এ মাটির কোথায় কত গহিন-গভীরে শুয়ে আছ তোমরা- কে জানে?
কোথায় গ্রথিত তোমাদের ছিন্নভিন্ন করোটি, আঙুল- অনামিকা
দীর্ঘ বাহু, প্রসারিত দৃষ্টি, দৃপ্ত পদপেক্ষ- জানি না, জানা নেই।
স্বাধীন বুকের জমাট-তাজা রক্ত কোন ধারায় মিশেছে- বানে
সত্যিই কি জেনেছি, আত্মার জমিন খুলে পড়েছি কি ইতিহাস?
হাজার নদীর বহমান স্রোতে রেখেছি কি কোনো অন্তরঙ্গ প্রতিজ্ঞা?
তবু বিশ্বাস করি, প্রতি বৃক্ষের শিকড় ছুঁয়ে আছে তোমাদের দেহ;
শস্যের জমিনজুড়ে সোনালি শীষের নিচে জমাট তোমাদের ঘনশ্বাস
নদীর ধারায় মিশে আছে স্বদেশের হৃতপিণ্ডের ফোঁটা ফোঁটা রক্ত।
যখন ঘুঘু ডাকে স্বাধীন দুপুরে, আমরা মাখি তোমাদেরই সোনারোদ
শাপলার বৃন্তমুক্ত স্বাধীনতা- সে কি পরাধীন কোনো আঙুল ছুঁতে পারে?
কিংবা বাতাবি নেবুর ডালে দোয়েল নাচে কোন সাহসের সমাচারে!
যখন কাঁঠালের ঘ্রাণে মাতোয়ারা বাংলাদেশ, তখন কি কঠিন থাকে-
তোমাদের সুগন্ধিময় শরীরের ইঞ্চি ইঞ্চিতে স্বাধীনতার নির্ভুল নিকেশ
উনুনের মুখে মায়ের উচ্ছল চোখে কে আর খোঁজে স্মৃতির অ্যালবাম?
মায়ের উঠোনে, বাবার নাঙলের পিছে, পরবাসী বোনের নিমন্ত্রণে
হয়তো তোমরা নেই সরাসরি; তবু আত্মার উপস্থিতি তারচেয়ে উজ্জ্বল।
আঁতুড়গন্ধময় ভাবনায় এ মাটির কোথায় নেই সারিবদ্ধ তোমরা-
উঠোনের ঝুলন্ত রশিতে কোথায় দুলছে না স্মৃতিদীর্ঘ পাজামার রশি?
ভোরের আলো ভেঙে সকাল আজও সরব- খোকার পায়ে বনেদি খড়ম;
কোথায় বইছে না তোমাদের নিঃশ্বাস- শিমুল-পলাশরাঙা ফাল্গুনে!
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন