০০১।
অগ্রজ মাহবুব আজাদ সচলের অবস্থান-তখতে স্বগতোক্তি ঝুলাইয়া রাখিয়াছেনঃ “কসাই কাদের মরিয়া প্রমাণ করিল যে সে কত্তবড় কেপিটেস্ট”। পীরবাবা আবার সত্যের ডালি উজাড় করিয়া বেশরমের ন্যায় বঙ্গালমুলুকে মুত্রবিসর্জন করিয়া অলৌকিকভাবে পাকমুলুকের সবুজ তৃণ নাপাক করিবার উপক্রম করিয়াছেন। এই প্রেক্ষিতে আরেক ব্যাঘ্রশাবক, সহাচল সুমন ভ্রাতঃ ফরমাইয়েছেন, উহাদিগকে (Dark lords, They who must not be named) ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপের সুনিপুণ পাঁচালী। এক্ষণে বলিয়া রাখি, পরের মতখানার সঙ্গে আমি কিঞ্চিৎ দ্বিমত প্রকাশ করিতেছি। আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপের আগে তাহাদিগের প্রয়োজনীয় উপাদানসমুহ আমাদিগের ভবিষ্যতের নিমিত্তে দ্রাক্ষারসের ন্যায় শুষিয়া নেওয়াই উত্তম- ইহাই আমার মত। স-মাংস অস্থি কেউ কখনও কি সারমেয় ভক্ষণের নিমিত্তে সম্প্রদান কারকে চতুর্থী বিভক্তি সহযোগে ব্যাবহার করে? কিংবা স-মৎস্য কণ্টক কি পোষ্য মার্জারটিকে স্বত্ত ত্যাগ করিয়া দান করা হয়? মোটেই তাহা নহে। উহা আদতে সমীচীনও নহে। কিরুপে? উহাই আলোচনা করিব, বোকাবাক্সের বিজ্ঞাপনপূর্ববর্তী লাস্যময়ী উপস্থাপিকা কিংবা অতিউত্তেজনায় গাঁজন অপচয়কারী (গ্রন্থ মোতাবেক- শয়তানের ভ্রাতঃ) উপস্থাপকের ন্যায় বলিতেছি- “সঙ্গেই অবস্থান করুন”।
০০২।
একদা সেই পুরাকালে, সপ্তদশ শতকে কবিবর ‘আবদুল হাকিম’, বড় আফসোসে পড়িয়া লিখিয়া গিয়াছিলেন- “যে-জন বঙ্গেত জন্মি, হিংসে বঙ্গবানী/সেসব কাহার জন্ম? নির্ণয় ন জানি!” আজি এই ত্রিশতবর্ষাধিক কালে উপনীত হইয়া আমাদিগের আফসোস ইহাই আমরা আজও এই সুপ্রাচীন কাব্যের মোহমুক্ত হইতে পারিলাম না। মহামতি চরম উদাস আমাদিগকে “পশ্চাৎদেশের বক্তব্য ভুলিতে” যতই উপদেশ ফরমাইয়া যান না কেন, আমরা পশ্চাতের তালবৃক্ষ খানা উপযুক্ত স্থানে প্রবিষ্ট করিয়া সজোরে আঁকড়াইয়া ধরিয়াই থাকি। তাই বলিতেছিলাম, পেছনের কথা বিস্মৃত হইয়া আদতে কাজ নেই। তাই আসুন ভাতৃসকল, পশ্চাতের অর্শ-ভগন্দর রোগাক্রান্ত ক্ষতগুলোকে আড়াল না করিয়া উহাতে টিটেনাস রোগের জীবাণু উপর্যুপরি প্রয়োগ করি। উহাতেই যে আমাদিগের মোক্ষ লুক্কায়িত।
০০৩।
আমরা বিস্মৃতিপ্রবণতায় ‘নোবেল’ কিংবা ‘কংগ্রেশনাল মেডাল’ পাইলেও আমাদিগের একাংশ নির্লজ্জের ন্যায় পুর্বের স্মৃতি বাগাইয়া বসিয়া থাকিবে অপার হইয়া, দয়াময় ওপারে লউক আর নাই লউক। ইহারা বক্রগ্রীবা মর্কটের ন্যায় স্মৃতি খুঁড়িয়া বাহির করিবে- বাঙ্গাল মুল্লুকের একটি আইনী রায়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত বাদশাহী-অজ গণ পাক মুল্লুকের পাক মৃত্তিকায় কি সুবিশাল প্রতিরোধ বুহ্যই না রচিয়াছিলেন। আমরা উহাতে মনক্ষেপন কিংবা মণিক্ষেপন করি নাই, উহা আমাদিগের দুর্বলতা বিশেষ। কিংবা এই স্মৃতিকাতরেরা এই ঘটনাও খুঁড়িয়া তুলিতে পারে যে একদা কাদের নাম্নী এক বিখ্যাত পশুকর্তকের সাফাই গাইতে বেলুচিস্তান প্রদেশের সুখ্যাত পশুকর্তক আমীর আব্দুল্লাহ খানের ভাগীনেয়, পাক দেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন “ক্রীড়া পুর্বনির্ধারক (বিলেতি ভাষায়ঃ Match Fixer)” এবং ‘ইনসাফ তেহারীঘর’ এর মালিক-ই-আযম আমীর ইমরান খান নিয়াজী কি বলিয়াছেন। ছিদকাদুনে নিন্দুকবৃন্দ অবশ্য "তস্করের সাক্ষী প্রতারক" এই অশ্লীল প্রবাদখানা অক্ষিতে অঙ্গুলী প্রবিষ্টপূর্বক প্রদর্শন করিতে পারেন। আমরা তাহাতে বিচলিত না হইয়া স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মান বজাইয়া রাখিব। আমরা বিস্মৃতিপ্রবণ বিধায় প্রায় ভুলিয়াই যাইতেছিলাম যে এই কাদের সেই পশুকর্তক কাদের নহেন। আফসোস, পাক প্রদেশের কেন্দ্রীয় পশুকর্তনখানার* সদস্য বৃন্দ সেই মহতী প্রচেষ্টাটিকেও বলৎকারপূর্বক লাঞ্চিত ও ভূলুণ্ঠিত করিয়া দিলেন। কি বিচিত্র এই দেশ, সেলিউকাস! আমরা কি এই বাঙ্গালমুলুক চাহিয়াছিলাম!
[* স্মর্তব্যঃ খণ্ডনপরবর্তী পাক দেশের প্রথম বাদশাহ, জনাবে আযম, জুলফিকার আলী ভুট্টো, ১৯৭১ সালে ভবিষ্যদ্বাণী করিয়া ম্লেচ্ছভাষায় তাচ্ছিল্যভরে বলিয়াছিলেন- “কসাইখানা হবে এসেম্বলি” ]
০০৪।
পশ্চাতের বাক্য ভুলনেওয়ালারা ইদানীং কালে প্রায়শই কাদের, গোয়াজম, নিজামী, মোজাহিদ, ছাইদী প্রভৃতি ব্যাক্তিবর্গকে ১৯৭১ খৃষ্টাব্দে পাক দেশের বিরুদ্ধে, অর্থাৎ না-পাক কর্মে নিযুক্ত দেখাইবার প্রবল প্রচেষ্টা করিয়া থাকেন। অথচ পুর্বোক্ত ব্যাক্তিবর্গের পুর্বধারনা মোতাবেক এই প্রচেষ্টায় তাহারা কেবলই হিন্দুস্থানের একনিষ্ঠ মধ্যস্বত্বভোগী (ম্লেচ্ছভাষায়ঃ দালাল) রূপে পরিগণিত হইতেছেন। তবে এই প্রসঙ্গে আমার মন্তব্য ইহাকে উত্তমরূপে নথিভুক্ত করিয়া রখা হউক, নইলে অদ্য যাহা দিবা, আগামীকল্য তাহাই নিশা হইয়া যাইতে কতক্ষণ? এক্ষণে প্রাসঙ্গিক রূপে উদ্ধৃত করা যায় যে, পাক দেশের পরাজিত সেনাপতি গনের পুস্তকপাঠে আমার উপলব্ধী ইহাই, যে তাহারা প্রত্যেকেই নিজেকে নির্দোষ-নিষ্কলুষ দাবী করিয়া অপরাপর সেনাপতিদিগকে হিন্দুস্তানের মধ্যস্বত্বভোগীর ‘তঘমা-ই-খিদমত’ প্রদান করিয়াছিলেন। বাঙ্গাল মুলুকের সর্বাধিক প্রচারিত ‘পেহেলী রোশনি’ মারফত- হিন্দুস্থানের বিশিষ্ট মিডিয়া মুঘল, জোকাই লামা ওরফে নায়েক হেকিমের সম্প্রচারমাধ্যম ঘটিত জ্ঞাতি-ভগিনী, ও প্রখ্যাত হিন্দুস্থানী শিল্পী সানী লিওনীর কুমারীত্বের দাবীনামা সম্পর্কে জ্ঞাত থাকায় আমি পুর্বোক্ত সেনানায়কদিগের নির্দোষিতা সম্পর্কে বলিষ্ঠ ঈমান আনিতেই পারি। মনীষীবৃন্দ বলিয়া গিয়াছেনঃ “পশ্চাতের বক্তব্য বিস্মৃত হওয়াই জ্ঞানীর কাজ”। জ্ঞানী হইবার এই সুযোগ ত্যাগ করিব কি রূপে? বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র পশ্চাৎদেশ।
০০৫।
অতঃপর, কিঞ্চিৎ জরুরী বাক্য বিনিময় পূর্বক বিদায়ের এন্তেজাম করি। অবিভক্ত বাংলার রসময় লেখক, ত্যাঁদড়কূলশিরোমণি- সৈয়দ আলী সায়েব, সপ্ত পোতাশ্রয়ের বারি ভক্ষণকারী ঝান্ডুদা’র মুখ দ্বারা বলাইয়াছিলেনঃ “ওটা মুছিসনি, আদালতে সাক্ষ্য দেবে”। আমি সৈয়দ সা’বের সেই আপ্তবাক্য সকলকে স্মরণ করাইয়া দিতে চাই। কে জানে, আসলেই এই তথ্যগুলি অদূর ভবিষ্যতে আদালতের কোনও কার্যে আসিয়া পড়ে কিনা! পক্ষান্তরে নির্বোধ পাক জাতি কিন্ত আমাদিগের বিচারকার্য্যের সহায়তাই করিয়া দিয়া চলিতেছে। তাই, আসুন এক্ষণে এই সকল সাক্ষ্য সংগ্রহ করিয়া রাখি। নিম্নে মন্তব্যের বাক্স উন্মুক্ত রহিল। আমরা এক একটি রবিন মিলফোর্ড হইয়া উঠিলেই ইতিহাস স্বস্তি পাইবে। দশে মিলি করি কাজ, জয়ী হব নাহি লাজ।
আমাদিগের ভাগ্য আমাদিগের হাতেই, পাক দেশের নহে। আমরা এই বাংলাদেশই চাহিয়াছিলাম, যেমন চাহিয়াছিলেন আমাদিগের পূর্বপুরুষগণ।
মন্তব্য
অনেকেরই আসল 'আব্বা' পাকিস্তানে। তারা উঠতে বসতে, গোপনে প্রকাশ্যে ইনিয়ে বিনিয়ে নানাভাবে 'পাকিরাও ভালো' গীত গায়, মনে মনে পাকপূজা করে। খুনী ধর্ষক বেঈমান কাদের মোল্লার ফাঁসির পর চোখ নাক পিশাবের পানি এক করে কেঁদে কেঁদে বলে, কসাই কাদের ছিলো এক ভিন্ন মানুষ, ইনি পরমাত্মা, দেবতার অবতার, সাক্ষাৎ হরি। কাদের ছিলো আমাদের লোক - পাকিদের এই কথার পর তাদের নির্লজ্জ্ব মুখটা আরেকবার দেখতে ইচ্ছে করে - কি খায় ওরা? গু?
এই বাংলাদেশই চাহিয়াছিলাম
গান্ধর্বী
অতিশয় সরেস একখানি রচনা উপস্থাপন করিবার দায়ে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করিলাম। অতপর পাঠককূল যদি হাস্য সংবরণ করিতে না পারিয়া বিষম খাইয়া ওঠেন তাহা হইলে তাহার যাবতীয় দায়ভার বহন করিতে আপনি বাধ্য থাকিবেন (মন্তব্যকারী নিজেই উল্লেখিত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইয়াছেন)।
ইমো মহাশয়গণ কোন এক দুরভিসন্ধি লইয়া লুক্কায়িত অবস্থায় অবস্থান করিতেছেন বিধায় তাঁহাদের যথোপযুক্ত সদব্যবহার করা সম্ভবপর হইল না। নিজগুণে ক্ষমা করিবেন।
____________________________
ভক্ষণ করেছে!
অতঃপর হেচঁকি উত্থাপনের পূর্বে উত্তমরূপে বারি ভক্ষন অর্ধসমাপ্ত রাখিবেন। নাসিকাপ্রদেশের অপবিত্রতা নাপাকি দূরীভূত হইবে। এক কুলুখ'মে দো বিহগ পড়েঙ্গা আউর মরেঙ্গা
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
[ব্যাবহার >ব্যবহার, পুর্বের > পূর্বের, সেনাপতি গনের > সেনাপতিগণের, ছিদকাদুনে > ছিঁচকাঁদুনে, রখা হউক > রাখা হউক, দুর্বলতা > দূর্বলতা।
কতিপয় টাইপো, বানানপ্রমাদ চোখে পড়িল। সুযোগ থাকিলে শুধরাইরা লন।]
সানি লিওনি একজন পর্ণমুভিতারকা। যা-ই সে করে থাকুক না, এটাই তার পেশা। জোকার নায়েকের গাঁজাখুরি কিংবা ফাকি হামিদ মীরের মিথ্যাচারের সঙ্গে মাদাম লিওনির সতীত্বের উদাহরণজনিত যোগসুত্রের প্রাসঙ্গিকতা কী?
অবশ্যই।
আমরা এই বাংলাদেশই চাহিয়াছিলাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
সানি লিয়নকে টানার কোন দরকার ছিলনা।
ওয়াইফাই ক্যানসার
০১।
অনেক দারোগাপ্পু আমার ব্লগে নিয়মিত দাওয়াত থাকল
০২।
টাইপোর জন্য যারপরনাই দুঃখিত, অবসরকালে মেরামতের প্রতিজ্ঞা করিলাম।
০৩।
সানী লিওনির পেশা নিয়ে আমার বলার কিছু নেই... ওই জায়গাটা ভুল প্রতিশব্দ জনিত দুর্ঘটনা... বদলে দিলুম... এটাও যদি আপত্তিকর মনে হয় নির্দ্বিধায় বলবেন... ওটুকু ছেঁটে দেব
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখা ভাল লেগেছে। তবে স্টাইল-টা যতটা জটীলতা ঘটিয়েছে ততটা আনন্দ দেয়নি।
কিন্তু মূল বক্তব্য পুরাই ঠিক।
আর হ্যাঁ, তিথীদিদির সাথে একমত।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
অবশ্যই
লাজ কিসের তরে বাপু??? লজ্জিত হইবে তো বিপক্ষের মাতমকারীগণ।
তাই কবির প্রতি অনুরোধ নতুন করিয়া বাক্যখানি রচনা করুন।
এমন বাংলাদেশই আমরা চেয়েছিলাম।
কসাই কাদেরের ফাঁসির পর জয়ের উৎসবে ঈদ বকসিসের মতো একটার পর একটা লেখা আসছে প্রিয় লেখকদের। সামনে সচলের পাঠকদের তাই সুদিন। চলছে, চলুক।
মাসুদ সজীব
শব্দ পথিক
নতুন মন্তব্য করুন