০১
----------------------------------------------------
রাত এগারোটার দিকে প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টি শুরু না হতেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে গেলো। তিন দিন পর আমার পরীক্ষা, তাই চমৎকার ঝড়ের রাতেও মুখ গুঁজে একটানা পড়ে যাচ্ছি। বাবা অফিসের কাজে ঢাকার বাইরে - বাসাতে শুধু আমি আর মা। খাওয়া দাওয়ার পাট শেষ করে মা ঘুমিয়ে পড়েছে আরো আধা ঘন্টা আগেই। চার্জার লাইট জ্বেলে পড়ছি অনেক ক্ষণ ধরেই। চার্জ প্রায় শেষের দিকে, নিভু নিভু করছে। বই খাতা আর চার্জার লাইট দুটোই বন্ধ করে রেখে, কিছুক্ষণ জানালার সামনে যেয়ে দাঁড়ালাম।
মুষালধারে বৃষ্টি হচ্ছে, সেই সাথে বিকট শব্দে বজ্রপাত। এই ঝুম বৃষ্টি দেখে মনটা কেন জানি না বেশ ভালো হয়ে গেল। গুনগুন করে পুরানো দিনের একটা গান গাইতে গাইতে বিছানায় শুয়ে পড়লাম, কাল আবার ভোরে উঠে পড়া শুরু করতে হবে।
২
---------------------------------
মাঝরাতের দিকে হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙ্গে গেল একটা অদ্ভুত অনুভূতি নিয়ে। কেবলই মনে হতে লাগলো আমি ছাড়াও অন্য কেউ এই ঘরে রয়েছে। হাত বাড়িয়ে বেড সুইচ টিপে দেখি তখনো ইলেক্ট্রিসিটি আসেনি, বাইরে বৃষ্টির গর্জনও আগের চেয়ে অনেক বেশি। অস্বস্তির চূড়ান্ত - কিন্তু কি করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। হঠাৎ আমার রুমের সাথের বারান্দার দরজার দিকে চোখ পড়তেই বুক ধক করে উঠলো - আমার রুমের রকিং চেয়ারটায় বসে অন্ধকারের মধ্যে কেউ একজন দুলছে। শীতল একটা ভয়ের স্রোত বয়ে গেল আমার মেরুদন্ডের ভেতর দিয়ে, আপ্রাণ চেষ্টা করেও মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের করতে পারছি না। স্পষ্ট বুঝতে পারছি, কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান হারাতে যাচ্ছি আমি। অনেক কষ্টে নিজের উপর নিয়ন্ত্রন এনে, প্রানপণ চেষ্টায় গলা থেকে চি চি মার্কা একটা শব্দ বের করলাম, "কে চেয়ারে বসা , কে আপনি ? " । ছায়ামূর্তিটা যেন আমার কথা শুনতেই পায়নি, এমন ভাবে দুলতে লাগলো। আবার একটু সাহস এনে জিজ্ঞেস করলাম, " কে আপনি ? এখানে আসলেন কিভাবে ? "
এবার ছায়ামূর্তিটা দোলা বন্ধ করে চুপচাপ বসে রইলো। হঠাৎ করেই বিদ্যুত চমকে উঠলো আকাশে, সেই আলোতে এক মূহুর্তের জন্য ছায়া মূর্তিটাকে দেখে ভয়ে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার যোগার। একজন বৃদ্ধ মানুষ, ধবধবে সাদা চুল আর দাঁড়ি, মুখে অসংখ্য বলিরেখার আঁকিবুঁকি, চোখ জোড়া খোলা নাকি বন্ধ টের পাওয়া যায় না - বসে আছেন আমার চেয়ারে।
সাহসে ভরে করে আমি জিজ্ঞেস করলাম, "কে আপনি ? " । জলদ্গম্ভীর স্বরে উত্তর আসলো, " দেখতেই পাচ্ছো, আমি একজন বুড়ো"
......... (চলবে)
মন্তব্য
শুরু টা ভালই, কিন্তু বুঝতে পারছিনা গল্প টেনে কোনদিকে নিয়ে যাবে । চালিয়ে যাও, অপেক্ষায় রইলাম ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
কেমন জানি ধন্ধ লাগতাসে!
-জুলিয়ান সিদ্দিকী
খাইছে না!!!!!!!!
কি মাঝি? ডরাইলা?
আমারও তিনদিন পরে পরীক্ষা, এই মুহুর্তে রাত জেগে পরছি...একটা ঝুম্ বৃষ্টি নামুক...দেখি কাউকে দেখা যায় নাকি! অবশ্য হলে কখনো ইলেকট্রিসিটি যায়না, এটা একটা সমস্যা...হাঃ হাঃ হাঃ...
ভাইয়া গল্পের শুরুটা চমৎকার হয়েছে...পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম...
রিজভী
--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;
সর্বনাশ, এমন জায়গায় থামিয়ে দিলেন! দেরি সইছে না - তাড়াতাড়ি পরের পর্ব ছাড়েন।
ধন্যবাদ সবাইকে। আসলেই তিনদিন পর পরীক্ষা - কাজেই পরের পর্ব যে কবে আমি নিজেও জানি না, হয়ত আজ রাতেই, হয়ত আরো ২-৩ দিন পর।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কৈশোরের সারল্যের একটা ছোঁয়া আছে লেখাটাতে; খুব ভাল লাগল। সময় নিন, আমরা অপেক্ষায় থাকব।
ভুত নাকি??
দারুণ হচ্ছে! চলুক।
[][][][][][][][][][][][][][][][][][]
ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ, কোরো না পাখা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
পরবর্তী পর্বের জন্যে অধীর হয়ে রইলাম!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
পরের পর্ব আগে লেখেন... পরীক্ষা দিয়া কি হইবো? হুদাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
- রবি বুড়া নাকি?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঠিকাছে, আমিও সবার সাথে অপেক্ষায় রইলাম। লেখা ভালো হয়েছে।
নিশ্চয়ই তুমি বুড়ার নাতনীর সাথে টাঙ্কি মারছিলা,
ভাল হয়ে যাও মিয়া এত টাঙ্কিবাজি কিন্তু একদম ভালনা।
হেঃ হেঃ হেঃ
নতুন মন্তব্য করুন