০১
মৃত্যু নিশ্চিত জেনে দুর্ঘটনায় পড়া একজন ড্রাইভার যখন বাস নিয়ে খাদের দিকে এগিয়ে যায়, সে তখন কী ভাবে ? কিংবা খাদের দিকে পড়তে থাকা অবস্থায় তার কী মনে হয় ? সময় কি তার কাছে মন্থর হয়ে যায় ? জীবনের সঞ্চয় সব স্মৃতিগুলি কি ভেসে উঠতে থাকে ?
এসব প্রশ্ন মাঝে মাঝেই মাথায় আসে। কিংবা মনে হয় উঁচু কোন ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে চাওয়া একজন মানুষের আসলে কী মনে হয় ? ভবনের প্রতিটি তলা যখন সে শূন্যে ভেসে পার করতে থাকে, খোলা জানালার ভিতর দিয়ে দেখা যাওয়া মানুষ, মানুষের জীবন কি তাকে আকৃষ্ট করে ? সে কি বাঁচতে চায় ? অথবা শুধুই স্মিত হাসি থাকে ঠোঁটের কোণে, খেলার অসারতা উপলব্ধি করে হঠাৎ সব গুটিকে বাক্সে ভরে বোর্ড গুছিয়ে চলে যাওয়া বালকের আনন্দ ? বস্তুত এইসব রহস্য কোনদিনই ভেদ হয় না, এইসব প্রশ্নের উত্তর আর কোনদিনই জানা হয়ে উঠে না।
০২
সারাদিনের ক্লান্তি নিয়ে যখন বিছানায় ফিরে যাই, তখন হঠাৎ উপলব্ধি করি, সত্যিই সময় কতোটা মন্থর! বায়োস্কোপের সেই বাক্সের মতো জীবনের সবকিছুকেই কিংবা জীবনকেই আসলে ফ্রেম বাই ফ্রেম দেখা যায়। দেখতে পাই আদি হতে অন্ত পর্যন্ত, দেখতে পাই মানুষের প্রেম, অপ্রেম, কাম, ব্যর্থতা, অভিনয়। বেঁচে থাকা আসলে এক অলীক স্বপ্ন, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারি না, শুধুই মনে হয় ঘুমের মধ্যে দেখা কোন স্বপ্নের কথা। অনিশ্চয়তার স্রোতে ভাসতে ভাসতে অনির্দিষ্ট কোন দ্বীপের স্বপ্ন দেখাই সম্ভবত বেঁচে থাকা।
আমি বেঁচে আছি না মরে গেছি কিংবা আদৌ কোনদিন বেঁচে ছিলাম কিনা অথবা সত্যিই কি বেঁচে থাকা যায় কিনা, এই সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ি, নিশ্চিন্তে।
মন্তব্য
ওয়ারফেজের এই গান তো শুনি নাই ! কিংবা শুনলেও মনে নাই হয়তো, হায় ওয়ারফেজ !
অলমিতি বিস্তারেণ
চমৎকার একটা গান। শুধু এইটুকুই বলবোঃ ‘না শুনলে মিস করবেন। আবার শুনলেও মিস করবেন অনেক বেশী বেশী’।
মৃত্যু এলিজি – মিজান
কথা ও সুরঃ হাসান ইমতিয়াজ সুমন
সঙ্গীতঃ ওয়ারফেইজ
অ্যালবামঃ আলো – ওয়ারফেইজ
গানটা দারুণ
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
আমার মনে হয়, মৃত্যুর প্রকৃয়াটা শুরু হয়ে গেলেই সবাই বাঁচতে চায়। আরেকটা সুযোগ চায়। অন্তত আরেকবার ভেবে দেখতে চায়!
তরে বিষাদগ্রস্ত মনে হইল!
(অট. তুই কিন্তু আর ব্লগার নাই। ফসিল হয়ে গেছিস!)
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ফসিল - গা ঝাড়া দিয়ে উঠে একের পর এক আর্য মার্কা পোস্ট দিতে থাকেন !
লেখা ভাল লাগল।
facebook
অণু ভাই, আর্য মার্ক পোস্ট মানে কী ?
আর ব্লগিং করে কী হবে, এরচে আসেন মানস সরোবরের প্ল্যানটা করি
অলমিতি বিস্তারেণ
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
তোর আবার মনে হয় ক্যামনে ? এর আগে কি মরছস তুই ? আর তুই কি বেগম খালেদা জিয়ারে ভাষণ লেইখা দেস যে প্রকৃয়া লেখসোস ?
নাহ, আমি বিষাদ-ফিষাদ গ্রস্ত না। একটু ব্যস্ত, একটু ক্লান্ত- এরচে বেশি কিছু না
অলমিতি বিস্তারেণ
আরে ব্যাটা, তুইও তো কতকিছু করস্নাই কিন্তু তোর মনে হয় সেইগুলা ভালো হবে! বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না যাই, মোদ্দা কথা হচ্ছে, পুঁথিগত বিদ্যা এবং কল্পনা শক্তির একটা দাম আছে না!
কোন প্রক্রিয়ায় যে প্রক্রিয়াটা প্রকৃয়া হয়ে গেল টের পাইলাম্না
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হ
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
নতুন জানিবে কিছু হয়তোবা ঘুমের ঘোরে সে,
সব ভালবাসা যার বোঝা হল,
দেখুক সে মৃত্যু ভালবেসে।
(জীবনানন্দ দাস)
অলমিতি বিস্তারেণ
আমিও মন্তব্যে এই কবিতাটাই লিখতাম।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
২০১০,১১ দুই বছরেই একটা করে লেখা দিয়েছ। এইটা কি এই বছরের জন্য?
ক্রিসেন্ট লেকের সাথে যে রাস্তাটা, একদিন গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম। সামনে অনেকক্ষণ সিগন্যাল সবুজ ছিল, তাই আমিও স্পিড বাড়াচ্ছিলাম শেষ মুহূর্তে হলেও যেন পার হয়ে যেতে পারি। আমার সামনে আরেকটা গাড়ি ছিল। প্রায় ৫০গজ মতন দূরে। ঐ গাড়ি তখন পার হবে এমন সময় হলুদ বাতি জ্বলায় সে ব্রেক করে। আমিও ব্রেকে পা চাপি। কিন্তু ঘটনাক্রমে, রাস্তায় কাজ হচ্ছিল বলে ওখানে বালু ফেলে রাখা ছিল পাশে। সেই বালু কিছু অংশ উড়ে এসে রাস্তায় পড়েছে। আমি ব্রেক করলেও দেখতে পাচ্ছিলাম স্কিড করে সোজা সামনের গাড়িকে মারতে যাচ্ছি। আমার হাতে প্রায় ৪-৫ সেকেন্ড সময় ছিল, কিন্তু কোন এক আশ্চর্য কারণে আমি কিছুই করিনি পুরো সময়টাতেই স্টিয়ারিং ধরে দেখেছি কিভাবে যেয়ে সামনের গাড়িটাকে মারলাম। পরে মাঝে মাঝে চিন্তা করলে অবাক লাগে, কারণ আমি ডানে/বায়ে সরলেই সামনের গাড়িকে আঘাত করা এভয়েড করা যেত। যাই হোক, এর সাথে মৃত্যুর কোন তুলনা হয়না, কিন্তু তারপরেও আমার কাছে মনে হয় এই সময়টা অনেক অনেক ক্ষুদ্র। এতই ক্ষুদ্র যে এই সময়ে আসলে আমাদের কিছুই করার থাকেনা।
আপনি তো গল্পটা শেষ করলেন না ! তারপর কী হলো, কীভাবে বাঁচলেন ?
আর সময়টা আসলে ক্ষুদ্র না বড় সেইটা আমারও প্রশ্ন। অ্যাক্সিডেন্টের কথা যদি বাদও দেই, আত্মহত্যার ব্যাপারটা আসলে কেমন ? কিছু কিছু বইয়ে পড়ছিলাম, মিক্সড একটা অভিজ্ঞতার কথা পাইছি, একেকজনের কাছে একেকরকম।
অলমিতি বিস্তারেণ
বাঁচিনাই আসলে, মেরে দিয়েছিলাম সামনের গাড়িতে। পিছের বাম্পার ঢুকে গেছিলো। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলাম। তারা আমার বুয়েটের আইডি রেখে দিলো আর ফোন নাম্বার। একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট আসলো, সেও বলল আমরা নিজেরা মিটমাট করে নিলে সে হস্তক্ষেপ করবেনা। এর পরদিন, তারা ফোন করে জানালো মহিলার স্বামীও বুয়েটের তাই আমারে এই যাত্রায় ছেড়ে দিলো। আইডিও ফেরত নিয়ে এলাম। গাড়িতে মহিলা আর তার তরুণী মেয়ে এবং কিশোর ছেলে ছিলো।
জ্যোতিদা, হঠাৎ ভাব উঠছে নাকি মাথায়, খাইচস কীরে?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
আমি তো আর ।"মারিকানাডা" থাকি না যে চাইলেই যা ইচ্ছা তাই খাইতে পারি। তুই সাবধানে থাক, ছাইপাশ কম খা।
অলমিতি বিস্তারেণ
জ্বী ভাই, ঈদ মোবারক
অলমিতি বিস্তারেণ
এই জিনিসটা আমি মাঝে মাঝেই ভাবি। 'জন্মিলে মরিতে হইবে' - তাই যদি হয়, তবে জন্মানোর দরকার ছিল কি?এত এত স্মৃতি, এত এত সময়ের ভেতর দিয়ে যাওয়া পুরো জীবনটাই মনে হয় অর্থহীন।
জীবন অর্থহীন কিনা সেই প্রশ্নের তো কোন সোজা সাপ্টা উত্তর নাই। ব্যাপারটা সম্ভবত নির্ভর করছে আপনি জীবনকে কীভাবে দেখছেন, তার উপর।
অলমিতি বিস্তারেণ
_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩
চিন্তায় পড়লেন নাকি !!
অলমিতি বিস্তারেণ
'এক এক সময় মনে হয়, বেঁচে থেকে আর লাভ নেই..
এক এক সময় মনে হয়, পৃথিবীটাকে দেখে যাবো শেষ পর্যন্ত!
এক এক সময় ইচ্ছে হয় সব কিছু ভেঙেচুরে লণ্ডভণ্ড করে ফেলি।
আবার কোনো কোনো বিরল মুহূর্তে ইচ্ছে হয়, কিছু একটা তৈরি করে গেলে মন্দ হয় না।
হঠাৎ কখনো দেখতে পাই সহস্র চোখ মেলে তাকিয়ে আছে সুন্দর।
কেউ যেন ডেকে বলছে-- এসো এসো…
কতক্ষণ ধরে বসে আমি তোমার জন্য
মনে পড়ে বন্ধুদের মুখ, যারা শত্রুদের, যারাও হয়তো কখনো আবার বন্ধু হবে।
সন্ধের আকাশ কী অকপট, বাতাসে কোনো মিথ্যে নেই।
তখন খুব আস্তে, ফিসফিস করে, প্রায় নিজেরই কানে-কানে বলি---
একটা মানুষ জন্ম পাওয়া গেল, নেহাৎ অ-জটিল কাটলো না!'
#নিজের কানে কানে : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
লেখা ভাল লেগেছে।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ধন্যবাদ
অলমিতি বিস্তারেণ
লেখা দারুণ লাগলো।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ
অলমিতি বিস্তারেণ
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আরে কমরেড, আপনি এতোদিন পর 'কাঁহাসে' উদয় হইলেন ? আপনিও তো মেলা দিন লেখেন টেখেন না... একটা কিছু লেখেন, পড়ি !
অলমিতি বিস্তারেণ
অনেকদিন পর লিখলেন। লেখা ভালো লাগসে। সেদিনই পড়সিলাম। মন্তব্য করা হয় নাই।
হু, আসলেই বেশ অনেকদিন পরে লিখলাম। আগে টুকিটাকি হাবিজাবি যাও লিখতাম, সেই তেলও এখন শেষ। বহু কষ্টে লিখসি এইটা। পড়া আর মন্তব্য- দুইটার জন্যই ধন্যবাদ
অলমিতি বিস্তারেণ
এই বছরের কোটা পূরণের জন্য অভিনন্দন
লেখাটা ভাল্লাগসে।
হা হা.... ধন্যবাদ ধন্যবাদ
এইটা আসলে ওই অর্থে তেমন 'লেখা' না- ঘুমাতে যাওয়ার সময় রোজই মনে হতো, তাই একদিন লিখে ফেললাম আর কী ! অনেকটা স্বপ্নে পাওয়াও বলতে পারেন, ঘুমের আগেই স্বপ্নে পাওয়া
অলমিতি বিস্তারেণ
নতুন মন্তব্য করুন