নিরাপদে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের কিছু নিয়ম কানুন

সবজান্তা এর ছবি
লিখেছেন সবজান্তা (তারিখ: মঙ্গল, ২৫/১২/২০১২ - ৯:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিচারপতি নিজামুল হক এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের কথোপকথন এবং মেইল হ্যাক হওয়াতে এটা অত্যন্ত পরিষ্কার যে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার প্রতি আরো মনোযোগী হতে হবে। যদিও বিচারপতির বক্তব্য এবং ইমেইল হ্যাক করার জন্য সম্ভবত খুব উঁচু মানের টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়নি। বরং তাদের কোনো একজনের কম্পিউটারে ফিজিক্যাল অ্যাকসেস ছিলো,এমন কেউই ঘটনাটা ঘটিয়েছে। কিন্তু ঘটনা যেভাবেই ঘটুক না কেন, সাবধান হওয়ার এখনই সময়। আমরা যারা কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করি, খুব স্বাভাবিকভাবেই এর নিরাপত্তার ব্যাপারে আমাদের খুব ভালো ধারণা নেই, এবং থাকলেও অনেকসময় তা মেনে চলি না। আমি নিজে কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশারদ না। মোটামুটি দীর্ঘদিন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা,আগ্রহ এবং কর্মসূত্রে কিছুটা জ্ঞান লাভ হয়েছে। তার সুবাদেই এই ব্লগটাতে আমি নিরাপত্তার কিছু সাধারণ ব্যাপার নিয়ে লিখার চেষ্টা করবো।

এর পুরোটাই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে। কিছু বিষয় হয়তো বাদ যেয়ে থাকতে পারে- ভুলে যাওয়ার কারণে কিংবা আমার না জানার কারণে। মন্তব্যের ঘরে সে বিষয়গুলি যোগ করে দিতে পারেন, আলোচনা সাপেক্ষে পোস্ট আপডেট করে দিবো। আমার লেখার উদ্দেশ্য যাতে আইসিএসএফ কর্মীসহ আরো যারা এই বিচারকাজে সহায়তা করছেন কিংবা জড়িত আছে, তারা যেন ঝুঁকিগুলি সম্পর্কে ভালো মতো জানতে পারেন। তবে এগুলি যে শুধু আইসিএসএফের কর্মীদেরই দরকার, এমনটা নয়। বরং নিজের তথ্যের নিরাপত্তা চান এমন যে কেউই পড়তে পারেন। এই ব্লগ লিখবার সময় আমি ধরে নিয়েছি আমার উদ্দেশিত পাঠক হচ্ছেন সেইসব মানুষেরা যাদের ইন্টারনেট এবং কম্পিটার নিরাপত্তা বিষয়ক জানাশোনা কম। একারণে কিছু অ্যাডভান্সড বিষয় এড়িয়ে গিয়েছি এবং মোটাদাগে ব্যাখ্যা করেছি।

হয়তো কেউ অবাক হতে পারেন, কিন্তু কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট নিরাপত্তার প্রথম এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে- কাণ্ডজ্ঞান বা ইংরেজিতে যাকে বলে কমনসেন্স। বেশ কিছুদিন আগে বিশ্ববিখ্যাত নেটওয়ার্ক যন্ত্রাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠাণ জুনিপার টেকনোলজিসের একজন প্রকৌশলি এক ব্লগে নিরাপত্তার ব্যাপারে কমনসেন্সের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেছিলেন। ঘটনাটা এমন, কোনো এক কনফারেন্স শেষে এয়ারপোর্টে ভদ্রলোক বসে আছেন। তার একটু দূরেই বসে আছেন আরেক ভদ্রলোক, যিনি প্রথম ব্যক্তির কোম্পানির প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিতে চাকরি করেন। দ্বিতীয় সেই ব্যক্তি এয়ারপোর্টে বসে এতো জোরে জোরে ফোনে কথা বলছিলেন এক গোপন বিজনেস ডিলের ব্যাপারে, যেটা না চাইতেও প্রথম ভদ্রলোকের কানে এসে পড়ছিলো। শক্ত পাসওয়ার্ড, এনক্রিপশন ইত্যাদি কঠিন কাজ করে কোনো ফায়দা নেই, যদি আপনি সারা মহল্লাকে এমনভাবে শুনিয়ে বেড়ান গোপন তথ্য। এমন আরো উদাহরণ হতে পারে, অচেনা লোকের সামনে কিংবা অচেনা জায়গায় ল্যাপটপের স্ক্রিন হা করে খুলে গুরত্বপূর্ণ মেইল পড়া কিংবা কাজ করা। নিরাপত্তার প্রথম শর্তই হচ্ছে, নিজের কাণ্ডজ্ঞান ষোলোআনা ঠিক রাখতে হবে।

কাণ্ডজ্ঞান ঠিক করার পর এবার আসা যাক কারিগরি ব্যাপার স্যাপারে।

কম্পিউটার বিষয়ক সিকিউরিটিকে আমরা মোটাদাগে দুই ভাগ করতে পারি: কম্পিউটার সিকিউরিটি এবং ইন্টারনেট সিকিউরিটি। শুরু করছি কম্পিউটার সিকিউরিটি দিয়ে:

কম্পিউটার সিকিউরিটি

কম্পিউটার সিকিউরিটির শুরুতে বলে নেওয়া ভালো, অধিকাংশ অংশই আসলে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমকে সামনে রেখে লিখা। যারা লিনাক্স ব্যবহার করেন, তারা বেশ কিছু ঝামেলা থেকে হয়তো বেঁচে গেছেন এমনিতেই। কিন্তু যেহেতু সিংহভাগ মানুষ এখনো উইন্ডোজের ব্যবহারকারি, তাই উইন্ডোজকেই গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়েছে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, টার্মিনোলজি। টেকনিক্যালি সঠিক লিখতে গেলে ভাইরাস, স্পাইওয়্যার, অ্যাডওয়্যার, ম্যালওয়্যার ইত্যাদি নাম আলাদা করে লিখতে হবে। আমার ধারনা এতে অনেক পাঠকই বিভ্রান্ত হবেন। আমি তাই মোটামুটি ভাইরাস নাম দিয়েই সব চালিয়ে দিয়েছি, যদিও কার্যত সকল খারাপ জিনিসের নামই ভাইরাস না!

  • লগিন পাসওয়ার্ড: অবশ্যই আপনার কম্পিউটারে লগিনের জন্য পাসওয়ার্ড রাখবেন। অনেকেই অপারেটিং সিস্টেম ইন্সটল করার সময় (মূলত উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম) লগিন পাসওয়ার্ডের ফিল্ড ফাঁকা রেখে দেন। এর ফলে যে কেউই সে কম্পিউটারে ঢুকে যেতে পারে। কেমন পাসওয়ার্ড দেওয়া উচিত, সেই বিষয়ে আলোচনা এই ব্লগের শেষ অংশে করছি। আপাতত পড়তে থাকুন। আরেকটা কথা এখানেই বলে যাই, লিনাক্স ব্যবহারকারীরা অবশ্যই Root ইউজারনেম ব্যবহার করে কাজ করবেন না। অন্যকোন ইউজারনেম তৈরি করে নিন, প্রয়োজন মতো Sudo কিংবা Su ব্যবহার করুন। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস অবশ্যই করণীয়- যখনই আপনি কম্পিউটার চালু রেখে এর সামনে থেকে উঠে যাবেন, লিনাক্স হোক বা উইন্ডোজ, স্ক্রিন অবশ্যই লক করে যাবেন।

  • অ্যান্টিভাইরাস: কম্পিউটারে একটা অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ইন্সটলড থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এরচেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেই সফটওয়্যারের ভাইরাস ডেফিনিশন নিয়মিত আপডেট করা। শব্দগুলি অনভ্যস্ত কানে খটোমটো লাগতে পারে,তাদের জন্য একটু ব্যাখ্যা করি।

    কম্পিউটার ভাইরাস জিনিসটা প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে। ধরুন আজ থেকে এক বছর আগে একটা অ্যান্টিভাইরাস আপনি ইন্সটল করলেন, যেটা ওই সময় পৃথিবীতে যতো ভাইরাস আছে, সব ধরতে পারতো (যদিও বাস্তবে এমনটা হওয়া প্রায় অসম্ভব)। সেই অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম কি এখনও একইভাবে কাজ করবে বলে আপনার মনে হয় ? করবে না, কারণ এই এক বছরে অসংখ্য এমন ভাইরাস লেখা হয়েছে, যারা সেই অ্যান্টিভাইরাসের ডিটেকশন পদ্ধতিকে ধোঁকা দিতে পারে। এই নিত্যনতুন ভাইরাসগুলিকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানিগুলি প্রতিনিয়ত তাদের ভাইরাস ডেফিনিশন আপডেট করে, অর্থাৎ কী কী লক্ষণ থাকলে একটা প্রোগ্রামকে ভাইরাস বলা যায়, সেটা তারা আপডেট করতে থাকে। একারণেই আপনার অ্যান্টিভাইরাসের ভাইরাস ডেফিনিশন নিয়মিত আপডেট করা দরকার, যাতে সেটি নিত্য নতুন বের হওয়া ভাইরাসগুলিকে সহজেই চিনতে পারে।

    অ্যান্টিভাইরাস আপডেট (যদিও শব্দটা টেকনিক্যালি সঠিক না, কিন্তু বার বার ভাইরাস ডেফিনিশন দেখতে খুব খটোমটো লাগছে) করার প্রধান উপায় হচ্ছে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া। অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার হচ্ছে, আপনার কষ্ট কমানোর জন্য এই দায়িত্ব অ্যান্টিভাইরাস নিজেই নিয়েছে। যখনই নতুন আপডেট আসবে, অ্যান্টিভাইরাস সেটা ডাউনলোড এবং ইন্সটল করে নিবে, আপনাকে আর এ ব্যাপারে মাথা ঘামাতে হবে না। যে ব্যাপারটা শুধু লক্ষ্য রাখতে হবে, অ্যান্টিভাইরাস নিয়মিত আপডেট হচ্ছে কিনা। আপনি যদি দীর্ঘদিন ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকেন, তাহলে অন্তত অ্যান্টিভাইরাস আপডেটের জন্য ইন্টারনেটে কানেক্ট করুন। আর যদি আপনি নিয়মিত ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকার পরও দেখতে পান যে শেষ আপডেটের পর কমপক্ষে তিন সপ্তাহ পার হয়ে গিয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে যে সম্ভবত একটা ঝামেলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে সবার আগে অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামের সেটিংস দেখুন, আপডেট কোনোভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে কিনা। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায়, কিছু কিছু ভাইরাস কৌশলে কম্পিউটারে থাকা অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামের আপডেট সেটিংস বন্ধ করে দেয় কিংবা একবারেই নষ্ট করে ফেলে- যাতে অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামটি ইন্টারনেট থেকে আপডেট নিয়ে সেই ভাইরাসকে ধরতে না পারে। এমন ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, কিছুতেই অটো আপডেট অপশনটা অন করা যায় না, কিংবা আপডেট হয় না। সে ক্ষেত্রে প্রোগ্রাম আনইন্সটল করে আবার ইন্সটল করে দেখুন কিংবা একটু অ্যাডভান্সড ইউজার (যেমন গুগল!) কারো সাহায্য নিন।

    অ্যান্টিভাইরাস সংক্রান্ত আরেকটা সাধারণ প্রশ্ন: 'কী অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করবো?' - এই প্রশ্নের উত্তর আসলে খুব নির্দিষ্টভাবে দেওয়া সম্ভব না। টাকা দিয়ে কেনা ক্যাসপারস্কি যে ভাইরাস ধরতে পারেনি, বিনা পয়সার অ্যাভিরা অ্যান্টিভাইরাস তা ধরে ফেলেছে- এটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা। তবে কিছু বেসিক ব্যাপারে বলে রাখা ভালো- প্রথমত চেষ্টা করবেন অবশ্যই ক্র্যাকড অ্যান্টিভাইরাস অর্থাৎ যে অ্যান্টিভাইরাস টাকা দিয়ে কিনতে হয়, সেগুলিকে কোনো প্যাচ কিংবা সিরিয়াল দিয়ে চুরি করে ব্যবহার না করতে। সফটওয়্যার পাইরেসি সংক্রান্ত নৈতিকতার অংশটুকু বাদ দিলেও এর সমস্যা অনেক। যেহেতু আপনি নিয়মিত আপডেট করবেন, অ্যান্টিভাইরাস কোম্পানি আপনার কম্পিউটারের অ্যান্টিভাইরাসটি কি চুরি করে ব্যবহার করা কি না তা ধরে ফেলতে পারে সহজেই। কিছুদিন হয়তো আরামে ব্যবহার করা যাবে- কিন্তু তারপর থেকে অশান্তিতে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। এই চুরি টিকিয়ে রাখার জন্য নানা ধরনের সিরিয়াল, ক্র্যাক ইত্যাদির খোঁজে থাকাটা খুব ক্লান্তিকর হয়ে যাবে। এবং অদরকারিও। এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ ফ্রী বেশ কিছু অ্যান্টিভাইরাস আছে, যাদের পারফরম্যান্স চমৎকার। Avira, Avast, AVG, Microsoft Security Essentials ইত্যাদির যথেষ্ট সুনাম আছে ফ্রী অ্যান্টিভাইরাস হিসেবে। ইন্টারনেটে খুঁজলে এমন আরো কিছু নাম পাওয়া যাবে। আমি আপাতত এখানে একটা লিঙ্ক দিচ্ছি। যারা দেশের বাইরে থাকেন, তাদের জন্যে তো বটেই- দেশের ভিতরে থাকেন, তারাও চাইলে মোটামুটি সামর্থ্যের মধ্যেই অ্যান্টিভাইরাস কিনতে পারেন। দেশে নরটন, ক্যাসপারস্কি, বিট ডিফেন্ডার ইত্যাদি অ্যান্টিভাইরাস মোটামুটি নাগালের মধ্যে থাকা দামেই পাওয়া যায়। আমি দেশে থাকতে অফিসের ল্যাপটপে ক্যাসপারস্কি ব্যবহার করতাম। পারফরম্যান্স চমৎকার ছিলো।

    অ্যান্টিভাইরাস অংশের ইতি টানার আগে একটা কথা বলে যাওয়া দরকার। ভুলেও ভাববেন না যে একের অধিক অ্যান্টিভাইরাস কম্পিউটারকে বেশি সুরক্ষা দেয়। বরং সুরক্ষা বাড়ে কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ, কিন্তু পারফরম্যান্স মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়- কম্পিউটার ভীষণ ধীরগতির হয়ে যায়। তাই ঠিকঠাকভাবে যেকোনো একটা অ্যান্টিভাইরাসই ব্যবহার করুন, অনেক ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবেন।

  • পেন/ইউএসবি ড্রাইভ: উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে একটা সময় ভাইরাস ছড়ানোর প্রধানতম কারণ ছিলো ইনফেকটেড পেনড্রাইভ। এর হাত থেকে বাঁচার জন্য অপারেটিং সিস্টেমগুলি কিছু পরিবর্তন আনা সহ অ্যান্টিভাইরাসগুলিও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়াতে প্রকোপ অনেকটা কম। তবু বলে রাখা ভালো, যে কোন পেনড্রাইভই ওপেন করার আগে অবশ্যই অ্যান্টিভাইরাস দিয়ে স্ক্যান করে নিবেন। সাধারণত উইন্ডোজের মাই কম্পিউটারে পেন ড্রাইভের আইকন সিলেক্ট করে রাইট ক্লিক করলেই স্ক্যানের অপশন থাকার কথা। প্রাসঙ্গিক আরেকটা বিষয়ের উল্লেখ করা উচিত এখানে- অটোরান ডিজেবল করা। অটোরান হচ্ছে উইন্ডোজের একটা ফিচার যার কারণে কোন ফাইল আপনা আপনিই চলতে পারে, আপনার চালানো (মানে ডাবল ক্লিক) ছাড়াই। প্রচুর ভাইরাস (মূলত ম্যালওয়্যার, তবে টার্মিনোলজির জটিলতা এই লেখাতে আনতে চাচ্ছি না) ছড়ায় আসলে এই অটোরান ফিচারের মাধ্যমে। মাইক্রোসফটের এক রিসার্চে তারা দাবি করেছিলো প্রায় ৫০% ম্যালওয়্যার ছড়ানোর মাধ্যম এই অটোরান। অটোরান ডিজেইবল করে রাখার খুব কার্যকরী, ছোট্ট টুল আছে। এমন একটা হচ্ছে ডিজেইবল অটোরান। গুগলে খোঁজ করলে আরো কিছু পেতে পারেন এমন।

  • অপারেটিং সিস্টেম আপডেট: কম্পিউটার বিশেষ করে উইন্ডোজ ব্যবহারকারীরা আপডেট ইন্সটলে বিশেষ আগ্রহী হন না। এর একটা অন্যতম বড় কারণ আমাদের মধ্যে অনেকেই, বিশেষত দেশে যারা আছেন, চোরাই উইন্ডোজ ব্যবহার করেন। পাইরেটেড উইন্ডোজের সোর্স যদি খুব ভালো না হয়, সেক্ষেত্রে পাইরেসি ধরা পরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এই আপডেটের মাধ্যমে। যাদের ওরিজিনাল উইন্ডোজ ব্যবহার করেন কিংবা পাইরেটেড কপিই ভালো সোর্স থেকে নামান, তাদের অনেকে আবার আলস্যে কিংবা অযথা ঝামেলা মনে করে আপডেট ইন্সটল করেন না। কিছু আপডেট হয়তো ক্রিটিক্যাল না হলেও, অনেক আপডেটই যা নানা রকমের সিকিউরিটি হোল কিংবা বাগের ফিক্স- অর্থাৎ উইন্ডোজের কোন দুর্বলতা পাওয়া গেলেই মাইক্রোসফটের ডেভেলপাররা জরুরী ভিত্তিতে এই আপডেটগুলি রিলিজ করেন, তাই এগুলিকে অগ্রাহ্য করে সম্পূর্ণ সিকিউরিটি পাওয়া সম্ভব না। যদি আপনার উইন্ডোজ ওরিজিনাল হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপডেট ইন্সটল করুন। পাইরেটেড উইন্ডোজের ব্যবহারকারীদের শুধু এটুকুই বলি, যদি চোখকান খোলা রাখেন, তবে উৎকৃষ্টমানের পাইরেটেড কপিও অবশ্যই পাবেন, যাতে নিশ্চিন্তে আপডেট করা যায়।

  • স্টার্টআপ প্রোগ্রাম: এই অংশটা একটু অগ্রসর ব্যবহারকারির জন্য। উইন্ডোজের Run এ যেয়ে msconfig লিখ এন্টার চাপলে যেই বক্স আসে, তার স্টার্টআপ ট্যাবে ক্লিক করলে একটি লিস্ট দেখতে পাবেন। উইন্ডোজ চালু হওয়ার সাথে সাথেই এই লিস্টের সফটওয়্যারগুলি আপনা আপনি চালু হয়ে যায়। আপনি একটু ভালো মতো চিন্তা করলে দেখবেন যে এই লিস্টে থাকা অধিকাংশ সফটওয়্যারেরই আপনা আপনা চালু হওয়ার দরকার নেই- আপনি বরং আপনার দরকার মতো তাদের স্টার্টমেনু থেকে ছেড়ে নিতে পারেন। আমার ব্যক্তিগত কম্পিউটারে অ্যান্টিভাইরাস,অভ্র আর ডাউনলোড ম্যানেজার ছাড়া আর কোনো কিছুই স্টার্টআপে নেই। বাকি যেকোন সফটওয়্যার যখন দরকার হয়, স্টার্টমেন্যু থেকে চালাই। এতে অচেনা প্রোগ্রাম চালু হওয়ার বিপদ তো কমেই, সেইসাথে কম্পিউটারও বেশ দ্রুতগতির হয়। একই কথা সার্ভিসেস এর ক্ষেত্রেও খাটে। তবে আবারও বলি, এই অংশটা একটু অ্যাডভান্সড এবং সাবজেকটিভ, তাই কোন বাঁধাধরা নিয়ম নেই। স্বচ্ছন্দ না হলে হাত না দেওয়াই ভালো।

ইন্টারনেট সিকিউরিটি

  • পাসওয়ার্ড: ইন্টারনেটে যেসব সার্ভিসগুলি আপনি ব্যবহার করেন- ইমেইল, মেসেঞ্জার (চ্যাট), ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ, ফোরাম ইত্যাদি সব জায়গাতেই পাসওয়ার্ড থাকে। অনেকেই সাধারণত একই পাসওয়ার্ড সব জায়গায় ব্যবহার করেন, এটা একটা বিরাট বড় ভুল। অবশ্যই অবশ্যই ভিন্ন ভিন্ন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই যে প্রশ্নটা উঠবে, এতো এতো সার্ভিসের জন্য আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড করা সম্ভব কিনা। ব্যাপারটা আসলেই মোটামুটি অসম্ভব। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড গ্রুপ পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। ধরুন, ফেসবুক আর 'ক' ব্লগের জন্য একটি পাসওয়ার্ড রাখলেন, টুইটার আর 'খ' ব্লগের জন্য আরেকটি পাসওয়ার্ড রাখলেন। ইয়াহু মেইলের জন্য একটি পাসওয়ার্ড এবং জিমেইলের জন্য আরেকটি পাসওয়ার্ড রাখলেন। এ বাদে ইন্টারনেটের অন্যান্য যতো ফোরামে যতো ইউজার নেম থাকবে তাদের জন্য একটি কমন পাসওয়ার্ড রাখলেন (যেসব ফোরামে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু আলোচনা করেন না)। গ্রুপিং করতেই হবে এমন না, যদি মনে করেন এতো পাসওয়ার্ড আলাদাভাবে মনে রাখা কষ্টের, তবে এভাবে করে দেখতে পারেন। এক্ষেত্রে কিছু ব্যাপার অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে:
    • কোন অবস্থাতেই ফেসবুকের পাসওয়ার্ড এবং ফেসবুকে যে ইমেইল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগিন করছেন, তার পাসওয়ার্ড যেনো এক না হয়। হ্যাকাররা এটা সবসময়ই চেক করে- কারণ প্রচুর মানুষ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট এবং তাতে লগিন করার ইমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড একই দিয়ে রাখে।
    • হাবিজাবি ফোরামে রেজিস্ট্রেশনের জন্য দরকার হলে একটা ইমেইল অ্যাকাউন্ট খুলে রাখতে পারেন। ইন্টারনেটের অনেক ফোরামই ইউজারদের ইমেইল অ্যাড্রেস বিক্রি করে স্প্যামারদের কাছে, যার কারণে আপনার ইমেইল অ্যাকাউন্ট প্রায়ই জাঙ্ক মেইলে ভরে যায়। এর থেকে বাঁচার জন্য একটা আলাদা অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন ইয়াহু কিংবা জিমেইলে, সেটা দিয়েই ফোরামে রেজিস্টার করুন- ওতে যতো ইচ্ছা জাঙ্ক আসুক, আপনার আসল অ্যাকাউন্ট অক্ষত থাকবে। যারা একটু অগ্রসর ব্যবহারকারি, তারা ডিসপোজেবল ইমেইল অ্যাড্রেস ব্যবহার করুন।
  • অদরকারি ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা: ফেসবুকে অনেকেই কৌতুহলবশত নানা অ্যাপ্লিকেশোন ইন্সটল করে থাকেন। এদের সবার যে উদ্দেশ্য সৎ তা কিন্ত না। আপনি যদি মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন, তবে লক্ষ্য করবেন যে আপনি সেই অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করার মাধ্যমে মূলত সেই অ্যাপগুলিকে আপনার ফেসবুকে সম্পূর্ণ অ্যাকসেস দিয়ে দিচ্ছেন। কিছু কিছু অ্যাপ এমনকি বন্ধুদের আমন্ত্রণ পাঠানোর নাম করে ইমেইল অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডও চেয়ে বসে। এক্ষেত্রে সবচে বড় অষুধ হচ্ছে নিজেকে এসব অ্যাপ ব্যবহার করা থেকে বিরত রাখা। আপনি কবে মারা যাবেন, কে আপনার প্রোফাইল বেশি দেখলো, কে আপনার গোপন প্রেমিক এইধরনের ধাপ্পাবাজ অ্যাপগুলি খুব সহজেই আপনার অ্যাকাউন্টের তথ্য চুরি করতে পারে। এইধরনের শিশুসুলভ ঔৎসুক্য কমাতে পারলে আপনি অনেকটাই নিরাপদ। প্রাসঙ্গিকভাবে আরেকটি সমস্যার উল্লেখ করা যেতে পারে- অনেকেই ফেসবুকের অনেক ভিডিও লিঙ্কে ক্লিক করেন। এইসব ভিডিও লিঙ্কের প্রিভিউ ইমেজে প্রায়ই খুব আকর্ষণীয়, উত্তেজক কোনো ছবি থাকে, সাথে একইরকম ক্যাপশন। নিশ্চিত না হয়ে এমন কোনো লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।

  • বুঝে শুনে অ্যাটাচমেন্ট ডাউনলোড করা: ভাইরাস কিংবা স্পাইওয়্যার ছড়ানোর একটা অন্যতম প্রধান মাধ্যম হচ্ছে ইমেইল অ্যাটাচমেন্ট। প্রথমত, অপরিচিত কারো মেইল দেখার পর যদি সাবজেক্ট লাইন দেখে সন্দেহজনক হয়, তবে চাইলে মেইল না খুলতে পারেন। অবশ্য এটা সবসময় খুব ভালো বুদ্ধি না, বিশেষত যদি আপনার কাছে এমনিতেই সবসময় অপরিচিত মানুষের মেইল আসে। সেক্ষেত্রে মেইল যদিও খুলেন, নিশ্চিত না হয়ে অবশ্যই অ্যাটাচমেন্ট ডাউনলোড করবেন না। যারা কিছুটা পরিচিত সিকিউরিটির ব্যাপারে তারা হয়তো জানেন যে ভাইরাস/স্পাইওয়্যার ছড়ায় মূলত এক্সিকিউটেবলস ফাইল অর্থাৎ যাদের এক্সটেনশন থাকে .EXE - এমন ফাইলের মাধ্যমে। কথাটা মোটাদাগে সত্যি হলেও, পুরোপুরি না। ভাইরাস যেকোন ছবি অর্থাৎ, JPG এক্সটেনশনের ফাইল থেকে ছড়াতে পারে। একারণেই অপরিচিত কারো থেকে পাওয়া ইমেইলের অ্যাটাচমেন্ট খুলবেন না, যদি পুরোপুরি কনভিন্সড না হন। পরিচিত লোকের থেকেও যদি অপ্রত্যাশিত মেইল পান কিংবা ভাষা দেখে সন্দেহ জাগে মনে, অ্যাটাচমেন্ট ডাউনলোড করার আগে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়ে নিন।

    এই অংশেই আরেকটা প্রাসঙ্গিক থ্রেটের ব্যাপারে বলে যাই- ফাইল এক্সটেনশন সংক্রান্ত। এই থ্রেটটা মূলত উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের বেশি। আলাদাভাবে সেটিং না পাল্টালে উইন্ডোজ ফাইল এক্সটেনশন হাইড করে অর্থাৎ লুকিয়ে রাখে। ধরুন, আপনার কম্পিউটারে এমপিথ্রি ফরম্যাটে একটি গানের ফাইল আছে, নাম Riders on the storm। ধরা যাক ফাইলের ফরম্যাট এমপিথ্রি, এই ফাইলের পুরো নাম হবে Riders on the storm.mp3; যেহেতু এক্সটেনশন হাইড করা তাই শেষের .mp3 অংশটুকু দেখা যাবে না। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা হিসেবে ঠিক আছে, কিন্তু এর সুযোগ নেয় ভাইরাস নির্মাতারা। তারা তাদের ভাইরাসের এক্সিকিউটেবলস ফাইলের আইকন চেঞ্জ করে একটা এম্পিথ্রি কিংবা পিকচার ফাইলের আইকন বসিয়ে দেয়। যেহেতু সাধারণত এক্সটেনশন লুকানো থাকে, আপনি দেখতে পাবেন না যে এটা একটা .exe ফাইল; আপনি আইকন দেখে সরল বিশ্বাসে গান চালু করা মাত্রই ঘটনা ঘটে যাবে।

    কীভাবে লুকিয়ে থাকা ফাইল এক্সটেনশন সব সময় দেখার ব্যবস্থা করা যায়, তার সম্পর্কে জানতে পারবেন এখানে

  • অনলাইন গেমিং এবং ক্র্যাক/সিরিয়াল সাইট সাবধানে ব্যবহার করা: অনেকেই অনলাইন গেমিং প্রতি আসক্ত। দুঃখজনকভাবে স্পাইওয়্যারের খনি হচ্ছে ওই সাইটগুলি। এর সাথে উল্লেখ করতে হবে যেসব সাইট সফটওয়্যারের ক্র্যাক কিংবা সিরিয়াল সরবরাহ করে। অল্প কিছু সাইট ছাড়া অধিকাংশই ভাইরাস/স্পাইওয়্যারের বিশাল খনি। পরামর্শ থাকবে খুব বুঝে শুনে এসব সাইট ব্যবহারের। দরকারে একদম ব্যবহার না করার। একই সাতে উল্লেখ করা যায় অনলাইন মুভি স্ট্রিমিং এর কিছু সাইটেরও। যারা দাবি করে অমুক সিনেমা দেখতে তাদের সাইট থেকে তমুক সফটওয়্যারটি না নামালে হবেই না! অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্পাইওয়্যার ঢুকিয়ে দেয় এমন সাইট। আপনার যদি একান্তই অনলাইন মুভি স্ট্রিমিং, সিরিয়াল/ক্র্যাক কিংবা গেমিং এর সাইট দরকার হয়, পরিচিত কারো সাথে কথা বলুন যিনি কিছুটা অভিজ্ঞ, তিনি আপনাকে নিরাপদ এবং ভালো লিঙ্কের সন্ধান দিতে পারবেন।

  • সাইটের নামের দিকে মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করা: কখনোই আপনার ফেসবুক, ইমেইল অ্যাকাউন্টের লগিন ইনফরমেশন অন্য কোন সাইটে দিবেন না। বিশেষত ইমেইল অ্যাকাউন্টের। মনে রাখবেন- জিমেইল, ইয়াহু, হটমেইল যাই হোক না কেন, তারা কখনো অন্য কোন সাইটের মধ্যে নিজেদের লগিন বক্স বসাবে না। এছাড়া আরেকটা অ্যাডভান্সড লেভেল হ্যাক হতে পারে- সাইটের নামে খুব সামান্য পরিবর্তন এনে। Yahoo.com আর Yaho0.com দেখতে খুব একই রকম হলেও পার্থক্য আছে, শেষের O টা বদলে দেওয়া হয়েছে 0 (সংখ্যা শূন্য) দিয়ে। এধরনের কাছাকাছি নামের, হুবহু একই চেহারার সাইটে যদি লগিন ইনফরমেশন দিয়ে দেন, তাহলে সর্বনাশ! এটা খুব নিয়মিত ঘটনা না, তবে চোখ খোলা রাখতে দোষ নেই।

    আর কপালদোষে যদি মেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েও যায়, সেক্ষেত্রে যাতে অন্তত হ্যাকার সেটার পাসওয়ার্ড না বদলাতে পারে, তা নিশ্চিত করুন। আজকাল অধিকাংশ মেইল সার্ভিস প্রোভাইডারই মোবাইল কনফার্মেশনের ব্যবস্থা রাখছে, অর্থাৎ পাসওয়ার্ড বদলাতে হলে আপনার মোবাইলে তারা একটি কোড এসএমএস করবে। এই পদ্ধতি অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে হয় আমার কাছে।

  • যত্রতত্র ইমেইল অ্যাকাউন্ট ও সোশ্যাল নেটওয়ার্ক অ্যাকাউন্ট কনফিগার না করা: প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা এখন মোটামুটি সারাক্ষণই ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকি- বাসার ডেস্কটপ, অফিসের ল্যাপটপ কিংবা সঙ্গের স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট। এই সব ডিভাইসেই আমরা মেইল, ফেসবুক ইত্যাদির অ্যাকাউন্ট কনফিগার করে রাখি। এর মাধ্যমে হয়তো আপনার আপ টু ডেট থাকা আরো সহজ হচ্ছে, কিন্তু একই সাথে আপনার বিপদও বহুগুণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার যেই আইফোনে ইমেইল কনফিগার করা, সেটি যদি আজ হারিয়ে যায়, আপনার সব মেইলই কিন্তু আরেকজন পেয়ে যাচ্ছেন। একই কথা ল্যাপটপ কিংবা সব মোবাইল ডিভাইসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। যারা সেনসিটিভ তথ্য নিয়ে কাজ করছেন, তারা সম্ভব হলে মোবাইল ডিভাইসে মেইল চেক করা থেকে বিরত থাকতে পারেন। যদি করেনও, কোনভাবেই "Remember Me" সেটিংস অন রাখবেন না। আর সম্ভব হলে মোবাইলে অবশ্যই লক কোড দিয়ে রাখবেন। একই কথা ইনফ্যাক্ট পার্সোনাল কম্পিউটারের ক্ষেত্রেও পুরোপুরি খাটে। কখনোই নিজের কোন পাসওয়ার্ড ব্রাউজারে সেভ করে রাখবেন না। মজিলা, ক্রোমসহ সব ব্রাউজারেই কম বেশি এই সেইভড পাসওয়ার্ডগুলি প্লেইন টেক্সট ফরম্যাটে থাকে। আপনার কম্পিউটারে বসে, মাত্র মিনিট দুয়েকের মধ্যেই এ তথ্য বের করা সম্ভব। স্পর্শকাতর ক্ষেত্রে- মেইল হোক বা ফোরাম, প্রতিবার পাসওয়ার্ড টাইপ করেই ঢুকবেন। একান্তই যদি সেইভ করে রাখতে চান, সেক্ষেত্রে মাস্টার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন।

  • ফ্রী ওয়াইফাই অ্যাকসেস পয়েন্টসহ যেকোন অচেনা নেটওয়ার্ক ব্যবহারে সতর্ক হওয়া: আজকাল ফ্রী ইন্টারনেট মোটামুটি সুলভ। বিদেশ তো বটেই, দেশেও কফিশপ থেকে শুরু করে রেস্টুরেন্ট, ক্লাব সর্বত্র ফ্রী ইন্টারনেট (বিশেষ করে ওয়াইফাই এর মাধ্যমে) পাওয়া যায়। ফ্রী জিনিস যতো মধুরই হোক, এর বিপদ সম্পর্কেও আপনাদের জানা উচিত। ওপেন ওয়াইফাই অ্যাকসেস পয়েন্ট অত্যন্ত বিপদজনক একটা মাধ্যম। ইন্টারনেটে সার্চ করলেই অনেক টিউটোরিয়াল পাওয়া যায় যেখানে ওপেন ওয়াইফাই অ্যাকসেস পয়েন্ট থেকে কীভাবে ইমেইল কিংবা কনভারসেশন হ্যাক করা যায়, তা শেখানো হয়। শুধু ওয়াইফাই-ই না, কোন ধরনের ইন্টারনেট সংযোগের ব্যাপারেই যদি আপনি নিশ্চিত না থাকেন, তবে সেখানে স্পর্শকাতর তথ্যের আদানপ্রদান না করাই ভালো।

পাসওয়ার্ড: কীভাবে শক্ত পাসওয়ার্ড বানাবেন

এ বিষয়ে আসলে একেকজনের একেকরকম মত। আরেকটা বিষয় হলো, আপনি যে পাসওয়ার্ড কঠিন ভাবছেন, কম্পিউটারের (যে হ্যাক করবে) কাছে তা কঠিন নাও হতে পারে। এখানে গাণিতিক অনেক প্যাঁচ আছে। তবে আমি কিছু পরামর্শ দিতে পারি, এগুলি পালন করলে আশা করি আপনার পাসওয়ার্ড হ্যাক করা খুব সহজ হবে না:

  • পাসওয়ার্ড অন্তত বারো অক্ষরের হতে হবে। বারো থেকে ষোলো অক্ষরের পাসওয়ার্ড মোটামুটি অপটিমাম- মনে রাখা এবং নিরাপত্তার দিক থেকে।
  • পাসওয়ার্ডের মধ্যে ক্যাপিটাল লেটার এবং স্মল লেটারের মিশ্রন রাখতে হবে, সংখ্যা রাখতে হবে (0-9) এবং বিশেষ চিহ্ন রাখতে হবে (!@#$%^&* ইত্যাদি )।
  • আন্দাজে একটা কঠিন দশ বারো লেটারের অর্থহীন পাসওয়ার্ড বানানোর চেয়ে, পরপর চার পাঁচটা অর্থযুক্ত শব্দ,অক্ষর আর বিশেষ চিহ্ন সমেত বসানো ভালো বুদ্ধি। এই পাসওয়ার্ড মনে থাকার সম্ভাবনা বেশি, ক্র্যাক করাও কঠিন।
  • আরেকটা বুদ্ধি আমি মাঝে মধ্যে অ্যাপ্লাই করি- মোটামুটি দৈর্ঘ্যের বাংলা বাক্যকে ইংরজি হরফে লিখে ফেলা। ধরুন একটা পাসওয়ার্ড হতে পারে- amiAngurKhaitebhaloPai$068
  • পাসওয়ার্ড বানানোর পর চেক করে নিতে পারেন কতোটা শক্ত সমর্থ হলো। এমন একটা সাইট আছে এখানে। মোটামুটি মিলিয়ান বছরে নিয়ে ফেলতে পারলে ধরে নিন, পাসওয়ার্ড ঠিকাছে।

অনেকের কাছেই হয়তো খুব জটিল মনে হচ্ছে কিংবা ভাবছেন এগুলি একধরনের সন্দেহবাতিকগ্রস্ততা। দুঃখজনক, তবু এটাই বাস্তবতা। আমরা যে পৃথিবীতে থাকি সেটা আর যাই হোক, সরল না। অন্যের হাত থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্যই তাই আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। সেজন্যই এতো কিছু লেখা।

আজ এখানেই শেষ করি। মাথায় যে কয়টা বিষয় ছিলো তুলে আনার চেষ্টা করেছি। কিছু বিষয় একটু জটিল হওয়াতে ইচ্ছা করেই বাদ দিয়েছি। এছাড়া আগেই বলেছি, যেহেতু এই লেখার পাঠকগোষ্টী হিসেবে আমি ধরে নিয়েছি মূলত নিরাপত্তা বিষয়ে কিছুটা অনগ্রসর ব্যবহারকারীদের, তাই টার্মিনোলজির শুদ্ধতা সবসময় রাখিনি। কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে জানাতে পারেন, কিংবা মতামত।


মন্তব্য

পথিক পরাণ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দরকারি পোস্টটির জন্য।

ধরুন আমার ল্যাপিতে কেউ একজন স্পাইওয়্যার ইন্সটল করে রেখেছে কোন উপায়ে। এখন আমি কিভাবে এর উপস্থিতি বুঝতে পারব? ফিজিকাল এক্সেস ছাড়া স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে দূর থেকে কেউ একজন আমার ল্যাপিতে স্পাইং করলে তা ধরতে পারার কোন উপায় আছে কি? আর ধরতে পারলেই বা এরকম কিছু সন্দেহ হলে করনীয় কি হতে পারে?

সবজান্তা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

এই লেখার মূল ফোকাস কীভাবে ভাইরাস/স্পাইওয়্যার/হ্যাকিং এর হাত থেকে বাঁচবেন। বিপদে পড়ে গেলে কী করতে হবে, সেটা এ লেখাতে আর টানিনি, সাইজের কথা চিন্তা করে। তাই আপনার প্রশ্নের উত্তর এখানেই দেই- সাধারণত স্পাইওয়্যার কিংবা যেকোন ধরনের ম্যালিশাস সফটওয়্যার যদি কম্পিউটারে থাকে, কম্পিউটারের আচরণ কিছুটা অদ্ভুত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কম্পিউটার স্লো হয়ে যাচ্ছে কিংবা ইন্টারনেট কানেকশন স্লো হয়ে যাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে সবার আগে দেখতে হবে টাস্ক ম্যানেজার। মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করে দেখুন, অচেনা এবং সন্দেহজনক কোন প্রোগ্রাম কিংবা সার্ভিস চলছে কিনা। এমন প্রোগ্রাম সনাক্ত করার জন্য সবচে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে গুগলের সাহায্য নেওয়া। সন্দেহ হবে এমন যে কোন প্রোসেসের নামই সার্চ করে দেখুন- এটি কী কাজে লাগে সেটি ইন্টারনেটে কোথাও না কোথাও ব্যাখ্যা করা আছে। যদি দেখেন এটি ক্ষতিকর কিছু, তার রিমুভাল প্রোসেসও দেখে নিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর যে প্রোগ্রামটি আপনার কম্পিউটারে চলছে, তার নামে এবং লোকেশন বেশ সন্দেহজনক হয়।

এছাড়াও স্পাইওয়্যার স্ক্যানের জন্য ভালো কিছু ফ্রী অ্যান্টি স্পাইওয়্যার টুল আছে। এই মুহূর্তে আমার দুটি নাম মনে পড়ছে- স্পাইবট সার্চ অ্যান্ড ডেস্ট্রয় এবং মাইক্রোসফট সিকিউরিটি এসেনশিয়ালস।

পথিক পরাণ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই পোস্টটা প্রিয়তে নেবার উপায় কী?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

স্যাম এর ছবি

আমি বুকমার্ক করে রাখি নীড়পাতা থেকে... কখনো সাবস্ক্রাইব ও করি

শামীম এর ছবি

চমৎকার পোস্ট, তবে মনে হল দুইটা ব্যাপার বলতে ভুলে গেছেন:

১।
কম্পিউটার সিকিউরিটিতে সেই কম্পিউটারই যাতে চুরি না হয়ে যায় সেটা নিশ্চিত করা দরকার। বিশেষত ল্যাপটপ, পেনড্রাইভ যদি অতি সেন্সিটিভ তথ্যে ভরপুর থাকে তাহলে সেটার নিরাপত্তা বিধান জরুরী। (ভুক্তভোগী)।

২।
আর কম্পিউটার সারাতে দিলে তথ্য হাপিশ হতে পারে সিকিউরিটিতে ফুটা তৈরী করে দিতে পারে এটাও একটা সমস্যা -- সমাধানের উপায় জানা দরকার।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সবজান্তা এর ছবি

১) আমার মনে হয় এইটা পার্ট অভ কমন সেন্স। আলাদা করে বলার কিছু নাই।

২) এইটা একটা সমস্যা, যার প্রিভেন্টিভ কোন ভালো বুদ্ধি আমার মাথায় নাই। আমি যে দোকান থেকে কম্পিউটার কিংবা কোনো অ্যাকসেসরিস কিনতাম, তারা আমার অনেক দিনের পরিচিত। এরকম পরিচিত দোকানে দেওয়াই ভালো; নিজের পরিচিত না থাকলে কোনো বন্ধুর পরিচিত দোকানে অন্তত। খুব সেনসিটিভ এবং পার্সোনাল ইনফরমেশন অবশ্য সবসময়ই সরিয়ে রেখে দোকানে কম্পিউটার দেওয়া উচিত- যতো খাতিরই থাক। আর যদি ভাইরাস/স্পাইওয়্যার কিছু দিয়েই দেয়, তখন আবার অপারেটিং সিস্টেম ফ্রেশ ইন্সটল করা ছাড়া উপায় দেখি না।

শামীম এর ছবি

২ নং এ 'এসো নিজে করি' সবচেয়ে ভালো সমাধান নিঃসন্দেহে। তবে বাজার থেকে ৩০/৫০ টাকায় কেনা পাইরেটেড সফটওয়্যার বা অপারেটিং সিস্টেম ইনস্টল করলে ওটার সাথেই অনেক দুষ্টু ইনস্টল হয়ে যায়।

ব্যক্তিগত ভাবে লিনাক্স ব্যবহার করি বলে বিশেষত পাসওয়র্ড নিয়ে যত্নশীল হই। এছাড়া ফেসবুক বা অন্য সাইটের অ্যাপগুলো এড়িয়ে চলি। সুবিধা হল, আমি তো তেমন কেউ নাই + টাকাপয়সা ওয়ালা অনলাইন একাউন্টও নাই। তাই সেন্সেটিভ তথ্য বা টাকাপয়সা হারানোর তেমন ভয় নাই। হো হো হো

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

জোক্স, বণিক একটা জিনিস অ্যাড করি, অনেকে অশ্লীল শব্দ (বাংলা বা ইংরেজি) পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করে, কেউ যদি জানে যে ইউজার একজন ডার্টি মাইন্ড লোক, তাইলে সেই শব্দগুলার একটা পুল বানায়েও পাসোয়ার্ড ব্রেকের ট্রাই মারা সম্ভব, অন্য ঝামেলাও হইতে পারে। (সুন্দরবনের ঘটনা মনে আছে?)

জোক্স অ্যাপার্টঃ লেখায় উত্তম জাঝা!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সবজান্তা এর ছবি

ইউ ডার্টি মাইন্ড দেঁতো হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সবজান্তা এর ছবি

বুঝলাম, দেশে শীতকাল চোখ টিপি

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

গুল্লি

---------------------
আমার ফ্লিকার

সবজান্তা এর ছবি

শুধু গুলি করলেই হবে ? সঙ্গে থাকতে হবে লুহার জাঙ্গিয়া দেঁতো হাসি

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

মুরাদ টাকলা মার্কা পাসওয়ার্ড দিতে পারে চোখ টিপি

---------------------
আমার ফ্লিকার

সবজান্তা এর ছবি

পরে নিজে মনে করতে পারলেই হয়। অধিকাংশ কঠিন পাসওয়ার্ডের মূল সমস্যা, বেশ কিছুদিন ব্যবহার না করলে নিজেরই মনে পড়ে না।

মন মাঝি এর ছবি

চমৎকার পোস্ট‍! চলুক

আমি দুয়েকটা পয়েন্ট যোগ করি -

১। আমার মনে হয় এখনকার সময় এ্যান্টিভাইরাসের বদলে 'ইন্টারনেট সিকিউরিটি স্যুট'-ই ব্যবহার করা উচিত। কারন এখন আমরা প্রায় সবাই নেট ব্যবহার করি, আর সেজন্যে 'ইন্টারনেট সিকিউরিটি স্যুট'-ই বোধহয় বেশি উপযুক্ত। এতে এ্যান্টিভাইরাসের পাশাপাশি ফায়ারওয়াল, এ্যান্টিস্পাইওয়্যার, এ্যন্টিম্যালওয়্যার, স্প্যামগার্ড, ইত্যাদি একসাথে দেয়া থাকে এবং চ্যাট, ফেসবুক, সার্ফিং, ইমেল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দেয়। বাংলাদেশে নর্টন আর ক্যাস্পার্স্কির 'ইন্টারনেট সিকিউরিটি স্যুট'-এর 'এক পিসি এক ব্যবহারকারী এক বছর' বৈধ সংস্করণ ৯০০ টাকায় পাওয়া যায় (প্রিন্টেড প্রাইস ১১০০ টাকা)। প্রথমটার স্থানীয় পরিবেশক 'কম্পিউটার সোর্স লিঃ', ২য়টার 'অফিসএক্সট্র্যাক্টস'। বিটডিফেন্ডারও পাওয়া যায়।

২। আগে ফিজিকাল রাইট-প্রোটেকশন সহ পেন-ড্রাইভ পাওয়া যেত। এখন আর দেখি না। এতে একটা বিশাল সুবিধা হল প্রয়োজনের সময় নিজের পেন-ড্রাইভ অন্যের বা পাব্লিক কম্পিউটারে (যেখানে ভাইরাস সহ সবধরনের খতরনাক ম্যালওয়্যার হাজারে-বিজারে কিলবিল করে) ওয়ানওয়ে ফাইল-ট্রান্সফারের জন্য (নিজের কম্পু থেকে অন্য কম্পুতে - উল্টোটা নয় কিন্তু) মনে হয় নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যেত। পেন-ড্রাইভের গায়ে লাগানো স্লাইডারটা টেনে দিয়ে রাইট-প্রোটেক্টেড অবস্থায় অন্য কম্পিউটারে লাগালে অন্য কম্পুতে থাকা ভাইরাস বা অন্য কোন ফাইলই আর তখন ঐ পেন-ড্রাইভে ঢুকতে পারত না, সুতরাং ইনফেকশনের সুযোগও থাকত না। এরকম পেন-ড্রাইভ কেন জানি এখন আর দেখি না। তবে, একটা মন্দের ভাল বিকল্প হয়ত হতে পারে - এন্টিভাইরাস লাগানো পেন-ড্রাইভ যা পেন-ড্রাইভেই থাকে ও কোথায় লাগালেই আগে চালু হয়। ক্যাস্পার্স্কির পোর্টেবল এন্টি-ভাইরাস লাগানো Tech Titan-এর "T-Drive Pro" নামে এমন একটা ৮ জিবি পেন-ড্রাইভের আপডেটেবল বৈধ সংস্করণ ঢাকায় পাওয়া যায়। এন্টিভাইরাস লাগানো পেন-ড্রাইভ আমি অবশ্য ব্যবহার করিনি, তবে দোকানে দেখেছি। যাদের নিয়মিত পেন-ড্রাইভে করে ফাইল-ট্রান্সফার করা লাগে তাদের হয়তো ফিজিকাল রাইট-প্রোটেকশনওলা বা তা না পেলে অন্তত এন্টিভাইরাসওলা পেন-ড্রাইভ কাজে লাগতে পারে।

৩। অনেকের একটা অভ্যাস লক্ষ্য করেছি - এন্টিভাইরাসের ঘন ঘন আপডেটকে বিরক্তিকর বা কাজে ইন্টারাপ্‌শন মনে করে অটো-আপডেট ফিচার বন্ধ করে রাখেন এবং নিজের ইচ্ছামত বেশ কিছুদিন/সপ্তাহ/কয়েক সপ্তাহ পরপর ম্যানুয়ালি আপডেট করে্ন। অনেক সময় দীর্ঘ সময়ের জন্য ভুলেও যান এটা করতে। এটা খুব একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে করেন না তারা। এটা মনে হয় ঠিক না।

৪। এন্টিভাইরাস/স্যুটের সেটিংসগুলিও গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হয়। এটা মনে হয় যদ্দুর সম্ভব এয়ার-টাইট রাখা উচিত।

৫। নিজের কম্পু অন্যকে ব্যবহার না করতে দেয়াই উচিত। বিশেষ করে রিমুভেবল-ড্রাইভ আর ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে। যারা কলিগ/বন্ধুবান্ধব/আত্নীয়স্বজন/রুমমেটের অনুরোধ/চাপাচাপি ফেলতে পারেন না, তাদের উচিত এন্টিভাইরাস্কেও পাসওয়ার্ড দিয়ে লক করে রাখা, যাতে এটা ডিজএবল করা বা এর সেটিংস বদলানো না যায়। কারন কিছু লোক সবসময় থাকে যাদের নিজের জিনিষের প্রতি যত মায়া, অন্যের জিনিষের প্রতি সেটা ঠিক ততটাই কম। অনেকটা 'সরকারী মাল দরিয়া মে ঢাল'-এর মত আর কি। এরা দেখা যাবে আপনার কম্পিউটারের কোন অনিরাপদ ব্যবহার (misuse) করছেন, এবং সেই কাজে এন্টিভাইরাস বা সিকিউরিটি সফটওয়্যারের কাছ থেকে কোন বাধা আসলে সেটা আপনার অজ্ঞাতে নির্বিকার চিত্তে দিব্যি ডিজএবল করে দিয়ে নিজের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে আপনার সম্ভাব্য কোন ঝামেলা বা ক্ষতির কথা তাদের বিবেচনাতেই আসবে না। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই এটা শিখেছি। এর সেরা ওষুধ হচ্ছে, কোন অবস্থাতেই নিজের কম্পু অন্যকে ব্যবহার করতে না দেয়া। মন্দের ভাল বিকল্প হচ্ছে, নিদেনপক্ষে এন্টিভাইরাস/সিকিউরিটি সফটওয়্যার পাসওয়ার্ড-লক বা এ্যাক্সেস-রেস্ট্রিক্ট করে দেয়া, যাতে এটা অন্য কেউ ডিজেবল বা পরিবর্তন না করতে পারে।

****************************************

শাফায়েত এর ছবি

আরেকটা কথা সম্ভবত লিখেনি কেও, সফটওয়্যার ইন্সটল করার সময় ছাড়া বাকি সময় অ্যাডমিন মোডে না থেকে সাধারণ মোডে থাকা ভালো। এতে করে কেও হুটহাট করে সফটওয়্যার ডিলিট,ইনস্টল করতে পারবেনা, ভাইরাসও কোনো অটোমেটিক সফটওয়্যার ইন্সটল করতে পারবেনা। লিনাক্সে ভাইরাস সমস্যা না হবার অন্যতম কারণ এটা, সিস্টেম লেভেলে কিছু বদলাতে হলেই পাসওয়ার্ড দিতে হয়।

সবজান্তা এর ছবি

কথাটা বোধহয় পুরোপুরি ঠিক না। আমি প্রথম পয়েন্টেই বলেছি কেউ যেন লিনাক্সে রুট ইউজার হিসেবে না থাকেন। উইন্ডোজের ক্ষেত্রে বলি নি কারণ আমি যদ্দূর জানি উইন্ডোজ সেভেনে যে কেনো প্রোগ্রাম ইন্সটলের আগে পারমিশন চেয়ে নেয়। এছাড়া সিস্টেম ড্রাইভে কিছু রাইট করতে গেলে সেই প্রোগ্রাম রান অ্যাজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে চালাতে হয়। যেহেতু অধিকাংশ মানুষই আজকাল সেভেন ইউজ করছে কিংবা শিফট করছে, তাই আলাদা করে উল্লেখ করে আর কনফিউশন বাড়াইনি।

সবজান্তা এর ছবি

১) ইন্টারনেট সিকিউরিটি স্যুটের কথা আমি ইচ্ছা করেই লিখিনি। আমি কয়েকটা ব্যবহার করেছিলাম- আমার অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছিলো, অনেক কিছুই আসলে অদরকারি। যেমন ধরেন পার্সোনাল ফায়ারওয়াল। আমি এর সুবিধার চে অসুবিধা বেশি দেখি। সত্যিকারের কিছু অ্যাটাক হয়তো ঠেকাতে পারে, কিন্তু এরচে অনেক বেশি ফলস অ্যালার্ম জেনারেট করে। নেটওয়ার্কের কোন একটা কম্পিউটার থেকে সিম্পল ব্রডকাস্ট পিং রিকোয়েস্ট আসলেও অ্যালার্ম দিতে দেখেছি। আমি নিজে অল্প কিছুদিন বাদে এতো বছর ফায়ারওয়াল ছাড়াই ব্যবহার করেছি, সমস্যা হয়নি কোনো। তবে দাম যেহেতু খুব বেশি না, মানে কেউ যদি টাকা খরচ করতে রাজি থাকেনই, তার জন্য মন্দ না। তবে অভিজ্ঞতায় দেখেছি মানুষ টাকা দিয়ে সফটওয়্যার কেনাতে উৎসাহী না। সেই ক্ষেত্রে ইন্টারনেট স্যুট ফ্রীতে পাবে, কম্পোনেন্টগুলি আলাদা আলাদা ভাবে সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হবে আর কী।

২) রাইট প্রোটেকশনওয়ালা পেন ড্রাইভ আমি অনেকদিন ধরেই দেখি না। তবে আমার মনে হয়, অ্যান্টিভাইরাস যদি নিয়মিত আপডেটেড থাকে, তবে পেনড্রাইভ কানেক্ট করে একবার স্ক্যান করে নিলেই মোটামুটি বিপদ এড়ানোযায়।

৩) অ্যান্টিভাইরাস/স্যুটের সিকিউরিটি এয়ারটাইট রাখা বিষয়ে আমি একটু দ্বিমত পোষণ করি। খুব ভালো ধারণা না থাকলে, কোন অপশনের মানে কী তা পুরোপুরি না বুঝলে আমি ডিফল্ট সেটিংস-এ অ্যান্টিভাইরাস চালানোর পক্ষে। অনেক আগে, একজনের অনুরোধে তার বাসায় গিয়েছিলাম ইন্টারনেট অ্যাকসেস না পাওয়ার রহস্য বের করতে। মিনিট পাঁচেক নাড়াচাড়া করে দেখলাম, মোটামুটি নবিশ সেই ভদ্রলোক তার ক্যাসপারস্কি অ্যান্টিভাইরাসের সব অপশন অন করে রেখেছে। এমনই অবস্থা সিম্পল পিং প্যাকেট পর্যন্ত ব্লক হয়ে যায়। জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দিলেন, "টাকা দিয়া কিনছি কি কম অপশন ইউজ করার জন্য?"

না জানলে হাত না দেওয়াই উত্তম।

আপনার বিশদ মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি এখানে একধরনের মধ্যপন্থা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। অর্থাৎ, অতি সিকিউরিটিতে যাতে ইউজারের ফ্লেক্সিবিলিটি নষ্ট না হয়, তাই চেষ্টা করেছি। তাই বেশ কিছু পয়েন্ট ইচ্ছা করেই বাদ দেওয়া।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এইটার অপেক্ষায় ছিলাম। ভালইছে। এইটা দেখে একটা টু-ডু তালিকা বানাতে হবে।

অট. তুই আঙ্গুর খাইতে ভালো পাস তো এইটা ঘোষণা দিয়া বলার কী আছে? ছিক!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সবজান্তা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই।

সবজান্তা এর ছবি

আসলে ওই অংশটা লেখার সময় আঙ্গুর খাইতেছিলাম। পাসওয়ার্ড কী দেই কী দেই ভাবতে এইটাই দিয়া দিলাম দেঁতো হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সুন্দর করে গুছিয়ে লেখা-- চলুক

স্যাম এর ছবি

খুব কাজে লাগবে। ধন্যবাদ।
প্রায় সবগুলোই ফলো করে আসছি এ যাবত।
আমি আরেকটা রিস্কি কাজ করি - কিছু মাস পরপর বা সন্দেহ দেখা দিলে exe, dll, js ফাইলগুলো search দিয়ে date modified ট্যাব দিয়ে সাম্প্রতিক ইন্সটল্ড ফাইল্গুলো খুঁজে বের করি - আমার ব্যবহার করা প্রোগ্রাম রিলেটেড না হলে একবার গুগল এ ঢুকে চেক করে নেই কি ধরনের ফাইল - সন্দেহ হলে কোন কথা নেই একেবারে shift+del - এভাবে বেশ কয়েকবার বেশ কিছু অনাকাঙ্খিত/সন্দেহজনক/বিরক্তিকর এক্টিভিটিজ থেকে রেহাই পেয়েছি।

সবজান্তা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ প্রিয় স্যাম ব্যানার্জী !

আমার মনে হয়, যদি এগুলি মোটামুটি ফলো করে থাকেন তবে অনেকটা বিপদ এড়ানো যাবে। তবে আপনার শেষের কাজটা কিন্তু আমি সমর্থন করতে পারলাম না। আপনি নিজেই যেমনটা বলেছেন, কাজটা অসম্ভব রিস্কি। বুঝতে একটু ভুল হলে সম্পূর্ণ সিস্টেম বসে যেতে পারে। ডিএলএল ফাইল তো কখনোই হাত দেওয়া উচিত না, এমনকি সার্ভিস কিংবা রেজিস্টি এডিটও কনফার্ম না হয়ে হাত দেওয়া উচিত না।

আপনার লজিক ঠিকাছে, কিন্তু একবার ভুল হলেই হয়তো ফুল সিস্টেম বসে যাবে, অনেক ভোগান্তি।

তারেক অণু এর ছবি
সবজান্তা এর ছবি
সবজান্তা এর ছবি

ধন্যবাদ পড়ার জন্য অণু ভাই হাসি

রংতুলি এর ছবি

চলুক চলুক

সাফি এর ছবি

কাজের পোস্ট।

মালওয়্যার ধরার জন্য মালওয়্যার বাইটস বেশ কাজের সফটওয়্যার। যাদের গেমিং বা ক্রিকেট ফুটবল লাইভ স্ট্রিম করার জন্য স্পাইওয়্যার গিজ্গিজ করা সাইট ভিজিট করা খুবই প্রয়োজন থাকে, তারা একটা বুদ্ধি খাটাতে পারেন। ইন্টার্নেট থেকে ভারচুয়াল বক্স (virtualbox) বিনামূল্যে ডাউনলোড করে, তাতে উইন্ডোজ ইন্সটল করে, তার মাধ্যমে এইসব সাইট ভিজিট করা যেতে পারে।

সবজান্তা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ শাফি ভাই।

আমি ম্যালওয়্যার বাইটসের কথা লিখবো ভেবে নোট রাখসিলাম, পরে নিজেই লিখতে ভুলে গেছি। আসলেই বেশ ভালো কাজ করে সফটওয়্যার। শুধু এইটা না- একটু অ্যাডভান্সড ইউজারদের জন্য হাইজ্যাকদিস লগটাও কাজের।

স্ট্রিমের ওই গ্যাঞ্জাম কিন্তু শুধুমাত্র অ্যাডব্লক অ্যাডঅন ইন্সটল করেই অনেকটা দূর করা যায়। তবে যেহেতু অ্যাডব্লক ভালো অ্যাড, যেমন অ্যাডসেন্সও ব্লক করে দেয় এবং অনেকেরই রোজগারের একটা পথ একটা, তাই আর উল্লেখ করিনি। আর অ্যাডসেন্স বন্ধ হোক এইটা নিশ্চয়ই আর যেই হোক, আপনি চান না দেঁতো হাসি

শাফায়েত এর ছবি

সবথেকে ভালো সলিউশন উইন্ডোজ ছেড়ে উবুন্টুতে চলে আসা কিন্তু বেশিভাগ মানুষের মনে এটা নিয়ে অযথাই একটা ভীতি কাজ করে। স্পেশালাইজড কিছু সফটওয়্যার ব্যবহার আর গেম খেলার প্রবলেম ছাড়া বাকি সব কাজে সহজেই উবুন্টু ব্যবহার করতে পারবেন, ভাইরাস নিয়ে চিন্তা অনেক অনেক কমে যাবে।

শামীম এর ছবি

কর্পোরেট উবুন্টুর চেয়ে কমিউনিটি চালিত লিনাক্স মিন্ট বেশি ভাল সমাধান মনে হয়। আর এখনকার কম্পিউটারগুলোর যে স্পেসিফিকেশন, তাতে স্পেশালাইজড উইন্ডোজ অনলি সফট চালানোর জন্য লিনাক্স থেকেই ভার্চুয়াল বক্সে উইন্ডোজ চালানো যায়, আর ছোট খাট উইন্ডোজ সফট চালানোর জন্য ওয়াইন ব্যবহার করা যায়। আমি নিজেই আমার উবুন্টু এবং লিনাক্স মিন্ট সিস্টেমে অটোক্যাডের বিকল্প progeCAD ব্যবহার করি এভাবে (wine)।- তবে সেটাতে শুধু কনভার্ট করে বাকী কাজ লিব্রে ক্যাডে করে ফেলি।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সবজান্তা এর ছবি

এই লেখার টার্গেট রিডার হচ্ছে কম্পিউটারের একদম বিগিনার লেভেলের ইউজাররা। কোনো সমস্যা ফেইস করলে গুগল সার্চ করে, কমিউনিটি ফোরাম থেকে তার সমাধান করা তাদের জন্য সহজ না। কিংবা ভার্চুয়াল বক্সও তাদের বুঝতে বেশ কষ্ট হবে। আমি তাই কোনো ধরনের অ্যাডভান্সড বিষয় আনতে চাইনি- শুধু চেয়েছি, যে যেই সিস্টেমই ব্যবহার করুক না কেনো, কতো কম কষ্টে সিকিউরড থাকতে পারে, এই আর কী !

শাফায়েত এর ছবি

আমি উবুন্টু-মিন্ট দুইটাই চালাই, ওয়াইনও রাখি সাথে। কিন্তু বেশিভাগ ব্যবহারকারী লিনাক্স শুনলেই আতংকে ভুগে। উবুন্টু আর জানালার ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস যে আসলে অভ্যাসের একটা ব্যাপার সেট বুঝানোই কঠিন হয়ে যায়। আর উবুন্টু ইউনিটি ডেস্কটপ চালু করে আরো ঝামেলায় ফেলে দিসে, নতুন ইউজাররা ওটায় কিছুই খুজে পায়না।

সবজান্তা এর ছবি

এই লেখার উদ্দেশ্য কিন্তু আসলে সবচে ভালো সল্যুশন বের করা না। লিনাক্স ব্যবহারের অনেক ভালো দিক আছে, সেগুলি নিয়ে প্রচুর লেখাও আছে ব্লগে। কিন্তু এই লেখাতে আমি চেয়েছি, যে যেই সিস্টেমই ব্যবহার করুক না কেন, কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলেই নিশ্চিন্তে ব্যবহার করা যায়।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

উত্তম জাঝা! চলুক চলুক
দারুন একটা পোস্ট, গতকালকেই পড়েছিলাম মন্তব্য করা হয়নি।
খুব কাজের একটা পোস্ট। আমার জন্য তো খুবই দরকারি। কম্পি একটু কম বুঝি কিনা। ইয়ে, মানে...
অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন একটা প্রয়োজনীয় পোষ্টের জন্য।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সবজান্তা এর ছবি

পড়ার জন্য এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট নিরাপত্তার প্রথম এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে- কাণ্ডজ্ঞান বা ইংরেজিতে যাকে বলে কমনসেন্স।

হক কথা! হাজার হাজার টাকা খরচ করে শ' খানেক সফটয়্যার ব্যবহার করে কম্পিউটারকে সিকিউর করা যেতে পারে, কিন্তু প্রতিবার যে পাসওয়ার্ড দেওয়ার সময় কাঁধের উপর দিয়ে উঁকি মেরে দেখে নিচ্ছে কেউ বা কোন ভাইরাস-অলা সফটয়্যার অ্যাডমিনিসট্রেটিভ রাইট দিয়ে চালাচ্ছে, তা কমনসেন্স না থাকলে বোঝা সম্ভব না।

মিনহাজ.রাতুল

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি কোন ধরণের এন্টিভাইরাস বা প্রোটেকশন ছাড়া অনেকদিন ধরেই উইন্ডোজ ইউস করছি, সৌভাগ্যক্রমে আজ পর্যন্ত কিছু হয়নি। পেনড্রাইভ ব্যবহার এ একটু সতর্ক থাকলেই চলে। সাধারণ ইউসারদের অন্যান্য সোর্স থেকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা মোটামুটি কম। একটি তথ্যবহুল পোস্ট এর জন্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন পোস্ট

অতিথি লেখক এর ছবি

জিজ্ঞেস না করেই অনেক প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম। কার্যকরী লেখা; আমার সহ অনেকেরই কাজে আসবে আশা করছি। -- মুগ্ধ অভিযাত্রিক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।