আমাদের দেশের পানিসম্পদের ক্ষেত্রে গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি একটি গুরুত্ত্বপুর্ণ অধ্যায়।সেই আলোকেই এর ইতিহাস ও বর্তমান নিয়ে আমার এই সিরিজ।গঙ্গা চুক্তির ৪৫ বছরের ইতিহাস বর্ননার পর তৃতীয় পর্বে পাঠকদের ভবিষ্যৎ তথ্যসুত্রের জন্য পুরো গঙ্গার চুক্তিটিই অনুবাদ করে দিয়েছিলাম।আজকের পর্বে এই চুক্তিটির সারসংক্ষেপ এবং কিছু বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের আলোকে চুক্তিটির পর্যালোচনা করব।
আগের পর্বগুলো পড়ুনঃ
প্রথম পর্ব-প্রারম্ভিক তথ্য ও চুক্তিপূর্ব ইতিহাস (১৯৫১-১৯৭৬)
দ্বিতীয় পর্ব-চুক্তিপূর্ব ইতিহাস (১৯৭৭-১৯৯৬)
তৃতীয় পর্ব- ’৯৬ এর চুক্তির বিষয়বস্তু
চুক্তির সারমর্ম
একটু ভাল করে লক্ষ্য করে দেখলে ’৯৬ এর গঙ্গা পানি বন্টন চুক্তিটিতে মূল যে বিষয়গুলো এসেছে তা কিছুটা নিম্নরূপঃ
কিছু বহু জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও তার সম্ভাব্য উত্তর
’৯৬ এর গঙ্গা চুক্তিটি দেখে বা এর সম্মন্ধে শুনে সাধারন মানুষের মনে যে সকল প্রশ্ন জাগতে পারে তার কিছু নমুনা ও তার সম্ভাব্য উত্তর দেবার চেষ্টা করছিঃ
১) চুক্তিটি কেন জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত ?
রবীঠাকুর প্রকৌশলী ছিলেননা কিন্তু নদীপ্রকৌশল এর মৌলিক জ্ঞ্যান জানতে রবীঠাকুরের এই কবিতাটি কিন্তু যথেষ্ট। বাংলাদেশে বৈশাখ মাস মানে এপ্রিল, তার মানে এপ্রিল মাসে বাংলার ছোট ছোট নদীতে হাঁটু জল থাকবে যা দিয়ে গাড়ী, গরু, মানুষজন পার হয়ে যাবে অনায়াসেই। জলবায়ুগত দিক বিচারে আমাদের এই অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুম জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত।আসলে ফারাক্কা ব্যারেজ নিয়ে বাংলাদেশের সাথে ভারতের মতপার্থক্যের সুচনা বা আপত্তির সূচনা কিন্তু এই শুষ্ক মৌসুম নিয়েই। এই মৌসুমে গঙ্গোত্রী হিমবাহের গলিত বরফের পরিমান কমে যাওয়ার গঙ্গার পানির প্রবাহ কমে যায় এবং নদীর গতি কমে যাওয়ায় কলকাতা বন্দরের হুগলী নদীতে পলি সমস্যা এই সময় বেড়ে যায় সুতরাং ফারাক্কা ব্যারেজের সংযোগ খাল দিয়ে এই সময়েই ভারতের বেশী পানি দরকার হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশে ধান আবাদের জন্য সেচ কাজে এই সময় পানির চাহিদা বাড়ে।এছাড়া ছোট ছোট নদী বা খালগুলো গঙ্গার মত বড় বড় নদীসমুহের পানি নিয়েই বেঁচে থাকে সুতরাং এই সময়ে গঙ্গার পানির উপর চাপ বেড়ে যায় বিশেষ করে দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের একমাত্র স্বাদু পানির উৎস গড়াই নদীর পানির প্রবাহ সম্পূর্নরূপে নির্ভর করে গঙ্গার উপর। গড়াইতে পানি কমে গেলে বঙ্গোপসাগরের লবনাক্ত পানি উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবেশ করে যার প্রভাবে ঐ অঞ্চলের বনভুমি বিশেষ করে সুন্দর বন ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেই সাথে আবাদী জমিও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আবার শুস্ক মৌসুমে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় নদীর আশে পাশের এলাকার মাটির আর্দ্রতা নির্ভর করে নদীর পানির স্তরের উপর। সুতরাং গঙ্গা নদীতে প্রবাহ কমে গেলে নদীকেন্দ্রিক বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের মাটি শুষ্ক হয়ে যার এবং উপর্যুপরি এই প্রক্রিয়ার ফলাফল হচ্ছে মরুকরন।
সুতরাং উপরের আলোচনার ভিত্তিতে এ কথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত গঙ্গার পানির প্রবাহ বছরে অন্যান্ন সময়ের থেকে কম কিন্তু দুই দেশেই পানির চাহিদা এই সময়ই সবচেয়ে বেশী।তাই সংঘাতের শুরু এই শুষ্ক মৌসুম নিয়েই আর এই জন্যই চুক্তির প্রয়োজন এই সময়কে ঘিরেই।
২) চুক্তি অনুযায়ী ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে ছেড়ে দেয়া পানি কি বাংলাদেশের জন্য পর্যাপ্ত?
এই প্রশ্নটির উত্তর জানার জন্য আমাদের নদীপ্রকৌশল সম্পর্কে কিছুটা ধারনা প্রয়োজন। এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে সাধারনত নদীর প্রবাহ বা উৎস থেকে সমুদ্র পর্যন্ত নদীর গতিপথ নির্ভর করে সেই অঞ্চলের ভুপ্রকৃতির উপর। একটি নদী সে এলাকা থেকে পানি নিষ্কাশন করে তার বুকে নিয়ে আসে তাকে আমরা বলি নদী অববাহিকা। একটি নদী অববাহিকার সাথে পার্শবর্তী আরেকটি নদী অববাহিকার কিন্তু একটি বিভেদ রেখা থাকে। এই নদী অববাহিকা কিন্তু রাজনৈতিক সীমারেখা মেনে চলেনা।পুরো নদী প্রবাহ প্রক্রিয়াটি আসলে প্রাকৃতিক নিয়মে একটি সাম্যাবস্থায় চলে। এখন আমরা যখন নদীর এই স্বাভাবিক প্রবাহ বা গতিপথকে বহুলাংশে ব্যাহত করি তখন সেই সাম্যাবস্থা বিনষ্ট হয়। স্বাভাবিক গতিপথে গঙ্গা থেকে হুগলী নদী যে সময় যতটুকু পানির প্রবাহ পাবার কথা ব্যারেজ নির্মান করে সেই স্বাভাবিক প্রবাহকে আমরা ব্যাহত করেছি, সুতরাং চুক্তি করে সেই সাম্যাবস্থাকে আমরা ফিরিয়ে আনতে পারবনা এমনকি ফারাক্কা ব্যারেজকে সমূলে তুলে দিলেও আগের সাম্যাবস্থা ফিরে আসতে অনেক সময় লাগবে।আমরা যেটা করতে পারি গঙ্গার প্রবাহকে একটি ন্যুনতম পর্যায়ে রাখতে যা গড়াই নদীর প্রবাহকে টিকিয়ে রাখতে এবং আমাদের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের লবনাক্ততাকে সহনীয় পর্যায়ে রাখতে পারে। যেহেতু যেকোন চুক্তিই আসলে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতৈক্যে পৌছানো সুতরাং একই সাথে কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষার জন্য ন্যুনতম প্রবাহকেও এক্ষেত্রে বিবেচনায় অনতে হয়েছে। সেই বিচারে চুক্তিতে প্রাপ্ত পানি আমাদের জন্য পর্যাপ্ত কিনা সেই প্রশ্নের উত্তর আসলে একটাই, মতৈক্য পৌছানোর জন্য এর বিকল্প হয়ত আমাদের ছিলনা কারন কোন চুক্তি না থাকলে ভারত একতরফা ভাবে পানি উত্তোলন করবে এবং ১৯৭৫ সালে তা করেছেও যার ভিত্তিতেই বাংলাদেশ জাতিসংঘের সাধারন পরিষদে বিষয়টি উথাপন করেছিল।তবে একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা ফারাক্কা ব্যারেজের ফলে যে অপুরনীয় ক্ষতি বাংলাদেশের হয়েছে সেই ক্ষতি পূরন আসলে সম্ভব না তবে এই চুক্তি সেই ক্ষতিকে আরও বাড়াতে হয়ত রোধ করছে।
৩) আর্দ্র মৌসুমে অতিরিক্ত পানি কি রিজার্ভ করা যাবে ?
আসলে বাংলাদেশ সমতল ভুমির দেশ হওয়াতে এখানে পরিপূর্ন বাঁধ দিয়ে পানি সঞ্চয় করা আসলে সম্ভব নয়। যেটা সম্ভব তা হলো ব্যারেজ নির্মান করে কিছুটা পানি সঞ্চয়। সেই আঙ্গিকেই শুকিয়ে যাওয়া নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা ও গঙ্গা নির্ভর এলাকায় কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়নের জন্যই গঙ্গা ব্যারেজের সমীক্ষা শুরু হয়েছে সম্প্রতি [৫]। এই প্রকল্পে গঙ্গা নদীতে দুটি ব্যারেজের পরিকল্পনা করা হয়েছে, একটি ঠাকুরবাড়িতে (পাবনা)আরেকটি পাংশাতে।সেই সাথে গঙ্গার দু’ধার দিয়ে বাঁধ নির্মান করতে হবে[৬]।সমীক্ষা শেষ হলেই জানা যাবে প্রকল্পটি আদৌ বাস্তবায়িত হবে কিনা।এই ব্যারেজ নির্মান করলে গড়াই নদীতে পলি পড়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান হবে সেই সাথে বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলের কৃষিজমিতে সেচের ব্যবস্থা হবে এবং শুকিয়ে যাওয়া শাখানদীগুলোতে হয়ত জীবন ফিরিয়ে আনা যাবে।
৪) চুক্তি অনুযায়ী ভারত পানি না দিলে বাংলাদেশ আইনানুগ কি ব্যবস্থা নিতে পারবে ?
চুক্তিতেই কিন্তু নিয়মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও ফারাক্কাতে পানি পরিমাপের ব্যবস্থার কথা বলা আছে।যেহেতু এই চুক্তি দশ দিনভিত্তিক তাই যদি এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ পরিমানমত পানি না পায় সেক্ষেত্রে তা যুক্ত-কমিটির মাধ্যমে আলোচনা করে সমাধান করা যেতে পারে, তাতেও না হলে পর্যায়ক্রমে তা ইন্দো-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন ও দুই দেশের সরকার পর্যায়ে আলোচনা করে সমাধান করার কথা বলা আছে। তবে চুক্তি অনুযায়ীই কিন্তু এই বিষয়ে কোন মতৈক্যে না পৌছানোর আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ অন্তত চুক্তিবদ্ধ পরিমানের শতকরা ৯০ ভাগ পানি পাবার কথা। পরবর্তী পথ হল কোন তৃতীয় পক্ষের দারস্থ হওয়া এবং সর্বশেষ হলো জাতিসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক পানি বিষয়ক সনদ অনুযায়ী (ধারা ৩৩, উপধারা ২)আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করা।নিচের লাইনটি লক্ষ্য করুনঃ
“If the Parties concerned cannot reach agreement by negotiation requested by one of them, they may jointly seek the good offices of, or request mediation or conciliation by, a third party, or make use, as appropriate, of any joint watercourse institutions that may have been established by them or agree to submit the dispute to arbitration or to the International Court of Justice” [৭]
৫) চুক্তি অনুযায়ী পানি বন্টন যেহেতু ফারাক্কায় প্রবাহের উপর নির্ভরশীল সেক্ষেত্রে ফারাক্কায় উজানে পানির প্রবাহ কমালে বাংলাদেশের কিছু করার আছে কিনা ?
চুক্তিটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এর অনুচ্ছেদ ২ এর ধারা ২ এ বলা আছে, “ফারাক্কায় পানির প্রবাহ গত দশ বছরের গড় প্রবাহের সমান নিশ্চিত করার জন্য এর উজানের নদীর পানি ব্যবহাকারীদের সর্বোচ্চ সচেষ্ট হতে হবে”। অর্থ্যাৎ উজানে পানির অধিক ব্যবহারের ফলে ফারাক্কায় প্রবাহ যদি ঐতিহাসিক সুত্রে পাওয়া গড় প্রবাহের থেকে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায় তাতে চুক্তি ভংগ হবে কারন চুক্তিতেই এই গড় প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের আলোচনার ও পরবর্তীতে তৃতীয় পক্ষ বা আন্তর্জাতিক আদালতের দারস্থ হবার সুযোগ থাকছে বলেই আমার ধারনা।
তথ্যসুত্রঃ
[৫] প্রথম আলো
[৭] আন্তর্জাতিক নদীসমুহের ব্যবহার (নৌচলাচল ব্যাতিরেকে) সম্পর্কিত আইনের জাতিসঙ্ঘের সনদ
মন্তব্য
তথ্যসুত্র [৫] এ একটি মুদ্রনজনিত ভুলের জন্য লিঙ্কটা পড়া যাচ্ছেনা বলে দুঃখিত। সঠিক লিঙ্ক নিচে দেয়া হলঃ
[৫] প্রথম আলো
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আপনার এই তথ্যবহুল সিরিজটির জন্য ধান্যবাদ। কিছু প্রশ্নঃ
শুকনা মৌসুমে পানির স্বল্পতা মোকাবেলা যেমন একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয় তেমনি ভরা মৌসুমে বিশেষ করে বন্যা প্রবন সময়ে পানি বন্টনের ক্ষেত্রে কোন নীতিমালা কি এই চুক্তিতে রয়েছে?
এছাড়া, এই পানিপ্রবাহের ক্ষেত্রে পানির মান, বিশেষত যেহেতু বাংলাদেশের অবস্থান downstream-এ কাজেই এই পানিতে গ্রহনযোগ্য দুষনের মাত্রা সম্পর্কে কোন মাপকাঠিকি রয়েছে?
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনার প্রশ্নের উত্তরগুলো নিম্নরূপঃ
না এই চুক্তি শুধুমাত্র শুষ্ক মৌসুমের জন্য অর্থ্যাৎ এপ্রিল থেকে মে পর্যন্ত। আসলে ফারাক্কা ব্যারেজের ৪০,০০০ কিউসেকের বেশী পানি ডাইভার্ট করার সাধ্য নাই সুতরাং বর্ষা মৌসুমে ৪০,০০০ এর অধিক পানি সব বাংলাদেশে প্রবাহিত হবে।
না এই চুক্তিতে পানি বন্টন শুধুমাত্র পানির পরিমান ভিত্তিক মান ভিত্তিক নয়।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভাগ্যিস ইলশা মাছগুলা গঙ্গোত্রি থেকে নামে না, বঙ্গোপসাগর থেকে উঠে। নইলে আমার ধারণা কলকাত্তাইয়ারা একটা লুহার জাল পাততো, আমগোরে ইলশা দিতো না...
একটা সংশোধনী...
" আমাদের ছোট নদী চলে এঁকে বেঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে"
আমাদের ছো নদী চলে বাঁকে বাঁকে
বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নজু ভাই কলকাত্তাইয়াদের আর জাল পাততে হইবনা, যেইভাবে ডিমওয়ালা ইলিশ মাছ ধরতাছি তাতে দুই দিন বাদে আর পান্তা ইলিশ খাইতে হইবনা।
সংশোধনের জন্য ধন্যবাদ। আসলে এই কবিতাটি বাংলা টাইপ করে নেটে খুঁজতেছিলাম এবং মজার ব্যাপার হল কিছু কিছু সাইটে আসলেই এই ভুলটা আছে। অতিথি লেখক তাই সংশোধন করতে পারছিনা।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমারও ধারণা এই ব্যাপারটা আদালতেই মীমাংসা হওয়া উচিত। ভারত-বাংলাদেশ দুদেশেই গণতান্ত্রিক সরকার, কোনো সরকারের পক্ষেই সমঝোতার পথে চলা দেশে নিজের অবস্থান জটিল করে ফেলার মত রাজনৈতিক ভুল করা সম্ভব নয়। সুতরাং ভাগাভাগি যাই হোক, তা নিয়ে রাজনীতি হবেই - যতদিন না আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থার মাধ্যমে নির্দিষ্ট নীতি মেনে ভাগাভাগি হবে। এতে সুবিধা হল, দুদেশের সরকারই নিজের ভোটারদের বলতে পারবে যে নীতি মেনে যা ভাগ পাবেন তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। এতে জল নিয়ে রাজনীতির সুযোগ কমবে। আর চুক্তির স্থায়িত্ব সুনিশ্চিত হলে তার ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা যাবে। ভারত-পাকিস্তান সিন্ধু অববাহিকার জলচুক্তি অনেক যুদ্ধ অতিক্রম করেও একই কারণে টিঁকে আছে।
এখন আদালতে ভারত-বাংলাদেশ উভয়েরই বলার কিছু থাকছে। বাংলাদেশের দিক থেকে বলার ভাল পথ হল উজানের দেশের দায়িত্ব উজানের জল-সরবরাহ সুনিশ্চিত করা। ভারতের উজানে বাঁধ নির্মাণ নিয়েও বক্তব্য থাকবে। সে নিয়ে আগের পঞ্চাশ বছরের গড় জলপ্রবাহের তথ্য তার হাতে আছে। আর ভারত সরকারের বক্তব্য হতে পারে যে গঙ্গার উৎসে জল কম আসছে গঙ্গোত্রী (ও অন্যান্য উপনদীর উৎসেরও একই অবস্থা) হিমবাহের দৈর্ঘ্য ক্রমাগত কমতে থাকায়। কোনটা কতটা দায়ী সেটা কেবলমাত্র আদালত তথ্যাবলী দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ছবি দিলাম ভুটানের হিমবাহগুলো গলে গিয়ে লেক তৈরী করছে। (পুরো লেখা)
গঙ্গোত্রীর ছবি -
এই কারণেই আমার ধারণা আরো জলের যোগাণ সুনিশ্চিত করাই দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিভিত্তিক সমাজের জন্য একমাত্র মুক্তির পথ। আদালতের নির্দেশে হোক আর রাজনৈতিক নেতাদের শুভবুদ্ধির উদ্রেকে হোক, এটাই একমাত্র সমাধান।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত
তথ্যবহুল মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনার সাথে সহমত প্রদর্শন করছি তবে উল্লেখ্য যে, আদালত পর্যন্ত গড়ানো কিন্তু শেষ চিকিৎসা। আমি পানি বিষয়ক জাতিসংঘের যে সনদের লিঙ্ক দিয়েছি তাতে কিন্তু বার বার আলোচনা, সমতার কথা বলা হয়েছে তাই এইগুলোতে ব্যার্থ হলে তবেই আদালতের দারস্থ হতে হবে।
গঙ্গোত্রী হিমবাহের ছবি ও তথ্যের লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
নতুন মন্তব্য করুন