ততোটা নৈর্ব্যক্তিক কি আসলেই হতে পারি আমরা? যত চেষ্টাই করি না কেন? বোধ হয় পারি না। নিজের ছায়াটি এত দীর্ঘ হয়ে জুড়ে থাকে চেতনা যে তাকে ছাড়িয়ে যাওয়া আর হয়ে ওঠে না। সুমন সুপান্থকে আমি জানতাম কবি হিসেবে। তার লেখার একটি বিশেষ ঢং আছে, শব্দ ছন্দ ইত্যাদি মিলিয়ে একধরনের আবহ সৃষ্টি করা আছে, যাকে আমি কয়েকবারই মন্তব্যে ‘সুমন সুপান্থীয়’ বলে উল্লেখ করেছি। সচলায়তনে অল্প যে কজনের কবিতা আমি দেখলেই পড়ি - সুমন সুপান্থ তাদের একজন।
গতকাল সুমন আমাকে একটি ব্যক্তিগত মেসেজ পাঠান। তাতে লেখা ছিলো যে তার একটি গল্প - যা লেখা হয়েছিলো বহুকাল আগে - তিনি ছাপিয়েছেন সচলায়তনে, পরিবর্ধিত এবং পরিমার্জিত করে। কিন্তু সেখানে ঘটে গেছে এক অদ্ভুত কাকতাল - গল্পের এক চরিত্রের নাম ‘স্নিগ্ধা’। এখন তার শঙ্কা - আমি যেন এই সমাপতনকে কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে না করি।
তার উত্তরে আমি লিখি - “নিজেকে নিয়ে এত মুগ্ধ আমি নই যে মনে করবো ভূভারতের যে কোন স্নিগ্ধাই এই আমি স্নিগ্ধা। আর তাছাড়া আপনি আমাকে চেনেনও না - আপনি যে আমাকে নিয়ে কিছু লিখছেন না তা আমি খুব ভালো করেই জানি।” দু’টি কথাই খুব সত্যি। মন্তব্য প্রতিমন্তব্যের বাইরে সুমন সুপান্থ এবং আমি দুজন কেউ কাউকে চিনি না, প্রোফাইলে দেয়া তথ্যের বাইরে আর কিছুই পরস্পর সম্পর্কে জানি না। আর সত্যিই আমি নিজেকে এত ‘মনোহরণকারী’ কিছু মনে করি না যে কোথাও আমার নামের প্রতিবিম্বটুকু দেখলেই তাতে নিজের মুখও খুঁজতে বসবো।
প্রথম পর্বে গল্পের চরিত্র স্নিগ্ধার উপস্থিতি তেমন ছিলো না, যতটুকু ছিলো তা পটভূমি রচনার প্রয়োজনেই। পড়তে একটু অদ্ভুত লাগছিলো, যতই জানি না কেন ওটি একটি নিরাকার, অবাস্তব, 'গল্পের স্নিগ্ধা' আর আমি হলাম 'আমি স্নিগ্ধা' - যেহেতু নিজের নামটি আমরা অযুত নিযুত বার শুনে থাকি, অবচেতনে সেই ধ্বনিঝংকার কিভাবে কিভাবে যেন রয়েই যায়। অক্ষরের বাঁকাচোরা ছাদের মধ্য থেকেও উঁকি দেয়।
কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে গিয়ে আমার শুরু হয় আসল বোঝাপড়া - নিজের সাথে। কেন কিছু যৌন পরিপ্রেক্ষিতে গল্পের স্নিগ্ধার বর্ণনা রয়েছে বলেই সম্পূর্ণ অন্য এক স্নিগ্ধার তা পড়তে অস্বস্তি হবে - তা আমি কিছুতেই মানতে পারছিলাম না। কেন দুই স্নিগ্ধাকে একেবারে ভাঙ্গা কাঁচের মত বিযুক্ত করে দেখতে পারছিলাম না - তা আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু হচ্ছিলো তাই। নিজেকে আসলে আমরা ততোটাই ভালোবাসি।
তবে এটাই শেষ কথা নয়। মন্তব্য করতে গিয়ে বুঝলাম, যত ভালোই গদ্যটি আমার লেগে থাকুক না কেন, গল্পের চরিত্রের সাথে নামের কাকতালীয় মিলটি আসলে আমার মনোযোগের ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। চমৎকার এই গল্পটি যতখানি আনন্দ পড়িয়ে হিসেবে আমাকে দিতে পারতো, তাতে টান পড়েছে। আমি এমনকি এও ভেবেছি “সবাই ঠিক ঠিক মতো বুঝবে তো যে আমার কোন ছায়াই পড়েনি গল্পের স্নিগ্ধাকে রচনার সময় ?” এতো গদ্য বা গদ্যকার কারুর প্রতিই সুবিচার হলো না - আমার দিক থেকে। তাহলে?
তাহলে বলতেই হচ্ছে - নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে আমি পারি নি, সেটা নারী বলেই হোক, কি স্নিগ্ধা বলেই হোক, কি একজন খুব সাধারণ কেউ বলেই হোক - পারি নি যে সেটাই সত্যি। তবে সুমন সুপান্থকে আমি একটুও দোষারোপ করছি না। এই গল্প যখন লেখা হয় তখন তিনি আমাকে যে শুধু চিনতেন না তাই নয়, চিঠি লিখে আমাকে আগেই তো জানিয়েছেনও তিনি। এই পোস্টটিকে তাই, আর কিছু নয়, আত্মকথন বলা যায়।
আর বোধ হয় এটাও বলা যায় যে আবার কখনো কোন সচলের নামের সাথে মিলে গেলে নাম - কোন চরিত্রের - অন্যমনস্কতার এই ঝুঁকিটুকি রয়েই যায় - গদ্যকারের জন্য।
মন্তব্য
আমার নামটা নিয়ে কোন রচনা হবার কোন সম্ভাবনা ইহকালে নাই। আকীকা করে নতুন নাম নেন, আমরা কিছু খাওয়া পাই।
................
সুমন যে সময়ের আবহে গল্পটা দাঁড় করিয়েছেন, সেসময়ে 'স্নিগ্ধা' নামটির চলন ভালই ছিল। গল্পের মধ্যেও নামটি মানিয়ে গেছে। নামধারিণীকে আমরা টাকাওয়ালাকে বিয়ে করা এবং অন্তর্বাস কেনা ছাড়া আর কিছু করতে দেখিনি। আবার কামরুল, তার ছোটভাই এবং মফস্বল শহরের ঐ তরুণ তুর্কিরা সবাই এবং খোদ গল্পটাই যেন তাকে না পাওয়া এবং না পেয়েও দ্বিতীয়বাররে মতো হারানোর আখ্যান। (এ নিয়ে গল্পের পোস্টে মন্তব্য করেছি) এহেন চরিত্রটি আসলে পুরুষ মনে নারীর যে দেবী ও দানবীর আইকন আছে, তার মিশ্রণ। এবং দেবী থেকে দানবীতে পরিণত হওয়ার আখ্যানও বটে। তাই নামটিকে উপক্ষা করা যাচ্ছে না।
তাই যখন, গল্পটি পড়ি তখন এক সহব্লগার স্নিগ্ধা এবং গল্পের নায়িকার মধ্যে কোনো মিল না পেলেও মনের মধ্যে খিচ করে একটা কথা মনে হতেই পারে। এ পূর্বধারণার জন্য গল্প পাঠেও একটা আপতিক ভাবনা মনে আসতেই পারে: এই গল্পের কি কোনো পূর্বকাহিনী আছে?
এ কথাটি একজন পাঠকের মনে হওয়া এবং একজন নামধারিণীর আশঙ্কা জাগা থেকেই প্রমাণ হয়, গল্পটি পাঠ করার সময় একেবারে নৈর্ব্যক্তিক থাকা যাচ্ছে না। কিংবা আসলেই কি কোনো কিছু গ্রহণ-বর্জন-মূল্যায়নের সময় আমরা আমাদের সাবজেক্টিভিটিকে একেবারেই ঘুমিয়ে রাখতে পারি? বাইরের স্পন্দন পেয়ে তা কি জাগবে না?
তবে অস্বস্তির মূল কারণ বোধহয় গল্পে স্নিগ্ধা নামের মেয়েটিকে যৌনতার আবহে হাজির করা এবং গল্পের কথকদের মধ্যে তাকে নিয়ে যৌন অবদমনের কষ্টে ভোগার মধ্যেই আছে। এ নির্মাণকে_ভাষা ও শৈলীতে_ পুরুষতান্ত্রিক কল্পনার আবেশমুক্ত বা একেবারে উত্তরিত বলে ভাবা যায় না। ফলে স্নিগ্ধা যদি এ প্রসঙ্গটি নাও তুলতেন, তবুও গল্পের আলোচনায় এ ক্রুটির কথা আসতে পারে। তাই বিষয়টিকে গল্প থেকে ট্রানসেন্ড করে নিয়ে ঐ গল্পে পুরুষতান্ত্রিক কল্পনার প্রভাব ও পরিণতির মধ্যেই প্রশ্নটা করা যায়। বলাই সমসময়ই বাহুল্যই হয়, এখানেও তাই, ঐ পুরুষতান্ত্রিক যৌনকাতর কল্পনার প্রভাব পাঠক হিসাবে এবং পুরুষ হিসাবে আমার মধ্যেও যে নাই এবং গল্প পাঠে তা যে জাগেনি, তা নয়। হয় বলেই তার একটা পর্যালোচনা করে নিজেকে পরিষ্কার করার প্রয়োজন বোধ করেছি। সুমন সুপান্থ এখানেই সফল আবার এখানেই তাঁর সঙ্গে আমাদের (পাঠকের) সংলাপের জায়গা।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আমিই ভাল... কোন ফাঁকে গল্প এসে চলেও গেছে, আমার পড়া হয়ে ওঠেনি। তবে হ্যাঁ, আপনার নামটা সুন্দর এবং প্রচলিত। যেকোন রকম গল্পের জন্যই নামটা বেশ জুতসই। মনোযোগে ঘাটতির কথাটা সত্য। আমার ডাকনাম 'অভি'। এই নামের চরিত্র দেখেছি গল্প-নাটকে টুকটাক। সৌভাগ্য হল, প্রতিটি চরিত্রই মোটামুটি আমার মতই বাচাল। সে-কারণেই মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটলেও উপভোগে ব্যাঘাত ঘটেনি।
"নামে নামে যমে টানে" একটা আঞ্চলিক প্রবাদ যার মনে "নাম বিভ্রাট"।
আপনার ক্ষেত্রে তেমনটাই ঘটেছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে আপনার অসংকোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস! ব্লগ পড়ে বা নিজের লেখায় মন্তব্য পড়ে আমাদের সবারই কম বেশী প্রতিক্রিয়া ঘটে। অনেক সময় প্রকাশ করি কিন্তু বেশীর ভাগ সময় চেপে যাই। আর যেখানে নিজের নামের সাথে গল্পের পাত্র পাত্রীর নাম মিলে যায় সেখানে প্রতিক্রিয়া বেশী হওয়াই স্বভাবিক।
অস্বভাবিক মুন্সীয়ানায় অপনার অনুভূতিগুলো দারুণ অসংকোচে প্রকাশ করাটা একটা বৈপ্লবিক কল্প-গল্প লেখার চেয়ে অনেক বেশী মুল্যবান মনে হয়েছে আমার কাছে।
আপনাকে নমস্কার!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
উপন্যাসের স্নিগ্ধা আর বাস্তবের স্নিগ্ধা আপার মধ্যে সুদীর্ঘ ফারাক... স্নিগ্ধা আপাকে না দেখেই বলছি! আমার চোখে উনার যে ইমেজ আঁকা, তার সাথে তো মেলে না একেবারেই!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
যে কথাগুলো এখন লিখবো বলে ভাবছি,সচল স্নিগ্ধাকে ব্যক্তিগত একটা মেসেজে সেটা জানিয়েছিলাম দিন চারেক আগে ( গল্পের ২য় অংশটি ছাপা হবার আগে ) !
ফিরতি মেসেজে,এমন কি ১ ম পর্বের মন্তব্যে সচল স্নিগ্ধা যতোই বলুন না কেনো, তিনি এতোটা নার্সিস্ট নন; আমার একটা সংশয় ছিলোই যে, স্নিগ্ধা না হোন অন্য সচলেরা, সচল স্নিগ্ধা আর গল্পের চরিত্র স্নিগ্ধার এই কাকতাল উজিয়ে ব্যক্তিগত সুত্রতা খোঁজে ফিরলে, সে দায়টা বর্তাবে অন্যমনস্ক গল্পকারের উপরই । যেহেতু গল্পটা আমার লেখা, স্নিগ্ধার এই পোস্ট এবং তত্ সম্পর্কিত সকল মন্তব্য পড়ে আমার কিছু লেখা, কিছু ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন মনে করছি ।
গল্পটা আমি লিখেছিলাম,বলতে গেলে আমার লেখালেখির প্রায় শুরুর দিকে, ১৯৯৩/৯৪ সালে । ইয়েলত্ সিনের অর্থপূর্ন হাসির ছবির সঙ্গে, সদ্যই ভূপতিত ভ ই লেনিন - টেলিভিশনের পর্দায় ! একে একে পূর্ব য়্যুরোপের দেশগুলোর মুক্তবাজার খোঁজা, আর সি আই এ ' র টাকায় আমাদের জাঁদরেল কমিউনিস্টদের নতুন নতুন ঘর খোঁজা দেখতে দেখতে এক সহযোদ্ধা বন্ধু সত্যি সত্যি পার্টি ছেড়ে মোমবাতি বানানোর ব্যবসা শুরু করলে, এই গল্পটি না লিখে থাকতে পারিনি । থাক, গল্পের পেছনকাহিনী, কি ধান ভানতে এই শিবের গীত ।
তো, এই গল্পের ১ ম পর্বের কিয়দংশ ছাপা হলো বন্ধু হাসান মোরশেদ সম্পাদিত সহবাস ' র ১ ম সংখ্যায় । পুরো গল্পটা ছাপা হয় তার ও অনেক বছর পর দৈনিক সংবাদ সাময়িকী র বিজয় দিবস সংখ্যায়, (সম্ভবত) ২০০২ । দু'টি জায়গায়ই পাত্র পাত্রীর নাম একই।
সচলায়তনে গল্পটা লিখতে যাবার আগ মুহুর্তেও সচল স্নিগ্ধার বিষয়টি মাথায় আসে নি ( যদি ও তার লেখা আমার খুব ভালো লাগে । আমার লেখায় তাঁর কিছু মন্তব্য ও আমাকে বিশেষভাবে প্রাণিত করেছে ) ! যখন এসেছে, তখন ১ ম পর্ব কম্পোজ করা হয়ে গেছে ।
লেখা বাহুল্য, দীর্ঘ এই লেখাটি কম্পোজ করে দিয়েছে আমার অনুজ অপূর্ব সোহাগ । তাকে বলে খোঁজে খোঁজে , এতো আগে লেখা একটা লেখা থকে স্নিগ্ধা শব্দটি তুলে দিয়ে ঊর্মি,আখিঁ কিংবা ছবি বসিয়ে ইচ্ছে করে নি ,দেয়া সম্ভব হয়নি ।
হলে হয়তো অন্যমনস্কতার দায় এড়ানো যেতো ।
যাই হোক সচল স্নিগ্ধার এই অস্বস্থি প্রকাশ, তাঁর ব্যখ্যা,আমাকে ফের বলতে সুযোগ করে দেয়াটা বোধকরি, শ্রদ্ধাষ্পদেষূ ফারক ওয়াসিফের বলা 'তাঁর সঙ্গে আমাদের (পাঠকের) সংলাপের জায়গা টা করে দিলো
ধন্যবাদ সবাইকে ।
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
যে ভঙ্গিতে ব্যাখ্যা দেয়া শুরু করলেন আর এ লাইন দিয়ে শেষ করলেন তাতে আপনার আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
'অন্যমনস্কতা'র কথাটা বোধহয় ভুল বোঝা হলো। আমি বলেছি পড়িয়ে হিসেবে 'আমার' অন্যমনস্কতার কথা, বা আমার মনোযোগের বিঘ্নের কথা - এই কাকতালীয় নামের মিলের কারণে। আর পড়িয়ের এই ঘাটতিটুকুর 'ঝুঁকি' নেয়াটা বর্তায় গদ্যকারের ওপর।
আমি কিন্তু বারবারই বলেছি - এটা 'আমার' নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে না পারা - আপনাকে কোন দোষ আসলেই যে আমি দেই নি তার প্রমাণ হিসেবে আপনার ব্যক্তিগত মেইলের কথা উল্লেখ করেছি।
সচলায়তন বা এ ধরনের যে কোন ফোরামের সবাই সময়ের সাথে সাথে, পারস্পরিক আদান প্রদানের মাধ্যমে একধরনের আন্তরিকতায় জড়িয়ে যায়। কোন ভুল বোঝাবুঝি নাই বা হলো সেখানে? সেজন্যই আমার ওই প্রতিক্রিয়া পোস্টের অবতারণা .........
আবারো বলছি - গল্পের স্নিগ্ধা যে আমি নই সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি, আমার সমস্যাটা সেখানে ছিলো না।
এখন দেখি আপনি ভুল বুঝছেন আমাকে !
হায় আমাদের বুঝবার আর বুঝাবার অক্ষমতা !!
সচলায়তন বা এ ধরনের যে কোন ফোরামের সবাই সময়ের সাথে সাথে, পারস্পরিক আদান প্রদানের মাধ্যমে একধরনের আন্তরিকতায় জড়িয়ে যায়। কোন ভুল বোঝাবুঝি নাই বা হলো সেখানে?
একশভাগ একমত
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
দেখলাম, পড়লাম, শুনলাম - কিছু কিছু বুঝলাম। আমি সবসময় এমন সূক্ষ্ম অনুভুতিগুলো চেপে যাই অর্থাৎ ব্যক্ত করতে পারি না, কারণ সংকোচে থাকি (কনফিডেন্সের দারুণ অভাব)। তবে নামের কিন্তু connotation থাকে; সেটা কী, নামধারীই সবচেয়ে ভালো জানেন।
পোস্ট এবং মন্তব্যগুলো ভালো লাগলো।
জিজ্ঞাসু
সত্যি বলতে, "শ্মশান পাখিরা, সন্ধ্যায়" গল্পের চরিত্র হিসেবে আপনার নাম দেখে চমকে উঠেছিলাম। চমকানোটা পরিণত হয় ঘোর বিস্ময়ে যখন স্নিগ্ধাকে উপস্থাপন করা হয় sexual object হিসেবে।
কোনও সচল গল্পের স্নিগ্ধাকে সচল স্নিগ্ধা মনে করবেন - তা আমি মনে করি না, তবে নামঘটিত অনিবার্য অ্যাসোসিয়েশনটি এড়ানো সম্ভব হবে না কারুর পক্ষেই। এবং সেটাই, অনুমান করতে পারি, আপনার জন্য সবচেয়ে অস্বস্তি-উদ্রেককারী।
গল্পের চরিত্রের যে-কোনও নাম দেয়ার অধিকার রয়েছে গল্পকারের। তবে সব গল্পকারই, আমার ধারণা, "অসুবিধেজনক" চরিত্রগুলোর নাম হিসেবে নিজের প্রিয়জনদের নাম এড়িয়ে চলেন।
ক্লোজড ফোরাম হবার কারণে সচলায়তনের সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের হৃদ্যতা আর আন্তরিকতা, হোক তা ভার্চুয়াল, গড়ে উঠেছে। তবু তার পরেও আলোচ্য গল্পের গল্পকার কেন আপনার নাম ব্যবহারে দ্বিধাগ্রস্ত হননি, সেই প্রশ্নের উত্তর তিনিই কেবল জানেন। কোনও সচলের নাম ব্যবহার করে "তেমন কিছু" রচনা না করাটাই উচিত ও যুক্তিযুক্ত বলেই আমার ব্যক্তিগত বিশ্বাস।
কারণটি খুব সহজ: গল্পকারকে আপনি ভার্চুয়ালি চেনেন/জানেন।
"স্নিগ্ধা"-র পরিবর্তে অন্য কোনও নাম ব্যবহার করলে গল্পের কাহিনী বা আবহের ইতরবিশেষ হতো না এবং সবচেয়ে বড়ো কথা সচল স্নিগ্ধাকে এই পীড়াদায়ক পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
আমার মন্তব্যটিতে একান্তভাবেই আমার দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটেছে। এতে দ্বিমত প্রকাশের অধিকার রয়েছে যে-কারুর।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নাহ্! আমিও বোধহয় পারবো না। যেমন পারবো না অসংকোচে সেটা প্রকাশ করতেও।
সুপান্থদা নাম বদলে দিলে হয়তো আমরা জানতেই পারতাম না তবু সেটা লেখকের নিজের সাথেই প্রতারণা হয়ে যেত বলে আমার ধারণা। কিন্তু এখন উনার প্রতি শ্রদ্ধা আমার বেড়েই গেলো বরং
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
আমি কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে তবু বলতে চাই,
ধরেন, নামটা যে কোনো নারীর এবং গল্পের ভিত্তিও ঐ নারী এবং আমরা জানি না আসলেই সে কেমন। কিন্তু গল্পের কথক কিংবা গল্পকার স্বয়ং অথবা গল্পের নির্মাণের মধ্যে কোথাও যদি সেই নারীকে কেবলই যৌনগন্ধী করে 'পরিবেশন' করা হয়, সেটা নারী হিসাবে একজনকে আহত করতেই পারে। আমি আবারও বলছি, এই কথাগুলো বন্ধু ব্লগার স্নিগ্ধা প্রসঙ্গে নয়, শিল্পে নারীর নির্মাণ বিষয়ে। বিষয়টা কেবল শ্লীলতা-অশ্লীলতার মতো নৈতিক মানদণ্ড দিয়ে বোঝা যাবে না।
আমাদের এবং বিশ্বের বেশিরভাগ সাহিত্যকর্মই এক বিচারে পুরুষের সাহিত্য এবং পুরুষের চৈতন্য-সংবেদন এবং শরীরের ক্ষমতার দ্বারা জারিত হয়েই আসে। পুরুষের চোখে দেখা এবং পুরুষের মনের বাসনার ছাপ তাতে থাকবেই। সেটা যদি কোথাও নারী সত্ত্বার মর্যাদা ও অধিকারকে কোথাও আহত করলে তা নিয়ে আলোচনা উঠতেই পারে। সেক্ষেত্রে পুরুষ লেখক-পাঠক এবং নারী লেখক-পাঠকের তলটা আলাদাই থাকে।
তবে এ ভাবে বিচার করলে দুনিয়ারে অনেক সাহিত্য কর্মকেই অভিযুক্ত করা যায়। কিন্তু একটা দুইটা দূর্বলতার জন্যই কোনো ম্যাচুরড কাজ কিন্তু বাতিল হয়ে যায় না। যেমনটা সুপান্থ'র গল্প সম্পর্কেও বলা যায়।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
স্নিগ্ধা আপা
আমি এখনো যেটা করিনি সেটা করছি। মূল লেখা, এবং এখানে আপনার লেখায় একটা মন্তব্যে আপত্তি জানাচ্ছি। দেখি সচল কর্তৃপক্ষ কী করেন।
আমি ব্যপারটাকে প্রথম হালকাভাবে নিচ্ছিলাম, এখন দেখি ভিন্ন।
অপূর্ব সোহাগকে অশালীন মন্তব্য করার জন্য ওয়ার্নিং দেয়া হল। পনের মিনিট পর এই পোস্টের মন্তব্য করার অপশন বন্ধ করে দেয়া হবে। ভবিষত্যে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকুন।
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
- মানে এই পোস্টে কেউই মন্তব্য করতে পারবে না??
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
শুধু পড়তে পারবে। পড়াটা বন্ধ করলেও ভাল হয়। কুৎসিত কমেন্টটা চোখে পড়ে না তাহলে।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
অপূর্ব সোহাগের মন্তব্য এবং তার পরবর্তী যেসমস্ত মন্তব্যে কথাটির পুনরাবৃত্তির করা হয়েছিল সেগুলো ডিলিট করে মন্তব্যের অপশন বন্ধ করা হল।
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
অপূর্ব সোহাগ,
আপনি সুমন সুপান্থের ভাই, ভাইকে ডিফেন্ড করতে আপনি এগিয়ে এসেছেন, খুব ভালো কথা। কিন্তু, মন্তব্যটা লেখার সময় যত আবেগই আপনার ভেতর কাজ করে থাকুক না কেন - ভদ্রতার সীমাটা আপনার খেয়েল রাখা উচিৎ ছিলো।
সুমন সুপান্থের ব্যক্তিগত মেইলের কথা উল্লেখ করেছি কি আমি তাকে হেনস্থা করতে, নাকি আসলে তাকে যতটা সম্ভব বিব্রতকর অবস্থায় না ফেলা যায় সেই চেষ্টা করতে? ওটা বলার কারণই তো ছিলো সবাইকে জানানো যে তিনি এই কাকতালীয় ব্যাপারটিতে নিজেই বিব্রত?
আমি আমার প্রতিক্রিয়া পোস্ট টা যে ভাষায়, যে ভঙ্গিতে, যেভাবে সমস্ত দায় নিজের ওপর টেনে নিয়ে লিখেছি - এর চাইতে বেশী পরিণতমনস্কতা বা ভদ্রতা আর কি আপনি আশা করেন? একবারও আমি সুমন সুপান্থকে দোষ দিয়েছি ? আমি তো বরাবরই বলে আসছি আমি তাকে বলেছিলাম যে আমার নামের সমাপতনে আমার অসুবিধা নেই, কিন্তু দ্বিতীয় পর্ব পড়ার পরে আমি নিজে যা উপলব্ধি করি পোস্টটাতে তাই লিখেছি?
সচলায়তনে আমার লেখা ব্লগ কম, কিন্তু মন্তব্য অসংখ্য। সেগুলোর কয়েকটিতে একটু চোখ বোলালেও বোধ হয় বোঝা কঠিন হয় না যে আমি সবসময়ই শালীনতা বজায় রাখার চেষ্টা করি, আমার দিক থেকে। কোথাও কখনও মতপার্থক্য হলেও আমি কখনই সেটাকে অনর্থক টানি না বা ভদ্রতার সীমা লংঘন করি না। অন্তঃত এ পর্য্যন্ত করি নি।
'সচলে নায়িকা'র খ্যাতিলোভী কারুর তা করার কথা ?
আমি আসলেই ব্যক্তিগত ভাবে এরকম একটা অপ্রীতিকর অবস্থার কেন্দ্রে পরিণত হয়ে অসম্ভব বিব্রত বোধ করছি।
এই ব্যাপারটার রেশ এখানেই এখনই শেষ হয়ে যাক।
অপূর্ব সোহাগের মন্তব্য এবং তার পরবর্তী যেসমস্ত মন্তব্যে কথাটির পুনরাবৃত্তির করা হয়েছিল সেগুলো ডিলিট করে মন্তব্যের অপশন বন্ধ করা হল।
এ ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনার পুনরাবৃত্তি না করার জন্য সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ
_________________________________
সচলায়তন.COM কর্তৃপক্ষ