[সামহোয়্যারইনব্লগ এ প্রকাশিত...২৭ শে জুন, ২০০৬]
মাংস পোড়ায়ে পোড়ায়ে খাচ্ছিলাম..কচি নধর ভেড়ার বুকের নরম নরম মাংস..হঠাৎ একটা ধাক্বা লাগল..
বছর খানেক আগের কথা..শ্রাবণ মাস,ঝুম বৃষ্টির দিন..বেইলী রোডে দাঁড়ায়ে ছিলাম,ভেজা চুপচুপ কাক দের সাথে-তাদের মতই..দূর থেকে একটা রিক্সা আসতে দেখলাম,বাতাসের উল্টা দিকে ধুকে ধুকে আগাচ্ছে;অথবা আগাচ্ছেনা..আমার সামনে আসতেই একেবারে থেমে গেল..সত্তুর এর আগেপিছে হবে বয়স,ছেঁড়া গেনজি র উপর দিয়ে হাঁপরের মত উঠানামা করতে থাকা পাঁজর এর হাড্ডিগুলো স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে..মর্মছুঁয়ে যাওয়া বর্ণনা কবিরাই হয়ত ভালো দিতে পারবে,আমি ওপথ মাড়াবোনা..নিতান্তই কৌতুহলবশতঃ (অথবা সময় কাটানোর জন্য??) একটা-দুটা কথা বললাম.. বাড়িতে রুগ্ন মেয়ে ছাড়া কেউ নাই,তাই অশক্ত শরীরেও জীবনের সাথে এই অসম লড়াই..অনুযোগের স্বরে বললেন যে,বুড়ো বলে কেউ রিক্সায় চড়তেও চায়না,তাই জমার টাকা টুকু পর্যন্তঅনেকদিন ওঠেনা..কিছুক্ষণ আহা উহু করলাম,ভাংতির জন্য পকেটে হাতড়ালাম(নিম্নমানের মানুষেরা যেমন করে আর কি!)..তারপর বৃষ্টি থামার সাথেই যুবকতর রিক্সাওয়ালা খুঁজে রওনা দিয়ে দিলাম..
পোড়া মাংসের সুস্বাদু গন্ধ আবার নাকে ধাক্বা দিল. .পেটুকের মত মাংস চিবাতে চিবাতে ছোট্ট একটা অংক মাথায় কষলাম..আমার এই একবেলার খাওয়ার খরচে ওই রিক্সাওয়ালার ৪৪ দিনের জমার টাকা হয়ে যায়..সত্যিই সেলুকাস!কি বিচিত্র এই মানুষ!কি বিচিত্র তাদের মানবজীবন!
এইসব বিদঘুটে অংক মাথা থেকে ঝেরে ফেলে আরো অনেকক্ষণ ধরে মাংস পোড়ালাম,চিবালাম এবং ঢেকুর তুললাম..তারপর নারীকে বুঝালাম- "এসো,এইভাবে,এইভাবে..এরকম ভাবে.."
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন