আগের পর্বে আমি বাংলাদেশের FAP 6 রিপোর্টের আলোকে বাংলাদেশের উপর টিপাইমুখ বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করেছিলাম। আজকে আরো দু'টি উৎসের ভিত্তিতে এর প্রভাব আলোচনা করব। এর মধ্যে রয়েছে IWM এর অপ্রকাশিত রিপোর্ট এবং বহুল আলোচিত টিপাইমুখ প্রকল্পের উপর ভারতের EIA রিপোর্ট।
IWM এর অপ্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে বাংলাদেশে টিপাইমুখ এর প্রভাবঃ
শুরুতেই একটি জিনিস পরিষ্কার করে নেয়া ভাল আর তা হলো টিপাইমুখ বাঁধের গবেষণার উপর IWM এর প্রকাশিত কোন রিপোর্ট নেই। এই বিষয়টি নিয়ে লেখা শুরু করার আগে থেকেই ফেইসবুকে IWM এর রিপোর্টের কিছু তথ্য পাই। পরে আন্তর্জালে খোঁজ করে সেপ্টেম্বর ২০০৫ এ কেনিয়ার নাইরবি তে United Nations Environment Programme (UNEP) কতৃক আয়োজিত Dams and Development Project শীর্ষক কর্মশালায় বাংলাদেশের মোঃ গোলাম কিববিয়া " ISSUE-GAINING PUBLIC ACCEPTANCE FOR LARGE DAMS ON INTERNATIONAL RIVERS: THE CASE OF TIPAIMUKH DAM IN INDIA AND CONCERNS IN LOWER RIPARIAN" শীর্ষক একটি উপস্থাপিত প্রবন্ধ পাই যেখানে IWM এর টিপাইমুখ এর উপর একটি অপ্রকাশিত স্টাডি রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়। তথ্যসুত্রে আমি এটির লিঙ্ক উল্লেখ করেছি, আগ্রহী কেউ এটি দেখতে পারেন। আমার নিচের আলোচনা মূলত এই প্রবন্ধকে ঘিরেই হবে।
আমি এই প্রবন্ধে শুষ্ক মৌসুমের প্রবাহ নিয়ে কোন কিছু পাইনি।
ভারতের EIA রিপোর্ট অনুসারে বাংলাদেশে টিপাইমুখের প্রভাবঃ
এই রিপোর্টটির জন্য আমি সবচেয়ে অপেক্ষা করেছি এবং সবচেয়ে হতাশ হয়েছি এর "Impact of The Project on Environment" শীর্ষক চ্যাপ্টারটি দেখে[২] । আমি খুঁজ়ে বেড়াচ্ছিলাম এটিতে বাঁধের ভাটিতে প্রভাব সম্পর্কে কি লেখা আছে। প্রায় ত্রিশ পৃষ্ঠার এই রিপোর্টে জলাধারের কারনে এর উজান কী কী প্রভাব পড়বে তার সব কিছুই উল্লেখ আছে কিন্তু ভাটিতে কী হবে তার উপর আছে মাত্র একটি প্যারাগ্রাফ। আমি সরাসরি প্যারাটি নিচে দিলামঃ
"In a study made to examine the environmental and economic impact at the down stream at pre and post project scenario, it is found that average water availability at down stream for monsoon season at post dam condition will decrease by 30% in comparison to pre-dam condition and thereby will provide relief to down stream population from recurring annual flood havoc. Similarly, due to regulated flow from reservoir, the non-monsoon flow will increase by 110 percent, which will provide irrigation benefit for Rabi crops"[২].
অর্থাৎ কিনা বাঁধের কারনে বর্ষা মৌসুমে পানি ৩০% কমে যাবে আর শুষ্ক মৌসুমে ১১০% বেড়ে যাবে, এবং এই বর্ধিত পানি দিয়ে সেচের মাধ্যমে রবি শস্য ফলানো যাবে।
দুঃখের বিষয় হলো ৩০ পৃষ্ঠার ঐ রিপোর্টে প্রকল্প চলাকালীন সময়ে শ্রমিকদের কি পরিমান মলমুত্র জলাধারে পড়বে তার প্যারাগ্রাফটিও বোধ হয় এর ভাটিতে প্রভাবের চেয়ে বেশী।
একজন সাধারণ মানুষও যেখানে জানে যে বাঁধের কিছু না কিছু প্রভাব উজান ভাটিতে থাকে সেখানে একটি বিলিয়ন ডলারের প্রকল্পের Environmental Impact assessment (EIA) এ এর ভাটি অঞ্চলকে প্রায় সম্পূর্ণ ভাবে উপেক্ষা করা কতটা যুক্তিযুক্ত ? প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্র থেকে ন্যূনতম পরিমান সহযোগিতা যদি আমরা না পাই তাহলে তাদেরকে আমাদের বন্ধু ভাবব নাকি শত্রু? অথচ এই রিপোর্টের গবেষণা দলে আছেন পানিসম্পদ, ফরেস্ট্রি, ইঞ্জিয়ারিং জিওলোজি, এগ্রিকালচার, ইকোলজি ( প্রাণিজ ও উদ্ভিজ), বয়োডাইভার্সিটি ও সামাজিক অর্থিনীতির সব বিশেষজ্ঞবৃন্দ।
আগামী পর্বে থাকবেঃ টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব নিয়ে একটি সমন্বিত বিশ্লেষন মূলক আলোচনা
তথ্যসুত্রঃ
[১] উইকিপিডিয়া
[৫] ডঃ আসিফ নজরুল, ৫ জুলাই ২০০৯, ‘পিনাক রঞ্জনের ছোট ভুল, আমাদের বড় ভুল’ প্রথম আলো।
[৬] এম এ কাসেম,৬ জুলাই ২০০৯, ‘টিপাইমুখঃ যে কথা কেউ বলছেনা’প্রথম আলো।
[৭] ডঃ মোঃ সিরাজুল ইসলাম, ‘টিপাইমুখ বাঁধঃ কিছু শর্ত মানলে কম ক্ষতিকর হতে পারে’ প্রথম আলো।
[৯] Ma A Matin, 7 February 2006, ‘Another Farakka ? No, Tipaimukh Dam is different’ The Daily Star.
[১০] The Ecology of Dams
মন্তব্য
সচলত্ব প্রাপ্তিতে আন্তরিক অভিনন্দন!!!
ধন্যবাদ মামুন ভাই।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদীতে চীন বাঁধ দিচ্ছে ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
শামীম ভাই, পড়লাম। আরো কিছু তথ্য থাকলে পাঠিয়েন।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
পূর্ণ সচল হওয়ার অভিনন্দন গ্রহণ করুন।
লেখাটি ভালো হয়েছে।
ভাবছি, আমাদের ভবিষ্যত কোনদিকে যাচ্ছে...
সিরিজের পরবর্তী পর্বের আশায় রইলাম।
ধন্যবাদ। আমরা সবাই চিন্তিত এই টিপাইমুখ বাঁধটি নিয়ে। এটি কোন মতেই বাংলাদেশের জন্য ভাল কিছু বয়ে আনবেনা।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এই লাইনে ব্যাপক ভয় পাইতেছি...
ফারাক্কা ব্যারেজের কারনে গড়াই নদী আজ মৃত প্রায়। নদীর বাইফারকেশনে ( যেখান থেকে শাখা নদী বের হয় বা উপনদী এসে পড়ে) পলি সমস্যা সবসময়ই প্রকট।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সাধারণত প্রতিবেশী রাষ্ট্ররাই সবচেয়ে বড় শত্রু
কথাটি অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক। কিন্তু এই প্রতিবেশী রাষ্ট্রই কিন্তু আমাদের প্রয়োজনের সময় ('৭১) সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এটা ঐতিহাসিক সত্য। তবে এটা ভুলে গেলে চলবে না সেখানে ভারতের নিজস্ব স্বার্থেই সেটা করেছিল। খারাপ লাগে যখন আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ বলে ভাবা হয়। এটা ভেবে আরো অস্বস্তি লাগে যে এটা কোন কোন ক্ষেত্রে সত্য বলেও প্রতিয়মান হতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের বিশাল ঘটনার পিছনে অনেক সময় অনেক ছোট ছোট গল্প লূকিয়ে থাকে। প্রত্যেক পক্ষের কাছে কেবল নিজেদের পছন্দের গল্পগুলোই বেশি গুরুত্ব পায়।
মোদ্দাকথা হচ্ছে আলোচ্য বিষয় নিয়ে ভাবার সময় আমাদের এটা ভুলে গেলে চলবে না যে ভারত তার নিজের স্বার্থ অক্ষুন্ন রাখার সার্বিক চেষ্টা অবশ্যই করবে। একটু আশাবাদি হলে হয়ত ভাবতে পারি তারা নিজের নাক কেটে বাংলাদেশের যাত্রা ভংগ করবেনা। তারপরও যেহেতু এখানে বাংলাদেশের স্বার্থ গভীরভাবে জড়িত, আমাদেরকে নিজেদের স্বার্থ ঠিক ভাবে বুঝে নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনায় হোক, আইনের সাহায্য নিয়ে হোক আমাদের স্বার্থ রক্ষায় সর্বাঙ্গিন চেষ্টা করতে হবে। তবে প্রকৌশলগত সাহায্য ছাড়া নিজেদের স্বার্থ আমরা বুঝতে পারবনা। সেজন্য প্রয়োজনীয় গবেষনা আর রাজনৈতিক ভাবনার মধ্যে যোগসূত্র জরুরী।
সহমত রিয়াজ ভাই।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
১৯৭১ সালেও ভারত একরকম নিজের লাভই করেছিল। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান আলাদা হওয়ায় ভারতের প্রতিরক্ষা খরচ অনেক কমে গেছে বলে অনেকেই এখনও দাবী জানান।
বাকি মন্তব্যের সাথে সহমত।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সচলত্ব প্রাপ্তিতে বিশাল অভিনন্দন। অবশ্য আপনার নামই তো সচল জাহিদ
---------------------------------------------------------------------------
No one can save me
The damage is done
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
ধন্যবাদ রেনেট
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
পূর্ণ সচলত্ব প্রাপ্তির জন্য অভিনন্দন রইল।
ধন্যবাদ প্রহরী।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
অভিনন্দন জাহিদ ভাই... আপনার এই সিরিজের কথা আমি জনে জনে বলে বেড়াচ্ছি পড়ার জন্য...
স্যালুট... চালায়া যান...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ধন্যবাদ নজু ভাই।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এইটা নিয়ে আমি দুরকম মতই দেখেছি। একদল বলেছেন (IWM) পলি বাড়বে আরেকদল(FAP) বলেছেন পলি কমবে। উইকি আর্টিকেল অনুসারে পলি পড়া কমার কথা কারণ বাঁধের আগে যতটা পলি জল বয়ে আনছিল সেটা বাঁধের আগেই সঞ্চয় হয়ে যাচ্ছে (আপনার দু' নম্বর পর্বেও আছে)। সেই কারণেই ভূমিক্ষয় বেড়ে যায় বাঁধ পরবর্তী অংশে। (এই সমস্যা কিছুটা সমাধান হয় যদি বাঁধ পরবর্তীতে বরাক নদীর পাড় বরাবর গাছ লাগানো হয়।) আবার এও ঠিক যে পলি আগে যেমন বন্যায় পাড় ছাপিয়ে দুইপাড়ের জমিতে সঞ্চয় হত সেটা বন্ধ হয়ে যাবে। কোনটা বেশী প্রভাবিত করবে সেটা জানি না - পলিসঞ্চয় বেশী হবে যদি বাঁধের আগের অংশের বাহিত পলির থেকে বর্তমানে বাঁধের পরবর্তী অংশে ক্ষয় করে আনা পলি বেশী হয়। বাঁধের প্রভাবে সারাবছর নদীর নাব্যতা বজায় রাখার (শিলচর-কলকাতা নৌপথ) পরিকল্পনার কি হবে তাও জানি না।
পলি পড়ে নদীখাত বন্ধ হয়ে যাবার সমস্যা বাংলাদেশে অনেক পুরোনো। আমি এর এমনিতে কোনো সমাধান পাইনি। কারণ বাংলাদেশ স্বাভাবিকভাবে এই বন্যার জল আর পলি পড়া থেকেই গঠিত হয়েছে - তাই এর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া শক্ত। FAP 6 এর রিপোর্টে 8.6 সেকশনে এই নিয়ে কিছু আলোচনা আছে। এতে বলা আছে (টিপাইমুখ না হলেও) এম্ব্যাঙ্কমেন্ট বাঁধ, লুপ কাট আর উজানে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি ও বনভূমি ধ্বংসের কারণে বাংলাদেশে ক্রমাগত জমা পলির পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। এর ফলে অনেক নদীর মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথাও আছে (যেমনটা হয়েছে গড়াই নদীতে)।
একই সাথে বর্ষার পূর্বভাগে ও শেষভাগে বন্যার প্রকোপ বাড়বে। FAP রিপোর্ট ১৯৯৩ সালের - কিন্তু একই বক্তব্যের প্রতিধ্বনি পাই ২০০৪ সালের বন্যার পরবর্তী সরকারি রিপোর্টগুলোতে। সেখানে পাই -
এই বক্তব্যের মানে বন্যার প্রকোপ সময়ের সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবেই বাড়তেই থাকবে (লক্ষ্যণীয় এখানেও পাহাড় থেকে নুড়ি-পাথর সেডিমেন্ট আসার কথা বলা হয়েছে - বাঁধ এই ব্যাপারটাকে হয়ত বন্ধ করতে পারবে)। এই অবস্থার সমাধান কি হতে পারে? এম্ব্যাঙ্কমেন্টের উচ্চতা বাড়ালে এককালীন সমাধান হতে পারে কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে সেই একই সমস্যা আবার ফিরে আসবে।
নিপকোর EIA রিপোর্ট তৈরী হয়েছে পাবলিক হিয়ারিং থেকে পাওয়া, বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী সংস্থার প্রতিনিধিদের দেওয়া প্রশ্নের ওপর ভিত্তি করে (এই কারণে মলমূত্র ত্যাগের প্রভাবও রিপোর্টে এসেছে )। ভারতেও বাঁধের উজানের তুলনায় ভাটিতেই জনসংখ্যা বেশী - কিন্তু ভাটির লোকজনে (আসামের বরাক উপত্যকা) বাঁধের ব্যাপারে খুব উৎসুক, তাই সেখান থেকে কোনো প্রশ্ন আসে নি। (ওপরের আলোচনা থেকে দেখা যাচ্ছে তাদেরও কিন্তু ক্ষতি আছে - ভূমিক্ষয় বাড়বে সেখানে, আসামের হাওড়গুলোও শুকিয়ে যাবে - কিন্তু তার তুলনায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের লাভ তাদের কাছে বেশী মূল্যবান মনে হয়েছে) রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার যে নিপকো ভাটিতে পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে কোনো রিপোর্টই করে নি। বাংলাদেশ থেকে প্রশ্ন তুললে যৌথ উদ্যোগে পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
আসলে এখানে কিছু জিনিস পরিষ্কার করা প্রয়োজন। FAP 6 এর রিপোর্টে যেটা বলা হয়েছে ( নিচে দিয়ে দিলাম এই অংশটুকু) তা হলো বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই পানি উপচে পড়ার হার কমে যাবে। নদীর পলি প্রবাহের হার (Sediment Transport Rate) নির্ভর করে বেশ কিছু চলক আর ধ্রুবকের উপর, তার মধ্যে একটি হচ্ছে পানির প্রবাহ। এখন যেহেতু পানির প্রবাহ কমে যাচ্ছে ২০% তাই পলি প্রবাহের হারের হ্রাস পাবার কথা হলা হয়েছে।
"Flood flows on the Barak River will be moderated, with peak flows at Amalshid being reduced by about 25% and flood water volumes being reduced by 20%. The corresponding water levels at Amalshid would be reduced by about 1.6 m. Similar changes would be expected along the Kushiyara River and upper Surma River.This should reduce the frequency of spills from the Kushiyara and Surma Rivers, reduces the extent of inundation in the Sylhet Basin and reduce channel erosion and sediment transport rates along the two rivers"[৮].
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই রিপোর্টে কেন বাঁধের ঠিক ভাটিতে কেন নদী ক্ষয়ের কথা বিবেচনা করা হয়নি ? সেই উত্তর খুঁজার জন্য আমার এই সিরিজের তৃতীয় পর্ব একটু লক্ষ্য করুন। FAP 6 এর গবেষণার রিপোর্ট আসলে একটি হাইড্রোলিক মডেলের ফলাফলের উপর নির্ভরশীল। হাইড্রোলিক মডেলে মরফোলজি অর্থাৎ পলি প্রবাহ বিবেচনা করা হয়না আর তাই বাঁধের ভাটিতে পলি প্রবাহের কি ঘটছে তা এই রিপোর্ট থেকে পাওয়া যাবেনা।
আসলে এক্ষেত্রে মূলতঃ ক্ষয়প্রাপ্ত হবে নদীর বুক থেকে, আর এই নদীগুলো খরস্রোতা হবে এমনিতেই পাড়ের থাকে বুকের ক্ষয় বেশী। তাই গাছ লাগিয়ে নদীক্ষয় রোধ করা বোধ হয় বাস্তবিক হবেনা।
গড়াই নদীর শুকিয়ে যাওয়া আসলে ফারাক্কা ব্যারেজের সাথে সম্পর্কযুক্ত বন্যার সাথে নয়।গড়াই নদী হলো পদ্মার ( গঙ্গার মূল প্রবাহ যেটি বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে) শাখা নদী। সুতরাং মূল নদীতে প্রবাহ কমে গেলে এর শাখানদী সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। কারন তাতে মূল নদীতে বয়ে আসা পলির একটি বড় অংশ জমা হয় এদের সংযোগস্থলে, ফলশ্রুতিতে শাখানদীর প্রধান ইনটেক বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারেজের একটি অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হলো গড়াই নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে আনা কারন এটি দক্ষিন পশ্চিম বাংলাদেশের প্রধান মিঠাপানির উৎস।
আসলে এই সাবমার্জিবল এমব্যাঙ্কমেন্ট গুলোর মূল উদ্দেশ্য আসলে স্বাভাবিক বন্যার হাত থেকে ফসল রক্ষা করা। বাংলাদেশে সাধারণত প্রতি এক দশক পর পর ( ১৯৮৮, ১৯৯৮, ২০০৪ [মূলত সিলেটে]) যে বড় বন্যাগুলো হয় তার ব্যবস্থাপনা আসলেই কঠিন, আমার ধারনা যুতসই একটি ব্যবস্থাপনার জন্য আমাদের আরো গবেষণা প্রয়োজন।
সহমত প্রদর্শন করছি। আমি আমার পরিশেষ কথায় এই মতামতগুলো রেখে যাব।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমি IWM রিপোর্টেও কোথাও পেলাম না বাঁধে আটকে যাওয়া পলির ফলে আসা পলি কমে যাবার কথা। কিন্তু সারা বিশ্বে সেরকমই ঘটেছে দেখছি। যেমন থ্রি গর্জেস ড্যাম দুই তৃতীয়াংশ পলি আটকে রেখে দেয়, যার ফলে ইয়াংসি নদীর ব-দ্বীপ আয়তনে কমে যাচ্ছে। আবার আসোয়ান ড্যাম ৯৮% সেডিমেন্ট আটকে দেয়, ফলে নীলনদে ক্ষয় বাড়ছে। এদের কোথাও কিন্তু পেলাম না সেডিমেন্টেশন বাড়ার কথা। আমার তো মনে হয় বরং নদীর ক্ষয় কিছুটা বাড়বে আর সেডিমেন্টেশন কিছুটা কমবে - একারণেই সারাবছর ড্রেজিং ছাড়াই জলপথ ব্যবহার হবে। বর্তমানে কুশিয়ারা নদীতে বর্ষায়ও ভারত-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে ড্রেজিং করতে হয়।
IWM এর হিসাবের সময় টিপাইমুখ পর্যন্ত কতটা হারে সেডিমেন্ট আসে সে তথ্য না থাকলে তাদের হিসাব থেকে সঠিক মরফোলজিকাল স্টাডি কি করা সম্ভব? কারণ ওই সেডিমেন্ট বাঁধের পরে তো বাঁধের জলাধারেই জমা হতে থাকবে।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত মজার বিষয় হলো IWM এর রিপোর্টটিতেও যা করা হয়েছে তা হলো একটি " Conceptual Impact Assesment of Morphology" অর্থাৎ পরিমানগত ভাবে সেটি বের করা হয়নি। পরিমানগতভাবে পলির বন্টন, প্রবাহ এইসব নিয়ে গবেষণা করতে চাইলে তাতে ব্যাপকভাবে ভারতের সহযোগীতা প্রয়োজন কারন উজানের সব উপাত্তের একমাত্র উৎস ভারত। আমি যে লিঙ্কটি দিয়েছি তা এই রিপোর্টটির একটি সংক্ষেপিত রূপ। মূল রিপোর্টটি অপ্রকাশিত বলে আমি রেফারেন্স দিতে পারছিনা কিন্তু আমি নিজে সেটি পড়ে দেখেছি। সেখানে মরফোলজি নিয়ে আলোচনা করার পূর্বেই বাঁধের কারনে যে জলাধারে পলি সব ( ৯০% -১০০%) সঞ্চিত হয়ে যাচ্ছে তা উল্লেখ করা হয়েছে। সুতরাং পলি কমে আসার বিষয়টা সেখানেও এসেছে।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
হাওড় শুকিয়ে যাওয়া নিয়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে। আমি উইকিতে যা পড়েছি সেই মতে হাওড়গুলো নিচু-জমিতে অবস্থিত ও বন্যার জল প্রতি বর্ষায় এদের প্লাবিত করে। আগের তুলনায় বন্যা কমে গেলে এই অঞ্চল প্লাবিত হবে না তাই হাওড় শুকিয়ে যেতে পারে এরকম মতামত দেওয়া হচ্ছে। ভারতে এরকম অনেকবার ভাবা হয়েছে যে বন্যাপ্লাবিত নিম্নাঞ্চল বাঁধের ফলে শুকিয়ে যাবে - কার্যত তা যায় নি। সেইজন্য বিশ্ব বাঁধ কমিশনের রিপোর্টে এই বক্তব্য স্থানও পায় নি।
এই বৈপরীত্যের কারণ বর্ষা। আগে বৃষ্টির জল যেমন দাঁড়ানোর জায়গা পেত না, বন্যার মাধ্যমে নদীর প্রবাহে গিয়ে মিশত - তার জায়গায় সেই জল এই নিম্নাঞ্চলে সরাসরি দাঁড়িয়ে গেছে। ফলে জলাভূমি আগের মতই আছে। শিলেট অঞ্চলে বর্ষার পরিমাণ খুবই বেশী (৪০০০ মিমি+)। এখানে হাওড়গুলো কেন শুকিয়ে যাবে মনে করা হচ্ছে?
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
দিগন্ত আপনাকে ধন্যবাদ। আসলে পাঠকের জানার আগ্রহ লেখকের লেখার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয়। আমার প্রতিটি পর্বে আপনার জিজ্ঞাসু মন্তব্য আসলেই প্রশংসার দাবী রাখে।
ধরে নিচ্ছি আপনি বন্যা নিয়ন্ত্রন এম্ব্যাঙ্কমেন্ট (ডাইক) এর কথা বলছেন যা কিনা একটি নদীর সমান্তরালে থাকে এবং যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে বন্যার অতিরিক্ত পানি নদীর এক দিকে বা দুই দিকে একটি বিশেষ এলাকায় প্রবেশ না করতে পারে। উপরের চিত্রটি লক্ষ্য করুন, এক্ষেত্রে যেটা হয় তা হলো বাঁধের যেপাশে নদী আছে তার বিপরীত পাশে নিম্নাঞ্চলে বৃষ্টির পানি এসে জমা হয়। এমব্যাঙ্কমেন্টে পর্যাপ্ত পরিমান স্লুইস গেইট থাকে যাতে এই জমা হওয়া পানি বের হয়ে যেতে পারে এমব্যাঙ্কমেন্টের এই পাশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়। এখন পূর্ন বন্যার সময় যদি অবিরত বৃষ্টিপাতও হয় তাহলে এমব্যাঙ্কমেন্টের ডান পাশের ( নদীর দিকে) পানির উচ্চতা বাদিকের তুলনায় ( নিম্নাঞ্চল) বেশী হয় ফলে স্লুইস গেইট চালানো সম্ভব হয়না এবং বাধ্য হয়ে পানি পাম্প করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে নিম্নাচলে পানি জমে জলাবদ্ধতা তৈরী হতে পারে।
সিলেটের হাওড়গুলি আসলে শুধুমাত্র বৃষ্টিপাত এর উপর নির্ভরশীল নয়।বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রায় ২৫% এলাকা জুড়ে আই হাওড়গুলির বিস্তৃতি ( উপরের ছবি দেখুন ছবিসুত্রঃ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড । মোট ৪১১ টি হাওড় প্রায় ৮০০০ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে অবস্থিত (তথ্যসুত্রঃ বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড )। এই বিপুল পরিমান নিম্নাঞ্চল শুধু মাত্র বৃষ্টিপাত দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। সিলেটের এই অঞ্চলে বর্ষা কালে যে ফ্ল্যাশ ফ্লাড হয় তাই প্রকারান্তরে এই নিম্নাঞ্চলকে জল পূর্ণ করে। তাছাড়া বৃষ্টির পানির সিংহ ভাগ যাবে নদীতে, সেটাই একটি অববাহিকার বৈশিষ্ট, নদী পরিপূর্ণ হলে তা উপচে পড়ে নিম্নাঞ্চল জলপূর্ণ হবে। সুতরাং বৃষ্টিপাতের ফলেই হাওড়গুলি বেচে থাকবে সেই আশা অমূলক।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
খুবই সুন্দর বুঝিয়েছেন। আসলে হাওড় অঞ্চল সঠিক কি অবস্থায় যাবে সেটা একটা সিমুলেশন করেই একমাত্র বলা সম্ভব। IWM এর পূর্ণ রিপোর্ট পড়তে পারলে ভাল লাগত। কিছু অঞ্চলের হাওর আসলেই বৃষ্টি ওপর নয় - শুধু বন্যার ওপরেই নির্ভরশীল। আর কিছু অঞ্চলে উভয়ের ওপরেই নির্ভরশীল। তাই আপনার লেখায় ভিন্ন হাওড়ের ওপর বিভিন্ন প্রভাবের কথা আছে। একই কারণে "গড় বর্ষা" (Average Monsoon)-র উল্লেখ আছে রিপোর্টে - আশানুরুপ বর্ষা হলে হাওড় ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
এ প্রসঙ্গে বলে দেওয়া ভাল - হাওড় অঞ্চলের প্রায় ৩৩% মানুষ সরাসরি মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ অঞ্চলে বোরো ধানের চেয়ে মাছ ধরার পেশায় আয় বেশী বলে অনেকেই শুখা মরসুমে চাষ আর বর্ষায় মাছ ধরার পেশা অবলম্বন করেন। বাঁধের ফলে একটা জীবিকার সুযোগ অনেকেই হারাবেন।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
সচল জাহিদকে অভিনন্দন!
___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে
ধন্যবাদ
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
পূর্ন > পূর্ণ
সচলত্ত্ব > সচলত্ব
কারন > কারণ
কার্য্যক্রম > কার্যক্রম
বিপূল > বিপুল
খুজে > খুঁজে
দূখের > দুঃখের
প্রানীজ > প্রাণীজ
সহযোগীতা > সহযোগিতা
ধন্যবাদ হিমু এবং ইশতি।
-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
হাওড় শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যাটা বোঝার পরে মনে হল এধরণের সমস্যা যেকোনো মৌসুমী বৃষ্টিপাতের দেশে সাধারণ হওয়া উচিত। আমার ধারণা সঠিক - একই ঘটনা ঘটেছে ঘানা, নাইজেরিয়া, জাম্বিয়া ও সেনেগালে। ঘানায় আকোসম্বো বাঁধের প্রভাবে ভাটির নিম্নাঞ্চল আর প্লাবিত হয় না, তাই মৎস-উৎপাদন ও জীববৈচিত্র্য কমে গেছে। নাইজেরিয়াতে হাদেজা-নগুরু জলাভূমি শুকিয়ে গেছে চিরোমাওয়া তিগা বাঁধ ও কানো নদীর সেচ প্রকল্পের কারণে, জাম্বিয়াতে কাফু প্লাবনভূমি ও জলাভূমি শুকিয়ে গেছে ইতেজি-তেজি বাঁধের ফলে, সেনেগালে সেনেগাল নদীর নিম্নাঞ্চল শুকিয়ে গেছে উজানে দিয়ামা ও মানাতালি বাঁধের কারণে। এই দেশগুলোর উভয় সঙ্কট (সেনেগালের ক্ষেত্রে একাধিক দেশ) - বিদ্যুত উৎপাদন ও বন্যা/খরা নিয়ন্ত্রণও দরকার আবার নিম্নাঞ্চল শুকিয়ে যাওয়ায় সেই অঞ্চলের উৎপাদনশীলতাও কমে গেছে। জলের প্রবাহে সাম্য আসার ফলে এই নিম্নাঞ্চলগুলোতে সেচের জল ব্যবহার করে চাষাবাদ শুরু হয়েছে বটে (এই ঘটনা হাওড়গুলোতেও ঘটতে পারে), কিন্তু সামগ্রিকভাবে আগের মাছধরা আর চাষ মিলে যে আয় আসত, পরে শুকিয়ে যাওয়া জলাভূমিতে শুধু চাষ করে আর সেই আয় হয় না। যে সময়ে বাঁধগুলো দেওয়া হয়েছিল সে সময়ে আফ্রিকার খাদ্যসঙ্কট চরমে ছিল - সেই অবস্থারও অনেক উন্নতি হয়েছে উচ্চফলনশীল হাইব্রিড ধরণের শস্য চাষ করে।
এই অবস্থায় এই দেশগুলো (যেমন জাম্বিয়া) সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাদের এই জলাভূমি ফিরিয়ে আনতে হবে। তার জন্য এরা প্রথমে আগে কিরকম বন্যা হত তার জরিপ করেছে। তারপরে প্রায় প্রতি বছর নির্দিষ্ট সময়ের জন্য জলাধার থেকে জল ছেড়ে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টি করে জলাভূমিগুলোকে পুনরুদ্ধার করেছে। এর ফলে বাস্তুতন্ত্র আগের মত না হলেও অনেকাংশেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এই কৃত্রিম বন্যা মানুষ-নিয়ন্ত্রিত, তাই আগে থেকেই লোকজনকে ওই অঞ্চল থেকে সরানো হয় - ফলে এতে ক্ষয়ক্ষতিও সামান্য। আগের বন্যার রেকর্ড ঘেঁটে এবং চাষ ও মাছের প্রজননরীতি মেনে এই বন্যাগুলোর প্রাবল্য, সময়কাল ও বিস্তৃতি নির্ধারণ করা হয়। এই কাজে এই দেশগুলো সাহায্য পেয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে WWF এর মত আন্তর্জাতিক সংস্থার। নতুন সিস্টেমে মাছের উৎপাদন আগের কাছাকাছি, শুখা মরসুমে জল যথেষ্ট থাকে বলে চাষের উৎপাদনও বেশী আবার বন্যা নিয়ন্ত্রিত বলে ক্ষয়ক্ষতিও নিতান্তই কম। সব মিলে সবার জন্যই ভাল। এর ফলে কিছু কিছু সময়ের জন্য বাঁধের বিদ্যুত উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে - তবে সামগ্রিক লাভের তুলনায় এই ক্ষতি যৎসামান্য।
একই পদ্ধতি অনুসরণ করে হাওড়গুলোকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রতি মরসুমে কৃত্রিম বন্যা করানো যেতেই পারে। সেক্ষেত্রে বোরো ধান কাটার পরে পরিযায়ী মাছেদের জীবনচক্র মেনে এক সপ্তাহের জন্য জলাধার থেকে জল ছেড়ে বন্যা ঘটানো যেতে পারে। এর ফলে হাওড়গুলো শুকিয়ে যাবে না। আবার বর্ষার শেষে অতিরিক্ত জল বের করে দেবার জন্য একই রকমের এক সপ্তাহ জলের প্রবাহ কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এতে চাষের আগে অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হবে। শুখা মরসুমে যথেষ্ট জল থাকায় সেচের সুবিধায় কৃষি উৎপাদন বাড়বে। বন্যা হওয়ার আগেই যেহেতু জানা থাকবে, তাই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও খুবই কম হবে। এতে বিদ্যুত উৎপাদন হয়ত কিছু মেগাওয়াট কম হবে, বন্যায় কিছু মানুষ কিছুদিনের জন্য কষ্ট পাবে কিন্তু অনেক মানুষ যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের জীবন ও জীবিকার অনেকটাই সুরাহা হবে।
আফ্রিকার দেশগুলো যেটা ঠেকে শিখেছে সেটা এখানে আগে থেকে পরিকল্পনা করেই শুরু করা যেতে পারে। আফ্রিকায় এই জলাভূমিগুলোর গড় বৃষ্টিপাত বছরে ৫০০-৭০০মিমি। সে তুলনায় হাওড় অঞ্চলে অনেক বেশী বৃষ্টি হয় - তাই অনেক কম সময়ের কৃত্রিম নিয়ন্ত্রিত বন্যা সমস্যার সমাধান করতে পারে। দরকার শুধু সহযোগিতার।
সূত্র - জাম্বিয়া (সংক্ষেপে, বিস্তারে)
ছবিতে কাফু প্লাবনভূমির ছবি - উইকিপিডিয়া ও নাসার সৌজন্যে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রথম মরসুম বন্যার আগে ও পরে কাফু প্লাবনভূমির অবস্থা। প্রথম কৃত্রিম বন্যার পরে প্লাবনভূমি সবুজ হয়ে গেছে। নাসার রিপোর্ট Not All Floods are Unwanted.
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
নতুন মন্তব্য করুন