• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

স্মৃতির পাতায় একুশের প্রভাতফেরী

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: শুক্র, ২০/০২/২০০৯ - ৯:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

“এখানে যারা প্রান দিয়েছে রমনার উর্দ্ধমুখী কৃষ্ণচূডার তলে
যেখানে আগুনের ফুলকীর মত এখানে ওখানে জ্বলছে অসংখ্য রক্তের ছাপ
সেখানে আমি কাঁদতে আসিনি”

ইউটিউবে মাহবুব উল আলম চৌধুরীর লেখা আর কাজী আরিফ এর কন্ঠে ‘একুশের প্রথম কবিতা’ শুনছিলাম। কেন জানি কোনভাবেই কাজে মন বসাতে পারছিলামনা। আজ কানাডাতে ১৯ শে ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫ টা, বাংলাদেশে ২০ ফেব্রুয়ারী সকাল ৬ টা।২০ শে ফেব্রুয়ারী যার সাথে জড়িয়ে আছে আমার, আমাদের, বোধকরি প্রতিটি বাংলাদেশীর অনেক স্মৃতি। ফেব্রুয়ারীর ২০ তারিখ আসলেই সারা দেশ জুড়ে শুরু হয়ে যায় একুশের প্রভাত ফেরীতে যাবার প্রস্তুতি। জাতীয় আয়োজনের বাইরেও বাসায়, স্কুলে, ক্লাবে, পাড়ায় ছোট ছোট শহীদ মিনার তৈরী হয় অথবা আগেই তৈরী করা মিনারে পরিচ্ছন্নতার ছোঁয়া লাগে।মফস্বলের সাধারন গ্রন্থাগারের পাশে অথবা শহীদ মিনারের বেদীতে প্রুস্তুতি চলে একুশের অনুষ্ঠানের। বিকেলের দিকে ছেলে বুড়ো সবাই মিলে চলে ফুল সংগ্রহের পালা।হাড়কৃপনের বাসার ফুলের বাগান থেকেও সেদিন ফুল ছিড়তে এতটকুও সমস্যা হয়না, এ যেন সবার একুশ, সব ধর্মের বর্নের মানুষের একুশ।

আমার স্কুলজীবন কেটেছে টাঙ্গাইলে বিন্দুবাসিনী স্কুলে।আমাদের স্কুলের সামনেই ছিল সাধারণ গ্রন্থাগার আর তার পাশেই শহীদ মিনার।মনে আছে ২০ তারিখে রাতেই মধ্যেই ফুল সংগ্রহ করে ছোট খাট একটা তোড়া বানিয়ে ফেলতাম।পরদিন ভোরে বাসা থেকে পাড়ার বন্ধুদের সাথে রওনা হতাম খালি পায়ে শহীদ মিনারের বেদীতে ফুল দিতে।সকাল বেলার সেই শাশ্বত পরিবেশে খালি গলায় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী’ গানটি গাইতে গাইতে যখন শহীদ মিনারে পৌঁছতাম ততক্ষনে স্মৃতির মিনার ফুলে ফুলে পরিপূর্ণ। এ যেন বাধ ভাঙ্গা মানুষের ঢল নেমেছে শহীদ মিনারে।তার কিছুক্ষন পরে শুরু হত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, কবিতা পাঠের আসর। সেই সব ফেলে আসা দিনগুলি আজও আমাকে নাড়া দেয়, কিছুটা আতীতস্মৃতিবিধুরতা আচ্ছন্ন করে রাখে আমাকে। ছেলেবেলার সেই পাড়াত কিংবা স্কুলের বন্ধুরা আজ আমরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এখানে ওখানে কিন্তু একুশের প্রভাত ফেরী আছে সেই আগের মতই চিরনবীন।

১৯৯৪ সালে স্কুল মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবার পরে চলে আসলাম ঢাকায়, নটরডেম কলেজে। এ যেন পুকুরের ঢেউয়ের সমুদ্রে এসে পড়া। কোথায় আমার সেই ছোট্ট সুন্দর শহর, কোথায় আমার সেই প্রানপ্রিয় ‘পূর্ব আদালত পাড়া’। আমার মনে আছে শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ৯৫, ৯৬ বা ৯৭ সালের একুশের প্রভাত ফেরীতে শহীদ মিনারে যাওয়া হয়নি, কারন মফস্বলের ছেলে এই আমি তখনো আমার নিজের পরিপূর্ন অবস্থান করে নিতে পারিনি এই শহরে, ছিলনা কোন পাড়াত বন্ধু, কলেজের বন্ধুরাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল বিভিন্ন এলাকায়।

৯৭ সালের শেষের দিকে চলে আসলাম বুয়েটে সেই সাথে শুরু হল জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অধ্যায়।হলে থাকার সুবাদে পেয়ে গেলাম বিশাল এক বন্ধুত্ত্বের বৃত্ত, সেই সাথে বুয়েটের সাংস্কৃতিক অঙ্গন। বুয়েটের প্রধান ফটকের পাশেই ছিল একুশের ফেব্রুয়ারীর স্মরণে তৈরী শহীদ মিনার আর ক্যাম্পাসের পাশেইত জাতীয় শদীদ মিনার।মনে আছে ২০ শে ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যার দিকে আমরা হলের বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করতাম। সে এক অসাধারন দৃশ্য, দল মত নির্বিশেষে, হলের বড়, ছোট, দারোয়ান, মালি সবাই মিলে একুশের প্রভাত ফেরীর ফুলের তোড়া বানানো হচ্ছে। রাত ১১ টার পরে কখনো কখনো হলের প্রোভোস্ট চলে আসতেন আমাদের সাথে যোগ দিতে। আমরা সবাই মিলে একুশের গান গাইতে গাইতে চলতাম শহীদ মিনারের উদ্দেশ্য। পাশ করার পরে বুয়েটে শিক্ষকতার সময়টাতে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে প্রভাত ফেরীতে যাওয়া হত।

২০০৭ এ চলে আসলাম কানাডাতে, সেই থেকে আজ অবধি আর প্রভাত ফেরীতে যাওয়া হয়নি। একুশ আসে, চলে যায়, প্রভাত ফেরী আর হয়না। একুশকে স্মরন করে অনুষ্ঠাণ হয় তাতে আমরা সবাই গলা মিলিয়ে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো’ গান গাই, কেউবা একুশের কবিতা পরে শোনায়, আমাদের প্রজন্ম আর পরবর্তী প্রজন্মের সম্মিলত অংশগ্রহনে আলেখ্যানুষ্ঠান হয়, কিন্তু প্রভাত ফেরীতে না যাবার কষ্ট আমাদেরকে আচ্ছন্ন করে রাখে।প্রভাত ফেরী আজ আমার কাছে স্বপ্নের মত। কিছুদিন আগে আমরা এখানে বাংলাদেশীরা আলোচনা করছিলাম এখানে একটা শহীদ মিনার বানানো যায় কিনা। ফেইসবুকে একটা গ্রুপ খুলেছি, অন্যান্য শহর যেখানে শহীদ মিনার আছে সেখানকার তথ্য জোগার করার চেষ্টা করছি। আমাদের স্বপ্ন আছে এখানকার সরকারের পক্ষ থেকে যদি সাড়া নাও পাই তবে এডমন্টনে বাংলাদেশীদের যে একটা ‘কমিউনিটি হল’ করার চিন্তা ভাবনা আছে, সেখানেই হয়ত মুল শহীদ মিনারের আদলে একটা মিনার তৈরী করা হবে। হয়ত কোন একদিন আমাদের সেই স্বপ্ন পূরন হবে। সেদিন ফেব্রুয়ারীর তীব্র শীতের মধ্যে তুষারে ঢাকা এই শহরে স্মৃতির মিনার ফুলে ফুলে ভরে উঠবে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম দেখবে একুশের প্রভাত ফেরীকে।

রেফারেন্সঃ
সংযুক্ত ছবিটি 'উইকিমিডিয়া কমনস' থেকে নেয়া।


মন্তব্য

রিজভী [অতিথি] এর ছবি

কানাডায় শহীদ মিনার তৈরির আইডিয়াটা চমৎকার লেগেছে...আশা করি আপনারা কর্তৃপক্ষের অনুমুতি পেয়ে যাবেন...

রিজভী

--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;

পরিবর্তনশীল এর ছবি

আপনাদের ইচ্ছাটা সফল হোক।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

রাফি এর ছবি

(আলো)

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চমৎকার উদ্যোগ জাহিদ! আমি বিশ্বাস করি তোমরা যা করতে চাইছ তা করতে পারবে। হয়তো কিছুক্ষেত্রে পরিকল্পনা ছোট করতে হবে। আবার হয়তো এমন কিছু পেয়ে যেতে পারো যা আশা করোনি।

ঢেঁকি নাকি স্বগে গেলেও ধান ভানে, তোমাকে উত্তর মেরুতে পাঠালেও যে এমন সব উদ্যোগে নিজেকে জড়াবে তাতে অবাক হবার কিছু নেই। আবারো তোমাদের সাফল্য কামনা করছি।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

Momenul Islam এর ছবি

I want to join the blog.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।