আমি ভাগ্যবান মানুষ; সবার এক্টা হ্যাপি বার্থডে থাকে, আমার ২টা আছে। ২য় জীবনের ১ম বার্থডেটা এখনও পালনের সময় আসে নাই। তো আমার বয়স হইলো একুনে সাত মাস। আমার পরিবার ও ২টা। সেই সচল বহুভাবে পাশে ছিলো, আছে।
আজকের দিনটা অন্যরকম ছিলো। দীর্ঘ একটা প্রতীক্ষার অবসানের আগের দিন। অনেকটা চৈত্র সংক্রান্তির মত। সূর্য ডুবে যাওয়ার পর মনটা উদাস হয়ে গ্যালো। ভাবলাম, হ্যাপেনিং ডে'র আগের রাত আজ, সামান্য ডাল-রুটি'র বদলে কয়েক পদের সামুদ্রিক মাছের কালিয়া; কবুতর বা হাঁসের কোর্মা; মটর পোলাউ কী নসিব হতে পারতো না (কী হাল, খাবারের নাম ও আজকাল মনে থাকেনা) ! আর পরে ভরপেটে একটা হাভানা সিগার! নসীবে বেনসন লাইট ও নাই
ফেসবুক বা ব্লগে নিয়মিত হতে পারছিনা। বই পড়তেও কষ্ট হয়। সময়টা চরম নিরানন্দে যাচ্ছে; হাসপাতাল ও বাসা মিলিয়ে। শেষবারের বার ফিরেছি হুইল চেয়ারে। হুইল চেয়ার দুলতে দুলতে চলছে, আশপাশের অনেকজোড়া "ঈশ কি ক ষ্ট" লুক কে খেতাপুড়ি বলে রাস্তায় নজর দিলাম। বাসা পর্যন্ত পৌঁছতে পৌঁছতে ১২ বার ঝাঁকি খেলাম, ২টা বিশাল ঢাল পাড়ি দিলাম, মাত্র ৩ ইঞ্চি উচ্চতার কাছে ধরা খেলাম চার বার, লিফটে গুতাগুতি করে কোনোরকমে ঢুকলাম। ভেবেছিলাম আগামীবার হাসপাতালে ভর্তির আগ পর্যন্ত আমি হয়ত ঘর থেকে বের ই হতে পারবো না যদি না মহান হারামি বন্ধু সাইফ নিজের শক্তি ব্যাবহার করে; আর সেটাই হয়েছে। কাল সরতে পারবো বিছানা থেকে।
আমার একটা পেইন সং আছে, সেটাই নিজেকে শোনাচ্ছি "আনন্দলোকে, মঙ্গলালোকে..."। পেইন খেতে না চাইলে মালাউনদের গালি দ্যান, পূর্ণিমার 'গল্প'টা আবার পড়েন, আমোদ পাবেন। শীতের রাত, চাইলে আগুন ও পোহাইতে পারেন বাড়ি পুড়ায়ে। মনুষ্য কাবাবের গন্ধে ভরে উঠুক আপনার আশপাশ। নিজেকে মানুষ মনে হলে তাদের পাশে দাড়ান, আক্রমনকারী খবিসকে দাবড়ে দ্যান। নাইলে আমার মত ল্যাঙড়া হয়ে "ঠিক থাকলে কতো গুপ্তকেশ উৎপাটন করতাম!" বলে কম্বলমুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন।
আমাদের অসংখ্য সমস্যা আছে। বহু বিদেশি শক্তি পিছে লেগে আছে যাতে ঘেডি সোজা না হয়। অনেক মুক্তিযোদ্ধা গ্রেগর সামসা'র মত বিশালাকৃতির তেলাপোকা হয়ে যাচ্ছেন। দেশটাকে মনে হয় কেউ-ই ভালোবাসেনা। সবাই দেশ ছেড়ে চলে যেতে চায়, কেউই তাদের অবস্থানে খুশী না। গত বছরে অনেক মানুষ বিভৎসভাবে খুন হয়েছে, এবং বিভৎসতা তার কুৎসিততম অবস্থান কোথায় সেটা দেখাতে উঠে পড়ে লেগেছে। মানবাধিকার সব পক্ষেরই আছে। এবং সেটার লঙ্ঘন হলে সবার ক্ষেত্রেই হওয়া উচিৎ।
এই দেশে সবচেয়ে খারাপ গালির অধিকারী মানুষ নামক দোপেয়ে জীবকটা বিশাল খানাপিনা, বিচার ও চিকিৎসা পায়, সবচেয়ে নীচুস্তরের মানসিকতার ব্যাক্তিটি আয়েস করে গোত্র প্রধান হয়, খালি physically challanged নামক গালভরা শব্দের অধিকারীদের কোনো অধিকার নেই; তারা সংখ্যালঘুতম! এবং এ ব্যাপারে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। তারপরেও হাসপাতালের বেডে বসে যখন কাদের মোল্লার ঝুলে পড়ার খবর জানি, রানা প্লাজা ধ্বংসের উদ্ধারে মানুষ ঝাপিয়ে পড়ে বা একটা পাঁচই ফেব্রুয়ারি আসে তখন মনে হয়; বদলাবে। বদলাচ্ছে। আমার ছোটো মেয়েটা বড় হয়ে দেখবে চার দশক পরে হলেও এদেশে রাজাকারদের বিচার হয়েছে। মৃত রাজাকারদের দোষী বলা হয়েছে। চান্সে হিরো হয়ে যাওয়াদের সঠিক যায়গা দিয়েছে ইতিহাস। মালাউন শব্দটাকে অবমাননাকর এবং জরিমানাযোগ্য করা হয়েছে। ভিন্নধর্মীদের উপর আঘাত স্বধর্মীরা ঠেকাবে, এ নিয়ে বাণিজ্য হবেনা, আঘাতকারী ন্যুনতম সময়ের মধ্যে হাজতে যাবে। আর আমার মত মানুষেরা নিজেকে সংখ্যালঘু মনে করবেনা।
মন্তব্য
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
স্বপ্ন দেখি, নিশ্চয় হবে, হতেই হবে।
তাড়াতাড়ি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠুন তো, আপনার অপেক্ষায় আমরা সবাই রয়েছি।
ভাল থাকবেন।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
হ সিমন
সিমন, মানুষ তার আদিকাল থেকেই স্বপ্ন দেখে আসছে, এখনো দেখছে, আগামিতেও দেখবে। কেবল স্বপ্নগুলোর স্বভাব ও প্রকৃতিটাই বদল হচ্ছে ! সেই আদিম মানুষ যে স্বপ্নটা দেখেছিলো সেটা এখন হয়তো কোনভাবেই আর স্বপ্ন নয়। আমরা তা ছাড়িয়ে সেই স্বপ্নটাকে পেছনে ফেলে অনেক অনেক এগিয়ে এসে গেছি, কিন্তু স্বপ্ন এখনো দেখি এখনকার সাপেক্ষে না-পাওয়া অপূর্ণতাগুলো আগামিতে পূরণের। আবার ব্যক্তিভেদেও স্বপ্নের বিষয়-আশয়েও ভিন্নতা থাকে। এটাই অনিবার্য চিরায়ত স্রোত। বিষয় বদলে যায়, কিন্তু বিষয়ী হিসেবে আমরা স্বপ্ন দেখি আগামীর অন্য কোন পূর্ণতাকে পেতে। নইলে আর বেঁচে থাকার অর্থময়তা কোথায় !
তাই স্বপ্নগুলো পূরণ হোক এবং আমার স্বপ্ন দেখাটাও অব্যাহত থাকুক আরো কোনো আগামীর দিকে। সকল সময়ের জন্য শুভকামনা থাকলো। আমাদের যে দিনগুলো গেছে তা হয়তো গেছে, কিন্তু আমাদের জন্য আগামীর দিনগুলিও অফুরন্ত হয়ে আসুক। দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের সিমনকে আমাদের মধ্যে ফেরৎ চাই। অবশ্যই ভালো থাকবেন।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
স্বপ্ন নিয়েই বাঁচা সিমন!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
বদলাবে ঠিকি, যে আলো জ্বলেছে ৫ই ফেব্রুয়ারী তা পৌছে গেছে শহর নগর পেরিয়ে গ্রামে। মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক সচেতন, রাজনীতির খোঁজ খবর রাখে। রাজনৈতিক সচেতন মানেই ইতিহাস আর বর্তমান দুটোকে সমভাবে জানার চেষ্টা করা। আর ইতিহাস জ্ঞান একমাত্র মানুষকে বার বার ভুল পথ থেকে সঠিক পথে নিয়ে আসে, আমাদের কে ও নিয়ে আসবে। জয় হোক সত্যের, জয় হবেই সত্যের। আপনার সুস্থতা কামনা করছি।
মাসুদ সজীব
তবু ভালো দিনের অপেক্ষায় থাকবো আমরা।
অনেক দিন পর তোমার লেখা পড়ে কী যে ভালো লাগলো!
মামুর বুটা, খাওয়া কমে না !!
দেখা হচ্ছে জলদি, কিপ ফাইটিং ব্রো
facebook
ভালো লাগলো অনেকদিন পর লেখা দেখে
কবির সুমন কিন্তু গেয়ে যাচ্ছে, 'হাল ছেড়ো না বন্ধু।।।"
সুবোধ অবোধ
ছুঁয়ে গেল।
ভাবছিলাম কিছু অসম্ভব সুন্দর লাইন কোট করব, কিন্তু দেখলাম সেক্ষেত্রে প্রায় পুরোটাই প্রায় কোট করতে হয়, এমনই আদ্যোপান্ত ভালবাসা, শক্তি ও স্বপ্নে মোড়া আপনার এই ক্ষুদে গদ্য-গাথা!
সিমন ভাই, আপনি খুব কাঁদিয়েছিলেন সহব্লগারদের, সবাই প্রার্থনা করেছিলেন আপনি ফিরে আসুন। আপনি শুধু ফিরেই নিয়ে আসেননি, সাথে করে নিয়ে এসেছেন স্বর্গের ভালবাসা, স্বপ্ন, শক্তি!
.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল
মাছের কালিয়া ঠিক আছে। কিন্তু কবুতর বা হাঁসের কোর্মা? ধ্যাৎ! জমবে না একটুও।
তারচে' বরং দেশি মুরগীর কোর্মা হোক। সাথে ডিমভরা আলুর চপ হলে কেমন হয় রে ভাইয়া?
মটর পোলাউয়ের সাথে ঝালেঝোলে বেশ জমবে
কিছু শব্দ আমাদের জন্য বরাদ্দ করে দেয় হয়ত সময়, সেসবকে বুড়ো আঙ্গুল দেখাবার শক্তিও কারো কারো থাকে।
আপনি সেই বিরলদের একজন। অনেক শুভকামনা থাকলো ভাইয়া। সাথে আমার পেইন বিনাশি একটা গান শুনেন
http://youtu.be/82ONPbcRVLE
বুখে আয় বাভুল
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
সিমন, বেশি না আর কয়েকটা দিন। কথা দিচ্ছি, আপনার সাথে আমি হাভানা সিগারে টান দিবো, এক সাথে। উদযাপন করবো আমরা অনেক কিছু সিমন।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আপনার সাথে খানাদানার একটা কম্পিটিশান দেয়া বহুদিনের খায়েশ। সামনে বইমেলাও আছে। এইবার আর ছাড়াছাড়ি নাই।
মুভিতে সুপারহিরোদেরকে কে না দেখেছে! কিন্তু বাস্তবে? আমরা সেটাও দেখেছি। সামিউল ওয়াসেক ওরফে শাহেনশাহ সিমন - আমাদের দেখা সুপারহিরো। দুর্ঘটনা কম-বেশি কতো জনের জীবনেই না ঘটে। তবে রুখে দাঁড়াবার, ঘুরে দাঁড়াবার শক্তি-সাহস-মনোবল সবার থাকে না। সিমনের সেটা শুধু আছেই না দৃষ্টান্তমূলক ভাবে আছে। দেশ আর দেশের মানুষদের জন্য অনন্ত ভালোবাসা ধারণ করা এই মানুষটার দেহ যত বিশাল তার হৃদয়টা তারও চেয়ে বড়।
আমি সীমাবদ্ধ সামর্থের মানুষ। সিমনের দুঃসময়ে তার জন্য কিছুই করিনি। এই অনুশোচনা আমাকে প্রতিনিয়ত পোড়ায়। আমার সমস্ত শুভকামনা সিমনের জন্য, তার ছোট্ট পরীটার জন্য, তার সবসময়ের সঙ্গীনির জন্য। সিমনের প্রতিটা লড়াইতে আমার সর্বান্তকরণে সমর্থন আছে-থাকবে।
আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি সিমন জয়ী হবেই - যেমনটা সে আগেও হয়েছে, শুধু একটু ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে। আমরা সবাই অপেক্ষায় আছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
____________________________
কীপ ফাইটিং --- আপনাকে দেখার অপেক্ষায় আছি।
____________________________
মন ছুঁয়ে গেল লেখাটা। ভাল থাকুন।
একদিন এই সবগুলো দিনই স্মৃতি হয়ে যাবে, অতীতকালের গল্প হয়ে যাবে। সেদিনটায় কোঞ্চিপায় আপনার মুখে কথাগুলো শুনতে পাবো বলে অপেক্ষায় আছি.......
-অন্যকেউ
সিমন, দ্বিতীয় জন্মের দ্বিতীয় যুদ্ধটাতেও আপনি জিতে যাবেন। নিশ্চয়ই এইসব ঘোর লাগা দুঃসময় সাময়িক বিভ্রান্তিমাত্র।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সূর্যটার অপেক্ষায়...
কড়িকাঠুরে
আবাজিগস, উই উইল ওভারকাম সাম ডে।
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
চমৎকার লেখা। আমার দেখা একজন সাহসী মানুষ আপনি, আমি সত্যিই কোন সাহসী মানুষকে চিনি, এইটা অনেক বড় ব্যাপার। শুধু শারিরীক প্রতিকূলতা ফাইট করার কারণে না, আপনি আমার কাছে আরও বেশি সাহসী কারণ আপনি আমাদের প্রজন্মের একজন বাবা যে মুক্তিযুদ্ধ নিজে না দেখেও নিজের সন্তানকে তার গল্প শোনায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শাহেনশা কখনো হেরে যায় না---
শুভেচ্ছা নিরন্তর--
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
------------------------------------------
'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)
সিমনরা কখন হারেনা এমনকি মরেও না বারবার পুনর্জন্ম নেয় আপনি নিজেই তার সবচেয়ে বড় উদাহরন।
ভালো থাকুন।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
নতুন মন্তব্য করুন