• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

‘ক’ ম্যাডামকে নিয়ে আমাদের কাব্য প্রতিভার (!!) শুরু এবং শেষ

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: বুধ, ১৮/০৩/২০০৯ - ৫:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নীড় সন্ধানী’র ‘জানিদুস্ত’ শিরোনামের লেখাটি পড়ছিলাম। কাকতলীয় ভাবে আমার জীবনেও এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল যা হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেল আর লিখে ফেললাম সচলায়তনের জন্য।

সময়টা বোধকরি ১৯৯১, আমি তখন টাঙ্গাইলের বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র। আমাদের শ্রেনীশিক্ষীকা এবং বাংলার শিক্ষীকা ছিলেন ‘ক’ ম্যাডাম (আমি আসল নামটা ব্যাবহার করতে চাচ্ছিনা)। ম্যাডাম তখন সবে মাত্র শিক্ষকতায় যোগদান করেছেন, ছ’মাসও বোধ হয় হয়নি।বেশ ভাল পড়াতেন বলে ছাত্রদের মাঝে তিনি খুবি জনপ্রিয় ছিলেন। তখন বয়সটাই যেন কেমন সব মেয়েদেরই কিছুনা কিছু ভাল লাগে, সে আমাদের থেকে বয়সে ছোটই হোক আর বড়ই হোক। ‘ক’ আপার যে জিনিসটা আমাদের ছাত্রদের কাছে আকর্ষনীয় হয়েছিল তা হলো তার ফ্যাশন সচেতনতা। আমরা অনেকদিন ধরে লক্ষ্য করে দেখলাম যে ‘ক’ আপা এক শাড়ি পারতে দু’দিন পড়েননা, পড়লেও অনেক দিন পর পর। একজন দু’জনের কাছ থেকে ব্যাপারটা ছড়িয়ে পড়ল শ্রেনীর সবার মাঝে, এবং আবলীলায় তার একটি ছদ্মনাম হয়ে গেল ‘ফ্যাশান আপা’। এই জাতীয় ব্যাপার স্কুলে হরহামেশাই ঘটে, আমাদের মোটামুটি সব শিক্ষকেরই এক একটা ছদ্মনাম ছিল এবং আমরা পরস্পরের সাথে শিক্ষকদের নিয়ে যখন আলাপ করতাম তখন ঐসব ছদ্মনামেই তাদেরকে ডাকা হত। একটি কথা বলে রাখা জরুরী এই সব ছদ্মনাম কিন্তু নিছক মজা করেই রাখা হত, আমরা সবাই শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করতাম মনে থেকেই এবং আজও করি। যাই হোক ‘ফ্যাশান আপা’ নাম দিয়েই আমরা ক্ষান্ত হলামনা, একদিন স্কুলে গিয়ে দেখি সবাই জটলা হয়ে কিছু একটা করছে। সামনে এগুতেই ব্যাপারটা বুঝা গেল, আমাদের অপু ( অপুর্ব সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র, এখন ইষ্ট ওয়েষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক) তার বাংলা খাতা খুলে বসেছে এবং কিছু একটা লেখার চেষ্টা করছে। আশেপাশের সবাই তাকে যথেষ্ট সহযোগীতা করছে ব্যাপারটিতে। অবশেষে সবার অংশগ্রহনে যা বের হল তা আর কিছু নয় ‘ফ্যাশান আপা’ শীর্ষক কবিতার প্রথম দু’টি লাইন যার সিংভাগ দাবীদার অপুঃ

‘ফ্যাশান আপা ফ্যাশান করে
নিত্য নতুন শাড়ী পরে’

আমি ব্যাপারটাকে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে নিয়ে আমার জীবনের প্রথম কাব্য প্রতিভার পরিচয় দিয়ে পরবর্তী দু’টি লাইন যোগ করলামঃ

‘কত শাড়ী আছে যে তার
কেউ জানেনা সচারচার’

হঠাৎ কোত্থেকে পিন্টু ( আব্দুল হামিদ খান, বুয়েটের তড়িৎ কৌশলের প্রাক্তন ছাত্র, এখন এরিকসনে কর্মরত) এসে জুটল। পিন্টুর মধ্যে আগে থেকেই কিছুটা কাব্য প্রতিভা (!!) ছিল। তার পরিচয় সে রাখল পরবর্তী দু’লাইনেঃ

‘তিনি আমাদের ক্লাস টিচার
মনে হয় যেন মার্গারেট থেচার’

যাই হোক এরি মধ্যে এসেম্বলীর বেল পড়ে গিয়েছে সবাই যথারীতি মাঠে গিয়ে জড়ো হলাম। একে একে শেষ হল প্রথম চারটি ক্লাস।টিফিন পিরিয়ডের সময় আমি অপুর খাতা থেকে কবিতাটি ছিড়ে দলা পাকিয়ে জানলা দিয়ে ফেলে দিলাম, কারন ক্লাসের কিছু ছেলেপেলে আমাদের এই কবিতা নিয়ে অন্যরকম আলোচনা করছিল। স্কুল জীবনে বোধ করি সবারই একটা নিজেদের দল এবং সেই সাথে তার প্রতিপক্ষ দল থাকে। সেই বিচারে আমাদেরও ছিল একটি প্রতিপক্ষ দল, তবে ব্যাপারটা গুরুত্ত্বপুর্ন কিছু ছিলনা কারন তা শুধুমাত্র সীমাবদ্ধ ছিল প্রাইভেট শিক্ষক দের নোট নিজেদের মধ্যে আদান প্রদান, ক্রিকেট খেলায় দুই দল, খুব বেশী হলে ক্লাসের ফাকে কথা বার্তা বললে ক্লাস ক্যাপটেন এর কাছে নাম জমা দেয়া এই সব আরকি। যথারীতি টিফিন শেষ করে স্কুলের মাঠে বসে দু’টাকার বাদাম খেয়ে ক্লাসে এসেছি, হঠাৎ শুনি ক্লাসের কিছু ছেলেপেলে নিজে দের মধ্যে কথা বলছে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে, কেউ বলছে ‘দিবে মাইর ইচ্ছা মত’, কেউবা বলছে ‘স্কুল থেকে বের করে দিবে’, আবার কেউ বলছে ‘তোরা কাজটি ভাল করিসনি কারন ওরাত শুধুমাত্র মজা করে লিখেছে কি দরকার ছিল ওটা ......’। যাই হোক বিস্তারিত জানলে পারলাম, আমরা যখন টিফিন পিরিয়ডে, তখন আমাদের প্রতিপক্ষ দলের কিছু ছেলে পেছনে গিয়ে আমার দলা পাকানো কবিতার কাগজটি খূঁজে বের করেছে এবং তা জমা দিয়েছে নুরুল আমীন সারের কাছে। নুরুল আমীন সার স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং আমাদেরকে খুব ভাল করেই চিনেন। কিছু ছেলের ভাষ্যমতে সার নাকি যার পর নাই বিষ্মিত হয়েছেন এবং ব্যাপারটি প্রধান শিক্ষককে অবহিত করেছেন। আমি কিছুতেই ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছিলামনা যে একটি নিছক মজার বিষয়কে এভাবে গুরুত্বপূর্ন করার কি মানে আছে। মনে মনে নিজেকে ধিক জানাচ্ছিলাম কেন কাগজটা নিজের কাছে রাখলামনা এই ভেবে।যাই হোক টিফিন পিরিয়ডের পরে ক্লাশ শুরু হয়েছে, ক্লাসের মাঝখানে একটি নোটিশ নিয়ে দপ্তরীর প্রবেশ। ক্লাসের স্যার সেটি পরে শোনালেন, ‘জাহিদ, হামিদ, আপুর্ব , তোমাদেরকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে ডাকা হয়েছে’। দুরুদুরু বুক নিয়ে আমরা তিনজন চললাম প্রধান শিক্ষকের রুমের দিকে। যেয়ে দেখি সেখানে ‘ক’ আপা আর নুরুল আমীন সারও আছেন। আমরা মাথা নিচু করে তিনজন ঢুকলাম, দেখি সারের টেবিলে আমাদের কবিতার দলাপাকানো কাগজটি। বুঝতে বাকী রইলনা কপালে কি আছে, উত্তম মধ্যমত বটেই আরো অনেক কিছু হয়ত হবে। আমাদের কথা বলার তেমন সুযোগ পেলামনা আর পেলেও বোধকরি বলার কিছু ছিলনা। হেড সার হাতে একটা জোড়া বেত নিয়ে শুরু করলেন তিনজনকে লাইনে দাঁড় করিয়ে।কতক্ষন মারলেন মনে নেই, কারন বন্ধুদের (অথবা শত্রুদের) এহেন জঘন্য কর্মে আমরা তখন বাকরুদ্ধ এবং ‘ক’ আপার সামনে লজ্জায় দু’চোখ বন্ধ। শুধু মনে আছে আমাদের তিনজনকে হেডসার ঠেলে দিলেন ‘ক’ আপার পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার জন্য। মোটামুটি দুঃসহ একটা সময় কাটানোর পরে আমরা তিনজন মাঠ পেরিয়ে ফিরে আসলাম ক্লাসে। আমরা ঢুকার পরে কিছু মুখ তখন হাসি আর মজাতে মশগুল আর বাকীরা নিশ্চুপ। কোন মতে সেই ক্লাসটি শেষ হল। পরের ক্লাসটি ছিল সম্ভবত বিজ্ঞানের। কিন্তু আমাদেরকে অবাক করে দিয়ে ক্লাসে আসলেন ‘ক’ আপা। আমার মনে আছে পুরো ক্লাসটা জুড়ে তিনি আমাদের কিছু কথা শুনিয়েছিলেন যা আমি হয়ত জীবনেও ভুলবনা, ইচ্ছে করছিল মাটি ফাঁক করে নিচে চলে যাই। একটা ক্লাসকে অনন্ত সময় বলে মনে হচ্ছিল। আসলেই আমাদের বলার মত কিছু ছিলনা কারন ব্যাপারটা আমরা করেছিলাম নিছক মজার ছলে, যদিও সেট বুঝানোর সাধ্য আমাদের ছিলনা। এর পরবর্তী কয়েকটি দিন ছিল আমাদের জন্য মরনসম, কারন যে শিক্ষকই ক্লাসে আসে প্রথমেই উল্লেখ করে,

‘জাহিদ, হামিদ, অপুর্ব তোমরা একটু দাঁড়াওত, তোমাদেরত টিসি হয়ে যাবে’

সরকারী বিদ্যালয়ে যারা পরেছেন তাদের মনে থাকার কথা, উচ্চমাধ্যামিক বিদ্যালয়ে ‘টিসি ( ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) প্রদানের থ্রেট’ কত বড় ব্যাপার ছিল।ওই পর্যায়ের সর্বোচ্চ শাস্তি ওটাই ছিল। আমরা আগেও দেখেছি বিদ্যালয়ে কেউ আইন শৃংখলা ভাংগলে তার শাস্তি হত ‘টিসি প্রদান’।তার থেকে বেশী ভয়ে ছিলাম যদি বাসা থেকে বাবা মাকে ডেকে পাঠায়। যাই হোক কয়েকদিন বেশ দুরুদুরু বুকেই ক্লাস করতাম এবং টিফিন পিরিয়ডে তিনজন মিলে আলোচনা করতাম বাসায় চিঠি পাঠালে কিভাবে তা ম্যানেজ করব।যাই হোক পরে শ্রেনীর প্রথম দিকের ছাত্র হবার কারনেই বা অন্য কোন কারনেই হোক আমাদের আর কোন শাস্তি হয়নি। কিন্তু মনে আছে যতদিন বিদ্যালয়ে ছিলাম কখনই ‘ক’ আপার সাথে স্বাভাবিক হতে পারিনি আমরা সেই সাথে আমাদের সাথেও স্বাভাবিক হতে পারেননি ‘ক’ আপা। এসএসসি তে ভাল ফলাফল করার পরও একবার তার সাথে দেখা করার সাহস হয়নি।

শ্রদ্ধেয় ‘ক’ আপা আপনি যেখানেই থাকুননা কেন, একটি ব্যাপার বলে রাখি আমদের ঐ ব্যাপারটি ছিল নিছক মজার, এর বেশী কিছু নয়, আমরা আপনাকে আগেও যেমন শ্রদ্ধা করতাম, আজও করি আর ভবিষ্যতেও করব। তবে আমি কখনই ক্ষমা করতে পারবনা আমাদের বন্ধুরূপী সেই শত্রুদেরকে যারা একটি সামান্য ব্যাপারকে অতিরঞ্জিত করে আমাদেরকে সেই লজ্জার মধ্যে ফেলেছিল।

বিঃদ্রঃ আমাদের কাব্য প্রতিভার অপমৃত্যু সেদিনই ঘটেছিল, তার পরে ভুলেও কোনদিন কবিতায় হাত দেইনি।


মন্তব্য

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

আপনার পিঠের উপর স্যারের বেতের শব্দটা আমি এখান থেকেও অনুভব করছিলাম।
'টি.সি.' শব্দটা শুনে নষ্টালজিক হয়ে গেলাম। ভুলেই গিয়েছিলাম তখন এই শাস্তিটাকে কী সাংঘাতিক ভয় পেতাম।

সচল জাহিদ এর ছবি

প্রিয় নীড় সন্ধানী, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সহমর্মীতার জন্য ।আমাদের কাছে হেড সারের সেই মারের কষ্ট যতটা ছিল তার থেকেও বেশী ছিল অপমান আর লজ্জা। আমরা সবাই 'ক' আপার খুবি প্রিয় ছাত্র ছিলাম, না জানি সেদিন তিনি আমাদের সম্পর্কে কি ভেবেছিলেন। সত্যি কথা বলতে কি ব্যাপারটা নিয়ে আমি আজও একরকমের অপরাধবোধে ভুগী।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- 'ক' আপার ইয়ে মাজাল? (রেগেটং)
তাঁরে কইষ্যা মাইনাস জানাইলাম তিন ভবিষ্যত কোবি'র উজ্জল ভবিষ্যত ধূলিস্যাত করে দেয়ার জন্য।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সচল জাহিদ এর ছবি

আমি সেই সাথে আরো বেশী মাইনাস জানাইতেছি আমার বন্ধুবদ শত্রুদেরকে যাদের 'স্থুল' ষট+যন্ত্রের স্বীকার হয়েছিলাম আমরা ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

কীর্তিনাশা এর ছবি

ক' আপাকে আমি কইষ্যা মাইনাস দিলাম। সেই সাথে অন্য শিক্ষকদেরও যারা শিশুদের কাব্য প্রতিভাটা না দেখে খালি ব্যাতাইলেন। আমাদের দেশের শিক্ষকরা কবে যে শিক্ষার কাজে বেতের ব্যাবহারটা ছাড়তে পারবেন ??

আপনার ক আপার মত আমাদের ছিল একজন ম্যাডোনা আপা। তিনি মোটেই এ নাম নিয়ে ভাবিত ছিলেন না। বরং আমাদের সাথে মজাই করতেন এ নিয়ে। (হাসি)

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

সচল জাহিদ এর ছবি

ওহ আজও সেই শিক্ষকদের বেতের বাড়ির কথা ভুলতে পারিনা।তবে এই বেত নিয়ে এক মজার কাহিনী আছে।আমরা ১৯৯৪ এর এসএসসি'র ব্যাচ। ২০০৪ এ আমাদের দশ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে আমরা সবাই স্কুলে আয়োজিত হয়েছি। পরিকল্পনা করলাম যে আমরা সেই আগের দিনের মত এসেম্বলীতে দাড়াব, জাতীয় সঙ্গীত, কোরআন পাঠ, গীতা পাঠ, শপথ পাঠ করে লাইন করে স্কুলের হলরুমটাতে জমায়েত হব। ত আমরা মজা করেই যে শিক্ষক আমাদের স্কুলে থাকার সময় অনেক মাইর দিত তার হাতে একজোড়া বেত দিয়েছি এবং বলেছি,

' স্যার আজকে আমরা কেউ ঠিকমত কিছু না করলে মাইর দিয়েন'।

পরে বক্তব্য রাখার সময় আগের দিনের কথা মনে করে সেই সারের সে কি কান্না, আমরাও আবেগাপ্লুত হয়ে সবাই গিয়ে সারকে জড়িয়ে ধরলাম। আসলে মাঝে মাঝে মনে হয় সেই মার গুলি অমানবিক ছিল আবার মাঝে মাঝে মনে হয় দরকার ছিল।

ইসস আমাদের 'ক' ম্যাডাম যদি আপনাদের ম্যাডোনা ম্যাডামের মত হতো !!!
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

লীনা ফেরদৌস এর ছবি

Lina Fardows

পড়াশুনা শেষ করে আমি কিছুদিন কলেজ়ে শিক্ষকতা করেছি, আমারো এরকম কিছু অভিজ্ঞতা আছে, তবে সেই সব দুষ্ট ছাত্ররা পরে আমার খুব বাধ্যগত হয়ে গিয়েছিল। এখনও আমি অনেক সম্মান পাই ওই দুষ্ট ছাত্রগুলির কাছ থেকে।

Lina Fardows

সচল জাহিদ এর ছবি

লীনা , আপনি ভাগ্যবতী এজন্য যে ছাত্রদের সম্মান পেয়েছেন ভয় থেকে নয় বরং ভালবাসা থেকে।আমি নিজেও শিক্ষকতা করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমি একটা কথা বিশ্বাস করি এবং মাঝে মাঝে বলতামও ছাত্র ছাত্রীদেরকে যে,

'শিক্ষক হিসেবে আমি সম্মানটা চাই ভালবাসা থেকে ভয় থেকে নয়'

আসলে আমরা বাংলাদেশের অধিকাংশ ছেলেমেয়েরাই স্কুল কলেজে স্যারদেরকে সম্মান করি ভয় থেকে, ভালবেসে সম্মান করার যোগ্য শিক্ষকদের সংখ্যা আসলেই নগন্য।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বাংলায় আপনার গ্রেড কত ছিলো ভাই ?? আমার মনে হয় এ+...
মজার লেখা।

সচল জাহিদ এর ছবি

নারে ভাই, এসএসসি তে '৫০০ নম্বরের প্রশ্ন ব্যাঙ্ক' থাকাতেও লেটার পাইনাই আর এইচএসসি তে ত টেনে টুনে ষাটের ঘরে গিয়েছিলাম। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

স্কুলে থাকলে হেড স্যারের এরকম জোড়া বেত খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমারো হয়েছিল। তবে সেটা অন্য আরেকটা কারণে।

সচল জাহিদ এর ছবি

সচলদের জোর দাবী 'আমরা সেই অভিজ্ঞতা সবাই শুনতে চাই' । একটা লেখা হয়ে যাকনা সেই ঘটনা নিয়ে।

অথবা একটা প্রস্তাব হতে পারে এরকমঃ

আমাদের সবারই স্কুলের শিক্ষকদের নিয়ে মজার অথবা কষ্টের অভিজ্ঞতা আছে।সেই সব 'কাহিনী' নিয়ে হতে পারে একটা 'সচলায়তন ইবুক' যার শিরোনাম হতে পারে 'স্কুলশিক্ষকদের কথকথা'

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কিছু কিছু লেখা ফিরিয়ে নিয়ে যায় কৈশোরের সেই দিনগুলোতে।
চমৎকার লাগলো আপনার স্মৃতিচারণ।
আপনার প্রস্তাবটার পক্ষে ভোট দিলাম।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ। সচলের মডুরা আমার প্রস্তাবটি ভেবে দেখলে খুশি হব।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রানা মেহের এর ছবি

‘তিনি আমাদের ক্লাস টিচার
মনে হয় যেন মার্গারেট থেচার’

এরকম জটিল কাব্যপ্রতিভাধারীকে সচলে আনার জোর দাবী জানাই :-)
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সচল জাহিদ এর ছবি

আমার এই গুনধর বন্ধুটির আসলেই কিছুটা কাব্যপ্রতিভা ছিল। বুয়েট ছাড়ার পর ওর সাথে দেখা সাক্ষাৎ কমই হয়। আপনার সাথে আমিও সেই দাবী জানাই ।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

s-s এর ছবি

আমাদের এক টিচারের নাম আমরা দিয়েছিলাম মডার্ণ ব্রেড। ক"দিন আগে শুনেছি উনি মারা গেছেন। ইস্! এতো খারাপ লেগেছিলো শুনে!

আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সুফিয়ান স্যার মারতো না, আজিব আজিব সব শাস্তি দিতো। তার উপরে মেজাজ চরম বিলা... ক্লাশ টেনে উঠে মনে হলো এই অত্যাচার আর সহ্য করা যায় না। তিনি ইংলিশ পড়াইতেন।

এক দুপুরে (সকালে মেয়েদের) স্কুলে গিয়া দরখাস্ত লেখলাম হেডস্যারের কাছে। খুব নিরীহভাবে বললাম যে সুফিয়ান স্যার আমাদেরকে পড়াইতে পারে না, অন্য টিচার দেওয়া হোক। সেখানে স্বাক্ষর করানো হইলো ক্লাশের সব ছাত্ররে। শুধু ক্যাপ্টেন রুবেল করলোই না। অন্য সবাই যে সানন্দে করছে তা না। কিন্তু স্কুলের পরে যেহেতু সুস্থ শরীরে বাড়িতে ফিরতে হবে, তাই...

এই পত্র জমা দিয়া আমরা চুপ করে বসে রইলাম। স্কুলে শুরু হইলো বিরাট কাণ্ড। আমাদের ক্লাশ নিতে কেউ আসে না। স্কুলের কার্যকরী কমিটির মিটিং হইলো অফিস বিল্ডিংয়ে। তারপর বলা হইলো টিফিন পিরিয়ডের পরে সুফিয়ান স্যার আমাদের ক্লাশ নিবে, এবং সেই ক্লাশে উপস্থিত থাকবো ম্যানেজিং কমিটির ৪সদস্য, হেডস্যার ও সিনিয়র শিক্ষকরা। তারা দেখবো আসলেই সুফিয়ান স্যার ক্লাশ নিতে পারে কী না?

ক্লাশ শুরু হইলে আমরা চারদিক থেকা উপর্যুপরী প্রশ্ন করা শুরু করলাম। পুরা যা তা অবস্থা। সবাই চলে গেলো। আমাদের কোনো শাস্তি হইলো না, কিন্তু সুফিয়ান স্যারকে আমাদের ক্লাশ থেকে বিরত রাখা হলো। তারপর শুরু হইলো সেই স্যারের বাড়িতে ভূতের উপদ্রব। মানে রাতের বেলায় তার টিনের চালে কারা যেন খালি ঢিল মারে... (চোখটিপি)

এক রাতে সুফিয়ান স্যার এলাকা ছেড়ে ভাগলো।

লোকটার জন্য এখন মাঝে মাঝে খুব কষ্ট লাগে। শিক্ষক হিসেবে তার জন্য এটা নিশ্চয়ই খুব অপমানকর ছিলো... (মনখারাপ)
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সচল জাহিদ এর ছবি

দারুন অভিজ্ঞতা সেই সাথে বিরলও বটে। অনেকটা 'দীপু নাম্বার টুর' সেই ড্রিল টিচারকে শাস্তি দেবার মত। তবে আপনাদের একতা আর সাহসিকতা প্রসংসা করার মত। এই সব ক্ষেত্রে যা হয় তা হল কিছু আঁতেল পোলাপান বিট্রে করে ফেলে শেষ সময়ে। সেই সাথে স্কুল কমিটির পদক্ষেপও প্রসংসার দাবী রাখে কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ছাত্রদের এই সব অভিযোগ খুবি তাচ্ছিল্য ভরে নেয়া হয়।

লোকটার জন্য এখন মাঝে মাঝে খুব কষ্ট লাগে। শিক্ষক হিসেবে তার জন্য এটা নিশ্চয়ই খুব অপমানকর ছিলো.

আসলে কষ্ট লাগলেও এটা তার হয়ত প্রাপ্য ছিল। শুধু মাত্র ছাত্রদের নীরব অভিমানের কারনে এই জাতীয় শিক্ষকেরা বেচে যায় সবসময়।সবার উচিৎ আপনাদের উদাহরল অনুসরণ করা।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আপনার পোস্ট পড়েই আরেকবার মনে পড়ল কিভাবে আমাদের স্কুল জীবনে সৃজনশীলতাকে ধ্বংস করা হয় ।

এই কবিতাকে সিরিয়াসলি নেয়ার মতো বেকুব টিচার সব স্কুলেই ডজন ডজন আছে , এটাই হতাশার কথা।

তুলিরেখা এর ছবি

সচারচার হবে না, কথাটা হলো সচরাচর।
মিল দিতে গেলে লাইনটা হবে-
"কত শাড়ী আছে যে তার,
কেউ জানে না সে সমাচার!"
এ হে, কবিতায় এরম ভুল দেখেই ক্ষেপে গেছে। :-)
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

সচল জাহিদ এর ছবি

এইডাত ভাইবা দেখি নাই । তাইত কই ম্যাডাম এত ক্ষেপছিল ক্যান, এমননিতেই বাংলার ম্যাডাম তার পরে আবার বানান ভুল!!

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তানবীরা এর ছবি

:( :-(

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।