দিন বদলের আশাঃ ঢাকার নদী

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: মঙ্গল, ১৬/০৬/২০০৯ - ৯:৫৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

প্রবাদে আছে ‘দাঁত থাকতে নাকি দাঁতের মর্যাদা বুঝতে হয়’ আর আমরা দাঁত চলে গেলেও দাঁতের মর্যাদা বুঝার চেষ্টা করিনা। নদী তীরের অবৈধ স্থাপনা বন্ধের জন্য দেখলাম এখন ‘গানে গানে নদী বাঁচাও’ কর্মসূচী শুরু হয়েছে কিন্তু কতৃপক্ষের তাতে কিছু যাবে আসবে বলে মনে হয়না। বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন শুরু হয়েছে অনেক আগে, রাজপথে মিছিল হয়েছে, স্লোগান, ব্যানার, ফেস্টুনে ভরে গিয়েছে ঢাকা নগরী কিন্তু বুড়িগঙ্গার মরণ থামাতে যাদের এগিয়ে আসার কথা তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়েছে, নিজেদের আখের গোছানোর কাজে মগ্ন গণতান্ত্রিক সরকার কিংবা বন্দুকের নলের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণকারী সামরিক সরকার কেউই এই বিষয়ে কোন দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ নেয়নি কখনো। মানুষের দাবী রয়ে গেছে মানুষের মুখে মুখেই আর নতুন প্রজন্ম অপেক্ষা করছে এক ভয়াবহ নগরীর যেখানে নাগরিক ব্যস্ততা থেকে খানিকক্ষণের অবসরে যাবার কোন জায়গা নেই, নদীর নির্মল বাতাসত দূরে থাক সেখানে একদন্ড দাঁড়ানোও আজ দুঃস্বপ্নের মত।

মানুষের যেমন জন্ম মৃত্যু আছে ঠিক তেমনি নদীরও আছে। একটি নদীর মৃত্যু হয় দুই ভাবে, ভৌতগত ভাবে আর জীবগত ভাবে। যদি নদীর প্রবাহ বন্ধ বয়ে যায় কিংবা গতিপথ রোধ হয়ে যায় তাহলে ভৌতগত ভাবে নদীকে আর বাঁচিয়ে রাখা যায়না। আবার যদি নদীতে দূষণের মাত্রা এত বেড়ে যায় যে নদীর পানিতে জলজ জীবের বাঁচার মত প্রয়োজনীর অক্সিজেন থাকেনা তাতেও ধীরে ধীরে নদীর মৃত্যু ঘটে। আমাদের ঢাকার আশেপাশের নদীগুলো মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে দুইভাবেই। একদিকে অবৈধ স্থাপনা করে আমরা নদীর গতিপথকে সঙ্কুচিত করে ফেলছি আর অন্যদিকে ক্রমাগত দূষণ করে এর জলজ বাস্তুতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিচ্ছি দিনে দিনে।

পৃথিবীর ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে সভ্যতার গোড়াপত্তন হয়েছে কোন না কোন নদী, উপকূল বা মরুদ্যানকে কেন্দ্র করে। এর মূল কারণ হচ্ছে খাবার পানি আর নৌচলাচল। আজ আমরা ঘুম থেকে উঠে পানির ট্যাপ ছাড়লেই বিশুদ্ধ পানি পাই আর চাইলেই বাহারী রকমের সৌখিন বাস আর ট্রেনে চড়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাই তাই নদী এখন আমাদের কাছে অপাংক্তেয়। কিন্তু একটু যদি চিন্তা করি তাহলে ভয়াবহ একটা চিত্র আমাদের সামনে আসবে। ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর যেভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে আর গভীর নলকূপ দিয়ে পানি তোলা যাবেনা। এখনো ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ মূলত নলকূপ ভিত্তিক, বুড়িগঙ্গার পানি আজ বিশুদ্ধিকরণও অনেক ব্যয়সাপেক্ষ, মেঘনা থেকে পানি এনে যে সরবরাহ করবে তাও যথেষ্ট ঝক্কির ব্যপার।

ঐতিহ্যগত ভাবে ঢাকা শহরের গোড়াপত্তন হয়েছিল বুড়িগঙ্গাকে কেন্দ্র করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এর পরিধি বেড়েছে সেই সাথে ঢাকা পরিনত হয়েছে মেগা সিটিতে। ঢাকার চারদিকে ঘিরে রয়েছে নদীঃ পূর্বে বালি, উত্তরে ও পশ্চিমে তুরাগ আর দক্ষিণে বুড়িগঙ্গা। সেই সাথে এর অভ্যন্তর দিয়ে বয়ে চলত বেশ কিছু প্রশস্থ খাল (উদাহরণ সরূপ ধোলাইখাল, বেগুনবাড়ি খাল ইত্যাদি)। এই খালগুলি ঢাকার জলনিষ্কাশণ ব্যবস্থায় গুরুত্ত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করত। আমরা বাসস্থানের জন্য ধীরে ধীরে এই খালগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছি ধীরে ধীরে তাই আজ এক পশলা বৃষ্টি হলেই ঢাকার রাস্তায় পানি জমে যায়।আমাদের বর্জ্যের চাপে ঢাকার আশে পাশের নদীগুলো হারিয়েছে তার জীবন, অবৈধ স্থাপনার চাপে তারা হয়েছে সঙ্কুচিত।তাই নদীর জলে পা ভিজিয়ে বসে থেকে প্রেমালাপত দূরের কথা নদীর পানির দূর্গন্ধে তার আশে পাশে যাওয়াই আজ দুষ্কর। একসময় বুড়িগঙ্গায় নৌকাভ্রমণ ঢাকাবাসীদের বিনোদনের মাধ্যম ছিল আজ তাও নিঃশেষ। অথচ ইউরোপে আমরা দেখেছি শহরগুলির মাঝ দিয়ে কৃত্রিম ভাবে ছোট ছোট খাল খনন করে নিষ্কাশনের ব্যাবস্থা করেছে আর সেই সাথে বিনোদনেরও আর আমাদের প্রাকৃতিক খালগুলিকে আমরা ভরে ফেলেছি অবহেলা ভরে।

আমরা খবরের কাগজ, টেলিভিশনের মাধ্যমে নদীর পানি দুষণের খবর দেখে বিচলিত হই কিন্তু এর ভয়াবহতা কিংবা আসলে দূষণের মাত্রাটা কিরকম তা খুব বেশি বোধ করিনা কারন ঢাকা শহরের খুব কম মানুষই আছে যারা চাক্ষুষ ভাবে নদীদূষণ লক্ষ্য করেছেন। আমার নিজের কিছু অভিজ্ঞতা বলি, ‘ব্যবহারিক সার্ভেয়িং’ করাতে একবার বুয়েটের পানিসম্পদ কৌশলের ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে গিয়েছ বালু নদীতে। ছোট একটা নদী, ছাত্রদের মূল কাজ হলো এর প্রস্থ আর গতি মেপে এর মোট প্রবাহ পরিমাপ করা। সমুদ্র থেকে যথেষ্ট দূরে থাকলেও এই নদীতে জোয়ার ভাটার প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ভাল ভাবেই। আমরা সকালে গিয়েছি, তখন নদীর পানির যে গভীরতা ছিল কাজ করতে করতে যখন দুপূর গড়িয়েছে তখন পানির গভীরতা কমেছে আর সেই সাথে দুইপাড়ে জমে গিয়েছে কালো কালো সব বর্জ্য আর সেই সাথে দূর্গন্ধে সেখানে কাজ করাত দূরে থাক অবস্থান করাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই যদি হয় একটি রাজধানীর আশে পাশের অবস্থা সেক্ষেত্রে সেই শহরের মানুষদের সুস্থতা আমরা কিভাবে আশা করতে পারি।

পৃথিবীর বুকে খুব কম দেশই আছে যেখানে রাজধানীর বুকে রয়েছে ট্যানারী। ঢাকার হাজারীবাগের ট্যানারীর বর্জ্য ফেলা হয় বুড়িগঙ্গার বুকে। বিষাক্ত এই বর্জ্য নদীর পানির সাথে মিশে এর জলজ প্রানীদের মৃত্যু ঘটায়। আমাদের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাও আধুনিক নয়। আগে ঐতিহ্যগত ভাবে শহরের বাসিন্দারা তাদের নিজেদের বাসায় সেপটিক ট্যাঙ্ক নির্মান করত, সিটি কর্পোরেশনের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য এখন কেউ তা আর করেনা। আমাদের পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনের সুযোগ আর সাধ্য দুটোই কম সেক্ষেত্রে বৃষ্টির পানি, গোছলের পানি আর পয়ঃ একই পথ দিয়ে বের হয়ে সরাসরি গিয়ে নদীতে পড়ে আর নদী হারায় তার জীবন। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে খাবার পানির জন্য হয়ত মেঘনা থেকে পান নিয়ে আসা হবে কিন্তু মানুষের সুস্থ বিনোদনের জন্য ট্রাকে ভর্তি করে মানুষকে তো আর মেঘনা পাড়ে নির্মল বাতাস খেতে নিয়ে যাওয়া যাবেনা। আমাদের মনে আছে শুধু মাত্র শহরের কোলাহল থেকে একটু দূরে নদীর একটু নির্মল হাওয়া খাওয়ার জন্য মানুষ পাগলের মত ছুটে যেত আশুলিয়ায়, সে পথও একদিন বন্ধ হবে, বুড়িগঙ্গা গেছে এবার তুরাগও যাবে। শরীরের শিরা উপশিরা বন্ধ হলে মানুষ যেমন হৃদরোগে ভুগে তেমনি ঢাকার এই নদীগুলো শুকিয়ে একদিন শহরটাও রোগে ভুগবে তখন এর মূল্য দিতে হবে আমাদেরই।

আমাদের দেশের মন্ত্রীদের মুখে যখন কথার খই ফুটে তখন তাদের হিতাহিত জ্ঞান থাকে কিনা আমার সন্দেহ আছে। একবার এক মন্ত্রীত আমাদের ম্যাগনেটিক ট্রেন এর স্বপ্ন দেখাল। সেদিন দেখলাম সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন দেশের সব নদীগুলো ড্রেজিং করে নদীর নাব্যতা বাড়াবেন। উনার কিছু নদীপ্রকৌশলগত জ্ঞান থাকার প্রয়োজন অনুভব করছি। বাংলাদেশের নদনদীগুলোর পলি বহনের হার আর ড্রেজিং এর ব্যয় সম্পর্কে উনার ন্যুনতম ধারনা থাকলেও এই মন্তব্য করতে আরেকবার ভেবে দেখতেন। যাই হোক সে প্রসঙ্গে আরেকদিন আসব আমার কথা হল দেশের সব নদীর নাব্যতার আগে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় আপনি বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু এই গুলিকে দূষণের হাত থেকে বাঁচান, অবৈধ স্থাপনা দূর করুন, ঢাকার খাল গুলিকে আবার খনন করুন, নদীর ধার থেকে ট্যানারির মত শিল্প দূরে সরানোর ব্যবস্থা করুন তাহলে আমরা আমাদের প্রিয় শহরটাকে হয়ত আবার ফিরে পাবো। হয়ত সেদিন আমাদের সন্তানেরা বুড়িগঙ্গার বুকে নৌকায় করে ঘুরে বেড়াবে, নদীর শান্ত শীতল জলে পা ভেজাবে, প্রেয়সীর সাথে গল্প করতে করতে সুর্যাস্ত দেখবে। সেই দিনবদলের আশায় দিন গুণে যাচ্ছে ঢাকার এক কোটি মানুষ সেই সাথে সারা দেশ।

ছবিসুত্রঃ আন্তর্জাল ( লিঙ্ক টা নিচে আবার দিয়ে দিলাম )

http://thejakartaglobe.com/media/images/large/20090519215711114.jpg


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

চলুক

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ সিমন ভাই

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

মামুন হক এর ছবি

খুবই দরকারী একটা লেখা জাহিদ ভাই। ভালো লাগল। দেশের কর্তাব্যক্তিদের ধরে ধরে পড়ানো উচিৎ এই লেখাটি।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ মামুন ভাই। আসলে লেখাটি তাদের নজরে আসলে কৃতার্থ হতাম।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

"দিন বদল" কথাটা জোরে-শোরে শুরু হয়েছে গত জাতীয় নির্বাচন থেকে। আমি অবশ্য এই কথাতে কখনোই ভরসা পাইনি। কারণ, যারা দিন বদলের কথা বলা শুরু করে ভোটের হাওয়া নিজেদের পালে লাগাচ্ছিল তাদের কারো ইতিহাস বিশ্বাস করার ভরসা দেয়না। তারপরও কিছু মানুষ দিন বদলের কথা বলেই যায়। এই পোস্টটিতে আমি ভরসা পাবার মত কোন কথা পাইনি। বরং ভয়াবহ ভবিষ্যতের স্পষ্ট ও যৌক্তিক ইঙ্গিত পেয়েছি। তারপরও এই পোস্টের নাম "দিন বদলের আশা"! পোস্টের লেখক আশাবাদী মানুষ তাই হয়তো তিনি এত কিছুর পরেও আশা করতে পারেন। কিন্তু আমি এখানে আশা করার কিছুই দেখতে পাচ্ছিনা। দিন বদলের কথা বলে জনগণের ম্যাণ্ডেট নেয়ারা এখন পর্যন্ত লক্ষ্যনীয় এমন কিছুই করেনি যাতে আমরা কিছু আশা করতে পারি। বরং ভয় পাবার মত ঘটনাগুলোই ঘটছে।

****************************************************

বহু অর্থ ব্যয় করে নির্মিত ফতেপুর সিক্রি রাজধানী হিসেবে টিকে থাকতে পারেনি শুধু পানির অভাবে। ঢাকা তারচেয়েও করুণ পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। নাগরিক জীবনের জন্য অত্যাবশকীয় প্রতিটি বিষয় (যেমন পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানী, পয়ঃনিষ্কাশন, জল নিষ্কাশন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বাসস্থান, চলাচলের উপায়সমূহ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, চিকিৎসা সুবিধা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদনের উপায়, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সরবরাহ, দেশের অন্যান্য অংশের সাথে যোগাযোগ ইত্যাদি) এতো নাজুক অবস্থায় আছে যে এগুলোর এক বা একাধিক বিষয় যে কোন সময় হুড়মুড় করে ভেঙ্গে পড়বে।

****************************************************

কাজ করার, কাজ করানোর, কাজ আদায় করার ক্ষমতা যাদের হাতে আছে তারা সব জেনে বুঝেও কেন কাজের কাজ করেনা, কেন ঢাকা বা দেশকে বাঁচানোর চেষ্টা করেনা তা আমার বোধগম্য নয়। পরিবার-পরিজনকে বিদেশে পাঠিয়ে দিলে, সময় খারাপ হলে নিজেশুদ্ধ পালিয়ে গেলে সমস্যার সমাধান হয়ে গেল এমনটা ভাবাই কাল হয়েছে। এই দেশটা বা তার মানুষগুলো যারা পালিয়ে যাবেনা বা পালাতে পারবেনা তাদের জন্য কারো কোন মায়া নেই। অথচ প্রতিনিয়ত এদের দোহন করেই এই পরজীবিরা বিদেশের বাড়িতে আয়েশ করে। দেশটা ডুবলে বিদেশে বসে তাদের এই আয়েশ যে বন্ধ হয়ে যাবে সেই খেয়াল নেই।

****************************************************

গতকাল রাতে টিভিতে "টিপাইমুখ বাঁধ", "এশিয়ান হাইওয়ে" আর "জলমহাল ইজারা" সংক্রান্ত যে খবরগুলো দেখলাম তাতে মেজাজ খুব খারাপ হয়ে আছে। ক্ষমতায় আওয়ামী লীগের বদলে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াত বা অন্য কোন কিংস পার্টি থাকলেও এখবরগুলো একই রকম থাকত। এই সত্যটা দেশের মানুষও খুব ভালো করে জানে। তারপরও ২০০৮ সালের শেষে দেশের মানুষ দিন বদলের কথা শুনে বিশ্বাস করে। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে তারা আবার অন্য রকম দিন বদলের কথা শুনে বিশ্বাস করা শুরু করবে। ২০১৯ সালে আবার এর পূনরাবৃত্তি হবে ...............



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

আরিফ ভাই

আসলেই আমার এই পোস্টটিতে আশার কিছুই নেই আছে কিছু হতাশার কথা, ভয়াবহ ভবিষ্যতের কথা। নিজের প্রিয় শহরটিকে এভাবে একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে যেতে দেখে কার না খারাপ লাগে বলুন। কিন্তু একথাও সত্য আমাদের সীমাবদ্ধতা প্রচুর। নাগরিক হিসেবে আমরা দাবী করতে পারি, আন্দোলন করতে পারি , এর বেশী কিছু কিইবা করার আছে আমাদের। তবে হ্যা যা করতে পারি তা হলো নিজেরা এই দূষণ কমাতে এগিয়ে আসতে পারি। আজকে ট্যানারী মালিক সমিতির সবাই মিলে যদি ট্যানারীগুলো ঢাকার বাইরে নিয়ে যায়, কিংবা দখলবাজরা যদি নদীকে তাদের দখলদারিত্ব থেকে একটু ছাড় দেয় তাহলে হয়ত কিছুটা হলেও এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসতেও পারে।

যে বিষয়টি আমার মাথায় আসেনা তা হলো এত কিছুর পরেও কেন এই বিষয়টি নিয়ে সরকারের টনক নড়েনা ? আন্দোলন করতে করতে মানুষও এখন ক্লান্ত। কলামের পর কলাম লিখে যাচ্ছে মানুষ আর সরকার ও বিরোধীদল ব্যস্ত আছে 'সেনানিবাসের বাড়ি' ইস্যু নিয়ে।

কিন্তু এত কিছুর পরেও যখন দেখি মানুষ হাল ছেড়ে দেয়না, নদী বাঁচাও নিয়ে গায়েনরা গান বাঁধে তখন অসম্ভব আশাবাদী একজন মানুষ হিসেবে আসলেই দিন বদলের কিছু স্বপ্ন দেখতে শুরু করি, আমি জানিনা এই স্বপ্নের বাস্তবায়ন কখন হবে তবুও মনের কোণে কিছু আশা জিইয়ে রাখি সবসময়।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শামীম এর ছবি

মাথাতে গ্যাঞ্জাম থাকলে কি আর শরীর ভাল থাকে!

নেতা নেত্রীরাই চরমতম অসৎ ও দূর্নীতিবাজ ... তাদের অনুসারীদের কোন আশা নাই। ... হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রীর যুগ এইটা ... তাই মন্ত্রী হতে এখন আর জ্ঞান লাগে না।

আজকের ইত্তেফাকে প্রথম পাতায় প্রধান খবরটা দেইখেন ... ড্রেজার দিয়ে বুড়িগঙ্গার বিরাট অংশ ভরাট করে হাউজিং করার পায়তারা করছে একজন (নেতা!) ... সকলের চোখের সামনেই ঘটছে ... এখন ইত্তেফাকের মত পত্রিকার লিড নিউজ হইলো ... তারপরেও কোন সুরাহা কি হবে?

BTW: পত্রিকায় দেয়ার মত দারুন ছবি তুলেছেন। চলুক
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ শামীম আপনার মন্তব্যের জন্য।সবকারী দলের নেতারা সকলের সামনেই এইসব করে বেড়ায় কারন তারা জানে তাদের কিছুই হবেনা।

ছবির কৃতিত্ব অবশ্য আমারনা , এটি আন্তর্জাল থেকে নেয়া। আসলে দেশের বাইরে থাকাতে ইচ্ছে থাকলেও এইসব ছবি তুলতে পারিনা।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শামীম এর ছবি

ছবিটার কপিরাইট থাকতে পারে। আর এটা লিংক করা ছবি না, বরং সচলায়তনে আপলোড করা হয়েছে; তাই পোস্টেই ওটার সূত্র উল্লেখ করে দেয়া মনে হয় নিরাপদ।

পোস্টে উত্তম জাঝা!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সচল জাহিদ এর ছবি

সচলের মডারটর বরাবর ইমেইল করেছি ছবিসুত্রটি যোগ করার জন্য। ধন্যবাদ তথ্যের জন্য। এখানে আবার দিয়ে দিলামঃ

ছবিসুত্রঃ আন্তর্জাল

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হিমু এর ছবি

সমস্যাটির সমাধান দুইভাবে হওয়া প্রয়োজন। এক, রাজনৈতিক কৌশল, যা বুড়িগঙ্গাকে আরো ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে, দুই, কারিগরি কৌশল, যা বুড়িগঙ্গার ক্ষত সারাবে। দ্বিতীয় সমাধানটিতে পানিসম্পদকৌশলের দিক থেকে কী কী করার আছে?

আমার মনে হয়, সরকারের নদীরক্ষা আইন প্রণয়ন করা উচিত। এর শাস্তির বিধান রাখা উচিত মৃত্যুদন্ড। নদী দখল বা দূষণের দায়ে দশ-বারোটাকে ঝুলিয়ে দিলে বাকিগুলি ঠান্ডা হবে। ড্রেজিং করে নদী রক্ষা করা যায় না, ইঞ্জিনিয়ারদের পকেটে তেল চুরির পয়সা যায় শুধু।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

পানিসম্পদকৌশল গত ভাবে প্রাথমিক পদক্ষেপগুলি হতে পারে নিম্নরূপঃ

১) প্রথমেই সকল দূষন পয়েন্ট সোর্স বন্ধ করা।

২) নদীর বুকে জমা পড়া দূষিত বর্জ্য সরাতে ড্রেজিং করা। এই পদক্ষেপটি যথেষ্ট ব্যয়সাপেক্ষ কিন্তু এর ভাল কোন বিকল্প নেই কারন ফ্লাশিং এর মাধ্যমে দূষন দূর করতে চাইলে এর ভাটিতে দূষন আরো বেশী ছড়িয়ে পড়বে।

৩) প্রাথমিক ড্রেজিং এর পরে ফ্লাশিং একটি উপকারী পদক্ষেপ। বুড়িগঙ্গা নদীর পানির উৎস আর পতন দুটোই হলো ধলেশ্বরী নদী, সেক্ষেত্রে ধলেশ্বরী নদীতে বুড়িগঙ্গার উৎসতে কোন নদীরক্ষন স্ট্রাকচার যেমন 'গ্রোয়েন' বা 'ভেইন' নির্মান করে এতে বেশি পরিমান পানি ফ্লাশ করার ব্যবস্থা করলে নদীর নাব্যতা আর দূষন দুটোই নিয়ন্ত্রনে আসবে।

৪) নদীর বাস্তুতন্ত্র ফিরে আসতে সময় লাগবে। দূষন কমে গেলে ধীরে ধীরে তা জলজ প্রানীর বসবাসের যোগ্য হবে তখন প্রাকৃতিক ভাবেই এই সমস্য সমাধান হবার কথা।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রিয়াজ এর ছবি

প্রথমেই সকল দূষন পয়েন্ট সোর্স বন্ধ করা

রাজনৈতিকভাবে এটাকে সম্ভব করে তোলা বেশ কঠিন হবে বলে মনে করি। সামষ্টিক পর্যায়ে এটা সমাধান করার চেয়ে স্থানীয় ভাবে অথবা কিছুটা প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা হয়ত কাজটিকে সহজ করে দিতে পারে।

নদীর বুকে জমা পড়া দূষিত বর্জ্য সরাতে ড্রেজিং করা

আপনার এই মন্তব্যের আলোকে দুইটি প্রশ্নঃ
১) কি পরিমান বর্জ জমা পড়ে আছে আর তা দূর করতে খরচ কেমন পড়বে এটার কোন আনুমানিক হিসাব কি জানা আছে কারো? এটা এই সমস্যা সমাধানের একটি বাস্তবিক দিক।

২) দুষিত বর্জের যে তলানি পড়ছে দুষনমুক্ত পানিপ্রবাহ বজায় থাকলে তার ক্ষতিকর প্রভাব নষ্ট হবার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা তাও বোধহয় ভেবে দেখা দরকার। যতদূর জানি নদীতে নাব্যতা বজায় রাখার জন্য যতসামান্য যা ড্রেজিং দরকার হয় তাতেই নাভিশ্বাস উঠার যোগার। তাই এই প্রশ্ন। তাছাড়া অর্থনৈতিক দিকটিও তো ভেবে দেখতে হবে।

তবে এই প্রশ্ন করার পাশাপাশি স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জাগে এসব ভাবনার আগে আমাদের সামষ্টিক নীতিতে নদীদুষনের ব্যপারটিকে কতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

আমার কেবল মনে হচ্ছে এর সমাধানে মূল উপায় নিহিত আছে মেজরিটারিয়ান ডেমক্রেসি থেকে ডেলিবারেটিভ ডেমক্রেসির দিকে যাত্রা (অমর্ত্য সেনের একটি লেখা থেকে পার্থক্য সম্পর্কে জানলাম)। আমাদের সাম্প্রতিক যাত্রাপথ কিন্তু উল্টোদিকে। কারো এই দাবির ব্যপারটা ওভার সিম্পলিফিকেশন মনে হতে পারে; অর্থনীতির ভাষায় বলতে গেলে নদীদুষনের পেছনে ব্যক্তির আচরন গত দিকটিকে আরো গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। আন্দোলন করে বা পুলিশ লাগিয়ে এটার সমাধান খুবই কঠিন হবে।
১৯৬৮ সালে সাইন্স পত্রিকার একটি লেখা বেশ আলোচিত হয়েছিল "The Tragedy of the Commons"। অর্থনীতিতে এক্সটার্নালিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় এখনো বেশ গুরুত্বের সাথে এই রেফারেন্সটি ব্যবহার করা হয়। এই ধারায় এরপর আরো আলোচনা হয়েছে। ঢাকার নদীদুষনের আলোচনায় এই লেখাটির রেফারেন্স না থাকায় 'কি যেন নেই' এমন মনে হচ্ছিল। তাই ঢুকিয়ে দিলাম।

ধন্যবাদ আপনার পোষ্টের জন্য। খুব জরুরী বিষয়।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ রিয়াজ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য। আপনার প্রশ্নগুলির উত্তর নিচে দেবার চেষ্টা করেছিঃ

১) কি পরিমান বর্জ জমা পড়ে আছে আর তা দূর করতে খরচ কেমন পড়বে এটার কোন আনুমানিক হিসাব কি জানা আছে কারো? এটা এই সমস্যা সমাধানের একটি বাস্তবিক দিক।

আসলে এটা হুট করে বলা যাবেনা। নদীজরীপ করে এর গভীরতা পরিমাপ করে এবং নদীর বুক থেকে তলানীর নমুনা সংগ্রহ করে সমীক্ষা করতে হবে।

২) দুষিত বর্জের যে তলানি পড়ছে দুষনমুক্ত পানিপ্রবাহ বজায় থাকলে তার ক্ষতিকর প্রভাব নষ্ট হবার কোন সম্ভাবনা আছে কিনা তাও বোধহয় ভেবে দেখা দরকার। যতদূর জানি নদীতে নাব্যতা বজায় রাখার জন্য যতসামান্য যা ড্রেজিং দরকার হয় তাতেই নাভিশ্বাস উঠার যোগার। তাই এই প্রশ্ন। তাছাড়া অর্থনৈতিক দিকটিও তো ভেবে দেখতে হবে।

আসলে দূষণ দূর করার ক্ষেত্রে যেসব ট্রিটমেন্ট পদ্ধতি আছে তার অধিকাংশই আসলে বদ্ধ পানির উপযোগী। প্রবাহিত পানির ক্ষেত্রে তার কার্য্যকারীতা গবেষণার প্রয়োজন রাখে।দূষণ মুক্ত পানির প্রবাহ বর্তমান দূষনকে হয়ত ভাটিতে পরিবাহিত করে নিয়ে যাবে।

ড্রেজিং অবশ্যই ব্যয়সাপেক্ষ কিন্তু আমাদের কিন্তু বড় মাপের ড্রেজিং এর অভিজ্ঞতা আছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের " কপোতাক্ষ নদী রিস্টোরেশন' প্রকল্প এর উদাহরণ। বছরের পর বছর ধরে কৃত পাপের মোচনের জন্য প্রায়শ্চিত্তত করতেই হবে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

এনকিদু এর ছবি

আমাদের দেশের মন্ত্রীদের মুখে যখন কথার খই ফুটে তখন তাদের হিতাহিত জ্ঞান থাকে কিনা আমার সন্দেহ আছে।

আমার কোন সন্দেহ নাই । আমি নিশ্চিত ।

একটা জিনিস খেয়াল করলাম, ৬৬ বার পঠিত পোস্টে দুটি মন্তব্য (আমার জানামতে) অ-মিস্ত্রী সচলদের কাছ থেকে এসেছে । বাকি সবগুলো মন্তব্য করেছেন যেই সচলেরা তারা সকলেই কোন না কোন ধরনের মিস্ত্রী । মিস্ত্রীরা ছাড়া বাকিরা কি এসব নিয়ে চিন্তা করেননা । নাকি চিন্তা করলেও মতামত দিতে আগ্রহ বোধ করেন না ?

কেন রে ভাই ? দেশটা যেরকম সবার, সমস্যা গুলোও তো সবার । শুধু মিস্ত্রীদের না, অমিস্ত্রীদেরও না ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ এনকিদু।

কেন রে ভাই ? দেশটা যেরকম সবার, সমস্যা গুলোও তো সবার । শুধু মিস্ত্রীদের না, অমিস্ত্রীদেরও না

আসলেই আমাদের এই বিষয়টি নিয়ে আরো সচেতন হওয়া উচিৎ। বুড়িগঙ্গা নিয়ে আমাদের এখন আসলেই দেয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে সুতরাং এই মুহুর্তেই কিছু না শুরু করলে আর কিছুই করার থাকবেনা ভবিষ্যতে। চলুন আমরা সচল থেকেই কিছু একটা শুরু করি।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হিমু এর ছবি

জাহিদ ভাই, টিপাইমুখ ইস্যুতে আপনার কাছ থেকে বিশেষজ্ঞ-পোস্টের আশায় বসে আছি।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ হিমু। আসলে আমি তথ্য জোগার করছি। আশা করি শীঘ্রই পোস্ট দিব।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রানা মেহের এর ছবি

গঙ্গার পানি চুক্তি নিয়ে লেখাটা শেষ করলেন না?
ঢাকার নদীগুলোকে বোধহয় আর কেউ বাঁচাতে পারবেনা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সচল জাহিদ এর ছবি

রানা

গঙ্গাচুক্তির লেখাটা অবশ্যই শেষ করব। অনেক ধন্যবাদ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আছিলো একটা নদী, বানায়া ফেললো ডাস্টবিন... হইলো কিছু!!

বুড়িগঙ্গার অবস্থা সত্যি ভয়াবহ, অথবা তারচেও খারাপ। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সব নদী সংরক্ষনের। বেশ ফলাও করে তা ছাপা হচ্ছে। কিন্তু কিভাবে কাজটা করা হবে তা জানে না কেউ। শুধু নদীপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেই তো হবে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়টা দরকার। গতবছর শামীম ভাই বুড়িগঙ্গারে নিয়া একটা ভালো পোস্ট দিছিলো। সেখানে লেখছিলো কিভাবে নদীর দূষণ কমানো যায়।

শুধু ঢাকার আশে পাশের না... সারা দেশের নদী নিয়েই এখন থেকে ভাবতে হবে।

আর এখন নদীর নাব্যতা আর ড্রেজিং সমশব্দ হয়ে গেছে। কিন্তু ড্রেজিংয়ের কিছু কুফল সম্ভবত আছে। ড্রেজিং করলে আশেপাশের মাটিতে কাঁপন হয়, তাতে নদীর পাড় ভাঙ্গে বা দূর্বল হয়ে পরবর্তী ভাঙ্গনের জন্য তৈরি হয়।

নদী বিষয়ে একটা বিশেষজ্ঞ কমিটি করে তারপর আগানো ভালো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনার কথা ঠিক। ড্রেজিং এর কিছু কুফল আছে। কিন্তু নদীর বুকে যে পরিমান বর্জ্য জমেছে তা ড্রেজিং ছাড়া দূর করা মনে হয়না সম্ভব। তা না হলে সেগুলো ভাটিতে যেয়ে পড়বে। অন্তত পক্ষে ঢাকার অভ্যন্তরে যেখানে দূষনের মাত্রা তীব্র সেখান থেকে বর্জ্য সরাতেই হবে। তবে সবার আগে দূষনের পয়েন্টগুলো বন্ধ করতে হবে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সোর্সেই দূষণ বন্ধ করতে হবে, ড্রেজিং করে নতুন করে দুর্নীতির ক্ষেত্রে তৈরীর সুযোগ থেকে যায়।

সচল জাহিদ এর ছবি

আসলে দূটোই বাধ্যতামূলক কারনঃ

১) সোর্সে দূষণ বন্ধ করা মানে হলো নতুন কোন দূষণ রোধ করা
২) ড্রেজিং না অন্য যেকোন নদীশাষণ মানে হলো বর্তমান দূষণকে কমিয়ে নিয়ে আসা।

অকেন ধন্যবাদ

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনারা বিশেষজ্ঞ, যা বলবেন তা নিশ্চই ঠিক।

অমিত এর ছবি

রাজনৈতিক নেতারা যেখানে আইনের ঊর্দ্ধে (বানান নিয়ে সন্দেহ আছে), সেখানে আসলে যতই স্টাডি করা হোক না কেন লাভ কচুপোড়া। এই যে ঢাকার আশেপাশের নদীগুলার অবস্থা এবং পরিবেশের যে দূষণ- এর কারণ আর প্রতিকারের উপর একটা মোটাসোটা পেপার নামানো এখন একরাতের মামলা। কিন্তু লাভ কি ? দুই বেহায়া পলিটিকাল পার্টির অবস্থা দেখে মনে হয় তারা দুই দেশের নাগরিক আর দেশটা তাদের যুদ্ধের ময়দান। আর তারা এমনভাবে দেশ শাসন করে যে দেখে মনে হয় আগামীকাল কেয়ামত, কোনও দায়বদ্ধতা নাই, আজকে যত পারো ফূর্তি কর।
অথচ রাজধানীর বুকের উপর এতগুলা নদী, এত সুন্দর যে জায়গা, কত শত বছরের ইতিহাস, এটা যে কতবড় ব্লেসিং-এই অতি সামান্য জিনিসটা এরা বুঝল না।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এগুলা পড়ে আরো কষ্ট হচ্ছে। ইশশ এরা যদি এটা বুঝত যে কত সম্পদ আমাদের আছে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অন্য দেশে দেখছি নদী পায় না, একটা যদি পায় অমনি ধরে হাপুশ হুপুশ খায়... মানে সেটারে সাজায়া গুজায়া পর্যটকের কাছে এমন ভাবে দেখায় যে এইটা নদী না, সাগর।

আর আমাদের এত সুন্দর সুন্দর নদীগুলারে...!!!

জাহিদ ভাই আছেন, শামীম ভাই আছেন, তানভীর ভাই গেলো কই?
আমার মনে হয় সচলায়তনে এটা নিয়ে সিরিয়াস একটা কাজ হতে পারে। হুদাকামে সরকাররে গালি গালাজ করে আর লাভ নাই। এরা এমনি।

এখন আমাদের যা করা উচিত, তা হইলো নদীর এই সমস্যাগুলো কিভাবে দূর করা সম্ভব? তার একেবারে কার্যকর কিছু সমাধান পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা। তারপর এগুলো প্রচার করা। দরকার হলে প্রেস কনফারেন্স করে।
হয়তো এতেও কোনো কাজ হবে না। সবজান্তার কথামতো আমাদের দেশ আসলে দুই দলের লুটপাটেরই দেশ। কিন্তু তবু হাল তো ছেড়ে দেওয়া যায় না, চেষ্টা জারি রাখতে হবে।

যারা এব্যপারে বিশেষজ্ঞ আছেন, তারা কী বলেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অমিত এর ছবি

"সবজান্তার কথামতো আমাদের দেশ আসলে দুই দলের লুটপাটেরই দেশ। "-----

ইয়ে, মানে...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অমিত বলেছেন-

দুই বেহায়া পলিটিকাল পার্টির অবস্থা দেখে মনে হয় তারা দুই দেশের নাগরিক আর দেশটা তাদের যুদ্ধের ময়দান। আর তারা এমনভাবে দেশ শাসন করে যে দেখে মনে হয় আগামীকাল কেয়ামত, কোনও দায়বদ্ধতা নাই, আজকে যত পারো ফূর্তি কর।

স্যরি বস.. ভুল হয়ে গেছে। কিভাবে হইছে জানি না। একন সংশোধনী দিলাম।

কেমন আছেন? অনেকদিন পরে লিখলেন দেখে খুব ভালো লাগছে। নতুন লেখা চাই
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অমিত এর ছবি

আর বইলেন না। আপ্নে বলার পর আমি উপর থেকে মোটামুটি তিনবার পড়ে দেখলাম যে সবজান্তার কমেন্ট আমি আবার রিপিট করলাম না কি??!! হাসি ব্যাপারস না

আর ভাল থাকি ক্যাম্নে ! যেভাবে ঢাকায় সবাই আড্ডা মারার ছবি পোস্টাইতেসে আর আপ্নে যেভাবে মজার সব খাবার সবাইরে খাওয়াইতেসেন-তখন ভাল থাকতে হলে গৌতম বুদ্ধের কাছাকাছি লেভেলের বোধিপ্রাপ্ত হইতে হবে। তবে একসময় না একসময় ভাল থাকার জন্য এসে পড়ব বলে রাখলাম।

সচল জাহিদ এর ছবি

আমি আছি আপনাদের সাথে। বাংলাদেশে নদী নিয়ে সমস্যা সবসময়ই থাকবে। আমাদের সবার আগে এখন মনোযোগ দেয়া উচিৎ ঢাকার আশে পাশের নদীগুলোকে দূষণ মুক্ত করা। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করতে পারি। প্রাথমিক ভাবে পয়েন্ট সোর্সগুলি বন্ধ করতে মূল পদক্ষেপ হতে পারেঃ

১) ওয়াসার পয়ঃ বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলতে না দেয়া
২) শিল্প বর্জ্য শিল্প কারখানার নিজ খরচে পরিশোধনের ব্যবস্থা করা
৩) ট্যানারীগুলিকে অনতিবলম্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া
৪) সদরঘাট টার্মিনালে দূষণ কমানোর উদ্যোগ গ্রহনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা
৫) নদীপাড়ের দোকানপাট ও বাসস্থানের মানুষদের এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যেন তারা নদীর পানিকে দূষিত না করে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অমিত এর ছবি

১) ওয়াসার পয়ঃ বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলতে না দেয়া

ওয়াসা কি সরাসরি বর্জ্য নদীতে ফেলে ? ট্রিটমেন্ট করার পর তারপর পানি নদীতে ফেলে না ?

৪) সদরঘাট টার্মিনালে দূষণ কমানোর উদ্যোগ গ্রহনে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা

জাহিদ ভাইয়ের কাছে কি সদরঘাট সম্পর্কিত কোনও ডেটা আছে ? যেমন ধরেন দিনে গড়ে কি পরিমাণ মানুষ আসা যাওয়া করে, কয়টা লন্চ/ট্রলার এই টার্মিনাল ব্যবহার করে, তারা কোথায় যায়, বা কোথায় থেকে আসে, ওরিজিন আর ফাইনাল ডেস্টিনেশন ? এসব আর কি।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধনুয়বাদ অমিত। আপনার উত্তরগুলো নিম্নরূপঃ

ওয়াসার সিংহভাগ বর্জ্য পরিশোধন ব্যতিরেকে নদীতে ফেলা হয় কারন ঢাকা শহরের এর বিপূল পরিমান পয়ঃবর্জ্য পরিশোধনের জন্য যে পরিমান ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট দরকার তা সিটি কর্পোরেশনের নেই। কিছু লেগুন আছে যা পর্যাপ্ত নয়।

সদরঘাটের বিষয়ে আমার কাছে উপাত্ত নেই তবে বি আই ডব্লিও টি এর কাছ নিঃসন্দেহে আছে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হিমু এর ছবি

আমার মনে হয় নদীব্যবস্থা নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্যে সবার আগে সহজ ভাষায় নদীর জন্ম-মৃত্যু, তার শত্রুমিত্র ... এসব চেনানোর প্রয়োজন, ছবিসহ। চলুন, একটা সিরিজ শুরু করা যাক, যেখানে আলোচনা চলবে, এবং নদী বাঁচানোর জন্যে করণীয়গুলি আমরা অনেক কথার ভিড় থেকে ছেঁকে বার করে সামনে আনতে পারবো। যেমন আমি বিশ্বাস করি কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করে নদী সংরক্ষণ সম্ভব, কিন্তু সে আইনে কী থাকবে কী থাকবে না, তা সঠিকভাবে নির্দেশ করা আমার মতো নদীমূর্খের পক্ষে সম্ভব নয়। নদী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হর্তাকর্তারা এ ব্যাপারে আমার চেয়ে বিজ্ঞ, এমন নজিরও দেখি না। কাজেই যাঁরা নদীকে নিয়ে কাজ করেন এবং ভাবেন, তাঁদের এগিয়ে আসতে হবে প্রস্তাবনাগুলি নিয়ে, যাতে তাঁরা ব্যাপারগুলি সাধারণ মানুষের বোধগম্য করে তুলতে পারেন, এবং নীতিনির্ধারকদের ওপর চাপ তৈরির জন্যে উদ্দীপনা যোগাতে পারেন।

সীমান্তে যেমন বিওপি তৈরি করা হয়, আমাদের নদীর তীর জুড়েও রিভার অবজার্ভেশন পোস্ট বা আরওপি তৈরি করা হোক। একটি আধাসামরিক বাহিনী তৈরি করা হোক যারা নদীকে দখলদূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। কেউ জমি দখল করতে গেলে গুলি করে মেরে ফেলবে। কেউ জমি দূষণ করলে মর্টার মেরে তার হোগা উড়িয়ে দিবে। তা না হলে দুইদিন পর পর দিনে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হয়। এই উচ্ছেদের খরচ তো অবৈধ স্থাপনার মালিক বহন করে না, আমাদের পকেট থেকেই যায়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ হিমু আপনার চমৎকার উদ্যোগের জন্য।

সবার অনুমতি পেলে আমি এই দায়িত্ব্ব নিতে রাজী আছি । সহজ ভাষায় নদীর উৎপত্তি, গতিপ্রবাহ, এর দূষণের কিছু কারন, কিছু প্রতিরোধের উপায় নিয়ে প্রাথমিক লেখাটি তৈরী করতে পারি পরে সেখানে সবাই তথ্য যোগ করে সেটাকে সমৃদ্ধ করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাকে বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ নদীর কিছু দূষনের ছবি দিয়ে সহযোগীতা করতে হবে কারন আমি দেশের বাইরে থেকে আন্তর্জাল ছাড়া আর কোন উৎস পাইনা।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তানবীরা এর ছবি

আমাদের দেশে হবে সেই নেতা কবে?
কথায় না ব্যস্ত হয়ে কাজে ব্যস্ত রবে।

জাহিদ, অনেক কিছু জানতে পারলাম আবার নতুন করে। ধন্যবাদ আপনাকে।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

হিমু এর ছবি

প্রাসঙ্গিক ভেবে ২৬ জুন, ২০০৯ তারিখের প্রথম আলো থেকে একটি আর্টিকেল উদ্ধৃত করছি।

ঢাকার চার নদী বাঁচাতে হাইকোর্টের ১২ নির্দেশনাঃ আশরাফ-উল-আলম

ঢাকার চারপাশের বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ−এই চার নদীর তীরবর্তী জায়গার অবৈধ স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দখলদারেরা যতই প্রভাবশালী হোক, তাদের উচ্ছেদ করতেই হবে সরকারকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মো. মমতাজউদ্দিন আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী চার নদীর সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি তীরবর্তী জায়গার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন বলেও আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন। নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবস্থা অর্থ মন্ত্রণালয়কে করতে হবে বলেও রায়ে বলা হয়েছে। তিন মাস অন্তর সরকারকে হলফনামা দিয়ে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি হাইকোর্টকে জানাতে হবে।
ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর দুষণরোধে তীরের অবৈধ দখল ও স্থায়ী-অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবীর জনস্বার্থে করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। গত ২৩ মে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে পাঁচ আইনজীবী আসাদুজ্জামান, ছারওয়ার আহমদ চৌধুরী, এখলাস উদ্দিন ভুঁইয়া, তপনকান্তি দাস ও মামুন আলম এই রিট করেন। পরে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) এই রিটে পক্ষভুক্ত হয়।

১২ দফা নির্দেশনা: আদালত নদীর তীরবর্তী অবৈধ স্থায়ী ও অস্থায়ী স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। হাইকোর্ট নির্দেশনায় বলেছেন, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ভুমি জরিপ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক কার্যালয় সমন্বিতভাবে ক্যাডেস্ট্রাল সার্ভে বা সিএস রেকর্ড অনুসারে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ ও বালু নদীর সীমানা নির্ধারণ করবে।

সিএস জরিপ এ দেশে সবচেয়ে পুরোনো, আদর্শ ও নির্ভেজাল ভুমি জরিপ। ১৯১৬ সালে এই জরিপের কাজ শুরু হয় এবং কার্যকর হয় ১৯৪২ সালে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী বছরের ৩০ মের মধ্যে নদীর সীমানা নির্ধারণী পাকা খুঁটি (পিলার) স্থাপন করতে হবে। নদীর সীমানার মধ্যে অপ্রয়োজনীয়ভাবে জমে থাকা বালু, মাটি, ভাঙা ইট বা সুরকি (গার্বেজ) আগামী বছরের ৩০ নভেম্বরের মধ্যে অপসারণ করতে হবে। একই সময়ের মধ্যে চার নদীকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
২০১১ সালের ৩১ মের মধ্যে চারটি নদীর তীরে হাঁটার পথ নির্মাণ করতে হবে। একই সঙ্গে করতে হবে বনায়নও। ভুমি মন্ত্রণালয় নদীগুলোর তীরবর্তী ৫০ গজ জায়গা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) হস্তান্তর করবে।

নির্দেশনার মধ্যে আরও আছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চারটি নদীতে প্রয়োজনীয় খননকাজ করবে। বর্তমানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে উল্লেখ করে আদালত বলেছেন, এই উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। অবৈধ দখলদারেরা যত প্রভাবশালী হোক না কেন বৈষম্যহীনভাবে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।

হাইকোর্ট তাঁর নির্দেশে বলেছেন, নদীগুলোর সীমানা নির্ধারণী জরিপ শুরু হওয়ার পর জরিপকাজের সঙ্গে জড়িত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বদলি করা যাবে না।

যমুনা নদী থেকে এই চার নদীতে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য আগামী পাঁচ বছর কর্ণপাড়া, পুংলি ও টঙ্গী খালগুলো নিয়মিত খনন করতে হবে। বংশী ও ধলেশ্বরী নদীকে নিয়মিত খনন করে রক্ষা করতে হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ কাজ করবে।

কারা বাস্তবায়ন করবে: ভুমি, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, নৌপরিবহন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর, ঢাকা সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ, ভুমি জরিপ অধিদপ্তর এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে।
হাইকোর্টের রুল: এর আগে গত ২৪ মে এসব নদীর তীরবর্তী সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নদীগুলোকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রকৃত সীমানা নির্ধারণের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না−তা জানতে চেয়ে সরকারের প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্টের এই বেঞ্চ।

একই সঙ্গে আদালত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চার নদীর তীরের সব অবৈধ স্থাপনা নির্মাণসহ মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।

রিট আবেদনে যা বলা হয়: চার নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের ফলে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটেছে। ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ও ২০০০ সালের জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুসারে নদীর স্বাভাবিক গতি বাধাগ্রস্ত করা বেআইনি। এ ব্যাপারে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতের নির্দেশনা চাওয়া হয়।

নদী রক্ষায় আদালত: ঢাকার চারদিকের নদীগুলোর স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হাইকোর্টের এই বেঞ্চের দুই বিচারপতি সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেন। গত ৮ জুন বিচারপতিদের খাসকামরায় ঢাকার জেলা প্রশাসক জিল্লার রহমান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামাল উদ্দিন তালুকদার, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সামছুর রহমান, মুন্সিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নুরুল হক, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান আলী, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (কারিগরি) মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোস্তফা জামান ইসলাম, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বেলার কর্মকর্তা ইকবাল কবির ও নদী দখলমুক্ত করার দাবিতে করা রিট আবেদনকারীর পক্ষে সিদ্দিকুর রহমানকে ডাকা হয়।

বিচারপতিদের খাসকামরায় উপস্থিত সবাই ঢাকার চারদিকের নদীর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, সিএস রেকর্ড অনুযায়ী নদীগুলোর সীমানা নির্ধারণ করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তারা বিচারপতিদের আশ্বাস দেন, নদীতীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে চার মাস সময় লাগতে পারে। মূলত ওই আলোচনার ভিত্তিতেই গতকাল নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

প্রতিক্রিয়া: রিট আবেদনকারীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন মনজিল মোরশেদ। তিনি রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, প্রশাসনের নীরবতার কারণে নদীগুলোর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করে বিপর্যয় থেকে জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব এখন সরকারের।

বেলার পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এই রায়ের ফলে নদীর স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে একটি ধাপ পার হলো। এখন ধাপে ধাপে রায় কার্যকর করতে হবে। তিনি বলেন, চার নদীর তীর দখল করে রেখেছে প্রায় ২৫ লাখ প্রভাবশালী। নদীর পারে অবৈধ আবাসন প্রকল্প আছে। সরকারকে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করে এদের উচ্ছেদ করতে হবে। তিনি বলেন, হাইকোর্ট কতগুলো দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এর বাইরে যাওয়ার কোনো উপায় সরকারের নেই।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। ছয়মাস কেন, ছয় বৎসরেও এই চার নদীর পাশের সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা যাবেনা। কেন? ঠেকিয়ে দেবে ঐ হাইকোর্টেরই অন্য কোন বেঞ্চে অন্য কোন মামলা বা রীট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের আদেশ।

২। জরীপের ব্যাপারটাতে সি এসকে ভিত্তি ধরা মানে গোড়ায় গলদ। প্রথমতঃ ১৯১৬-১৯৪২ পর্বের পর ভাঙ্গন, গতিধারা পরিবর্তন (ব্যাপক নয়, কয়েক বিঘা হওয়াই যথেষ্ঠ) ইত্যাদি কারণে নদীর অবস্থান পালটে গেছে। তাই সি এস-এর গ্রহনযোগ্যতা প্রশ্নসাপেক্ষ। দ্বিতীয়তঃ এই ক্ষেত্রে সি এসকে প্রমিত ধরলে দেশজুড়ে অন্য সব ঘটনায় একে উদাহরণ হিসেবে টেনে পরবর্তী দুই জরীপ আর এস এবং এস এ-কে উপেক্ষা করার প্রবনতা তৈরী হবে। সেক্ষেত্রে ব্যাপারটি সংবিধান সংশোধনী বাতিলের মত জটিল ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।

৩। অর্থ মন্ত্রণালয় যদি অর্থ বরাদ্দ করতে না পারে? না-ই পারতে পারে। সেক্ষেত্রে আদালতের আদেশ থাকলেই বা কী?

৪। সীমানা নির্ধারণে পাকা খুঁটি যেমন বসানো যায় তেমন তার জায়গাও বদলানো যায়। আমি ঠিক জানিনা, নদী বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন, এসব শহুরে নদীগুলোর দুই পাড় উঁচু করে বাঁধিয়ে দেয়া যায় না? বাঁধের পাশে সামাজিক বনায়ন আর ওয়াকওয়ে থাকবে। অবশ্য পলি পড়ে রিভারবেড উঁচু হয়ে শায়েস্তাগঞ্জের খোয়াই নদীর মত সমস্যা তৈরী হতে পারে, কিন্তু নিয়মিত ড্রেজিং বা এমন কিছু বিকল্প ব্যবস্থাও নিশ্চয়ই করা যাবে।

৫। পরিকল্পনায় তিনটি নয়, এই চার জেলার সবগুলো খালকেই অন্তর্ভূক্ত করা দরকার ছিল। নয়তো দূষন, নাব্যতা, জলাবদ্ধতা ইত্যাদি সমস্যাগুলোর সমাধান কঠিন হবে।

৬। এই চার জেলার নদী তীরবর্তী শিল্প-কারখানাগুলোকে স্থানান্তর করা না গেলে সমস্যা থেকেই যাবে।

৭। রাজধানী ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার উপর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার অসহনীয় চাপ কমানো না গেলে নদীগুলোর মৃত্যু অনিবার্য।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।