কথা ছিলো পরদিন ভোরে উঠেই আমরা যাত্রা শুরু করবো। এমনিতেই গাড়ির পারমিশনের ব্যাপার আছে, তার উপরে দার্জিলিং ঘুরে তারপর আমরা মালবাজার যাবো- বিশাল দূরত্ব।
গাড়িতে উঠে বসেই একটা ব্যাপার আবিষ্কার করলাম - বদহজম যে শুধু পেটেই হয় তাই না, অধিক সৌন্দর্যেও হতে পারে। গতকালের সারাদিন একের পর এক লাগামহীন সুন্দর দেখতে দেখতে, এখন কেমন যেন অনীহা লাগছে পাহাড়ে। আমি গাড়ির সামনে বসে, দূরের পাহাড়ের দিকে না তাকিয়ে, সামনের রাস্তার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। এখানে সিকিমের রাস্তা নিয়ে একটা মজার পর্যবেক্ষণ বলা যেতে পারে। সিকিমের এই পাহাড়ি রাস্তাগুলি সবই তৈরি করেছে ভারতীয় আর্মিরই "বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (BRO)" নামের এক সংস্থা, তাদের এই প্রোজেক্টের নাম ছিলো "স্বস্তিক(SWASTIK)" । নিঃসন্দেহে অসাধারণ কাজ করেছে তাঁরা। চৌদ্দ-পনের হাজার ফুট পর্যন্ত ( যতটুকু গিয়েছি আর কী ) সুন্দর পিচ ঢালা রাস্তা। মাঝে মাঝে কিছু জায়গায় ভাঙ্গা আছে ঠিকই, কিন্তু সেগুলি ঠিক করার জন্য লোকজন বেশ দ্রুতই হাজির হয় বলে শুনলাম। তো এই BRO পাহাড়ি পথের বাঁধাই করা দেওয়ালে চমৎকার সব কথা বার্তা লিখে রাখে, অধিকাংশই BRO এই অঞ্চলের জন্য কতটুকু নিবেদিতপ্রাণ, সেই সম্পর্কিত। সিকিম অনেক পরে (তিয়াত্তরে সম্ভবত) ভারতের অংশ হয়েছে - তাই অধিকাংশ দেওয়ালের লেখাই একটাই সুর যে, আমরা ভারতীয় - আমাদের মধ্যে অনেক ঐক্য। আর বাদবাকি লেখার মূল বক্তব্য হচ্ছে নিরাপদ ড্রাইভিং-এর পরামর্শ। মাসখানেক আগে দেখে আসা সব লেখা এখন আমার মনে নেই, তবে এই মুহূর্তে মনে পড়ছে, Reach Home in Peace, not in Pieces কিংবা It's Valley, not Rally জাতীয় চমৎকার সব লেখা।
যাই হোক, আমাদের আজকের ড্রাইভার তেমন মিশুক মানুষ না। গাড়িতে উঠার পর কথাবার্তা তেমন হয় নি।শুধু একবার জিজ্ঞেস করেছেন, আমরা কোথা থেকে এসেছি আর দার্জিলিং-এ আমরা সাইট সিয়িং করতে চাই কি না। উনি তেমন কোন কথা বলছেন না, শুধু নিবিষ্টমনে গাড়ি চালাতে চালাতে মাঝে মধ্যেই সামনে রাখা খৈনির প্যাকেট থেকে তিন আঙ্গুলে ভরে মুখে চালান করে দিচ্ছে। আমার ভারত ভ্রমনের কিঞ্চিৎ অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছে এ'দেশে খৈনির ব্যাপক প্রচলন। ট্রেন জার্নিতেও অনেক ভদ্র-সভ্য লোককেও দেখেছি খৈনি বের করে মুখে চালান করে দিতে।
পাহাড় দেখতে আবার আস্তে আস্তে কিছুটা ভালো লাগছে, দূরে তাকিয়ে দেখছি। এমন সময় চলে আসলো সেই সিকিম চেকপোস্ট। বের হওয়ার সময় কোন চেকিং হয় না, তাই একটানেই বের হয়ে গেলাম। মনটা একটু খারাপ হল - এতো চমৎকার একটা জায়গায় হয়তো আর কোনদিনই আসা হবে না। তবে সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপার হল সিকিম থেকে বের হয়ে মন প্রচন্ড ভারমুক্ত মনে হল। সিকিমে এই ক'টা দিন সারাক্ষণ সাবধানে থাকতে হত, যাতে বাংলাদেশ নামটা মুখ ফস্কে না বের হয়ে যায়। সিকিম বর্ডার থেকে বের হয়ে মনে হল চিৎকার করে বলি, বাংলাদেশ !
বেশ অনেকক্ষণ গাড়ি চলার পর তিস্তা ব্রীজের কাছে এক জায়গাতে গাড়ি থামানো হল সকালের খাওয়ার জন্য। পাহাড়ের চাউমিনের ( নুডুলস) সুনাম শুনেছি অনেক, কাজেই হোটেলে ঢুকে চাউমিন অর্ডার দিলাম। চাউমিনের সবই ঠিক ছিলো, কিন্তু কোন একটা উপাদানের এমন অদ্ভুত স্বাদ ছিলো যে কেউই আর পেটে নামাতে পারলো না। এত দাম দিয়ে কেনা, তাই সন্দেহজনক একটা গন্ধ নাকে নিয়েও পেতে চালান করে দিলাম - সেই সাথে এবারও মোমো। তবে ওই জায়গারই কোন একটা সমস্যা - মোমোটাও জঘন্য ছিলো।
আবার গাড়িতে উঠে বসলাম, গাড়ি চলতে শুরু করলো। বেশ কিছুক্ষণ চলার পর গাড়ি দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্টে প্রবেশ করলো। যারা এর মধ্যেই ওদিকটায় গিয়েছেন তারা হয়তো জানেন, পাহাড়ের ধারে ছোটখাটো যেসব বাজার বসে - সেগুলি চমৎকার হয়। কেন জানি না, খুব রঙিন লাগে সেই বাজারগুলিকে। এমনই একটা বাজারে আমরা থামলাম- আমি কিছু ছবি তুললাম আর বাবা কিছু কমলা কিনলো।
এবার দার্জিলিং-এর সাম্প্রতিক কিছু হাল হকিকত জানানো যাক। যারা খোঁজ খবর রাখেন কিছুটা তারা হয়তো জানেন, দার্জিলিং প্রচন্ড রকমের অশান্ত বর্তমানে। কারণ, দার্জিলিং-এর সিংহভাগ অধিবাসী, যারা হচ্ছে নেপালি গোর্খা, তারা বহুদিন ধরেই চাইছে পশ্চিমবঙ্গের অংশ থেকে বের হয়ে এসে নিজেদের স্বতন্ত্র রাজ্য গোর্খাল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করতে। আমি বাংলাদেশে বসেও পত্রিকা পড়ে এর কিছু টুকিটাকি খবর পেতাম, সে সময় নেতা হিসেবে নাম শুনেছিলাম সুভাষ ঘিসিং-এর। এখন যেয়ে শুনলাম, আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঘিসিং-এরই এক আত্মীয়, বিমল গুরুং। অনেকের কাছে কানাঘুষা শুনলাম ইন্ডিয়ান আইডল প্রশান্ত তামাং-এরও নাকি এইসবে ইন্ধন আছে। এদিকে আবার সমস্যা হচ্ছে, গোর্খারা চাইছে দার্জিলিং-এর পাশাপাশি ডুয়ার্স, শিলিগুড়ি পর্যন্ত নিজেদের গোর্খাল্যান্ডের দখলে নিতে। কিন্তু সমতলের অর্থাৎ মালবাজার, শিলিগুড়ির বাঙালিরাও মানতে রাজি না - তারাও সুযোগ পেলেই গোর্খা পেটাচ্ছে।
যাই হোক, দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্টে ঢুকেই টের পেলাম, ঘটনা সুবিধার না। সব দোকানেরই নেম প্লেটে ওয়েস্ট বেঙ্গল অংশ কালি দিয়ে ঢেকে বড় করে গোর্খাল্যান্ড লেখা। শুধু এখানেই শেষ না, সব গাড়ির নম্বর প্লেটে WB ( অর্থাৎ, ওয়েস্ট বেঙ্গল) এর বদলে GL (অর্থাৎ, গোর্খাল্যান্ড) লেখা। মাঝে এমন অবস্থাও হয়েছিলো, সমতলের গাড়িগুলি WB পালটে GL না করলে ঢুকতে দিতো না।
যে ব্যাপারটা লক্ষ্য করলাম, দার্জিলিং আর গ্যাংটকের পাহাড়ের মধ্যে একটা বড় ধরণের পার্থক্য রয়েছে। গ্যাংটকের পাহাড় অধিকাংশই রুক্ষ, পাথুরে, পক্ষান্তরে দার্জিলিং-এর পাহাড়গুলি বাড়াবাড়ি রকমের সবুজ ! গ্যাংটকের মধ্যে একধরণের বুনো, উদ্দাম সৌন্দর্য রয়েছে কিন্তু সেখানে যেন স্নিগ্ধতার বড় অভাব, অন্যদিকে দার্জিলিং অপূর্ব স্নিগ্ধ - পাহাড়ের রানী দার্জিলিং উপমা সর্বাংশে সত্যি। দার্জিলিং-এর অধিকাংশ পাহাড়ের গায়েই চা-বাগান, পথের ধারে আশ্চর্য সুন্দর সব বাহারি রঙের পাহাড়ি ফুল ফুটে রয়েছে। সত্যি কথা বলতে, পাহাড়ের মূল সৌন্দর্যই না কি বর্ষাকালে। যদিও ভূমিধসের সম্ভাবনা বেশ প্রবল, তবুও বর্ষাতে পাহাড়ের যেই রূপ, তা নাকি অতুলনীয়। আমি অবশ্য শীতের মধ্যেও পাহাড়ি ফুল দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আরেকটা মজার ব্যাপার, দার্জিলিং গ্যাংটক দু' জায়গাতেই আছে - পাহাড়ের গায়ে খোপ কেটে সেখানে দেবমূর্তি রেখে নিয়মিত আরাধনা করা হয়।
গ্যাংটক থেকে দার্জিলিং আসার যে রাস্তা, সে'টা বেশ চড়াই উৎরাইওয়ালা। আমার বেশ মজাই লাগছিলো - বিনা পয়সায় রোলার কোস্টার চড়া বলা যেতে পারে। এভাবে চলতে চলতে দু'পাশে দার্জিলিং-এর রাস্তা ঘাট, বাড়ি ঘর দেখছিলাম। দার্জিলিং শহরটা দিন-দিন তার শ্রী হারাচ্ছে মানুষেরই কারণে। পাহাড়ে এখন এতটাই ঘনবসতি যে, দূর থেকে দেখলে মনে হয় কোন ঘিঞ্জি বস্তি। এ'দিকে লাগামছাড়া গাছ কাটার প্রতিশোধও নিচ্ছে প্রকৃতি। আগের মত শীত নাকি আর পরে না, সেই সাথে পালটে গেছে ঋতুর হিসাবও। যাই হোক, দার্জিলিং মূল শহরে ঢুকতে না ঢুকতেই বিশাল বড় এক জ্যামে পড়লাম। প্রথম পাঁচ-দশ মিনিট ভেবেছি ছেড়ে যাবে এখুনি, কিন্তু মিনিট বিশেকেও যখন গাড়ি এক ইঞ্চি সামনে যেতে পারলো না, তখন বিরক্ত লাগা শুরু হল। এই পাহাড়ে বেড়াতে এসেও যদি সমতলের মতো সেই বিশ্রী জ্যামে বসে থাকতে হয়, মেজাজ ঠিক রাখা কিভাবে সম্ভব ?
খানিক পরে ড্রাইভার অধৈর্য্য হয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে, আরো উচু এক পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে চলতে শুরু করলো। যা বুঝতে পারলাম, এই রাস্তা অনেকটা মূল শহরের "বাইপাস" ধরণের। এই নিরিবিলি এই পাহাড়ি রাস্তাটাও চমৎকার, কিন্তু আমাদের বেশ দেরি হয়ে যাচ্ছে ততোক্ষণে। অনেকটা পথ ঘুরে এসে ড্রাইভার গাড়ী রাখলো এন সি গোয়েঙ্কা রোডে। এখানে গাড়ি রাখার শর্ত হচ্ছে, যেহেতু আমাদের গাড়ি সিকিমের, তাই এই গাড়ী নিয়ে সাইট সিয়িং-এ যাওয়া যাবে না, দার্জিলিং-এর স্থানীয় গাড়ী নিতে হবে। আমরা জানালাম যে, আমাদের সাইট সিয়িং-এর বিন্দুমাত্র ইচ্ছাও নেই দার্জিলিং-এ, কারণ আমরা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার আসছি। ব্যাটারা নাছোড়বান্দা - পরে যখন জানালাম তাহলে আমরা দার্জিলিং না দেখেই চলে যাবো, তখন তারা প্রস্তাব দিলো কিছু পার্কিং চার্জ দিয়ে আমাদের সিকিমের গাড়ি এখানে রাখতে।
গাড়ি থেকে নেমে ওদের জিজ্ঞেস করলাম, ম্যালে'র ( দার্জিলিং-এর একটা চমৎকার জায়গা, অনেকটা পার্ক টাইপের) দিকে যাওয়ার রাস্তা কোনটা । ওদের গাড়ি নেই নি দেখেই হয়তো ব্যাটারা আমাদের মহা ঘুরপথের এক রাস্তা দেখিয়ে দিলো। প্রায় মিনিট পনের ধরে বিভিন্ন চড়াই পথে হাঁটতে হাঁটতে, অবশেষে পৌছে গেলাম ম্যালেতে। এই পনের মিনিটের মধ্যে প্রায় গোটা পাঁচেক মিছিল দেখে ফেলেছি গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে। সবচেয়ে হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে, বিশাল একটা মিছিলের সামনে নেতা গোছের এক লোক হাতের কাগজ থেকে দেখে দেখে জ্বালাময়ী (!!) স্লোগান দিচ্ছে - এ ঘটনা দেখার পর হাসি চাপা দুষ্কর হয়ে পড়লো। জনে জনে জিজ্ঞেস করে, ক্রমাগত চড়াই পথে হেঁটে যখন ম্যালেতে পৌছালাম, ততোক্ষণে আমরা বেজায় ক্লান্ত।
ম্যালের দু'ধারে দোকান, মাঝ বিশাল ফাকা জায়গা, আর অপর দিকে খাদ। দার্জিলিং শহরের মূল সৌন্দর্য শুধু মাত্র প্রাকৃতিক নয় - আজ থেকে একশ বছর আগে বৃটিশরা যে চমৎকার ছিমছাম এক শহর তৈরি করে রেখে গিয়েছে সে'টাও মনকাড়া। বিগত দিনগুলিতে অত্যধিক মানুষের ভীড়ে পাহাড় আজ ঘনবসতির, নোংরা এক জায়গা। তবে ম্যালেতে গেলে এখনও দার্জিলিং-এর সেই পুরানো বৃটিশ স্থাপত্যের ছোঁয়া পাওয়া যায়। দু'ধারে বসার বেঞ্চে মানুষ বসে আড্ডা মারছে, আর তার পাশেই রয়েছে খাওয়ার দোকান, কফিশপ কিংবা গিফট আইটেমের দোকান। অবশ্য গিফট আইটেমের দোকান না বলে, গলা কাটার সেন্টারও বলা যেত পারে।
ম্যালের সামনেই রয়েছে নেপালি জাতীয় কবি ভানু ভক্ত আচার্যের আপাদমস্তক ভাস্কর্য। আমরা যখন হাঁটছি, তখনো দেখি আরো দু-তিনটা মিছিল আমাদের পাশ দিয়েই গেলো। ম্যালে থেকে কিছুটা দূরেই, ঐতিহাসিক সেন্ট লরেটো কলেজ, যার অধুনা নাম ( বছরখানেকের মধ্যে পাল্টেছে) সাউথফিল্ড কলেজ। লরেটোর সুনাম রয়েছে একদম ডানাকাটা পরীদের কলেজ হিসেবে। কপাল মন্দ , শীতকালের বন্ধ হয়ে গিয়েছে লরেটো। অবশ্য পাহাড়ের সব বোর্ডিং স্কুল, কলেজ এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যন্ত চোখ ধাঁধানো সব মেয়েরা পড়ে। গতবার কালিম্পং-এ দেখেছিলাম অপূর্ব সব তন্বী তরুণীদের, এবার গ্যাংটকেও সিকিম মনিপাল বিশবিদ্যালয়ের যে দু'-চার পিস স্যাম্পল দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, তাতে গোডাউন সম্পর্কে অগাধ শ্রদ্ধা হয়েছে। যাই হোক, উর্বশী-মেনকারা নেই বলে যে স্বর্গের ছবি তোলা যাবে না, এমন কথা কে কবে বলেছে ?
আরেকটু সামনে যেতেই একটা গেস্ট হাউজ পরলো, এখানে থেকেই শাহরুক খান "ম্যায় হু না"-এর শুটিং করেছিলো। দেখে ধন্য হলাম কিন্তু ছবি তুলতে ইচ্ছা হলো না। আরেকটা বাড়ি দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়ে ছবি তুলতে গিয়েছি, হঠাৎ দেখি আমার বাবা ক্যামেরা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো - এক কোনে লেখা রয়েছে সামরিক স্থাপনা, তাই ছবি তোলা নিষেধ। এরপর হাঁটতে হাঁটতে পেয়ে গেলাম, আমার অতি প্রিয় লেখক, মানুষ রাহুল সাংকৃত্যায়নের আবক্ষ এক মূর্তি। "ভক্তি"সহকারে ছবি তুলে নিলাম।
ফেরার সময় প্রায় হয়ে এসেছে, কাজেই হাঁটো এবার উলটা দিকে। কিছু দূর যেতেই চোখে পড়লো চমৎকার একটা দালান, যার একদম উঁচুতে তলোয়ার হাতে একজন মানুষের প্রতিকৃতি বসানো। জিজ্ঞেস করে জানলাম, সদ্য সম্পূর্ণ হওয়া এক অডিটোরিয়াম এ'টা। দেখে পছন্দ হলো, তাই এরও ছবি তুলে নিলাম। উঠার সময় কেবলই চড়াই ছিলো, ভেবেছিলাম নামার সময় তো সবই উৎরাই, ঢালু হবে- কাজেই আরামেই নামবো। কিন্তু নামার সময় দেখলাম, এবারেও বিপদ। ঢালু রাস্তায় পা টিপে টিপে নামতে হয়, যাতে একদম গড়িয়ে না চলে যাই। এভাবে হেঁটে বেশ কয়েকবার রাস্তা ভুল করে, আমরা আবার গোয়েঙ্কা রোডে আমাদের গাড়ির সামনে চলে এলাম - এবার যাওয়ার পালা।
গাড়িতে উঠে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। আরো দু'টা দিন থাকতে পারলে খুব ভালো লাগতো কিন্তু যে কোন সময় দার্জিলিং-এ আবার ধর্মঘট ডাকতে পারে, আর এই আশংকাতেই আমার ভাই আমাদের আসতে না করেছিলো। কয়েকমাস আগেই লাগাতার ধর্মঘটে বেশ কয়েকজন বিদেশি সহ অনেক ট্যুরিস্ট আটকা পড়েছিলো। পরবর্তীতে সরকার বিশেষ ব্যবস্থায় গাড়ী পাঠিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেছিলো - সবমিলিয়ে দার্জিলিং ভালো নেই মোটেই। স্থানীয় লোকের কথায় যা বুঝলাম, এই অস্থিতিশীলতায় দার্জিলিং ট্যুরিস্ট হারাচ্ছে দ্রুত, মানুষ আগের চেয়ে বেশি হারে সিকিমে যাচ্ছে ঘুরতে।
গাড়ি চলতে শুরু করলো - এবার আর পাহাড় নয় নেমে আসবো সমতলে,পাহাড়ের পাদদেশে, মালবাজারে। সবারই কিছুটা চোখ লেগে আসছে ক্রমাগত জার্নির ঝক্কিতে। কোথায় যেন শুনেছিলাম গাড়িতে ড্রাইভারের পাশের সীটে বসে ঘুমাতে নেই - তবু নিজেকে আটকাতে পারছিলাম না। হঠাৎ করেই শুনি গাড়িতে হট্টগোল, গাড়ি থামাও।
কী ব্যাপার ?
ব্যাপার কিছুই না, রাস্তার পাশে এক বাড়িতে কমলার বাগান দেখা গিয়েছে। কমলার বাগান সে বস্তু যে কী অসাধারণ, আমার ভাষায় সে'টা প্রকাশ করার মত জোর আমার নেই। যারা দেখেছেন তাঁরাই হয়তো বুঝবেন। মজার ব্যাপার হল, আমাদের পুরো যাত্রায় আমাদের সঙ্গী ছিলো আমার ছোট এক কাকাতো বোন। খানিকটা নিরাসক্ত বলে ওর সুনাম আছে আমাদের পরিবারে। কাঞ্চনজংঘা দেখে যখন আমরা সবাই বিস্ময়ে হাবুডুবু খাচ্ছি - ও অবাক হয়ে ভাবছিলো এত অবাকের কি আছে ! আর সেই মানুষ রীতিমত লাগামছাড়া উচ্ছ্বাসে ভেসে গেল কমলা বাগান দেখার পর।
আমাদের শোরগোলে বাড়ির মালিকই বের হয়ে আসলেন ঘটনা দেখতে। বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনে খুব আগ্রহ নিয়ে দেখালেন বাগান।আমরা বার বার কমলা কমলা বলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার ভান করলাম, যাতে ভদ্রলোক অন্তত একটা হলেও কমলা আমাদের সাধেন। কীসের কী ! একবারের জন্যও বললেন না, একটা কমলা নিয়ে যান। মনে মনে গালি দিতে দিতে বের হয়ে আসলাম। পরে অবশ্য শুনেছি, ভদ্রলোক জাতিতে নেপালী গোর্খা - আর এরা সাংঘাতিক রকমের বিশ্বস্ত হয়। মৌসুমের শুরুতেই গাছে কমলা ধরা মাত্রই সব কমলা বিক্রি করে দিয়েছে সে, আর কিছু দিনের মধ্যেই মালিক এসে নিয়ে যাবে কমলাগুলি। যেহেতু এই কমলা বিক্রি হয়ে গিয়েছে, তাই এর একটা কমলাও সে ইধার উধার করবে না, মাটিতে পরে নষ্ট হয়ে গেলেও না।
চমৎকার একটা কমলা রঙের মিষ্টি অনুভূতি নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলাম। গাড়ি কিছুদূর চলতেই মংপুতে চলন্ত অবস্থাতেই দেখতে পেলাম মৈত্রেয়ী দেবীর সেই বাড়ি যেখানে কবিগুরু দীর্ঘ দিন ছিলেন। আর পথে তেমন উল্লেখযোগ্য কিছু নেই।
গাড়ি ছুটে চলছে দ্রুত গতিতে। ঐ দূরেই দেখা যাচ্ছে তিস্তা ব্রীজ - আমরা নেমে এসেছি সমতলে , এভাবেই আমাদের তিনদিনের স্বপ্নের পাহাড় ভ্রমন শেষ হয়ে গেল।
(সমাপ্ত)
পূর্বের পর্বসমূহঃ
আমার পাহাড় যাত্রা -০৪ [এক বিষণ্ণ সন্ধ্যায়]
আমার পাহাড় যাত্রা -০৩ [ভাষা হারানোর দিন]
মন্তব্য
গুর্খাল্যান্ড প্যাঁচালে পড়ছিলাম এবার, ভালোই ভোগান্তি গ্যাছে।
লেখা ছবি দুটাই উত্তম
...........................
Every Picture Tells a Story
এবার মানে কতদিন আগে গিয়েছিলেন ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩পর্ব-৪ পর্ব-৫পর্ব-৬
এখানে দেখেন
...........................
Every Picture Tells a Story
আরে ! এইগুলি তো আগেই পড়েছি !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
দারুন লেখা, দারুন ছবি। এত তাড়াতাড়ি শেষ করে দিলেন! বেশ লাগছিল সিরিজটা।
পরীক্ষার জন্য শুভকামনা।
ধন্যবাদ। প্রস্তুতির যা অবস্থা, শুভকামনার জোরে কিছু প্রশ্ন কমন পড়লে ভালো লাগতো
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
- ৭৩এ সিকিম ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে? তবে ক'দিন আগে তিব্বত আর সিকিম নিয়ে যে ইন্দো-চীন বাটোয়ারা হলো সেটা কী ছিলো!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
আমি যতদূর জানি সিকিম '৭৩ সালেই ভারতের অংশ হয়েছে। লোকমুখে শোনা যে সিকিমের মানুষজন আশংকা করছিলো যে, চীন তাদের দখল করে নিবে। তাঁরা চীনের তুলনায় ভারতকে বেশি পছন্দ করেছিলো। তাই '৭৩ এর কোন এক সময় তাঁরা সিকিমের তৎকালীন রাজপ্রাসাদের সামনে বিক্ষোভ করে এবং পরবর্তীতে সিকিমের রাজা ভারতকে তাঁদের যুক্ত হওয়ার মনোবাসনা প্রকাশ করেন।
এ'দিকে চীনের দাবি হচ্ছে, সিকিমের জনগন নয়, ভারতই জোর করে সিকিমকে দখল করেছে। বহুদিন পর্যন্ত সিকিমকে তাই ভারতের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় নি চীন। এ'দিকে ভারতও তিব্বতকে চীনের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয় নি। বহুকাল পরে, ২০০৪ কিংবা ২০০৫ এর দিকে উভয় পক্ষই উভয় পক্ষকে স্বীকৃতি দেয়। এরই ফলশ্রুতিতে ভারত-চীনের নাথুলা সীমান্ত (যেদিকে আমরা গিয়েছিলাম ) খুলে দেওয়া হয়, মোটামুটি মাত্রার বাণিজ্যও এখন চলছে সেই সীমান্ত দিয়ে।
এই সবই আমার পত্রিকা + শোনা কথা থেকে আহরিত জ্ঞান। উইকি করলে মনে হয় পারফেক্ট ডিটেইলস পাওয়া যাবে।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সবজান্তা, দূর্দান্ত লাগলো পুরো সিরিজ...।
লেখা এবং ছবি।
আচ্ছা, দেশের কোনো পত্রিকায় এটা ছাপানো যায় না?
ধৈর্য্য ধরে সব ক'টা লেখার পড়ার জন্য আপনাকে ।
পত্রিকার ব্যাপারে আমার বিন্দুমাত্র আইডিয়া নাই ভাইজান। আর লেখাটা আদৌ "পত্রিকায় পাঠানোর মানের" হইছে কি না, আই ডাউট !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এটা কী করলেন?
এতো সুন্দর সিরিজটা এতো তাড়াতাড়ি শেষ করে দিলেন?
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
ধন্যবাদ।
তাড়াতাড়ি কই ! জীবনে এত বড় সিরিজ লেখা লিখি নাই !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
উফফ !
কমলার গাছ এতো সুন্দর হয় !!
সিলেটে দেখে আসা কমলা গাছের সাথে এর মিল নাই একেবারেই।
একটাও কমলা দিলো না শুনে লোকটার ওপর আমারো রাগ হলো।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
হু। রাগ আমাদেরও হইছিলো পচুর।
মজার ব্যাপার হইলো, ওই বাগান থেকে বের হয়ে গাড়ি অনেকটা এসেছে। এমন সময় দেখি রাস্তায় কমল ভর্তি এক ভ্যান উলটে গিয়েছে, সারা রাস্তায় কমলার ছড়াছড়ি। দৌড়ে দৌড়ে ওরা কমলা আবার গাড়িতে তুলছে। আমি মনে ভাবলাম, "শালা,কমলা না দিলে তোদের এমনই হবে"
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সেইটাই...এইখানে দিনের পর দিন তুষারপাত আর বরফ দেখতে দেখতে বিরক্ত লেগে যাচ্ছে...
তোমার আসলেই কপালডা খারাপ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
গ্যাংটকের পাহাড় থেকে রাতে হোটেলে এসে টিভি ছেড়েছি। ডিসকভারীতে উঁচু উঁচু তুষারে ঘেরা দুর্গম সব পাহাড় দেখাচ্ছে। এখন কিংবা যে কোন সময় আমি চোখ বুজে এই প্রোগ্রাম দেখতে বসে যেতাম। কিন্তু সেই দিন পাহাড়, বরফ আর সৌন্দর্যের এমন ওভারডোজ হয়েছে যে, টিভিতে পাহাড় দেখে বমি চলে এসেছিলো !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ওয়াও! কার প্রশংসা করি, ছবি নাকি বর্ণনা!
---------------------------------
বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
আহা, সত্যিকারের ছবি তো তুলতেই পারলাম না !
খালি দেখতা, যদি লরেটোটা খোলা থাকতো ...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
অনেক কিছু জানলাম। লেখা, ছবি অসাধারণ।
=============================
বেশি জানা ঠিকনা।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
লেখা তো বড়ই প্রানবন্ত হইছে। কমলার ফটু দেইখা যারপর নাই দিল অরেঞ্জ অরেঞ্জ হইয়া গেল। চমৎকার ভ্রমন কাহিনী।
----------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
এতদিন পর কই থিকা উদয় হইলেন আপনে ! আমি তো ভাবলাম ব্লগিং ছাইড়া বিয়া শাদি কইরা কম্পুটারের তার কাটছেন !
পড়ছেন জাইনা প্রীত হইলাম !
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
পড়ে-দেখে বেড়ানোর আনন্দ হলো।
..................................................................................
দেশ সমস্যা অনুসারে
ভিন্ন বিধান হতে পারে
লালন বলে তাই জানিলে
পাপ পুণ্যের নাই বালাই।
... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী
আমার তো বেড়াতে বিস্তর খরচ হল। যদি আপনার বেড়ানোর আনন্দ হয়েই যায়, তাহলে না হয় কিছু টাকাও দিয়ে দিবেন
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এই লেখাটা খুব মন দিয়ে পড়লাম। লেখা ও ছবি দুটোই খুব ভাল হয়েছে। শুধু এই লাইন চোখে লাগলো
"গতবার কালিম্পং-এ দেখেছিলাম অপূর্ব সব তন্বী তরুণীদের, এবার গ্যাংটকেও সিকিম মনিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে দু'-চার পিস স্যাম্পল দেখার সৌভাগ্য হয়েছে, তাতে গোডাউন সম্পর্কে অগাধ শ্রদ্ধা হয়েছে। "
সচেতনা, মন দিয়ে লেখা পড়া এবং মন্তব্য করা - দু'য়ের জন্যই আন্তরিক ধন্যবাদ।
যে লাইনের কথা উল্লেখ করেছেন সে'টা নিছকই রসিকতা করে লেখা, কোন ক্রমেই নারীজাতির প্রতি তাচ্ছিল্য/অবজ্ঞা প্রসূত নয়। তারপরও আপনি মন্তব্যে আঘাত পেয়ে থাকলে দুঃখিত।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
০
তোর কালকে পরীক্ষা নাই ??
১
লেখা ছবি দুইই ভাল হয়েছে । মৈত্রেয়ী দেবীর সেই বাড়িটার ছবি নাই ?
২
আহা !
চল, পরীক্ষা দিয়ে গরম কালে আবার যাই ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
নেপালী সুন্দর মেয়েগুলি অন্যরকম সুন্দর ... যাই দাঁত মেজে রাখি, চান্স পেলেই দরাজ দংশন ...।
গোটা সিরিজেই ৫।
হাঁটুপানির জলদস্যু
বাহ! দারুন লাগল লেখা, ছবি গুলোও খুব সুন্দর
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
এই ভাবে ফাকতালে লেখা দিলে হবে না। আরো বেশি বেশি ভিসুয়াল ডেস্ক্রিপশন চাই। সাথে পাহাড়ি ছবি। পাহাড়ি মেয়েদেরকে 'পিস' এবং 'স্যাম্পল' হিসেবে বণ্রনা করার জন্য নিন্দা জানাই।
লরেটো কলেজের নাম বদলেছে জানতাম না। মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়িটি দেখতে চাই।
আমি যদি পাঠক হতাম, আর কোন লেখার সাইজ যদি এর চেয়ে বড় হতো,তাহলে আমি নিজেই হয়তো পড়তাম না
ছবি মোটামুটি এই তুলেছি - বাদবাকি যা আছে, তা নিতান্তই ফ্যামিলি ফটো এবং এই শটগুলিরই ডুপ্লিকেট কপি।
আমিও জানতাম না লরেটো নাম বদলেছে, আমার বোন দেড় বছর আগে ঘুরে গিয়েছিলো, তখনও লরেটোই ছিলো। মৈত্রেয়ী দেবীর বাড়িটা থেমে দেখতে পারি নি, কারণ বেশ দেরি হয়ে গিয়েছিলো আর ড্রাইভার ব্যাটা চ্রম খ্রাপ ছিলো, থামায়নি। তাই দৌড়ের উপর যতটুকু দেখা ।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
উহু। আমি বোঝাতে চেয়েছি টুকিটাকি ব্যক্তিগত ডিলেইসের পাশাপাশি পাহাড়ি বণ্রনা একটু বেশি বেশি তুলে ধরতে। এত কমে চলছে না।
হুমম...
দিতে পারতাম, কিন্তু খব সতর্কভাবে চেয়েছি এ'টা যেন নিছকই ভ্রমনকাহিনী না হয়ে অনেকটা দিনলিপির আদলে হয়, তাই অতিরিক্ত বর্ণনা সযত্নে পরিহার করেছি। আর লেখার কলেবরের চিন্তা তো আছেই...
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আরেকটি বিষয়ঃ সমরেশের বিভিন্ন বইয়ে খাবার হিসেবে 'ছাতু'র কথা বলা হয়েছে। খাওয়া হয়েছে কি? শুনেছি পাহাড়ি এলাকাতে এ খাওয়ার চল
বেশি।
ছাতু খাওয়ার জন্য পাহাড়ে যেতে হবে নাকি ছাতু বাংলাদেশে, আমার গ্রামের বাড়িতেই পাওয়া যায়, ব্যাপক সুস্বাদু।
তবে পাহাড়ি এলাকার কম্পোজিশন আলাদা। পাহাড়ি বিশেষত তিব্বতের ওইদিকের অঞ্চলের অন্যতম প্রধান খাদ্য ছাতু ( স্থানীয় ভাষায় নাম, সত্তু) , সেই সাথে চা। তবে এই চা-ও সেই চা না, মাখন দিয়ে কিভাবে যেন বানায় - বেশ বিদঘুঁটে বর্ণনা।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আমি পাহাড়ি খাবার 'ছাতু'র কথাই বলেছি। কোন গো- খাদ্য নয়।
ওহ, তুমি জিজ্ঞেস করলা তো, তাই ভাবলাম গোখাদ্যর কথাই জিজ্ঞেস করছো
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এহ্হে রে ! দেশের পোলাপানদের হয়েছেটা কি ?
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
কমলাগুলো কি জীবন্ত!
জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা
কাকতালীয় ব্যাপার! কমলা খেতে খেতে লেখাটা পড়ছিলাম। মুখে আর মনে রয়ে গেল মিষ্টি কমলার স্বাদ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
নতুন মন্তব্য করুন