ওয়েস্টমিনষ্টার স্টাইল: মান-অভিমান, বৈষম্য, সহনশীলতা আর উদার গণতন্ত্রের গ্রেট বৃটেইন।

থার্ড আই এর ছবি
লিখেছেন থার্ড আই (তারিখ: শনি, ৩০/০৫/২০১৫ - ১:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তানভীর আহমেদ।

২৭ মে ভাষণ প্রদানকালে বৃটেনের রাণী

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ভাষণের মধ্য দিয়ে ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্ব কনজারভেটিভ দলের দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারের কার্যক্রম শুরু হলো। লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত বিরোধী দলের নেতা হেরিয়েট হারম্যান সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা নতুন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে তারদের এমপিদের নিয়ে যোগ দিয়েছেন। এই হলো ওয়েস্টমিনস্টার স্টাইল ডেমোক্রেসি। এবার একটু পিছনে ফিরে তাকাই, ২০১০ সালে ডেভিড ক্যামেরন বৃটিশ রাজনীতিতে যে পরিবর্তনের আহবান জানিয়েছিলেন সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ক্যামেরনকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলো বৃটেনের জনগণ। স্বাভাবিকভাবেই পরাজয় মেনে নিয়ে গর্ডন ব্রাউনকে ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট ছাড়তে হয়েছিলো। যেহেতু নিজের দল লেবার পার্টিকে তিনি জয় এনে দিতে পারেননি সেই অর্থে লেবার পার্টির নেতা হিসেবেও তাকে ব্যর্থতার দায় নিয়ে তাকে পার্টির লিডারের পদ ছাড়তে হয়েছে । এটাই ওয়েস্টমিনস্টার স্টাইলের গণতন্ত্র।

দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবার পর ডাউনিং স্ট্রিটে ক্যমেরন দম্পতি

বিদায়ী লেবার লিডার এড মিলিব্যাণ্ডকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন সমর্থকরা।

তারপর শুরু হলো লেবার পার্টির নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া। লিডারশিপের দৌড়ে লেবার সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ড তার ভাই এড মিলিব্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়ে রাজনীতি ছেড়ে নির্বাসনে গেছেন। ১৯৩৮ সালে এডওর্য়াড লর্ড স্ট্যানলি ও অলিভার স্ট্যানলির পর ডেভিড মিলিব্যান্ড ও এড মিল্ব্যান্ড সহোদর ছিলেন একই পরিবার থেকে ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামে্নটের একমাত্র প্রতিনিধি। তবে ব্রিটেনের রাজনীতি থেকে ডেভিড মিলিব্যান্ডের বিদায় যেন ছিলো একটা বিস্ময়! টনি ব্লেয়ারের পর ডেভিড মিলিব্যান্ডকেই ভাবা হতো পরবর্তী চৌকস নেতা। ডেভিড সম্পর্কে এতো কথা কেন বলছি সেটাও পাঠকের জানা থাকা প্রয়োজন। ১৯৯৭ সালে টনি ব্লেয়ারের বিজয়ের পিছনে ছিলো লেবার পার্টির রাজনৈতিক ইশতিহার ও টনি ব্লেয়ারের ক্যারিশম্যাটিক লিডারশিপ কোয়ালিটি। ১৯৯৭ সালের নিউ লেবার পার্টির ইশতিহারের মূল নায়ক ছিলেন এই ডেভিড মিলিব্যান্ড। মিলিব্যান্ডের বয়স তখন মাত্র ২৯ বছর! প্রধানমন্ত্রী হবার পরই টনি ব্লেয়ার ডেভিড মিলিব্যান্ডকে প্রাইমমিনিস্টার পলিসি ইউনিটের প্রধান পদটির দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এর পর ১৯৯৭ থেকে শুরু করে ২০১০ সাল পর্যন্ত এমপি থাকাকালে এড মিলিব্যান্ড টনি ব্লেয়ার ও গররডন ব্রাউন সরকারের ফরেন সেক্রেটারী, পরিবেশমন্ত্রী সহ একাধিকবার কেবিনেটের দা্যিত্বে ছিলেন, সেই অর্থে এড মিলিব্যান্ড ছিলেন শুধুমাত্র এমপি। তবুও কেন এই শক্তিশালী নেতা তার ভাই এড মিলিব্যান্ডের কাছে হেরে গেলেন? লিডারশিপ দৌড়ে কেন ইউনিয়ন এড মিল্ব্যান্ডকে সমর্থন দিয়েছিলো সেটি ভিন্ন প্রসঙ্গ। কিন্তু গণতন্ত্র হচছে ডেভিড মিলিব্যান্ড যতই জনপ্রিয় হোন না কেন, ভোটের রাজনীতিতে তিনি হেরে গেছেন, তাকে বিদায় নিতে হয়েছে রাজনীতি থেকে। এতো যোগ্য হবার পরও তিনি লেবার লিডার নির্বাচিত হতে না পারার অভিমানে ২০১৩ সালে এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের একটি চ্যারিটি সংস্থার প্রধান হিসেবে কর্মরত। ২০১৫ সালের নির্বাচনে এড মিলিব্যান্ডের নেতৃত্বে লেবার পার্টির পরাজয়ের পর , ব্রিটিশ গণমাধ্যম রাজনীতির পুরনো টেপ আবারো রিওয়াইণ্ড করে ডেভিড মিলিব্যান্ডকে সামনে আনতে চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু ডেভিড মিলিব্যান্ড দ্বিতীয় দফা লেবার লিডার হবার প্রতিযোগিতায় নিজের অনাগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, তার ভাই এড ব্রিটেনের জনগনের জন্য যা অফার করেছিলো ভোটাররা তা গ্রহণ করেনি। এইতো মান অভিমানের গণতন্ত্রের খানিকটা নমুনা।

মিলিব্যাণ্ড সহোদর

এবার চলুন গণতন্ত্রের প্রতি যে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদরা কতটা শ্রদ্ধাশীল সেদিকে নজর দেই। ২০১৫ সালের নির্বাচনে কনসারভেটিভ সরকারের নিরঙ্কুশ বিজয়ে বৃটেনের তিনটি প্রধাণ রাজনৈতিক দল রীতিমতো নাকানি চুবানি খেয়েছে। লেবার, লিবারেল ডেমোক্রেট ও ইডকে ইনডিপেডেন্ট পার্টি বা ইউকিপ তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রধানকেই পদত্যাগ করতে হয়েছে। ইউকিপ প্রধান বলেছিলেন, তিনি হেরে গেলে ১০ মিনিটের মধ্যে পদত্যাগ করবেন। তিনি সেটি করেও দেখিয়েছেন, যদিও শেষ পর্যন্ত নাইজেল ফারাজের পার্টি তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি, কিন্তু নাইজেল ফারাজ তার প্রতিশ্রুতি অনুয়ায়ী ফলাফল ঘোষণার পপরই পদত্যাগ করেছিলেন। তবে পরাজয়ের পর সাংবাদিকরা নাইজেল ফারাজকে প্রশ্ন করেছিলেন, ''তোমার এখন কেমন লাগছে ফারাজ?'' নাইজেল ফারাজের কৌশলী উত্তর" ২০১০ সালের নির্বাচনে পরাজয়ের পর আমি একটি বিমান দূর্ঘটনায় মরতে বসেছিলাম, সেই সময় আমি ছিলাম হাসপাতালে। সেই অর্থে আমার অবস্থা এবছর বেশ ভালো" । যদিও শেষ পর্যন্ত নাইজেল ফারাজের দল তার পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেনি, কন্টরপন্থী বৃটিশরা তাকে ইউকিপের প্রধান হিসেবেই দেখতে চান আরো কিছুদিন। অন্যদিকে রীতি অনুযায়ী লেবার পার্টির পরাজয়ের জন্য দায় নিয়ে হ্যরিয়েট হারম্যনের কাছে দায়িত্ব দিয়ে বিদায় নিয়েছেন লেবার লিডার এড মিলিব্যান্ড। লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টির শোচনীয় পরাজয়ের পর পার্টির লিডারশিপ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন পার্টির প্রধান সাবেক ডেপুটি প্রাইমমিনিস্টার নিক ক্লগ, নতুন নেতা নির্বাচিত হবার আগে লিব ডেম পার্টির প্রেসিডেন্ট সাল ব্রিনটন পার্টির লিডারের দায়িত্ব পালন করবেন।

শোচনীয় পরাজয়ের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি ইউকিপ লিডার নাইজেল ফারাজ

ডেপুটি প্রাইমিনিস্টার থেকে এক ধাক্কায় রাজনৈতিক ক্যরিয়ার শেষ হতে যাওয়া লিব ডেম লিডার নিক ক্লেগ

এবার একটু বৈষম্য আর শংকার গণতন্ত্রের কথা বলি, এ্ড মিলি্ব্যান্ডের পদত্যাগের পর সম্ভাব্য লেবার লিডারদের কথা যখনই ভাবা হচ্ছিলো তখন লেবার পার্টির শ্যাডো বিজসেন সেক্রেটারী চুকা ওমনার কথা আলোচনায় চলে আসলো। কিন্তু আলোচনার তিন দিনের মাথায় কেন চুকা হঠাৎ এসে নিজেকে থামিয়ে দিলেন ? যদিও চুকা ওমনা বলছেন, "ইটস টু আর্লি টু থিংক হিমসেলফ এস লেবার লিডার।" ৩৬ বছর বয়সে কি তাহলে লেবার লিডারশিপে কেউ আসেনি? তাহলে চুকা ওমনার পিছিয়ে যাবার কারণ অবশ্যই ভাবিয়ে তুলেছে, প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। চুকা বলছেন তিনি ধারণাই করতে পারেননি তাকে এতো দীর্ঘ তদন্তের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এটা স্বাভাবিক, লেবার লিডার মানেই তো ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হবার দৌড়ে তিনিও একজন প্রতিদ্বন্দী। সেই ভাবী প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে তো অবশ্যই তদন্ত হবে। চুকা ওমনার পরিচয় কি তাহলে তাকে থামিয়ে দিলো? চুকার বাবা নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী আর মা আইরিশ, সেই অর্থেই চুকা ওমনা নিজের অরিজিন সম্পর্কে বলেন, তিনি হাফ নাইজেরিয়ান কোয়ার্টার আইরিশ ও কোয়ার্টার ইংলিশ।এখন কথা হচ্ছে ব্রিটিশ জনগণ কি ভবিষ্যতে কোয়ার্টার ইংলিশ প্রধানমন্ত্রী দেখতে প্রস্তুত কিনা এই শংকাটিও আলেচনায় চলে এসেছে। চুকা কি এই শংকাটি বুঝতে পেরেই লিডারশিপ দৌড় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন? এখনো পরিস্কার করে বলা যাবে না। সময় হয়তো সেই উত্তর দেবে।

চুকা ওমনা

তবে লেবার পার্টি যে শুধু বৃটেনের লিডা্রশিপ সংকটে পড়েছে তা নয়। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির কাছে স্কটল্যান্ডের শোচনীয় পরাজয়ের কারণে দায়িত্ব গ্রহণের পাঁচ মাসের মাথায় বিদায় নিয়েছেন স্কটিশ লেবার লিডার জিম মারফি। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির লিডার নিকোলা সারজিওনের দলের নিরঙ্কুশ বিজয় যে শুধুমাত্র স্কটদের জাতীয়তাবাদের কারণেই নয় লেবারপার্টির লিডারশিপের ব্যর্থতা ও দলের লিডারের ইউনিয়ন পন্থী মনোভাবও যে অন্যতম কারণ সেটি আলোচিত হচ্ছে সর্ব মহলে। এই জিম মারফির নেতৃত্বে স্ক্টল্যান্ডে লেবার পার্টি ২০১৫ সালের নির্বাচনে মাত্র ১ টি আসন পেয়েছে। তাহলে মারফির ইউনিয়ন বিরোধী মনোভাবের কারণেই কি লেবারপার্টির শক্তিশালী ইউনিয়নপন্থীরা জিম মারফির বিদায়ের জন্য এসএনপির বিজয়ের পেছনে কাজ করেছে?

স্কটিশ জাতীয়তাবাদের নতুন প্রজন্মের প্রাণ ভোমরা নিকোলা

বৃটেনের রাজনীতিতে আরেকটি আলোচিত ঘটনা টাওয়ার হ্যমলেট কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচন। সম্প্রতি ব্রিটেনের আদালত মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও ভোটারদের ভোট দানে প্রভাবিত করতে ধর্মীয় কার্ড ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে। রায়ে অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় লুৎফুর রহমান ও তার একজন কাউন্সিলরকে টাউন হল ছাড়াতে হয়েছে। নির্বাচনেও তারা অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছেন। কিন্তু ২০১৫ সালে জাতীয় নির্বাচন চলাকালে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে ডেভিড ক্যমেরনের উপস্থিতি আর ডেভিড ক্যমেরনকে নিয়ে নির্মিত হিন্দী গান 'নীল হ্যায় আসমা' নিয়ে সমালোচনার মুখর হয়েছে ব্রিটেনের শীর্ষ দৈনিক গার্ডিয়ান। ধর্মীয় কার্ড ব্যবহাররের জন্য টাওয়ার হ্যমলেটস কাউন্সিলের মেয়র লুৎফুর রহমান অপসারিত হলেন ঠিকই কিন্তু মন্দিরে নির্বাচনী ক্যম্পেইন করেও ক্যমেরন বহাল তবিয়তে শক্তিশালী মেজরিটি নিয়ে রয়ে গেলেন ১০ নং ডাইনিং স্ট্রিটে। তাহলে আইন কি সবার জন্য সমান ভাবে কার্যকর হচ্ছে সেই প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনীতির বাতাসে।

হিন্দুদের মন্দিরে নির্বাচনী প্রচারকালে ডেভিড ক্যমেরন

টাওয়ার হ্যমলেট এর বাদশা খ্যাত সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমান

বাঙালি এমপি রুশনা্রা দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হবার পর এবার লেবার পার্টির ডেপুটি লিডারশিপের দৌড়ে লড়বেন। জিতে গেলে রুশনারা আলী সৃষ্টি করবেন আরেকটি ইতিহাস। ইতিপূর্বে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে বৃটেনের মূল ধারার রাজনৈতিক দলে কখনো ডেপুটি লিডার নির্বাচিত হয়নি। তবে চুকা ওমনা লিডারশিপ দৌড়ে সাহস করেননি, রুশনারা ডেপুটি লিডারশিপের জন্য নিজেকে যোগ্য বলেই দাবী করছেন, ডেপুটি লিডার নির্বাচিত হলে তাকে কমপক্ষে ৩৫ জন এমপির সমর্থন পেতে হবে। গত সপ্তাহে পূর্ব লন্ডনে যখন রুশনারার সাথে দেখা হয়েছিলো তিনি আমাকে বলেছিলেন, তিনি ডেপুটি লিডার নির্বাচিত হবার জন্য প্রয়োজনীয় এমপিদের সমর্থন পাবেন বলেই বিশ্বাস করেন। চুকা ওমনা যে এথনিক মাইনরিটি ভীতির কারণে লেবার পার্টির লিডারশিপ লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালেন সেই ভীতি কি তাহলে রুশনারার নেই? হতেই পারে, মাল্টি কালচারাল সোসাইটি বলে কথা। মাল্টিকালচারাল বৃটেনের টরী দলের প্রতি অভিযোগ ছিলো কনসারভেটিভ দল এলিট শ্রেণীর দল। আর সেকারণেই সাধারণ ওয়ার্কিং ক্লাস পিপল আর এশিয়ানদের প্রথম পছন্দ ছিলো লেবার পার্টি। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে টরীর নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর রক্ষণশীল দল যে শুধুমাত্র এলিটদের ক্লাব নয় সেটি প্রমান করতেই হয়তো প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন তার মন্ত্রীসভায় বিজনেস সেক্রেটারী পদে পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত সাজিদ জাভেদ ও এমপ্লয়য়মেন্ট মিনিস্টার হিসেব ভারতীয় বংশদ্ভূত প্রীতি পাটেলকে স্থান দিয়েছেন। ডেভিড ক্যামেরন দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের আগে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন ব্রিটেইনে তিনি একজন এশিয়ান বংশোদ্ভূত প্রাধানমন্ত্রী দেখতে চান, এবং ব্রিটেনে প্রথম কৃষাঙ্গ প্রধানমন্ত্রী হবেন কনসারভেটিভ দল থেকেই।

বাংলাদেশী বংশদ্ভূত এমপি রুশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দীক ও ড. রুপা হক
২০১৫ সালের নির্বাচনে রুশনারা আলীর পাশাপাশি এমপি হয়েছেন বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ সিদ্দীক ও ড. রুপা হক। তিনজনই লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত এমপি।কনসারভেটিভ দল থেকে কোন বাঙালি এমপি এখনো নির্বাচিত হয়নি, কারণ এখনো কনসারভেটিভ দল কোন নিশ্চিত আসনে বাঙালি বংশদ্ভূত প্রার্থীকে মনোনয়োন দেয়নি। নতুন লেবার লিডারও এসে যদি ডেভিড ক্যমেরনের সাথে সুর মিলিয়ে বলেন, তিনিও এশিয়ান প্রধানমন্ত্রী চান। তাহলে হয়তো রুশনারা আলী, টিউলিপ সিদ্দীক , ড. রুপা হক কিংবা তাদের উত্তরসূরীদের ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা হবার সুযোগ থাকছে এই বৃটেনে।

ছবি কৃতজ্ঞতা: গুগল ইমেজ, গার্ডিয়ান, ডেইলি মেইল, ডেইলি মিরর, গিটি ইমেজ, এএফপি ও মাইলস কোল।


মন্তব্য

এক লহমা এর ছবি

পোস্ট ভাল লেগেছে। একজায়গায় অনেক খবর। ছবিতে যাদের দেখালেন, ছবির সাথে তাদের নামোল্লেখ থাকলে আরও উপভোগ্য হত।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

থার্ড আই এর ছবি

‌সময় তুমি বৃদ্ধ যাযাবর, কষ্ট করে দিলাম ফটো ক্যপশন। ধন্যবাদ।

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

Rubayat এর ছবি

লুৎফুর রহমান এর প্রচারনায় ধর্মের ব্যবহার (লুৎফুর রহমানকে ভোট দেয়া ঈমানী দায়িত্ব, না দিলে "Not a good muslim") আর ডেভিড ক্যামেরুন এর হিন্দু মন্দির এ ভোট প্রার্থনা (নিজে হিন্দু ধর্মাল্মবী না হওয়া সত্বেও) -- এ দুটি কি একি উদ্দেশে ব্যবহৃত?

থার্ড আই এর ছবি

না, আপনার বক্তব্য ঠিক। আমার ব্যক্তিগত মত, লু্ৎফুর রহমানের দৃষ্টিভঙ্গিটি আর ক্যমেরনের দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্যই এক নয়। লুৎফুরের নির্বাচনে যে ধর্মীয় ইস্যুকে কার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে তা আদালত থেকে প্রমানিত হয়েছে, ক্যমেরনের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়নি। তবুও বৃটেনের রাজনীতিতে দুটি বিষয়ই পক্ষে-বিপক্ষে আলোচিত হচ্ছে। ধন্যবাদ।

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

শিরোনামে ওয়েস্টমিনিস্টার হয়ে গিয়েছে। লেখার ভিতরে ওয়েস্টমিনস্টার--ঠিক আছে। ধন্যবাদ।

থার্ড আই এর ছবি

দিলাম, ঠিক করে। ধন্যবাদ।

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ময়ুখ কিরীটি এর ছবি

সাম্প্রতিক নির্বাচনটা নিয়ে আমারও খুব আগ্রহ ছিল এবং মজাও লেগেছে....আপনার পোস্টটা সেই আগ্রহে আরেকটু ঘি ঢেলে দিল হাসি .....বিশ্লেষণটা দারুণ সাবলীল হয়েছে- প্যারার সংখ্যা বাড়ালে একটু ভাল হত।

কনজারভেটিভদের জয়ে একটা বিষয়ে আমি নিশ্চিত- জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদকে দমন করার ইস্যু যদি ব্রিটেনে বেশ জোরদার হয় এই ক'বছরে (হওয়াটাই উচিত আর ন্যায্যও!!!), তাহলে এই পার্টি বহাল তবিয়তেই আরো কিছুকাল আরামে তামাক টানতে পারবে....অভিবাসন নিয়ে ইউরোপ খুব কঠোর হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে- খুব সামান্য এই বিষয়টাতে অভিবাসীরা আশাহত হতেই পারে....

নারী ত্রয়ীকে নিয়ে আরেকটা লেখা ছাড়ুন.....বাঙালিদের রাজনীতিতে বিচরণের আর ভবিষ্যত পদার্পণের সম্ভাবনাটা শুনতে চাই আরো দেঁতো হাসি

থার্ড আই এর ছবি

ময়ুখ কিরীটি, আরো বিস্তারিত লেখার জন্য আমি নিজেও মুখিয়ে থাকি সব সময়, কিন্তু সময় হয়ে উঠেনা। বৃটেনের তিন টার্মের জাতীয় নির্বাচন দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আর দুটি নির্বাচনে তো সরাসরি যুক্ত থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছি তাই ব্যক্তিগত বিশ্লেষণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনার ভালো লেগেছে শুনে তৃপ্ত হলাম। আশা করি সময় করে আরো কিছু লিখবো। ধন্যবাদ।

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।