আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস: তথ্য গোপনের নকশা নাকি অজ্ঞতা ?

থার্ড আই এর ছবি
লিখেছেন থার্ড আই (তারিখ: সোম, ১১/০২/২০০৮ - ৭:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইউনেস্কো কতৃক প্রকাশিত ২০০৮ সনের পোষ্টার
বাঙালির শহীদ দিবসটি এখন আর ৫৫ হাজার বর্গমাইলে সীমাবদ্ধ নয়। এর বিস্তৃতি এখন বিশ্বময়। ২১ ফেব্র“য়ারীকে আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস বলেই জেনে আসছে বিশ্ববাসী । ১৯৯৯ এ সংবাদ টি আমি জানতে পাই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিনারে ঝুলানো নোটিশ বোর্ড থেকে। সেখানে বলা হলো প্রথম বারের মতো দিবস টি পালনের জন্য ইউনেস্কো বিশ্বজুড়ে ব্যপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও একটি র‌্যলি বের হবে, আমরা যেন সেই র‌্যলিতে অংশ নেই। র‌্যলিতে গেলে একটা টি-সার্ট নিশ্চিত। সেদিন কাড়াকাড়ি করে একটা টি সার্ট জোগাড় করেছিলাম, যদিও সাইজ আমার চেয়ে অনেক বড়ছিলো তবুও সেই টি-সার্ট আমি এখনও রেখে দিয়েছি সুভেনীড় হিসাবে। যে দেশটির মানুষ ভাষার জন্য প্রান দিয়েছে তাদের প্রতি ইউনেস্কো সম্মান প্রদর্শন করে দিবসটিকে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। আমার কাছে এটি অন্যন্য সংবাদ। "মাদার ল্যাংগুয়েজ অফ দ্যা ওর্য়াল্ড" নামে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশীদের যে সংগঠনটির প্রচেষ্টায় ২১ ফেব্রয়ারী দিবসটি ইউনেস্কোর কর্তাব্যক্তিদের নজরে আসে তার কৃতজ্ঞতাও ইউনেস্কোর অর্ন্তজালে গিয়ে আমি লিংকের পর লিংক আর তস্য লিংক খুঁজে কোথাও এর সুত্র পেলাম না !!! না আছে কোথাও বাঙালির কোন অবদানের কথা , না আছে কোন বাঙালি সংগঠনের প্রচেষ্টার কথা!! শুধু মাত্র একটা পেজে ফ্যাক্ট এন্ড ফিগারে চার লাইনে লিখা আছে ১৯৯৯ সনে ইউনেস্কার ৩০ তম অধিবেশনে বাংলাদেশ ও সৌদি আরব ২১ ফেব্র“য়ারীকে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি জানানোর প্রস্তাব উত্থাপন করে এবং অপর ২৫ টিদেশের সদস্যরা সেটিকে অনুমোদন করে। ইন্টারনেট জুড়ে ২১ ফেব্র“য়ারী কেন মাতৃভাষা দিবস বাংলাদেশ সর্ম্পকে এই ই হলো তথ্য !!

ঠিক কি কারনে আন্তজর্তিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে ২১ ফেব্রুয়রী দিনটিকে নির্বাচন করা হলো সেই তথ্যও আর পাওয়া গেলোনা , নেই বলেই হয়তো পাইনি !! রাগিব ভাই কিংবা সুবিনয় মুস্তফি হলে হয়তো বের করে ফেলতেন। হয়তো কোথাও না কোথাও তাদের নাম আছে, হয়তো বাংলাদেশের নাম ও আছে। কিন্তু আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা বাণীতে কোথাও ১৯৫২ সনের বাঙালির ভাষার সংগ্রামের কথা লিখা নাই। এই দিনটি যে বাঙালির ভাষার আত্ন ত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে নির্ধারন করা হয়েছে এটি আমারা বাঙালিরা যতটা বিশ্বাস করি পৃথীবীর তাবৎ লোক কি তাই জানে, তাদের জন্য আসলে কি তথ্য দেয়া আছে ইন্টারনেটে ?? ১৯৯৯ সন হতে ২০০৭ পর্যন্ত বিগত বছরগুলোতে পালন হওয়া ইউনেস্কোর জাতীয় অনুষ্ঠানমালার সংবাদগুলোতেও কোথাও ভাষা শহীদের এই আত্নত্যাগের কথা লিখা নাই। আরো হতাশার কথা হলো ২০০৮ সনেও একই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে। এই প্রতিবেদন যখন লিখছিলাম তখনও পর্যন্ত ২০০৮ সনের সংবাদটি ইউনেস্কোর অন্তজালে ছিলো, ছিলো পোষ্টারটিও। কিন্তু লেখা শেষ করে দেখি সেই সংবাদটিও আর পাওয়া যাচ্ছেনা। ভাগ্যিস ছবিটা সেভ করে রেখেছিলাম!!

শুধু তাই নয় ইউনেস্কোর ডাইরেক্টর জেনারেলের শুভেচ্ছা বানীতেও ভাষা শহীদের প্রতি কোন কৃতজ্ঞতা কিংবা ভাষা সংগ্রামের নাম নাম গন্ধও পাওয়া যায়নি।
ধরে নিলাম দিবসটি ৮ বছর পুরোনো হয়ে যাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে এই বিষটি হয়তো অনিচ্ছাকৃত ভাবে বাদ পড়েছে, না পাঠক প্রথমবারের মতো ১৯৯৯ সনে উদযাপিত আন্তজাতিক মার্তভাষা দিবসের ইউনেস্কো মহাসাচিবের বানীতেও বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের আত্ন ত্যাগের কথা উল্লেখ নাই !!

বিষয়টি কি এমন যে,একটি দিনকে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে বানাতে হবে তাই বানিয়ে দেয়া, নাকি অন্যকিছু?? শুধু মাত্র ভাষার জন্য একটি দেশের মানুষ এভাবে আত্নাহুতি দিয়েছে সেই দৃষ্টি ভঙ্গির প্রতি সম্মান রেখে,৫২ ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যদি এই দিবসের স্বীকৃতি আসে তবে তাদের সেই সম্মান দিতে বাঁধা কোথায় ?? এটি কি ইউনেস্কোর অজ্ঞতা নাকি তথ্য গোপনের চেষ্টা ?? বিচক্ষণ কারো মনে কি এই প্রশ্ন জেগেছে? বাংলাদেশের বাইরে আর্ন্তজতিক ভাবে আয়োজিত সেমিনার ও অনুষ্ঠানমালায় কি বাংলাদেশের নামটি কিংবা ইতিহাস সঠিকভাবে উচ্চারিত হচ্ছে?? নতুন প্রজন্ম ও অবাঙালিরা কি জানতে পারছে কেন ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তজর্তিক মাতৃভাষা দিবস করা হলো ? আমরা বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় যেভাবে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা হিসাবে দিবসটিকে তুলে ধরছি আন্তজার্তিক গনমাধ্যম গুলোতে কি ঠিক সেইভাবে সংবাদগুলো প্রতিফলিত হচ্ছে ??

বিগত বছর গুলোতে আন্তজার্তিক ভাবে পালিত ইউনেস্কোর পোষ্টার লিফলেট কিংবা নিউজ লেটারে কোথাও বাংলাদেশের ১৯৫২ সনের এই আত্মত্যাগের সংবাদটি আমার চোখে পড়েনি।

শুধুমাত্র ইউকিপিডিয়াতে এর খানিকটা ব্যতিক্রম।

ইউনেস্কোর ২০০৪ সনের পোষ্টার

২০০০ সন থেকে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে উপলক্ষে কয়েকটি পোষ্টার আমার নজরে এসেছে এর কোন একটাতেও ১৯৫২ সনের একুশে ফেব্র“য়ারী কিংবা ভাষার জন্য লড়াইয়ের কোন নাম গন্ধ পেলামনা। আমি না হয় শিল্পী নই, শিল্পের মুল্য বুঝিনা ইতিপূর্বে ছাপা হওয়া পোষ্টারগুলো পর্যবেক্ষণ করে পাঠক আপনারাই বলুন এই পোষ্টারগুলোর শিল্পমান উপলব্দি করতে পারছেন ?? এই পোষ্টারগুলোর সাথে ’৫২ ভাষা সংগ্রামের কোন গন্ধকি খুঁজে পেয়েছেন কেউ ?? পোষ্টারের কোন একটাতেও কি বাংলাদেশের শহীদ মিনারের প্রতিকৃতি আঁকা যেতোনা ??

২০০৬ সনের পোষ্টার

এই বিষয়গুলো নিয়ে আসলে প্রতিবাদের চেয়ে বেশী প্রয়োজন আলোচনা । যুক্তি তর্কের চেয়ে বড় বেশী জরুরী সমাধানের পথ খোঁজা। ইউনেস্কোর যদি অজ্ঞতা থেকে থাকে তবে তাদেও অজ্ঞতা দূর করতে সহায়তা করা।
২০০৭ সনের পোষ্টার

আসলে আমাদের চাওয়া পাওয়া খুব সীমিত, এত সহনশীল জাতি পৃথীবীতে দ্বীতিয়টি আছে বলে আমার জানা নেই....অল্পতেই আমরা তুষ্ট থাকি। তাই আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসটি ফেব্রুয়ারীর ২১ তারিখে পালিত হচ্ছে দেখেই আমরা অবিভূত !!

আশা করছি আসছে ২১ তারিখে আরো একটা আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস নাটকের মঞ্চায়ন দেখবো!!


মন্তব্য

তানভীর এর ছবি

এখানে ২০০৩ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ৫৭তম জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সভাপতির বক্তব্য আছে যেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট বর্ণনার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।

আসলে বায়ান্নর একুশে ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলনের ঘটনার কারণে এই দিনটি "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হিসেবে বেছে নেয়া হলেও দিবসটির মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীর সব মানুষের মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও এর বৈচিত্রের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা। যেমন বিশ্ব ক্যান্সার দিবসে পৃথিবীর সব ক্যান্সার পেশেন্টদের সাথে আমরা সংহতি প্রকাশ করি। কিন্তু সেই নির্দিষ্ট দিন বেছে নেয়ার পেছনেও হয়তো কোন ক্যান্সার রোগীর করুণ কাহিনী রয়েছে। আমরা কয়জন জানি সেই কাহিনী? এরকম তো বছরে আরো অনেক দিবসই আছে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ব্যাপারটাও তাই বাইরের বিশ্বের মানুষ এভাবেই জানে। এক্ষেত্রে পৃথিবীর নানা প্রান্তে অবস্থিত বাংলাভাষী প্রবাসীরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এই পেছনের কাহিনী মানুষকে জানিয়ে। এটা ইউনেস্কোর কর্তব্য নয়, আমাদের কর্তব্য।

বাংলাদেশ সরকারের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে এই দিবসটির প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা আছে, যেখানে কানাডিয়ান সংগঠনটির উদ্যোগের কথাও বলা হয়েছে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে যে ব্যাপারটায় চিন্তিত তা হল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পৃথিবীর সব ভাষাভাষী মানুষের মাতৃভাষার প্রতি সংহতির কথা বললেও বাঙ্গালীদের অবহেলার কারণেই আজ বাংলাদেশে অবস্থিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আদিবাসীদের মাতৃভাষাগুলো লুপ্ত হতে চলেছে। এ আমাদের লজ্জা। আমাদের ভাষা শহীদরা, যারা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় জীবন দিয়েছিলেন, তাদের প্রতি অবমাননা আমরা এভাবেই করে চলেছি।

=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"

থার্ড আই এর ছবি

আপনার লিংক অনুযায়ী জাতীসংঘের সাধারণ অধীবেশনের ২০০৩ সনের বক্তব্যে ভাষা শহীদের কথা বলা হয়েছে এই তথ্য মানলাম। লিংকের জন্য ধন্যবাদ । তবে আমার কথা হচ্ছে ইউনেস্কো গত ৮ বছর ধরে এই দিবসটা পালন করছে. তাদের কোন উৎসবে কি এই বিষয়টা উঠে আসার প্রয়োজন ছিলোনা?? তাছাড়া একজন সাধারণ পাঠক যখন এই বিষয়ের সত্যতা বা ইতিহাস জানতে চাইবে তিনি নিশ্চই বাংলাদেশ সরকারের অফিসিয়াল ওয়েব সাইটে প্রবেশ করবেনা না ? কিংবা জাতি সংঘের সংঘের সাধারণ পরিষদের ৫৭ তম অধিবেশনের বক্তব্য খুঁজতে যাবেনা । কিংবা জেনারেল এসম্বলীর প্রেসিডেন্টের ওয়েব সাইট ভিজিট করতে যাবেনা, বরং তিনি আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবসে পালনকৃত অনুষ্ঠানমালার আশে পাশের সংবাদ ও লিংক গুলো দেখবেন।

যখন ইউনেস্কো কতৃক বিষয়টি ঘোষনা দেয়া হয়েছে তাই তাদের অনুষ্ঠান মালায় এবং তাদের ওয়েব সাইটেই বিষয়টির কৃতজ্ঞতা অন্তত কোন একজায়গাও থাকবেনা এই বিষয়টি আমি মানতে পারছিনা। কর্তব্যটি কিছুটা ইউনেস্কোরও আমাদের দায়িত্বটি হচ্ছে তাদের সহযোগিতা করা।

আমার নিজের দেশের ওয়েব সাইট কিংবা আমরা যেভাবে আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসকে দেখছি সেই ভাবনাটি বিশ্ববাসি যেন এক পলকেই জানতে পারে সেই জন্যই এই বিষয়টি নজরে দেয়া।
আমি এত খুঁজতে পারবো না , সোজা কথা এই কৃতজ্ঞতা ইউনেস্কোর আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবেসর সংবাদের প্রথম পাতায় দেখতে চাই।
পোষ্টারের কোন এক বছরে আমাদের শহীদ মিনারের প্রতিকৃতি চাই।

---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্যাপারটি নিয়ে প্রচার হওয়া দরকার। ব্যাপারটা যাদের হাতে আছে তাদের টনক নড়লেই হয়।

মুহাম্মদ২০১৭

বিপ্লব রহমান এর ছবি

পোস্ট ও মন্তব্যের জন্য থার্ড আই ও রাগিব ভাইকে ধন্যবাদ।

ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের ক্ষেত্রে একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে এই তথ্যশূন্যতা সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না।...

উইকিপিডিয়ার নিরব কর্মী রাগিব ভাই আপনার পরিশ্রম সফল হোক!


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

থার্ড আই এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থঅনুযায়ী কিছু করতে পারলেও হয়। তবে ইউকিপিডিয়া যেমন আপডেট দরকার তেমনি বাংলাদেশে কর্মরত ইউনেস্কোর কর্মকতাদের মাধ্যমে কিংবা ইমেইলের মাধ্যমে বিষয়টি ইউনেস্কোর নজরে আনাও জরুরী।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় যেভাবে আন্তজার্তিক মাতৃভাষা হিসাবে দিবসটিকে তুলে ধরছি আন্তজার্তিক গনমাধ্যম গুলোতে কি ঠিক সেইভাবে সংবাদগুলো প্রতিফলিত হচ্ছে ?

তা কি আদৌ সম্ভব?

গত পরশু বছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে রুশ এবং ইউক্রেনীয় পত্র-পত্রিকা ঘেঁটে বেশ অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছিলাম, অধিকাংশ পত্রিকাই আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের উত্পত্তি বিষয়ে অল্পবিস্তর লিখেছে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

থার্ড আই এর ছবি

সম্ভব। একটু খোলাসা করেই বলি, আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে পৃথীবীর বিভিন্ন দেশে ইউনেস্কোর সহায়তায় ও স্থানীয় সংগঠনের উদ্যেগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে। সেখানে বাংলাদেশী প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন। তারা তাদের দায়িত্বটি পালন করলেই ল্যাঠা চুকে যায়, ২১ ফেব্রুয়ারী প্যারিসে ইউনেস্কো কতৃক আন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানমালার আয়োজনের খবর পেলাম, সেখানে ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বক্তৃতা দেবার কথা রয়েছে, তিনি যদি সেই অনুষ্ঠানে তার দায়িত্ব পালন করেন তাহলে ইতিহাসের এই চর্চাটা অনুসৃত হবে।এভাবে প্রত্যেক দেশে বাঙালি প্রতিনিধীরা যদি প্রতি অনুষ্ঠানে ৫২'র ভাষাশহীদের আত্ন ত্যগের কথা উল্লেখ করেন , তাহলে সেই দিন আর বেশী দূরে নয়, যে দিন মাতৃভাষা দিবসে আমাদের শহীদ মিনরের প্রতিকৃতি পোষ্টার হিসাবে স্থান পাবে। ধীরে ধীরে আন্তজার্তিক গনমাধ্যমেও মূল ইতিহাসটি উঠে আসবে।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

হিমু এর ছবি

কিন্তু নকশায় চন্দ্রবিন্দু কেন? নাকি স্পেশাল বলেই এটা নঁকশা?


হাঁটুপানির জলদস্যু

থার্ড আই এর ছবি

নকশা এতক্ষন আপনার চাকুর অপেক্ষা করছিলো।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

অমিত আহমেদ এর ছবি

তথ্যবহুল পোস্ট। থার্ড আই এর সাথে একমত।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

একুশে ফেব্রুয়ারি বিষয়ে একজন বাঙালি হিসেবে যে আবেগের তীব্রতা ও গৌরব আমি অনুভব করি, এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসের মর্যাদা দেওয়ার কারণে অন্যরাও একই আবেগ অনুভব করবে - এরকম আশা করা কীভাবে সঙ্গত?

তবে এই বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ একমত যে সঠিক তথ্য ও প্রেক্ষাপটটিকে প্রচারের দায়িত্ব আমাদের নেওয়া দরকার ছিলো অনেক আগেই। হয়নি। কেন হয়নি ভেবে লাভ নেই। কীভাবে করা যায় সেই ভাবনাই ভাবা উচিত। আমাদের সরকারি উদ্যোগের অপেক্ষায় থাকলে তা কোনোকালে অর্জিত হবে না। আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যাপারে একেবারে শেষ মুহূর্তের কিছু বিধিবদ্ধ কর্মাদি ছাড়া সরকারিভাবে আর কিছুই করা হয়নি। এর উদ্যোগ ও কৃতিত্ব দু'জন পরবাসী বাঙালির।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

থার্ড আই এর ছবি

আসলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সাথে একুশে ফেব্রুয়ারীকে যুক্ত করে প্রবাসী বাঙালিরা দেশের প্রতি তাদের ভালোবাসার স্বাক্ষর রেখেছে। কানাডা প্রবাসী সেই দুই সূর্যসন্তানকে সালাম। আমার স্মৃতি শক্তি এতো লোপ পেয়েছে... সেই দুই কৃতিমান বাঙালির নাম ভূলে গেছি..
অনুগ্রহ করে কেউ জানলে তাদের নাম গুলো তুলে দিন। তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতাটা জানাতে চাই।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

মুক্তমনার এক লেখাতে ভ্যাঙ্কুভারে বসবাসরত ভাষা রফিকের ইতিহাস লেখা আছে - রিলেভেন্ট লিন্কটা দিলাম. এ নিয়ে একটা পোস্ট দিবো চিন্তা করেছিলাম, কিন্তু ফতেমোল্লা যা লিখতে চাচ্ছিলাম সবই উল্লেখ করেছেন.

ওয়াইল্ড-স্কোপ এর ছবি

সমকালে প্রাসঙ্গিক একটি লেখা আছে - এটিকে ইউনিকোডে রূপান্তর কিভাবে করবো - কারো জানা আছে? সমকালের ওয়েব-সাইট গুগুলে ব্ল্যাক লিস্টেড বলে ওয়ার্নিং দেয় মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।