চার দশক স্থগিত রাখা দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি পাকিস্তান

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি
লিখেছেন সাক্ষী সত্যানন্দ [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ০২/০১/২০১৪ - ৩:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

০১।

নতুন বছরের পয়লা দিনেই প্রথম আলোর স্পোর্টস ডেস্কে কারবালার চাইতেও ভয়াবহ মাতম। ‘কোথাকার কোন’ কোরি এন্ডারসন বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত গেলমান সর্দার শাহেদ আফ্রিদি কে এবারে রেকর্ডের খাতায়ও দুই নম্বুরী মাল বানিয়ে ছেড়েছে। আরে বেটা, তুই হলিগে ‘সেই দেশ দুধের দেশ’ নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়। কোথায় গরুর যত্নআত্মি করবি তা না, গুঁতো দিতে গেলি কিনা পাহাড়ি ছাগলের দ্রুততায় করা ১৭ বছরের কচি রেকর্ডটায়।

এখন কে দেবে আশা? কে দেবে ভরসা? এক ইমরান খান নিয়াজীর ঠেলাতেই “নীতি ও আদর্শ” বজায় রাখতে প্রথম আলোর সম্পাদনা পর্ষদের ত্রাহি মধুসূদন দশা। এখন হাতের পাঁচ খেলার পাতাটাও মীরজাফরী করলে তো ত্রাহি রবিঠাকুর দশা হবে। যাকগে, শ্বেতপদ্ম ভাইয়ার হ্যাপা শ্বেতপদ্ম ভাইয়াই বুঝবে। আমাদের হ্যাপা পাকিস্তান, আমরা আপাতত সেটাই বুঝি। কি বলেন?

০২।

মজার ব্যাপার হল জামাতীরা (বিশেষত ছদ্ম জামাতীরা) সিমলা চুক্তির কথা বলে অনেক সময় কেঁদে কেটে জারজার হয়ে যায়। সেই সঙ্গে আলতো করে শাক দিয়ে চুক্তিটা কাদের মাঝে হয়েছিল সেটা বেশ করে ঢেকে যায়। লজ্জার সাথে মেনে নিতে আপত্তি নেই যে আমিও বহুদিন পর্যন্ত “সিমলা চুক্তি করে শেখ সায়েব চিহ্নিত ১৯৫ জনকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়েছেন” এই কথাই ভাবতাম। অথচ চুক্তি হয়েছিল ‘ভারত’ ও ‘পাকিস্তান’ এর মধ্যে। ১৯৭২ সালের ২ জুলাই এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ভারত প্রজাতন্ত্রের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জুলফিকার আলী ভুট্টো। যা হোক, তাতে আমাদের কি? আসুন দেখি। চুক্তিটি শুরু হয়েছে এভাবেঃ

The Government of India and the Government of Pakistan are resolved that the two countries put an end to the conflict and confrontation that have hitherto marred their relations and work for the promotion of a friendly and harmonious relationship and the establishment of durable peace in the sub-continent, so that both countries may henceforth devote their resources and energies to the pressing task of advancing the welfare of their peoples.

খুব গুরুত্বপূর্ন কিছুনা, গৎবাঁধা কথাই মনে হচ্ছে। আপাতত মোটা অক্ষরগুলো মাথায় রাখুন। চুক্তিটি শেষ হচ্ছে এভাবেঃ

Both Governments agree that the respective Heads will meet again at a mutually convenient time in the future and that, in the meanwhile, the representatives of the two sides will meet to discuss further the modalities and arrangements for the establishment of durable peace and normalisation of relations, including the questions of repatriation of prisoners of war and civilians internees, a final settlement of Jammu and Kashmir and the resumption of diplomatic relations.

হু, এইবার দূর সম্পর্কের সম্পর্ক আসি আসি করছে।

০৩।

আচ্ছা, এইবার ২৮ আগস্ট ১৯৭৩ এ যাই। ওইদিন আবার ভারত-পাকিস্তান একটি যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত- পি এন হাকসার এবং পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আজিজ আহমেদ। এখানে বলছেঃ

The immediate implementation of the solution of these humanitarian problems is without prejudice to the respective positions of the Parties concerned relating to the case of 195 prisoners of war referred to in clauses (vi) and (vii) of this paragraph;

এবং

Bangladesh agrees that no trials of the 195 prisoners of war shall take place during the entire period of repatriation and that pending the settlement envisaged in clause (vii) below these prisoners of war shall remain in India

বাপরে, চিরশত্রু ভারতের ওপর দেখি পাকিস্তানের অগাধ বিশ্বাস! তো শেখ সায়েবের ‘গোঁয়ার্তুমি’ দেখা যায় নিচের অংশেঃ

On completion of repatriations of Pakistan prisoners of war and civilian internees in India; Bangalees in Pakistan and Pakistanis in Bangladesh referred to in clause (v) above, or earlier, if they so agree, Bangladesh, India and Pakistan will discuss and settle the question of 195 prisoners of war. Bangladesh has made it clear that it can participate in such a meeting only on the basis of sovereign equality.

কি বুঝলেন? কাহিনী তো ঝিরঝির লাগে, বাহে।

০৪।

প্রসঙ্গতঃ জানিয়ে রাখি, বাংলাদেশের বাস্তবতা তথাকথিত “equality” এর ধারে কাছেও ছিলনা- পাকিস্তানে আটকা পড়া বাঙ্গালীদের জন্য। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জাতীয় সংসদে পাস হবার আগে তৎকালীন আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধরের সংসদে দেয়া বক্তব্য থেকে একটু কোট করি, তিনি বলছেনঃ

আজকে জনাব ভুট্টো যে গড়িমসি করছেন তার একমাত্র কারণ হল যাতে যুদ্ধবন্দীদের বিচার বিলম্বিত হয় এবং দুর্বুদ্ধি প্রণোদিত হয়ে একটা বার্গেনিং কাউন্টার হিসেবে তিনি ব্যাবহার করতে চাচ্ছেন। জনাব স্পীকার সাহেব, আপনিও জানেন ভারত এবং পাকিস্তান সিমলা চুক্তি করেছিল এবং বাংলাদেশের সাথে পরামর্শ করেই করেছিল। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা উদগ্রীব- বিশ্বময় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য। আজকে তাই উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠাকল্পে আমরা গনহত্যাজনিত অপরাধী, মানবতা বিরোধী অপরাধী এবং যুদ্ধাপরাধী পাক হানাদার বাহিনীর ১৯৫ জনকে বাদ দিয়ে সকল পাকিস্তানীকে ফিরিয়ে দিতে রাজী হয়েছি। আজকে আমাদের কয়েক লক্ষ ভাইবোন পাকিস্তানে আটকা পড়ে অনেক দুঃখ কষ্টের মধ্যে আছে। প্রায় দুই-আড়াই লক্ষ হবে। পাকিস্তানকে তাদের ফিরিয়ে দিতেই হবে। আমরা বলেছি আমাদের বাঙ্গালীদের ফিরিয়ে দাও এবং অন্যান্য পাকিস্তানীদের ফিরিয়ে দিচ্ছি। কিন্তু ভুট্টো সরকার তাতে সাড়া দিচ্ছে না। এর চেয়ে উদারতা কিছুতেই সম্ভব হতে পারে না। আমি জানি, ইতিহাস দেখলে দেখা যাবে, সব দেশেই যুগে যুগে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য শাস্তি ভোগ করেছে। কাজেই পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদেরও বিচার হবে এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য অবশ্যই তাদের প্রাপ্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। বিশ্বের কোনও চাপই কিছু করতে পারবে না।

চেনা চেনা লাগে? আন্তর্জাতিক চাপমুখর পরিস্থিতি বিবেচনায় ‘তখন’ আর ‘এখন’ এর মাঝে খুব একটা পার্থক্য টানা কঠিন। ‘১৯৫ জন দানবের’ সাথে ‘লক্ষাধিক মানবের’ অসম এই লড়াইয়ে যা হবার তাই হয়েছিল। সাময়িক ভাবে, হ্যাঁ আবার বলছি ‘সাময়িক ভাবে’ জিতেছিল পাকিস্তানই।

০৫।

এরপরের ঘটনা নয়াদিল্লীতে, ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল। স্বাক্ষরিত হয় বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান ত্রিপক্ষীয় চুক্তি। স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশের পক্ষে তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী কামাল হোসেন, ভারতের পক্ষে তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী শরন সিং এবং পাকিস্তানের পক্ষে তৎকালীন প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আজিজ আহমদ। এতে বলা হচ্ছেঃ

The question of 195 Pakistani prisoners of war was discussed by the three ministers, in the context of of the ernest desire of the government for reconciliation, peace and friendship in the sub continent.

অতি উত্তম কথা, শুনতে বেশ লাগে। তা পষ্ট ভাষায় বাংলাদেশের অবস্থানটা কি? দেখা যাকঃ

The foreign minister of Bangladesh has stated that the excesses and the manifold crimes committed by these prisoners of war constituted according to the relevant provisions of the UN General Assembly Resolutions and International Law, War crimes, Crimes against humanity and Genocide. And there was universal concensus that persons charged with such crimes at the 195 Pakistani prisoners of war should be held to account and subjected to the due process of law.

আচ্ছা, কারো কি মনে হয়- এই স্পষ্ট বক্তব্যের অর্থ “মাপ কইরা দিলাম, যা ভাগ”? যাকগে, স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার খাতিরে পাকিস্তানের ভাষ্যটাও দেখুনঃ

The minister of state for defence and foreign affairs of the government of pakistan said that his government condemned and deeply regretted any crimes that may have been committed.

কি বোজলা মনু? হোমো স্যাপিয়েন্স হইলেই যে মানুষ হতে হবে তা তো নয়, তাইনা? পাকিস্তানীরা এই কথাটা কেবলই মনে করিয়ে দেয়।

০৬।

আসুন, অসম ভাবে ফিরে আসা এই বিশাল অংশের অল্প কিছু নাম দেখি, এই লিস্টে আছেনঃ

লেঃজেঃ (অবঃ) হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, লেঃজেঃ (অবঃ) আতিক, লেঃজেঃ (অবঃ) নুরুদ্দীন খান, মেঃজেঃ (অবঃ) মজিদ-উল-হক, ব্রিঃজেঃ (অবঃ) ইউসুফ হায়দার, ব্রিঃজেঃ (অবঃ) সাখাওয়াত হোসেন, লেঃকঃ (অবঃ) এ বি এস সফদর, লেঃকঃ (অবঃ) মোস্তাফিজুর রহমান

আরও ছিলেনঃ রিয়ার এডমিরাল (অবঃ) এম এইচ খান, রিয়ার এডমিরাল (অবঃ) সুলতান আহমদ, রিয়ার এডমিরাল (অবঃ) মুহাইমিনুল ইসলাম এবং- এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) এম জি তাওয়াব, এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) এ জি মাহমুদ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) মমতাজউদ্দিন আহমদ, এয়ার ভাইস মার্শাল (অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী

মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে গড়ে ওঠা একটি সেনাবাহিনীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী কোন জাদুবলে বছরের পর বছর “One of the finest officer” তকমা সেঁটে চাকুরিরত থাকেন তা বোঝার জন্য কি রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয়? সিরাজ-উদ-দৌলা বাঙালী হোন বা মুর্শিদাবাদী আমার কিচ্ছু যায় আসে না। কিন্তু, এই নাম গুলি দেখি আর মনে মনে ভাবি মীর জাফর আলী খান নির্ঘাত জাতে বাঙালী ছিল। নইলে তার এত বংশধর আসে কোথা থেকে! কেউ কি বলতে পারেন?

০৭।

ওপরে ৫ম অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে আমি কিন্তু জোর গলায় বলতেই পারিঃ “রাষ্ট্রীয় ভাবে আমার প্রাণের দেশ বাংলাদেশ কখনও যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করেনি।” এজন্যই ৪র্থ অনুচ্ছেদের শেষে ‘সাময়িক ভাবে’ কথাটা যুক্ত করেছিলাম। আমার ধারণা, পাকিস্তানীরাও এটা জানে- নইলে এত তড়পাত না। ওপরের ৫ম অনুচ্ছেদ উল্লিখিত চুক্তিটি আমার জানামতে (যেহেতু কোনও দেশ বাতিল করেনি) এখনও বহাল। অর্থাৎ, পাকিস্তানও রাষ্ট্রীয় ভাবে আমাদের অভিযোগ (মানুক আর নাই মানুক) গ্রহণ করেছে। এখন সোজা আঙ্গুলে (ইয়ে, মার্খোরের তো আঙ্গুল নেই, কেবলই ক্ষুর) ঘি না উঠলেও কিন্তু পাকিস্তানিদের হেগে আসতে বলা যায়। হুঁ হুঁ বাবা- স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মান বলে কথা। কবিগুরু কেন বলেছিলেন ‘যখনি দাঁড়াবে তুমি সম্মুখে তাহার তখনি সে/ পথ কুক্কুরের মত সংকোচে সত্রাসে যাবে মিশে’ সেটা এখন বেশ টের পাচ্ছি। মার্খোরের ছাল পড়া পাকিগুলোকে তো আর ওদেশে গিয়ে তাড়া দিতে সবাই পারব না, সেটা রাষ্ট্রের জন্য তোলা থাক। আর বিদেশের ফেলে অন্তত স্বদেশের কুকুরগুলোর সামনেই নাহয় দাঁড়ান। তাদের অপ-তথ্যের কামড় থেকে নিরীহ মানুষকে রক্ষা করুন। দেখবেন আলো-ভীতু পথ কুক্কুর গুলো অন্ধকারে মিশে গেছে। আর তাতেই ধীরে ধীরে শক্তিশালী হবে আমাদের প্রিয় এই দেশটা। কি, দাঁড়াচ্ছেন তো?


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

হাসিব এর ছবি
  • আফ্রিদীর রিপোর্টে সকালে ঘুম থেকে ওঠার যে প্রাঞ্জল বর্ণনা পড়লাম তাতে সন্দেহ হচ্ছে রিপোর্টারও আফ্রিদীর সাথে এক বিছানায় ঘুমিয়েছে কিনা।
  • ছাগসমাজ ১৯৫জনের প্রসঙ্গ আনার সময় পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙ্গালিদের কথা কখনো বলে না।
সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১।
আমি তো রিপোর্টের আবেগঘন ভাষা দেইখা সন্দ করছিলাম,
আলুর রিপোর্টাররাও মাঝে মাঝে মতিকন্ঠ পড়ে কিনা ইয়ে, মানে...

২।
হুমম, সবই নিরপেক্ষতা, আপ্নে নিরপেক্ষতা উনাদেত্তে বেশি বোজেন? খাইছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্বপ্নহারা এর ছবি

গুরু গুরু

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

____________________________

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমি 'কেমন ছিলেন তাঁরা' লেখাটাতে লিখেছিলাম

এমতাবস্থায় ১৯৭২ সালের ২ জুলাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জনাব জুলফিকার আলী ভুট্টোর মধ্যে ভারতের সিমলায় একটি চুক্তি সাক্ষরিত হয়। যেটাকে আমরা সিমলা চুক্তি হিসাবেই জানি

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তখন ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরই ফলশ্রুতিতে পাকিস্তানও আটক কিছু সেনা কর্মকর্তার বিচারের প্রসঙ্গ উথ্থাপন করে। এভাবে দর কষাকষির এক পর্যায়ে ১৯৭৩ সালের ১৭ এপ্রিল বিশদ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয় যে, ৯০ হাজার পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দী মুক্তির বিনিময়ে পাকিস্তানে আটকে পড়া ১ লক্ষ ৭৫ হাজার থেকে ২ লক্ষ ষ্ট্যান্ডার্ড বাঙালীকে তারা বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে।

১৯৭৩ সালের ২৮ আগষ্ট ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দিল্লি সন্ধিচুক্তি সাক্ষরিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কার্যক্রম শুরু হয়।

আপনার লেখায় আরও কিছু প্রয়োজনীয় অংশ সংযোজন করার জন্য ধন্যবাদ।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
গুরুত্বপূর্ন লেখা প্রৌঢ়দা, লিংকটা যোগ করে দিলাম, অমত নেই আশা করি হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

লাফাং মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

৫ তারা। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

কি, দাঁড়াচ্ছেন তো?

অবশ্যই!

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাঙালিকে দেখায়ো না আঙুল, হয়ে যাবে নিজেই ভন্ডুল

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

তবু কি জাগবে না ছাগুদের হুশ? আগাছার ভিড় ঠেলে বলবে যারা পাপিস্থানিরা বাইঞ্চুত আর তাদের সাপোর্টার রা জারজ।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুঁশ থাকলে ছাগু হয় ক্যাম্নে? চিন্তিত
বলদের দুধ আর মোরগের আন্ডার পুডিং খাইছেননি জীবনে? খাইছে

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

গোছানো লেখা।

এই বিষয়ে ছাগুদের বক্তব্যের সারসংক্ষেপ পাওয়া যায় ডঃ আলী আলগামদির লেটার টু শেখ হাসিনায়

ছাগুদের এই বিদেশি এজেন্টের প্রোপাগান্ডা ও মিথ্যাচারের জবাব দেয়া হয়েছিলো "আলী আলগামদির মিথ্যাচার : জামাতের সৌদি বুদ্ধিজীবী উইং" লেখায়। ১৯৫ জনের বিচার আইন অনুসারে করার প্রতিশ্রুতি নিয়েই সিমলা চুক্তি করা হয়েছিলো, তাদেরকে কোনোভাবেই ক্ষমা করা হয় নাই।

প্রোপাগান্ডা মেশিনের বৈশিষ্ট্য হলো তারা বাঁশের কেল্লা সিস্টেমে এতো বেশি মিথ্যা কথা পুশ করতে থাকে যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে যাচাই বাছাই করে সত্যটা জানার সময় থাকে না, তাদের মধ্যে কনফিউশন সৃষ্টি হয়। ঘোলা জলে মাছ শিকারের মতো তখন ওই কনফিউজড অবস্থার সুযোগ নেয়া হয়।

প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে আপনার কলমের যাত্রা অব্যাহত থাকুক।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

প্রোপাগান্ডা মেশিনের বৈশিষ্ট্য হলো তারা বাঁশের কেল্লা সিস্টেমে এতো বেশি মিথ্যা কথা পুশ করতে থাকে যে, সাধারণ মানুষের পক্ষে যাচাই বাছাই করে সত্যটা জানার সময় থাকে না, তাদের মধ্যে কনফিউশন সৃষ্টি হয়। ঘোলা জলে মাছ শিকারের মতো তখন ওই কনফিউজড অবস্থার সুযোগ নেয়া হয়।

চলুক

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- বলাইদা, আমাদের সবার কিবোর্ডই সচল থাকুক হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

শব্দ পথিক এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমেত প্রয়োজনীয় লেখা। চলুক

----------------------------------------------------------------
''বিদ্রোহ দেখ নি তুমি? রক্তে কিছু পাও নি শেখার?
কত না শতাব্দী, যুগ থেকে তুমি আজো আছ দাস,
প্রত্যেক লেখায় শুনি কেবল তোমার দীর্ঘশ্বাস!''-সুকান্ত ভট্টাচার্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুণ হইছে। মিজান, পিষে ফ্যালো

সুবোধ অবোধ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

স্যাম এর ছবি

সচলায়তনের ২০১৪ এর শুরুটা দারুন লাগছে - আপনার এ লেখাটিও সেই যাত্রার যোগ্য সঙ্গী -
গুরু গুরু

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

লইজ্জা লাগে
নতুন কিছু লিখিনি স্যাম্ভাই,
খালি কয়েকদিন পরপর মনে করিয়ে দেয়া দরকার পন্ডিতের ছাগলটা ছাগলই আছে...
প্রোপাগান্ডা মোতাবেক কুকুর হয়ে যায়নি... তাই হাসি

আমরা সবাই তো একই পথের পথিক কোলাকুলি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ছড়িয়ে দিলাম লেখাটা হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- বাঙালিকে দেখায়ো না আঙুল, হয়ে যাবে নিজেই ভন্ডুল

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

কড়িকাঠুরে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো
চমৎকার হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আনু-আল হক এর ছবি

অসাধারণ না শুধু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লেখা। এবং টানটান সোজাসাপ্টা লেখা। গুরু গুরু

----------------------------
নয় মাসে হলো তিরিশ লক্ষ খুন
এরপরও তুমি বোঝাও কি ধুন-ফুন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তানিম এহসান এর ছবি

চমৎকার। চমৎকার!

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি
সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই প্রয়োজনীয় লিখা। গুরু গুরু

অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

পাকিস্তানে সাম্প্রতিক দূত-তলবের ঘটনায় এই লেখাটা এখন আরো বেশী প্রাসঙ্গিক। পাকিস্তান দাবী করছে যে ৭৪ এর চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ নাকি "ক্ষমা করেছে", আসলেই ৭৪ এ কী বলা হয়েছিলো সেট দেখতেই এই ব্লগে আসা, তবে আপনার লিনকটি এখন আর কাজ করে না।

জেনোসাইডবাংলাদেশের সাইটে সম্পূর্ণ চুক্তিটি পেলাম, সেখানে ১৯৫ জনের প্রসঙ্গে কথাবার্তা দেখলে আপাতদৃষ্টিতে ঐ চুক্তিতে ক্ষমা করা হয়েছিলো বলেই হচ্ছে

Foreign Minister of Bangladesh stated that the Government of Bangladesh had decided not to proceed with the trials as an act of clemency

১৯৫ জনের বাইরে ,দেখলাম এই জেনারেল কথাটা রয়েছে যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এটা "কামনা করেন" যে জনগণ যেন এই গণহত্যা আর ধ্বংসলীলা "ভুলে যায় আর ক্ষমা করে আর নতুন করে শুরু করে"।

the Prime Minister of Bangladesh had declared with regard to the atrocities and destruction committed in Bangladesh in 1971, that he wanted the people to forget the past and to make a fresh start, stating that the people of Bangladesh knew how to forgive.

পাকিস্তান কি তবে এই জেনারেল কথাগুলো ধরেই দাবী করে বসছে যে কোনোরকম বিচার হবেনা বলে বাংলাদেশ কথা দিয়েছে? কেউ যদি বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের পূর্ণ বিবৃতিগুলো এখানে এড করে দেন, তাহলে খুব ভালো হয়।

কৌতুহলী

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখা যাচ্ছে যে আমার পঠনে বেশ কিছু ভুল ছিল, সচলায়তনের সাঈদ আহমেদ তার এই পোস্টে বিস্তারিত বলেছেন এই চুক্তি নিয়ে। সাঈদ আহমেদের গুরুত্বপূর্ণ লেখাটি এই বিষয়ে অবশ্যপাঠ্য।

কৌতুহলী

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।