বেশ অনেকদিন আগের কথা, তখনো বাংলাদেশ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ততোটা পরিচিত মুখ নয়। সদ্য ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়েছে, কালে ভাদ্রে কুলীনদের সাথে খেলার সুযোগ পায়। সে সময় প্রায়ই পত্রিকায় দেখতাম ভারত এবং পাকিস্তানে ( বিশেষত ভারতে ) খেলোয়াড়দের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হচ্ছে, কারণ কিছুই না, সদ্য শেষ হওয়া সিরিজে দলের বাজে পারফর্ম্যান্স। সে সময় এক ধরণের বিরক্তি মিশ্রিত বিস্ময়ে ভাবতাম, এসব বাড়াবাড়ির মানে কী ? দল নিশ্চয়ই রোজ জিতবে না ! ভারতের অতি আবগপ্রবন জনতা কেন এ সহজ কথাটা বোঝে না ? মনের গহীণ সংগোপনে এটাও ভাবতাম যে, আমরা যখন টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়ে কুলীন দল হব, তখন নিশ্চয়ই আমরা এতটা অযৌক্তিক কাজ করবো না।
সেইসব চিন্তার পর পদ্মা মেঘনা যমুনাতে অনেক জল গড়িয়েছে, আমরাও একদিন টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছি। যথারীতি দল শুরুতে হোঁচট খেয়েছে, আমরা সবাই উদ্বিগ্ন হয়েছি কিন্তু অধৈর্য্য হইনি। রোজ এই আশাতে বুক বেঁধেছি, আজ হয়ত ভালো খেলবে। খুব কম দিনই আমরা হাসিমুখে টিভিসেটের সামনে থেকে উঠতে পেরেছি। এর মধ্যে কিছু অবিশ্বাস্য জয়ের কৃতিত্ব যদি না দেই, তাহলে অবশ্য অনেকটা মিথ্যাচার হয়ে যাবে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে, রোজ মনের মধ্যে একটা খচখচ নিয়ে খেলার সামনে থেকে উঠতাম, আর ভাবতাম, হয়ত আর কিছু দিন পর থেকেই বাংলাদেশ নিয়মিত ভালো খেলতে শুরু করবে। দুঃখের ব্যাপার সেই দিন আজো আসে নি।
ক্রিকেটের সামগ্রিক ইতিহাস এবং বর্তমান প্রজন্মের আন্তর্জাতিক দলগুলির দিকে তাকানোর পর, এটা আশা করা অযৌক্তিক হবে যে বাংলাদেশ অদম্য এক দল হবে কিংবা ঘন ঘনই জয়ের দেখা পাবে। এমনটা আশা বোধ করি বাংলাদেশের নির্বোধতম দর্শকও করে না। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে যেটা . খুব সঙ্গতভাবেই আশা করা যায়, তাদের খেলার ক্রমউন্নতি এবং তার স্থিতিশীলতা, সেটা তাঁরা আমাদের দিতে ব্যর্থ হয়েছে সম্পূর্ণভাবে।
যখন বাংলাদেশ আই সি সি ট্রফি সদ্য জিতেছে, কিংবা তারও আগে বাংলাদেশ কালেভাদ্রে যে কয়টা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছে, তাতে আতাহার আলী, নান্নু, বুলবুল কিংবা আকরাম খানের ব্যাটে ভর করে দেড়শ থেকে দুশোর ঘরে ঘোরাফেরা করেছে। সেই সময় থেকে প্রায় এক যুগ পর আপনি বাংলাদেশের কী অবস্থা দেখতে পাচ্ছেন ? অবস্থা একই রকম। মাঝে মধ্যে টেনে হিচঁড়ে দুশো পার হলেও তার সংখ্যা হাতে গোনা কিংবা দুশো অতিক্রম করে সামান্যই বেশি। তাহলে এক যুগে আমাদের উন্নতিটা হল কী ? এখনো বাংলাদেশের গড় ব্যাটিং চিত্র খেলা না দেখেই বলে দেওয়া যায় - টপ অর্ডারে ধস নামা, এর পর মিডল অর্ডার এবং লোয়ার অর্ডার দিয়ে কোন মতে ইজ্জত রক্ষা করা। এই এক যুগে আমরা আশরাফুল, আফতাব কিংবা তামিমের মত প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান পেয়েছি সত্যি কথা, কিন্তু আমরা তাঁদের প্রতিভার চেয়ে তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, উন্নাসিকতার পরিচয়ই বেশি দেখেছি।
এই লেখার সূত্রপাত আজকের ( ৪ঠা জুলাই ২০০৮ ) বাংলাদেশ পাকিস্তান ম্যাচে বাংলাদেশের খেলা। এই খেলাকে হয়ত অনেকে বলবেন নিছকই দুর্ঘটনা, কিন্তু আমার বিচারে এটাই বাংলাদেশের প্রকৃত চিত্র। বাংলাদেশের থেকে আমরা চাই না রোজ তিনশ কিংবা আড়াইশ অধিক রান। বাংলাদেশ নিয়মিত ভিত্তিতে যদি রোজই দুশ’র বেশি স্কোর করতে পারে, তাহলে সেটাই এক যুগে বাংলাদেশের জন্য বিরাট এক অর্জন হয়ে থাকতো। কিন্তু এই ধারাবাহিকতা এবং স্থিতিশীলতার অভাবই চোখ রাঙ্গিয়ে আমাদের এক যুগের সমস্ত চেষ্টাকে হুমকি দেয়।
লেখা শুরু করেছিলাম, কুশ পুত্তলিকা দাহর প্রসংগ টেনে। আজ আমি হঠাৎ অনুভব করলাম, কতটা হতাশ হলে মানুষ আসলে এ কাজ করে । আমি বলছি না, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের কুশপুত্তলিকা দাহ করা উচিত, তবে আমার ধারণা খেলোয়াড়দের দেশ এবং দলের প্রতি কমিটমেন্টের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ হওয়া সত্বেও ক্রিকেটারদের সাধ্যমত সমর্থন দেওয়া হচ্ছে। নিম্ন আয়ের লোকদের ট্যাক্সের টাকাতেই ক্রিকেটাররা এত সুবিধা পাচ্ছেন - সেই লোকগুলিকে তাঁরা বিনিময়ে কি খেলা উপহার দিচ্ছেন তা কী তাঁরা একবারও ভেবে দেখেছেন ?
সময় এসেছে কঠোর হওয়ার। যৌক্তিকভাবেই অপেশাদারী মনোভাবের খেলোয়াড়দের শাস্তি দেওয়া উচিত। যে প্রতিভা বছরে দুইবার বিকশিত হয়, তেমন প্রতিভা থাকা না থাকায় মনে হয় বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।
মন্তব্য
খেলা বুঝিও না দেখিও না খেলার পাতা পড়িও না
তবে আশপাশ থেকে ঢুকে যায় খেলার অনেক কিছু
দেশের বাইরে খেলায় হেরে এলে সাদ্দাম হোসেনের ছেলে নাকি ফুটবলারদের পা ভেঙে দিতো এজন্য হারলে আর কেউ দেশেই ফিরত না
ওরকম করা যায় না
এক হাত ভেঙে আরেক হাতে ধরিয়ে দেয়া যায় না?
প্রহারেণ ধনঞ্জয়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ভদ্রতার মাথা খেয়ে দেখি হিমু ভাই আর লীলেন ভাই আমার মনের কথাই বলে দিলেন
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সোজা বাংলায় বলতে গেলে - বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেয়া উচিৎ হয়নি।
টেস্ট ক্রিকেট হলো ক্রিকেট খেলার সর্বোচ্চ লেভেল। জিম্বাবুয়ে আর বাংলাদেশকে এই স্ট্যাটাস দিয়ে খেলাকে হালকা করা হয়েছে, আর কিছু হয়নি।
তার পরেও জিম্বাবুয়ে পর পর তিনবার আইসিসি জেতার পরেই কেবল টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছিল। অপর দিকে বাংলাদেশকে টেস্ট দেওয়ার পেছনে ইতিহাস কি?
একটা আইসিসি জয় - যেটা সহজেই কেনিয়ার কাছে যেতে পারতো। লাস্ট বল ভিক্টরি ছিল সেটা। আর একটা বিশ্বকাপ ম্যাচ জয়, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে - যার সত্যতা নিয়ে আজ পর্যন্ত সন্দেহ আছে, পাকিরা কি পয়সা খেয়ে ইচ্ছা করে হেরেছিলো না কি না?
এই দুটাই যথেষ্ট ছিল সাবের চৌধুরী আর জাগ ডালমিয়ার জন্যে। ক্রিকেটের বর্তমান নীতিনির্ধারক হচ্ছে ভারত আর টিভির টাকা। ভারতের দরকার ছিল আইসিসির ভোটাভুটিতে তাদের দল ভারী করে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার পাল্লা হালকা করা। বাংলাদেশকে ঢুকিয়ে ভারতের সেই কাজ রপ্ত হয়েছে।
টিভিওয়ালাদের দরকার ছিল বড় দেশ, বড় এডভার্টাইজমেন্টের বাজার। সেটাও সম্পন্ন হয়েছে।
মধ্যে দিয়ে ক্রিকেট খেলাই হয়নি। পিচ নেই। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের অবকাঠামো নেই। খেলোয়াড়দের স্কিল আছে। কিন্তু সস্তা সেলিব্রিটির যুগে দাম্ভিকতা আছে অথচ অধ্যবসায় বা টেম্পারামেন্ট একটাও নেই।
কিন্তু সেসবের দরকার কি, টেস্ট তো পেয়ে গেছি!
ওদিকে কেনিয়া বা হল্যান্ডের মত দলের পরবর্তী পারফরমেন্স দেখে এটা মনে হতেই পারে, যে আসলে ওদেরই টেস্ট প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ওদের তো মাঠও নেই, টিভি দর্শকও নেই, গ্যারান্টিড ভোটও নেই।
এখন লে ঠ্যালা সামলা। ভূতকে আর বোতলের ভেতরে ঢুকানো সম্ভব না। লেংড়িয়ে লেংড়িয়েই চলতে হবে...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
হুমম...
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস ড. ইউনূসের নোবেলের মতো অনেকটা। প্রাপ্তিতে গ্যাঞ্জাম কমে নাই, বরং বেড়েছে। যারা দেনেঅলা, তারা চিপায় বসে মজা দেখছে।
তোমার পতাকা যারে দাও, তারে বহিবারে দাও শকতি। খেলোয়াড়দের মনে আরো বল জাগুক। ধোলাই দিতে চাওয়ায় দুঃখিত, গলতি সে মিস্টেক হো গায়া। আপনার ফাটান, আমরা সবাই আছি আপনাদের পেছনে।
বহু আগে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে, কিছুটা প্রাসঙ্গিক মনে হলো, তাই লিঙ্ক দিলাম।
হাঁটুপানির জলদস্যু
একটা জিনিস বার বার চোখের সামনে দেখতে দেখতে নাকি অভ্যাস হয়ে যায়। বাংলাদেশের পারফরমেন্স দেখতে দেখতেও একই রকম কিছু একটা হবার কথা। কিন্তু শেষ মেষ আমার ক্যানো যেন হয়না। এক একটা লজ্জাজনক হারের পর আমি নিজে যতটা কষ্ট পাই, লজ্জা পাই মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমাদের ক্রিকেট টিমের প্লেয়াররাও ততটুকু পায়না। নিজের ভুলে গোপাল ভাঁড় স্টাইলে আউট হবার পর ব্যাটটাকে ঝাড়ু স্টাইলে একবার বাতাসে সাঁই করে নাড়িয়ে মাঠ থেকে বের হয়ে আসার সাথেই ওদের সব লজ্জা বোধহয় নিঃশেষ হয়ে যায়। শুধু আমাদের নিচু মাথাগুলোই শুধু সহজে সোজা হতে চায়না।
এর আসলেই একটা বিহিত হওয়া দরকার।
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
এগুলারে বাংলাদেশের জুলাই মাসের খটখটা দুপুরে আশে পাশে বাড়িঘর গাছপালা ছাড়া ছাদে চান্দির উপর চাইর আনা রাইখা একপায়ে দাঁড় করাইয়া রাখা উচিত রুটিন কইরা....
ঈশ্বরাসিদ্ধে:
অজ্ঞাতবাস
পূর্ণ সহমত!!
শিরোনাম ভুল হয়েছে । হতে হবে - " একদল হারামজাদা ফাযিলের কথা "
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
দর্শকরা কটু মন্তব্য করলে মাশরাফির মত ক্রিকেটাররা কি করে তা কিছুদিন আগেই দেখা গেছে। কান ধরে বের করে দেয়া উচিত এদেরকে! যতই প্রতিভা, স্কিল থাকুক না কেন।
জোশের ঠেলায় বলে ফেললাম। আসলে স্কোয়াডে যারা আছে, তাদের ছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের চলে না। নিজেদের অপরিহার্য মনে করার পরিণতিতে ধস নামে খেলার প্রতি, দলের প্রতি, সর্বোপরি দেশের প্রতি দায়িত্ববোধে।
ধুর! মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল!
একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায় - বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলকে কিসের ভিত্তিতে পারিশ্রমিক/বেতন দেওয়া হয়? নির্ধারিত মাসিক বেতন? পারফরম্যান্সের উপর ভিত্তি করে কোন কিছু কি দেওয়া হয়? কারো জানা থাকলে দয়া করে আওয়াজ দিবেন।
বাংলাদেশ হারলে আমাদের খারাপ না লাগাটাই অস্বাভাবিক। কিন্তু খেলোয়াড়দের উদ্দেশে এ রকম অপমানজনক কথা শুনলে/পড়লে আমার মনটা খারাপ হয়ে যায়। জাতীয় দলের কোনও খেলোয়াড় ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ খেলেন, তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁরা যেমনই খেলুন না কেন, এই সত্যটি আমাদের মেনে নিতেই হবে, তাঁরাই আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ। আমরা গালিগালাজ করলেই তাঁদের খেলার মান রাতারাতি বেড়ে যাবে? আসলে আমরা আমাদের সাধ আর সাধ্যের অনতিক্রম্য ব্যবধানটি হিসেবেই আনতে চাই না।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
আমি এই ব্যাপারে নিশ্চিত নই । এমন কি হতে পারে না, তাদের থেকেও বহুগুনে দক্ষ এবং দায়িত্বশীল এবং মেধাবী খেলোয়াড়েরা পাইপ লাইনে ছিলেন । পরে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে খেলাধুলা বাদ দিয়ে নিজ নিজ পছন্দমত চাকরী বা কাজ কর্ম বেছে নিয়ে এখন সুখে ঘর সংসার করে ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আসলে দোষটা এদের নয় এবং আমরা যা চাচ্ছি তা এদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। এরা সবাই ইনটুইটিভ খেলোয়ার। ক্রিকেট ইনটুইশনের সাথে সাথে বুদ্ধিরও খেলা। ক্রিকেট একটি স্ট্রাটেজি গেম ও বটে। যখন বুদ্ধিমান খেলোয়ারদের পারফরমেন্স একটু কম হলেও দলে নেওয়া হবে তখন থেকেই পরিবর্তন দেখা যাবে। এইসব পোলাপানেরে বকা দিয়াও কোন লাভ নাই, পিছনে বোমা ফুটাইয়াও কোন লাভ নাই। আগে সিলেক্টররা বুঝুক কনসা ডাল অর কনসা কালা।
-অপ্রিয়
হুম... এই ই তো অবস্থা আসলে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার সাথে সহমত!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
উদ্ধৃতি
সময় এসেছে কঠোর হওয়ার। যৌক্তিকভাবেই অপেশাদারী মনোভাবের খেলোয়াড়দের শাস্তি দেওয়া উচিত। যে প্রতিভা বছরে দুইবার বিকশিত হয়, তেমন প্রতিভা থাকা না থাকায় মনে হয় বিশেষ কোন পার্থক্য নেই।
আপনার সঙ্গে একমত। কিন্তু পান্তাভাত খেয়ে আমাদের ছেলেরা কতটুকু ছুটতে পারবে? দু'একটা লাফ-ফাল দিলেইতো পান্তাভাত সব পেশাব হয়ে বেরিয়ে যায়। খুব ছোট বেলা থেকেই প্রশিক্ষণ দিতে হবে। পরিবর্তন আনতে হবে খাদ্যাভ্যাস। তারপর যদি পোলাপানের কব্জিতে আর হাঁটুতে কিছুটা শক্তি হয়।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
প্রত্যেকটা জাতির প্রাপ্তির মনে হয় একটা সীমা বা পরিসীমা থাকে। কেউ কেউ সেই পরিসীমা বাড়াতে পারে, তাদের কথা ভিন্ন। কিন্তু আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে আমাদের ক্রিকেটের তুলনামূলক মান এর থেকে উন্নত হবেনা। অর্থাৎ নিকট ভবিষ্যতে (আমার মনে হয় কমপক্ষে ১০ বছর) প্রতিবেশী দেশের সাথে নিয়মিত জয়ের আশা আমি করতে পারিনা। নিরাশাবাদী নই আমি, তবে বাস্তবতার নিরীখে আশার স্কেলকে ওঠানামা করাতেই বেশী স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।
আমাদের খেলোয়াড়দের নাকি ট্যালেন্ট আছে। এই কথাটা শুনলেই আমার অন্য একটি তুলনার কথা মনে পড়ে। চিন্তা করে দেখি আমার সব বন্ধুরাই তাদের স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিভাবান ছিলেন। পড়াশোনার বিচারে সবাই দেখা যাবে হয়তো স্কুল লেভেলে বৃত্তি পাওয়া, ক্লাসের ফার্স্ট সেকেন্ড বয় বা গার্ল। কিন্তু এই ট্যালেন্টরা সবাই যখন একসাথে প্রতিযোগিতা করে তখন কিন্তু তাদেরই একজনই ফার্স্ট হয় আবার তাদেরই একজন লাস্ট হয়। দুর্ভাগ্য যে সেই প্রতিযোগিতায় আমরা বরাবরই লাস্ট হচ্ছি।
ভাইজান! আমি পুরা একমত আপনার সাথে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আমি আর আশা করি না। সত্যি কথা।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
আমার মন্তব্য = সুবিনয় মুস্তফী-র মন্তব্য + অপ্রিয়-র মন্তব্য
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
খুব ভালো লিখেছেন। কয়েকটি বিষয়ের ওপর কিছু বলি:
১। খেলোয়াড়দের শাস্তি:
প্রত্যেকটা বাজে ম্যাচের পরে খেলোয়াড়দের ওপরেই ফ্যানদের বিরক্তি বেশি পড়ে। কারণ, খেলাটা তারা খেলে। তারা ইন্টারফেসে থাকে। কিন্তু খেলাটার পিছনে শুধু খেলোয়াড় নয়, দায়বদ্ধতা থাকে কোচ, ম্যানেজমেন্ট, বোর্ডের লোকজন - সবার। দায়বদ্ধতা সবাইকেই সমানভাবে শেয়ার করতে হবে। এক্ষেত্রে সাধারণত একটা ফতোয়া শোনা যায় - কোচ, ম্যানেজমেন্ট আর কি করতে পারে, তারা বড়জোর বলতে পারে কি করতে হবে, মাঠে তো খেলোয়াড়রাই খেলে। কথাটা বাহ্যিকভাবে সত্য মনে হলেও এর মধ্যে একটা অনেক বড় মিথ্যা আছে। ম্যানেজমেন্ট পেশাদার হলে তারা অবশ্যই এমন সব খেলোয়াড়দের নিয়ে পড়ে থাকবে না, যারা মাঠে একের পর এক অপেশাদারিত্ব প্রদর্শন করে যাবে। খেলোয়াড়দের শাস্তি জিনিসটাও উদে হাসান ফর্মূলায় হওয়া উচিত নয়; কেউ খেলতে না পারলে তাকে কন্ট্রাক্ট দেয়ার দরকার নেই, আশরাফুল আফতাবদেরকে মেরেকুটে 'ঠিক' করে খেলাতেই হবে - এরকম মনোভাব চরম অপেশাদারিত্বের পরিচয়। খেলোয়াড়দের মধ্যে পেশাদারিত্ব ডেভেলাপ করাতে হলে তারা অপরিহার্য নয় - এই ব্যাপারটা ভালোভাবে বুঝাতে হবে। সহজ ফর্মূলা - সারভাইভাল ফর দ্য ফিটেস্ট।
২। টেস্ট স্ট্যাটাস
এ ব্যাপারে সুবিনয়ের বক্তব্যের সাথে একমত নই। বাংলাদেশের টেস্ট ট্যাস্টাস পাওয়ার পিছনে হয়তো পলিটিক্স ছিলো, ঠিক সেই মুহূর্তে কেনিয়াও আমাদের চেয়ে দল হিসেবে শক্তিশালী ছিলো; কিন্তু টেস্ট স্ট্যাটাসপ্রাপ্তিকে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা বিরাট পদক্ষেপ হিসেবে দেখা যায়। সামর্থ্য আমাদের অবশ্যই ছিলো; টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম ইনিংসে ৪০০র ওপরে রান করেছি, আমাদের ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি করেছে। ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটকে আরো প্রতিযোগিতামূলক করতে যে অর্থ দরকার, তার সংস্থান সহজতর করেছে টেস্ট স্ট্যাটাসপ্রাপ্তি। সুতরাং টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
সমস্যা যা হয়েছে তা আমাদের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ব্যর্থতা। ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়েছি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টরের মতোই কিছু মাথা খাটো অযোগ্য লোকের পরিকল্পনা ও পেশাদারিত্বের অভাবে ক্রিকেট ডুবছে এবং ডুবতেই আছে। এটা টেস্ট-স্ট্যাটাসপ্রাপ্তির দোষ নয়, এটা বিসিবির সমস্যা।
জিম্বাবুয়ের তুলনা আসায় কিছুটা আশ্চর্য হলাম। জিম্বাবুয়ের সাম্প্রতিক চরম অধঃপতনের পরে - যার কারণ পুরাটাই পলিটিক্স,খেলোয়াড়দের ক্রিকেট যোগ্যতার অভাব নয় - অনেকেই জিম্বাবুয়ের টেস্ট স্ট্যাটাস নিয়ে কথা তুলে আনন্দ পায়। কিন্তু ফ্লাওয়ার-জনসন-গুডউইন-ক্যাম্পবেল-স্ট্রিকদের জিম্বাবুয়ে সম্পর্কে সামান্যতম ধারণা থাকলেও যে কেউ তাদের টেস্ট স্ট্যাটাসপ্রাপ্তি নিয়ে কথা তুলবে না। জিম্বাবুয়ে আর বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস দিয়ে খেলা হালকা করা হয়েছে - এই বক্তব্যে খুব মজা পেলাম। এটা সাধারণত ব্রিটিশ বা কিছু উগ্র ইন্ডিয়ান বলে থাকে। খেলা হালকা হয়ে গেলে সেই খেলাকে মাঠে না খেলে সুদৃশ্য মোড়কে পুরে মিউজিয়ামে রেখে দেয়াই বোধ হয় ভালো।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
" বাংলাদেশের প্রত্যেকটা সেক্টরের মতোই কিছু মাথা খাটো অযোগ্য লোকের পরিকল্পনা ও পেশাদারিত্বের অভাবে ক্রিকেট ডুবছে এবং ডুবতেই আছে। এটা টেস্ট-স্ট্যাটাসপ্রাপ্তির দোষ নয়, এটা বিসিবির সমস্যা।"
বলাই দার সাথে একমত
সাক্ষাত প্রমান ডেভ হোয়াটমোরের সময়ে আসা পরিবর্তন টা সেই সময় কিন্তু বাংলাদেশ আস্তে আস্তে বেশ ভালোই করছিল।
বাংলাদেশে শুধু ক্রিকেট না প্রায় সব জাতীয় খেলাতেই খেলতে পারার চাইতে বড় যোগ্যতা হল উপরে বা এসোসিয়েশন এ কোনো লোক থাকা সেইটা না থাকলে আপনে যত বড় ভালো খেলোয়ারই হোন না কেনো হিট এই টিকবেন না।
প্রমান চান ত খোজ নিয়ে দেখেন এখন যারা জাতীয় দলে যারা আছে তাদের সবারই কেউ না কেউ কোনো না কোনো ভাবে বিসিসিবি এর সাথে বা সিলেকশন এর সাথে জড়িত।
রেনেট ভাই এর লেখা গল্পটা মনে করতে পারেন অনেকটাই সত্যি কাহিনি জানিনা উনি খুব কাছ থেকে দেখেছেন কিনা।
কিন্তু
বাংলাদেশ এ ১৫ কোটি লোকের মধ্যে বিসিসিবি এর সাথে জড়িত নয় এমন কেউ কি ক্রিকেট খেলে না!
মাথার উপরের এই টিউমার দূর হলে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অবশ্যই ভালো করবে
কেনো করবে সেটাও বলি
১) বাংলাদেশে এখন পুরোনো খেলোয়াড়রা ক্রিকেট স্কুল খুলে বসছে এর থেকে একজন বা দুজন খেলোয়ার করে আসলেও একসময় দেখবেন কাজ হয়ে গেছে, বাংলাদেশ জিততে শুরু করেছে।
২)ম্যানেজমেন্ট এর টিউমারও বয়সের ভারে একসময় শেষ হয়ে যাবে তখন দেখবেন সারা বাংলাদেশ থেকে বীরশ্রেষ্ঠ দের মত জান দেব তবু মান দেবো না মনোভাব সম্পন্ন খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলছে।
৩)বাংলাদেশের অনেক ছেলেই আন্তর্জাতিক অংগনে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ভালো করছে তাদের নাম অনেক সময়ই আমরা শুনি না বা জানি না বা জানতে চাই ও না সেই হিসেবে বলি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো খেলার মত ছেলে পেলের অভাব হবে না সমস্যা শুধু তাদেরকে তুলে আনার।
এখন সেই কাজটা কে করে সেটা দেখারই অপেক্ষায় বসে আছি
নতুন মন্তব্য করুন