বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে সচলায়তনে “আন্তর্জাতিক পানি দিবস ২০০৯-‘আন্তঃসীমান্ত পানি’এবং বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট” শিরোনামের লেখাটি প্রকাশিত হবার পরে অনুরোধ আসে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এ যাবৎ পানিসম্পদ বন্টন নিয়ে সম্পন্ন আলোচনাগুলো সম্পর্কে একটা ক্যালেন্ডার প্রকাশের। সেই আঙ্গিকেই মূলত এই সিরিজ লেখার প্রয়াস। মোট চারটি থেকে পাঁচটি লেখা থাকবেঃ প্রথম দু’টি পর্বে প্রারম্ভিক তথ্যসহ ১৯৯৬ সালের গঙ্গা চুক্তির পুর্বের ইতিহাস তুলে ধরা হবে, তৃতীয় পর্বে চুক্তির বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হবে এবং চুতুর্থ ও শেষ পর্বে চুক্তি পরবর্তী পরিস্থিতির তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষন করা হবে। মুল লেখাটির বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে বিশিষ্ট পানি বিশেষজ্ঞ ডঃ আইনুন নিশাতের কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান প্রবন্ধের বিশেষ কিছু অংশের অনুবাদ, তাই শুরুতেই নিশাত সারকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগটুকু হারাতে চাইনা।
প্রথম পর্ব-প্রারম্ভিক তথ্য ও চুক্তিপূর্ব ইতিহাস (১৯৫১-১৯৭৬)
গঙ্গা-পদ্মা
আমাদের দেশে যাকে আমরা বলি প্রমত্তা পদ্মা সেটারই ভারতের অংশের নাম গঙ্গা। এই পদ্মা নদীর দু’ধারের জেলেপাড়া নিয়েই লেখা হয়েছে মানিক বন্দোপধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, পদ্মার মাঝিদের নিয়ে গাঁথা হয়েছে গান ‘সর্বনাশা পদ্মা নদীরে তোর কাছে সুধাই’; নজরুলের ‘পদ্মার ঢেউরে’ গানেও বধুয়ার রূপের সাথে তুলনা করা হয়েছে পদ্মার ঢেউএর ।গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করে শুভ্র হওয়া বাঙ্গালীর কাছে তাই গঙ্গা বা পদ্মা শুধু একটি নদীর নামই নয় বরং তা আমাদের শাশ্বত বাঙ্গালী সংস্কৃতির ধারক ও বাহকও বটে।
গঙ্গার চুক্তির ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে এই নদীটির কিছু প্রকৌশলগত তথ্য দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। পার্বত্য অঞ্চলে সাধারনত এক বা একাধিক উপনদী মিলে একটি মূল নদীর ধারা উৎপন্ন হয়। হিমালয় পর্বতমালার গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন ভাগীরথী নদী আর নন্দা দেবী, ত্রিশুল, ক্যামেট ইত্যাদি হিমবাহ থেকে উৎপন্ন অলকানন্দা এই দুটি উপনদী মিলেই গঙ্গার মূল ধারাটির সৃষ্টি হয়েছে [১,২]। পরবর্তীতে জাহ্নবী নদীও এর সাথে মিলিত হয়ে সম্মিলিত প্রবাহ হিমালয়ের গিরীসঙ্কট পার হয়ে ভারতের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে[২]। বাংলাদেশের গোয়ালন্দে এসে এটি যমুনার সাথে মিলিত হয়েছে এবং এই সম্মিলিত ধারাটি পরে আবার চাঁদপুরে ‘আপার মেঘনার’ (নদী-প্রকৌশলগত ভাবে সুরমা আর কুশিয়ারার মিলিত প্রবাহই ‘আপার মেঘনা’ বা ‘উপরের দিকের মেঘনা’ নামে পরিচিত) সাথে মিলিত হয়ে ‘লোয়ার মেঘনা’ (‘নিচের দিকের মেঘনা’ যা আমাদের কাছে মুল মেঘনা নদী নামে পরিচিত) নামেই বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। যদিও বাংলাদেশে প্রবেশের পর থেকেই একে পদ্মা নদী নামে ডাকা হয় কিন্তু নদী-প্রকৌশলগত ভাবে গোয়ালন্দের আগ পর্যন্ত এর নাম মুলত গঙ্গা আর গোয়ালন্দ থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত অংশের নাম পদ্মা [২]।
ফাঁরাক্কা ব্যারেজ প্রকল্প
ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর নির্মান করা কলকাতা বন্দর ব্রিটিশ ভারতের সবচেয়ে পূরাতন বন্দর ও একসময়কার প্রধান বন্দর ছিল। হুগলী নদীর তীর ঘেঁষে এই কলকাতা বন্দরে ষাটের দশকে নদী থেকে বয়ে আসা বিপুল পলি বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বাধা সৃষ্টি করে। যার প্রতিকারে ভারত সরকার একটি প্রকল্প হাতে নেয় ১৯৫১ সালে, যাতে গঙ্গা নদীতে ব্যারেজ নির্মান করে একটি বিকল্প খাল দিয়ে গঙ্গার পানিকে হুগলী নদীতে প্রবাহিত করে বন্দরের সঞ্চিত পলিকে স্থানচ্যুত করার পরিকল্পনা নেয়া হয়। সেই পরিকল্পনা পরিশেষে বাস্তবায়িত হয় ১৯৭৪-৭৫ সালে ‘ফারাক্কা ব্যারেজ’ নামে।
গঙ্গা চুক্তির ইতিহাস
১৯৫১ সালে ফারাক্কা ব্যারেজের পরিকল্পনা প্রকাশের পর থেকে শুরু হওয়া বিতর্ক, আলোচনা ও সংঘাতের অবসান ঘটে ১৯৯৬ সালে গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তির মাধ্যেমে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার রয়েছে এক বিশাল ইতিহাস যা আমাদের দেশের পানি বা পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের জানা থাকলেও সাধারন মানুষদের বেশীরভাগই এই বিষয়ে অজ্ঞ, ফলে সৃষ্টি হয় ভূল বোঝাবুঝি। বিখ্যাত পানি বিশেষজ্ঞ ডঃ আইনুন নিশাত ১৯৯৬ সালে তার “Impact of Ganges Water Dispute on Bangladesh” শীর্ষক প্রবন্ধে [৩] গঙ্গার পানি চুক্তির এই ৪৫ বছরের ইতিহাসকে ছয়টি পর্যায়ে ভাগ করেছেন। এই পর্যায়গুলির অনুবাদকৃত সারসংক্ষেপ নিচে দেয়া হলঃ
প্রথম পর্যায় (১৯৫১-১৯৭৪)
এই পর্যায়ের মূল লক্ষ্য ছিল ব্যারেজ নির্মানের পূর্বেই গঙ্গার পানির সুষ্ঠু বন্টন নিশ্চিত করা। ফলশ্রুতিতে মূল আলোচনা কেন্দ্রীভুত ছিল বাংলাদেশ ও ভারতের নিজস্ব দাবীদাওয়া এবং তার যৌক্তিকতার মধ্যে।বাংলাদেশ ও ভারত পরস্পর বিপরীতে অবস্থান নেয়। বাংলাদেশ গঙ্গার পানির সম্পূর্ন প্রবাহের দাবীতে অটুট থাকে এবং দাবী করে যে ফারাক্কার আরো উজানে অবস্থিত জলাধার সমুহ ভারতের প্রয়োজন মেটেতে যথেষ্ট, সেই সাথে গঙ্গায় ব্যারেজ নির্মান করে এর প্রবাহকে বিকল্প খাল দিয়ে হুগলী নদীতে স্থানান্তর করে কলকাতা বন্দরের পলি সমস্যা সমাধানের কারিগরী দিকের পরিকল্পনারও সমালোচনা করে। অন্যদিকে ভারত দাবী করে যে বাংলাদেশের আসলে খুব বেশী পরিমান পানি প্রবাহের দরকার নেই কারন গঙ্গায় প্রবাহিত পানির সিংহভাগই বঙ্গোপসাগরে অপচয় হয়।ভারত এই বলে নিশ্চিত করে যে ব্যারেজ নির্মানের পুর্বেই বাংলাদেশ ও ভারতের স্ব স্ব হিস্যা চুড়ান্ত করা হবে। ১৯৭২ সালে আন্তঃসীমান্ত নদীসমুহের উন্নয়নের দিককে সামনে রেখে সংযুক্ত নদী কমিশন (জ়েআরসি) প্রতিষ্ঠিত হয়।
দ্বিতীয় পর্যায় (১৯৭৪-১৯৭৬)
যেহেতু গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ের সমস্যার উৎপত্তি তাই এই পর্যায়ে ‘গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির’ বিষয়টি সামনে আনা হয়। বাংলাদেশ প্রস্থাব করে যে ভারত বর্ষা মৌসুমের বিপুল পরিমান পানিকে উজানের জলাধারে সঞ্চিত করে তা শুস্ক মৌসুমে ব্যাবহার করতে পারে, অন্যদিকে ভারত একটি সংযোগ খালের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র (বাংলাদেশে যমুনার উজানে মূল নদীটির নাম ব্রহ্মপুত্র) থেকে বিপুল পরিমান পানি গঙ্গায় নিয়ে আসার প্রস্তাব করে। এই পর্যায়ে গঙ্গার পানি বন্টনের সমীকরন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ব্যার্থ হয়। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের সাথে একটি অন্তর্বর্তীকালীন মতৈক্যের ভিত্তিতেই ব্যারেজের কার্যক্রম শুরু হয়।মতৈক্যটি কিছুটা এরকমঃ ভারত বিকল্প খাল দিয়ে ১১,০০০ থেকে ১৬,০০০ কিউসেক ( ১ কিউসেক=প্রতি সেকেন্ডে ১ ঘনফুট পানির প্রবাহ) পানি গঙ্গা থেকে অপসারন করবে আর বাকী প্রবাহ বাংলাদেশে চলে যাবে। এই পরীক্ষামুলক পানিবন্টন মাত্র ৪১ দিন স্থায়ী হয়।১৯৭৬ সালে আগের মতৈক্যের নবায়ন না করে ভারত একতরফা ভাবে গঙ্গার পানি অপসারন করে যার ভয়াবহ প্রভাব পড়ে পদ্মানদী কেন্দ্রিক বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপর এবং একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৭৭ সালে। বাংলাদেশ বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপন করে এবং সাধারন পরিষদ এক্ষেত্রে একটি মতৈক্যের বিবৃতি দেয় যার ফলশ্রুতিতে বিষয়টির একটি সুষ্ঠূ সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও ভারত ঢাকাতে মন্ত্রীপরিষদ পর্যায়ের বৈঠকের ব্যাপারে একমত হয়।
( চলবে )
তথ্যসুত্রঃ
[১] উইকিপিডিয়া
[২] বাংলাপিডিয়া
[৩] অসিত বিশ্বাস ও টি হাশিমুতো সম্পাদিত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস কতৃক প্রকাশিত “Asian International Waters, From Ganges-Brahmaputra to Mekong” শীর্ষক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত
[৪] ডঃ আইনুন নিশাত ও এমএফকে পাশা কতৃক লিখিত প্রবন্ধঃ “A Review of the Ganges Treaty of 1996” যা ২০০১ সালে “Globalization and Water Resources Management: The Changing Value of Water” শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থাপিত হয়।
ছবিঃ আন্তর্জাল
মন্তব্য
এ বিষয়ে কৌতুহল ছিল অনেক আগে থেকেই। আপনার এই সিরিজ সেটা মেটাতে পারবে আশাকরি।
সাগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম পরের পর্বের জন্য। পরিশ্রম করে এই লেখার প্রকল্প হাতে নেওয়ার জন্য আগেই ধন্যবাদ জানিয়ে রাখি।
শুভেচ্ছা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আসলে আমারও এই বিষয়ে লেখার ইচ্ছে ছিল। নিশাত স্যারের এই প্রবন্ধগুলো আমি পড়েছিলাম বেশ আগে, আলসামো করে আর অনুবাদ করা হয়নি। এইবার সচলায়তনের পাল্লায় পড়ে করা হল। আপনাদের উৎসাহ পেয়ে ভাল লাগছে ।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আগ্রহ জাগছে। ফারাক্কা ব্যারাজের সাময়িক ফল ভারত পেলেও তা এখন অতি বন্যার কারণ হচ্ছে সেখানে। গঙ্গার প্রবাহ একদিক থেকে বঙ্গীয় বদ্বীপ গঠন ও কৃষির বিস্তারে ভূমিকা রেখেছিল। এই নদীব্যবস্থাই এক অর্থে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের সজীবতার উৎস ছিল। আজ তার ধীর কিন্তু অনিবার্য শুষ্কায়ন ও মৃত্যু ঘটছে।
এই নদী ব্যবস্থা নিয়ে সম্প্রতি ভারতীয় নদী বিজ্ঞানী কপিল ভট্টাচার্যের একটি বই বাংলাদেশে সংহতি প্রকাশন প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে বইটি একটা গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আর এখন পড়ছি Sir William willcocks এর Lectures on the Ancient System of Irrigation in Bengal and its application to modern problems.
তাঁর জন্মও এখানে এক সেচখালের পাশে কর্মীদের তাঁবুতে। বাংলার নদীব্যবস্থা এবং তার সঙ্গে এখানকার কৃষি ও সমাজের অভিযোজন বিষয়ে অসাধারণ প্রজ্ঞা অর্জন করেছিলেন তিনি। তাঁর মিসর ও ইরাকে পানিব্যবস্থাপনাই অসাধারণ অবদান রেখেছিলেন এই ব্রিটিশ নদীবিজ্ঞানী। ব্রিটিশ আমলে তাঁকে আনা হয় বাংলার নদীব্যবস্থাপনার কাজে। তিনিই প্রথম আবিষ্কার করেন যে, মোগল ও সুলতানি আমলে এখানে স্থানীয়ভাবে যে নদী-জ্ঞান গড়ে উঠেছিল এবং সে অনুযায়ী ওভারফ্লো ইরিগেশনের যে পদ্ধতিটি খাল-নালা খননের মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়েছিল, সেটিই মোক্ষম। তিনি এই ব্যবস্থাকে রক্ষা ও সংস্কারের কথা বলেছিলেন। আমাদের কিছু কিছু ছোটো নদীও যে গ্রামসমাজ আর রাষ্ট্রের যৌথশ্রেমে খননকৃত তাও তিনি দেখান।
প্রাচীন বাংলার কৃষি সমাজের অনেক সামাজিক রীতি, পারস্পরিক সহযোগিতার সামাজিক অভ্যাস ইত্যাদিসহ ভাষা ও সংস্কৃতির অনেক উপাদান যে ঐ নদীব্যবস্থা থেকে জন্মেছিল, এটাও তিনি তুলে ধরেন। ব্রিটিশ সরকার তাঁর সঙ্গে দ্বিমত করে। প্রতিবাদের তিনি পদত্যাগ করে চলে যান।
আজ প্রমাণ হচ্ছে বাঁধ-পোল্ডার পদ্ধতি বাংলাদেশের নদী ও কৃষি উভয়েরই ঘাতক। বাংলাদেশের ভেতরে যারা পানির বাণিজ্যিকায়ন ও ক্ষতিকারি বাঁধ প্রযুক্তির পুরোধা তাদের মধ্যে আইনূন নিশাত একজন। এখন তিনি সুর পাল্টেছেন, কারণ বিষয়টি উন্মোচিত। এখন নেমেছেন জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্লাইমেট চেঞ্জ ব্যবসার সঙ্গে। ইনিই ফুলবাড়ীতে কয়লাখনি নির্মাণে পরিবেশের ক্ষতি হবে না বলে পরিবেশ ছাড়পত্র পাইয়ে দেওয়ার কনসালটেন্সি করেছিলেন। দেশে আইনের শাসন থাকলে এধরনের লোকের বিচার হতো। কিন্তু গরুর দোয়ায় তো আর শকুন মরে না!
সে যাই হোক, আপনার আলোচনা আগাক। সাধুবাদ জানাই।
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
ফারুক ভাই ধন্যবাদ আপনার আলোচনার জন্য ।বুয়েটের পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের শিক্ষক হবার কারনে বেশ কিছু স্বল্পমেয়াদী কর্মশালায় যোগদান করবার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই বলছি, আসলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনেক কার্যক্রম এবং পরিকল্পনার এখন পরিবর্তন ঘটেছে। আগের পানিসম্পদ পরিকল্পনা আর এখনকার পরিকল্পনার মধ্যে অনেক ফারাক, কি কারনে তার কিছুটা ব্যাখ্যা করছিঃ
স্বাধীনতার পরে যখন বাংলাদেশের খাদ্য প্রয়োজন তখন কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল 'অধিক খাদ্য ফলাও'। সুতরাং এই স্লোগানকে সামনে রেখে তখন বাংলাদেশে বড় বড় অনেক পানিসম্পদ প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে যেমন জি কে প্রকল্প (গ্যাঞ্জেস কপোতাক্ষ প্রকল্প), তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্প। এই সব প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল সেচ। এর কিছু ভাল দিকও ছিল বিশেষ করে তিস্তা ব্যারাজ উত্তর বঙ্গের রংপুর, দিনাজপুর এই সব এলাকায় ফসল উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রেখেছিল।তখন কিন্তু পরিবেশ নিয়ে আমরা এতটা সচেতন ছিলামনা। এখন গবেষনায় দেখা যাচ্ছে পোল্ডার( চার দিকে বাঁধ দিয়ে সেচের মাধ্যমে আবাদী জমি সংরক্ষন) ভিত্তিক সেচ প্রকল্প আমাদের জন্য আশীর্বাদ নয় বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা অভিশাপ। তাই পরিকল্পনারও পরিবর্তন ঘটেছে।
আরো একটি উদাহরন দিলে ব্যাপারটি পরিস্কার হবে। বন্যা বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আগের পরিকল্পনা ছিল 'বন্যা নিয়ন্ত্রন' কিন্তু দেখা গিয়েছে বাংলাদেশে ভূপ্রাকৃতিক ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয় আর সম্ভব হলেও তা সাধ্যে কুলাবেনা। তাই এখনকার স্লোগান 'বন্যা ব্যাবস্থাপনা' বা 'বন্যার সাথে বসবাস, অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ড যখন ছিলনা সেই যুগ যুগ ধরে বাংলার মানুষ কিন্তু বন্যার সাথেই বসবাস করে এসেছে। যে এলাকায় বন্যা হয় সেখানে উঁচু করে বাড়ী, রাস্তাঘাট বানাত, পুকুরে নৌকা ডুবিয়ে রাখত গ্রীষ্মকালে যেন তা বর্ষায় ব্যবহার করা যায়। কিন্তু যেই বন্যার জন্য বাঁধ নির্মান শুরু হল সেই থেকে গ্রামের মানুষ আর উঁচু করে বাড়ি বানায় না কারন জানে যে বাঁধ আছে, সুতরাং কৃত্রিম বাঁধ যখন ভেঙ্গে যায় তখন মানুষের দুর্গতির আর সীমা থাকেনা কারন মানুষ তার জন্য প্রস্তুত থাকেনা।
উপরের দু'টি উদাহরন থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে বিজ্ঞানের বা প্রযুক্তির গবেষনার পরিবর্তনের সাথে সাথে পরিকল্পনারও পরিবর্তন হতে পারে। তাই এটা প্রমানিত যে যুগ যুগ ধরে প্রাকৃতিক ভাবে প্রাপ্ত শিক্ষা প্রযুক্তির গবেষণার গুরুত্ত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করতে পারে। এজন্যই এখন আমাদের নতুন স্লোগান 'সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা' অর্থ্যাৎ, পানি ব্যবস্থাপনা একটি মৌলিক জিনিস নয় তার সাথে যুক্ত আছে যুগ যুগ ধরে মানুষের অভিজ্ঞতা, পরিবেশ, জীববিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, নৃতত্ত্ব, সংস্কৃতি, আইন, ইত্যাদি। তাই এখন পানি সম্পদ বিষয়ক বড় বড় প্রকল্পে যেমন প্রযুক্তিবিদরা থাকে সেই সাথে নিয়ে আসা হয় সাধারন মানুষদেরকে, সমাজবিজ্ঞানীদের, পরিবেশবিদদের, জীববিজ্ঞানীদের, নৃতত্ত্ববিদদের, আইনবিদদের।
তাই বিশেষজ্ঞদেরও পরিকল্পনার ভুল হতে পারে এবং এটা বিজ্ঞান বা প্রযুক্তির একটা অংশই এর বেশী কিছু নয়।
পুনশ্চঃ
ভারতীয় নদী বিজ্ঞানী কপিল ভট্টাচার্যের এবং স্যার উইলিয়াম উইল্কক্সের বইটির কি কোন পিডিএফ লিঙ্ক আছে? পড়বার লোভ সামলাতে পারছিনা।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
http://india_resource.tripod.com/colonial.htmlবিষয়ের আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে, তাই কুণ্ঠিত হয়েও উইলকক্স সাহেবের প্রতি আমার শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে তাঁর সম্পর্কে আরো এক চিলতে খবর:
There is another popular belief about British rule: 'The British modernized Indian agriculture by building canals'. But the actual record reveals a somewhat different story. " The roads and tanks and canals," noted an observer in 1838 (G. Thompson, "India and the Colonies," 1838), ''which Hindu or Mussulman Governments constructed for the service of the nations and the good of the country have been suffered to fall into dilapidation; and now the want of the means of irrigation causes famines." ....
.....Sir William Willcock, a distinguished hydraulic engineer, whose name was associated with irrigation enterprises in Egypt and Mesopotamia had made an investigation of conditions in Bengal. He had discovered that innumerable small destructive rivers of the delta region, constantly changing their course, were originally canals which under the English regime were allowed to escape from their channels and run wild. Formerly these canals distributed the flood waters of the Ganges and provided for proper drainage of the land, undoubtedly accounting for that prosperity of Bengal which lured the rapacious East India merchants there in the early days of the eighteenth century.. He wrote" Not only was nothing done to utilize and improve the original canal system, but railway embankments were subsequently thrown up, entirely destroying it. Some areas, cut off from the supply of loam-bearing Ganges water, have gradually become sterile and unproductive, others improperly drained, show an advanced degree of water-logging, with the inevitable accompaniment of malaria. Nor has any attempt been made to construct proper embankments for the Gauges in its low course, to prevent the enormous erosion by which villages and groves and cultivated fields are swallowed up each year."
"Sir William Willcock severely criticizes the modern administrators and officials, who, with every opportunity to call in expert technical assistance, have hitherto done nothing to remedy this disastrous situation, from decade to decade." Thus wrote G. Emerson in "Voiceless Millions," in 1931 quoting the views of Sir William Willcock in his "Lectures on the Ancient System of Irrigation in Bengal and its Application to Modern Problems" (Calcutta University Readership Lectures, University of Calcutta, 1930)
বাংলার নদী কী বিচিত্র আর কী অপার সম্পদশালী। হায় কোথায় সেই দিন!
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
উইলকক্সের কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো নিয়ে একটা পোস্ট কি দিতে পারেন?
নানান দৌড়াদৌড়িতে থিতুতে পারছি না। আগে ঘৃণা বিষয়ক আলোচনাটায় আমার শেষ কিস্তিটা দেব। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে গতকাল একটা সাক্ষাতকার বের হয়েছে প্র. আলোয়, আহমেদ জিয়ার, আমার নেয়া।
উইলকক্স-য়ের এই কাজটা অনুবাদ করবো শীঘ্রই। তার কিছু কিছু দেওয়ার চেষ্টা করবো। দেখা যাক...
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
সাম্প্রতিক আরেকটি খবরে বেশ উদ্বেগ বোধ করছি, যেখানে ভারতকেও হয়তো কিছুদিন পরে বাংলাদেশের মতো একই সমস্যায় পড়তে হবে, বাংলাদেশকে আরও বেশি সমস্যা পোহাতে হবে। সেটি হচ্ছে, নেপাল ও চীন নদীগুলোর উৎসমুখে প্রচুর বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে যা আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তারা করতে পারে না। এ বিষয়ে ভারত ইতোমধ্যে নেপাল ও চীনের কাছে প্রতিবাদ পাঠালে বাংলাদেশ কোনো কাজ করছে কিনা তা জানা নেই।
আপনি যেহেতু এই বিষয়গুলো নিয়ে খোঁজখবর করছেন, তাই নেপাল ও চীনের নদীর উৎসমুখে বাঁধ দেওয়ার বিষয়টি পরবর্তী সময়ে তুলে ধরবেন বলে আশা করছি। বাংলাদেশ যে কী সর্বনাশের মুখে পড়তে যাচ্ছে, সেটি বোধহয় আমরা আন্দাজও করতে পারছি না।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
::: http://www.bdeduarticle.com
::: http://www.facebook.com/profile.php?id=614262553/
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ধন্যবাদ গৌতম। আপনার মত আমিও ব্যাপারটা শুনেছি। এটা আসলেই একটা ভয়াবহ ব্যাপার হবে। আসলে আতর্জাতিক পানি ব্যাবহার সম্মন্ধে আইনের মারপ্যাচ আছে, সময় হলে এটা পড়ে দেখতে পারেন।
আন্তর্জাতিক নদীসমুহের ব্যবহার (নৌচলাচল ব্যাতিরেকে) সম্পর্কিত আইনের জাতিসঙ্ঘের সনদ
আমি এটা নিয়ে একটু খোঁজ খবর নিয়ে কিছু লেখার পরিকল্পনা করছি। আপাতত এই সিরিজটা শেষ করার চেষ্টা করছি।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
চলুক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
স্যার, আবারও একটা তত্থ্যবহুল লেখা লিখেছেন...একটা অনুরোধ...ভারত এবং বাংলাদেশ এর পানিবন্টন এর ব্যপার এ অনেক বিতর্ক আছে...আমরা প্রকৌশলিরা কিছুটা বুঝতে পারি, কিনতু এর বেশিরভাগই পানিসম্পদ প্রকৌশলি বা বিশেষজ্ঞ রাই কেবল পুরোপুরি বুঝতে পারেন...যেহেতু আপনার লেখার পাঠক সবাই, তাই স্প্শকাতর বিষয়গুলো কে সহজ এ উপস্থাপন করলে অনেক বিতর্কের অবসান হবে আশা করি...এ বিষয়ে পরবর্তি লেখাগুলোর প্রতিক্ষায় রইলাম...
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ তুরেন। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ইতিহাসের অংশটুকু নিশাত সারের প্রবন্ধের অনুবাদ ভিত্তিক তবে সহজ ভাষায় করার চেষ্টা করেছি।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
খুব সুন্দর লেখা, আমি কিছু তথ্য যোগ করি এতে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সমাধান একমাত্র এই রাস্তাতেই হতে পারে। জল লাগবেই, ভারতেরও, বাংলাদেশেরও। দুদেশেই মূলভিত্তি এখনও কৃষি। আর গরমকালে কৃষিতে জলের একমাত্র উৎস সেচ। তাই ভাগাভাগির সমস্যা এখন অনেকদিন থাকবে - যতদিন না দুদেশের মধ্যে অন্তত একদেশ নদীর জলের ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে পারে অথবা বাড়তি জলের যোগাণ সুনিশ্চিত করতে পারে। দুটোর মধ্যে দ্বিতীয়টিই সহজ পথ বলে মনে হয়।
আমি দেখেছি এক জাপানি ভদ্রলোক নাকায়ামা তার পেপারে এই প্রস্তাব নিয়ে ভারত সরকারের গোঁয়ার্তুমি খুব ভাল করে তুলে ধরেছেন। কেউ যদি পুরো ঘটোনার ক্রোনোলজি নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক হন, তাহলে এই পেপারটা দেখতে পারেন। বিশ্বব্যাঙ্কের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ম্যাকনামারার প্রস্তাব ছিল এরকম -
বিশ্বব্যাঙ্কের অনেক সমালোচনা করলেও এটাই আমার জানা সবথেকে ভাল প্রস্তাব। এখনও এই প্রস্তাব রূপায়ণের যথেষ্ট সময় আছে। গঙ্গোত্রী হিমবাহের দৈর্ঘ্য দিনে দিনে কমে আসায় গঙ্গায় জলের যোগাণ দিনে দিনে কমবেই। আজকে যে সমস্যায় বাংলাদেশ, দুদিন পরে একই সমস্যায় ভারতও পড়বে।
আমি আপনার লেখায় ধারাবাহিকে দুটো বিষয় আশা করছি - এক, আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে কিছু আলোচনা; দুই, ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা নিয়েও কিছু আলোচনা।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আসলে নদীর জলের উপর নির্ভরতা কোন দেশই কাটিয়ে উঠতে পারবেনা।আর বাড়তি জলের যোগান একমাত্র নেপাল বা ভারতের পক্ষেই সম্ভব কারন তারা উজানের দেশ।ম্যাকনামারার এর প্রস্তাবই কিন্তু গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব ছিল যে নেপাল বা ভারতে বাধ দিয়ে বর্ষা কালে পানি সঞ্চয় করে তা শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করা।
আমার লেখার প্রথম তিনটি পর্ব গঙ্গা চুক্তি নিয়ে আলোচনা করব চতুর্থ ও শেষ পর্বে চেষ্টা করব আপনার উল্লেখিত বিষয় দুটিতে আলোকপাত করার।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
একটা কথা কোথায় যেন শুনেছিলাম, যদি পৃথিবীতে কখনও ৩য় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যায়, তবে সেটা হবে সাধু পানির দখল নিয়ে।
জাহিদ ভাই, আপনি কি আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে গঙ্গাচুক্তিকে ব্যাখ্যা করতে পারেন? আমরা কি আসলে আমাদের ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, সবকিছুই ভারতের মর্জির উপর নির্ভর করছে। নাকি পদ্ধতিগত ভাবেই আমরা পদ্মার পানির উপর নির্ভরতা কমাতে পারি। সেটা কীভাবে? পদ্মার পানির এমন বৈরীতার জন্য নাকি উত্তরবঙ্গের দিকে মরুকরণ শুরু হয়েছে।
আপনার প্রথম পরিচ্ছেদে উল্লেখিত স্বাদু পানি নিয়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেধে যাবার বিষয়কে উড়িয়ে দেয়া যায়না।
আমার এই সিরিজটির শেষ দুটি পর্বে আন্তর্জাতিক আইন নিয়ে কিছু কথা থাকবে।
যদিও পরে আলোচনা করব তারপরেও আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলছি গঙ্গা চুক্তির সবকিছুই ফারাক্কায় পানির প্রবাহকে ঘিরে। সুতরাং ফারাক্কায় যদি পানি কম আসে বাংলাদেশও পানির হিস্যা কম পাবে এবং তা চুক্তি মেনেই।
কোনভাবেই আমরা পদ্মার পানির উপর নির্ভরতা কমাতে পারিনা কারন উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিন পশ্চিম বাংলাদেশের পানির মুল উৎস পদ্মা ও পদ্মার শাখানদী গড়াই।পদ্মা শুকালে গড়াইও শুকাবে সেক্ষেত্রে দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের জন্য স্বাদু পানির আর কোন প্রবাহ থাকবেনা। লবনাক্ততায় ভরে যাবে এই অঞ্চল, ব্যাহত হবে বাস্তুতন্ত্র, বিপন্ন হবে পরিবেশ।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন গঙ্গার পানি চুক্তিঃ ইতিহাস ও বর্তমান-০২
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
একটি ব্যাপার জানিয়ে রাখা ভাল, এই প্রবন্ধটির লেখা শুরু করার অনেক আগেই আমি ব্যাক্তিগগ জীবনে আমার শিক্ষক ডঃ আইনুন নিশাত স্যারকে ইমেইল করেছিলাম তার এই বিষয়ক কিছু প্রবন্ধের অনুবাদের অনুমতির জন্য। আমি অত্যন্ত খুশি যে স্যার আমাকে অনুমতি সহ লেখাটির বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছেন। সেজন্য স্যারকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
নতুন মন্তব্য করুন