বিদ্রঃ ২৭ মে, ২০১৫ বেলা ১০.৪৫ ঘটিকায় কিঞ্চিত সম্পাদনা করা হল। ধন্যবাদ।
দেশে (ও বিদেশে) এখন ধর্মানুভূতির কলিকাল চলে। মানুষ স্বীয় ধর্মের মানবিক অংশটুকু মানুক আর নাই মানুক সহিংস অংশটুকু বেছে বেছে খুঁজে বের করে কঠোরভাবে মানার ক্ষেত্রে পোপের চাইতেও বড় ক্রিশ্চান হয়ে উঠছেন। কেউ ধর্মরক্ষার্থে কোপাচ্ছেন, মডারেটরা সযত্নে ছহীহ স্কটিশ গামছা দিয়ে সেই আঘাতের রক্ত বেশ করে মুছে ফেলছেন। অতঃপর ওম শান্তি। কেউ আবার আগাম হিসেবপত্র করে ৯৮% এর রক্তচক্ষু দেখাচ্ছেন। এর মাঝে মারা পড়ছে দু-একটা বেয়াড়া নাস্তিক (মানুষ নয় কিন্তু, খুউপ খিয়াল কইরা)। এমনকি, আমাদের মূল দলিল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান পর্যন্ত ২ক ধারায় জানাচ্ছে-
প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম “এক্স”, তবে “ডব্লিউ”, “ওয়াই”, “জেড” সহ অন্যান্য ধর্মপালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবেন।
আবার ধারা ১২ জানাচ্ছে-
ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য(ক) সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতা
(খ) রাষ্ট্র কর্তৃক কোনও ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান
(গ) রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যাবহার
(ঘ) কোনও বিশেষ ধর্মপালনকারী ব্যাক্তির ওপর বৈষম্য বা তাহার ওপর নিপীড়নবিলোপ করা হইবে।
আচ্ছা, ১২ (খ) এবং ২ক দুটিই থাকার প্রয়োজনীয়তাটি কেউ কি আমাকে বুঝিয়ে বলতে পারবেন? লুঙ্গির ওপরে কি কেউ জাঙ্গিয়া পড়ে? কিংবা শার্টের ওপর স্যান্ডোগেঞ্জি? গামবুটের ওপরে মোজা? ওভারকোটের ওপরে শার্ট? শাড়ির ওপরে ব্লাউজ? (আর না আগাই, লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টারের কথা ভুলে যান, ওটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা)।
দেশের সংবিধানে উল্লেখ না থাকলেও দেশের একজন জাতীয় কবি আছেন। ফি-ঈদের আগের রাতে তাঁর গান না বাজলে ঈদ শুরু হয়না। কিংবা তাঁর বিশেষ কোনও কবিতা আবৃত্তি না করলে মিলাদ শরীফ আগায় না। তাঁর লেখা শ্যামা সঙ্গীত গুলোও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তেমন মুহুর্মুহ ব্যাবহৃত হয় কিনা তা আমার জানা নেই। তবে ভাটিয়ারীতে লেফট-রাইট করার সময়ও ঢাকের তালে তাঁর গানই বাজে বলে জেনেছি। কিন্তু জাতীয় কবিকে কেবল উপাসনালয় আর মার্চপাস্টে বেঁধে ফেললে জাতির কপালে শনি আছে। অবশ্য, তাঁর রচনাকে ঐরকম কিছু ক্ষেত্রে বেঁধে রাখতে না পারলে বোধহয় ‘জাতীয় কবির’ কপালেই শনি আছে। তবু, কেবল শনির বলয়ের ভয় করে বসে থাকলে তো আর দুনিয়া এগুবে না, আমরাও এগুব না। জাতীয় কবিকে কেবল ঠুঁটো জগন্নাথ শো-পিস বানিয়ে রাষ্ট্রীয় শো-কেইসে সাজিয়ে না রেখে তাঁর দর্শন নিয়ে একটু-আধটু আলোচনা হোক।
আলোচনা হোক সাম্যবাদীর কবিতাগুলো নিয়ে। আলোচনা হোক আজো প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকা-
হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোন জন
কাণ্ডারী বল ডুবিছে মানুষ সন্তান মোর মা’র
(কাণ্ডারী হুঁশিয়ার / সর্বহারা, প্রকাশকাল-১৯২৬)
এই কবিতা নিয়ে। কিংবা, মানুষ জানুক জাতীয় কবির উপলব্ধি-
মিথ্যা শুনিনি ভাই
এই হৃদয়ের চেয়ে বড় কোনও মন্দির-কাবা নাই
(সাম্যবাদী / সাম্যবাদী, প্রকাশকাল-১৯২৫)
সেইসঙ্গে, জাকির নায়েকের লেকচার শুনে মাথা-পেট গুলিয়ে ওঠার আগে মানুষ জানুক-
শিহরি উঠো না শাস্ত্রবিদেরের ক’রোনা ক’ বীর ভয়
তাহারা খোদার খোদ ‘প্রাইভেট সেক্রেটারি’ তো নয়
(ঈশ্বর / সাম্যবাদী, প্রকাশকাল-১৯২৫)
হাটহাজারীর থেকে আসা পঙ্কিল লালঝরা বানী শোনার আগে মানুষ অন্তত জানুক-
মানুষেরে ঘৃণা করি
ও কারা কোরাণ বেদ বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল! – মুর্খরা সব শোন
মানুষ এনেছে গ্রন্থ; গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনও
(মানুষ / সাম্যবাদী, প্রকাশকাল-১৯২৫)
হেফাজত, আনসারুল্লাহ কিংবা একিউআইএস এর প্রেস রিলিজ পাবার আগে জানা দরকার-
হেথা সবে সমপাপী
আপন পাপের বাটখারা দিয়ে অন্যের পাপ মাপি
জবাবদিহির কেন এত ঘটা যদি দেবতাই হও
টুপি পড়ে টিকি রেখে সদা বলো যেন তুমি পাপী নও
পাপী নও যদি কেন এ ভড়ং ট্রেডমার্কার ধুম
পুলিশি পোশাক পরিয়া হয়েছ পাপের আসামী গুম
(পাপ/ সাম্যবাদী, প্রকাশকাল-১৯২৫)
দেলাওয়ার হোছাইন ছাইদি’র অশালীন ওয়াজ শুনে ফেলবার আগেই জানা থাকুক-
সাম্যের গান গাই
আমার চক্ষে পুরুষ রমণী কোনও ভেদাভেদ নাই
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর
(নারী / সাম্যবাদী, প্রকাশকাল-১৯২৫)
মনে রাখবেন, কবি নিজেই তাঁর অবস্থাটি বর্ণনা করে গেছেন ট্রেডমার্ক ছন্দের ভাষায়-
মৌ-লোভী যত মৌলবি আর মোল-লা’রা কন হাত নেড়ে
দেব-দেবী নাম মুখে আনে সবে দাও পাজিটার জাত মেরে
ফতোয়া দিলাম কাফের কাজী ও
যদিও শহীদ হইতে রাজি ও
আমপারা পড়া হামবড়া মোরা এখনও বেড়াই ভাত মেরে
হিন্দুরা ভাবে পার্শী শব্দে কবিতা লেখে ও পা’ত নেড়ে
(আমার কৈফিয়ত-৪ / সর্বহারা, প্রকাশকাল-১৯২৬)
দেখে কি মনে হয় যে এটি প্রায় সাত-আট দশক আগে লেখা? এখনও প্রাসঙ্গিক মনে হয় কি?
কবিতার পরে তীব্র আলোচনা হতে পারে জাতীয় কবির প্রবন্ধ নিয়েও। আমাদের সাংবিধানিক রাষ্ট্রধর্মগুলোর বৃহত্তমটির একাংশের চরিত্র চিত্রণ করে তিনি অনেক আগেই বলে গিয়েছেন-
মওলানা মৌলবি সাহেবকে সওয়া যায়, মোল্লাও চক্ষুকর্ণ বুজিয়া সহিতে পারি, কিন্তু কাঠমোল্লার অত্যাচার অসহ্য হইয়া উঠিয়াছে। ইসলামের কল্যাণের নামে ইহারা যে কওমের জাতির ধর্মের কি অনিষ্ট করিতেছেন তাহা বুঝিবার মত জ্ঞান নাই বলিয়াই ইহাদের ক্ষমা করা যায় না। ইহারা প্রায় প্রত্যেকেই ‘মনে মনে শাহ ফরীদ, বগল মে ইট’। ইহাদের নীতি ‘মুর্দা দোজখ মে যায় আওর বেহেশত মে যায়, মেরা হালুয়া রুটি সে কাম’।
তরুণের সাধনা (১৯৩২ সালের ৫ ও ৬ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের* নাট্যভবনে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম
তরুণ সম্মেলনের সভাপতি রূপে কবি কাজী নজরুল ইসলাম এই অভিভাষণ প্রদান করেন।)[ * হায়, সেই সিরাজগঞ্জ আজ প্রবলভাবে ছাগু অধ্যুষিত এলাকা - লেখক ]
কবির পরম সৌভাগ্য যে তিনি ভারতের পিস্টিভি দেখে যান নাই, কিংবা ঘরে ঘরে মডারেট নামী নব্যমোল্লাদের দেখেন নাই। তাছাড়া কবি প্রথম আলো পড়ার সুযোগ পান নাই বিধায় তাঁর অর্ধ-মিতা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মতন যদি-কিন্তু-তবে ভাষা আয়ত্ব করতে পারেন নাই। কেবল সমস্যার কাঁদুনি না গেয়ে সাফ সাফ সমাধান বাতলেছেন-
‘দুষ্ট গরুর চেয়ে শুন্য গোয়াল ভাল’ নীতি অবলম্বন না করিলে সভ্য জগতের কাছে মাদের ধর্ম, জাতি আরো লাঞ্চিত ও হাস্যাস্পদ হইবে। ইহাদের ফতুয়া ভরা ফতোয়া। বিবি-তালাক ও কুফরির ফতোয়া তো ইহাদের জাম্বিল হাতড়াইলে দুই-দশ গণ্ডা পাওয়া যাইবে। এই ফতুয়াধারী ফতোয়াবাজদের হাত থেকে গরীবকে কেউ বাঁচাইতে যদি কেহ পারে ত সে তরুণ। ইহাদের হাতের ‘আষা’ বা যষ্টি মাঝেমাঝে আজদাহা রূপ পরিগ্রহ করিয়া তরুণ মুসলিমদের গ্রাস করিতে আসিবে সত্য, কিন্তু এই ‘আষা’ দেখিয়া নিরাশ হইয়া ফিরিলে চলিবে না। এই ঘরোয়া যুদ্ধ- ভাইয়ের সহিত, আত্মীয়ের সহিত যুদ্ধই সর্বাপেক্ষা বেদনাদায়ক। তবু উপায় নাই। যত বড় আত্মীয়ই হোউক তাহার যক্ষা বা কুষ্ঠ হইলে তাহাকে অন্যত্র না সরাইয়া উপায় নাই। যে হাত বাঘে চিবাইয়া খাইয়াছে, তাহা কাটিয়া ফেলিয়া দেয়া ছাড়া প্রাণরক্ষার উপায় নাই।
তরুণের সাধনা (প্রাগুক্ত)
কি ভয়াবহ কথা। কবি একথা বলেন ১৯৩২ সালে, বঙ্গীয় মুসলিম তরুণ সম্মেলনে সভাপতির অভিভাষণে। ২০৩২ সালে কি এই অভিভাষণ হাটহাজারী থেকে আসবে? সে দিন দেখতে না চাইলে আশু নজরুল দর্শনের প্রচার প্রয়োজন। এরোমেটিক সাবান কিংবা ম্যাগি নুডলসের মতন ‘হালাল’ নজরুল নন, খণ্ডিতভাবে ছেঁকে তোলা নজরুল নন, ওপরের উদ্ধৃতির মতন ‘দুর্মুখ’ নজরুলকে চাই। জাতীয় কবি’র দর্শন হোক জাতীয় চেতনা গঠনের অন্যতম উপাদান।
সবশেষে, সেসময় কম্পমান ‘অখণ্ড’ ভারতবর্ষের মরণশয্যায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় থেকে একটু ঘুরে আসি। উদভ্রান্ত সেই সময়ের চিত্রটি কবির ভাষ্যে-
দেখিলাম আল্লার মসজিদ আল্লা আসিয়া রক্ষা করিলেন না। মা-কালীর মন্দির মা –কালী আগলাইলেন না। মন্দিরের চূড়া ভাঙ্গিল, মসজিদের গুম্বজ টুটিল। আল্লার এবং কালীর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না। আকাশ হইতে বজ্রাঘাত হইল না মুসলমানের শিরে। আবাবীলের প্রস্তর বৃষ্টি হইল না হিন্দুদের মাথার ওপরে।এই গোলমালের মধ্যে কতকগুলি হিন্দু ছেলে আসিয়া গোঁফদাড়ি কামানো দাঙ্গায় হত খায়রু মিয়াকে হিন্দু মনে করিয়া ‘বোল হরি হরি বোল’ বলিয়া শ্মশানে পোড়াইতে লইয়া গেল। এবং, কতকগুলি মুসলমান ছেলে গুলি খাইয়া হত দাড়িওয়ালা সদানন্দ বাবুকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়িতে পড়িতে কবর দিতে লইয়া গেল।
মন্দির ও মসজিদ চিড় খাইয়া উঠিল। মনে হইল যেন উহারা পরস্পরের দিকে চাহিয়া হাসিতেছে।
(মন্দির ও মসজিদ / রুদ্র মঙ্গল, প্রকাশকাল-১৯২৭)
অবশ্য বজ্র কিংবা আবাবীলের আক্রমণ এখনও অপ্রকাশিতই আছে। সেজন্য অধৈর্য ভক্তরা প্রায়ই বজ্রকে চাপাতি বানিয়ে হয়ে ওঠেন দু-পেয়ে আবাবীল। নজরুল এ সময়ে জন্মালে বুঝতেন বজ্র সময়মত আঘাত হানে কি না হানে। আর মরার পরে ‘ব্লগার’ উপাধি যে পেতেন, তা নিশ্চিত।
এভাবে, জাতীয় কবির দর্শন ভালভাবে আলোচনা করা গেলে ১২’র ঘাড়ের ২ক কিংবা প্যান্টালুনের ওপরে আঁট করে চেপে বসা জাঙ্গিয়া আপনা আপনিই খসে পড়বে। আর কিছুতেই কিছু না হলে বরং চলুন লিস্টের ৮৫ নম্বরে কাজী নজরুল ইসলামের নামটা তুলে দিয়ে শাপলা চত্বরে কিংবা হাটহাজারীতে গিয়ে ফাঁসি চাই। চাইলে কবরের ধুলো-মাটির ওপরে দুটো চাপাতির কোপও দেয়া যেতে পারে। রক্ত বেরুবার ভয় নেই, মডারেট বাহিনীর কষ্ট কম হবে। কেবল ধুলো ঝাড়লেই চলবে।
যে সব বই থেকে টুকেছিঃ
১। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান / আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, অক্টোবর-২০১১
২। সঞ্চিতা / নজরুল ইন্সটিটিউট, নবম সংস্করণঃ জানুয়ারি-২০০৫
৩। নজরুলের প্রবন্ধ সমগ্র / নজরুল ইন্সটিটিউট, দ্বিতীয় সংস্করণ (পঞ্চম মুদ্রণ) ফেব্রুয়ারি-২০১৩
৪। নজরুল রচনাবলী - প্রথম খণ্ড / বাংলা একাডেমি, জুন ২০১২
পুনশ্চঃ গত পরশুদিন রেলস্টেশনে এই বইটা দেখে লোভ সামলাতে পারিনাই।
অচিরেই রিভিউ আসিতেছে। লাইনে থাকুন, অশেষ ফায়দা হবে। সকলকে জা’ঝা।
১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২২ / ২৫ মে ২০১৫
মন্তব্য
রিভিউ পড়ার জন্য লাইনে খাড়াইলাম।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দরকারি একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কারো মতে নজরুল তিন প্রকার। কবি নজরুল, বিদ্রোহী নজরুল, প্রেমিক নজরুল(কিছু গবেষক লুল নজরুলও বলেছেন)।
আবার কারো মতে নজরুল দুই প্রকার। এক-মুসলিম নজরুল, দুই-কমিনিস্ট নজরুল। আপনি দুই নম্বর নিয়া লিখলেন। এই যুগে হলে নজরুল নাস্তিক ব্লগার উপাধি পেতেন কোন সন্দেহ নেই। সেই হিসেবে নজরুলকে আমরা ব্লগার নজরুলও বলতে পারি(নজু ভাইয়ের আপত্তি না থাকলে)
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সৈনিক নজরুল, হাবিলদার নজরুল, হিন্দু নজরুল, মুসলিম নজরুল, নাস্তিক নজরুল, মুরতাদ নজরুল এমন পোচুর ভাগাভাগি আছেরে ভাই। তয়, একখানে সবাই একমত। দার্শনিক নজরুলকে সবাই শাক দিয়া ঢাইকা রাখার চেষ্টা করে। জাতীয় কবির সম্মানার্থেই মাছটা বের করে আনা দরকার।
আর হ্যাঁ, নজরুলের প্রবন্ধ পইড়া বুঝলাম- ব্লগার হইলে উনি নির্ঘাত সচলে লিখতেন।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এমন বাণীর জন্যে সচলে রামদা আর চাপতির সংযোজন যথাযথ ছিলো কিন্তু আপসুস সচলে নাই
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
একে-ফট্টিসেবেন চালায়া শখ মিটতাছেনা? উগ্রতা পরিহার করুন!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সাত সকালবেলা, মিহি সুরের সঙ্গীত শ্রবণ করিতে করিতে, বালতি ভর্তি চা পান করিতে করিতে, মৃদু মন্দ বাতাসে দুলিতে দুলিতে ব্লগে ঢুকিলাম, চা আটকে গেলো গলায়!
যাহোক, আমিও নজরুল ইসলামের ফাঁসি চাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
শুধু আপনার জন্যই ডিস্ক্লেইমার দিলাম, তাও?
এখানে চাইলে হবে না, হাটহাজারী যেতে হবে!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
১। শিরোনাম খানির আগে ’কবি’ যোগ করিলে সকল প্রকার দ্বিধা-দ্বন্দের অবসান ঘটে। চারিদিকে কত নজরুল
২। পোষ্ট খানি পড়তে পড়তে ভাবছিলাম, কাহিনী কি হাসিব ভাই স্যাটায়ার লেখা শুরু করলো কবে থেকে? (বিষয় হইলো আপনাদের দুজনের প্রোফাইল পিক একই, তাই এমন ভুলের জন্ম)
৩। অর্ধ শিক্ষিত বাঙালির কাজে নজরুল আবার মুসলমান কবি হয়ে গেছে। শুধু মাত্র মুসলমান বলে কত গন্ডমূর্খকে দেখি নজরুলকে, মালাউন কবি রবীন্দ্রনাথের চেয়েও বড় কবির আসনে বসায় আর কত ইন্ধ-মার্কিনীয় ষড়যন্ত্র খুঁজে পায়। (সাম্প্রদায়িক আর মূর্খরাই শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথ আর নজরুলের মাঝে তুলনা করে)
-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।
১। পুস্টের নাম ছিল 'জাতীয় কবির ফাঁসি চাই'। হঠাৎ নজু ভাই'র কথা মনে পড়ল।
২। হ, মাঝেমধ্যে আমিই প্যাঁচ লাগায়া ফালাই। বদলায়া দিমু, খাড়ান। ধইজ্জ ধইজ্জ
৩। হে হে হে... ছহীহ মুছলমানদের ধরে উনার তেতো প্রবন্ধগুলা গিলায়ে দিতে হবে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
রিভিউ আসুক!
রিভিউ চাই, রিভিউবাদীতা চাই না!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সেলোয়ার হোসেন দাউদির পুস্তকের রিভিউ পড়তে চাই।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
বুশ আর হাঁসের ঐ জুক্সটা মনে পইড়া গেল... আফগানিস্থান নিয়া কারও চিন্তা নাই, হাঁসমারা নিয়া রাজ্যের টেনশন... এইখানেও দেখি জাতীয় কবির নাস্তিকসুলভ বোলগ দিয়া ইন্টারনেট চালানো নিয়া কারও মাথব্যাথা নাই। সবাই লাগছে দাউদীর সেলোয়ারের পেছনে!! খুলে গেলে তখন? মানী লোকের মান আর থাকল না গো!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অনবদ্য! নজরুলের এমন আরো কিছু বানী আছে বোধ হয়। প্রতিটি উদ্ধৃতির উৎস 'কবিতা/প্রবন্ধ/বক্তৃতার নাম আর যে বইতে অন্তর্ভুক্ত' সেটা রেফারেন্স আকারে যুক্ত করলে লেখাটা একটা একাডেমিক সম্পূর্ণতা পেত।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
এই আধখাপচা জিনিসে একাডেমিক দৃষ্টিভঙ্গি খুঁইজা পাইলেন কই?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
স্পর্শের সাথে একমত। রেফারেন্স যোগ করলে একটা পুর্ণাংগ জিনিস দাঁড়িয়ে যেত।
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
রানা'পা আপনিও! বইটা অফিসে রেখে আসছি। আগামীকাল রেফারেন্স জুড়ে দেব। বুকমার্ক করতে করতে প্রায় পুরো বইটাই কাগজের টুকরোয় ভরে ফেলেছি। ওখান থেকে অনেক কষ্টে উদ্ধৃতি দুইয়ে নামিয়ে এনেছি। আরও কিছু জুড়তে হবে, কিংবা দ্বিতীয় পর্ব।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনার মাথাটা আমারে দিবেন? এত্ত এত্ত আইডিয়া কেমনে আসে মানুষের!!! কী চমৎকার একটা লেখা! এইবার ‘এই নাস্তিক নজরুল...’ টাইপের ভাষণ দেয়া শুরু হয় কি না দেখেন
দেবদ্যুতি
চামে দিয়া আমার কল্লা চাইলেন? আন্নেরে ভালা লুক ভাবছিলাম!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
দেবদ্যুতি
বইখানের গুডরিডসে অন্তর্ভুক্তি চাই!
রাসিক রেজা নাহিয়েন
ঐসব ইহুদী-নাছাড়া সাইটে যাইনা ভাই। একটা হালাল বুক রিভিউ সাইট থাকলে হত!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
স্পর্শ'দা ও রানাপা'র একাডেমিক আবদার রাখার চেষ্টা করা হল।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
কাজী নজরুল ইসলাম এই ২০১৫ সালে বাংলাদেশে জন্মালে নিশ্চিত রক স্টার হতেন আর নইলে ব্লগ দিয়ে ইন্টারনেট চালানোর অপরাধে অপরাধি হতেন।
জাতীয় কবির মানহানি করবেন না, ভাব-গাম্ভীর্য বজায় রাখুন!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ ফাঁসির দাবীতে গলা মিলাইলাম। সাথে মীর মোশাররফ হোসেনরেও টান দেন।
বিষাদ সিন্ধুতে ধর্ম নিয়ে মন গড়া হুড়ো আছে (আশ্চর্য এইগুলো নিয়ে দেখি অনুভূতিপ্রবণেরা কিচ্ছুই কন না!)
ছ্যা ছ্যা বইয়ের কী আকাল পড়ছেনি মিয়া! আমারে তো ফিরিতে দিলেও ঐ বই পড়তাম না।
ইয়ে রিভু কবে লিখতেছেন?
আপনার লগে কথা নাই। লুকজনরে ডাইকা ডাইকা নাকি কি বই দিতাছেন?
আর আমারে একবার জিগাইলেনও না, খবরও লইলেন না। নিষ্ঠুর দুনিয়া।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আরে কী বলে! ডাকাডাকি না হে। রীতিমত মাইকিংয়ের ব্যবস্হা হইছে।
আপ্নি তো ঢাকার বাইরে থাকেন তাই জানেন্না ভালু কিছু একা ভুগ করতে নেই, শেয়ারে আনন্দ বাড়ে।
তাছাড়া ভাবলেম চুরির জিনিস সবাইকে ভাগ দিলে পাপের ভাগটা কম হবে
কথায় কি চিঁড়ে ভেজে!! আমার ভাগ কোথায় হে???
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
রিভিউ লিখলেন না, ভাই? >:(
এই বর্ষাকালে আপনার মাথায় ঠাডা পড়ুক।
- ইমতিয়াজ।
আরে, আপনার মতন রসালো হাত পেলে তো কবেই লিখে ফেলতুম।
ঠিকানা জানান, বইটা পাঠিয়ে দিই। কাজের ঠাডা মাথায় পড়েই আছে।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
রিভিও
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
রাজ্জক উকিলের মত ১০৪ ধারায় না তো? তাইলে খারিজ!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
গুলাগুলি করেন ক্যারে? কি কইচ্চি!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমি করি না, 'বিলাই' করে। পুরাই ঝাঁঝরা ফুটাফুটা
নতুন মন্তব্য করুন