ঘটনা ১
আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস আর মহান একুশে ফেব্রুয়ারী উপলক্ষ্যে কানাডিয়ান রক্ত কেন্দ্রে আয়োজিত রক্তদান অনুষ্ঠানে গিয়েছি। প্রাথমিক নিবন্ধনের পরে একজন নার্সকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে আরো কিছু তথ্য সংগ্রহের জন্য, বিশেষ করে রক্তদানের নিয়ম কানুন এবং ঝুকি নিয়ে আলোচনা করার জন্য। মাঝবয়সী নার্সের প্রথম উক্তিঃ
‘তুমিত ডাক্তার সুতরাং এসব বিষয়ে তোমার ধারনা আছে’
আমি কিছুটা বিষ্মিত, বাবার স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটিয়ে প্রকৌশল শিক্ষায় নাম লিখিয়েছিলাম, ভবিষ্যতে বড়জোর নামের পুর্বে একটা ড: অদ্যক্ষর বসার ক্ষীণ সম্ভাবনা আছে, এর বেশিকিছুত নয়। পরক্ষনে মনে পড়ল আমার নমের প্রথম অংশ ( MD. Zahidul) এদের কাছে বিশেষ কিছু বহন করে (কানাডাতে MD মানে Medical Doctor)। যাই হোক আমি ভদ্রমহিলার ভুল ধরিয়ে দিলাম এবং যতুদূর সম্ভব ব্যাখ্যা করে দিলাম আমার নামের প্রথম দুটি অক্ষরের মহাত্ম, সেই সাথে এও বলে দিলাম যে এরকম ডাক্তার (!!) বাংলাদেশে ভুরি ভুরি আছে।
ঘটনা ২
তখন সবে কানাডাতে এসেছি। আমার বিভাগের অগ্রজ জুবায়ের ভাইকে নিয়ে গিয়েছি ব্যাংক একাউন্ট করতে।এক ভদ্রমহিলা আমার সব কিছু শুনে নাম নিবন্ধন করতে যাচ্ছেন। তার প্রথম প্রশ্নঃ
‘তোমার নামের প্রথম অংশ?’
আমি জবাব দেই ‘MD. Zahidul’
ভদ্রমহিলার পরবর্তী উক্তি, ‘তুমি কিভাবে এটা উচ্চারণ কর ?’
যাই হোক, মিনিট দশেক চেষ্টার পরেও ভদ্রমহিলার যখন পরিগণক যন্ত্রে আমার নাম নিবন্ধন করতে পারলেননা ( বিশেষত MD) তখন আমাকে সন্তুষ্ট থাকতে হল ওই Zahidul নিয়েই। আমাকে অবশ্য আশ্বস্ত করলেন এই বলে যে কোন দাপ্তরিক চিঠি পত্র লাগলে আমার পুরো নাম বিশেষ ভাবে লিখে দেবে। পরে অবশ্য ( এক বছরান্তে) বিশেষ ব্যবস্থায় আমার নাম নিবন্ধিত হয়েছে M D Zahidul হিসেবে (M আর D এর মাঝখানে সংক্ষিপ্ত ফাঁকা জায়গা সহযোগে) ।
ঘটনা ৩
এখানকার নিবন্ধন দপ্তরে গিয়েছি গাড়ি চালানোর অনুমতিপত্র নিতে। এখানে নাকি এটা আবার আমার প্রধান পরিচয়পত্র গুলোর মধ্যে একটি। যথারীতি সমস্যা শুরু আমার নামের প্রথম অংশ নিয়ে। জনৈকা সহকারী কোন মোটেই MD নিবন্ধন করতে দিবেননা।
আমি বললাম ‘এটা আমার নাম, নাম ভুল হলে আমার পরিচয় ভুল হবে’
তার যুক্তি ‘এটাত তোমার বিশেষণ, তুমি মেডিক্যাল ডক্টর এটা তার পরিচায়ক। আমরা নামের আগে কোন বিশেষণ অনুমোদন করিনা’
আমি যতই তাকে বুঝানোর চেষ্টা করি আমি ডাক্তার না, আমি প্রকৌশলী সে কিছুতেই ব্যাপারটা মানতে পারেনা।
কিছুক্ষন পরে প্রশ্ন করে, ‘MD এর মানে তাহলে কি’
আমি বলি, ‘এটা মূহাম্মাদ (সাঃ) এর সংক্ষিপ্ত রূপ’
বলে, ‘তাহলে পুরোটা লিখলে কি সমস্যা?’
আমি তাকে কিভাবে বুঝাই যে আমার পাসপোর্টেও নামের বানান ঐ MD দিয়েই শুরু, আমি ইচ্ছে করলেই পরিবর্তন করতে পারিনা।যাই হোক এ যাত্রায় কিছুতেই রক্ষা পেলামনা। আমাকে MD ছাড়াই নিবন্ধন করতে হল। পরে অবশ্য আরো উচ্চ দপ্তরে যোগাযোগ করে রীতিমত যুক্তিতর্ক আর পাসপোর্টের অনুলিপি দেখিয়ে আমি ফিরে পেলাম আমার আসল নাম।
ঘটনা ৪
একবার ‘ফল সেমিষ্টারে’ বাংলাদেশ থেকে পুরকৌশল বিভাগেই এসেছে দুজন। তাদের নামঃ
MD. Toihidul Islam ও MD. Tazul Islam
আমি প্রমাদ গুনলাম কারন এতমধ্যেই পুরকৌশল বিভাগে আমরা দুজন আছি যাদের নামঃ
MD. Zahidul Islam ও MD. Rashedul Islam
ফলাফল যা হলো কিছুটা এরকম। নামের শেষ অংশের প্রথম অদ্যক্ষর বিশিষ্ট সবার জন্য বিভাগের অফিসে একটাই চিঠিবাক্স। নির্বোধ কিছু সহকারীর হাত দিয়ে Toihidul এর এক প্রয়োজনীয় কাগজ চলে এলো আমার নামে । এবং যেহেতু বিভাগের চিঠিবাক্স আমি কদাচিৎ খুলি সেট পরে রইল সপ্তাহদুয়েক। মাঝখানে ভোগান্তি হল ব্যাচারা Toihidul এর।
ঘটনা ৫
সৈকতের পুরো নাম অনেক বড়, যেভাবে ও বাংলাদেশ থেকে নিবন্ধন করেছে তা কিছুটা এরকমঃ MMA Syed Rushed, সভাবতই নামের প্রথম অংশ MMA ( বলাই বাহুল্য MMA এর প্রথম M যথারীতি MD এর M). সৈকত আসার কিছুদিন পরের কথা, কেমিকৌশল বিভাগের জনৈক অধ্যাপক আমাদের এক বড় ভাইয়াকে কথায় কথায় জিজ্ঞেস করছেঃ
‘তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নতুন একজন এসেছে, ওর নাম MMA. তুমি চেন ?’
ভাইয়া কিছুটা হতবাক এবং বিব্রত, এই নামেরত কেউ আসে নাই, যতদূর জানে এসেছে সৈকত যার ভাল নাম Rushed. যাই হোক আরো কিছুদূর আলাপচারিতার পরে জানা গেল আসল সত্য। এখন অবশ্য নামের প্রথমে MD দেখেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই বুঝে এটা বাংলাদেশ হতে আমদানী।
------------------------------------------------------------------------
উপরের ঘটনাপ্রবাহের পরে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম নিজের ছেলের নামের শুরুতে আর যাই হোক MD রাখবনা। ২০০৭ এর পহেলা সেপ্টেম্বর। ঘর আলো করে আসল আমাদের ছেলে। আমি তখন কানাডাতে। ছেলের আকীকার ব্যাবস্থা করছে আমার বাবা, সুতরাং নাম প্রয়োজন।
আমি বললাম, ‘নির্ঝর ইসলাম’
বাবা বললেন, ‘ভাল কিন্তু MD কই ?’
কথাটা যুক্তিসঙ্গত, আমার দাদা, বাবা ও আমি শুদ্ধ আমাদের সবার নামের আগে আছে MD আমার ছেলের নামের আগে থাকবেনা কেন ? আমি আবার যথারীতি বুঝানো শুরু করলাম বাবাকে। মনে মনে ভাবলাম হায়রে MD, দেশে সমস্যা না রাখার জন্য আর এখানে সমস্যা রাখার জন্য।
মন্তব্য
আমার মায়ের অনেক জোরাজুরি সত্বেও বাবা নামের শুরুতে মোহাম্মদ লাগাতে দেয়নি। কারণ এটাই ছিল। ছেলে বিদেশে গেলে সবাই শুধু মোহাম্মদ ডাকবে।
সাধারণত তো MD টা নামের শেষে লেখে বলে জানতাম। তবু ভুল করলো শুনে অবাক হলাম। কানাডার কথা জানি না অবশ্য।
আমাদের এখানে এক বড় ভাই এসেছেন। তাঁর নাম *উজ্জামান। বেচারার তো আলাদা করে কোন ফার্স্ট বা লাস্ট নেম নেই। শেষে তিনি হয়ে গেলেন NFN *uzzaman. এখানে NFN হল No First Name এর সংক্ষেপে। অন্যত্র তিনি FNU *uzzaman পরিচয়েও দিনাতিপাত করেছেন। এখানে UFN হল First Name Unknown.
কত যে নাহক ভোগান্তি এই কারণে!
ইশতিয়াক
তুমি ঠিকই বলেছ, এখানেও যারা ডাক্তার তারা সবাই নামের শেষেই MD লেখে তার পরেও এখানে সব জায়গাতেই এরা MD দেখলেই ডাক্তার মনে করে। বড় ঝামেলাই আছি এইটা নিয়া। এজন্য এখন একান্ত গুরুত্বপূর্ন কিছু ছাড়া নামের আগে MD লেখিনা।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
রাগিব মজার কাহিনী। এ আর রহমানের পুরো নাম আল্লা রাখা রহমান ( পরিবর্তনের পরে ) এতটুকুই শুধু জানতাম, পেছনের কথাগুলো জেনে ভাল লাগল। আমাদের বিভাগে একজন দক্ষিণ ভারতীর অধ্যাপক আছেন তারও নাম এন রাজারত্নম, লিখেন এই ভাবেঃ " ডঃ এন (রাজ) রাজারত্নম " । ভদ্রলোক সবাইকে প্রথমেই বলে দেই আমাকে 'রাজ' নামেই ডেকো, যদিও এটা তার নামের শেষ অংশের সংক্ষিপ্তরুপ।
নাম নিয়ে এই বিভ্রাটের কারনেই অনেক তর্ক বিতর্ক করে ছেলের নাম থেকে MD বাদ দিয়েছি।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
জাহিদ, তুমি তোমার ছেলের নামের middle অংশ MD বা M রাখতে পার। তাহলে দুই দিক balance !
নামের বিড়ম্বনা!!!
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
কানাডার এপ্রান্তে (অন্টারিও) কিন্তু এটা নিয়ে কোন সমস্যাই নেই। তারা বেশ জানে আমাদের সবার নামের আগে ওটা আছে, তাই কোন সমস্যা নেই। কেউ কিছু জিজ্ঞেসও করেনা। আসলে কমিউনিটি সাইজ বড় হলে যা হয়। আগে একটা শহরে হালাল কি জিনিস সেটাও ব্যাখ্যা করতে হতো, আর এখন যে শহরে সেখানে ইউনিভার্সিটির পার্টিতেও হালাল জিনিস থাকে!
হ্যা বাংলাদেশীদের সংখ্যা বেড়ে গেলে এই জাতীয় সমস্যা অনেক কমে যাবারই কথা। আমাদের এখানে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এখন সব মিলিয়ে ১২০ এর মত আর ছাত্র ও কর্মজীবি বাংলাদেশী মিলিয়ে সংখ্যাটা এখনো সহস্রের কোঠায় পৌছায়নি বোধহয়। শুনেছি একই অবস্থা ভ্যাঙ্কুভার এর দিকেও।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভাগ্যিস, আমার নামে MD-নাই...
(শব্দশিল্পী)
খুব বাঁচা বেচেছেন ভাই
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ওরে কত কথা বলে রে............এত MD এর ঝামেলায় না যেয়ে নামের আগে পুরো MOHAMMAD লিখে দিলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর আমাদের দেশে সবাই নামের আগে মোহাম্মদ রাখে তার কারণ হচ্ছে প্রত্যেক মুসল্মানের নামের সাথে হয় মোহাম্মদ নাহয় আহমদ থাকতে হয়। এটা ধর্মে আছে। আর দুটো নাম একই সাথে রাখা যায় না। একই সাথে একজনেরই ছিল। তিনি আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ)।
------মর্তুজা আশীষ আহমেদ(mortuzacse1982@yahoo.com)
মর্তুজা সাহেব, "ধর্মে" কোথায় আছে নামের সঙ্গে মোহাম্মদ নাহয় আহমদ থাকতে হয়, একটু পরিষ্কার করে জানাবেন। আমার চেনা কোন আরব মুসলিমের নামের মধ্যে মোহাম্মদ কিংবা আহমদ নাই।
জনাব মর্তুজা
প্রথমতঃ আপনি বাংলাদেশে অসংখ্য মুসলমান পাবেন যাদের নামের আগে মোহাম্মদ বা নামের শেষে আহমদ নেই। সুতরাং আপনার এই মন্তব্যটি সঠিক নয়।
দ্বিতীয়তঃ আপনার 'এটা ধর্মে আছে' কথাটিও গ্রহণযোগ্য নয় কারন এর কোন সঠিক তথ্যসুত্র আপনি দিতে পারবেননা। আমি নিশ্চিত যে এটি নিঃসন্দেহে আপনার মনগড়া কথা ।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
যাক্, আমিও বাঁইচ্যা গেছি তাইলে...!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
হা হা হা
হ রণ'দা। আমিও বাঁইচ্যা গেছি।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
রণদা আবার জিগায় !!!
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
পাশ্চাত্যের এই ধরণের আচরণগুলোকে আমার কাছে চোখ থাকিতে অন্ধ টাইপের আচরণ বলে মনে হয়। দশ বছর বাংলাদেশে থেকেও এদেশকে 'ব্যাংলাদেস্' উচ্চারণ করা, ইসলামকে 'ইজলাম' বলা এরকম নানান ধরণের উন্নাসিকতা প্রচন্ড বিরক্তিকর।
তবে আশার কথা আমার নামে মুহম্মদ থাকলেও তা নামের মাঝখানে এবং পুরো নাম লেখার সময় শুধু মুহম্মদের পরিবর্তে শুধু এম ব্যবহার করি। এস্ এস্ সি পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশনের সময় স্যাররা নিজেরাই উদ্যেগী হয়ে আবু রাফি মুহম্মদ নাবিউল আফরোজ কে এ.আর.এম নাবিউল আফরোজ করে দিয়েছিলেন।
নানা ধরণের কাগজপত্রে নিজের সংক্ষেপিত নাম লিখতে গিয়ে যখন জায়গার ঘাটতিতে পড়ি তখন মনে মনে ভাবি পুরো নাম থাকলে যে কী হত???
একারণে এতদিন পর্যন্ত স্কুলের স্যারদের ধন্যবাদ দিয়ে এসেছি, কিন্তু আপনার লেখা পড়ে মনে হল যে আরো একটা ভবিষ্যৎ বিড়ম্বনা থেকে বেঁচে গিয়েছি সংক্ষেপনের কারণে।
লেখা
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
রাফি
তোমার সাথে কিছুটা দ্বিমত পোষন করছি। এখানে বেশ কিছুদিন থেকে ব্যাপারটাকে আমার ঠিক উন্নাসিকতা বলে মনে হয়নি বরং স্বাভাবিক বলে মনে হয়েছে, কারন আমি বা আমরাও ( যাদের প্রথম ভাষা ইংরেজী নয়) হাজার চেষ্টা করে আমাদের ইংরেজী উচ্চারনের শতভাগ দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবনা। এখানে এসে বিভিন্ন দেশের মানুষদের সাথে মিশে যা দেখেছি তা হল যাদেরই প্রথম ভাষা ইংরেজী নয় তাদেরই কথা বলার সময় কিছু না কিছু উচ্চারনগত সমস্যা রয়ে যায় যা নিয়ে আমরা অনেক মজাও করি। এ সমস্যা কারো প্রকট ( বিশেষ করে চীনাদের ) কারো বা কম।যেহেতু আমি বা আমরা শতভাগ শুদ্ধ ভাবে ওদের মত করে ইংরেজী বলতে পারবনা (যদিও আমার উচ্চশিক্ষা বা কর্মক্ষেত্রের তাগিদে সেই জিনিসটা আয়ত্বে আনা আমার প্রয়োজনীয়) সেই বিচারে একজন অবাঙ্গালীর কাছে 'বাংলাদেশ' বা 'ইসলাম' এর মত সঠিক উচ্চারণ আশা করাটা কতটুকু বাস্তবসম্মত তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
পরের ব্যাপারটি হলো নাম নিয়ে তোমার বিড়ম্বনা শেষ হয়ে যায়নি। তোমার নাম এ.আর.এম নাবিউল আফরোজ , অর্থ্যাৎ নিকট ভবিষ্যতে এখানে পড়াশুনা করতে আসলে তোমার প্রথম নাম হয়ে যাবে 'এ.আর.এম' আর শেষ নাম হবে 'আফরোজ' তোমার নামের মাঝখানের অংশ 'নাবিউল' সেখেত্রে বিলুপ্ত হয়ে যাবে কিংবা শুধুমাত্র 'এন' আকারে থেকে যাবে।তখন হয়ত সৈকতের মত তোমার নাম হয়ে যাবে এ.আর.এম। দেখা যাবে কোন এক অধ্যাপক আমাকে বলছে ' জাহিদ তোমাদের দেশ থেকে নতুন একটা ছেলে এসেছে যার নাম 'এ.আর.এম' !!! সুতরাং পারলে 'এ.আর.এম' টাকেও বিলুপ্ত করে দিও বা নিবন্ধনের সময় প্রথম নাম 'নাবিউল' আর শেষ নাম 'আফরোজ' দিয়ে 'এ.আর.এম' কে মধ্যম নাম হিসেবে রেখে দিও।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
স্যার আপনার কথা যুক্তিসঙ্গত; কিন্তু এরপরেও কথা থেকে যায়। বাংলাদেশ একটা দেশের নাম, ইসলাম একটা ধর্ম। এগুলোর সঠিক উচ্চারণ শিখে নেয়া দুঃসাধ্য কিছু নয়, আমরা অনেক ইংরেজি
শব্দ ভুল উচ্চারণ করি ঠিক, তবে একেবারে পরিচিত, বহুল ব্যবহৃত শব্দগুলো তো ভুল করি না।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আমরা যেমন দেশে থাকতে ইংরেজী বানান দেখে উচচারণ করি, বিদেশীরাও তাদের জন্য বিদেশী শব্দগুলোকে বানান করে উচচারণ করে। বাংলাদেশ-এর বানান যদি BANGদিয়ে শুরু হয়, তাদের জন্য সেটা 'ব্যাং' উচচারণ করাই স্বাভাবিক। তবে যারা বাংলাদেশীদের সাথে চলাফেরার কারণে উচচারণটা বুঝতে পারে তারা ঠিকভাবেই উচচারণ করতে চেষ্টা করে। জেনেশুনে কে-ই বা বোকা হতে চায়।
আর ইসলামও আমেরিকানদের জন্য 'ইজলাম' উচচারণ করাই স্বাভাবিক। এরা মাঝের 's'কে সাধারণত 'z' উচচারণ করে। 'প্রেসিডেন্ট' হয়ে যায় 'প্রেজিডেন্ট', ইসরায়েল হয়ে যায় 'ইজরায়েল'। বরং আড়ালে এরাই আমরা যখন প্রেসিডেন্ট বা এরকম কিছু উচচারণ করি (বিশেষ করে মেক্সিকানদের প্রতি, কারণ এরা কোনভাবেই 's' কে 'z' উচচারণ করতে পারে না) তখন হাসাহাসি করে ভুল উচচারণের জন্য। কাজেই এটাকে ঠিক উন্নাসিকতা বলা যায় না। তাদের গ্রামার অনুযায়ী তারা শুদ্ধভাবেই উচচারণ করছে।
এত সোজাসাপ্টা হলে তো অভিধানে ফোনেটিকাল সিম্বলগুলো অকেজো হয়ে যেত। তবে কয়জনই আর অভিধান ঘেটে এসব উচ্চারণ করে!
তবে Baanglaadesh বানান হলে মনে হয় উচ্চারণ ঠিক না হয়ে পারে না। সারা পৃথিবীজুড়ে কত বানানই তো ঠিক করা হল .. (Dhaka).. ... ...
এদিক দিয়ে জাপানিরা খুব সোজাসাপ্টা নিয়ম মানে ...
a=আ-কার, e=এ-কার, i=ই-কার o=ও-কার u=উ-কার। হ্যাঁ ভাই হিরাগানা, কাতাকানা আর কাঞ্জির পাশাপাশি রোমাজি (রোমান হরফ)ও ৪র্থ অক্ষরের সেট হিসেবে ওরা ব্যবহার করে। ;p
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
আমরা যেভাবে বাংলাদেশ উচ্চারণ করি সেটা ইংরেজীতে উচ্চারণ করতে হলে ইংরেজী স্পেলিং হবে BUNgladesh.
রাফি তোমার মন্তব্যের রেশ ধরে তানভীর অবাঙ্গালীদের বাংলা ভাষার ব্যাবহৃত শব্দগুলোর উচ্চারণের ব্যাপারটিকে ব্যাখ্যা করেছেন, আমি কিছুটা যোগ করি।
যেমন ধর একজন আরবকে ( ধরা যাক সে ইরাক বা মিশরের ) তুমি যদি 'পিডিএফ' কথাটি বলতে বল সে বলবে 'বিডিএফ' যত চেষ্টাই কর তার মুখ দিয়ে 'প' এর স্থলে 'ব' আসবে কারন তার বর্নমালার 'প' নেই।
আবার মাঝে মাঝে কিছু বর্নের বিন্যাসে এমন শব্দ হয় যা অনেকের পক্ষে উচ্চারণ করা কষ্টসাধ্য। যেমন তুমি একজন চাইনিজ কে যদি 'Course' শব্দটি উচ্চারন করতে বল সে বলবে 'কোস' (রেফ ছাড়া) কোন ভাবেই তাকে দিয়ে তুমি 'কোর্স' বলাতে পারবেনা।
একই কথা প্রযোজ্য 'ঢাকা' উচ্চারনটির ক্ষেত্রে, পাশ্চাত্যের লোকেরা 'ঢাকা' কে 'ডাকা' ই সবসময় বলে যাবে কারন ওদের ভাষায় 'ঢ' নেই
আগে এগুলো নিয়ে আমারো আক্ষেপ ছিল এখন কিছুটা বুঝতে পারি যে এটা ওদের ইচ্ছাকৃত নয়। তবে একজন বাঙালী হিসেবে আমিও আশা করব ওরা একদিন সঠিক উচ্চারণে আমার দেশের নামটা অন্তত বলবে।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এতজন জ্ঞানী সচল যেহেতু বাংলাদেশের নাম ব্যাংলাদেস্ উচ্চারণে উন্নাসিকতা নেই বরং এটা অন্যদেশীদের ব্যর্থতা এব্যাপারে একমত; এখন মনে হচ্ছে আমার observationএই ভুল ছিল।
তবে ব্যাপারটা পরিষ্কার করার জন্য তানভীর ভাই, শামীম ভাই, পি.পি.দা,রাগিব ভাই, জাহিদ স্যার সবাইকে ধন্যবাদ।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আমি কখনই নামের মোহাম্মদকে MD লিখি নাই .... পাসপোর্টে পুরা নাম। তবে সংক্ষেপ করতে চাইলে M দেই। কারণ ... ইংরেজি যাদের ভাষা তারাই যদি না বোঝে তাহলে গলদটা আমার দিক থেকেই ধরে নিতে হবে।
তবে আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে এর উপর অন্যদের দাবীও এসে যায় ... ভারতীয়দের অনেক শব্দই ইংরেজি অভিধানে ঢুকে গিয়েছে।
নামে কী বা এসে যায়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
উদ্ধৃতি
আপনার 'এটা ধর্মে আছে' কথাটিও গ্রহণযোগ্য নয় কারন এর কোন সঠিক তথ্যসুত্র আপনি দিতে পারবেননা। আমি নিশ্চিত যে এটি নিঃসন্দেহে আপনার মনগড়া কথা ।
জনাব জাহিদ
হয়তো আমি কোনো রেফারেন্স দিতে পারবো না। কারণ ধর্ম এত বড় যে পুরোটা আমার বিশ্লেষণ করার সময় পাইনি। ধর্ম যদি এতই ছোট হতো তাহলে দুনিয়াতে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা হতো না। মনগড়া কথা বলার সময় কোথায়। আমি হয়তো খুব ধার্মিক নই তবে জানার চেষ্টা করি। যারা ইসলাম নিয়ে আমার চেয়ে বেশি জানেন তাদের কাছে হয়তো আপনি রেফারেন্স পাবেন।
------মর্তুজা আশীষ আহমেদ(mortuzacse1982@yahoo.com)
হা হা হা। এখন যদি কেউ বলে, মর্তুজা কিংবা আশীষ নাম রাখা যাবে না, এটা ধর্মে আছে, আপনি মানবেন? জিজ্ঞেস করলে তারা যদি বলে, "আমি কোনো রেফারেন্স দিতে পারবো না। কারণ ধর্ম এত বড় যে পুরোটা আমার বিশ্লেষণ করার সময় পাইনি। ধর্ম যদি এতই ছোট হতো তাহলে দুনিয়াতে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা হতো না। মনগড়া কথা বলার সময় কোথায়। আমি হয়তো খুব ধার্মিক নই তবে জানার চেষ্টা করি। যারা ইসলাম নিয়ে আমার চেয়ে বেশি জানেন তাদের কাছে হয়তো আপনি রেফারেন্স পাবেন" আপনি মানবেন?
ভ্রাত:, তাইলে অনেক আরবদেশীয় পুরুষদিগের নামেই মুহাম্মদ থাকে না কেন?
*********************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
হিমু ভাই
অবশ্যই মানবো না। কিন্তু নাম নিয়ে যে সমস্যায় পড়ছিলাম তা আর বলতে চাই না। "আশীষ" নিয়ে এখনও অনেক হুজুর বর্গীয় মানুষ কথা বলে (অনেকটা ঝুনা চৌধুরির বিজ্ঞাপনের মতো)। কি আর করা। তবে আরব দেশে কেন মোহাম্মদ নামে থাকে না সেটি নিয়ে আমি নিজেও ভাবি কিন্তু কোনো উত্তর পাই না। আর মোহাম্মদ আহমদ নিয়ে কোনো ঝামেলা যদি নাই থাকে তাহলে কেন আলপিন বন্ধ হলো তাও বুঝতে পারি না।
------মর্তুজা আশীষ আহমেদ(mortuzacse1982@yahoo.com)
আপনি নিজে যেটা মানেননা নিজেই সেটা বলেন কিভাবে ?
আলপিনের সেই বিতির্কিত কার্টুনটি ছিল কিছুটা বিদ্রুপাত্বক যেহেতু সেখানে একটি প্রানীর (বিড়াল) আগে 'মোহাম্মদ' বসানোর ব্যাপারটি ছিল।
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এই পোস্টে কমেন্ট করা নিরাপদ? না বিপজ্জনক?
ভাবতেছি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজরুল ভাই ১০০% নিরাপদ
_____________________
জাহিদুল ইসলাম
এডমনটন, আলবার্টা, কানাডা
http://www.ualberta.ca/~mdzahidu/
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
বিড়ালের আগে মোহাম্মদ নিয়ে সমস্যা আমিও মানি। কিন্তু আমার প্রশ্ন অন্য খানে। সেখানে বলা হয়েছিল "নামের আগে মোহাম্মদ বসাতে হয়।" আর আলপিনের ব্যাপারটি কোনো ধর্মীয় আঘাত বলে আমি মনে করি না। সেটি ছিল নিছকই একটি কৌতুক। কিন্তু তার জন্য পুরো ক্রোড়পত্র বন্ধ করতে হবে বা মানুষকে জেল খাটতে হবে আমি তা মেনে নিতে পারিনি।
আর সবাইকে বলছি। অবশ্যই কমেন্ট করতে পারেন। মোটেই বিপদজনক নয়। এটাকে সবাই আলোচনা বলতে পারেন। আলোচনা করতে দোষ কোথায়?
------মর্তুজা আশীষ আহমেদ(mortuzacse1982@yahoo.com)
আমার মনে হয় নামের বানানই তাদের এভাবে উচ্চারণ করতে বাধ্য করে...তবে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর একটা বইয়ে বেশ ব্যাঙ্গ করে বলেছিলেন যে আমেরিকানরা আমাদের নামগুলো উচ্চারণ করতে গেলেই যত সমস্যা...কিন্তু ফ্রেঞ্চ একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকে দিব্যি সব উদ্ভট খাবারের নাম অনায়াসে করে উচ্চারণ করে ফেলে!
সম্প্রতি Clint Eastwood এর 'Gran Torino' মুভিটা দেখে আমার আবার হুমায়ূন আহমেদের কথাটাই সত্যি বলে মনে হচ্ছে...
রিজভী
--------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;
আমার নাম আবু মোহাম্মদ ওমর শেহাবউদ্দীন আইয়ুব। ইংরেজীতে Abu Mohammad Omar Shehab Uddin Ayub. GRE তে এভাবেই রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। পরে দেখি ওরা আমার নাম করে দিয়েছে AbuMohammadOmar ShehabUddinAyub.
আর মোহাম্মদ নামের শুরুতে লাগানো নাকি চালু করছিলেন শেরে বাংলা একে ফজলুল হক। ভারত বিভাগ যখন ঘনিয়ে আসতে লাগল তত হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্য দূরত্ব তত নাকি বাড়ছিল। এসময় মুসলমানরা নিজেদের সাংস্কৃতিক ভিন্নতা ও ঐক্যর জন্য নামের আগে মোহাম্মদ লাগানো শুরু করে। হিন্দুদের শ্রী ও শ্রীমতিকে টেক্কা দেবার জন্য। কথাটা শুনেছিলাম আমার এক স্যার (ভট্ট স্যার) এর কাছে। যাচাই করে দেখিনি।
আমার দাদা নানা কারও নামের আগে মোহাম্মদ নেই। বঙ্গবন্ধু, সোহরাওয়ার্দী, জিয়া, ভাসানী , কবি নজরুল এদের কারও নামে মোহাম্মদ নেই। গত সপ্তাহে বাড়ি গিয়েছিলাম জমিজমার কাজে। ১৮৯৫ সাল ও ১৯২৫ সালের জরিপে দেখি আমার পূর্বপুরুষদের নামের শুরুতে শ্রী লেখা যদিও তারা মুসলমান ছিলেন। তাদের নামে মোহাম্মদ ছিল না।
ভালো কথা বলেছেন। আসলেই তো, আমাদের দাদা-নানাদের জেনারেশনে কিন্তু কোনও মোহাম্মাদ নামওয়ালা লোকের কথা শুনিনা।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমার MD নিয়ে অভিজ্ঞতা ব্যাপক। প্রথম ইন্দোনেশিয়ায় গেলাম। সবাই আমার নামের আগে ডক্টর বসিয়ে ডাকা শুরু করলো। তাদের ধারনায় ছিলো যে আমি মেডিক্যাল ডক্টর। এরপর মালাউইতে, তারা আমার MD কে গ্রাহ্য না করেই পুরো মোহাম্মদ বসিয়ে কাগজপত্র/ওয়ার্ক পারমিট/রেসিডেন্স পারমিট সবই বানিয়ে দিলো। কোথাও কোনও সমস্য হয় না কিন্তু সমস্য হয় ঢাকার ইমিগ্রেশনের মহাজ্ঞ্যানি সাব-ইন্সপেকটর হুজুরদের। এরপর আবার ঝামেলায় পড়লাম আফগানিস্তানে। সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্সের জন্যে কাগজপত্র জমা দিলে সেই একই প্রশ্ন। MD মানে কি? ম্যাজিস্ট্রেটের কাছ থেকে লিগ্যাল ডকুমেন্টে ব্যাখ্যা করে নিয়ে আসো। সেই ব্যাখ্যা আনতে আনতে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে আসলাম। কেনিয়া, সোমালিয়া, সোমালিল্যান্ড, ডেনমার্কে, নেদারল্যান্ডে, সবখানেই একই প্রশ্ন, MD মানে কি? পাকিস্তানে তো MD ব্যবহার করা ব্লাসফেমিতে পড়ে যায়। পুরো মোহাম্মদ লিখে প্রায় সবজায়গায়ই পার পেয়ে যাই শুধু ঢাকার ইমিগ্রেশনের মহাজ্ঞ্যানি সাব-ইন্সপেকটর হুজুরদের দয়া কাড়তে পারিনা।
সপ্তাহদুয়েক আগে রেগেমেগে গিয়ে আমার পিতাকে খবর দিয়ে এনে নাম পরিবর্তনের এফিডেভিট করতে কোর্টে পাঠিয়েছিলাম। Md. থেকে Mohammed. দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট হুজুর প্রত্যাখ্যান করে দিলেন। আমার পিতা বললেন যে আমি আমার ছেলের নাম পাল্টালে আপনার সমস্য কি? হুজুর বললেন যে তিনি জবাব দিতে বাধ্য নন। তিনি কোনও মতেই এই এ্যাফডেভিট অনুমোদন করবেন না। হাজার হলেও ম্যাজিস্ট্রেট হুজুর বলে কথা। হাজার কদমবুছি ওনার চরনে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
একটা ইন্টারেস্টিং ছবি পেলাম। কাজি শফিওদ্দিন বাংলা ১৩০১ সনে লিখেছেন 'কাছাছোল আম্বিয়া'। একদম শুরুতে লিখেছেন, শ্রী শ্রী হকনাম। নিজের পরিচয় দিচ্ছেন, "আমি শ্রী কাজি সাহা ভিক/ বেনে কাজি শফিওদ্দিন।'
দারুন তথ্য। একটা কাজ করুননা, নামের আগে এই মোহাম্মদ লাগানোর ইতিহাসটা ঘাঁটাঘাটি করে একটা লেখা পোষ্ট করে দিন, অনেক কিছু জানতে পারব সবাই।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এই ব্যাপারটি সত্য হবার সম্ভাবনা আছে। কারণ আমি নিজেও পুরানো দলিলে ব্যাপারটি দেখেছি।
-----------মর্তুজা আশীষ আহমেদ
আররে বস! এই লেখাটা কেমনে জানি নজর এড়িয়ে গেছিল। পইড়া জটিল মজা পাইলাম। এমডি নিয়ে এই ভোগান্তি প্রবাসী প্রায় সকলেরই হয় বলে আমার ধারণা। আমাকে আমার এক ছাত্রী জিজ্ঞেস করেছিল---তুমি তো অলরেডি ডকটর, তাহলে আবার পিএইচডি করছ কেন????
নতুন মন্তব্য করুন