এই সিরিজটির প্রথম পর্ব থেকে চতুর্থ পর্ব পর্যন্ত লিখতে আমার পরিশ্রম যে হারে বাড়ছে এর পাঠক সংখ্যা ঠিক তার বিপরীত হারেই কমেছে (!!)। মাঝখানে তাই লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম, কিন্তু গুরুত্ত্বপুর্ন এই তথ্যগুলো সবাইকে জানাতে ইচ্ছে করছে তাই আবার শুরু করলাম। এরপরে আর একটি লেখা দিয়েই হয়ত সিরিজটি শেষ করব।
আগের পর্বে গঙ্গা চুক্তির কিছু পর্যালোচনা করেছিলাম যা ছিল মূলত জটিল সব ধারা উপধারায় ভরপুর চুক্তিটির একটি সারমর্ম উপস্থাপন করা যাতে সাধারন মানুষ সহজেই সেটি বুঝতে পারে, সেই সাথে চুক্তি নিয়ে কিছু বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নগুলোর আমার নিজের মত করে তৈরী কিছু উত্তর। আজকে সমালোচকের দৃষ্টি দিয়ে চুক্তিটির কিছু দূর্বল দিক উপস্থাপন করব। এক্ষেত্রে আমি সাহায্য নিয়েছি কিছু গবেষণা প্রবন্ধের যার পরিপূর্ন তথ্যসুত্র আমি এই লেখার নিচে যোগ করেছি।
আগের পর্বগুলো পড়ুনঃ
প্রথম পর্ব-প্রারম্ভিক তথ্য ও চুক্তিপূর্ব ইতিহাস (১৯৫১-১৯৭৬)
দ্বিতীয় পর্ব-চুক্তিপূর্ব ইতিহাস (১৯৭৭-১৯৯৬)
তৃতীয় পর্ব- ’৯৬ এর চুক্তির বিষয়বস্তু
চুতুর্থ পর্ব- ’৯৬ এর চুক্তির পর্যালোচনা
প্রথমতঃ
’৯৬ এর পানি চুক্তির বন্টন নির্ধারিত হয়েছে ১৯৪৯-১৯৮৮ এই ৪০ বছরের শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কায় প্রাপ্ত পানির দশ ভিত্তিক গড় প্রবাহের উপর ভিত্তি করে।কিন্তু এই ৪০ বছর কিন্তু আসলে দুইটা পর্যায়ে বিভক্তঃ ফারাক্কা ব্যারেজ পূর্ব (১৯৪৯-১৯৭৩) এবং ফারাক্কা ব্যারেজ পরবর্তী (১৯৭৫-১৯৮৮)। খোদ ফারাক্কাতেই এই দুই পর্যায়ে গড় পানি প্রবাহ কিন্তু এক নয়, দেখা গিয়েছে যে ফারাক্কা ব্যারেজের ফলে ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে সেচের জন্য পানি উত্তোলন করা হয়েছে যা ফারাক্কাতেই পানির পরিমান হ্রাস করেছে [৮]।
উপরের এই ছবিটি দেখলে ব্যপারটি আরো পরিষ্কার হবে যা তথ্যসুত্র [৮] এর ভিত্তিতে প্রাপ্ত উপাত্ত থেকে তৈরী করা হয়েছে। এখানে ফারাক্কায় পানির প্রবাহকে জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত এই তিন মাসকে দশ দিন ভিত্তিক পর্যায়ে বিভক্ত করে মোট পনেরটি সময়ে ভাগ করা হয়েছে। মেরুন রঙের লাইনগুলি ফারাক্কা ব্যারেজ পূর্ব (১৯৪৯-১৯৭৩)এবং নীল রঙের লাইনগুলি ফারাক্কা ব্যারেজ পরবর্তী (১৯৭৫-১৯৮৮) প্রবাহ নির্দেশ করে (এটা কিন্তু ভারতের ফারাক্কায় গঙ্গার প্রবাহ এটাকে বাংলাদেশে গঙ্গার প্রবাহ বলে ভূল করবেননা)। এখানে স্পষ্টত প্রতীয়মান যে, জানুয়ারী থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফারাক্কা ব্যারেজের ফলে খোদ ফারাক্কাতেই পানির প্রবাহ কমেছে অথচ চুক্তি করার সময় এই দুই পর্যায়ের গড় পানির প্রবাহ নিয়ে সমীকরন তৈরী করা হয়েছে (কমলা লাইন) যা কোন মতেই গঙ্গায় পানি প্রবাহের বাস্তবসম্মত কোন চিত্র হতে পারেনা।
দ্বিতীয়তঃ
এবার দৃষ্টি ফেরানো যাক বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশে গঙ্গার পানি মাপা হয় হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে।
উপরের এই ছবিটি লক্ষ্য করুন যা তথ্যসুত্র [৮] ও [৯] থেকে উপাত্ত সংগ্রহ করে তৈরী করা হয়েছে। এখানে বাংলাদেশে গঙ্গার প্রবাহকে আগের মতই জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত এই তিন মাসকে দশ দিন ভিত্তিক পর্যায়ে বিভক্ত করে মোট পনেরটি সময়ে ভাগ করা হয়েছে।নীল লাইনগুলি হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিচে ফারাক্কা ব্যারেজের পূর্বের প্রবাহকে (১৯৩৪-১৯৭৫) নির্দেশ করে এবং মেরুন লাইনগুলি ’৯৬ এর চুক্তি অনুসারে প্রাপ্তব্য পানির প্রবাহকে নির্দেশ করে।এটা সহজেই অনুমেয় যে বাংলাদেশ ফারাক্কা ব্যারেজের পূর্বে প্রাকৃতিক ভাবে শুষ্ক মৌসুমে যে পরিমান পানি পেত, চুক্তি করেও তার থেকে শতকরা প্রায় ৫০ ভাগ পানি কম পাচ্ছে। সুতরাং এই চুক্তি শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশের বাংলাদেশের সমস্যা নিরসনে কতটা উপযোগী হয় তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় [১০]।
তৃতীয়তঃ
১৯৭৭ সালে যে চুক্তি হয়েছিল তাতে জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত সময়ের জন্য পানিবন্টন অনুপাত ছিল বাংলাদেশের ৬০ ভাগ ও ভারতের ৪০ ভাগ অথচ ১৯৯৬ সালের চুক্তিতে তা গয়ে দাড়িয়েছে গড়ে বাংলাদেশের ৫২ ভাগ আর ভারতের ৪৮ ভাগ [৯]। সেই বিচারে '৭৭ এর মতৈক্য থেকে ’৯৬ এর চুক্তিতে বাংলাদেশের শতকরা ৮ ভাগ পানির হিস্যা কমেছে।
চতুর্থতঃ
’৯৬ এর চুক্তির পানিবন্টন নির্ভর করে ফারাক্কায় পানি প্রবাহের উপর, কিন্তু ফারাক্কার উজানে যদি পানি উত্তোলন করা হয় তাহলে কি হবে? এর উত্তর চুক্তিতে রয়েছে (অনুচ্ছেদ ২ ধারা ২),
“ফারাক্কায় পানির প্রবাহ গত দশ বছরের গড় প্রবাহের সমান নিশ্চিত করার জন্য এর উজানের নদীর পানি ব্যবহাকারীদের সর্বোচ্চ সচেষ্ট হতে হবে”।
এখানে এই “সর্বোচ্চ সচেষ্ট হতে হবে” বা ইংরেজীতে উল্লেখিত “Every effort” এর সঠিক সংগায়ন চুক্তিতে উল্লেখ নেই [৯]। সুতরাং এখানে ফারাক্কার উজানে উত্তর প্রদেশ, বিহার, বা পশ্চিম বাংলায় গঙ্গার উল্লেখযোগ্য পরিমান পানি উত্তোলন বন্ধের ক্ষেত্রে ভারতের কোন পরিষ্কার ভুমিকার কথা বলা নেই। কিন্তু উজানে পানির অধিক ব্যবহারের ফলে ফারাক্কায় প্রবাহ যদি ঐতিহাসিক সুত্রে পাওয়া গড় প্রবাহের থেকে উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায় তাতে চুক্তি ভংগ হবে কারন চুক্তিতেই এই গড় প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের আলোচনার ও পরবর্তীতে তৃতীয় পক্ষ বা আন্তর্জাতিক আদালতের দারস্থ হওয়া ছাড়ে আর কোন উপায় থাকবেনা।
পঞ্চমতঃ
চুক্তির অনুচ্ছেদ ১১ লক্ষ্য করলে আরো একটি জিনিস বের হয়ে আসে,
“চুক্তি সময়কালীন অনুচ্ছেদ ১০ এ উল্লেখিত পুনর্নিরীক্ষন দ্বারা প্রয়োজনীয় উপযোজনের (এডজাস্টমেন্ট) ক্ষেত্রে যদি দুই দেশ একমত না হয় তবে পরবর্তী মতৈক্যে পৌছানোর আগ পর্যন্ত ভারত ফারাক্কার ভাটিতে ‘অনুচ্ছেদ ২’ এ উল্লেখিত সমীকরন অনুসারে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার ন্যুনতম শতকরা ৯০ ভাগ পানি ছেড়ে দেবে”
তার মানে কোন কারনে চুক্তি অনুযায়ী পানি না পেলে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশে বন্টন সমীকরন অনুযায়ী প্রাপ্য পানির শতকরা ১০ ভাগ পানি কম পাবে যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না।ব্যাপারটা কিছুটা এরকম যে আমার কাছে একজন ১০০ টাকা পায়, আমি তাকে টাকা না দেয়ায় সে বিচার দিল মোড়লের কাছে আর এইজন্য আমি তাকে ১০ টাকা কমিয়ে ৯০ টাকা দিলাম। অর্থ্যাৎ আমি দোষও করলাম আবার সুবিধাও পেলাম।
পরিশেষেঃ
গঙ্গার পানি সমস্যা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান আসলে গঙ্গায় পানি বৃদ্ধি করা বলে বিশেষজ্ঞরা অনেকেই মনে করেন। কিন্তু এই চুক্তিতে গঙ্গার পানি বৃদ্ধির বিষয়টি আসলেও তার কোন স্থায়ী সমাধানের কোনরূপ দিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
তথ্যসুত্রঃ
[৮] ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টোর Institute of Environmental Studies এর এম মনিরুল কাদের মীর্জা কতৃক লিখিত প্রবন্ধ “The Ganges Water Sharing Treaty: Risk Analysis of The Negotiated Discharge”
[৯] হেলসিঙ্কি ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির পানিসম্পদ গবেষনাগারে কর্মরত মুহাম্মদ মিজানুর রহমান কতৃক লিখিত প্রবন্ধ “ The Ganges water Conflict, A Comparative Analysis of 1977 Agreement and 1996 Treaty”
[১০] Water Policy ২০০১ এ প্রকাশিত এস তানজিমা ও আই এম ফয়সাল কতৃক লিখিত প্রবন্ধ “Sharing the Ganges: A Critical Analysis of water Sharing Treaties”
মন্তব্য
সচল ভাই জাহিদ। হতাশ হবেন না। এই বিশ্লেষনি লেখাটি চট করে গল্প পড়ার মত নয়। আর আরকাইভাল ভেল্যু অনেক। এখানকার পাঠকেরা সময় হলে যাতে এই পোস্টে ফিরে আসতে পারে তার জন্য এই ব্লগে কি ব্যবস্থা আছে সেটা জানলে ভাল লাগত। এডমিনের কেউ বা ওয়াকিভাল কোন সচল যদি এই ব্যপারে কোন তথ্য দিতেন তবে জানা যেত। ভাবছি এখানের পোস্টগুলোকে কোনভাবে ইন্ডেক্সিংকি করা হয় কিনা যাতে প্রথম পাতা থেকে সরে যাবার পরও লেখটিকে আগ্রহি পাঠকেরা সহজে খুঁজে পেতে পারেন?
ধন্যবাদ রিয়াজ আপনার উৎসাহের জন্য। আমি আসলে প্রচন্ড আশাবাদী মানুষ। আসলে এই সিরিজটি লিখতে যেয়ে যে পরিমান জ্ঞ্যান আমি অর্জন করেছি সেই জন্য বরং সচলায়তনের প্রতি আমি বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ।পানিসম্পদ আমার পড়াশুনা আর গবেষনার জিনিস তাই এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা আমার নিজের জন্য খুবই উপকারী, সেই সাথে দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে এই ইস্যুটি নিয়ে সবারই সঠিক তথ্য জেনে রাখা উচিৎ।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমি আপনার এই সিরিজের কোন লেখাই পড়িনি
খুব আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি পুরোটা শেষ হলে একসাথে পড়ার।
এই লেখাটা যে ব্যাক্তিগত ভাবেও আমার কত প্রয়োজন বোঝাতে পারবোনা।
লেখা চলতে থাকুক
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।আপনাদের কিছুটা কাজে লাগলেও আমার পরিশ্রম সার্থক হবে। শুভকামনা রইল।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আপনার হতাশা দেখে আমি বিস্মিত। আপনি কিছুদিনের জন্য হলেও পাঠকসংখ্যার কথা ভুলে লিখুন। লেখা অত্যন্ত ভাল ও তথ্যবহুল। আমার মনে হয় না রিসার্চ পেপার বাদ দিয়ে আগে কখনও এই ইস্যু নিয়ে এত সুন্দরভাবে কেউ লিখেছে।
আপনার আগের লেখার শেষ কমেন্টে লিখেছিলাম যে আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত বিষয়টার। আমি এখনও একি মতের পক্ষে আছি। কোনো তৃতীয় পক্ষ ছাড়া কোনো আন্তর্জাতিক নদীরই জলবন্টন চুক্তি হওয়া প্রায় অসম্ভব যদি না দুই দেশের মধ্যে জলের চাহিদাগত বিষয়ে বিরাট কোনো ফারাক থাকে।
আপনি জাতিসংঘের যে প্রস্তাবনাটির লিঙ্ক দিয়েছেন তাতে অনেকবার সমতার কথা বলা আছে কিন্তু সমতার কোনো সংজ্ঞা দেওয়া নেই। আসলে জলবন্টনে সমতার সংজ্ঞা দেওয়া সম্ভবও নয়, কারণ অসংখ্য প্যারামিটার মেপে তবে সমতা সংজ্ঞায়িত হয়। তাই সমতা একটা কেস-বাই-কেস ধারণা যেটা এই কেসটা নিয়ে কমিশন বসিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে তবেই নেওয়া সম্ভব (আর্টিকেল ৩৩)। এই কাজটা ভারত-বাংলাদেশ উভয়ে মিলেও করতে পারে - কিন্তু তা উভয় দেশেরই আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। আর আর্টিকেল ৩৩ অনুসারে ৬ মাসের মধ্যে বিবাদ-মীমাংসা না হলে তথ্য-সংগ্রহকারী দল পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। এই বিবাদ আজ ৩৫ বছর হতে চলল, কোনো সাম্যের সমাধান আমি তো দেখলাম না। তাই আমার মনে হয় নিরপেক্ষ কমিশন ও তার প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, দ্বিপাক্ষিক জোড়াতালি চুক্তির মাধ্যমে নয়।
তথ্যের প্রয়োজনীয়তা আমি আরো অনুভব করি যখন জল-প্রবাহ কমে যায়। শেষবার ২০০৬ সালে রিপোর্টে পড়েছিলাম ফারাক্কায় জল কম আসার কারণ নিয়ে দ্বিমত। বাংলাদেশের দিকে দাবী হয় উজানে বেশী জল টেনে নেওয়া হয়েছে আর ভারতের দিকে দাবী হয় বৃষ্টি কম হয়েছে বা গঙ্গায় উৎস থেকে জল কম আসছে (গঙ্গোত্রী হিমবাহের দৈর্ঘ্য হ্রাসজনিত) (চুক্তির দুর্বলতার এটাও একটা দিক, প্রাকৃতিক পরিবর্তনের ব্যাপারটা চুক্তিতে কোনো স্থান পায় নি)। যেমন ধরুন, ফারাক্কায় জলপ্রবাহ কমেছে ১৯৪৯-১৯৭৩ আর ১৯৭৫-১৯৮৮ -এর তুলনামূলক বিচারে। নাসার সাইট থেকে জানতে পারলাম যে একই সময়ে গঙ্গোত্রীর দৈর্ঘ্যহ্রাসের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। লেখায় বলা আছে -
কোনটা কতটা দায়ী, তা জানার জন্য তথ্য-কমিশন (গঙ্গার বিভিন্ন পয়েন্টে জলের প্রবাহ মাপবে যারা ও কি কি ফ্যাক্টর থেকে কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে তা দেখবে) বসানো ছাড়া কোনো পথ নেই।
এবার আর্টিকেল ৫ এর সমতার ব্যাপারটায় আসা যাক। আইনটা নিয়ে বিশেষজ্ঞ ম্যাকেফ্রি প্রশ্ন তুলেছেন ও বলেছেন যে এই সমতার সংজ্ঞায়িতকরণের জন্য পরের বিশেষজ্ঞরা যে দ্বন্দে পড়বেন। একটা প্রশ্ন রেখেছেন উনি। ধরা যাক তিনটি দেশ (বা অঞ্চল) ক, খ আর গ একই নদী অববাহিকায় অবস্থিত(তুলনীয় বলে যথাক্রমে নেপাল, ভারত আর বাংলাদেশ ভাবতে পারেন)। ধরা যাক পর্বতসঙ্কুল "ক" অঞ্চলে কোনো চাষাবাদ হয়না কিন্তু সমতল "খ" ও "গ" দেশে হাজার হাজার বছর ধরেই চাষ হয়ে আসছে। এখন, প্রযুক্তির উন্নতির ফলে দেখা গেল "ক"-তেও চাষ করা সম্ভব হবে। তাই, ক সিদ্ধান্ত নিল যে তারও জল লাগবে। কিন্তু এর ফলে খ ও গ দেশে জলের যোগাণ কমতে বাধ্য। এখন সমতা এখানে কি ভাবে আনা সম্ভব হবে? যদি, ক-কে কিছু জল দিতেই হয় তাহলে খ আর গ বলবে আমাদের কৃষকেরা না খেয়ে মারা যাবে। আবার ক বলবে সমতা অনুসারে চাষ করার অধিকার আমার আছে, নদী অববাহিকার জলের ভাগ আমারও প্রাপ্য। ম্যাকেফ্রির মত মেনে সমতা স্থাপন হলে বাংলাদেশ (ভারতও) আরো অনেকটাই কম জল পাবে যদি নেপাল (আর ভুটান) জলের হিস্যা দাবী করে। নেপালে বর্তমান সরকার সে পথেই হাঁটছে। একই অবস্থা নীলনদের জলবন্টন নিয়েও - মিশর আর সুদান এতকাল নীলের জল ভাগাভাগি করে নিত। এখন রোয়ান্ডা, সোমালিয়া আর ইথিওপিয়াও হিস্যা দাবী করেছে। মরুভূমির দেশ সুদান আর মিশরের জলের হিস্যা ছেড়ে দিতে গায়ে লাগবেই - কিন্তু সমতার চুক্তিতে সবারই ভাগ থাকা দরকার। ওই অঞ্চলের জল-বিবাদ আমাদের থেকে ঢের বেশী।
সমতার ধারণা বাস্তবেই জটিল, আর রাজনৈতিক ইন্টারেস্টে জটিল সমস্যা জটিলতর হয়ে যাবে। সেই ঝামেলা এড়াতেই সমাধান আদালতে হওয়া উচিত। তবে আবারো বলি, আরো জলের যোগাণ সুনিশ্চিত করাই দক্ষিণ এশিয়ার কৃষিভিত্তিক সমাজের জন্য একমাত্র মুক্তির পথ।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত বরাবরের মতই তথ্যবহুল মন্তব্য। এরকম পাঠক থাকলে লিখেও শান্তি লাগে আর সে সাথে অনেক কিছু জানা যায় মন্তব্য থেকে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আন্তর্জাতিক পানি বিষয়ক জাতিসংঘের এই নীতিমালাটি আসলেই উপকারী। আপনি যদি এর অনুবাদের দায়িত্ব নেন তাহলে সচলায়তন ও এর পাঠকরা উপকৃত হবে। সেই অনরোধ রইল আপনার প্রতি।
ম্যাকেফ্রির যুক্তি আসলেই অকাট্য। চমৎকার উদাহরনের মধ্যমে সমতার বিষয়টি তাতে প্রকাশ পেয়েছে।
আসলে ফারাক্কা পরবর্তী গঙ্গার পানি প্রবাহ হ্রাস ও গংগোত্রী হিমবাহের দৈর্ঘ্য পরিবর্তনের মধ্য অবশ্য্ই একটি যোগাযোগ থাকা উচিৎ। ছবিটি দেখলাম। তবে একথা স্বীকৃত যে ফারাক্কার উজানে উল্লেখযোগ্য পরিমান পানি উত্তোলন করা হয়েছে। আমার আলোচিত এম মনিরুল কাদের মীর্জা কতৃক লিখিত “The Ganges Water Sharing Treaty: Risk Analysis of The Negotiated Discharge” শীর্ষক প্রবন্ধে এই লাইনটি উল্লেখ করা আছে,
" Between 709 m3/sec ( ২৫,০১৮ কিউসেক) and 1,276 m3/sec (৪৫,০২৬ কিউসেক) of water are reportedly being withdrawn in Uttar Pradesh and Bihar, India through various lift irrigation projects in the dry season"
এই উক্তটি আসলে নেয়া হয়েছে INDIA TODAY, 15 January, 98-99 সংখ্যায় আর ব্যানার্জি কতৃক লিখিত "Indo-Bangla accord: defying the current" শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে।
সহমত প্রদর্শন করছি
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
অবশ্যই। আমি আরো একটা ভাল উদাহরণ দিতে পারি তার। হিন্দুর রিপোর্টে পড়েছিলাম। জলবিদ্যুত প্রকল্পগুলোই এখন জল বেশী নিচ্ছে।
গঙ্গা বেসিনে চাষ ও সেচব্যবস্থা একশ' বছরেরও বেশী পুরোনো। নতুন করে জল নেবার সম্ভাবনা সেখান থেকে কম। ইন্ডিয়া টুডের বক্তব্য অসম্পূর্ণ তথ্য, কারণ আগে কতটা জল ওখানে নেওয়া হত তার হিসাব না থাকলে কোনো এক বছরের হিসাবে দেখে লাভ হবে না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
এই তথ্য নিয়ে একটা প্রশ্ন আছে। আমার কাছে ১৯৪৯-১৯৮৫ অবধি ফারাক্কায় জলপ্রবাহের তথ্য আছে (সূত্র - Bridges Over Water)। আমি তা থেকে দুটো গ্রাফ তৈরী করে এই বক্তব্যের সমর্থন পাচ্ছিনা। প্রথম গ্রাফ -
(এই ছবিতে ভার্টিকাল এক্সিস হল জলপ্রবাহ, হরাইজেন্টাল এক্সিস হল সাল (১৯৪৯ থেকে শুরু। ১৯৭৫ সালের হিসাবে লাল ডট দিয়ে বোঝাচ্ছি ওই সময়ে ফারাক্কা বাঁধ তৈরী হয়েছে। )
এখানে দেখা যাচ্ছে ধীরে ধীরে জলপ্রবাহ কমে যাবার পরিবর্তে ওঠানামা কমে যাচ্ছে। এবার এই ওঠানামার প্রভাব কমানোর জন্য আমি পাঁচ বছরের গড় (স্লাইডিং উইন্ডো) জলপ্রবাহ নিয়ে গ্রাফ তৈরী করলাম। এতে ১৯৪৯-১৯৫৩ র গড় নিলাম প্রথম ডেটা-পয়েন্ট, এর পরেরটা ১৯৫০-১৯৫৪, তার পরেরটা ১৯৫১-১৯৫৫ ... এভাবে ১৯৮১-১৯৮৫ অবধি। এতে বাৎসরিক ওঠানামার প্রভাব (যা মৌসুমী জলবায়ুতে স্বাভাবিক) বন্ধ হল। এবার এই গ্রাফে কোনো আকস্মিক ওঠানামা নেই।
দ্বিতীয় গ্রাফ -
(এই ছবিতে ভার্টিকাল এক্সিস হল গড় জলপ্রবাহ, হরাইজেন্টাল এক্সিস হল সাল (প্রথম ডেটা পয়েন্ট ১৯৪৯-১৯৫৩ সালের গড় জলপ্রবাহ। ১৯৭১-১৯৭৫ সালের হিসাবে লাল ডট দিয়ে বোঝাচ্ছি ওই সময় থেকে ফারাক্কা বাঁধের প্রভাব তথ্যে পাওয়া যাবে।)
এখন কিন্তু দুটো গ্রাফ থেকে উজানে জল কমে যাবার কোনো প্রমাণ পেলাম না। যদি সেচের কাজে জল নেওয়া হত তাহলে এই গ্রাফ ধীরে ধীরে নিচে নেমে যেত। সেটা দেখতে পাচ্ছি না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত আবারো চমৎকৃত হলাম। আপনি যে উপাত্ত সংগ্রহ করে গ্রাফ করলেন তাতে এই সিরিজটির প্রতি আপনার অসীম উৎসাহের বহিপ্রকাশ ঘটল।
আপনার গ্রাফগুলিতে ইউনিট নেই তবে দেখে মনে হচ্ছে ১৯৪৯ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত দৈনিক গড় প্রবাহের (Daily Average) অর্থ্যাৎ এক বছরের মোট প্রবাহকে যোগ করে ৩৬৫ দিয়ে ভাগ করে প্রাপ্ত প্রবাহের 'টাইম সিরিজ' একেছেন। ইউনিট দেখলে নিশ্চিত করে বলা যেত। তবে এটা যে শুষ্ক আর বর্ষা মৌসুমের গড় প্রবাহ সে ব্যাপারে আমি মোটামুটি নিশ্চিত। এতেই সমস্যা হয়েছে। গঙ্গার পানির প্রবাহ শুষ্ক মৌসুমে আর বর্ষা মৌসুমে এতটাই পরিবর্তিত হয় যে বাৎসরিক গড় আসলে কোন বাস্তবিক উপাত্ত হতে পারেনা। আমার গ্রাফগুলি যা আসলে আমার উল্লেখিত তথ্যসুত্রের প্রাপ্ত উপাত্ত থেকেই আমি তৈরী করেছি তা শুষ্ক মৌসুমের দশ দিন ভিত্তিক গড় প্রবাহের ভিত্তিতে তৈরী( উদাহরন সরূপ ১৯৪৯ থেকে ১৯৭৩ এই ২৪ বছরে এপ্রিল এর ১ থেকে ১০ তারিখে যত প্রবাহ হয়েছে তাদেরকে যোগ করে ২৪ দিয়ে ভাগ করে তাকে আবার ১০ দিয়ে ভাগ করে গড় করা হয়েছে) যা আসল অবস্থাটা প্রকাশ করে।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমার গড়ে বাৎসরিক মোট জলপ্রবাহ আছে যা আপনার ধারণার দৈনিক জলপ্রবাহের সাথে সমানুপাতিক।
কিন্তু গড়ও তো সঠিক অবস্থা প্রকাশ করে না। ধরুন, আপনার ছটি তথ্য নিয়ে একটি সিরিজ আছে। এরা হল ৫,১০,৫,১০,৫,১০। এবার আপনি বললেন প্রথম তিনটি তথ্যের গড় হল ৬.৬৬ আর পরের তিনটির হল ৮.৩৩। অথচ দেখলে বুঝবেন যেভাবে তথ্য আসছিল সেভাবেই আসছে। এটা পরিমাপের সঠিক উপায় হল স্লাইডিং-উইন্ডো গড়। কারণ, নদীর জলের পরিমাণ এমনিতেই বছর বছর পরিবর্তিত হয়। তবে আপনার কাছে বাৎসরিক তথ্য থাকলে আপনি সঠিক জানবেন নিশ্চয়।
যাহোক, আমার বক্তব্যের বিষয় ছিল যদি কোনো সেচব্যবস্থায় জল টেনে নেয়, তাহলে মোট জলপ্রবাহের ওপরেও তো তার একটা প্রভাব পড়বে, তা সেই কম্পোনেন্ট যতই কম হোক না কেন। কিন্তু সেরকম তো কিছু পাচ্ছি না।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
যদি আলোচনার ধারা আর উপাত্তের প্রকৃতি সঠিক ভাবে বুঝে থাকি তাহলে বলব টাইম সিরিজ প্লটে কোন ফিক্সড এফেক্ট ভেরিয়েশন চোখে পড়বে কিনা তা কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করার কথাঃ
১) আলোচ্য পানিপ্রবাহের ক্ষেত্রে সিসনালিটি কতটা প্রকট। জাহিদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে এই পর্থক্য সামন্য নয়। ধরা যাক ভরা আর শুকনো মৌসুমে পানির গর বিন্যাস যথাক্রমে ৮৫%-১৫%। শুকনা মৈসুমে এই ১৫ ভাগ থেকে ১ ভাগ পানি তুলে নেয়া হলে পানিপ্রবাহের সাময়িক প্যটার্নের উপর তার প্রভাব লক্ষনিয় হলেও বাৎসরিক গড় প্রবাহের উপর প্রভাবটি ক্ষীন মনে হতে পারে।
২) পানিপ্রবাহে বাৎসরিক টাইম সিরিজের ক্ষেত্রেও উঠানামা বেশ চোখে পরার মত। এবং এতে কোন ট্রেন্ড লক্ষ্য করা যায় না। এর অর্থ হচ্ছে পানির উঠা নামার ব্যপারটি অনেকগূলো ফ্যক্টরের উপর নির্ভর করছে যার মান বছরে বেশ খানিকটাই ওঠানামা করছে।
সেক্ষেত্রে গানিতিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখলে কোন প্রভাব পড়ছে কিনা তা দেখার সঠিক পদ্ধতি হবে মূল ফ্যাক্টর গুলিকে চিহ্নিত করে সেগুলোর টাইম সিরিজ নিয়ে আসা। অবশ্যই উপাত্তের Temporal Resolution এমন হতে হবে যাতে সিসনাল ভেরিয়েশন এবং প্রভাবের Time Lag ভালভাবে বোঝা যায়। যেমন উজানে বৃষ্টিপাতের পরিমান একটি ফ্যক্টর হলে পানি প্রবাহের উপর এর প্রভাব আসতে কিছুটা সময়ে লাগের কথা। এই রকমের সব ফ্যক্টরের প্রভাবকে কন্ট্রোল করা গেলেই কেবল বলা যাবে উজানে পানি তোলার কোন উল্লেখযোগ্য প্রভাব পানিপ্রবাহের উপর পড়ছে কিনা। তা না হলে বিষয়টি ঘোলাই থেকে যাবে।
আমার মনে হচ্ছে এই বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে আসার আগে যথেষ্ট পরিমান উপাত্তের প্রয়োজন রয়েছে যা বিশ্লেষন করা দরকার। আলোচনাটি বেশ উপভোগ করছি।
ধন্যবাদ রিয়াজ আপনার বিশ্লেষন ধর্মী মন্তব্যের জন্য। দিগন্তের 'গড় প্রবাহ নিয়ে' মন্তব্যের প্রতি মন্তব্যে আমি একটি পরিপূর্ন ব্যাখ্যা দিয়েছি।আমার মনে হয় এতে এই বিষয়ে বিতর্কের অবসান ঘটবে এবং ব্যাপারটি আগের চেয়ে পরিষ্কার হবে।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
প্রথমত একটি জিনিস পরিষ্কার করে নেয়া উচিৎ তা হলো 'Moving Average" বা "Sliding Window Average" 'Time Series' বিশ্লেষনের জন্য প্রযোজ্য কিন্তু এখানে সমস্যা হল নদীতে পানির প্রবাহ কিছুটা ব্যাতিক্রম। আমি নিচের ছবিটির দ্বারা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছি।
উপরের ছবিটি আন্তর্জাল থেকে নেয়া। এটি নিছক একট উদাহরন এর সাথে গঙ্গার প্রবাহকে সংখ্যার দ্বারা আবার মিলাবেননা। গ্রাফটিতে মাসের সাথে পানির প্রবাহ কিভাবে পরিবর্তিত হয় একটি নদীতে তার একটি নমুনা পাওয়া যাবে। এখন আপনি যদি বৎসরের মোট প্রবাহকে সময় দিয়ে ভাগ করে একটি গড় প্রবাহ বের করেন তা আসলে গ্রাফটিতে লাল রেখাটি নির্দেশ করবে। এখন বুঝুন যে গড় প্রবাহ যেটি দিয়ে আপনি 'টাইম সিরিজ' একেছিলেন তা কিভাবে মানুষকে ধোঁকা দেয়। এখন এই টাইম সিরিজ নিয়ে আপনি যতই মুভিং এভারেজ বিশ্লেষণ করুননা কেন তা কোনভাবেই বাস্তব চিত্রকে তুলে ধরবেনা।
আপনার কথা সত্যি। কিন্তু যখন সংখ্যাগুলোর 'স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন' বা বিচ্যুতি যখন কম থাকে তখন তাদের গানিতিক গড় কিন্তু বাস্তবিক হয়। দেখা যায় (ছবিটি থেকেও এটা অনুমেয়) যে জানুয়ারী থেকে মে মাস মর্যন্ত আর সংখ্যাগুলোর বিচ্যুতি কম আর সেইজন্য এই শুষ্ক মৌসুমের গড় কিন্তু একটি বাস্তবিক রূপ তুলে ধরবে। গঙ্গা চুক্তি করার সময় এর থেকেও সাবধানতা অবলম্বন করা হয়েছে ব্যাবহার করা হয়েছে ১০ দিনের গড় , অর্থ্যাৎ জানুয়ারী থেকে মে পর্যন্ত এই ৫ মাসকে মোট ১৫ টি পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে যার প্রতিটা পর্যায় ১০ দিনের। এই দশ দিনের গড় প্রবাহ নিয়েই আমার তৈরী করা গ্রাফটি আমি আমার লেখায় উপস্থাপন করেছি।
আসলে আমি আমার মন্তব্যে উল্লেখ করেছি যে পরিমান পানি ফারাক্কার উজানে উত্তোলিত হয় তার পরিমান আমার তথ্যসুত্র [৮] অনুযায়ী ২৫,০০০ থেকে ৪৫,০০০ কিউসেক। লক্ষ্য করুন শুষ্ক মৌসুমেই যেখানে ফারাক্কায় পানির গড় প্রবাহ ৬০,০০০ থেকে ৭০,০০০ কিউসেকের মধ্যে উঠানামা করে সেখানে বর্ষা মৌসুমে ১২০০,০০০ কিউসেক অবধিও হতে পারে। এখন বলুন মোট প্রবাহকে গড় করে তার থেকে ঐ ২৫,০০০ বা ৪৫,০০০ কিউসেক প্রবাহ বাদ দিলে গড়ের উপর তেমন কোন প্রভাব আসেনা যতটা আসে শুষ্ক মৌসুমের প্রবাহের উপর। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে মৌসুমী বায়ুর প্রবাহের তারতম্যের কারনে পানির প্রবাহ যতটা পরিবর্তনশীল শুষ্ক মৌসুমে কিন্তু ততটা পরিবর্তিত হয়না। তাই শুষ্ক মৌসুমের ১০ দিন ভিত্তিক গড়েই পানির উত্তোলন বেশী প্রভাব ফেলে।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আপনিই ঠিক। আমার ধারণা ছিল গরম আর বর্ষায় জলের আকস্মিক পরিমাণভেদ মূলত বৃষ্টির জলে পুষ্ট নদীতেই (যেমন আমার বাড়ির পাশের দামোদর) হয়। সেটা ঠিক নয়। দেখলাম গঙ্গার বর্ষাকালীন প্রবাহ ১৮-২৫ লাখ কিউসেক, যেখানে আলোচ্য সময়ে তার পরিমাণ মাত্র ১ লাখ কিউসেকের কাছাকাছি। সুতরাং সারাবছরের প্রবাহের সিংহভাগ আসে বর্ষার প্রবাহ থেকে। শীত-গ্রীষ্মেই সেচের জলের প্রয়োজন পড়ে, তাই উজানে উত্তোলনও ওই সময়েই হয় - কিন্তু এই কম্পোনেন্টর প্রভাব মোট প্রবাহের তথ্যে নগণ্য। মজার কথা এই একই সময়ে জল আসে মূলত হিমবাহের বরফগলা জল, তাই হিমবাহের দৈর্ঘ্যহ্রাস জনিত প্রভাবও থাকবে। কোনটা কতটা - সেটা আমি জানি না। কোনো উপাত্ত পেলাম না হরিদ্বারে জলের প্রবাহ কি রকম হারে পরিবর্তিত হয়েছে তা নিয়ে। তার পরে আছে উপনদীগুলোর (হিমবাহ + অতিরিক্ত জল উত্তোলন) প্রভাব। সব মিলিয়ে হিসাব জটিল। অথচ তথ্য নেই কোনো।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত একটি ব্যাপার জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি, আপনিও কি আমার মত পানিসম্পদ প্রকৌশলী ? আপনার আলোচনা থেকেই মনে হচ্ছে এই কথা। ভাল থাকবেন।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
না না, আমি কম্পিউটার প্রকৌশলী। আমি শুধু আগ্রহের বশেই পড়ছি বিষয়টা নিয়ে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগুভাই, এক কাজ করতে পারেন। গ্রাফদু'টো ফ্লিকারে আপলোড করে এমবেড করতে পারেন মন্তব্যে।
আমার ধারণায় ভুল ছিল, তাই এর পেছনে আর সময় খরচা করব না ।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
নতুন মন্তব্য করুন