বিডিআর বিদ্রোহ : শুধুই কি ডাল ভাত নাকি অন্য কিছু ?

থার্ড আই এর ছবি
লিখেছেন থার্ড আই (তারিখ: রবি, ০১/০৩/২০০৯ - ৭:১০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিডিআর বিদ্রোহের প্রথম দিনে পিলখানার চিত্র।বিডিআর বিদ্রোহের প্রথম দিনে পিলখানার চিত্র।
শুধু মাত্র ডাল ভাত, আর অফিসারদের উপর অসন্তোষের জন্যই কি পিলখানা মৃত্যু উপত্যকা হয়ে উঠেছিলো, নাকি বিডিআর বিদ্রোহ একটি পরিকল্পিত নাশকতা ?

প্রথমত:

সকাল ৯ টা থেকে সাড়ে ১০ টার মধ্যেই বিদ্রোহী বিডিআরদের অপারেশন পরিচালিত হয়। বিডিআরের ডাইরেক্টর জেনারেলকে লক্ষ্য করে প্রথম আক্রমন হলেও মুহুর্তের মধ্যেই অপর জওয়ানরা কি করে সংগঠিত হলো ?
তাহলে কি ধরে নেয়া যায় না এটি পূর্ব পরিকল্পিত ? পূর্ব পরিকল্পিত হবার পেছনে আরো যুক্তি হলো অসংখ্য টুকরো টুকরো লাল কাপড় এবং বিডিআর সপ্তাহের বিশেষ দিনটি বেছে নেয়া। আস্ত্রাগার টার্গেট করে দখল নেয়া ... ২৫/২৬ তারিখে বিডিআর পোষাকে কি অন্য কোন হত্যাকারী পিলখানায় প্রবেশ করেছিলো ?

দ্বিতীয়ত :

এতবড় নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পরিকল্পনার খবর কি নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা অনুমান করতে পারেনি ! তাদের কি কোন ভূমিকা নেই ? এতোগুলো বিডিয়ার জওয়ান সংগঠিত হয়ে গেলো ! টেলিফোন মনিটরিংএর সহায়তায় কি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এক বিন্দু আগাম খবর পেলো না?
তাহলে দেশে সকল গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন কাজ করছে তারা কি এই বিষয়গুলো জেনেও আপোষ করেছে ?

তৃতীয়ত :

রাজনৈতিক নেতারারা বিশেষ করে ১/১১ এর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যেসকল রাজনৈতিক নেতারা সেণাবাহিনীর রোষানলে পড়েছেন, দূর্নিতীর দায়ে জেল খেটেছেন তাদের কোন সহযোগিতা রয়েছে কিনা সেই বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা দরকার।

চতুর্থত :
সেণা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলের অনেক বিষয় নিয়ে বির্তক থাকলেও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সাধারণ মানুষ ছিলো সন্তুষ্ট, কিন্তু বর্তমান সরকার দায়িত্ব পাললেনর দুই মাসের মাথায় দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গিয়েছিলো। তাই সেণা বাহিনীর এই সাফল্যকে ম্লান করে দিতে কিছু দূনীতি গ্রস্থ সেণাকর্মকতার জন্য পুরো সেণাবাহিনীর উপর কলঙ্কের দাগ দেয়ার জন্য অন্য কোন শক্তির যোগ সূত্র রয়েছে কিনা সেটিও ক্ষতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজন রয়েছে আন্তজার্তিক শক্তির সহযোগিতার বিষয়টিও বিবেচনায় আনা। কেননা জাতিসংঘের শান্তি মিশনে আমাদের সেণাবাহিনী যোগ্যতার সাথেই কাজ করে আসছে। তাদের ভূমিকা আন্তজার্তিক মহলেও সমাদৃত। এই কলঙ্কের দাগ দিতে পারলে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা মিশনে ভবিষ্যতে অংশ নেয়ার বিষয়টি নি:সন্দেহে প্রশ্ন বিদ্ধ হবে ।

পঞ্চমত :
সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটি সেটি হলো সাম্প্রতিক সময়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগন যুদ্ধাপরাধীদের বিপক্ষে রায় দিয়েছে। জনগনের দাবির পক্ষে শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকারও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি অগ্রাধীকার ভিত্তিতে বিবেচনা করছে। মামলাও হয়েছে । গ্রেফতার করে জেল হাজতে নেয়া হচ্ছে রাজাকারদের। বিষয়টি কি এমন যে যুদ্ধাপরাধী ইস্যুটিকে গৌণ করে দিতে একটি জাতীয় সংকট সৃষ্টি করা হয়েছে ? এই বিষয় গুলোর স্পষ্ট উত্তর আমাদের খুঁজতে হবে।

সবশেষে ,সেণাবাহিনীর মধ্যে যে এলিটিজম রয়েছে এটি যেমন ধ্রুব সত্য তেমনি এমন নির্মম হত্যযজ্ঞও কাম্য নয়। মানুষ হিসাবে প্রত্যেকেরই ন্যায় বিচার পাবার অধীকার রয়েছে , নিহতদের পরিবারের এই ক্ষতিপূরণ কখনই সম্ভব নয়। বাংলাদেশ হারিয়েছে অসংখ্য মেধাবী অফিসার।

তবে সেনা বাহিনীর চর্চাগত এলিটিজম বন্ধের জন্য দায়িত্ব পালন ব্যতিত সেনা বাহিনী সামরিক পোষাকে হাঁটে-ঘাটে-মাঠে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করতে হবে।
সামরিক পোষাকে শপিং মলের সামনে অর্নিধারিত স্থানে জলপাই রঙ্গের গাড়ি পাকিং করে যেমন তারা সাধারণ মানুষের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে বেশী সুবিধা নেন,তেমনি জওয়ানদের দিয়ে বাজার করানো থেকে শুরু করে বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেয়া করতে গিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে জওয়ানদের সাথে প্রভূ ভক্তের দ্বন্দ্ব তৈরী হয়। এই ক্ষোভ তিল তিল করে জমে জমেও ক্ষোভের জন্ম হতে পারে।

সৈনিকদের মধ্যে তাদের সিনিয়রদের সম্মানটা অনেকটা ভিতির পর্যায়ে চলে যায়, উঠতে বসতে , হাটতে চলতে স্যার স্যার স্যার স্যার করতে করতে সৈনিকদের মুখে ফেনা উঠে যায় ...হায় কাহাতক এই দাসত্ব ! এই সব অলিখিত নীতিমালা একটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। কমিশন্ড অফিসাররা নন কমিশন্ড কর্মকতাকে তুচ্ছ জ্ঞান করেন এবং তুই করে বলতেও তাদের বাঁধে না এই কালচারের পরিবর্তন করতে হবে। একজন সৈনিক তার অফিসারকে মানবে ভয়ে নয়, তার দায়িত্বের কারণেই। এই চর্চাটা হওয়া উচিত।

তবে প্রতিবাদের ভাষা কখনও বুলেট কিংবা মৃত্যু দিয়ে হতে পারেনা, ক্ষমা নয় শাস্তি হতেই হবে এবং তদন্ত রিপোর্ট জনসম্মূখে প্রকাশ করতে হবে ?


মন্তব্য

রোদ্দুর [অতিথি] এর ছবি

আপনার বক্তব্যের সাথে একমত শুধু এইটুকু ছাড়াঃ

"সৈনিকদের মধ্যে তাদের সিনিয়রদের সম্মানটা অনেকটা ভিতির পর্যায়ে চলে যায়, উঠতে বসতে , হাটতে চলতে স্যার স্যার স্যার স্যার করতে করতে সৈনিকদের মুখে ফেনা উঠে যায় ...হায় কাহাতক এই দাসত্ব ! এই সব অলিখিত নীতিমালা একটা সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। কমিশন র‌্যাংকের অফিসাররা নন কমিশন র‌্যাংকের কমকতাকে তুচ্ছ জ্ঞান করেন, এবং তুই করে বলতেও তাদের বাঁধে না এই কালচারের পরিবর্তন করতে হবে। একজন সৈনিক তার অফিসারকে মানবে ভয়ে নয়, তার দায়িত্বের কারণেই। এই চর্চাটা হওয়া উচিত।"

আপনার বোধোদয়ের কিছুটা কমতি আছে বলে আমার ধারনা। একটা কুইজ দিয়ে শুরু করি, আচ্ছা কইঞ্চেন দেহি "বাংলাদেশে এমন একটা প্রতিষ্ঠানের নাম যারা দায়িত্নের কারনে সিনিয়রদের কথা মানে, ভয়ের কারনে নয়।"

যেখানে দায়িত্বের কারনে মানার বিষয়টি আছে বলে মনে করা হয় সেখানে সিনিয়রকে কোন মানাই হয়না। আর এটাকে দাসত্ব বলাটা কি ঠিক? এটাকে বলে কমান্ড যা সশস্ত্র বাহিনীর অপরিহার্য বিষয় বলে আমি জ়ানি বা বুঝি। শালা দুলাভাইয়ের সম্পর্ক হলে তো বুলেটের সামনে সৈনিকদের মার্চ করানো যাবে কিনা সম্ভব। তাই তাদের প্রথম যেটা শেখানো হয় তাহলো সিনিয়র যা বলবে তা মেনে চলতে। আর এটাই সশস্ত্র বাহিণীতে শৃংখলার প্রথম ধাপ। আর এটা শুধু কমিশন্ড নন কমিশনের মধ্যে নয়। সৈনিক সম্মান করবে ল্যঃ নায়েক্কে, ল্যান্স নায়েক নায়েককে আর নায়েক হাবিলদারকে। সবার জন্য একই নিয়ম। বেসামরিক সরকারী অফিসারের পিয়ন তো সারাদিন তাদের স্যারদের ব্যক্তিগত কাজই করে, তবে কোন পোষাক নাই বলে আপনি চিন্তে পারেন না। সশস্ত্র বাহিনীতে তাওতো তিনবার প্যারেডে দাঁড়ায়।

সায়েদ এর ছবি

রোদ্দুরের ব্যাখ্যার সাথে সহমত।

হিমু এর ছবি

আমি শুধু একজন আহত পাঠকের করুণ আর্তনাদ জানাইঃ বানান! এতগুলি বানান ভুল একজন সাংবাদিকের কাছ থেকে আসলে ক্যাম্নেকী?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

দময়ন্তী এর ছবি

আমিও হিমুর সাথে গলা মেলালাম ৷ এইরকম সিরিয়াস আলোচনায় এত বানানভুল দেখলে পড়ার আগ্রহই চলে যায় ৷ আপনারা যারা সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লেখালেখি করেন, দোহাই আপনাদের, বানানের প্রতি আরেকটু যত্নবান হোন ৷
--------------------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমি দময়ন্তীর সাথে গলা মেলালাম ......
আমিও বাংলায় কাঁচা এবং বানানে দুর্বল - অতএব আমার লেখাতেও কোন ভুল থাকলে যে কেউ ধরিয়ে দেবেন হাসি

মাহবুবুল হক এর ছবি

আপনার প্রতিটি সন্দেহ সত্যি হতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ও ইতিহাস বিবেচনায় কোনটিই অসম্ভব নয়। তবে প্রতিটি সন্দেহ আমাদের ক্ষুদ্রত ও দীনতাকে প্রকাশ করে , নিজকে কীট-পতঙ্গ মনে হয়, মানুষ মনে হয় না। জাতি হিসেবে আমাদের নিজেদের মধ্যেই যদি সুউচ্চ অহংকার ও গর্ববোধ সৃষ্টি না হয় তা হলে কি দিয়ে আমরা ভবিষ্যতকে জয় করতে চাই ? তবে আপনার এই কথাগুলোর সাথে দ্বিমত আছে -

তবে সেনা বাহিনীর চর্চাগত এলিটিজম বন্ধের জন্য দায়িত্ব পালন ব্যতিত সেনা বাহিনী সামরিক পোষাকে হাঁটে-ঘাটে-মাঠে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করতে হবে।
সামরিক পোষাকে শপিং মলের সামনে অর্নিধারিত স্থানে জলপাই রঙ্গের গাড়ি পাকিং করে যেমন তারা সাধারণ মানুষের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি করে বেশী সুবিধা নেন

এই দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। সেনা-নিয়মে কেবল ডিউটিরত অবস্থায়ই জলপাই রঙের পোশাক পরে সেনানিবাস এর বাইরে যাওয়া যায়।এর অন্যথা হওয়ার সুযোগ নেই। জরুরী অবস্থায় আমরা এমন দৃশ্য বারবার দেখেছি কারণ, সেনাবাহিনীর অনেক সদস্যের দায়িত্ব পালনক্ষেত্র ছিল সেনানিবাসের বাইরে। শপিং মলের সামনে সামরিক অফিসার বা তার স্ত্রীকে বহনকারী জলপাই রঙের গাড়িটির কী দোষ বুঝলাম না। গাড়িটির আরোহী সিভিল পোশাকে থাকলেও গাড়িটির চালক কিন্তু তখন ডিউটিতে এটা নিশ্চই বুঝতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়।
এর ঠিক উল্টোচিত্র পুলিশের ক্ষেত্রে পাই। প্রায়ই দেখা যায়, পুলিশ সার্জেন্টের সাদা প্যাট্রল মটর সাইকেল হাঁকাচ্ছেন সিভিল পোশাকের কেউ। হয়ত তিনি একজন পুলিশ সার্জেন্ট এবং তখন ডিউটিতেও নেই । কিন্তু গেঞ্জি-সানগ্লাস পরে পুলিশের মটর সাইকেল হাঁকানোর মধ্যে কোন্ ম্যাসেজ দিতে চান তিনি। আবার প্রায়ই দেখা যায়, সিভিল পোশাকের পুলিশ ( পুলিশ কি না সন্দেহ, সন্ত্রাসীও হতে পারে) হাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে রাস্তায় হাঁটছেন। ইউনিফর্ম ছাড়া কেউ আগ্নেয়াস্ত্র জনসম্মুখে প্রদর্শন করাই বেআইনী এ বিষয়টি পুলিশ বিভাগ কি জানে না ? জানে, কিন্তু মানে না; কারণ মানলে মান থাকে না। পুলিশ বলে কথা , পাবলিক না ডরাইলে হইব ক্যামনে ?

সেনাবাহিনীর যদি এলিটিজম কম প্লেক্স থাকে তাহলে পুলিশের আছে হিরোইজম কম প্লেক্স।

.................................................................................................................

--------------------------------------------------------
দেয়ালে দেয়ালে মনের খেয়ালে/ লিখি কথা ।
আমি যে বেকার, পেয়েছি লেখার/ স্বাধীনতা ।।

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

পোষ্টের বক্তব্যের সাথে সহমত। কিন্তু সেনাবাহিনীতে উচু নীচু ভেদাভেদের পয়েন্টগুলোর সাথে একমত নই, কেননা এটার কারনে বিদ্রোহ হয় না। এরকম বৈষম্য কোথায় নেই? এমনকি প্রতিটি প্রাইভেট গাড়ীর ড্রাইভার তার মালিক, মালিকের বউ ছেলে মেয়ের উপর অসন্তুষ্ট। গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা অফিসারের উপর অসন্তুষ্ট। পিয়নেরা বড় সাহেবের প্রতি অসন্তুষ্ট। সব জায়গায় বৈষম্য আছে, থাকবে।

কিন্তু বৈষম্য বঞ্চনার কারনে বিডিআর বিক্ষোভটা দেখানো হলেও, তার ভেতরে সম্পূর্ন আলাদা কিলিং মিশনে আসা আরেকটা দল মিশনের সফল সমাপ্তি করে নির্বিঘ্নে পগার পার হয়ে গেছে। বিডিআর বিক্ষোভটা এখানে ব্যবহৃত হয়েছে সাহায্যকারী উপাদান হিসেবে।

রণদীপম বসু এর ছবি

নীড় সন্ধানীর মন্তব্যে সহমত।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

শিক্ষানবিস এর ছবি

নীড় সন্ধানীর সাথে একমত

রাজীব হাসান [অতিথি] এর ছবি

বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনার দ্বিতীয় দিন থেকেই এসব প্রশ্ন ঘুরে ফিরে আসছে। দেশের বাইরে কিংবা ভিতরে শত্রু নিয়ে আমরা বার বার কথা বলছি। কিন্তু শত্রু কি কখনো মিত্রের মতো আচরণ করে? তাহলে শত্রুকে মোকাবিলার উপায় কি? এখানে আসে নিজের মাটি আর মানুষের কথা। মানবিক চেতনার কথা। শৃংখলার নামে অগণতান্ত্রিক আচরণ আর মূল্যবোধ দিয়ে ক্ষোভকে কত দিন বন্ধ রাখা যায়? আর যায় না বলে মাঝে মাঝে বিদ্রোহ আর বিক্ষোভের সূচনা হয়। কখনো তা পরিণতি পায়। কখনো তা ব্যর্থ হয়। আর মাঝে মাঝে সেই ক্ষোভ আর নিপীড়নের ভিত্তিকে কাজে লাগিয়ে তৃতীয় পক্ষ সুবিধা নেই। তাই এমন সুযোগ যত দিন থাকবে ততদিন আমাদের মর্মাহত হতে হবে। শোক হতে হবে পাথরের মতো।
সমাজে কাজের বিভাজন অনুযায়ী দায়িত্ব বিভাজন থাকাটা স্বাভাবিক। প্রত্যেকেই তার দায়িত্বের পাটাতন থেকে সমাজের কাছে আবশ্যক হবে। পরিচয় যোগ্যতা আর দক্ষতার। আবশ্যকতার জায়গা থেকেই তিনি সম্মান পাবেন। কিন্তু শৃংখলার নামে অগণতান্ত্রিক চর্চার ছাচে ফেলে কাউকে খাটো করা কি ঠিক? জাগতিকবোধকে বিবেচনায় রেখে শৃংখলাকে কি মানবিকীকরণ একেবারেই অসম্ভব?

হিমু এর ছবি

সশস্ত্রবাহিনীতে আসলে "গণতান্ত্রিক" চর্চার পরিসর, আমার ধারণা, খুব কম। সশস্ত্রবাহিনীর মূল উদ্দেশ্য বলপ্রয়োগ (আমরা চাই এই বলপ্রয়োগ যেন বহিশত্রু ও অপরাধীর বিরুদ্ধে হয়), আর বলপ্রয়োগ করতে গেলে সবসময় গণতান্ত্রিক আচরণ [বটম আপ] সম্ভব হয় না। সেখানে যা প্রযুক্ত হয় তা হচ্ছে আদেশের বাস্তবায়ন [টপ ডাউন]।

এই রক্তক্ষয়ের পর সশস্ত্রবাহিনীতে সৈনিকের সাথে অফিসারের সম্পর্ক যত দূরবর্তী বলে আপনি ভাবছেন, আসলেই কি ততটা দূরবর্তী? একজন সৈনিককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণহানির ঝুঁকি নিয়ে একজন অফিসারের নির্দেশে শত্রুর মুখোমুখি হতে। গণতান্ত্রিক চর্চা কি তার কাজের জন্য আদৌ কার্যকরী? সৈনিকের সংস্কৃতি ভিন্ন বলেই তো আমরা চাই না, বেসামরিক কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে অযাচিতভাবে প্রয়োগ করা হোক।

কামনা করি দেশের রাজনৈতিক কাঠামোয় যাতে সশস্ত্রবাহিনীর অগণতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ না ঘটে। রাষ্ট্রের যতটুকু অংশ হয়ে তাদের থাকার কথা, তারচেয়ে বেশি বা কম যেন তারা না হয়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রেজওয়ান এর ছবি

এরকমটিই শুনলাম একজনের কাছে:

১০ জন বিডিআর জওয়ানের (বা পোষাক পরিহিত) একটি টিম বেশীরভাগ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বিভিন্ন অফিসে অফিসে গিয়ে। তার খুব হইচই করছিল আর খারাপ ভ্যাবহার করছিল। তাদের গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে ছাই রংয়ের একটি এসইউভি সব সময় সাথে থেকে। রংয়ের কারনেই বোঝা যায় এটি বিডিআরের নয়।

২৬ তারিখে বিডিআরের পাঁচ নম্বর গেট পুলিশ বা ড়্যাব কারো দ্বারাই সংরক্ষিত ছিল না। সেই এসইউভিটাকেই দেখা গেছে সেখানে বিডিআর জওয়ানদের কাছে গিয়ে গিয়ে সারেন্ডার করতে নিরুৎসাহী করতে। অনেকেই পালায় এই গেট দিয়ে। স্পিড বোট ব্যবহার করা হয়েছে অনেক কে পালানোতে সাহায্য করতে।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।