশ্বাসের কেউ যেনো আক্রান্ত না হয়"- এই কথা দ্বারা আমি যেটি বোঝাতে চেয়েছিলাম, সেটি হয়তো পারিনি। তবে মনে হচ্ছে বোঝাতে না পারাই শাপে বর হয়েছে। এই উক্তির জন্য আপনি যে কথাটা বলেছেন- অসাধারণ। এই ব্যাপারে আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। 'অন্য বিশ্বাসের কেউ যেনো আক্রান্ত না হয়'- বলতে আমি যেটা বোঝাতে চেয়েছিলাম- যে অন্য বিশ্বাস যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাকে বা এই মানব সমাজকে শারীরিক বা অযথা আক্রান্ত না করছে, সেই অন্য বিশ্বাসকে যেনো আমিও আমার কথা বা লেখা দ্বারা আক্রান্ত না করি। সোজা কথা বলতে পারেন, নির্বিবাদে জীবনটা কাটাতে চাচ্ছি। কিন্তু কেউ যদি ভ্রান্ত বিশ্বাসের দ্বারা চালিত হয়ে বোমাবাজি করে,তাহলে কেনো তার ভুল ধরিয়ে দিবো না?

যা হোক ভাইয়া, আবারো আপনাকে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং খুব খুব খুব ভালো থাকুন।

****************************

স্বপ্নীল ভাইয়া, আপনি যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন কোটেশনের কথা বলে, সেটি আমারও মেনে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। যদি সত্যিই কোটেশন না দেওয়াটাই কারণ হতো, তাহলে আপনি হিমু ভাইয়ের জবাবেই সেটি বলতে পারতেন। আপনি যদি আপনার মুফতি হুজুরের ঘাড়ে না চাপিয়ে এটাও যদি বলতেন যে, আমার যা মনে হয়েছিলো, সেটাই বলেছি- তাহলেও আপনার বিব্রতবোধ এবং ক্ষমাপ্রার্থনাটা অনেক আন্তরিক হতো।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

অতিথি লেখক এর ছবি

ধর্মের বৈজ্ঞানিক ব্যাখা এখন সবাই দেয়।যার পুরোটাই আষাঢ়ের গল্পের মতো শুনায়।যারা পড়েছে বিজ্ঞান আর থেকে গেছে অবিজ্ঞানে আর কল্পকাহিনীতে তারাই ধর্মের মর্মান্তিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাগুলো দেয়।সুবিধা হলো তাদের নামের সাথে বিজ্ঞান কথাটা উল্লেখ থাকে,তারাও বিজ্ঞানের ছাত্র।জাকের নায়েকের মতো অসংখ্য মানুষ গজিয়ে গেছে এখন পৃথিবীতে যারা বিজ্ঞানের নাম ভাঙিয়ে ধর্মকে তাদের মতো বৈজ্ঞানিক করে তুলেছে।আপনি যেহেতু বিজ্ঞানের ছাত্র তাই আপনি জানেন আশা করি প্রথমত বিজ্ঞানের দুটো ভাগ আছে।মৌলিক বিজ্ঞান আর ফলিত বিজ্ঞান।সব বিজ্ঞানি আপনাকে সত্যটা জানাতে পারে যদি আপনি আগে বহুকাল ধরে পোশাকের মতো ধারন করা বিশ্বাস কে সত্যের মুখোমুখি দাড় করাতে পারেন,যদি আপনি সব কিছু সম্পর্কে প্রশ্ন করতে জানেন।কোন ধরনের বিজ্ঞান পড়ে মানুষ আস্তিক আর নাস্তিক হয় সেটা বলা আসলে বোকামি।বিজ্ঞান পড়েই যে সত্যটা শুধু জানা যাবে এমন না,পৃথিবীর ক্রমবিকাশ,মানুষের বিবর্তন এগুলো জানতে হলে বিজ্ঞানের একেবারে মনোযোগী ছাত্র হতে হয়না।তবে আপনি যদি পৃথিবীর সৃষ্টি,মানুষের বিবর্তন(অস্ট্রালোপিথাকাস,জাভা মানুষ এগুলো পড়ে থাকেন),এর সাথে ধর্মের মানুষ সৃষ্টি আর পৃথিবী সৃষ্টির যে ব্যাখা দেয় তার তুলনায় যান তাহলে আপনি আপনার অবস্থান টা কোথায় বুঝতে পারবেন,আপনার বিশ্বাস টা কতোটা অযুক্তিক কল্পকাহিনীতে দাড়িয়ে আছে সেটা বুঝতে পারবেন।আর যদি আগে থেকে বিশ্বাসের পোশাকের ভিতর ঢুকে বসে,সেটাকে চিরন্তান ধ্রুব সত্য বলে বেসে থাকেন তাহলে এসব কোন কিছুই আপনার জন্যে নয়।তবে সত্যটা হলো পৃথিবীতে এখন যেসব ধর্ম প্রচলিত রয়েছে তার কোনটাই পৃথিবীর শুরু থেকে ছিলোনা,তাই বলেছি কোন বিশ্বাসই চিরকালীন নয়।বিজ্ঞান মানুষকে সবি দিয়েছে,কিন্তু বেশিভাগ মানুষ বিজ্ঞানেরর বিস্ময় বিস্মিত হয়না,বিস্মিত হয় ধর্মীয় কল্পকাহিনীতে।মানুষের বিকাশে ধর্মের কোন অবদান নেই,মানুষকে গুহা থেকে আজকের আধুনিক সভ্যতায় কোন ধর্ম নিয়ে আসেনি,এনেছে বিজ্ঞান।আলো জ্বালতে শিখিয়েছে বিজ্ঞান।তারপরও মানুষ বিজ্ঞানে না মেতে ধর্মতে মেতে থাকে কারন মানুষের মস্তিষ্কের কিছু অংশ বোধহয় আলোকিত হতে শিখেনি,এখনো গুহা বাসী মানবের মত অন্ধকার রয়ে গেছে।বেশিভাগ মানুষ আলোতে আসতে ভয় পায় তাই ধরে রাখে জন্মগত পোশাকি বিশ্বাসগুলোকে,কিন্তু কিছু মানুষ ছিলো,আছে যারা প্রশ্ন করতে শিখেছে,নতুন করে জানতে চেয়েছে।তারা একটা বইয়ে জীবনের সব সমস্যার সমাধান মনে করেনি, বিশ্বাস রাখেনি।বিশ্বাস রাখেনি বলেই মানুষ গুহা ছেড়ে আধুনিক পৃতিবীতে আসতে পেরেছে।জীবন যে অপুরান সম্ভবনাময়,শুধু মাত্র একটা বই দিয়ে তাকে বেধে রাখা মানে যে জীবনের সম্ভবনাকে অপচয় তা সেইসব অবিশ্বাসী মানুষেরাই দেখিয়ে দিয়েছে।

অনেক কথা বলে ফেললাম,দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে লেখাটা তাই এখানেই ইতি টানলাম।ঈশ্বরকে ডাকার বৈজ্ঞানিক ব্যাখা তারাই দেয় যারা বিজ্ঞান পড়ে মেতে থাকে অবিজ্ঞানে,মেতে থাকে কল্পকাহিনীতে।আমি সেই কল্পকাহিনীর মানুষ না আর সেই ব্যাখা আমার কাছে আকর্ষনীয় ও না।মিথ্যে মিথ্যে ব্যাখা দেওয়া আমার জন্যে কষ্টকর।তাই অপরাগ,জাকির নায়েক এর মতো মানুষেরা এইসব ব্যাখা দিবে।ভালোথাকবেন।

মাসুদ সজীব

এক লহমা এর ছবি

অসাধারণ, এই কথাগুলো আমার-ও মনের কথা, খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন আপনি, মাসুদ-ভাই। বস্তুত: এই রকম ভাবনা চিন্তার মানুষদের সাথে সময় কাটাতে পারব এই আশাতেই সচলায়তনে এসে হাজির হয়েছি।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

মন্তব্য লাফাং

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- একলহমা।আমি খুবি নতুন মানুষ সচলায়তনে,পড়ি সবার লিখা আর বিস্ময়ে ভাবি আশে পাশে কত জ্ঞানী মানুষ আছে যাদের জানাশোনা কতো,তাদের তুলনায় আমি কিছুই না।সচলায়তনে আসার পর আমার আগ্রহের ক্ষেত্রটা বেড়েছে অনেকগুন।সচলায়তনে আসতে পারাটাই একটা অর্জন এর মতো মনে হয়।আপনাদের সবার লেখার আমি ভক্ত।আপনার মতোও আমিও আসি নতুন কিছু জানবো বলে।ভালোথাকবেন।

নিয়াজ ভাই আপনি নিজেও হয়তো জানে না আপনি খাটি মুসলমানের বিশ্বাসগুলো থেকে বের হয়ে আসতে পারেন নি।কথাটা আপনাকে আঘাত করতে বলিনি,কিন্তু এটা সত্য।কেন সত্য বলছি আপনি বারবার আঘাতের কথা বলছেন।শারীরিক আঘাত আসবে কেন?আমার মত,আমার বিশ্বাস এর সাথে একজনের বিশ্বাস না মিললে শারীরিক আঘাত করতে হবে কেন?আমি কেন অন্যকে বুঝাতে গেলে শারীরিক আঘাতে ভয় করবো?আপনি যাকেই ভুল ধরাতে যাবেন সেটা সে কখনো খুব সহজ ভাবে মেনে নিবে না,সেটা নিয়ে ‍যুক্তি তর্ক হতে পারে কিন্তু তার রিয়েকশান শরীরে আসবে কেন?আপনি আমার মতের সাথে না মত হলে আমি আপনাকে বুঝাতে যাবো না,এইতো শেষ।আপনি আমার মতের মিল না হলে আমি কি আপনাকে শারীরিক আঘাত করার কথা চিন্তা করবো?কখনো না, এখন বলি আপনাকে কেন খাটি মুসলমান বললাম কারন আপনি ধরে নিয়েছেন ধর্মের উপর আঘাত আসলে আপনি না করলেও কেউ না কেউ আমাকে আঘাত করবে।এবং ঠিক সেটিই হয়ে আসছে যুগে যুগে।এরা হলো অতি খাটি মুসলমান,আর আপনি হলেন তার নিচের স্তরের মুসলমান।আপনার মতো মুসলমান রা সহমতে বিশ্বাসী,শান্তিতে বিশ্বাসী।কিন্তু অতি অনূভুতি মুসলমান রা আলাদা।তারা ভিন্ন মতালম্বীদেরকে খতম করাকে ঈমানী দায়িত্ব মনে করে।(শ্রেণীবিভাজন টা আমার,শুধু মাত্র আপনার অবস্থান টা বুঝাতে এই শ্রেণী বিভাজনটা নিয়ে আসলাম,অন্য কোন অর্থ খুজবেন না দয়া করে)আপনি একটিও উদাহারন দিতে পারবেন না যে কোন নাস্তিক কোন আস্তিককে আঘাত করেছে,রক্তাত্ত করেছে।কিন্তু অতি আস্তিকরা চিরকালি ছুরিকে রন্জিত করে ভিন্ন বিশ্বাসীদের রক্তে।আস্তিকরা যখন মাইকে ধর্ম প্রচার করে তখন কি নাস্তিকরা তাদেরকে আঘাত করার কথা চিন্তা করে?করে না,পৃথিবীতে খুব সম্ভব কোন নাস্তিক পাবেন না যে অন্যকে আঘাত করে নিজেন বিশ্বাস আর সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।(তারা জানে অন্যকে আঘাত করে সত্য প্রতিষ্ঠিত করা যায়না।আর নাস্তিক হতে হলে পড়ালেখা থাকতে হয়,জানার পরিধি টা অনেক বড় হতে হয়)কিন্তু আস্তিকরা সেটাই করেছে যুগে যুগে,তাই তাদেরকে খুন আর রক্ত থেকে ধমিয়ে রাখতে জন্ম হয়েছে ৫৭ ধারা।যাতে নাস্তিকরা ভয় পেয়ে তাদের বিশ্বাস নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করে দেয়।অধিক অনুভূতিওয়ালা যাতে কোন অপরাধ করতে না সে জন্য রাষ্ট্র একটা সুন্দর সমাধান দিয়েছে। রাষ্ট্র ও এখানে একটা পক্ষ নিলো।এবং সেটা আস্তিকদের পক্ষ।আমার সাথে মতের মিল না হলে আমি কাউকে আঘাত করার কথা কল্পনাও করতে পারি না তাই এই আইন আমার কাছে হাস্যকর এবং মাথা ব্যাথা হলে মাথা কেটে ফেলার মতো সমাধান দিয়েছে রাষ্ট্র।

যাইহোক আর লিখতে চাইছিনা,আগে ভয় ছিলো অতি অনুভুতিওয়ালদের কিন্তু এখন তার সাথে যোগ হয়েছে রাষ্ট আর তার ৫৭ ধারা।চারিদিকে এত ভয় মাথায় রেখে নিজের এই সুন্দর জীবনটাকে এত অল্পতে হারাতে চাইনা,ধর্ম বাদে ও কথা বলার অনেক কিছু আছে,জানার ও অনেক কিছু আছে।আমরা সেই সুন্দর দিক গুলো নিয়ে আলোচনায় মেতে থাকে।ভালোথাকবেন।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

মাসুদ সজীব ভাইয়া, খুব চমৎকার কথা বলেছেন আপনি। আমি খাঁটি মুসলিম কি না জানি না, তবে আমি মুসলমান এবং আস্তিক হিসেবে গর্ববোধ করি, সেটা অন্য ব্যাপার।

আপনি যেটা বলেছেন- ভিন্ন মতাবলম্বীদের খতম করা গোঁড়া ধর্মবাদীদের ঈমানী দায়িত্ব- সেই জায়গাগুলোতেই আমি প্রতিবাদ করতে চাই। অন্য ধর্মের কথা জানি না, ইসলাম ধর্মেই আমাদের হুজুররা অনেক অপব্যাখ্যা দিচ্ছে, নিজেদের স্বার্থ মতো কোরানের তাফসীর করছে- ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জিহাদ করছে- সেসবের প্রতিবাদ অবশ্যই করতে হবে। আপনি একটা কথা চরম সত্য বলেছেন, আজ পর্যন্ত কোনো নাস্তিক কাউকে শারিরীকভাবে আঘাত করেনি, যা করেছে সব আস্তিকরাই। নাস্তিক/ আস্তিক বাদ দেন, ধর্মে ধর্মেই তো কতো মারামারি, হানাহানি। আমার বিশ্বাসটা হচ্ছে- কোনো ধর্মেই এসব স্বীকৃতি দেয় না, উগ্রবাদীরাই এই কাজগুলো করে। সেই হিসেবে, আমার চিন্তা হচ্ছে- ধর্মকে সরাসরি আঘাত না করি, এইসব উগ্রবাদীদের রুখে দাঁড়াই। শফি মিয়া যদি বলে, মেয়ে মানুষ তেতুল, সেটা শফি মিয়ার অপরাধ, প্রতিবাদটা হবে শফির বিরুদ্ধে, ধর্মে তো লেখা নেই যে মেয়েমানুষ তেতুলের মতো। এই যে গত বছরে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা হলো, যারা করেছে তারা তো মুসলমান লেবাসধারী নরপশু। আসলে ভাইয়া, কোনো ধর্মই খারাপ না, মানুষ কীভাবে সেটাকে ব্যবহার করছে সেটাই বড় কথা। আমি যদি বলি আল কায়েদা, তালেবান সন্ত্রাসী সংঘটন, এরা তো ইসলামের কথা বলে, তবুও আমার কাছে মনে হবে আমি ঠিক কথা বলেছি, এখানে কোন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছি না। কিন্তু যদি বলি, ইসলাম একটি সন্ত্রাসী ধর্ম, আমার হয়তোবা অনুভূতিতে আঘাত আসবে না, কিন্তু যে ব্যক্তিটা ইসলামকে আকড়ে ধরে সহজ সরল জীবন যাপন করছে, তার খারাপ লাগতে পারে। আমি আসলে এই জিনিসগুলোই এভয়েড করতে চাচ্ছি। অন্যান্য ধর্মের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। আর নাস্তিকরা যেহেতু ধর্মটাই বিশ্বাস করে না, তারা যুক্তি অবশ্যই দিবে ধর্মের অসাড়তা সম্পর্কে। যার নাস্তিকদের কথা ভালো লাগবে না, পাল্টা যুক্তি দিবে, যদি থাকে। এটাইতো নিয়ম, তাই না? কিন্তু এইভাবে কী সবকিছু হয়? তাহলে রাজীবকে আর মরতে হতো না, আসিফের উপর হামলা হতো না, তাই না?
তবে, এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত অভিমত, ধর্ম একটি পরিবর্তনশীল চলমান প্রক্রিয়া। সময়ের প্রয়োজনে মানুষের জন্যই ধর্মের কিছু ব্যাপার পরিবর্তন, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন করা যেতে পারে, কিন্তু সেটার জন্য যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা উচিত।
সে যাই হোক, আপনি শেষ প্যারাটা খুব চমৎকার বলেছেন। আসলে এই ধর্ম নিয়ে কথা বলতে আমারো ভালো লাগে না, আমি সাধারণত এই টপিকগুলো এড়িয়ে চলি। কিন্তু এই ৫৭ ধারায় এইসব চলে এসেছে বলে আমি নিজেও খুব আতঙ্কিত। ধর্মানুভূতির সংজ্ঞা কি? বেশিরভাগ হুজুর বলেন, কোরানে না কি স্ত্রীকে প্রহারের কথা লেখা আছে। আমি একটি পোষ্টে লিখেছিলাম- কোরানে মোটেও স্ত্রী প্রহারের কথা লেখা নেই। এখন যদি উগ্রবাদীরা বলে আমি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছি, এতোদিনের পুরানো বিশ্বাসটাকে ভাঙ্গতে চাচ্ছি, তাহলে আমিওতো জামিন অযোগ্য এই ধারায় আটকে যেতে পারি, তাই না?
কোনো কিছুই ভালো লাগছে না, একটা অস্থির সময় কাটাচ্ছি। আমার কোনো কথায় আপনি যদি ভুল বুঝে থাকেন, আমি দুঃখিত। ভালো থাকুন, সবসময়ের জন্য।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ধর্ম একটি পরিবর্তনশীল চলমান প্রক্রিয়া। সময়ের প্রয়োজনে মানুষের জন্যই ধর্মের কিছু ব্যাপার পরিবর্তন, সংশোধন, সংযোজন, বিয়োজন করা যেতে পারে, কিন্তু সেটার জন্য যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা উচিত।

এটা প্রায়োগিক হলে অনেক ঝামেলা মিটে যেত... সেকারনেই বুঝি এটা বাস্তবে অবাস্তব মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

নেওয়াজ ভাই আপনার সাথে কথা বলে ভালোলেগেছে।আপনি অন্যের মতকে শ্রদ্ধা করেন এটা ভালোলাগার।
আপনাকে একটা প্রশ্ন করি ৫ইমে হেফাজতের সমাবেশে যে বিশংঙ্লা হলো তার দায়ভার টা কার?যে বা যারা করেছে শুধু তাদের নাকি হেফাজতের নেতাদের ও।আপনি নিশ্চয় বলবেন না শুধু তাদের যারা বিশংঙ্খলা করেছে,শফি সাহেবের বাবু নগরীর কোন দায়ভার নেই,দোষ নেই।এখন যদি আমি আপনাকে আপনার যুক্তি দেই যে শফি সাহেবতো কাউকে বলেননি রাস্তা উপড়ে ফেলতে,বলেননি গাড়িতে আগুন দিতে,কোরান পুড়াতে।তাহলে তো দোষটা আপনার যু্ক্তিতে শীফর উপর পড়ে না।তাহলে দোষটা শুধু তাদের যারা বিশংঙ্খলাটা ঘটিয়েছে।এখন আপনি বলেন আপনি কি এই কথায় বিশ্বাসী?

আমি আশা করি আপনি এমনটা বলবেন না,দোষ নেতাদেরও দোষ বিশংঙ্খলাকারীদের ও।কেউ কম অপরাধী না।আস্তিকরা রক্তপাত ঘটালে সেটা ধর্মের উপর দায়ভার আসবেই,আপনি একে কিছু উগ্রবাদী বলে ছুড়ে ফেলে দিতে পারেন না কোন যুক্তিতে।আশা করি এরপর আর উগ্রবাদী আস্তিকদের কে একটা নিদিষ্ট ক্যাটাগরিতে ফেলে দিয়ে দোষটা নিজেকে বাচাবেন না।আর যাদেরকে উগ্রবাদী বলছেন তারা কিন্তু ধর্ম সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান রাখে,আপনি তাদেরকে ভুল বলছেন,ওরা আপনাদেরকে ভুল বলছে।কে সঠিক,এটার নিশ্চয়তা নেই,প্রমাণ নেই।

আমরা আপনার মতো সহনশীল মানুষ চাই,সহমতের মানুষ চাই।অন্যের লেখায় ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে যে খুন করার চিন্তা করবে না এমন মানুষ চাই।আমরা এমন একটা প্রজন্ম চাই যারা ভিন্নমতকে ছুড়ে ফেলে দিবে না,নিজের পক্ষে না গেলে শারীরিক আক্রমনে যাবে না।যদি সেটা ধর্ম দিতে পারে আমার তাতে আপত্তি নেই।মানুষের জন্য কল্যানকর যা কিছু আমি তার পক্ষে,মানবতার জয় হোক।ভালোথাকবেন ভাই,অনেক কিছু বলে ফেললাম কোন কথায় মনে কষ্ট নিবেন না।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

আমরা আপনার মতো সহনশীল মানুষ চাই,সহমতের মানুষ চাই।অন্যের লেখায় ক্রুদ্ধ হয়ে তাকে যে খুন করার চিন্তা করবে না এমন মানুষ চাই।আমরা এমন একটা প্রজন্ম চাই যারা ভিন্নমতকে ছুড়ে ফেলে দিবে না,নিজের পক্ষে না গেলে শারীরিক আক্রমনে যাবে না।যদি সেটা ধর্ম দিতে পারে আমার তাতে আপত্তি নেই।মানুষের জন্য কল্যানকর যা কিছু আমি তার পক্ষে,মানবতার জয় হোক।ভালোথাকবেন ভাই,অনেক কিছু বলে ফেললাম কোন কথায় মনে কষ্ট নিবেন না।

অসাধারণ লিখেছেন। আপনার সাথে কথা বলে আমারো খুব ভালো লেগেছে মাসুদ সজীব ভাইয়া। ভালো থাকুন, খু-উ-ব।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।