ম্যাচ শেষে রামদীন পকেট থেকে লাল মোবাইল ফোনটা বের করলেন। বন্ধু মুশফিকুর রহিমকে জ্যামাইকান লাল ওয়াইনে ভাজা মুরগিরোস্টের দাওয়াত দিতে হবে। বন্ধুর কাছেই গতকাল রাতে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস” জেনেছেন তিনি। ম্যাচ শেষে পকেট থেকে লাল মোবাইল বের করলেন আরো একজন কুঁচকানো চামড়ার বৃদ্ধ, মিসবাহ উল হক। ইমরান খান নিয়াজীর নাম্বারে ফোন দিয়ে হু হু করে কেঁদে দিলেন তিনিঃ “ইমরান, ইয়ে কেয়সে গানা গানেকে লিয়ে মুঝে গোয়ামারেঙ্গে লাল কর দিয়া, ম্যায় সমঝে নেহি আতা হ্যায়।” ইমরান ডুকরে আসা অশ্রু সামলে বললেনঃ “৫৩ সালসে মুঝে এয়সা খাঁতা রাহে ভাই, তুম রোনো নেহি, চাচাজী দুখ পায়েঙ্গে। চাচাজী ভি গানা পসন্দ মাত কারেঙ্গে। ইয়ে গানা বহুত খতরনাক হ্যায় ইয়ার। তুম বারমে যাও, আউর দো গ্লাস লালপানি পিতে রাহো, তেরা বিল হাম দেঙ্গে।”
রমিজের কানে দূর থেকে ভেসে আসেঃ ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো...’। গ্যালারিতে প্রবাসী বাঙ্গালিরা বাজাচ্ছে বোধহয়। ওফফ, রুমটা সাউন্ডপ্রুফ হলে বাঁচা যেত। এই বিদেশ বিভুঁয়ে দুটো পয়সার জন্য এত অপমান। মাইক হাতে হড়বড় করে ঝাপসা কিছু কথা বলার চেষ্টা করেন রমিজ রাজা, পাঁড় ব্যাবসায়ী টিভি চ্যানেলে এসব ঝাপসা কথার সময় নেই। মাইক কেড়ে নেন কে যেন, সৌরভ নাকি লারা? জায়ান্ট স্ক্রিনে রমিজের অপ্রস্তুত চেহারা দেখে ভারত মহাসাগরের ওপার থেকে মিটিমিটি হাসেন আতাহার আলি খান। তিনিই মুশফিকুর রহিমকে একটা বিশাল এসএমএস করেছিলেন গতকাল।
রমিজ রাজার নাম মনে করে আবার ফ্যাক করে হেসে দিলেন আতাহার। তাঁর শিশুকাল কেটেছে মফস্বলে, ছাপোষা একান্নবর্তী সংসারে। তখন মাঠ দাপিয়ে বেড়ালেও দুরন্ত আতাহারকে একটা লাল বেলুন কিনে দেয় নি কেউ। পাসের বাসার মোটা ছেলেটার লাল গ্যাস বেলুনটা ছুঁয়ে দেখতে গিয়ে ফাটিয়ে ফেলে দারওয়ানের ধমক খেয়েছিলেন একবার। আরেকবার টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে ফার্মেসি থেকে লম্বামতন অদ্ভুত এক বেলুন কিনে খেলা করতে গিয়ে বড়চাচার কাছে খেয়েছিলেন বিরাশি সিক্কার থাপ্পর। তারপর তাঁর আর কখনও বেলুন নিয়ে খেলা হয়নি। আনমনে লাল বেলুনের কথা ভাবতে ভাবতে মনে পড়ল ফার্মেসির ঐ সাদাটে বেলুনের নামও ছিল রাজা। স্ক্রিনে কাঁচুমাচু রমিজ রাজাকে দেখে আতাহারের ফার্মেসি থেকে আনা বেলুনের মতই লাগল কেন জানি। বিশাল এক গুঁফো বেলুন, গিঁটওয়ালা অদ্ভুত এক বেলুন, উপর্যুপরি ব্যাবহৃত একটি বেলুন।
আতাহার চোখ বন্ধ করে ছেলেবেলার না পাওয়া বেলুনগুলো স্পষ্ট দেখতে পেলেন। ঝকঝকে নীলাকাশে একঝাঁক রক্তলাল বেলুন। ইএসপিএন-এ ধারাভাষ্য দিতে ডাক পান নি তো কি হয়েছে?
বাইরে হর্নের প্যাঁ-পোঁ শোনা যায়। হর্ণ, নাকি বিউগলের করুণ সুর? এর মাঝেই একঘেয়ে স্বরে রায় পড়া হতে থাকে। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায়, লাল কাপড়ে মোড়া রায়। শামসুদ্দিন চৌধুরী আর এস কে সিনহার নাম শুনে একবার হেসে উঠতে গিয়েও থেমে জান কামারুজ্জামান। এই অবস্থায় হাসিঠাট্টা মানায় না। রাজ্জাক ব্যারিস্টারও তো কাদের ভাইরে বাঁচাইতে পারে নাই। শেষমেশ আল্লাহ’র ওপর দোষ চাপিয়ে এই যাত্রা ভেগেছেন। ঐদিকে শিশির মনির চাল্লু পোলা, কিন্তু বয়স বেশিই কম। এতদিনে কিছু করতে পারল না, রিভিউ রিভিউ খেলে আর কতদিন চালাবে? নিজেকে খোঁয়াড়ে রাখা শুয়োরের মত অসহায় লাগে তাঁর। ছেলেবেলায় মক্তবের হুজুর কি সুন্দর কিচ্ছা শোনাতেন। বহুবচ্ছর আগে নাকি পয়গম্বর আব্রাহামের ছুরির নিচে এস্মায়েলের বদলে বেহেস্তী এক দুম্বা গলা পেতে দিয়েছিল। আহা, তাঁর ফাঁসির দড়িতে কি তেমন বদলী কাউকে পাওয়া যাবে? ভাবতে ভাবতে ডোরাকাটা সাদাকালো পোশাকটা ঘেমে ওঠে তাঁর।
একঘেয়ে স্বরে রায় পড়ে চলে কারারক্ষী, লাল কাপড়ে ঢাকা মৃত্যু পরওয়ানা। এককালের দুর্ধর্ষ বদর কমাণ্ডার কামারুকে অভয় দিতেই বুঝি বাইরে কোথায় যেন ম্যা করে ডেকে ওঠে একটা ছাগল। ভয় কাটেনা কামারুর, আরো বেড়ে ওঠে। রায়ে কোথায় যেন হিটলাররে নামোচ্চারণ শুনে শুয়োরের মত সাড়ে ছাব্বিশ ইঞ্চি চওড়া গর্দানের ওপর বসানো শেয়ালের মতন চোখা কানদুটো খাড়া করে সরীসৃপের মতন নিস্পলক চোখে একচিলতে জানালার বাইরে তাকান তিনি। হিটলারের আত্মজীবনী তাদের পাঠ্য ছিল। আহা, কত ইহুদীকেই না নিকেশ করেছে ব্যাটা। গুরু তুমি নমস্য। ভাবতে ভাবতে আবার মেজাজ খিঁচড়ে ওঠে তাঁর। ব্যাটা কাপুরুষ কাঁহিকা। পালিয়েছ তো সময় মত। আমার তো আত্মহত্যার উপায়ও নেই! এখন উপায়?
লাল সালু কাপড়ে ঢাকা রায়ের প্রতিটি শব্দ একঘেয়ে স্বরে পড়ে চলে নির্বিকার কারারক্ষী। শুনতে শুনতে ফাঁসির কথা ভেবে আবার শিউরে ওঠেন শেরপুরের ত্রাস। আচ্ছা, ফাঁসিতে কি খুব কষ্ট হয়? কাদের ভাই নাকি মরার আগে কান্নাকাটি করেছিল খুব। অধ্যাপক ব্যাটা তো বেশ করে রাজকীয় বিছানায় শুয়েই টেঁসে গেল, তাও আবার কালীপূজোর দিনে। আমারই শালা কপাল খারাপ। ফেব্রুয়ারি, মার্চ আর ডিসেম্বর মাসটাতেই যত ঝামেলা। কাদের ভাই গেল ডিসেম্বরে। এখন ফেব্রুয়ারি, সামনে মার্চ, একমাত্র পয়া মাস আগস্ট তো বহুদূর। নিজেই নিজেকে বোঝানঃ ‘উপায় নাই গোলাম হোসেন, থুক্কু কামারুজ্জামান।’ আনমনে অবাক হয়ে ভাবেন- ‘আচ্ছা, আমি যেগুলোকে মারলাম সেগুলো ভয় পেল না কেন?’ শেষকালে এসে বিশ্বাস খোঁচা খায় কামারুজ্জামানের- “তবে কি আল্লাহ আসলে ঐ পক্ষে ছিলেন? নুনু না কাটা হিন্দুদের পক্ষে? ভাত খাওয়া দুবলা বাঙ্গালীদের পক্ষে?” ওদিকে জেলখানার বাইরে সাংবাদিকদের সামনে শিশির মনির মুখ শক্ত করে লিখিত বিবৃতি পড়েনঃ “কামারুজ্জামান শক্ত আচ্ছেন... ব্লা ব্লা ব্লা... কামারুজ্জামান অনুতপ্ত নন... ম্লা ম্লা ম্লা... এই কামারুজ্জামান সেই কামারুজ্জামান নন... ম্যাঁ ম্যাঁ ম্যাঁ...”
কামারুজ্জামান এর ঝাপসা হয়ে আসা দৃষ্টিতে ভাসতে থাকে লালুসালুর লাল রঙ। চারিদিকে লাল, এতটুকু সবুজ নেই কোথাও। বাইরে দূরে একটা প্রভাতফেরী যাচ্ছে। ধীর লয়ের গান ভেসে আসছে- “আমার ভায়ের রক্তে রাঙ্গানো...”। রাঙ্গানোর কথা শুনে মনে পড়ল, ফরমান আলি তাকে পূর্ব পাকিস্তানের সবুজ রাঙ্গিয়ে লাল করতে বলেছিলেন। ভয়ে জ্ঞান হারানোর আগে বিড়বিড় করে দুটো উর্দু গালি দিলেন কামারুজ্জামান। গালির প্রাপক কি হিটলার? গোলাম আজম? কাদের মোল্লা? ফরমান আলি? ফরমান বাহক? ট্রাইবুনালের বিচারক? নাকি শাহবাগ? ঠিক বোঝা গেল না।
আউট!
মুখে আর খানিকটা রক্ত জমিয়ে বেগুনী বানিয়ে আস্তে করে উঠে যায় মেহেরজান। কোনায় বসা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ডঃ নজরুলের কাছে গিয়ে বসে সে। নারীবান্ধব বলে নজরুলের কুখ্যাতি আছে, ছেলে ছোকড়ারা আড়ালে তাকে লুচ্চা নজরুল বলেই ডাকে। জুনিয়র শিক্ষিকা আর সিনিয়র ছাত্রীরা অবশ্য তাকে আসিফ নামেই ডাকে। মেহেরজানের কাঁদোকাঁদো লাল টুকটুকে মুখখানার দিকে তাকাতে পারলেন না তিনি, আড়চোখে উন্নত বুকের দিকে তাকালেন বরাবরের মত। মেহেরজান বোঝে বাবার বয়সী হলেও নজরুলের যৌবনের কমতি নেই, যাকগে বেচারার বৌ ভেগে গেছে, একটু চাওয়া থাকতেই পারে। তাওতো রুমীর মতন দুর্মূখ না বুড়োটা। মেহেরজান একটু ফুঁপিয়ে উঠে আহ্লাদ করে ডাকেঃ “আসিফ ভাই!” চোখ মোছার ছলে ডঃ নজরুলের হাতটা মেহেরজানের গাল ছুঁয়ে যায়। মুখে হাত চাপা দিয়ে ফুঁপিয়ে ওঠে মেহেরজান, হাত নামাবার সময় একপাশের ওড়না সরে গিয়ে আঁটসাঁট কামিজের নিচে মাংসল বামস্তনটা ডঃ নজরুলের মুখের দুইঞ্চি দূরে দুলে ওঠে। মেহেরজানের অবশ্য তেমন তাড়াহুড়ো নেই। ধীরেসুস্থে নিচু হয়ে ওড়না তোলার ফাঁকে ডঃ নজরুল লোলুপ দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সেদিকে। হঠাৎ রুমীর চোখে চোখ পড়তে লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নেন তিনি। কি করবেন ভেবে না পেয়ে শুন্য প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে কি যেন খোঁজাখুঁজি করেন। তারপর আড়চোখে রুমীর দিকে তাকিয়ে মেহেরজানকে বলেনঃ “পাকিস্তান সমর্থন করা যেতেই পারে এটা যেমন ঠিক, ওয়েস্ট ইন্ডিজের নামের মধ্যে ইন্ডিয়া আছে এটাও কিন্তু ঠিক। আমিও পাকিস্তানের সমর্থন করি, কিন্তু আমাদের স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিকভাবে ভাবতে হবে। তাছাড়া যদিও আজকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, সবার মাতৃভাষা তো আর বাংলা নয়। তবে, রমিজ রাজার মত আন্তর্জাতিক মানের একজন বিশ্লেষকের মাতৃভাষা উর্দূকে আমাদের সম্মান জানাতে হবে এটা যেমন ভুল নয়, তেমন খেলার সাথে রাজনীতি মেশাতে হয়না এটাও বেঠিক নয়।” মেহেরজান কিছুই না বুঝে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। আড়চোখে রুমিকে অন্যমনস্ক দেখে মেহেরজানের গালে প্রায় নাক ছুঁইয়ে ডঃ নজরুল ফিসফিসয়ে বললেনঃ “একটু পরে আমার রুমে এসো, তখন বুঝিয়ে বলব।” লাল চা খেতে খেতে সাইয়েদ জামিলের একটা নতুন কবিতা মেহেরজানকে আবৃত্তি করে শোনাবেন ভাবতে ভাবতে উঠে গেলেন তিনি।
আধাঘন্টা পর এক রানে পাকিস্তানের চার উইকেট পড়ে যাবার দৃশ্য দেখে হতভম্ব মেহেরজানের ঘোর তখনও কাটেনি। ডঃ নজরুল সেই যে গিয়েছেন আর আসেননি। রুমি আর কয়েকটা চ্যাংড়া লেকচারার বসে আছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। মেহেরজান দই না খেয়েই উঠে পড়লেন। খিচুড়ি নাকি চমৎকার হয়েছে বলছিল সবাই, তিনি অবশ্য টের পাচ্ছেন না, বিস্বাদ লাগছে সবকিছু। আস্তে করে টিচার্স রুমের পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়েই রুমির সামনে পড়লেন তিনি। কোনদিক দিয়ে বেরুল বেল্লিকটা? আশ্চর্য তো! হাসি হাসি চোখে পূর্ণদৃষ্টিতে মেহেরজানের চোখের দিকে তাকাল রুমি। অন্তর্ভেদী সেই দৃষ্টির সামনে নিজেকে বে-আবরু মনে হল মেহেরজানের। আশ্চর্য! এই ছেলেটা আসিফ ভাইয়ের মত আড়চোখে বুকের দিকে তাকায় না কখনও, তবু কেমন জানি লাগে। ভয়ে ভয়ে কৈফিয়ত দিল মেহেরজানঃ “খেলার যা অবস্থা এখানে থাকলে তো মানসম্মান নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে, তাই চলে যাচ্ছি।” হাসিমুখে কোমল অথচ গম্ভীর স্বরে উত্তর এলঃ “বাঙালি হয়েও পাকিস্তানের সমর্থন করেন ম্যাডাম, তাও আবার আজকের দিনে! মানসম্মান আছে কোথায় যে টানাটানি পড়বে?” সরাসরি চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা হাসিহাসি মুখটা দেখে গা গুলিয়ে এল মেহেরজানের। গত সপ্তাহে অন্ধকার গলিতে ডঃ নজরুলের সাথে বাড়ি যাবার কথা মনে পড়ল তার। বুড়োটা সোহাগের কথা বলতে বলতে যখন তার শরীরের নরম মাংস খুঁজে খুঁজে হাত বুলিয়েছে তখনও খারাপ লাগেনি, লজ্জা ভেঙ্গে এলে নিজেই পালটা বুড়োর জায়গামত শক্ত মাংসে খামচে দিয়ে হি হি করে হেসেছে। অথচ এই ছেলেটা যে কিনা শরীরের দিকে ভালমত তাকায়ও না, সে এভাবে স্রেফ মুখে মুখে ইজ্জতহানি করে ছেড়ে দিল।
তপ্ত রোদের মধ্যে কলেজের মাঠে দাঁড়িয়ে কল্পনায় মেহেরজান দেখতে পেল আসলে ক্রাইস্টচার্চের গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে আছে সে। পাকিস্তানের একটা উইকেট পড়ার সাথে সাথে উৎফুল্ল জনতা যেন একটা একটা কাপড় খুলে নিয়ে যাচ্ছে তাঁর। নাসির জামশেদ আউট হতেই ওড়নাটা ছিনিয়ে নিয়ে গেল কে যেন। ইউনিস খান আর হারিস সোহেলের সাথে আউট হয়ে গেল তাঁর সুতির কামিজ আর চুড়িদার সালওয়ার। অধিনায়ক মিসবাহ আউট হতে হতে টুকটুকে লাল সিল্কের অন্তর্বাসদুটোও ছিনিয়ে নিয়ে গেল কারা যেন। এবার ক্রিজে নেমেছে শহিদ আফ্রিদি। গ্যালারিতে নগ্ন দর্শক দেখে চিয়ারলিডার ভেবে কয়েকবার এবডোমেন গার্ড ঠিক করলেন আফৃদি। প্রাণপণে অন্তত হাত দিয়ে নুন্যতম ইজ্জত ঢাকার শেষ চেষ্টা করলেন মেহেরজান। কিন্তু তাঁর একপাশে বসে বামহাত আঁকড়ে ধরে রেখেছে ডঃ নজরুল আর অন্যপাশে বসে ডানহাত খামচে ধরেছে রমিজ রাজা, নজরুলের বামহাত আর রাজার ডানহাত কেন জানি যার যার পকেটে। আর ভাবতে না পেরে প্রায় দৌড়েই ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে গেলেন মেহেরজান।
মেহেরজান গলগল করে বেসিনে মুখ চেপে বমি করছেন। আজ সকালের খিচুড়িতে ঘি একটু বেশিই হয়ে গেছে। সবার পেটে আবার সবকিছু সয় না। পাকিস্তানের উইকেটের মত হড়হড় করে খিচুড়ির হলদে বমি ড্রেনে ভেসে যাচ্ছে, তার সঙ্গে একঝলক টাটকা রক্তের ধারা। গোলাপি কিংবা কমলা নয় টকটকে লাল সে রক্ত। এনাটমি যাই বলুক, হৃদয়ের সাথে পাকস্থলীর দূরত্ব খুব বেশি নয় বোধহয়।
কৈফিয়তঃ প্রথম গল্পের অনুপ্রেরণা এখান এবং ওখান থেকে, দ্বিতীয়টার অনুপ্রেরণা এখানে, ওখানে এবং সেখানে, আর তৃতীয়টা জীবন থেকে নেয়া, একেবারে টাটকা ঘটনা, কেবল বর্ণনাটুকুই আমার।
মন্তব্য
সাথে পাপিদের নাস্তানাবুদের সুখবর
অবশ্য আলুপেপার ওয়ালাদের জন্য দুঃস্বপ্নের বর্ণনা পাঠ করে আরও একদফা হাসলাম http://goo.gl/YchtW6
"অবশ্য আলুপেপার ওয়ালাদের জন্য দুঃস্বপ্নের বর্ণনা পাঠ করে আরও একদফা হাসলাম" বলে কিনা ভয়াবহ ধাক্কা!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আলু রকস
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
চমৎকার!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দেবদ্যুতি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আদি, অকৃত্রিম, খাঁটি, নির্ভেজাল তিনখান আর্ন্তজাতিক মানের গপ্পো পইড়া খুশিতে লাল হইয়া গেলাম
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
ঠিক কোন জায়গায়? হুমম!!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
পাপী চিন্তা ভাবনা মন থেইকা নামান, সাচ্চা মুসলমান হওনের লাইনে থাকুন
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
বুচ্ছি, আন্নের মমিন লাল হইছে ব্যাপার না!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দারুণ। খুব।
স্বয়ম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
চরম !!!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সালাম...বরকত...রফিক...জব্বার...এক একটা আতংকের নাম ওদের কাছে। তখনও ছিল , এখনো আছে ও ভবিষ্যতে ও থাকবে। ধন্যবাদ গুরু , একবারে ফাটাফাটি লিখলেন।----
--------
রাধাকান্ত
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
"এনাটমি যাই বলুক, হৃদয়ের সাথে পাকস্থলীর দূরত্ব খুব বেশি নয় বোধহয়"---(১)
এই পাপিস্থানী বাষ্টার্ড এর বাচ্চাদের যারা সাপোর্ট করে তাদের কে কি বলে উল্লেখ করা যায়!
----------
রাধাকান্ত
ফরহাদ খানের একটা বই আছে, গালি অভিধান, কাজে লাগাতে পারেন
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার অফিসে পাপিস্থানি ও বিম্পি জামাতের ছাগু আছে অনেক ,আমার সকাল শুরু ওরা গালি দিয়া । ভাবতাছি আমি একখান বানামু কিনা অভিধান! কি বলেন!
--------------------
রাধাকান্ত
মুহম্মদ জাফর ইকবালের "নুরুল ও তার নোটবই" পড়েছেন?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখার মধ্যে ইঙ্গ-ইন্দো-ইজরায়েলী ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি ইঙ্গকে চাইলে মার্কিনি দিয়ে প্রতিস্থাপিত করতে পারেন।
আমি আশাবাদী মানুষ, কিন্তু বাংলাদেশে আমি যা দেখছি তাতে দিনদিন হতাশ হয়ে পড়ছি। জ্যামিতিক হারে পাপীস্তানী ছাগুদের বংশবৃদ্ধি দেখছি।
এমন লেখা জারি থাকুক
হে হে হে
হ
হুমম
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সাঈদ ভাইজান আর কয়েক বছর পর তো দেখবেন কায়েদে আজম রে নিয়া নতুন সুরের ধারা শুরু হইবো !আর শুরু করবো ছাগুদের মাইয়া পোলারা। তখন বুঝবেন বংশ বৃদ্ধি কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি????
-----------------
রাধাকান্ত
ভালো মিলাইছেন
বস
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ভালো থিম, ভালো লেখা। ভালো লেগেছে পড়তে। তবে কিছু জায়গায় আরেকটু মেদ ঝরালে মনে হয় আরও তীক্ষ্ণ হতো। নিতান্তই ব্যক্তিগত মত।
পরেরবার হবে, এএএএনশাল্লা!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
লেখাটা অাগেই পড়েছিলাম। মন্তব্য করা হয়নি। তবে মনে অাছে, পড়বার সাথে সাথে মনে হয়েছিল, সচলের মজারু মানুষটা ধাপে ধাপে এত সুন্দর করে গল্পের সিঁড়ি ভাঙতে পারে! জায়গামত খোঁচা দিতে পারে! অারো লিখুন প্লিজ লাল, নীল গল্পগুলো, যা লিখবার সাহস নেই অনেকের।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
হৈমিয়া, আন্নে লেখক মানুষ। এইসব শরমের কথা লোকের সামনে কইয়া লইজ্জা দ্যান কিল্লাই? তিন নাম্বারটা আসলে সত্য ঘটনা, ঐটা যখন চোখের সামনে ঘটতাছিল তখন এক নাম্বার গল্পটা কেম্নে জানি মাথায় আসল। মাঝে দুই নাম্বারটা কেম্নে লিখছি জানিনা, ম্যাটল্যাবে লেখা মনে হয়।
লাল-নীল গপ্প লিখতে চাইনারে ভাই, আমি বিজ্ঞানের মানুষ। বিজ্ঞান নিয়ে দুটো ব্লগিং করব ভেবেই এসেছিলাম, কেমনে কি হয়ে গেল! সচল একটি অভিশাপ! যাকগে, এই ফাঁকে একটু আমিষুলপনা করে যাই। আধুনিক ঠাকুরমার ঝুলি পড়েছেন কি? না পড়লে গোলামকুমার পড়ে দেখেন। এই হল- আদিপর্ব, মধ্যপর্ব আর শেষপর্ব।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনার এমন কোনো মন্তব্য নেই যে আমি শব্দ করে হাসি না, আমার পোলাপানগুলা আমার হাসি দেখে ভয় পেয়ে যায়।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
আঁই কি কইচ্চি?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন