ইলেকশন রঙ্গ : লেবুর রস আর পেঁপের কষ

থার্ড আই এর ছবি
লিখেছেন থার্ড আই (তারিখ: সোম, ২৯/১২/২০০৮ - ১:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'ভোট দেবার জন্য প্রথমেই ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত পোলিং অফিসারের কাছ থেকে ব্যালট পেপার সংগ্রহ করুন। পোলিং অফিসার আপনার বুড়ো আঙ্গুলে অমোচনীয় কালির দাগ দেবেন, তার পর গোপন কক্ষে প্রবেশ করে আপনার পছন্দের প্রার্থীর ঘরে সিল দিয়ে ভোট প্রয়োগ করবেন।

অতপর ব্যালট পেপারটি প্রথমে লম্বালম্বী ও পরে আড়াআড়ি ভাবে ভাঁজ করুন। এর পর বাইরে এসে প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে রাখা ব্যালট বাক্সে আপনার ভোট প্রয়োগ করুন। মনে রাখবেন ভোট আপনার অধীকার । '

বাক্যের গঠন একেবারে এই রকম না হলেও অনেকটা এই ধাঁচের একটা ভোটের প্রচার চালাতো বাংলাদেশ টেলিভিশন। নব্বইয়ের দশকের কথা বলছি। আমি তখনও স্কুলে পড়া কিশোর। ভোট সম্পর্কে আমার ধারণা ওই টেলিভিশনের বিজ্ঞাপনটি । পাশাপাশি বাবা মা দু'জনেই সরকারী চাকুরিজীবী হওয়াতে মজার মজার গল্প শুনতাম। বাবা দায়িত্ব পালন করতেন প্রিজাইডিং অফিসারের আর মায়ের দায়িত্ব পড়তো পোলিং অফিসার হিসাবে। আম্মু মজার গল্প বলতো। কতজনকে ওনি ধরতেন জাল ভোট দেয়ার জন্য। একদল পোলাপান থাকতো ভোটের দিনে লেবু আর পেঁপের কষ সাপ্লাই দেওয়ার জন্য। তখনও কালি মুছার রিমুভারের প্রচলন হয় নাই। ভোট দেয়ার পর পর ঐ ছেলেদের কাজ হতো আঙ্গুলের ছাপ মুছে দেওয়ার জন্য লেবুর রস আর পেঁপের কষ পদ্ধিত ব্যবহার করা। সাথে সাথে সে আঙ্গুলের দাগ মুছে আবার জাল ভোট দেয়ার জন্য প্রস্তুত। তো আম্মু একবার ধরে ফেললো জাল ভোটারকে, বললো এই তুই না এখন ভোট দিয়ে গেলি ? তোর হাতের দাগ কই..??
-আফা কই দাগ , কুনু দাগ নাই।
কিন্তু আম্মু নিশ্চিত ছিলো এই ছেলের হাতে ওনি অমোচনীয় কালি দিয়ে দাগ দিয়েছেন। তার তালিকাতেও নাম কাটেছেন। এখন অন্য নাম নিয়ে এসেছে ভোট দিতে।
-আম্মু যেহেতু টিচার , পোলাপান পিটাইয়্যা অভ্যস্ত , উনি সিট থেকে উঠে গিয়ে ছেলেটার পকেটে হাত দিলেন। দিয়ে তিনটা লেবু জব্দ করলেন। বলেন পকেটে লেবু নিয়া ঘুরস ক্যান ? তার পরের ঘটনা আরো ভয়াবহ। একদল ছেলে এসে সবার সামনে থেকে ভোট বাক্স আর ব্যালট পেপার নিয়া দিলো এক দৌড় !!

আম্মু হা করে তাকিয়ে থাকলো ....আইন শৃঙ্গলা বাহিনীর কর্মীরা সেই বাক্স উদ্ধার করলো পুকুর থেকে !

দিন বদলাইছে এখন নিশ্চই লেবু পদ্ধতি অনেক প্রাচীন হয়ে গেছে, হয়তো আরো কোন ডিজিটাল পদ্ধতি প্রয়োগ হবে এবারের ভোটে!


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

সৌরভ এর ছবি

হেহে।
বাংলাদেশে সবই ঘটে।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

জিজ্ঞাসু এর ছবি

ডিজিটাল অন্য কিছু না আদি ও অকৃত্রিম লেবুর রস ও পেপের কষই ডিজিটাল। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচিত ভোটকেন্দ্রের ত্রিসীমানায় লেবু ও পেপে ব্যান্ড করা। শহর এলাকায় আইনের কড়াকড়ি প্রয়োগ হলেও অজপাড়াগাঁয় অনেক অনিয়ম হতে পারে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

মজা পাইলাম। দেঁতো হাসি

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

লীন [অতিথি] এর ছবি

আমিও মজা পাইছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।