[ ইদানীং বিজ্ঞানের ভাব খুব বাড়ছে। জাকির নায়েকের মতন মিডিয়া ব্যাবসায়ীদের হাত ধরে এই ভদ্রলোক নির্বিবাদে ওয়াজ মাহফিলেও হাজির হন। গ্যালিলিও-ব্রুনো-হাইপেশিয়ার যুগটাই ভালো ছিল। চার্চের পছন্দ না তো পছন্দ না, ফুলস্টপ। এখন দিন বদলাইছে। এখনকার নানান চার্চের স্বত্বাধিকারীরা চুপচাপ নিজেদের গ্রন্থের অনুবাদ বদলে তাতে বিজ্ঞান ঢোকাবার চেষ্টা করছেন। এসব দেখে বিজ্ঞানুভূতি আহত হলেও কিচ্ছু করার নাই। সেটি, ‘সংখ্যাগরিষ্ঠের’ অনুভূতির বিপক্ষে। এনারা যেভাবে বিজ্ঞানকে অবলীলায় প্ল্যাস্টিক সার্জারী করে স্বীয় ‘অবিকৃত’ গ্রন্থে বিকৃতভাষ্য হিসেবে জুড়ে দেন তার বিরুদ্ধে কিছু বলা দুষ্কর। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল তাঁদের ধর্মের সাথে জিরাফ জুড়ে দেবার পদ্ধতিটা, কেননা এ পদ্ধতিতে যে কোনও বইয়ের যেকোনো চরণ থেকে আলাদীনের জিনির মতন পুটুস করে বিজ্ঞানের কিছু না কিছু বের করে আনা যায়। ভাবছি আপাতত আমাদের প্রিয় কবিরা কতটা ‘বিজ্ঞানময়’ সেটা লিখে রাখব। সিরিজের শিরোনাম অভিদা’র একটা লেখা থেকে ধার নেয়া। আজকে রবিবুড়ার হেপ্পি বাড্ডে, উনাকে দিয়েই শুরু করলুম। ক্রমান্বয়ে বাদ যাবে না একটি কবিও, লাইনে থাকুন। ]
থর থর করি কাঁপিছে ভূধর
শিলা রাশি রাশি পড়িছে খসে
ফুলিয়া ফুলিয়া ফেনিল সলিল
গরজি উঠিছে দারুণ রোষেনির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ/প্রভাতসঙ্গীত
এখানে কবিগুরু সুনামির ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মনে পড়ে ঘরের কোণে মিটিমিটি আলো
চারিদিকের দেয়াল জুড়ে ছায়া কালো কালোবিষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর/কড়ি ও কোমল
অর্থাৎ, আলোর ব্যাতিচার সংক্রান্ত বিজ্ঞানী ইয়ং এর পরীক্ষার মূল আইডিয়া আসছিল কবিগুরুর কোবতে থেকে।
আঁখি মেলি যারে ভালো লাগে
তাহারেই ভালো বলে জানি
সব প্রেম প্রেম নয়
ছিল না তো সংশয়
যে আমারে কাছে টানে তারে কাছে টানিপুরুষের উক্তি/মানসী
এখানে কি কবি ডোপামিনের প্রবাহের দিকে ইঙ্গিত করেন নি?
আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি যুগলপ্রেমের স্রোতে
অনাদিকালের হৃদয় উৎস হতে
আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা কোটি প্রেমিকের মাঝেঅনন্ত প্রেম/মানসী
অর্থাৎ, সকল কিছুকে সৃষ্টি করা হয়েছে জোড়া বেঁধে, জোড়াসাঁকোর রবিবাবু তো তাই সাক্ষ্য দিচ্ছেন।
বিবর্তন আবর্তন সম্বর্তন আদি
জীবশক্তি শিবশক্তি করে বিসম্বাদী
আকর্ষন বিকর্ষন পুরুষ প্রকৃতি
আণব চৌম্বকবলে আকৃতি বিকৃতি
কুশাগ্রে প্রবহমান জীবাত্মাবিদ্যুৎ
ধারণা পরমা শক্তি সেথায় উদ্ভূতহিং টিং ছট/সোনার তরী
এখানে চার্লস ডারউইনের বিবর্তন, সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কোপার্নিকান আবর্তন, চৌম্বক আকর্ষন-বিকর্ষন একবারে আলোচিত হয়েছে। শেষ দু চরণে, স্নায়ুকোষের ভেতর যে আসলে বৈদ্যুতিক সংকেত যাতায়াত করে, সে ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে।
কারে চাহি ব্যোমতলে
গ্রহ তারা লয়ে চলে
অনন্ত সাধনা করে বিশ্বচরাচর
সেইমতে সিন্ধুতটে
ধুলিমাখা দীর্ঘজটে
খ্যাপা খুঁজে খুঁজে ফিরে পরশপাথরপরশপাথর/সোনার তরী
পরশপাথরের রূপকে কবি কি সুন্দরভাবে ‘নিউক্লিয়ার রিয়াকশন’ দ্বারা পদার্থের রূপান্তর ব্যাখ্যা করে গেছেন।
খাঁচার পাখি ছিল
সোনার খাঁচাটিতে
বনের পাখি ছিল বনে
একদা কী করিয়া
মিলন হল দোঁহে
কী ছিল বিধাতার মনেদুই পাখি/সোনার তরী
এখানে কবি কি আসলে ‘প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে প্রজাতির উৎপত্তি’ এই ধারণাটি দিয়ে যান নি?
এ অনন্ত চরাচরে, স্বর্গমর্ত্য ছেয়ে
সবচেয়ে পুরাতন কথা, সবচেয়ে
গভীর ক্রন্দন ‘যেতে নাহি দিব’ হায়
তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়যেতে নাহি দিব/সোনার তরী
অর্থাৎ, টেলোমিয়ার শেষ হয়ে গেলে যে কোষ বিভাজন থেমে যায় সুস্পষ্টভাবে সেটি উল্লেখ করা হয়েছে।
হে আদিজননী সিন্ধু, বসুন্ধরা সন্তান তোমার
একমাত্র কন্যা তব কোলে। তাই তন্দ্রা নাহি আরসমুদ্রের প্রতি/সোনার তরী
কবিই প্রথম জানাচ্ছেন- আদিপ্রাণ আসলে সমুদ্র থেকেই উদ্ভূত।
‘মুহূর্ত তুলিয়া শির একত্র দাঁড়াও দেখি সবে;
যার ভয়ে তুমি ভীত সে অন্যায় ভীরু তোমা-চেয়ে,
যখনি জাগিবে তুমি তখনি সে পলাইবে ধেয়ে
যখনি দাঁড়াবে তুমি সম্মুখে তাহার তখনি সে
পথকুক্কুরের মত সংকোচে সত্রাসে যাবে মিশেএবার ফিরাও মোরে/চিত্রা
এভাবে কবি বিপ্লবের মূলসূত্রটি বলে গিয়েছিলেন যা পরে কার্ল মার্ক্স কিংবা জাঁ জ্যাক রুশো কিংবা ফিদেল কাস্ত্রো প্রমুখ ছিনিয়ে নেন।
লভিয়া আরাম আমি উঠিলাম, তাহারে ধরিল জ্বরে
নিল সে আমার কালব্যাধিভার আপনার দেহ ’পরেপুরাতন ভৃত্য/চিত্রা
এখানে কবিগুরু ছোঁয়াচে রোগের কথা বলেছেন।
সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস শাখা দুলাইয়া গাছে
দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল আমার কোলের কাছেদুই বিঘা জমি/চিত্রা
এই ঘটনা থেকেই নিউটন আবিষ্কার করেন মহাকর্ষ সূত্র, কবিগুরুকে আড়াল করতেই পরে আপেলের কেচ্ছা রটানো হয়।
আজিকার কোনও ফুল, বিহঙ্গের কোনও গান,
আজিকার কোনও রক্তরাগ।
অনুরাগে সিক্ত করি পারিব কি পাঠাইতে
তোমাদের করে,
আজি হতে শতবর্ষ পরে?১৪০০ সাল/চিত্রা
কবি কি এখানে সময় পরিভ্রমণের কথা স্পষ্টভাবেই বলেন নি?
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ
ধুলায় ধূসর রুক্ষ উড্ডীন পিঙ্গল জটাজাল
তপঃক্লিষ্ট তপ্ত তনু, মুখে তুলি বিষাণ ভয়াল
কারে দাও ডাক
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ?বৈশাখ/ কল্পনা
বৈশাখ মাসে যে মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ হেতু ঝড়-ঝঞ্ঝা হতে পারে, এই কথাটিই কবি সেকালে লিখে রেখে গিয়েছেন।
ওরে কবি, সন্ধ্যা হয়ে এল,
কেশে তোমার ধরেছে যে পাক-
বসে বসে উর্ধ্ব পানে চেয়ে
শুনতেছ কি পরকালের ডাক?কবির বয়স/ক্ষণিকা
এই সংক্রান্ত গবেষণা সম্প্রতি কৌস্তভ’দা করেছেন।
বাহু মেলি তারে বক্ষে লইতে বক্ষে ফিরিয়া পাই না
যাহা চাই তাহা ভুল করে চাই, যাহা পাই তাহা চাই নামরিচীকা/উৎসর্গ
নিশ্চিতভাবেই কবি এখানে ভার্চুয়াল রিয়ালিটির কথা বলেছেন।
বিশাল বিশ্বে চারিদিক হতে প্রতি কণা মোরে টানিছে
আমার দুয়ারে নিখিল জগৎ শতকোটি কর হানিছেপ্রবাসী/উৎসর্গ
কবি সুস্পষ্ট ভাবে মহাকর্ষ সূত্রটি কবিতার ছন্দে লিখে গেছেন যা পরে আইজাক নিউটন চুরি করে নিজনামে ছাপিয়ে দেন।
সীমার মাঝে অসীম তুমি বাজাও আপন সুর
আমার মধ্যে তোমার প্রকাশ তাই এত মধুরসীমায় প্রকাশ/গীতিমাল্য
এখানে কবি অনেক আগেই ফ্র্যাক্টালের ধারণা দিয়ে গেছেন।
তার অন্ত নাই গো যে আনন্দে গড়া আমার অঙ্গ
তার অণু পরমাণু পেল কত আলোর সঙ্গদেহ/গীতালি
কে বলে অণু-পরমাণু ধারনাটি কোথাকার কোন ডেমোক্রিটাস দিয়েছেন?
আলোকে মোর চক্ষু দুটি, মুগ্ধ হয়ে উঠল ফুটি
...
এই তোমারি মিলনসুধা, রইল প্রাণে সঞ্চিতসুন্দর/গীতালি
প্রথম চরণে কবি আলোর উপস্থিতির সাথে দেখতে পাওয়ার সম্পর্ক দেখিয়েছেন যা পরে আল-হ্যাজেন তত্বাকারে উপস্থাপন করেন। পরের চরণে কবি ডিএনএ’র দ্বারা প্রজন্মান্তরে তথ্য সঞ্চ্যনের কথা বলেছেন।
আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব
সারা রাত ফোটাক তারা নব নবপরশমণি/গীতালি
কবি অনেক আগেই নতুন নতুন নক্ষত্রের সন্ধানপ্রাপ্তির ইঙ্গিত করেছেন।
এই যে হিয়া থরো থরো
কাঁপে আজি এমনতরোক্লান্তি/গীতালি
কবি বলার আগে কে জানত হৃদপিণ্ড কেঁপে কেঁপে রক্ত সঞ্চালন করে?
তুমি কি কেবলই ছবি, শুধু পটে লিখা?
ঐ-যে সূদুর নীহারিকা
যারা করে আছে ভিড়
আকাশের নীড়
ঐ যারা দিনরাত্রি
আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রীছবি/বলাকা
এখানে কবি হাবল টেলিস্কোপ এবং ভয়েজার নভোযানের ভবিষ্যদ্বানী করেছেন।
যখন যেমন মনে করি তাই হতে পাই যদি
তবে আমি এক্ষনি হই ইচ্ছামতী নদী
রইবে আমার দখিন ধারে সূর্য ওঠার পার
বাঁয়ের ধারে সন্ধেবেলায় নামবে অন্ধকারইচ্ছামতী/শিশু ভোলানাথ
আবারও ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি।
মৃত্তিকার হে বীর সন্তান,
সংগ্রাম ঘোষিলে তুমি মৃত্তিকারে দিতে মুক্তিদান
মরুর দারুণ দুর্গ হতে, যুদ্ধ চলে ফিরে ফিরেবৃক্ষবন্দনা/বনবাণী
এখানে কবি আমাদের গ্রীণ হাউজ এফেক্টের সাথে লড়ার মুলসূত্রটি জানিয়েছেন।
পথ বেঁধে দিল বন্ধনহীন গ্রন্থি
আমরা দুজন চলতি হাওয়ার পন্থীপথের বাঁধন/মহুয়া
কবি স্পষ্ট ভাষায় মোবাইল ফোনের কথা লিখে রেখে গেছেন।
স্নিগ্ধ তুমি, হিংস্র তুমি, পুরাতনী তুমি নিত্যনবীনা
অনাদি সৃষ্টির যজ্ঞহুতাগ্নি থেকে বেরিয়ে এসেছিলে
সঙ্খ্যাগণনার অতীত প্রত্যুষে
তোমার চক্রতীর্থের পথে পথে ছড়িয়ে এসেছ
শত শত ভাঙ্গা ইতিহাসের অর্থলুপ্ত অবশেষ
বিনা বেদনায় বিছিয়ে এসেছ তোমার বর্জিত সৃষ্টি
অগণ্য বিস্মৃতির স্তরে স্তরেপৃথিবী/পত্রপুটে
অর্থাৎ বিগ ব্যাং পরবর্তী মহাবিশ্বে কিভাবে গ্যাসীয় পদার্থ ঠাণ্ডা ও ঘনীভূত হয়ে পৃথিবী গঠিত হল তার বিস্তারিত বিবরণ। তাছাড়া, ভুস্তরের বিভিন্ন গভীরতায় ফসিল পাওয়া যাবে সে কথাটিও কবিই বলে গিয়েছেন।
আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ
চুনি উঠল রাঙ্গা হয়ে
আমি চোখ মেললুম আকাশে-
জ্বলে উঠল আলো
পূবে পশ্চিমে
গোলাপের দিকে চেয়ে বললুম সুন্দর
সুন্দর হল সেআমি/শ্যামলী
কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ‘কোপেনহেগেন ইন্টারপ্রেটেনশন’ মোতাবেক কিছু ‘দেখা’ হলেই কেবল তার অর্থ ও অস্তিত্ব থাকে। কবি কি একথাই বোঝাতে চান নি?
একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
‘রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।’হঠাৎ-দেখা/শ্যামলী
আইনস্টাইনের ‘জেনারেল থিওরী অফ রিলেটিভিটির’ ভাষ্যমতে ‘গ্রাভিটেশনাল লেন্সিং’ দেখার জন্য স্যার আর্থার এডিংটন সূর্যগ্রহনের সময় সূর্যের পেছনে থাকা তারাদের ছবি তুলেছিলেন। বলেন তো, এডিংটন এই ইঙ্গিত কোথায় পেয়েছিলেন?
উদ্ভ্রান্ত সেই আদিম যুগে
স্রষ্টা যখন নিজের প্রতি অসন্তোষে
নতুন সৃষ্টিকে বারবার করছিলেন বিধ্বস্ত
তার সেই অধৈর্য্যে ঘন ঘন মাথা নাড়ার দিনে
রুদ্র সমুদ্রের বাহু
প্রাচী ধরিত্রীর বুকের থেকে
ছিনিয়ে নিয়ে গেল তোমাকে, আফ্রিকাআফ্রিকা/সাময়িক পত্র
এখানে কি ‘কন্টিনেন্টাল ড্রিফট’ পরিষ্কার ভাবে ব্যাখ্যা করা হয় নি?
আমি কান পেতে রই আমার আপন হৃদয়-গহন-দ্বারে
কোন গোপন বাসীর কান্নাহাসির গোপন কথা শুনিবারেগান-৬/গীতবিতান
এখান থেকেই অধুনা বিজ্ঞানীরা ‘ইসিজি’ মেশিন আবিষ্কার করতে পেরেছেন।
আকাশে তো আমি রাখি নাই, মোর
উড়িবার ইতিহাস
তবু উড়েছিনু এই মোর উল্লাসলেখন-১৬/লেখন
হুদাই লোকে রাইট ভাত্রিদ্বয়কে আকাশে তোলে, প্রথম স্বপ্নটা দেখেছিলেন আমাদের ভানু।
খেঁদুবাবুর এঁদো পুকুর মাছ উঠেছে ভেসে
পদ্মমণি চচ্চড়িতে লংকা দিল ঠেসে
আপনি এল ব্যাক্টিরিয়া তাকে ডাকা হয় নাই
হাস্পাতালের মাখন ঘোষাল বলেছিল ‘ভয় নাই’
সে বলে ‘স্পব বাজে কথা, খাবার জিনিস খাদ্য’
দশ দিনেতেই ঘটিয়ে দিল দশ জনারই শ্রাদ্ধশ্রাদ্ধ/ছড়া
স্যার রোনাল্ড রস কিংবা লুইস পাস্ত্যুর নন, অণুজীববিদ্যার প্রথম পাঠ রবিঠাকুরেই।
জজ বলে ‘বিড়ালটা কিরকম জানা চাই,
আইডেনটিটি তার আদালতে আনা চাই’
বেড়ালের দেখা নাই- ঘরেও না, বনে না
মিয়াঁও আওয়াজটুকু কেউ আর শোনে না।মামলা/ছড়া
এখান থেকেই এরভিন শর্ডিঙ্গার তাঁর জগদ্বিখ্যাত ‘বেড়ালের ধারণা’ পেয়েছিলেন।
বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি!
দেশে দেশে কত না নগর রাজধানী
মানুশের কত কীর্তি, কত নদী গিরি সিন্ধু মরু
কত-না অজানা জীব, কত না অপরিচিত তরু
রয়ে গেল অগোচরে। বিশাল বিশ্বের আয়োজন;
মন মোর জুড়ে থাকে অতিক্ষুদ্র তারি এক কোণঐকতান/জন্মদিন
হুম, ক্যারোয়াস লিনিয়াসের কত্ত আগে কবিগুরু ‘শ্রেনিবিন্যাসের’ গুরুত্ব বুঝেছিলেন।
তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে
হে ছলনাময়ী!তোমার সৃষ্টির পথ/শেষ লেখা
এখান থেকেই কি হাইজেনবার্গ তাঁর অনিশ্চয়তা সূত্রের ধারনা পেয়েছেন?
আসুন, রবিবুড়োর গানগুলোও একটু খতিয়ে দেখি। হতে পারে যেটিকে নিষ্কলুষ সঙ্গীত ভেবে কানে লাগিয়ে দু’বেলা শুনছেন, সেটিরও হয়তো আছে কোনও নিগুঢ় বৈজ্ঞানিক ইঙ্গিত।
আমি, জেনে শুনে বিষ করেছি পান।
প্রাণের আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ।
অর্থাৎ, ডঃ জেনার এখান থেকেই পেয়েছেন ‘ভ্যাক্সিনেশন’ এর ধারণা।
না চাহিলে যারে পাওয়া যায়, তেয়াগিলে আসে হাতে,.
দিবসে সে ধন হারায়েছি আমি, পেয়েছি আঁধার রাতে
ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং আর কম্পিউটর সায়েন্সে বহুল ব্যাবহৃত ‘নট গেইট’ ধারণার শুরু।
মন মোর মেঘের সঙ্গী,. উড়ে চলে দিগ্দিগন্তের পানে
নিঃসীম শূন্যে শ্রাবণবর্ষণসঙ্গীতে, রিমিঝিম রিমিঝিম রিমিঝিম
আবহাওয়ার বিশেষত বৃষ্টির পূর্বাভাস ছাড়া কিইবা হতে পারে?
খোল খোল দ্বার রাখিওনা আর বাহিরে আমায় দাঁড়ায়ে
দাও সাড়া দাও এই দিকে চাও, এসো দুই বাহু বাড়ায়ে
লাইট-ফ্যান চালাতে সুইচ ব্যাবহার করেন না? আইডিয়া কিন্তু রবিঠাকুরের। অবশ্য এইটার মাঝে বহুতল ফ্ল্যাটবাড়ির ‘কলিং বেল’ কিংবা ‘ইন্টারকম’ ধারণাটিও লুকিয়ে থাকতে পারে।
তোমার হল শুরু, আমার হল সারা
তোমায় আমায় মিলে এমনি বহে ধারা ॥
...
তোমার আছে ডাঙা, আমার আছে জল
তোমার বসে থাকা, আমার চলাচল।
আবারও জৈব বিবর্তন! এখানে কি প্রজাতির বিলুপ্তির কথা বলা হয়নি?
আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ সুরের বাঁধনে
তুমি জান না, আমি তোমারে পেয়েছি অজানা সাধনে
এখান থেকেই তো আইসিইউ-তে থাকা কৃত্রিম জীবনের শুরু।
হে ক্ষণিকের অতিথি,
এলে প্রভাতে কারে চাহিয়া
ঝরা শেফালির পথ বাহিয়া
কিছু মৌলিক কণা আছে যাদের অর্ধায়ু কম হওয়াতে ল্যাবরেটরিতে পাওয়া যায় ক্ষণিকের জন্য, এদের ইঙ্গিত করেই এই গান।
আমার প্রাণের 'পরে চলে গেল কে
বসন্তের বাতাসটুকুর মতো
সে যে ছুঁয়ে গেল, নুয়ে গেল রে
ফুল ফুটিয়ে গেল শত শত।
এই দ্বিতীয় চরণ থেকেই এয়ারকুলারের ধারণা পাওয়া গেছে।
ও কি এল, ও কি এল না, বোঝা গেল না
ও কি মায়া কি স্বপনছায়া, ও কি ছলনা ॥
হিগস বোসন (তথাকথিত ‘গড পার্টিক্যাল’) খোঁজার বিপুল কর্মযজ্ঞের কথা মনে আছে? বিজ্ঞানীরা একটু মন দিয়ে রবিঠাকুরের এই গান শুনলে ৫০ বচ্ছর আগেই ব্যাটাকে খুঁজে পাওয়া যেত। কবিগুরু কি পরিষ্কার বর্ণনা দিয়ে গেছেন, ভেবে দেখুন!
ফুলে ফুলে ঢ'লে ঢ'লে বহে কি'বা মৃদু বায়
তটিণী-র হিল্লোল তুলে কল্লোলে চলিয়া যায়
পিক কি'বা কুঞ্জে কুঞ্জে
কুউহু কুউহু কুউহু গায়
কি জানি কিসের লাগি
প্রাণ করে হায় হায়
এই গান থেকেই কৃত্রিম পরাগায়নের ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা সচেতন হয়ে বিভিন্ন ফসলের ফলন বহুগুন বাড়িয়ে তোলেন।
প্রলয়-নাচন নাচলে যখন আপন ভুলে
হে নটরাজ, জটার বাঁধন পড়ল খুলে
জর্জ লেঁমেতার বলেন কিংবা স্টিফেন হকিং, কবিগুরুর এই গান শুনেই তাঁরা ‘বিগ ব্যাং’ সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন।
ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি. নিয়ে যাবি কে আমারে
ও বন্ধু আমার!
না পেয়ে তোমার দেখা, একা একা
দিন যে আমার কাটে না রে
এখানে কবিগুরু ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে পাসওয়ার্ড হারিয়ে ফেললে কি হবে। তা মোবাইল ফোনের হোক কিংবা ফেসবুকের।
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি
এই গান শোনার পরেই বিজ্ঞানীরা ‘ইসিজি’ সংকেত থেকে রোগীর অবস্থা নিরূপণের সূচনা করেন।
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই,
চিরদিন কেন পাই না?
কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে,
তোমারে দেখিতে দেয় না?
কবিগুরু তাঁর জীবদ্দশায় সজ্ঞানে হ্যালীর ধূমকেতু দেখেন মাত্র একবার, তাও শেষ বয়সে। হ্যালীর ধূমকেতুর বেকায়দা কক্ষপথের প্রতি ইঙ্গিত করেই এই গান।
কতবার ভেবেছিনু আপনা ভুলিয়া
তোমার চরণে দিব হৃদয় খুলিয়া
হার্ট ট্রান্সপ্লান্টের ধারনাও এসেছে কবিগুরুর গান থেকেই।
আমারে তুমি অশেষ করেছ, এমনি লীলা তব
ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব
সিনেমায় বুকে শক দিতে দেখেছেন কখনও? ঐ যে হার্ট বন্ধ হয়ে গেলে যেটা ব্যাবহার করে? ডি-ফিব্রিলেটর নামের ঐ যন্ত্রটা আসলে হার্টকে পুরাপুরি ডিসচার্জ করে ফেলে, তারপরে হার্ট আবার নিজের মত চলা শুরু করে বা রিস্টার্ট নেয়। কখনও ভেবেছেন, ডি-ফিব্রিলেশনের ধারণা এল কোথা থেকে?
এসো আমার ঘরে,
বাহির হয়ে এসো
তুমি যে আছ অন্তরে
স্বপনদুয়ার খুলে এসো
অরুণ-আলোকে, মুগ্ধ এ চোখে।
ক্ষণকালের আভাস হতে
চিরকালের তরে এসো
আমার ঘরে
সিএমবি বা ‘কসমিক ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন’ কথাটা শুনেছেন না? (না শুনলে শিক্ষানবিস ভাইয়া কে জিজ্ঞাসা করেন, জলবৎ তরলং করে বুঝিয়ে দেবে) সে বিদঘুটে বস্তুটিকে যে এন্টেনায় ধারণ করা যতে পারে, সে আইডিয়া কিন্তু উইলসন কিংবা পেনজিয়াসের না।
জাগরণে যায় বিভাবরী
আঁখি হতে ঘুম নিল হরি মরি মরি
বিজ্ঞানীরা যখন ইনসমনিয়ার নামও শোনেননি, রবিঠাকুর তখন তার বিস্তারিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করে রেখে গেছেন ভবিষ্যতের জন্য।
তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে
এই অলক্ষ্য রঙ দিয়ে কবি বুঝিয়েছেন যে- ‘দৃশ্যমান বর্ণালী’ ছাড়াও আলোক তরঙ্গের আরো বিশাল অংশ বিদ্যমান।
আলোর স্রোতে পাল তুলেছে হাজার প্রজাপতি
আলোর ঢেউয়ে উঠল নেচে মল্লিকা মালতী
কবিগুরু পরিষ্কার ভাবেই বলে গেছেন আলোর ‘তরঙ্গধর্ম’ আছে। হুদাই আমরা এইটার জন্য ক্রিশ্চান হাইগেন্স নামের এক ওলন্দাজ বিজ্ঞানীর পিঠ চাপড়াই।
মেঘ বলেছে 'যাব যাব', রাত বলেছে 'যাই',.
সাগর বলে 'কূল মিলেছে, আমি তো আর নাই'
এখানে নিশ্চয় জোয়ার-ভাটা এবং পানিচক্রের কথা একেবারে বোধগম্য ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে?
আমার হৃদয় তোমার আপন হাতে দোলে,
দোলাও দোলাও দোলাও, আমার হৃদয়
কে আমারে কী যে বলে,
ভোলাও ভোলাও ভোলাও, আমার হৃদয়
ওরে নারে, কবি এখানে প্রেমিকার কথা বলেন নাই। অন্তর্নিহিত অর্থ হল ‘পেসমেকার’, আর হাত বলতে বোঝানো হয়েছে তার ‘ইলেকট্রোড’।
সবশেষে, আসুন আমাদের স্লোগানটাকেও একটু খতিয়ে দেখা যাক।
চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,
জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর
আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী
বসুধারে রাখে নাই খণ্ড ক্ষুদ্র করিপ্রার্থনা/নৈবেদ্য
কি বুঝলেন? কবি প্রথম অংশে এখানে অন্তর্জালের মাধ্যমে জ্ঞানের বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। শেষোক্ত চরণে ‘বিশ্বগ্রাম’ ধারণাটির সুস্পষ্ট ছায়াও লক্ষণীয়। মার্শাল ম্যাকলুহান আর টিম বার্নার্স লি নির্ঘাত কবিগুরুর কবিতা পড়তেন।
[ ১। এই লেখায় ব্যাবহৃত সকল কবিতা ‘সালমা প্রকাশন’ কর্তৃক ছাপা ‘সঞ্চয়িতা’ থেকে নেয়া।
২। রবিঠাকুরের আরও কোনও কবিতা-গান-গল্প-নাটকে বিজ্ঞান খুঁজে পেলে মন্তব্যে জানান। ]
২৫ বৈশাখ, ১৪২৩
মন্তব্য
রবিবাবু এত বড় বিজ্ঞানী ছিলেন! আমি তো শুধু জানতাম অনিয়ন্ত্রিত হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করার যন্ত্র পেসমেকার আবিষ্কারের অনেক আগেই তিনি লিখেছিলেন "তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম"।
_____________
সৌমিত্র পালিত
হুমম, সাইলেন্ট পেসমেকার
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই বস্তুর একটা ভিডিও বয়ান করেন। কাব্যের বাক্য কীভাবে বিজ্ঞানে রূপান্তরিত হচ্ছে তার এনিমেশন যোগ করা লাগবে কিন্তু
টেকাটুকা দেন, বানাই দিমুনি। কোনায় আপনার লোগোও যাইবো!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
টেকা লাগব ক্যান? আপনেরে কি আমি হলিউডি ফিলিম বানাইতে কইছি? আমি তো কইছি বিনা পয়সায় মুফাস্সিল জনরার (নাকি জঁরা?) ভিডিও বানাইতে
আপনি চাইলে ওয়েবক্যামে ভিডু করার সময় পিছনে আমার একটা ছবি রাইখা দিতে পারেন অনুপ্রেরণা হিসাবে
লা জবাব।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
সবই রবিবাবুর কীর্তি!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
গবেষণামূলক পোস্টে হাসাহাসি? এইজন্যই বাঙালির... ... (বুঝেনই তো)
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আইনস্টাইন এই কারণেই বুড়োর শিষ্যত্ব গ্রহণ করছিলেন। বোঝা গেল।
হ, দুইজনেই যার যার ক্ষেত্রে পুরা ফেসিবাদী আছিল।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সপ্তগঙ্গা
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আপনিও ধমাধম ধর্মে দীক্ষা নিছেন মনে হইতাছে www.amarblog.com/adilmahmood/posts/144570
লাইনে আসুন!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ইনশাল্লাহ যারা নানান হলি স্ক্রিপচারে পুরাতন বা আধুনিক সর্ববিজ্ঞান খুঁজে পান তারা দেখবেন ঠিক আবার এইগুলো মানতে চাইতেছে না, বলবে এইটা বিজ্ঞান না। ফানি ইনডিড!
হ, ফানি ইনডিড!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তাপস নিশ্বাস বায়ে, মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে
এয়ার এম্বুল্যান্স? সোলার প্যানেল উইং সহ (এখনো আসেনি)
(কার য্যানো ফেসবুক থেকে পেয়েছিলাম, এখানে শেয়ার করলাম)
অবজেকশন ইয়োর অনার।
আমার সাথে মুমূর্ষুরে উড়ায়া দেওয়ার কোন সম্পর্ক নাই। ইহা বুড়োর ফ্যাসিবাদী আচরণের বহিঃপ্রকাশ।
অনার্য তাপস
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
রবি ঠাকুরের পদ্য ভাষা, বিজ্ঞানের ভাষা থেকেও কঠিন মনে হয়।কলেজে বাংলা দিদি এক লাইনও ছাড় দিতেন না। পুরো কবিতা মুখস্থ করাইতো।" যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী"
এ্যানি মাসুদ
কলেজ পর্যায়ে কবিতা 'না পড়ায়ে' সেটা 'মুখস্থ করায়'? কোন কলেজ?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
বিপুল তরঙ্গ রে, বিপুল তরঙ্গ রে।
সব গগন উদ্বেলিয়া-- মগন করি অতীত অনাগত
আলোকে-উজ্জ্বল জীবনে-চঞ্চল একি আনন্দ-তরঙ্গ ॥
বিপুল তরঙ্গ বলতে কবি কি সম্প্রতি আবিষ্কার হওয়া গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভকেই বুঝান নাই? আর এই আবিষ্কারে বিজ্ঞানীদের মধ্যে যে খুশির জোয়ার বয়ে যাবে এইটাও তিনি ভবিষ্যতবাণী করে গেছেন তৃতীয় লাইনের মাধ্যমে!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এই সকল অতিসম্প্রতি জ্ঞান সেই কালে কোন মানুষের পক্ষে জানা সম্ভবনা! আমার তো মনে হচ্ছে কবিতা গুলো আসলে ফেরস্তা দ্বারা নাজিল কৃত উহী। নচ্ছার কবি সেই সব নিজের বলে চালিয়ে দিয়েছে!!
আহা, টাইমমেশিনের মূলসূত্র তো কবিই বাতলেছেন!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
পুরা বুমা
গুডরিডস
বুমার কথাও কবির কাব্যেই আছে, জনাব!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আরে তাই তো, এক্কেরে ঠিক কথা
গুডরিডস
কবিদের 'বিজ্ঞানী' হিসেবে স্বীকৃতি দিতেই হবে। আমি অধম রবিবুড়োর বিজ্ঞান প্রতিভার কথা জানতামই না! ভাগ্যিস আপনি ছিলেন! এবার অন্যদের প্রতিভা নিয়ে শিগগির লিখুন দেখি.....
...............................................................
“আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর উড়িবার ইতিহাস”
আপনে কি পিস টিভি দেখতে দেখতে ভাত খান? নিজের সিগ্নেচার লাইনে ঝুলায় রাখছেন কবির এই কথা, আর কন আপনে কিছু জানেন না। এইখানেই তো পরিষ্কার যে রাইট ভাইদের আগেই কবি উড়াউড়ি কইরা থুইছে, মাগার প্যাটেন্ট না করায় ধরা আরকি।
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ওহে, তোমরা যা জান না, আমি তা জানি। রবিঠাকুর ছিলেন ঈশ্বরের প্রেরিত পুরুষ। ভগবানের বিশেষ দূত এসে তার কানে কানে সব কিছু বলতো, আর কবিগুরু তা লিখে যেতেন। নইলে কি কোন রক্তমাংসের মানুষের পক্ষে এতো সুন্দর, কবিতা, গান রচনা করা সম্ভব ! তোমরা পারলে তার মতো একটি কবিতা লিখে দেখাও।তাঁর ঋষির মতো চেহারা দেখেও তাঁকে তোমরা চিনতে পারলে না ! তোমাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে আছে নরকের ভয়ংকর শাস্তি।
হুমম, তাছাড়া এইখানে টিপি দিয়া দেখেন
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কবিগুরু এসব কোথায় থেকে জানছেন? তিনি নিশ্চয়ই কোন এক বিজ্ঞানময় গ্রন্থ পড়েই জেনেছেন।বিধর্মী,ইহুদী-নাচারারা সবকিছু ঐ গ্রন্থ রিসার্চ করেই জানে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এবং সম্প্রতি জানলাম তিনি একজন বায়োকেমিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও ছিলেন, জীবদ্দশায় তিনি অনেকের জীবন আরোগ্য করেছেন। প্রমাণ চাইলে হাজির করতে পারি
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
পানির ওপর হাঁটেন নাই? কুষ্ঠ ভালো করেন নাই? চাঁদ ফালাফালা করেন নাই?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
এত বড় গবেষণা কর্ম সম্পাদিত করার জন্য আপনারে তো কিছু একটা দেওয়া দরকার। দেখি আপনারে একটা নভেল প্রাইজ দেওয়া যায় কি না।
হ, পারলে পদার্থবিদ্যায় দিয়েন, না পারলে অন্তত সাহিত্যে।
বড় সাধ ছিল মনে। (তয়, পিলিজ লাগে- শান্তিতে দিয়েন না)
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
স্ট্যাটাসে এই গবেষণালদ্ধ বাণীগুলা ঝেড়ে দিয়ে মাগনা কিছু ফলোয়ার বাগাবো ভাবচি
সুহান ভাই, আপনার বাড়ি কি বৃহত্তর ময়মনসিংহ!
তরজমাঃ আন্নে কি 'ব' আর 'ভ' গুলায়ালাইতাছেন?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
"আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর"
কম্পিউটার সফটওয়ারের দুই দিকপাল যে সত্য (নাদেলা ) এবং সুন্দর (পিচাই) হবে সেটাও কিন্তু গুরুদেব আগেই বলে গেছেন
মজা পাইলুম
যেটা বোঝা গেল, আমেরিকার বিজ্ঞানীরা আমাদের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে নিয়ে গোপনে গবেষনা করেন বলেই অনেক বড় বড় আবিষ্কার তাদের পক্ষে সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ঘরের মানুষই তারে না বুঝে কত অনাদরে শুধুমাত্র একজন কবি হিসাবে অসম্মান (বিজ্ঞানী হিসাবে মর্যাদা না দিয়ে) করে চলেছি। হে মহান - - - - - এই অবুঝ বাঙালি জাতিকে তুমি হেদায়েত দান করো।
সৌমিত্র বিশ্বাস
নতুন মন্তব্য করুন