আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর নির্মান জাতীয় পানি নীতি বিরোধী

সচল জাহিদ এর ছবি
লিখেছেন সচল জাহিদ (তারিখ: বুধ, ২৯/১২/২০১০ - ৪:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশ সরকার একটি নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মানের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ের প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পেয়েছে। নতুন এই বিমানবন্দরের নাম হবে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ এবং এটির সংলগ্ন ‘বঙ্গবন্ধু নগরী’ গড়ে তোলা হবে। বেশ কিছু প্রাথমিক স্থান পর্যালোচনা করে সরকার নীতিগত ভাবে মুন্সিগঞ্জ ও ঢাকা জেলার আড়িয়াল বিলে এই প্রকল্পটি নির্মানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে দু'টি বিষয় আলোচনার দাবী রাখেঃ

একঃ বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মান কতটা যৌক্তিক।

দুইঃ নতুন বিমানবন্দরের নির্মান স্থান হিসেবে আড়িয়াল বিলকে বেছে নেয়া সমীচিন কিনা বা আদৌ বৈধ কিনা।

প্রথম প্রশ্নটির উত্তর দেবার জন্য বিশদ অর্থনৈতিক বিশ্লেষন প্রয়োজন, তবে আপাতদৃষ্টিতে এই প্রকল্পকে বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি উচ্চাভিলাসী প্রকল্প বলেই আমি অভিমত প্রদান করব। যেখানে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকেই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আরো বেশি উন্নীতকরণ করা উচিৎ বা বাংলাদেশ বিমানকে একটি শক্তিশালী বেসামরিক বিমান সংস্থায় পরিনত করা অধিক জরুরী সেখানে নতুন একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বেসামরিক বিমান খাতে বাংলাদেশকে কোন সমৃদ্ধি বয়ে আনবে তা যথেষ্ট আলোচনার দাবী রাখে।

দ্বিতীয় প্রশ্নটির বিশদ উত্তর খোঁজার প্রয়াস থাকবে। তার আগে কিছু গুরুত্ত্বপূর্ন বিষয় জানা যাকঃ

বিল মূলত একধরনের বড় নিচু জলাভূমি যেখানে আশে পাশের এলাকা থেকে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি বিভিন্ন ছোট ছোট নালার মাধ্যমে প্রবেশ করে। বর্ষা মৌসুমে যখন উচ্চ প্রবাহের ফলে নদীর পক্ষে বৃষ্টির পানি বহন করা সম্ভব হয়না তখন সেই অতিরিক্ত প্রবাহ বিলে প্রবেশ করে ছড়িয়ে পড়ে। সাধারনত শুষ্ক মৌসুমে বিলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় সেখানে চাষাবাদ হয় এবং বর্ষা মৌসুমে মৎস ও অন্যান্ন জলজ প্রানীদের একটি অবাধ বাস্তসংস্থানে পরিনত হয়। শুধু তাই নয় বর্ষা মৌসুমে পানি ধরে রেখে এই বিলগুলি ভূগর্ভস্থ পানির যোগান নিশ্চিত করে। মেঘমা-সুরমা, গঙ্গা-পদ্মা ও ব্রহ্মপুত্র-যমুনা অববাহিকার নদীবিধৌত পলল ভুমি বাংলাদেশ বিল একটি গুরুত্ত্বপূর্ন প্রাকৃতিক জলাধার যা একাধারে অর্থনীতি, বাস্তসংস্থান, ও দেশের পানিসম্পদের সাথে ওতোপ্রতো ভাবে সম্পর্কিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে[১] বাংলাদেশে গুরুত্ত্বপূর্ন কয়েকটি বিলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আড়িয়াল বিল। ঢাকার দক্ষিণে গঙ্গা ও ধলেশ্বরীর মধ্যবর্তী প্রায় ৭২৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে এই বিল বিস্তৃত [২]। এই বিলে বর্ষা মৌসুমে মাছের পাশাপাশি আমন ধানের চাষ হয়, অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমেও রবি শষ্যের ফলন হয়। প্রস্তাবিত ( বা অনুমোদিত) নতুন বিমানবন্দর প্রকল্প এই বিলে বাস্তবায়িত হলে তার প্রভাব পরিবেশের উপর কতটা পড়বে তা নির্ধারণের জন্য দরকার এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট (EIA)। কিন্তু সেটিরও পূর্বে জানা উচিৎ আদৌ এই বিলে কোন উন্নয়ন কর্মকান্ড করা বৈধ কিনা।

পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের অধীনে পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থা'র ( WARPO) তত্ত্বাবিধানে ১৯৯৯ সালে জাতীয় পানি নীতি ( NWPo) প্রনীত হয়। জাতীয় পানি নীতির আর্টিকেল ৪.১৩ এর বিষয় হচ্ছে 'হাওর বাওর বিল সংরক্ষণ' এর উপর। সেখানে স্বীকার করা হয়েছে যে বাংলাদেশের হাওর-বাওর-বিল এই অঞ্চলে তাদের স্বকীয়তা নিয়ে অবস্থান করছে এবং এদের রয়েছে অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত মূল্যমান। সুতরাং এই সমস্ত জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য জাতীয় পানি নীতিতে নির্দেশাবলী রয়েছে যা কিছুটা নিম্নরূপ[৩]


ক) জলজ পরিবেশ ও পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে জাতীয় জলাভূমি সমুহ যেমন বিল, হাওর এবং বাওর সমুহকে সংরক্ষণ করা হবে।


খ) শুধুমাত্র সেসকল পানিসম্পদ প্রকল্পই হাতে নেয়া হবে যা কিনা এই জলাভূমিসমুহের জলজ বাস্তুসংস্থানের জন্য কোন সমস্যা সৃষ্টি করবেনা।

অর্থাৎ জাতীয় পানি নীতিকে মেনে নিয়ে আড়িয়াল নিলে প্রস্তাবিত বিমানবন্দর নির্মান ঠিক পরিবেশগত ভাবে সিদ্ধ নয়। উল্লেখ্য বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যিনি প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছেন তিনিই কিন্তু জাতীয় পানি নীতি স্বাক্ষর করেছিলেন যেখানে তিনি লিখেছিলেনঃ


আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে এই নীতি অতিসত্তর বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিচ্ছি (I call upon all concerned to implement this Policy in right earnest )

এবারে আসি খসড়া জাতীয় পানি আইন ২০১০ এর আলোকে এই প্রকল্পের বৈধতা প্রসংগে। এই আইনের[৪] পরিচ্ছেদ ১২ ( নদ-নদী, প্লাবন ভূমি, জলাধার সংরক্ষণ, উন্নয়ন, পূনরুদ্ধার ও ভরাট নিয়ন্ত্রণ) এর আর্টিকেল ৯১ (জলাশয় ও প্লাবণভূমি ভরাট নিয়ন্ত্রণ) এ উল্লেখ আছেঃ


সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের যথাযথ অনুমিত ব্যাতিরেকে সরকার কতৃক প্রকাশিত সর্বশেষ ভূমি জরিপ নকশায় চিহ্নিত বিল, হাওর, বাওড়, প্লাবন ভূমি অথবা জলাশয় সম্পূর্ন বা অংশবিশেষ ভরাট করা যাবেনা (১ ক)


দেশের বিভিন্ন নদ-নদী, খাল, বিল, হাওর-বাওড়, ঝিল, হ্রদ, প্লাবনভুমি, জলাশয়ের ‘‘মৎস্য সম্পর্কিত জৈবিক গুরুত্বপূর্ন এলাকাসমূহ" যাহা মৎস্য গবেষণা অথবা সংরক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ কতৃক চিহ্নিত করা হয়েছে সেই এলাকায় কোন প্রকার সংরক্ষণ, উন্নয়ন, মাট ভরাট ও নিয়ন্ত্রনের পূর্বে পানিসম্পদ মন্ত্রণালইয়ের অনুমিত গ্রহণ করিতে হইবে(১ গ)


প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্ট জলাশয়ের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখিতে হইবে(২ খ)

অর্থাৎ জাতীয় পানি নীতি(১৯৯৯) কিংবা জাতীয় পানি আইন (২০১০) কোনটার আলোকেই বর্তমান প্রস্তাবিত স্থানে বিমানবন্দর নির্মান বৈধতা পাবার কথা নয়। তাই বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের অনুরোধ থাকবে জাতীয় পানি নীতি মেনে নিয়ে আড়িয়াল বিলের মত একটি গুরুত্ত্বপূর্ন জলাভূমিকে উন্নয়নের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্তটি সরকার পূনর্বিবেচনা করবেন।

[১] বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডঃ বিল

[২] আড়িয়াল বিলঃ বাংলাপিডিয়া

[৩] জাতীয় পানি নীতি

[৪] খসড়া জাতীয় পানি আইন ২০১০


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

সম্পূর্ণ একমত!!!!!!!!

সময়োপযোগী একটা পোস্ট!!!!! ধন্যবাদ জাহিদ ভাই এমন একটি লেখার জন্যে। এইখানে উল্লেখিত দুটো পয়েন্টেই যথেষ্ট যুক্তি আছে......

-অতীত

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমার খুব স্বাভাবিক সাধারণ একটা প্রশ্ন, পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকায় কয়টা আধুনিক এয়ারক্রাফট বাংলাদেশ বিমানে যোগ করা যায়?



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

সচল জাহিদ এর ছবি

বোয়িং 777-200ER এর দাম ২৩২ মিলিয়ন ইউএস ডলার

=২৩২,০০০,০০০*৭০.০=১৬২৪ কোটি টাকা

৫০০০০/১৬২৪= ৩১ (প্রায়) টি

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শিমুল এর ছবি

এখানে দু'টি বিষয় আলোচনার দাবী রাখেঃ

একঃ বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মান কতটা যৌক্তিক।

দুইঃ নতুন বিমানবন্দরের নির্মান স্থান হিসেবে আড়িয়াল বিলকে বেছে নেয়া সমীচিন কিনা বা আদৌ বৈধ কিনা।

আমার মতে "নতুন বিমানবন্দর নির্মান পুরোপুরি অযৌক্তিক।এইটা জনগণের টাকার শ্রাদ্ধ ছাড়া আর কিছু নয়।

যদি শুধু নামকরনের কারনেই হয়, তাইলে বংগবন্ধু'র নামে একটা পুর্ণাংগ আন্তর্জাতিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হউক।

বাংলাদেশ বিমানকে একটি শক্তিশালী বেসামরিক বিমান সংস্থায় পরিনত করা অধিক জরুরী

বেসামরিক কেন! সরকারি খাতে রেখে বাংলাদেশ বিমানের উন্নতি সম্ভব না!
বিশ্বের নামকরা বেশিরভাব বিমানসংস্থাই তো সরকারী।উদাহরনঃ এমিরেটস,কাতার, গালফ, কুয়েত, টার্কিশ, থাই......

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

বেসামরিক, বেসরকারি নয়।
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

শামীম এর ছবি

শেষে যে নীতিমালা সেটা অনুযায়ী "সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের যথাযথ অনুমিত" এবং "পানিসম্পদ মন্ত্রণালইয়ের অনুমিত" নিলেই তো সবকিছু আইনসম্মত হয়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সচল জাহিদ এর ছবি

শামীম ভাই এক্ষেত্রে দু'টি বিষয় গুরুত্বপূর্নঃ

একঃ ধরে নেয়া গেল যে বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষ নতুন বিমানবন্দর নির্মান করছে। সেক্ষেত্রে তার প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি করে, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্ট করে তা পরিবেশ অধিদপ্তর না পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ে জমা দিল। এখন পরিবেশ বা পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ত্ব হচ্ছে সবকিছু বিবেচনা করে এই প্রকল্পের ছাড়পত্র দেয়া বা না দেয়া। আইনে সবসময় কিছুটা নমনীয়তা রাখা হয়, কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের দায়িত্ত্ব পরিবেশের ক্ষতি না করে প্রকল্প ছাড় দেয়া।

দুইঃ একাধিক অনুচ্ছেদ একসাথে বিবেচনা করা হলে কিন্তু ছাড়পত্র পেতেও অনেক সমস্যা হবে। যেমনঃ "সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের যথাযথ অনুমিত ব্যাতিরেকে সরকার কতৃক প্রকাশিত সর্বশেষ ভূমি জরিপ নকশায় চিহ্নিত বিল, হাওর, বাওড়, প্লাবন ভূমি অথবা জলাশয় সম্পূর্ন বা অংশবিশেষ ভরাট করা যাবেনা" আর "প্রাকৃতিক অথবা কৃত্রিম উপায়ে সৃষ্ট জলাশয়ের পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখিতে হইবে" এই দুই আইনকে সিদ্ধ করতে গেলে আড়িয়াল বিলে প্রকল্প অনুমোদন পাবার কথা নয়।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

পাঠক [অতিথি] এর ছবি

উনি যে আমাদের দেশের নাম মুজিবদেশ করছেন না, সেজন্য আমাদের সবার শোকর করা উচিত

মাহবুব রানা এর ছবি

সরকার পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা পেলো কোথায়?ঋন না অনুদান?
আমাদের একটা ভালো বিমানবন্দর সতি্যই দরকার, তা বর্তমান বিমানবন্দর আধুনিকায়ন করেই হোক আর নতুন বিমানবন্দর করেই হোক। আমি নিশ্চিত না, তবে এমন হতে পারে যে শাহজালাল আধুনিকায়ন/সম্প্রসারন করতে যে খরচ হবে তার চেয়ে কম খরচে আড়িয়াল বিলে নতুন একটি বানানো যাবে, কারণ ঢাকায় জমির দামের তুলনায় ওখানে দাম নগন্যই হওয়ার কথা। তাছাড়া ঢাকায় জমির প্রাপ্যতার ব্যাপারটিও আছে। আবার ডিসেন্ট্রালাইজেশনের কথা চিন্তা করলেও ঢাকার বাইরে বিমানবন্দর করাটা সমর্থনযোগ্য।

আর দ্বিতীয় প্রশ্নটির ব্যাপারে 'পরিবেশ না উন্নয়ন' বিতর্কটিই সামনে চলে আসে। বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ণ দেশে পরিবেশের একদম ক্ষতি না করে বড় বাজেটের উন্নয়ন করা যাবে কিনা সেটি একটি ব্যাপার। আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর নির্মান জাতীয় পানি নীতির বরখেলাপ সেটা আপনার দেয়া তথ্য থেকে পরিস্কার, কিন্তু এটাই সবচেয়ে ভালো বিকল্প কিনা সেটা জানার আগে জানা দরকার সরকারের হাতে অন্য বিকল্পগুলো কি কি ছিলো/আছে।

দরকারি একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা করায় ধন্যবাদ জানবেন।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ মাহবুব রানা।

এখানে একটি বিষয় গুরুত্ত্বপূর্নঃ নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তা যদি শুধুমাত্র ট্রানজিটকে কেন্দ্র করে হয় ( অর্থাৎ যদি বাংলাদেশ হয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুট চলাচল করে ) সেক্ষেত্রে তা ঢাকার বাইরে স্থাপন করা উচিৎ। সেই ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বা সিলেটের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আধুনিকরন করা অধিক যুক্তিযুক্ত। আড়িয়াল বিলে ২০ -৩০ ফুট মাটি ফেলে বিমানবন্দরের রানওয়ে বানানো খরচ কম হবে কিনা সেটা ফিজিবিলিটি স্টাডি না করে বলা সম্ভব নয়। কোন রকম স্টাডি ছাড়া ৫০,০০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন এবং তার জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ কিভাবে শুরু হয় সেটা অন্তত আমার বোধগম্য নয়।

'পরিবেশ বনাম উন্নয়ন' বরং বাংলাদেশের মত ঘনবসতিপূর্ন দেশেই অধিক জরুরী কারন অধিক জনসংখ্যার কারনে এখানে সহজেই একটি প্রকল্প অধিক মানুষের ক্ষতির কারন হয়ে দাড়ায়।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শামীম এর ছবি

কবে যেন পড়েছিলাম, লম্বা রানওয়ের অভাবে জিয়াতে থুক্কু শাহজালাল বিমানবন্দরে বড় বিমান আসতে পারছে না। এ জন্য রানওয়ে আরও দেড় থেকে দুই কিলোমিটার লম্বা করতে হবে - উত্তরার ঐপাশে এজন্য জমি অধিগ্রহণ করা লাগবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

হূমম, এই প্রজেক্ট হাতে নেবার কারণ কি নামকরণ নাকি আসলেই প্রয়োজনের তাগিদে! আমার মতে এই টাকাটা রেল যোগাযোগে ব্যয় করলে দেশের উপকার হইত অনেক বেশি। দেশের কয়জন মানুষ বিমানে উঠতে পারে? আর অপরদিকে বিনা যত্নে এবং বিনা সংস্কারে রেললাইন গুলোর যা অবস্থা দাড়িয়েছে, ব্যাপক শোচনীয় ইয়ে, মানে... , মন্তব্যটা কেমন যেন অফঃটপিক হয়ে গেল মন খারাপ

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সচল জাহিদ এর ছবি

মোটেই অফটপিক হয়নি সাইফ। বাংলাদেশে নতুন বিমানবন্দর স্থাপনের চেয়ে অনেক জরুরী কাজ পড়ে আছে। কিছুটা এরকমঃ ঢাকার নদীগুলো সংস্কারের টাকা নেই কিন্তু কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ করে ঢাকা শহরের পুরোনো আইল্যান্ড ভেঙ্গে নতুন আইল্যান্ড গড়ে সেখানে ফুলের গাছ লাগিয়ে সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়, আর আমরা নদীর পানির দূর্গন্ধে নাক ঢেকে সেই অপার সৌন্দর্য্য দেখি।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শিমুল এর ছবি

সরকার পঞ্চাশ হাজার কোটি টাকা পেলো কোথায়?ঋন না অনুদান?

মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী এইটা হবে পিপিপি(পাব্লিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ).প্রাইভেট ফান্ড বিনিয়োগ হবে BOT(বিল্ড-অপারেট-ট্রান্সফার)
বেসিসে।যদি বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোন লার্জ-স্কেল প্রজেক্ট এই রুপরেখা অনুযায়ী সফল হয়েছে আমার জানা নাই।

আমাদের একটা ভালো বিমানবন্দর সতি্যই দরকার

এই "ভালো"টা কিসের ভিত্তিতে? সেবা নাকি আকৃতি।সেবার মান বিমানবন্দরের আকৃতির সাথে কিভাবে বাড়বে আমার জানা নাই।

২০০৮-এ এশিয়ার ব্যস্ততম বিমানবন্দর'সমূহের তালিকা দিলাম।ঢাকার নাম তো দেখিনা!

হোচিমিন সিটির Tan Son Nhat এশিয়ার ২৮তম ব্যস্ত বিমানবন্দর।বিমানবন্দর শাহজালালের মতোই শহরের মাঝখানে।আবার আকৃতিতে শাহজালালের সমান, মাইনে একটু ছোড।


আবার ডিসেন্ট্রালাইজেশনের কথা চিন্তা করলেও ঢাকার বাইরে বিমানবন্দর করাটা সমর্থনযোগ্য।

তাই কি! আমার তো মনে হয় ঢাকার বাইরে যেখানে বিমানবন্দর হবে, ঢাকা শহরও সেইখান পর্যন্ত টেনে-হেচড়ে বাড়ানো হবে। বর্তমানের শাহজালাল বিমানবন্দরও একসময় ঢাকা শহরের বাইরেই ছিলো।


কবে যেন পড়েছিলাম, লম্বা রানওয়ের অভাবে জিয়াতে থুক্কু শাহজালাল বিমানবন্দরে বড় বিমান আসতে পারছে না।

এই লম্বা বিমানটা কাদের! বাংলাদেশ বিমানের! বাংলাদেশ বিমান যেখানে একের পর এক লাভজনক রুট অন্যদের কাছে হারাচ্ছে(ইচ্ছে করেই), সেইখানে ভিনদেশি বিমানবহরের লম্বা বিমান নামানোর জন্য আমাদের গুচ্ছে টাকা খরচ করে খাল-বিল ভরাট করে বিমানবন্দর বানাতে হবে।

খুব ভালো।অতিথিপরায়ন হিসেবে আমাদের একটা সুনাম আছে না!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভবিষ্যতের রাজা-রানীরা এটা কার নামে পুননামকরণ করবেন সেটা চিন্তা করেই হাসি পাচ্ছে।

সচল জাহিদ এর ছবি

পিপিদা, কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে নামকরণ এই বিমানবন্দরের নির্মানে একটি গুরুত্ত্বপুর্ন ইস্যু !!!

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রু [অতিথি] এর ছবি

কেউ কোন মন্ত্রী, এম পি কে পার্সোনালি চেনেন? উনাদেরকে এই পোস্ট পড়ানো যায়?

খুব ভালো পোস্ট, সময়োপযোগী। একটা আধুনিক এয়ারপোর্টের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। হাইতির বিপর্যয় একটা উদাহরণ। হাইতির উদ্ধার কাজ প্রচন্ডভাবে বিঘ্নিত হয়েছিল ওদের এয়ারপোর্ট কাঠামো ভেঙ্গে পড়ায়। কিন্তু বাংলাদেশে এই উন্নয়ন আনতে নতুন একটা এয়ারপোর্ট দরকার নাকি যেটা আছে সেটাকেই মেরামত করলে হয়ে যাবে, তা দেখতে হবে।

আড়িয়াল বিল কেন বেছে নেওয়া হল ঠিক বুঝলাম না। কেউ এ ব্যাপারে আরেকটু আলোকপাত করলে উপকৃত হতাম। সচল জাহিদকে ধন্যবাদ জানাই লেখাটার জন্য।

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

শেহাব [অতিথি] এর ছবি

সরকার যেটা দেখবে সেটা হল এখানে যে কন্ট্রাক্টগুলো দেয়া হবে সেগুলো কারা পাচ্ছে। ৫০,০০০ কোটি টাকার মধ্যে যদি ১০% চুরি হয় তাহলে ৫০০০ কোটি টাকা। কন্ট্রাক্ট পাইয়ে দেবার জন্য তার মধ্যে ১০% যদি শেখ রেহানা বা সজীব ওয়াজেদ জয় রাখে তাহলে ৫০০ কোটি টাকা। এভাবে ছাড়া আর কোন ভাবে হয়তো মেলানো যাবে না। খালেদা জিয়ার আমলের প্রজেক্টগুলোও এভাবেই মিলেছে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

জাহিদ ভাইকে ধন্যবাদ এনভায়রনমেন্টাল আসপেক্টটা তুলে ধরার জন্যে। তাছাড়া একটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাথে সড়কপথের কানেকটিভিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। ঢাকায় যানজটের যে অবস্থা তাতে দুরে একটা বিমানবন্দর স্থাপন করলে দুর্ভোগ বেড়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিতে পারে। অনেক পশ্চিমা দেশে অবশ্য শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে অনেক দুরে বিমান বন্দর দেখা যায় তবে সেখানে যানজট নেই।

তবে শাহ্‌ জালাল বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করা যেতে পারে। ভালো সুযোগ সুবিধা পেলে বড়সড় ক্যারিয়ারগুলো ঢাকাকে ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার করতে আগ্রহি হতে পারে। এজন্যে অবশ্য মার্কেটিংএরও প্রয়োজন হবে। নাইরোবি বা দিল্লির মতো না হলেও এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক রুটগুলো এই হাব ব্যবহার করতে পারে।

======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমার মনে হয়না আদৌ নতুন বিমানবন্দর নির্মানের জন্য কোনরূপ স্টাডি হয়েছে। এমনকি আমার জানা মতে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী মেনুফেষ্টা তেও এরূপ কিছু ছিল।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নীলকান্ত এর ছবি

শাহজালাল বিমানবন্দরের সমস্যাটা কোথায়?
রানওয়ে ছোট? নাকি পর্যাপ্ত বিমান নেই?নাকি সেবা ভালো না?নাকি জায়গা সংকুলান হয় না?
শেষেরটা হবার সম্ভাবনা কম।
যাই হোক, আমি কোনভাবেই নতুন এক বিমানবন্দর যোগ হবার হিসাব মেলাতে পারছি না।
বাংলাদেশের বিমানের(সামরিক বেসামরিক মিলেই) অবকাঠামো হাইতির মত না। হাইতির মত হলেও ৫০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে এক বিমানবন্দর বানালে সেটা দুর্যোগে যে খুব কাজে দিবে তা ভাবা যুক্তিসঙ্গত হবে না।
রেলে টাকা দিয়েও লাভ নেই। বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি খাসজমি রেলের। রেল বিভাগ ও প্রশাসনের দুর্নীতির কারণেই তার অধিকাংশই এখন অবৈধ দখলে। রেলের যা সম্পদ আছে তা আমরাই নষ্ট করছি। বাংলাদেশে কয়েক দশক আগেও
রেলশিল্প নামক শিল্প ছিল। আমরা নিজেরা তা ধ্বংস করেছি, আদমজীর মত।

পরিবেশের কথা না হয় নাই বললাম। যত বড় পরিবেশবিদ টাকা খেয়ে না খেয়ে বলুক না কেন "বাজে প্রভাব পরবে না।" আমরা সবাই জানি পরিবেশে এর কি প্রভাব পরতে পারে।
আসলেই আফসোস লাগে। আমাদের অনেকেই বাইরে গিয়ে বলে আমরা গরীব দেশের নাগরিক, যদি সত্যি গরীব হই তবে ৫০ হাজার কোটি টাকা পয়দা হয় কোথা থেকে?
সুন্দর এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ জাহিদ ভাই।


আমি মেঘের দলে আছি, আমি ঘাসের দলে আছি


অলস সময়

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

আরিফ.হাসান এর ছবি

খুবই সময়োপযোগী লেখা। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের মতো গরিব দেশের জন্য এইসব আকাশকুসুম কল্পনা করা হচ্ছে। আমার কাছে তো ব্যাপারটা সম্পুর্ণ রাজনৈতিকই মনে হলো। নিচে আমার কিছু বিক্ষিপ্ত ভাবনা তুলে ধরলাম। অবশ্য আমার এই ভাবনাগুলো অনেকটাই আবেগের বশে লেখা.... অনেকটাই অফটপিক.... তাই সবাই নিজ দায়িত্বে পড়বেন প্লিজ!

১. আমার মনে হয়, আওয়ামিলীগ সরকার মনে করছে যদি আগামী নির্বাচনে ওনারা ঘটনাক্রমে হেরেই যান, তাহলে তো শাহজালাল বিমানবন্দরের নাম আবার জিয়া হয়ে যাবে(বলতে পারেন সম্ভাবনা ৫০-৫০...তবে খুব বুদ্ধি করে নাম পরিবর্তন করা হয়েছে এইবার...খুব সহজেই হজরত শাহজালালের নাম হয়ত পরিবর্তন করাও যাবে না হাসি )। সুতরাং কোনক্রমেই এই বিমান বন্দরের উন্নয়ন করা যাবে না। কারণটা খুবই সহজ, আমরা আমাদের দেশকে কখনও মুজিব কিংবা জিয়ার চেয়ে বেশী ভালবাসতে(??) পারিনি... ভবিষ্যতেও পারবনা...।

এই প্রসংগে একটা পুরাতন জোকস মনে পড়ে গেলো....শেখ হাসিনা যখন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হলেন...সেই আমলের কাহিনী। একদা তিনি বিমানমন্ত্রীকে ডেকে বললেন যে, আমাদের বিমানের নাম পরিবর্তন করতে হবে।মন্ত্রী বললেন, প্রধানমন্ত্রী কি কোনো নাম মনস্হ করেছেন? উত্তর আসিল "ফজিলতুন্নেছা"। বিমানমন্ত্রী কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, একটি দেশের জাতীয় বিমান সংস্হার নাম কিভাবে ফজিলতুন্নেছা রাখবেন? এবার প্রধানমন্ত্রী খানিকটা রাগতস্বরে বললেন....জার্মানীর বিমানের নাম "লুৎফুন্নেছা" হতে পারলে আমাদেরটার নাম "ফজিলতুন্নেছা" হতে দোষ কোথায় হো হো হো ?

২. পিপিপিতে ‘বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ ও ‘বঙ্গবন্ধু নগরী’ গড়ে তোলা হবে। ভালো কথা। যেই পিপিপি'র কথা আমরা শুনছি আমার মনে হয় এটা পাব্লিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ না হয়ে পাব্লিক-পাব্লিক পার্টনারশিপ হবার সম্ভাবনাই বেশী। অর্থাৎ সরকার দিবে ৫০% আর প্রাইভেট সাহেব বাকী ৫০% দিবেন ব্যাংক লোন থেকে। যেই লাউ সেই কদু।

যতটুকু পড়েছি, প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন ২০১৩ সালের মধ্যে এই বিমানবন্দর নির্মান সম্পন্ন করতে। তার মানে এই যে, পরবর্তীবার ওনি ক্ষমতায় এলে বঙ্গবন্ধু নগরীও সম্পন্ন করবেন আর আশা করা যায়, এনশাল্লাহ ২০২০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশের রাজধানী "বঙ্গবন্ধু সিটি" -তে স্হানান্তর করা হবে। সেই সুদিনের অপেক্ষায় রইলাম।

৩. বাসায় কিছুদিন আগে "যাদু টিভি"র সেটটপ বক্স এলো। আমি তো মহা খুশী। অনেকদিন পরে বাংলা টিভি দেখবো। তিনটা চ্যানেল আসে। গেলাম এনটিভিতে, অতঃপর এটিএন বাংলায়। হতাশ হলাম। একটু পরপর দেখি লন্ডন আঃলীগ, স্পেন বিএনপি, ইটালী যুবলীগ কিংবা সুইডেন শ্রমিকদলের বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপন! মনে মনে গালি দিয়ে শেষ পর্যন্ত গেলাম বাবায় ক্ষেদানো মায়ের তাড়ানো বিটিভি ওয়ার্ল্ড এ। ওখানে গিয়ে আর হতাশ নয় বরং হতাশায় নিমজ্জিত হলাম। প্রতি ১০ সেকেন্ড অন্তর অন্তর নিশ্চিতভাবে শুনতে পাবেন বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা, শেখ মুজিব এই কয়েকটি শব্দের অসহনীয় পুনরাবৃত্তি। জাতির জনককে এভাবে চামচামির মাধ্যমে আর কত নিচে নামাবেন আপনারা? এটা কখনও বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন হতে পারেনা। সত্যিকারের ভালবাসতেন মুক্তিযোদ্ধারা যারা নিজের জীবন দিয়ে ভালবাসা প্রমাণ করে গেছেন। বাকীসব নিশ্চিতভাবেই মেকি!

৪. কেউ হয়ত মনে করতে পারেন আমি আওয়ামিলীগ বিদ্বেষী কিংবা শেখ মুজিব বিদ্বেষী অথবা স্বাধীনতা বিরোধী। উপরের কোনটিই সঠিক নয়। বরং আমিও খুব খুশী হয়েছিলাম যেদিন শুনলাম আওয়ামিলীগ বিপুল ভোটে রাজাকারদের পরাজিত করে ক্ষমতায় এসেছে। অনেক আশা করেছিলাম দেশকে নিয়ে। বিশেষ করে আমরা যারা প্রবাসে থাকি তারা কিন্তু সত্যিকার অর্থেই দেশকে মিস করি...যদিও এটি দেশকে ভালবাসার সমার্থক কিনা বলতে পারি না। আমরা সবসময় মনের অজান্তেই উন্নত বিশ্বের সবকিছুকেই আমাদের জন্মভূমির সাথে তুলনা করি আর হিসেব না মিললে মনে মনে আফসোস করতে থাকি। নিজে নিজেই বলি আহারে আমাদের যদি এরকম হতো..সেরকম হতো...এটা থাকতো...সেটা থাকতো!! সরকার পরিবর্তন হয়, সাথে পরিবর্তন হয় কিছু নাম! আর অতি সাধারণ রহিম-করিমরা শুধু ভাল থাকবে বলে স্বপ্ন দেখে আর দেখতে দেখতে একসময় ওদের মৃত্যুর সাথে স্বপ্নগুলোও মাটি চাপা পড়ে!

অমিত এর ছবি

আমি তো শুনেছিলাম নতুন এয়ারপোর্ট বানানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল জয়দেবপুর পার হয়ে আরও উত্তরদিকে, ভালুকার আশেপাশে। সড়ক পথে সেটা এখনকার এয়ারপোর্ট থেকে খুব বেশি দূরও হত না। সেখান থেকে কিভাবে সেটা ঢাকার আরও দক্ষিণে বিলে যেয়ে পড়ল, বুঝলাম না।

তবে অপ্রিয় হলেও যেটা সত্য সেটা হল এত বড় একটা অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পরিবেশের সংগে আরও অনেক ফ্যাক্টর বিশ্লেষণ করতে হয়। নতুন সড়ক নির্মাণ অথবা এক্সিসটিং সড়কের উন্নয়ন, যারা এই অবকাঠামো ব্যবহার করছেন অথবা করবেন তাদের বাসস্থান (ওরিজিনেশন), জমির দাম, আশেপাশের ব্যাবসা/ বাসস্থানের উপর প্রভাব, ভবিষ্যৎের এক্সপ্যানশনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা, নির্মাণসামগ্রী সাইটে নেয়ার খরচ এবং আরও অনেক কিছু। তাই আসলে পূর্ণাঙ্গ স্টাডি/ফিসিবিলিটি রিপোর্ট না দেখে কিছু বলাটা ঠিক হবে না।

সচল জাহিদ এর ছবি

সহমত, পূর্নাংগ ফিজিবিলিটি স্টাডি প্রয়োজন। কিন্তু এক্ষেত্রে সেরকম কিছু হয়েছে বলে জানিনি।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হিমু এর ছবি

নতুন বিমানবন্দর নির্মাণ করা হলে সেটা করা উচিত খুলনায়। আর আন্তর্জাতিক রুটের জন্য কোনো কিছু করতে চাইলে চট্টগ্রাম বা সিলেট বিমানবন্দরকে বিস্তৃত করা হোক।

সরকার সাধারণত কিছু তুঘলকি প্রকল্প খুলে সবসময় টাকাপয়সা লুটের ক্ষেত্র তৈরি করে। ঢাকায় উড়ালসেতুর মতো এটাকেও সেরকমই মনে হচ্ছে।



বুকে BOOK রেখে বরাহশিকার ♪♫ কালাইডোস্কোপ

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ হিমু। নিঃসন্দেহে এটি উচ্চাভিলাষী একটি প্রকল্প যা পোষ্টের শুরুতে উল্লেখ করেছি। আগে সমীক্ষা দরকার আমাদের আদৌ একটি নতুন বিমানবন্দর প্রয়োজন কিনা।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রাতঃস্মরণীয় [অতিথি] এর ছবি

খুলনায় বিমান বন্দরের প্রস্তাবনার সাথে একমত। মংলা বন্দরের কাছে বিমান বন্দর করার জন্য এরশাদ্দাদুর আমলে অধিগ্রহন করা জমিটা এখনও ফাঁকা পড়ে আছে। ট্রান্সিট সম্ভাবনা বিচারেও বিমান বন্দরটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

(অফলাইনে আছি)

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আমার পরিচিত দুইজন, যাদের বাড়ি ওই জায়গার আশেপাশে, ফেসবুকে তাদের স্ট্যাটাস দেখে বুঝলাম, তারাও চায় না ইকো সিস্টেম নষ্ট করে আড়িয়াল বিলে বিমানবন্দর হোক। এ ধরনের এত বড় একটা প্রজেক্ট নেয়ার আছে, সেখানকার অধিবাসীদের মতামত নেয়াও দরকার বলে মনে করি!

সচল জাহিদ এর ছবি

মতামত প্রদানের জন্য ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

নাজমুল হুদার ম্যাগলেভ ট্রেনের কথা মনে করিয়ে দিল। সব সরকারেই ধান্ধাবাজ গরু ছাগলের উৎপাত!!!! ছাগলেরা এখনো ঢাকা চট্টগ্রামে একটা ভদ্র গোছের হাইওয়ে তৈরী করতে পারে নাই, ট্রেন লাইনের সিগন্যাল ঠিক করতে পারে নাই, ঢাকা চট্টগ্রাম শহরে নিরুপদ্রপ প্রবেশ করার মতো একটা গেটওয়ে করতে পারে নাই, চিপতে চিপতে ঢাকা শহরকে মেরে ফেলছে, চট্টগ্রামও মরছে এখন। সারা দেশে বিদ্যুত এলাকায় এখনো ৫০-৭০ ভাগ লোড শেডিং, ৫০-৬০ ভাগে আদৌ কোন বিদ্যুত নেই...............আর এই ছাগলেরা ৫০ হাজার কোটি টাকার বিমানবন্দরের স্বপ্ন দেখাচ্ছে??? বেকুব পাইছে আমাদের? এটা কি স্বপ্ন নাকি ফিজিবিলিটি স্টাডির কয়েকশো কোটি টাকার রফা করার মন্ত্রকসচিবালীয় ফন্দী। আমাদেরকেও কি ছাগল মনে করে ব্যাটারা?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
এ ভ্রমণ, কেবলই একটা ভ্রমণ- এ ভ্রমণের কোন গন্তব্য নেই,
এ ভ্রমণ মানে কোথাও যাওয়া নয়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সচল জাহিদ এর ছবি

চলুকচলুকচলুক

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

দেবাশীষ [অতিথি] এর ছবি

ঢাকায় যেটা আছে তার টয়লেটাই ঠিক নাই,ব্যাগেজ বেল্ট এ ব্যাগেজ আসে উল্টাপাল্টা,নাই কোন ভদ্রগোছের তথ্যসেবা কেন্দ্র আর এই বেকুবেরা কিনা প্ল্যান করে আরেকটা কমেডি বানানোর !!!!!

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

এ নিয়ে লিখে খুব ভালো করেছেন। বিলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন শোনার পর থেকেই অদ্ভুত লাগছিল। অবিলম্বে শাহজালাল কে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর নামকরণ করে আড়িয়াল বিল রক্ষার করার জন্যে পিটিশন খোলা হোক।

~~সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা মানুষের মুক্তির জন্যে সংগ্রামের সময় অপরাধীর অধিকারের কথাটাও ভুলে যায় না।

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ ধ্রুব।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

আসরাফ [অতিথি] এর ছবি

ভাল লাগল।
ধন্যবাদ।

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

আবদুল আজীজ এর ছবি

আমি পদ্মাপাড়বাসী।
পদ্মার পানি খাল দিয়ে আড়িয়ালবিলে যায়, বের হয় ধলেশ্বরী দিয়ে। এটা প্রায় এক যুগ আগের কথা। ঢাকা-দোহার মহাসড়কের কারণে পদ্মার পানি এখন আর আড়িয়াল বিলে প্রবেশ করে না।
সংযোগ খালগুলি এখন বন্ধ। খালগুলি হল-১। জয়পাড়া খাল, ২।ভূইয়া বাড়ি খাল, ৩। দোহার খাল, ৪। সুতারপাড়া খাল (মেঘুলা খাল), ৫। ঋষিবাড়ি খাল, ৬।ব্যাপারীবাড়ি খাল, ৭। মোকশেদপুর কাটা খাল, ৮। বাঘরা খাল, ৯। কামারগাঁও খাল, ১০। ভাগ্যকুল খাল। এগুলোর সবগুলির মুখ বন্ধ। কারণ- নদীর নাব্যতা, বিল ভরে যাওয়া ইত্যাদি...বিলের অনেক জমি খিল (পতিত) থাকে, ফসল হয় না, এমন না যে ডিপ টিউবওয়েল বসিয়ে সেচ কাজ করা যায়। ওই এলাকায় ডীপ টিউবয়েলও বসানো যায় না।

আগে অসংখ্য পুকুরে/ডাঙ্গায় (বড় পুকুরে) খোদা প্রদত্ত অসংখ্য মাছ পাওয়া যেত, এখন মাছের প্রাপ্তি পুরাটাই চাষের উপর নির্ভর করে। কিছু ধান হয় বটে। তার চেয়ে বিমানবন্দর কি ভালো না? এর চেয়ে সস্তার জমি কি পাওয়া যাবে কোথাও? যার বিপক্ষে মিছিল করছেন তাদের জ্ঞাতার্থে বলি, "ঢাকা মাওয়া মহা সড়ক না হলে মিছিল করতেন কোথায়? এখনই বিমান বন্দর না হলে বিলের ২ মাইলের মধ্যের অধিবাসী বাবুল, নূর আলী অথবা বিপু গং'দের শকুন দৃষ্টি হতে আড়িয়াল বিল তখন রক্ষা করতে পারবেন তো?"

সচল জাহিদ এর ছবি

পদ্মাপাড়ের মানুষ হিসেবে আপনার দাবী হওয়া উচিৎ ছিল কিভাবে আড়িয়াল বিলকে সংস্কার করা যায় বা আবার বাঁচিতে তোলা যায়। আপনি এমন ভাবে বললেন যেন ঢাকা মাওয়া সড়ক ঐ এলাকার জনগনকে দান করা হয়েছে। ঐ সড়ক তাদের অধিকার। আর আপন জানেন কিনা বড় রাস্তা হলে পানি চলাচলের পথ নিশ্চিত করার জন্য সেটির ডিজাইনে নির্গমন পথ থাকে ( ব্রীজ বা কালভার্ট)। সেটি যথযথ কিনা যা যে পরিমান দরকার তা আছে কিনা আপনি সেটি নিয়ে কথা বলতে পারতেন, তাও বলেননি। আপনি বাবুল, নূর আলী অথবা বিপু গং'দের কথা বলেছেন, মনে রাখবেন বিমানবন্দর হলেও এই শকুনরা থাকবে তবে অন্যরূপে। সুতরাং শকুনদের তাড়ানোর জন্য লিখুন।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

আবদুল আজীজ এর ছবি

নদীকে আপনি কতদিন ধরে চেনে?
সমুদ্রের মত জোয়ার বইতো নদী দিয়ে, বহুদূর থেকে আসা সো সো ধ্বনি আলা নদী আজ কই? কই সে নদী যেখান দিয়ে পাকসেনা'দের রণতরী বার বিশেক যখন উজানে নিতে ব্যার্থ হয়ে বলেছিল, "ইয়ে ভি মুক্তি হ্যায়"। আপনি যদি সেদিনের পদ্মার সথে আজকের পদ্মা এক মনে করেন তা হলে ভূল করবেন।
মুক্তিযুদ্ধের আগে গোয়াকাটা ডাঙ্গার পাশ দিয়ে মদনখালি যাবার অভিজ্ঞতাও আমার আছে। মানুশ যেমন বড় হয় বদলায় নদীও তার রূপ বদলায়, আজকে কোথায় কীর্তিনাশার সেই রূপ? নদীর আজ সেই নাব্যতাই নেই, হাজারটা কালভার্টও আজ সেই পানি আনতে পারবে না।

পরিবর্তন হলেই নেই নেই রব না তুলে বুঝার চেষ্টা করুন আজ থেকে ২০ বছর পরে আমাদের শিশু কোথায় দাঁড়াবে? মুদ্রস্ফীতি যে পরিমানে বাড়ে ২ বছর পরও এই বিমান বন্দর করতে কত টাকা লাগবে?
মাওয়া সড়কও যখন হয় তখন হয়তো এই ব্লগ ছিল না তবে বেডরুমে বসে বাবুরা ছিলেন সড়কের বিরুদ্ধচারন করতে। ঠিক একই বিক্রমেই করতেন। অথচ বছরের ৬ মাস পানির নিচের থাকা ওইসব এলাকার মানুশ নৌকা, ভেলা, টাগারি'র মত তুচ্ছ বাহনের উপর নির্ভরশীল ছিল। সেই অঞ্চলে মানুষ মেয়ে বিয়ে দিত না, যার জের ধরে এখনও অত্র অঞ্চলের পাত্রদের তুলনামুলক মূল্যায়ন কম।

আড়িয়াল বিলেকে ঘিরে প্রতিটি বাড়ির ছেলেরা পৃথিবী'র ছোট বড় দেশগুলোতে শ্রমিকের কাজ করে। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স দিয়ে আপনার আমার জন্য উন্নয়ন হয়।

যুদ্ধ যদি করতেই চান তবে আমি আপনাকে যুদ্ধ করার ভাল একটা বিষয় দেই, ইরি ভিটামিন ডি'র পুষ্টি দেবার নামে আমাদের মাথার উপর গোল্ডেন রাইস নামক একটা বিকালঙ্গ ধানের ভ্যারাইটি চাপিয়ে দিচ্ছে। আল্লাহর দোহাই লাগে, সেই ডিটামিন ডি'র অপেক্ষায় না থেকে রঙ্গিন শাক সবজি, ফলমুল খান। আশা করি এই অন্ধত্ব হতে আপনি আশু মুক্তি লাভ করবেন।

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনি পদ্মা নদীপাড়ের মানুষ, নদীকে তাই আপনি বেশি চিনতে পারেন, আমি লৌহজঙ্গের পাড়ের মানুষ তাই আপনার মত প্রমত্তা নদীকে চেনা হয়নাই, তবে পানিসম্পদ কৌশল নিয়ে গত ১৩ বছরের একাডেমিক জ্ঞানার্জনের কারনে নদীকে জানা আছে বেশ ভালই। এখন হয়ত আপনি বলবেন, আপনি কি জ্ঞান অর্জন করেছেন ?

আপনি নিজেই জানেননা আসলে আপনার বক্তব্য কি । আপনি প্রথমে বললেন ঢাকা মাওয়া সড়কের কারনেই পদ্মার পানি আজ আড়িয়াল বিলে আসেনা সুতরাং এই রাস্তা না হলে পানি আসত। আর রাস্তাকে জায়েজ করার তুলনা দিয়ে বললেন সম্ভাব্য বিমানবন্দরকেও জায়েজ করতে। নিজের করা উদ্ধৃতিগুলো আবার দেখুন

ঢাকা-দোহার মহাসড়কের কারণে পদ্মার পানি এখন আর আড়িয়াল বিলে প্রবেশ করে না।

যার বিপক্ষে মিছিল করছেন তাদের জ্ঞাতার্থে বলি, "ঢাকা মাওয়া মহা সড়ক না হলে মিছিল করতেন কোথায়?

অথচ যেই না আমি যুক্তি খন্ডনে বুঝিয়ে দিলাম সড়ক নির্মানের ক্ষেত্রে কালভার্ট ডিজাইনের কথা আপনি চেহারা পালটে এলেন নিচের উদ্ধৃতি নিয়েঃ

নদীর আজ সেই নাব্যতাই নেই, হাজারটা কালভার্টও আজ সেই পানি আনতে পারবে না।

শুধু পদ্মাপাড়ের মানুষ হলেই সব জানবেন আর আমরা এতদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে কিছুই বুঝবনা সেটা ভাবা কিন্তু অবিবেচক মিঃ আজিজ।

আড়িয়াল বিলেকে ঘিরে প্রতিটি বাড়ির ছেলেরা পৃথিবী'র ছোট বড় দেশগুলোতে শ্রমিকের কাজ করে। তাদের পাঠানো রেমিটেন্স দিয়ে আপনার আমার জন্য উন্নয়ন হয়।

এই উক্তির উদ্দেশ্য কি বুঝলামনা, এই পোষ্টের আলোচনার সাথেও এর কোন সম্পর্ক নেই। নাকি বলতে চাচ্ছেন আড়িয়াল বিলের ছেলেরা বিদেশ থেকে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরে নেমেই এক দৌড়ে মায়ের কোলে চলে যাবে? তাহলেত দেশের সব গ্রামে একটি করে বিমানবন্দর করতে হয়। নাকি বলেন ?

আল্লাহর দোহাই লাগে, সেই ডিটামিন ডি'র অপেক্ষায় না থেকে রঙ্গিন শাক সবজি, ফলমুল খান। আশা করি এই অন্ধত্ব হতে আপনি আশু মুক্তি লাভ করবেন।

এই অংশে এসে আপনি লেখক পাঠক বিতর্কের শোভনতা ভংগ করে বসলেন। হ্যা আমরা অন্ধ কারন আমরা দেশের ভালটা ছাড়া মন্দটা বুঝিনা, আপনি দালাল, পকেটে দুপয়সা জুটে গেলে আপনাদের মুখে কথার ফুলঝুড়ি ফুটে।

আপনি কিন্তু আমার আগের মন্তব্যটার শেষ কয়েকটি লাইনের কোন মন্তব্য করেননি। কি এড়িয়ে গেলেন কোন কিন্তু জানা নেই বলে? আবার দেখুনঃ

আপনি বাবুল, নূর আলী অথবা বিপু গং'দের কথা বলেছেন, মনে রাখবেন বিমানবন্দর হলেও এই শকুনরা থাকবে তবে অন্যরূপে। সুতরাং শকুনদের তাড়ানোর জন্য লিখুন।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। ফেসবুকে শেয়ার দিলাম।

কুটুমবাড়ি

সচল জাহিদ এর ছবি

ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমি সাইফ ভাইয়ের মতোই রেল যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নয়নের কথা তুলতে চেয়েছিলাম, আরো আছে নদী ড্রেজিং, নাব্যতা বজায়ে রাখা, বরিশাল বিভাগে রেল পথের বিকল্পএর জন্যে আরো ব্রিজ ও রাস্তা নির্মাণ, মানে যোগাযোগ ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন।

কিন্তু এখানে তো মনে হয় বিশেষ নামে স্বয়ংসম্পূর্ণ নগর ব্যাপারটাই মুখ্য, কাজেই সেখানে পরিবেশ নীতিগুলোর বরখেলাপ বা সম্পূর্ণ উপেক্ষায় কী যায় আসে!

নতুন বিমানবন্দর হলে কি ঢাকা এয়ারপোর্ট কে ডোমেস্টিক করে দেয়া হবে? উত্তরবঙ্গের সাথে আর দক্ষিণবঙ্গের সাথে সরাসরি যোগাযোগ ব্যাবস্থা না থাকলে সেটা পূর্ণাঙ্গতা পাবে কী?! দুঃখিত আমি ব্যাপারটা নিয়ে ভালো জানি না, তাই জিজ্ঞেস করছি, নতুন নগর কি নতুন রাজধানী হবে, মানে সব সরকারি অফিস উঠিয়ে নেয়া হবে ঢাকার ডিসেন্ট্রালাইজেশনের লক্ষ্যে? চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সচল জাহিদ এর ছবি

অনেক প্রশ্ন যার কোনটারই উত্তর জানিনা। আমরা নাগরিকরা তথ্য বঞ্চিত। সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে হয়তবা জানব।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
সচল জাহিদ ব্লগস্পট


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমরা নাগরিকরা তথ্য বঞ্চিত।

আরে জাহিদ ভাই, আপনার এই কথায় মনে পড়লো! ক'দিন আগেই জিপি থেকে Govt Info নামে এসএমএস এসেছে ফোনে, হুবহু তুলে দিলাম -
Tothyo jana o pawa apnar moulik odhikar. Tothyo Odhikar Ain anusharey sarkari o besarkari shongshtha tothyo prodane badhyo. Aro jante dekhun: www,infocom.gov.bd
এরপরে কি আর নাগরিকেরা তথ্য থেকে বঞ্চিত বলা যায় বলেন? দেঁতো হাসি

অ:ট: সরকারি এই বাংলিশ মেসেজগুলো অদ্ভুত বানানে কারা বসে বসে টাইপ করে পাঠায় এটা জানার ইচ্ছা আমার। এটা একটা বিনোদনের উৎস কিন্তু! হাসি
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল
যে গুলা আছে অইগুলার কোনো উন্নয়ন না করে নতুন আরও একটা করা যুক্তিহীন

স্বপ্নবাজ

ফাহিম হাসান এর ছবি

পুরো ব্যাপারটা স্রেফ কৌতুক মনে হচ্ছে। জনগণের করের টাকার এ কী অপচয়!

লেখাটা ভাবনার খোরাক জোগাল।

দ্রোহী এর ছবি

নিঃসন্দেহে চমৎকার উদ্যোগ!

আমার মতে বিলের ঠিক মাঝ বরাবর বিমানবন্দর তৈরি করতে হবে। ভরা বর্ষায় লোকজন সাঁতার কেটে বিমানবন্দরে গিয়ে উঠবে। এতে করে তাদের শরীর স্বাস্থ্য ভাল থাকবে। যারা সাঁতার জানেন না তারা নৌকায় করে বিল পাড়ি দিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন। এতে করে নৌকার উপর নির্ভরশীলতা বাড়বে ফলে নির্বাচনের মৌসুমে নৌকা মার্কায় বেশি ভোট পড়বে।

বঙ্গবন্ধুর জন্য আগেভাগেই করুনা হচ্ছে। মন খারাপ


কাকস্য পরিবেদনা

দিনমজুর [অতিথি] এর ছবি

সচল জাহিদ কে বিষয়টি নিয়ে চমতকার আলোচনা করার জন্য ধন্যবাদ। বিমান বন্দরের নামে আড়িয়াল বিলে এই রাষ্ট্রীয় ভুমি আগ্রাসন নিয়ে আমাদের লেখাটিপড়ার আহবান রইল:

http://www.somewhereinblog.net/blog/dinmojurblog/29299697

সচল জাহিদ এর ছবি

এই লেখাটির হালনাগাদ সংস্করণ আজ (৫ জানুয়ারী, ২০১১) কালের কন্ঠে প্রকাশিত হয়েছে। সচলায়তনের সকল লেখক ও পাঠক যারা এই পোষ্টে আলোচনায় অংশগ্রহন করেছেন তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপণ করছি লেখাটিতে ইতিবাচক মন্তব্য প্রদান করে সমৃদ্ধ করার জন্য (পত্রিকায় প্রকাশিত লেখাতেও সচলায়তনের লেখক ও পাঠকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে)


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

খালেদ এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।