হেলিকপ্টারে খুব নিচু দিয়ে পরিভ্রমণকালে টিপাইমুখে কোনো অবকাঠামো প্রতিনিধি দলের দৃষ্টিগোচর হয়নি। প্রকল্পের ভাটিতে কোনো ব্যারাজ বা অবকাঠামো নির্মাণের কোনো রকম প্রস্তুতিও পরিলক্ষিত হয়নি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এখনো কোনো প্রাথমিক ভৌত কার্যাদি শুরু হয়নি [১]।
সুতরাং আর কি, নিশ্চিন্ত থাক। তা ছাড়া ভারত সরকার তো বলেছিলই, তারা এমন কিছু করবে না যাতে বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়। ঠিক একই রকম আশ্বাস আমরা পরবর্তীতেও পেয়েছি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর কিংবা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময়।এখানে উল্লেখ্য যে ঠিক একই রকম আশ্বাস ফারাক্কা ব্যারাজের সময়ও তারা দিয়েছিল। সুতরাং 'নো চিন্তা ডু ফুর্তি'। আমরা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম টিপাইমুখের কথা। গতবছর (২০১০ সালে) একটি লেখাতে আমি উল্লেখ করেছিলাম,
আমি দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি টিপাইমুখ বাঁধ বাস্তবায়িত হচ্ছে আর সেইসঙ্গে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য গিয়ে পড়ছে টিপাইমুখের বাঁধ রুল কার্ভের ওপর। আমরা আবার দৌড়াদৌড়ি শুরু করব যখন বাঁধ আমাদের ওপর খড়গ হয়ে পুরো বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। এ কথা সত্য যে এত বড় পরিকল্পনা করে ভারত টিপাইমুখের বাস্তবায়ন আজ বা কাল করবেই। কিন্তু তাতে বাংলাদেশের স্বার্থও যাতে রক্ষিত হয়, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কিন্তু আমাদেরই। কিন্তু আমরা কি আদৌ সেই বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছি নাকি 'বাংলাদেশের স্বার্থ বিঘ্নিত হবে না' এই জাতীয় অবৈজ্ঞানিক আশ্বাসে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছি, সেটা এই মুহূর্তে জনমানসে পরিষ্কার নয় [২]।
এই আশঙ্কা সত্যি হোক সেটা কখনো চাইনি কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে সেটিই বাস্তবিক। গুরুত্ত্বপূর্ন কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের ( বিবিসি, দি হিন্দু, হাইড্রোওয়ার্ল্ড.কম, প্রথম আলো, দি ডেইলী ষ্টার) ভিত্তিতে আমরা জানতে পারছি যে টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ভারতের রাষ্ট্রয়াত্ত্ব জলবিদ্যুৎ সংস্থা ( NHPC Limited); ভারত সরকার ও হিমাচল প্রদেশের সমন্বয়ে গড়া Satluj Jal Vidyut Nigam Limited (SJVN Ltd ); ও মনীপুর সরকারের মধ্যে একটি যৌথ সংস্থা গঠনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে যাতে NHPC, SJVN Limited ও মনীপুর সরকারের যথাক্রমে শতকরা ৬৯ ভাগ, ২৬ ভাগ ও ৫ ভাগ অংশীদ্বারত্ত্ব থাকবে। NHPC এর ওয়েবসাইটেই এই চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে [৩]।
সংবাদ মাধ্যমগুলোর ভিত্তিতে এই প্রসংগে মণিপুর সরকারের মুখপাত্র ও রাজ্যের সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রী এন বীরেন সিং এর উক্তি উল্লেখযোগ্যঃ
সরকারের নীতি খুবই পরিস্কার, টিপাইমুখ প্রকল্প হবেই। কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায়, বিশেষত উত্তরপূর্ব ভারত উন্নয়ন দপ্তর এর জন্য টাকা দেবে।
অর্থাৎ ধরেই নেয়া যায় যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের অশনি সংকেত শুনতে পাচ্ছি আমরা। কিন্তু আসলে কি আছে এই প্রকল্পে?
বারাক নদী থেকে পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের ধারনা আসে মূলত বন্যা নিয়ন্ত্রনের চাহিদা থেকেই। বাঁধ তৈরীর জন্য মাইনাধর, ভুবনধর ও নারাইনধর নামক আরো তিনটি প্রস্তাবিত স্থান প্রকৌশলগত কারনে বাতিল হয়ে যাওয়ায় ১৯৭৪ সালে টিপাইমুখ বাঁধের চুড়ান্ত স্থান হিসেবে নির্ধারিত যা কিনা তুইভাই নদী ও বরাক নদীর সঙ্গমস্থল থেকে ৫০০ মিটার ভাটিতে এবং বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ২০০ কিমি উজানে। নির্মিতব্য ১৬২.৮ মিটার উচত এই বাঁধটি একটি রকফিল ড্যাম অর্থ্যাৎ নদীর প্রবাহকে গ্রানুলার (দানাদার) মাটি দিয়ে ভরাট করা হবে এবং পানির প্রবাহকে এক বা একাধিক পানি অভেদ্য স্তর ( যেমন স্টীল পাইল বা কনক্রীট, বা প্লাস্টিক পর্দা) দিয়ে রোধ করা হবে।এতে নুন্যতম বিদ্যুৎ উৎপাদন ৪৩৪ মেগাওয়াট তবে সর্বোচ্চ ১৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের ব্যবস্থা রাখা হবে।উল্লেখ্য যে বাঁধের কারনে সৃষ্ট জলাধারের ফলে প্লাবিত এলাকা প্রায় ৩০০ বর্গকিলোমিটার যার প্রায় শতকরা ৯৫ ভাগই মনিপূর রাজ্যের আর বাকী ৫ ভাগ মিজোরাম রাজ্যের।ভারত সরকারের তথ্য মতে এই প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষদের উন্নয়নের পথে নিয়ে আসা যাবে, এটি বন্যা নিয়ন্ত্রন করবে যা বাৎসরিক ৪৫ কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতি রোধ করবে, এই প্রকল্প থেকে ৯৫ কিলোমিটার ভাটিতে ফুলেরতল ব্যারেজ নির্মানের প্রস্তাব রয়েছে যা পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ছেড়ে দেয়া পানিকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ১,২০,৩৩৭ হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় নিয়ে আসবে, প্রকল্পের ফলে সৃষ্ট কৃত্রিম হ্রদে মৎস্য চাষের মাধ্যেমে বার্ষিক আয় হবে ১৪ কোটি রুপি, প্রকল্প এলাকা একটি উৎকৃষ্ট পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে, সৃষ্ট হ্রদ উজানের এলাকার মানুষদের নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করবে সেই সাথে প্রকল্পের ফলে বছরের বিভিন্ন সময় নদীর পানির গভীরতার উঠা নামা কমে যাওয়ায় কলকাতা বন্দর থেকে বাংলাদেশ হয়ে শীলচর পর্যন্ত পন্য পরিবহণের সম্ভাব্যতা দেখা যাবে।
এই প্রকল্পের ফলে বাংলাদেশে যে ভয়াবহ প্রভাব পড়বে সেটি নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা হয়েছে [৪]। তার ভিত্তিতে বলা যায়ঃ
প্রিয় পাঠক এখন উপরের আলোচনার আলোকে এটি কি প্রতীয়মান হয়না যে টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের জন্য বিপুল পরিমান সমস্যার সৃষ্টি করবে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘ মেয়াদী সময়কালে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের আপত্তির মুখেও ভারত সরকার এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের দিকে যাচ্ছে, যদিও একই সাথে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবেই বলে যাচ্ছে যে এই প্রকল্পে বাংলাদেশের ক্ষতি যেন না হয় সেদিকটা তারা দেখবে, সেক্ষেত্রে এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার কি নিশ্চিত হয়েছে (!) যে এতে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবেনা? সেটি কিসের ভিত্তিতে? সেটির সাথে বাংলাদেশ কি সংশ্লিষ্ট ?
এখানে আরেকটি বিষয় গুরুত্ত্বপূর্ন আর তাহচ্ছে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সংসদীয় কমিটির ভারত সফরের পরে পানিসম্পদ মন্ত্রনালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেছিলেন,
টিপাইমুখ বাঁধটি যদি সেচ প্রকল্প হয় তাহলে তা অবশ্যই ক্ষতিকর হবে, এর বিরোধিতা জাতীয়ভাবে করা উচিৎ। কিন্তু বিদ্যুৎ প্রকল্প হলে আরো সমীক্ষা চালিয়ে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে।
অর্থাৎ বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের এমন একটি ধারনা হয়েছে যে সেচ প্রকল্প না হলে সেটি বাংলাদেশের জন্য কম ক্ষতিকর হবে। কিন্তু আদতে তা সত্য নয় যা উপরের আলোচনা থেকে প্রয়ীয়মান। আমাদের সংসদীয় কমিটি কি সেই পথেই হাঁটছে না যে পথে ভারত হাঁটাতে চাইছে।
এই পরিস্থিতিতে আমরা চাইঃ
উল্লেখ্য যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের সংবিধির ৩৮ ধারা অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক বা আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক যেকোন চুক্তি আনর্জাতিক আইনের উৎস। এই বিচারে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতে সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা চুক্তি একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের চুক্তি ( Vienna Convention on the Law of Treaties 1969) এবং এই দুই দেশের জন্য আন্তর্জাতিক আইন যা কিনা ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেনে চলতে দুই দেশই বাধ্য। গঙ্গাচুক্তির অনুচ্ছেদ ৯ তে স্পষ্ট বলা আছেঃ
পক্ষপাত বিহীন ও সাম্যতা প্রসুত এবং কোন পক্ষেরই ক্ষতি না করে দুই সরকারই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহমান অন্যান্য আন্তসীমান্ত নদীসমুহের চুক্তির ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে উপনীত হবার ব্যাপারে একমত
অর্থাৎ এই চুক্তি অনুযায়ী আমরা গঙ্গা ছাড়াও অন্য আন্তঃসীমান্ত নদী যেমন বরাক নদীর ক্ষেত্রে "সাম্যতা" ও " কোন পক্ষেরই ক্ষতি" এই দু'টি পয়েন্টের ভিত্তিতে আইনের আশ্রয় নিতে পারি। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দল যদি প্রমান করতে পারে টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে ও সাম্যতা বিনষ্ট হচ্ছে তাহলে তার পরেও টিপাইমুখ বাঁধ করতে গেলে তা গঙ্গাচুক্তি ভঙ্গের কারন হবে।
১) বিবিসির তথ্য মতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহি:প্রচার অনুবিভাগের মহাপরিচালক শামীম আহসান বলেছেন,
টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ প্রশ্নে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশন ভারত সরকারের সাথে যোগাযোগ রাখছে। ভারত সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পুনরায় নিশ্চিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকারক কিছু ভারত হবে না। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে তারা বিষয়টি নিয়ে ভারতের জাতীয় জলবিদ্যুৎ করপোরেশনের সাথে যোগাযোগ রাখছেন এবং সোমবার নাগাদ এবিষয়ে তারা আরো তথ্য জানাতে পারবেন।
২) প্রথম আলোর সংবাদ মতে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক এ করিম বলেছেন,
টিপাইমুখ প্রকল্পের ব্যাপারে আমরা ভারতের কাছে তথ্য জানতে চেয়েছি।
৩) প্রথম আলোর সংবাদ মতে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সংসদীয় কমিটির সফরকারী দলের অন্যতম সদস্য সাংসদ আবদুর রহমান বলেছেন,
টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ সম্পর্কে আমাদের অবহিত করা হয়েছিল এবং আমরা সেটি সরেজমিনে দেখেছিলামও। সেই অবধি কোনো স্থাপনা সেখানে নির্মিত হয়নি। আরও সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাই করে তারা তাদের এ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল। বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে। প্রতিনিধিদলে আমাদের কারিগরি কমিটি ছিল, তারাও সে জিনিসটি তাদের কাছ থেকে বুঝেছে যে ওখানে বাঁধ বা ড্যাম নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশ বরং উপকৃত হবে। কারণ বর্ষা মৌসুমে যখন পানি থাকবে, তখন বাংলাদেশ প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা পাবে এবং যখন শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকবে না, তখন বাংলাদেশ পানি সেখান থেকে পাবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ বরং সংরক্ষিতই হবে।
এই বক্তব্যে কারিগরী কমিটির সম্পর্কে যে উক্তিটি করা হয়েছে তা ভয়াবহ মনে হচ্ছে। আমার জানামতে কারিগরী কমিটিতে ছিলেন অধ্যাপক মনোয়ার হোসেন।ডঃ হোসেন ব্যাক্তিগত জীবনে আমার শিক্ষক, প্রাক্তন সহকর্মী এবং আমার স্নাতকোত্তর গবেষণা (এম আস সি) সুপারভাইজার। ইতিপূর্বে একটি লেখায় আমি উল্লেখ করেছিলাম যে এখন পর্যন্ত এই সফর সংক্রান্ত বিষয়ে মনোয়ার সারের কোন বিবৃতি দেখিনি । তবে এই সফরের পূর্বে ১২ জুন ২০০৯ সাপ্তাহিক ২০০০ এ এক সাক্ষাৎকারে তিনি কয়েকটি মন্তব্য করেছিলেন,
" যেহেতু জলাধারে পানি সংরক্ষণ করা হবে তাই এর কিছু প্রভাব ভাটিতে পড়বে। তবে সেই প্রভাব টিপাইমুখ পানি বিদ্যু্ৎ প্রকল্পের সারপ্লাস বিদ্যুৎ বাংলাদেশ ব্যবহারের মাধ্যমে পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে" ( ভিন্নচিন্তা, সামহোয়ার ইন ব্লগ, ২০ জুলাই)
উল্লেখ্য যে সারপ্লাস বিদ্যুতের প্রসংগে বা তা বাংলাদেশে বিতরনের বা ব্যবহারের প্রসংগের ভারতের কোন বিবৃতি বা প্রস্তাব কখনো চোখে পড়েনি, সেক্ষেত্রে এই ধরনের বক্তব্য এই প্রকল্পের প্রসংগে বাংলাদেশের অবস্থানকে বিতর্কিত করতে পারে।সাংসদ আবদুর রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্য সেই আশঙ্কাকে আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে বলে আমার ব্যাক্তিগত অভিমত।
৪) বাংলাদেশ সরকারের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান মন্তব্য করেন যে,
‘টিপাইমুখ বাঁধ নির্মান ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয় (ইটিভি, ২০ নভেম্বর, ২০১১; ডয়েচ ভেল, ২১ নভেম্বর ২০১১)’।
তিনি তুলনা করে বলেন যে,
‘গড়াই নদীর খনন যেমন আমাদের (বাংলাদেশের) নিজস্ব ব্যাপার তেমনি টিপাইমুখ বাঁধ ভারতের অভ্যন্তরীন ব্যাপার।’
কিন্তু মাননীয় মন্ত্রী আসলেই কি টিপাইমুখ বাঁধ নির্মান ভারতের অভ্যন্তরীন বিষয়? আবেগ নয় বরং যুক্তি দিয়েই আপনার মন্তব্যের উত্তর দেইঃ
নৌচলাচল ব্যাতিরেকে আন্তর্জাতিক নদী সমূহের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের কনভেনশন [৭] মতে, ‘আন্তর্জাতিক নদী বলতে বোঝায় সেই সকল নদী যা একাধিক রাষ্টের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান’ (ধারা ২বি)। সেই বিচারে বারাক নদী একটি আন্তর্জাতিক নদী। এই নদীতে বাঁধ নির্মান হলে তার প্রভাব ভাটিতে অর্থাৎ বাংলাদেশে পড়বে। জাতিসংঘের কনভেনশনে স্পষ্ট উল্লেখ আছে যে, ‘আন্তর্জাতিক নদী সমুহের অংশীদার রাষ্ট্রসমূহ ঐ নদীসমুহের ব্যবহারে এই মর্মে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবে যেন তা অন্য দেশের উল্লেখযোগ্য পরিমানে ক্ষতির কারন না হয়’ (ধারা ৭ এর ১)। উল্লেখ্য যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের সংবিধির ৩৮ ধারা অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক বা আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক যেকোন চুক্তি আন্তর্জাতিক আইনের উৎস। এই বিচারে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতে সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা চুক্তি একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের চুক্তি এবং এই দুই দেশের জন্য আন্তর্জাতিক আইন । যেহেতু গঙ্গাচুক্তির অনুচ্ছেদ ৯ তে স্পষ্ট বলা আছে যে, ‘পক্ষপাত বিহীন ও সাম্যতা প্রসুত এবং কোন পক্ষেরই ক্ষতি না করে দুই সরকারই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহমান অন্যান্য আন্তসীমান্ত নদীসমুহের চুক্তির ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে উপনীত হবার ব্যাপারে একমত’ এবং যেহেতু টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে ও সাম্যতা বিনষ্ট হচ্ছে সেহেতু তা গঙ্গাচুক্তি ভঙ্গের কারন হবে এবং প্রকারান্তরে তা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী হবে।সুতরাং একথা প্রতীয়মান হয় যে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মান কোন মতেই ভারতের অভ্যান্তরীন বিষয় নয় বরং তা ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং বংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পরিমান ক্ষতি সাধন করে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী।
৫) টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্বেগ প্রকাশের প্রতিউত্তরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে যে টিপাইমুখ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে বাঁধ নির্মিত হলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না। সেই সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয় যে, বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রকল্পটিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকবে, কিন্তু সেচকাজের জন্য নদীর গতিপথ পাল্টে দেওয়া হবে না। [৮]
এখানে কয়েকটি বিষয় গুরুত্ত্বপূর্নঃ
প্রথমতঃ কিসের ভিত্তিতে ভারত জানাচ্ছে যে এই প্রকল্পে বাংলাদেশের ক্ষতি হবেনা? এই প্রকল্পের জন্য ভাটিতে বিশেষত বাংলাদেশের নৃতাত্ত্বিক, পরিবেশগত ও বাস্তুতান্ত্রিক কি পরিবর্তন হবে সেই বিষয়ক কোন গবেষণা বা নিদেনপক্ষে কোন কেইস স্টাডিও হয়নি ভারতের পক্ষ থেকে। সুতরাং শুধু প্রযুক্তিগত কোন তথ্য ব্যাতিরেকে ঢালাও ভাবে এই প্রকল্পে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি হবেনা সেটা মেনে নেয়া অবাস্তব এবং অবান্তর। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ এখনই এই প্রতিবাদ জানানো।
দ্বিতীয়তঃ বাংলাদেশ সরকার শুধু উদ্বেগ প্রকাশ না করে এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রভাব কেন চোখে আঙ্গল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেনা।
তৃতীয়তঃ বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিদের বক্তব্যে এমনটি মনে হচ্ছে যে তারা মনে করেন যে এই প্রকল্পে সেচের জন্য ব্যারেজ নির্মান না করে শুধু বাঁধ হলে তা তেমন ক্ষতি হবেনা। সেই একই সুর পাওয়া যাচ্ছে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রনারনালয়ের মুখপাত্রের কথায়। কিন্তু এটি একটি ভ্রান্ত ও অযৌক্তিক মতামত। এই লেখাতে বাংলাদেশে টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব পরিচ্ছেদটি লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সেখানে এই বাঁধের বাংলাদেশে প্রভাবের যে নয়টি পয়েন্ট আলোচনা করা হয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে ফুলেলতল ব্যারেজ সম্পর্কিত, বাকী আটটিই হচ্ছে বাঁধ সম্পর্কিত। সুতরাং এই যুক্তি অসাড় ও বিভ্রান্তিমূলক।
৬) টিপাইমুখের প্রকল্প নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সংবাদ সম্মেলনে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ( সর্বশেষ সংযোজন ৫ দ্রষ্টব্য) আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকারের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। আমি বিজ্ঞপ্তিটির [৯] গুরুত্ত্বপূর্ন অংশ নিচে দিচ্ছিঃ
... Dhaka has also noted the Press Briefing issued by the Ministry External Affairs of India today which clarified that the proposed project is designed to be "a hydro-electric project with provision to control floods". As such, this project would not involve any diversion of water e.g. for irrigation purposes....In keeping with the letter and spirit of the assurances at the highest level, Bangladesh, as a co-riparian country, would like to underscore the need for prior consultation before initiating any intervention on common rivers like the Barak.
Given the most cordial relations existing between the two countries, Bangladesh would hope that the Government of India would share all relevant details of the proposed Project in full transparency and also about any further step that it may take in connection with the project. This would be critical in avoiding any gap in understanding or allay concerns in Bangladesh.
অর্থাৎ বাংলাদেশ মনে করে যে টিপাইমুখের প্রস্তাবিত প্রকল্প নিয়ে কোনো ধরনের উদ্বেগ ও ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে ভারতের উচিৎ ছিল স্বচ্ছতার সঙ্গে বাংলাদেশকে তথ্য দেয়া। আর ভাটির দেশ হিসেবে বরাকসহ যেকোনো নদীতে কোনো অবকাঠামো তৈরির আগে বাংলাদেশকে আগে জানানোটা জরুরি।সেই সাথে বাংলাদেশ এটাও মনে করে যে এই প্রকল্পের বিষয়ে পরবর্তী কোন পদক্ষেপে বাংলাদেশকে অবহিত করার প্রয়োজন রয়েছে।
উল্লেখ্য যে এই প্রেস রিলিজেও বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রকল্পে বাংলাদেশের প্রভাব বা ক্ষতিকর দিক নিয়ে কোন বক্তব্য দেয়নি বা আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতকে তা খতিয়ে দেখার বা এই বিষয়ে যৌথ গবেষনার কোন প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেনি। সরকারের এই অবস্থান দুঃখজজনক।
৭) বাংলাদেশের পরররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে [১০] টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে কিছু কথা বলেছেন। তার উক্তি সেই সাথে তার যুক্তি খন্ডন নিচে করছিঃ
“When we talk with Nepal and Bhutan about a dam twice the size of the Tipaimukh (dam), nobody objects to it, but criticism arises in the cases of Tipaimukh”
মাননীয় মন্ত্রী আপনি সঠিক, মানুষ প্রতিবাদ করেনি বরং আমাদের বিশেষজ্ঞরা সেটাই চেয়েছিল। সেই সাথে এটাও সবার জানা উচিত যে বাংলাদেশের সেই প্রস্তাব কিন্তু ভারত সমর্থন করেনি। করলে গঙ্গাচুক্তি হতো ১৯৭৪/৭৫ সালেই। আপনার জ্ঞাতার্থে এই নিয়ে আরো দু'কলম লিখিঃ
গঙ্গা চুক্তির আপস আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে (১৯৭৪-১৯৭৬) যেহেতু গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ের সমস্যার উৎপত্তি হয় তাই এই পর্যায়ে ‘গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির’ বিষয়টি সামনে আনা হয়। বাংলাদেশ প্রস্থাব করে যে ভারত বর্ষা মৌসুমের বিপুল পরিমান পানিকে উজানের জলাধারে (ভারতে না নেপালে) সঞ্চিত করে তা শুস্ক মৌসুমে ব্যাবহার করতে পারে, অন্যদিকে ভারত একটি সংযোগ খালের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র (বাংলাদেশে যমুনার উজানে মূল নদীটির নাম ব্রহ্মপুত্র) থেকে বিপুল পরিমান পানি গঙ্গায় নিয়ে আসার প্রস্তাব করে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন বিশেষজ্ঞরা বাঁধ করতে চেয়েছিল উজানে? কারন তারা চেয়েছিল যেন তাতে শুষ্ক মৌসুমে গঙ্গায় পানি বৃদ্ধি পায় এবং সেই বর্ধিত পানি ভারত প্রত্যাহার করতে পারে ফলে বাংলাদেশকে আর পানিবিহীন থাকতে হয়না শীতকালে। আর তাছাড়া এখানে একটি জিনিস বলে নেয়া ভাল যে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ আর জলবিদ্যুৎ বাঁধ এক জিনিস নয়। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ দিয়ে দুই ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রন করা যায়, প্রথমতঃ বাঁধের নিচে একটা সুড়ংগ (স্লুইস ওয়ে) থাকবে যার ধারন ক্ষমতা হবে ভাটির নদীর সর্বোচ্চ পরিবহন ক্ষমতার সমান। ফলে স্বাভাবিক ভাবে বাঁধের উজানে ততটুকু পানিই জমবে যতটুকু পানি ভাটির নদীর পরিবহন ক্ষমতার থেকে বেশী। এক্ষেত্রে মোটামুটি ভাটির নদীর স্বাভাবিক হাইডোগ্রাফ একই রকম থাকে শুধু মাত্র পিক প্রবাহ বন্যার সময় সেটি ধ্রুবক হয়ে যায়, আরে দ্বিতীয়তঃ বাঁধের সাথে গেইটেড স্পিলওয়ে/স্লুইস গেইট থাকবে যা দিয়ে ভাটিতে কতটুকু পানি যাবে তা নির্ধারণ করা যায়। এক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে পানি সঞ্চয় করা হবে এবং তা দিয়ে সারাবছর একটি মোটামুটি গড় প্রবাহ সরবরাহ করা হয়। প্রথম প্রকারের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হবে কারন এক্ষেত্রে পানির প্রবাহ আসলে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে আসলে ভাটির অঞ্চলের পরিবহন ক্ষমতার দ্বারা কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে তা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিৎ আসলে উৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমানের দ্বারা কারন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন নিরবিচ্ছিন বা ধ্রুব প্রবাহ।দ্বিতীয় প্রকারের বাঁধের ক্ষেত্র আসলে বিদুৎ উৎপাদনের জন্য আদর্শ। বাংলাদেশ চেয়েছিল প্রথমটি। আর টিপাইমুখ প্রকল্প হচ্ছে দ্বিতীয়টি।
“The criticism is not correct at all, it is completely motivated. Those who make such criticism turn a blind eye to reality. ...Bangladesh trusts in the assurance given by the India’s highest leadership about the Tipaimukh dam project. ”
মাননীয় মন্ত্রী আমি যদি বলি, 'কোন কিছু স্টাডি না করে টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের কো্ন ক্ষতি করবেনা' এই আশ্বাসে আশ্বস্ত থাকা বরং অধিক অবাস্তবিক বা আপনার ভাষায় অন্ধবিশ্বাস। উদাহরনসরূপ বলি, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের সাথে একটি অন্তর্বর্তীকালীন মতৈক্যের ( আপনার ভাষায় সর্বোচ্চ আশ্বাস এতে বাংলাদেশের ক্ষতি হবেনা) ভিত্তিতেই ব্যারেজের কার্যক্রম শুরু হয়।মতৈক্যটি কিছুটা এরকমঃ ভারত বিকল্প খাল দিয়ে ১১,০০০ থেকে ১৬,০০০ কিউসেক ( ১ কিউসেক=প্রতি সেকেন্ডে ১ ঘনফুট পানির প্রবাহ) পানি গঙ্গা থেকে অপসারন করবে আর বাকী প্রবাহ বাংলাদেশে চলে যাবে। এখানে উল্লেখ্য যে ফারাক্কা ব্যারেজ করার উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষা করা। এর জন্য গঙ্গা থেকে সংযোগ খাল দিয়ে পানি হুগলী নদীতে স্থানান্তর করা হয় যার নকশাকৃত ধারন ক্ষমতা ৪০,০০০ কিউসেক। এর কম যেকোন প্রবাহ ভারতের প্রয়োজনের তুলনায় কম। সুতরাং ভারত আমাদেরকে সর্বোচ্চ আশ্বস্ত করে পরীক্ষামূলক ভাবে মাত্র মাত্র ১১০০০ থেকে ১৬০০০ কিউসেক ভাইভার্ট করাকে রাজী করিয়ে নিল। আপনার জ্ঞাথার্থে বলছি, এই পরীক্ষামুলক পানিবন্টন মাত্র ৪১ দিন স্থায়ী হয়।১৯৭৬ সালে আগের মতৈক্যের নবায়ন না করে ভারত একতরফা ভাবে গঙ্গার পানি অপসারন করে যার ভয়াবহ প্রভাব পড়ে পদ্মানদী কেন্দ্রিক বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপর এবং একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৭৭ সালে। বাংলাদেশ বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপন করে এবং সাধারন পরিষদ এক্ষেত্রে একটি মতৈক্যের বিবৃতি দেয় যার ফলশ্রুতিতে বিষয়টির একটি সুষ্ঠূ সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও ভারত ঢাকাতে মন্ত্রীপরিষদ পর্যায়ের বৈঠকের ব্যাপারে একমত হয়।
সরকারের কারিগরী কমিটির মতে টিপাইমুখ বাঁধ হলে বাংলাদেশের উপকার হবে দুই ক্ষেত্রে, একঃ বর্ষা মৌসুমে বন্যার প্রকোপ কমবে, দুইঃ শুষ্ক মৌসুমে অধিক পানি পাবে। আমি এই দুই যুক্তিরই খন্ডন [৪] করছি নিচেঃ
প্রথমতঃ বন্যা আসলে কি কমবে ?
বরাক নদীর ভাটির দিকের অঞ্চল সিলেটের হাওড় এলাকায় বর্ষার শুরুতে আগাম বন্যা হয় আবার বর্ষার শেষের দিকে পানি কমে আসে।টিপাইমুখ বাঁধ নির্মানের পর বর্ষার শুরুতে রিজার্ভারে পানি ধরে রাখার প্রয়োজন পড়বে আবার বর্ষার শেষের দিকে পানি ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। এর ফলে বর্ষার শুরুতে বন্যা কমে আসতে পারে আবার বর্ষার শেষে বন্যার প্রকোপ বাড়তে পারে।এর প্রভাব বাংলাদেশের উপরেও পড়বে [৫]। অর্থাৎ বন্যা মুক্ত হবার যে কথা বলা হচ্ছে তা পুরোপুরি সঠিক নয়, যেটি হতে পারে তা হলো বন্যার স্বাভাবিক সময় পরিবর্তিত হতে পারে।
এছাড়া এই লেখাতেই উল্লেখ করেছি যে বাঁধের কারনে এর উজানে জলাধারে সব পলি সঞ্চিত হবে, ফলে যে পানি ভাটিতে আসবে তাকে এক কথায় বলা যায় "রাক্ষুসী পানি"। এই পানি পলিমুক্ত বলে এর পলিধারন ক্ষমতা অনেক বেশী আর তাই এটি বাঁধের ভাটিতে ১০০ থেকে ১৫০ কিমি ব্যাপী ব্যাপক নদী ক্ষয়ের সৃষ্টি করবে।বাংলাদেশ বাঁধের ২০০ কিমি ভাটিতে থাকায় এই বিপুল পরিমান পলি বরাক নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। কিন্তু পানির প্রবাহ তুলনামূলক ভাবে কমে যাওয়ায় পলি বহন করার ক্ষমতা কমে যাবে, এবং তা সুরমা ও কুশিয়ারার বুকে জমা হবে। এতে নদীর নাব্যতা ও গভীরতা হ্রাস পাবে। সেক্ষেত্রে আগে যেটা স্বাভাবিক বর্ষাকালীন প্রবাহ ছিল প্রকারান্তরে তা বন্যা আকারে আসতে পারে এই এলাকায়।
আর যদি ধরেই নেই যে বাঁধের ফলে সিলেট আর মৌলভীবাজার এলাকা বন্যামুক্ত হবে সেখানেও প্রশ্ন আসে, এই তথাকথিত বন্যামুক্ত হওয়া কতটা ইতিবাচক? এ প্রসংগে বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞ ডঃ জহির উদ্দীন চৌধুরীর বলেছিলেন[৬],
সাধারণভাবে আমরা ধরে নেই যে বন্যার সময় যদি পানি কমানো যায় এবং শুষ্ক মৌসুমে যখন পানির পরিমান কম থাকে তখন পানির সরবরাহ বাড়ানো যায় তা খুবই ভাল একটি বিষয়। সে বিবেচনা থেকেই ভারত টিপাইমুখ বাঁধের পেছনে তাদের যুক্তি হিসেবে এই বিষয়টি তুলে ধরেছে।কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের একটি অনন্য বৌশিষ্ট্য রয়েছে। এখানে রয়েছে বিশাল জলাভুমি ও অসংখ্য হাওড়। এর একটি নিজস্ব ইকোসিস্টেম রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে এখানে বর্ষার সময় পানি বাড়বে, বন্যা হবে ও শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকা শুকিয়ে যাবে, এর উপর ভিত্তি করেই সেখানকার ইকোসিস্টেম গড়ে উঠেছে। ফলে বন্যার পানি কমা বা শুষ্ক মৌসুমে পানি বেশী পাওয়ার যে আশ্বাস ভারত দিচ্ছে তা এই এলাকার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
দ্বিতীয়তঃ শুষ্ক মৌসুমে অধিক পানি কি ইতিবাচক
এ প্রসংগে এই লেখাতেই উল্লেখ করেছি যে, বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের এই হাওড়গুলি শুষ্ক মৌসুমে যখন শুকিয়ে যায় তখন কৃষকরা সেখানে বোরো ধান বপন করে যা এই অঞ্চলের একমাত্র ফসল। এই ধান বর্ষা আসার আগেই ঘরে উঠে যা এই লোক গুলির বছরের একমাত্র শর্করার যোগান দেয়।বাঁধের কারনে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ বেড়ে গেলে এই এলাকার চাষাবাদ ব্যহত হবার আশঙ্কা আছে। আর যদি ধরেও নেই যে এই বর্ধিত প্রবাহ চাষাবাদের জমিকে খুব বেশী প্লাবিত করবেনা সেক্ষেত্রেও প্রশ্ন থেকে যায়। এই জমিগুলো বন্যার সময় প্লাবিত হওয়ায় বিপুল পরিমান পলি জমে। এখন বর্ষা মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় তা আগের মত আর প্লাবিত হবেনা ফলে জমিগুলো তাদের উর্বরতা হারাবে।
বিদ্রঃ টিপাইমুখ বাঁধ ও বাংলাদেশের এর প্রভাব নিয়ে সচলায়তন থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে “টিপাইমুখ বাঁধ ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট” ই-বুক। এই ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য এই ইবুকটি ছড়িয়ে দেবার আহবান জানাচ্ছি সবাইকে। এই লিঙ্ক থেকে বইটি ডাওনলোড করা যাবে।
তথ্যসুত্রঃ
[১] প্রথম আলো, ৭ অক্টোবর ২০০৯
[২] মহামানবের অপেক্ষায় আমাদের দিনযাপন, দৈনিক কালের কন্ঠ, ৪ অগাষ্ট, ২০১০।
[৩] NHPC signs Promoter’s Agreement with SJVNL and Govt. of Manipur for implementation of 1500 MW Tipaimukh H.E (Multipurpose) Project in Manipur
[৪] টিপাইমুখ বাঁধ ও বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট, জাহিদুল ইসলাম, সচলায়তন প্রকাশনা।
[৫] ডঃ আইনুন নিশাত, ২৮ জুন ২০০৯, ‘দুই দেশেই টিপাইমুখ বাঁধের পরিবেশগত প্রভাবের জরিপ চালাতে হবে’, প্রথম আলোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার।
[৬] ডঃ জ়হির উদ্দিন চৌধুরী, ১২ জুলাই ২০০৯, ‘বরাক নদী থেকে পানি প্রত্যাহার করা হলে তা হবে বিপদ জনক’, প্রথম আলোকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকার।
[৭] UN Convention on the Law of the Non-navigational Uses of International Watercourses
[৮] টিপাইমুখ বাঁধে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না: ভারত
[৯] বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের প্রেস রিলিজ
[১০] Dipu Moni slams Tipai critics
ব্যাক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত।
মন্তব্য
টিপাইমুখ নিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এই বিশ্লেষণটির জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই বিষয়ে সমস্ত দেশের মানুষের; বিশেষত: সিলেট বিভাগের শিক্ষিত, সচেতন জনগোষ্ঠীর, উচ্চকিত হওয়া প্রয়োজন।
আপনার লেখাটি কি ফেসবুকে শেয়ার দিতে পারি।
শমশের ভাই, ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আপনি অবশ্যই লেখাটির লিঙ্ক ফেইসবুকে শেয়ার দিতে পারেন।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ধন্যবাদ জাহিদ ভাই।
দেশে-বিদেশে সবাই মিলে সরব হতে হবে।
কোন অবস্থাতেই আরেক ফারাক্কার ফাঁদে পা দেয়া যাবেনা।
দেশে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে ভারত সরকারকে বাধা দেওয়ার জন্য।
বিদেশে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে, কিংবা বিভিন্ন দেশে ভারতীয় দূতাবাসগুলোর সামনে প্রতিবাদ জানানো যেতে পারে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির জন্য।
আসুন সময় থাকতে সবাই সচকিত হই। দেশের স্বার্থে একবার রাজনৈতিক মতপার্থক্য ভুলে তীব্র প্রতিবাদ- প্রতিরোধ গড়ে তুলি। তা নাহলে সিলেট বিভাগ ভবিষ্যতে কারবালা হয়ে যাবে।
কাপ্তাই লেক সম্পর্কে জানার পর টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বিরোধিতা করুন
সূত্র প্রথম আলো ___ লেখক চিকন কালা
আমরা অনেকেই জানিনা টিপাইমুখ বাঁধ কি ও কোথায়। এ নিয়ে বিরোধীতা করার আগে হাইড্রলিক পাওয়ার প্লান্ট ও আমাদের দেশের কাপ্তাই লেক সম্পর্কে ভাল ধারনা রাখা জরুরী।
কাপ্তাই লেক হওয়ার আগে কর্নফুলি ও হালদা নদী শুকিয়ে যেত। কিন্তু হাইড্রলিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই লেক নির্মানের পর কাপ্তাই লেকে অতিরিক্ত পানি জমিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।
শীত কালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সে পানি ছাড়া হয় বলে কর্নফুলি ও হালদাতে শীত কালেও পানি থাকে। আর বর্ষা কালে কাপ্তাই এ অতিরিক্ত পানি ধরে রাখার সুবিধার জন্য বর্ষা কালে এই দুই নদীর উপকুলের মানুষেরা বন্যা থেকে রক্ষা পায়।
টিপাইমুখ বাঁধ আমাদের সিমান্ত থেকে এক শত কিলোমিটার দূরে, উঁচু পাহাড়ি স্থানে ভারতের মাটিতে অবস্থিত। ফারাক্কার মত পানি সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই এখানে। এখানে কাপ্তাই এর মত নির্দিষ্ট পরিমান পানি জমিয়ে রাখা সম্ভব। নির্দিষ্ট পরিমান পানির বেশী পানি আটকিয়ে রাখা যাবে না। সেখান থেকে নির্দিষ্ট ফিডার দিয়ে পানি ছেড়ে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই পানি জমিয়ে রাখবে।
বর্ষা ও শীত কালে বরাক, কুশিয়ারা নদীর সব পানি গড়িয়ে সমুদ্রে চলে যায়। বর্ষা কালে অতিরিক্ত পানি বন্যা সৃষ্টি করে আর শীত মৌসুমে বারাক, কুশিয়ারা, সুরমা প্রায় শুকিয়ে যায়।
ভারতীয়রা বর্ষা মৌশুমের পানি শীত মৌসুমের জন্য জমিয়ে রাখবে ও শীত কালে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সে পানি ছাড়তে বাধ্য হবে। এতে সুরমা, কুশিয়ারা ও কর্নফুলিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী পানি প্রবাহিত হবে। এটাই স্বাভাবিক।
চট্টগ্রামের মানুষকে প্রশ্ন করে জেনে নিন, কাপ্তাই লেক হওয়ার পর কর্নফুলি ও হালদা নদীর অববাহিকার মানুষের জন্য কোন উপকার হয়েছে কিনা।
তারপর টিপাই নিয়ে রাজনীতি করুন।
উহু ভুল বললেন, এই পোষ্টে ব্যাখা করা হয়েছে কোথায় টিপাইমুখ বাঁধ এবং সেটা কি। পাঠক এতটা বোকা নন।
কাপ্তাই লেক নিয়ে প্রশ্নের উত্তর নিচেও দিয়েছি আবারো দিলামঃ
একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ২০০ কিমি দূরে। বাঁধের ঠিক ভাটিতে নদী ক্ষয় হয় যেহেতু পলি সব উজানে জমে থাকে। সেই পলি আরো ভাটিতে এসে নদীতে জমে। ধারনা করা হয় টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রে প্রথম ১৫০ কিমি (এটি নির্ভর করে বাঁধের উচ্চতা, নদীর মাটির প্রকৃতি সহ আরো বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর) পর্যন্ত নদী ক্ষয় হবে আর তার পরে সেই পলি সঞ্চিত হবে ভাটিতে।
অন্যদিকে কাপ্তাই বাঁধ থেকে চট্রগ্রাম বন্দর প্রায় ৫০ কিমি দূরে। সেক্ষেত্রে নদীর এই অংশে পলি সঞ্চয় না বরং নদী ক্ষয়ই সংঘটিত হবে, ক্ষয়িত পলি মোহনায় সঞ্চিত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। যাই হোক ঠিক একারনেই কর্নফুলী নদীর এই অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের কারবে। এইবারে বোধ হয় বিষয়টি পরিষ্কার হবে আপনার কাছে।
এর নেতিবাচক প্রভাব পোষ্টে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আগে পড়ুন তারপর তর্কে আসুন।
এখানে কেউ রাজনীতি করছেনা। এই পোষ্টে রাজনৈতিক দলের কোন বিবৃতি বা তর্ক উল্লেখ করা হয়নাই। মনে রাখবেন সরকার একটি প্রতিষ্ঠান, কোন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ত্ব নয় সেটা। আমাদের সকল অভিযোগ, দাবী , পরামর্শ সরকারের জন্য কোন রাজনৈতিক দলের জন্য নয়।
আরেকটি কথা আপনার মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে আমরা বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনাধীন কোন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা করছি। মনে রাখবেন এই প্রকল্প ভারতের এবং ভারত শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র ভারতের স্বার্থ বিবেচনা করেই এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পে বাংলাদেশের লাভের দিক থাকলে এটি একটি যৌথ প্রকল্প হতো যেমনটা হচ্ছে ইছামতি নদীর ক্ষেত্রে। এই প্রকল্পে বাংলাদেশের কানাকড়িও লাভের আশা নেই, এবং নেই। অনেক বছর আগে যখন গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির জন্য উজানে ( ভারতে বা নেপালে) বাঁধ নির্মান করার প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ তখন ভারত তা প্রত্যাখ্যান করেছিল, বলতে দ্বিধা নেই এখনো তা করবে। সুতরাং ভারত কখনই বাংলাদেশের লাভের জন্য নিজের অর্থ খরচ করে কিছু করবেনা আর সেটা আশা করাও ঠিক নয়। এখন ভারত বাংলাদেশকে লাভের মুলা দেখিয়ে এই প্রকল্পে অনুমোদন করিয়ে নিতে চাচ্ছে যেমনটা করেছিল ফারাক্কার ক্ষেত্রে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এই লেখাটি সবাই ছড়িয়ে দিন। মা'কে বাঁচান।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কথাটা খুব ভাল লেগেছে রতন।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
সংসদীয় কমিটির কাছে এই কনসার্নগুলা পৌঁছায়া দেয়া দরকার। (আমি জানি তাদের শুনার/জানার/বুঝার ইচ্ছা থাকলে তারা শুনতেন/জানতেন/বুঝতেন।) কিন্তু আমাদের তরফ থেকেও এইটা একটা কাজ হইতে পারে। সচলায়তন, বিশেষত সচল জাহিদ টিপাইমুখের প্রসঙ্গটা যত সিরিয়াসলি কভার করছেন, ততটা আর কেউ করছে কিনা জানি। আসলে শুধু এই বিষয়েই না, আরো সব জরুরি বিষয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির কাছে পৌঁছানো যাইতে পারে। নিয়মিত। এইটা চাপ দেয়ার কেবল একটা ভোঁতা পদ্ধতি হইতে পারে, তবু।
রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক
ধন্যবাদ বস। ঠিক কিভাবে এই কনসার্ন গুলো সরকাকের কাছে পৌছানো যায় সে বিষয়ে কোন পরামর্শ আছে? আমি এই ইস্যু নিয়ে দৈনিক পত্রিকায় লিখেছিলাম গত বছর, জানিনা সরকারের নীতি নির্ধারকরা পত্রিকার কলাম দেখেন কিনা।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আপডেইটের জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। টিপাইমুখ নিয়ে যে কোন কথা বলার সময় আমি আপনার লেখাগুলোই রেফার করি সবসময়।
টিপাইমুখ নিয়ে সরকারের সাম্প্রতিক অবস্থান অস্পষ্ট। এই ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট বিবৃতি আসা উচিত।
পাঠক, আসুন এই লেখাটা সবাই মিলে ছড়িয়ে দেই, শেয়ার করি।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ ফাহিম। সরকারের অন্তত এই সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপটে একটি বিবৃতি দেয়া উচিৎ।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও ধন্যবাদ রু।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভারত সরকারের আশ্বাস এবং সেই আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমাদের সরকারের প্রতিক্রিয়া দেখলে একটা পুরনো বাংলা সিনেমার গানের কথা মনে হয়, আপায় কইসে আমারে বাল্যশিক্ষা কিনা দিবে ♪♫♪♫☺♪♪♫... ।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভালো লাগল ভাইয়া। আমার গ্রামের বাড়ী ভাটিতে। টিপাইমুখ বাঁধ হলে ওই এলাকার অবস্থা কী হবে ভাবতেই খারাপ লাগে। আমাদের সরকারকে স্পষ্ট ভাবে জানাতে হবে এই ব্যাপারে তাদের অবস্থান কী। যদি তারা মনে করে তারা কোন কার্যকর প্রতিবাদ জানাবে না, তাহলে তাদের দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার ব্যাপারে জনগণ পরিস্কার ধারণা পাবে। তখন এই সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার দরকার নেই। গ্রহণযোগ্য বিকল্প একটাই, এর বিরুদ্ধে কার্যকর কিছু করতে হবে। বন্ধুত্বের খেতা পুড়ে দরকারে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। সোজা কথা এখন আর সরকারের নীরব থাকার কোন উপায় নেই।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ধন্যবাদ সজল। এই বাঁধ নিয়ে খোদ ভারতেই রয়েছে প্রতিবাদ, বিশেষত বাঁধের উজানে যেখানে জলাধার হবে সেই এলাকার পরিবেশ বিপর্যয় ঘটবে। আর ভাটিতে বিশেষত ঐ অঞ্চলের হাওড়ভিত্তিক বাস্তুসংস্থান পুরোপুরি বিপর্যস্ত হবে, সেই সাথে ঐ অঞ্চলের নৃতাত্ত্বিক পরিবর্তনও উল্লেখযোগ্য পরিমানে হবে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এখনো পর্যন্ত টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের যা কিছু কর্মকাণ্ড (চুপ করে থাকাটাও এর অন্তর্ভূক্ত) তার কোনটাই ভারতের স্বার্থের বিরুদ্ধে যায়নি। আমি বাংলাদেশকে ভারতের বিরুদ্ধে যেতে বলছি না, বরং আমি বাংলাদেশকে নিজের স্বার্থের সপক্ষে সক্রিয় ও সোচ্চার হতে বলছি। ভারত সংক্রান্ত নানা ইস্যুতে অতীতের সরকারগুলো যা আচরণ করেছে তাতে টিপাইমুখ বাঁধ সংক্রান্ত ব্যাপারে বাংলাদেশ কী করবে সেটা বোঝার জন্য বিরাট জ্ঞানী হবার দরকার নেই। এই ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দেবার জন্য বিরাট মাপের আন্দোলন প্রয়োজন। সে উদ্যোগ যে কোন রাজনৈতিক দল নেবে না সেটা বলাই বাহুল্য। তবে তাই বলে থেমে থাকলে চলবে না। উদ্যোগের পরিণতি যা-ই হোক নিজের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকার জন্যই টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যুতে আমাদেরই এগিয়ে আসতে হবে।
খুবই ইন্টারেস্টিং বিষয়। ভারতের ধনী রাজ্যগুলো এখন পশ্চাতপদ রাজ্যগুলোতে বিনিয়োগ করা শুরু করেছে। কিন্তু লাভের ভাগের হিসাবটা অনেকটা বাংলাদেশে বা দক্ষিণ সুদানে বিদেশী তেল-গ্যাস কোম্পানীগুলোর সাথে সম্পাদিত চুক্তিগুলোর মত। মণিপুরের মতো ছোট একটা রাজ্যের প্রায় তিনশ' কিলোমিটার পানির নিচে তলিয়ে যাবে অথচ তারা পাবে ৫%। প্রস্তাবিত সেচ সুবিধার প্রায় পুরোটাই পাবে অসম, সেখানেও মণিপুরের কপালে ঢুঁ ঢুঁ।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
অংশীদারত্ত্বের অনুপাত দেখে আমার মনেও একই প্রশ্ন জেগেছিল। আরেকটি বিষয় আমার কাছে পরিষ্কার নয়। শুরুতে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল নেপকোর ( North Eastern Electric Power Company Limited, NEPCO)। কিন্তু কেন সেখন সেটি অন্য প্রতিষ্ঠানের হাতে যাচ্ছে তার কোণ ব্যাখ্যা আমি দেখিনি।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমরা এমন একটা আজব জাতি কেন?
সাগরসমতল উঠে এসে বাংলাদেশ ডুবে যাবে, এ নিয়ে আমাদের সরকারের লোকজন প্রচুর চিল্লামিল্লি করতেছে কিন্তু। ঐদিকে বরাকে বাঁধ দিলে যে শুকায়া মরবো, সেইটা নিয়ে কারো তেমন কোনো দৃষ্টিগ্রাহ্য প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। সরকারে গেলে লোকজন জ্যুকবক্সের মতো হয়ে যায়, তাদের সিস্টেমে পয়সা না ঢুকালে তারা শব্দটব্দ করে না।
এভাবে চিন্তা করলে তো তো চলবে না! লাইনে চিন্তা করতে হবে। সাগরতল উঠে এসে বাংলাদেশ ডুবে যাবে, এ নিয়ে চিল্লাচিল্লি করার কারণে জলবায়ু তহবিল থেকে কিছু টাকাপয়সা পাওয়া গেছে।
বাঁধ নিয়ে চিল্লাচিল্লি করলে কি আর জলবায়ু তহবিল টাকা দেবে?
মাঝে মাঝে সেটা ভেবে খারাপ লাগে। নিজের সুবিধা না হয় নাই নিলাম, অসুবিধেও বুঝতে এত কষ্ট?
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এই পোস্টটি আমরা ছড়িয়ে দেই সবাই মিলে... চলুন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সেই সাথে কিভাবে আমাদের কনসার্ন সরকারের নীতিনির্ধারক মহলে পৌঁছানো যায় সেটা নিয়েও কিছু মতামত আসতে পারে নজু।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ছড়িয়ে যাক সচেতনতা---
facebook
সময়ানুপযোগী লেখা, ধন্যবাদ ভাইয়া।
টিপাইমুখ নিয়ে আপনার সব লেখাই আগে পড়েছি। সাম্প্রতিক নিউজটা শোনার পর আপনার লেখাই আশা করছিলাম। লেখা ভালো লাগল। তবে সব জেনে আতংকিত হলাম। আমাদের কি কিছুই করার নেই?
_________________
[খোমাখাতা]
তাপস দা, অনু, সাফি ও নিটোল অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
অলরেডি ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছি। আরো যতভাবে পারি ছড়িয়ে দেব- জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ লেখাটি।
বাঁধের বিরুদ্ধে পৃথিবীর অনেক দেশেই আন্দোলন গড়ে উঠেছে। প্রকৃতির স্বাভাবিক গতিশীলতাকে বিকৃত করে সাময়ীক লাভের প্রচেষ্টা রসনাকে পরিতৃপ্ত করলেও বৃহত্তর শারীরবৃত্তিয় দুর্বিপাক অবশ্যম্ভাবী। ইকোসিস্টেম নষ্ট হবে, জিওলজিকাল ইমব্যালেন্স হবে, ক্রপ ফেইলিওর হবে, সর্বোপরি এলাকার এপিডেমিওলজিকাল (রোগতাত্বিক) প্যাটার্নেও আসবে বিপুল পরিবর্তন। আমাদের কাপ্তাই বাঁধের কারণে আমরা দেখেছি পাহাড়ী জনপদে কিভাবে ম্যালেরিয়া এন্ডেমিক হয়েছে; যেখানে আগে ম্যালেরিয়া ছিলনা বললেই চলে। প্রকৃতির স্বাভাবিক বিধানের সাথে এ মল্লযুদ্ধ এ ভুখন্ডের জনগোষ্ঠীকে কোথায় ঠেলে দেবে কেউ বলতে পারেনা।
ধন্যবাদ।
একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ একই উলম্ব রেখায় পরস্পর বিপরীত দিকে অবস্থান করে। অর্থাৎ আপনি যত অর্থনৈতিক উন্নতি চাবেন আপনাকে ঠিক ততটাই পরিবেশ ধ্বংস করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তর্জাতিক সংস্থা আই পি সি সি'র এই নিচের চিত্রটি দেখলে আরো পরিষ্কার হবে।
সুতরাং উন্নয়ন কর্মকান্ড হলে পরিবেশের উপর তার প্রভাব পড়বেই। আর সেজন্যই উন্নয়ন এমন ভাবে করা উচিৎ যেন তাতে ন্যুনতম ক্ষতি সাধিত হয় পরিবেশের। আর সেখানেই এই প্রকল্প নিয়ে আপত্তি। ভারত সরকার এই প্রকল্পের পরিকল্পনায় এর ভাটিতে প্রভাব একেবারেই পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। আর দেশ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করা, যা করতে বাংলাদেশের কুটনৈতিক মহল ব্যার্থ হয়েছে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আচ্ছা, পাগলেও নাকি নিজের ভালো বুঝে! দেশের একটা এতোবড় ক্ষতি হয়ে যাবে এই টিপাইমুখ বাঁধের কারণে, আমাদের সরকারি সেক্টরে থাকা মানুষগুলো কেন এটা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন না? আমি বুঝতে পারি না, আসলেই বুঝতে পারি না তারা কী ভাবেন, কী চিন্তা করেন!
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
গৌতম
সরকারি সেক্টরে থাকা লোকজন এগিয়ে আসলে তো আর কথাই ছিল না। সমস্যা হচ্ছে যে সাধারণ মানুষ যদি সচেতন না হয়, তখন সরকার বলো আর রাজনীতিবিদদের কথাই বলো তারা পাত্তা দেয় না। এখন যেটা করা প্রয়োজন এই প্রকল্পের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে বেশি বেশি আলোচনা করা, বিশেষ করে সিলেটের মানুষদেরকে সচেতন করা। এই প্রকল্পের ক্ষতিকারক দিক নিয়ে জাহিদের ই-বুকটি একটি ভালো রেফারেন্স হিসেবে কাজ করবে।
গৌতম, যেখানে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধি দলের থাকা কারিগরি কমিটি ছিল তাদের (ভারতের) কাছ থেকে বুঝেছে যে,
সেখানে রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আর কি বলি। অবশ্য যদি বিশেষজ্ঞ কমিটির এই মতামত যদি সরকারের অবস্থানেই সিদ্ধিকরন উক্তি হয় সেক্ষেত্রে হতাশা আরো বাড়ে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের আচরণ চরম হতাশাজনক। বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ করা কোন নুতন কিছু নয়। তাই এরকম একটি প্রকল্পের ফলে উজানে এবং ভাটিতে কি কি ক্ষতি হবে সেটি খুব পরিষ্কার যার সবগুলোই জাহিদ তার ই-বুকে লিখেছে। একটি সময় যখন জল-বিদ্যুতের বিকল্প ছিল না তখন ইউরোপ, আমেরিকায় প্রচুর বাঁধ তৈরী করা হয়েছে। কিন্তু এখন সেই সব দেশে আর জলবিদ্যুৎ এর প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় না। বরং অনেক বাঁধ ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। এই বাঁধের ফলে ভাটিতে আমাদের দেশের নদীতে এবং অববাহিকায় বেশ ভালো রকমের পরিবর্তন আসবে যার বেশিরভাগই হবে আমাদের জন্যে নেগেটিভ। তারপরেও বর্তমান সরকারের বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় সচেষ্ট না হওয়া জনগণের সাথে প্রতারণার শামিল।
আমাদের দেশের সরকারগুলো এমন উদাসীন হতে পারে যার একমাত্র কারণ তারা জানে যে তারা ছাড়া জনগণের সামনে আর কোন বিকল্প নেই। এই বার লীগ আর পরের বিনপি/জামাত এই আমাদের নিয়তি। তাই আমি সবাইকে একটি অনুরোধ করবো যে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার সাথে সাথে এই বিষয়টি নিয়ে বেশি চিন্তিত হোন। ভারত বলেন, মার্কিন বলেন আর পাকি বলেন তারা আমাদেরকে **** সূযোগ পায় কারণ আমাদের সরকার আমাদের হয়ে *ছা পেতে রাখে। এই চক্র যতদিন থাকবে আমাদের এই ** মারা খাওয়া ছাড়া কিছু করার নেই। কষ্টের হলেও সত্যি যে এই চক্রের বাহিরে আমাদের আর কোন বিকল্প গড়ে উঠেনি। এমন না যে গড়ে উঠার চেষ্টা হয় না, কিন্তু এই চক্রটির চরিত্র এমনই যে সে তার বিকল্প গড়ে উঠতে দিবে না। কারণ তাদের নিজেদের টিকে থাকার জন্যে ভালো কিছু করার দরকার নেই, শুধু নিশ্চিত করা দরকার যেন বিকল্প কিছু না গড়ে উঠে। মজার ব্যাপার হচ্ছে যে এই বিকল্প না গড়ে উঠার ব্যাপারে দুই দলেই বেশ সচেতন।
কিন্তু তারপরেও বিকল্প গড়ে উঠবেই। এই চক্রের দ্বন্দ্বের মাঝখান থেকেই উঠে আসবে বিকল্প। মানুষ নামক প্রাণিটিই এমন যে যখন তার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, চারিদিকে কোন আশা দেখা যায় না, তখনই সে ধ্বংশস্তুপের মাঝখান থেকে আলো বের করে নিয়ে আসে। আমি সব সময় বিশ্বাস করি "সময়ের প্রয়োজনে" কথাটি। সচলের পাঠকদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে এই চক্র থেকে বের হওয়ার মতো সময় এসেছে কিনা সেই প্রশ্নটি নিজেকে করুন। যদি এসে থাকে তবে সেই সময়ের প্রয়োজনে কি করা উচিত নিজেকে প্রশ্ন করুন। সেই সব প্রশ্ন নিয়ে বন্ধুদের সাথে কথা বলুন, আলোচনা করুন ব্লগে, ফেইসবুকে। হয়তো সেখান থেকেই বের হয়ে আসবে একটি বিকল্প।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভাই আমিও একজন ভাটীর দেশের লোক। টিপাইমুখ বাঁধ হলে আমাদের এলাকার কি হবে তা ভেবে এখুনি শিউরে উঠছি। এর প্রতিবাদে যেকোন আন্দোলনে সাথে আছি।
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
শেয়ার দিলাম।
ধন্যবাদ।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
খুবই জরুরী একটি পোষ্ট।
এ জাতীয় ব্যপারগুলিকে শুধু দু দেশের আঞ্ছলিক সমস্যার মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে
একটু গ্লোবাল কন্টেস্ট এ প্রচারে কোন সুবিধা অসুবিধা আছে কিনা এবং
সন্মিলিত ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্যে কোন সংঘ্য বদ্ধ একসান কমিটি বা প্রতিষ্ঠান ঘঠন করে আন্তুর্জাতিক ভাবে ক্ষ্যাতি সম্পন্ন কোন ব্যাক্তিত্বকে বা প্রতিষ্ঠানকে জড়ানো যায় না ?
ভারতের অরুন্ধতী রায় নারমান্ডা ডামের ব্যপারে বেশ সক্রীয় ছিলেন, কেনাডার ডেভিড
সুজুকি ফাউন্ডেশন ও পরিবেশ সংরক্ষন ব্যপার সেপারে যথেষ্ট সোচ্চার।
ধন্যবাদ। উপরে এক মন্তব্যের প্রতিমন্তব্যে বলেছি। প্রাসঙ্গিক বলে এখানেও বলছিঃ
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ একই উলম্ব রেখায় পরস্পর বিপরীত দিকে অবস্থান করে। অর্থাৎ আপনি যত অর্থনৈতিক উন্নতি চাবেন আপনাকে ঠিক ততটাই পরিবেশ ধ্বংস করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের আন্তর্জাতিক সংস্থা আই পি সি সি'র এই নিচের চিত্রটি দেখলে আরো পরিষ্কার হবে।
সুতরাং উন্নয়ন কর্মকান্ড হলে পরিবেশের উপর তার প্রভাব পড়বেই। আর সেজন্যই উন্নয়ন এমন ভাবে করা উচিৎ যেন তাতে ন্যুনতম ক্ষতি সাধিত হয় পরিবেশের।
আজকে সারাবিশ্বে তাই সাসটেইনিবল অবকাঠামো এর বিল্পব শুরু হয়েছে। এর মূল স্লোগান হচ্ছে যেহেতু আজ আমরা সমস্যায় পড়েছি আজ থেকে ৫০ বছর আগে তপোরী করা অবকাঠামোর জন্য।তাই আমাদের আমন অবকাঠামো আজ তৈরী করতে হবে যার জন্য আজ থেকে আবার ৫০ বছর পরে আমাদের সমস্যায় পড়তে না হয়।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
একটা চিন্তা মাথায় আসলো। ব্লগের ভাবনাগুলো সরকারের কাছে পৌঁছায় কি? আর যদি না পৌঁছায় সেটা পৌঁছানোর একটা ব্যবস্থা কি করা যায় না? ধরা যাক, এই ব্লগ, প্রাসঙ্গিক মন্তব্য ইত্যাদির সংকলন করে স্মারক লিপি মত একটা তৈরী করে সরকার (প্রধানমন্ত্রী, পানি সম্পদ মন্ত্রী, ওই বিষয়ক সংসদীয় কমিটি) এর কাছে মেইল করে বা সশরীরে গিয়ে দিয়ে আসা যায় কি?
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেছেন এইটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়!!!
ফেসবুক ভিডিও এর লিঙ্ক
কি দেখলাম এইটা। এই ইস্যু নিয়ে একটি লেখা তৈরী করছিলাম, মনটা ভেঙ্গে গেল।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
এদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা আসলে অর্থহীন। কিন্তু আমাদের চাপ তৈরী করা অব্যাহত রাখতে হবে, তা নাহলে হাসতে হাসতে দেশের বারোটা বাজিয়ে দিবে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
ছাগলটাইপের অযোগ্য মানুষজন দিয়ে মন্ত্রীসভা ভর্তি করে রাখলে এর চেয়ে ভালো আর কি কথা শোনার ভাগ্য হবে আমাদের ! এরা কাজ করবে কি -- কথাই তো ঠিক করে বলতে পারে না !
----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!
দিপু মণির সাথে আমাদের পানিসম্পদ মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীর পরিচয় নাই। সচিবালয় কম্প্লেক্সের ভেতরের পানিসম্পদ নিয়ে প্রশ্ণ করলে কিছু উত্তর আসতে পারে, কারন মন্ত্রী-সচীবরা তো আর দিনের পর দিন ঢিলা-কুলুখ করে চালাতে পারেন না। তবে ভারতের কন্চিপায় কি একটা বাঁধ, তার আবার চুক্তি, এইগুলার প্রশ্ন করে খামাখা এই ভদ্রলোকদের একটা বিপদে ফেলা টিভির লোকেদের একটা গুস্তাখ হয়েছে, বেশাক।
সজল @
সরকার যে ব্যপার গুলো জানেনা তা কিন্তু নয়। ব্লগের সব তথ্যই নিশ্চয় সরকারের নজরে আছে। না হলে আসিফ মহিউদ্দনকে ডিবি কি করে ধরে?
কিছু ব্যক্তি স্বার্থে দেশ বিরোধি চুক্তি আগেও করতে দেখেছি। এখনো দেখছি। এটাও হতে পারে কিছু অমানুষের স্বার্থ টিকিয়ে রাখতেই সরকার এমন করছে।
-ডাইনোসর
টিপাইমুখ বাঁধ হলে দেশের ক্ষতি হবে সেটা সরকার জানে না, এমন কিছু বলছি না। আমি বলতে চাইছি, সরকারে থাকা লোকগুলো নিজের পকেটে ভর্তি থাকলে দেশের বারোটা বেজে গেলেও মাথা ঘামায় না, তবে পাবলিক ক্ষেপে গেলে বাধ্য হয়ে অনেক সময় দেশের স্বার্থে কাজ করে। আমার কনসার্ন ছিলো, মানুষ যে এই ব্যাপারগুলো জানে এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে সেটা সরকারের নজরে পড়ছে কিনা। তা না হলে "পাবলিক ভুদাই, কিছু জানে না, যা খুশি হোক দেশের" ভেবে নিষ্ক্রিয় বসে থাকবে।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
জাহিদ ভাই, চায়নার Three Gorges Dam নিয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে একটা ডকুমেন্টারি দেখেছিলাম। ওখানে নদীর পলি যেন নদীতে যেতে পারে সেজন্য ড্যামের নিচ দিয়ে সেডিমেন্ট ফ্লো এর ব্যবস্থা করেছে যেন ভাটিতে fertility-র কোন সমস্যা না হয়। এমন কিছু কি ভারত করবে?
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ পোস্টের জন্য। আমি আপনার আগের সবগুলো লেখা পড়েছি এই বাঁধ নিয়ে আর হতাশ হয়েছি আমাদের রাজনীতিকদের বিমূঢ় চিত্ত দেখে। সচেতনতাই কি সব। আমরা দেশের প্রায় সব সমস্যা নিয়েই সচেতন তাতে আমাদের কিছু কি হয়ছে?
টিপাইমুখ প্রকল্পের পরিবেশের প্রভাব শীর্ষক স্টাডিতে সেরকম কিছু উল্লেখ নেই।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আমি যত দূর জানি, আন্তর্জাতিক নদীগুলোর প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য কোন পদক্ষেপ নিতে হলে ভাটির সব দেশের সম্মতি লাগে, এ বিষয়ে জাতিসংঘে বা অন্য কোন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কি কোন আপত্তি জানানো যায়?
ডাঁশপোকা ধন্যবাদ। আপনার প্রশ্নটি বোধকরি এরকমঃ আইনগত কি কি দিক আমাদের হাতে আছে ?
এখানে উল্লেখ্য যে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের সংবিধির ৩৮ ধারা অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক বা আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক যেকোন চুক্তি আনর্জাতিক আইনের উৎস। এই বিচারে ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ ও ভারতে সরকারের মধ্যে স্বাক্ষরিত গঙ্গা চুক্তি একটি সর্বোচ্চ পর্যায়ের চুক্তি ( Vienna Convention on the Law of Treaties 1969) এবং এই দুই দেশের জন্য আন্তর্জাতিক আইন যা কিনা ২০২৬ সাল পর্যন্ত মেনে চলতে দুই দেশই বাধ্য। গঙ্গাচুক্তির অনুচ্ছেদ ৯ অনুযায়ীঃ
"পক্ষপাত বিহীন ও সাম্যতা প্রসুত এবং কোন পক্ষেরই ক্ষতি না করে দুই সরকারই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বহমান অন্যান্য আন্তসীমান্ত নদীসমুহের চুক্তির ব্যাপারে একক সিদ্ধান্তে উপনীত হবার ব্যাপারে একমত"
অর্থাৎ এই চুক্তি অনুযায়ী আমরা গঙ্গা ছাড়াও অন্য আন্তঃসীমান্ত নদী যেমন বরাক নদীর ক্ষেত্রে "সাম্যতা" ও " কোন পক্ষেরই ক্ষতি" এই দু'টি পয়েন্টের ভিত্তিতে আইনের আশ্রয় নিতে পারি। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ দল যদি প্রমান করতে পারে টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্ষতি হচ্ছে ও সাম্যতা বিনষ্ট হচ্ছে তাহলে তার পরেও টিপাইমুখ বাঁধ করতে গেলে তা গঙ্গাচুক্তি ভঙ্গের কারন হবে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
দেশের স্বার্থ সংস্লিষ্ট বিষয়ে সরকারের অবহেলা আর মূর্খতার একটা সীমা থাকা উচীত !
লেখাটির জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
“Peace comes from within. Do not seek it without.” - Gautama Buddha
আপনাকেও ধন্যবাদ।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে পোষ্ট হালনাগাদ করলাম।
সর্বশেষ সংযোজনের ৪ নং পয়েন্ট দ্রষ্টব্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
চলুক, চোখ রাখছি!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
টিপাইমুখ নিয়ে বিএনপি বড় বড় কথা বললেও বড় কোন আন্দোলন করবে বলে মনে হয়না। আমার মনে হয় সরকারকে চাপ না দিলে এই ব্যপারে কাজ হবেনা।
এই ইস্যুটিকে দেশের অভ্যন্তরীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে না দেখে বরং বাংলাদেশ সরকার ও ভারতের মধ্যকার কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখাই শ্রেয়।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
দুটি প্রশ্নঃ
১. সুরমা কুশিয়ারা নদীর অকাল এবং অনিয়মিত বন্যা রোধকল্পে বাংলাদেশের তরফ থেকেই একটি প্রস্তাবনা ছিল বরাক নদীতে একটি বাঁধ নির্মানের, যতদূর জানি সেই ষ্টাডির সংগে দেশের সর্বেচ্চ পর্যায়ের যোগ্য ব্যাক্তিবর্গই যুক্ত ছিলেন। এই বাঁধটি হলে সুরমা-কুশিয়ারায় শুকনো মৌসুমে ১১-১২ হাজার কিউসেক পানি প্রবাহাত হবে(এখন হয় ৩-৮ হাজার কিউসেক), অপরপক্ষে বর্ষায় অপরিমিত পানির প্রবাহ কমিয়ে দিবে, এর কি কোন উপযোগীতা নেই?
২. বাঁধের উজানে পলি জমা হবার কারনে বাঁধের ভাটির পলিমুক্ত পানি আগ্রাসী হয়ে ভাঙ্গনের সূচনা করবে, ফলে ভাঙ্গনকৃত সেইসব মাটি এসে বাংলাদেশ অংশে নদী ভড়াট করে ফেলবে। এই বাস্তবতা আমরা কাপ্তাই বাঁধের ক্ষেত্রে দেখলাম না কেন? আপনার হাইপোথিসিস অনুযায়ী তো কাপ্তাইয়ের ভাটিতে কর্ণফুলির অবস্থা এতদিনে ছেড়াবেরা হয়ে যাবার কথা, কিন্তু সবাই জানে বাস্তবে কাপ্তাই বাঁধ নির্মানের আগে প্রতি বছর কর্ণফুলির বন্যায় চট্টগ্রামের যে জেরবার অবস্থা হতো, তা এখন অতীতের বিষয়, কেন?
১) প্রথমে বলে নেই আপনার এই তথ্য আংশিক সঠিক। ২০০৯ সালের ২৮ জুন দৈনিক প্রথম আলোতে ডঃ আইনুন নিশাতের একটি সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেন,
লক্ষ্য করুন তখন এই প্রকল্পের উদেশ্য ছিল শুধু বণ্যা নিয়ন্ত্রন। এখানে একটি জিনিস বলে নেয়া ভাল যে বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ আর জলবিদ্যুৎ বাঁধ পুরোপুরি এক জিনিস নয়। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ দিয়ে দুই ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রন করা যায়, প্রথমতঃ বাঁধের নিচে একটা সুড়ংগ (স্লুইস ওয়ে) থাকবে যার ধারন ক্ষমতা হবে ভাটির নদীর সর্বোচ্চ পরিবহন ক্ষমতার সমান। ফলে স্বাভাবিক ভাবে বাঁধের উজানে ততটুকু পানিই জমবে যতটুকু পানি ভাটির নদীর পরিবহন ক্ষমতার থেকে বেশী। এক্ষেত্রে মোটামুটি ভাটির নদীর স্বাভাবিক হাইডোগ্রাফ একই রকম থাকে শুধু মাত্র পিক প্রবাহ বন্যার সময় সেটি ধ্রুবক হয়ে যায়, আরে দ্বিতীয়তঃ বাঁধের সাথে গেইটেড স্পিলওয়ে/স্লুইস গেইট থাকবে যা দিয়ে ভাটিতে কতটুকু পানি যাবে তা নির্ধারণ করা যায়। এক্ষেত্রে বর্ষা মৌসুমে পানি সঞ্চয় করা হবে এবং তা দিয়ে সারাবছর একটি মোটামুটি গড় প্রবাহ সরবরাহ করা হয়। প্রথম প্রকারের বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হবে কারন এক্ষেত্রে পানির প্রবাহ আসলে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে আসলে ভাটির অঞ্চলের পরিবহন ক্ষমতার দ্বারা কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে তা নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিৎ আসলে উৎপন্ন বিদ্যুতের পরিমানের দ্বারা কারন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন নিরবিচ্ছিন বা ধ্রুব প্রবাহ।দ্বিতীয় প্রকারের বাঁধের ক্ষেত্র আসলে বিদুৎ উৎপাদনের জন্য আদর্শ।
এমনকি FAP 6 এর রিপোর্টেও এর প্রমান পাওয়া যায় যে ভারত এই প্রকল্পকে শুধু বন্যা নিয়ন্ত্রন থেকে বিদ্যুৎ ও বন্যা নিয়ন্ত্রনে উন্নীত করেছে। নিচের লাইনটি দেখুনঃ
সুতরাং কিসের ভিত্তিতে বাংলাদেশের তখন এই প্রকল্পে সংশ্লিষ্টতা ছিল সেটা এখন বোধগম্য।যাই হোক FAP 6(১৯৯৪) এ মূলত বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব অঞ্চলের ভবিষ্যৎ পানি ব্যবস্থাপনা (NERP) নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে এবং যেহেতু টিপাইমুখ বাঁধ তখন পরিকল্পনাধীন ছিল তাই এই গবেষণায় এই বাঁধের সম্ভাব্য প্রভাবের দিকগুলি আলোক পাত করা ও ভবিষ্যৎ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আঞ্চলিক হাইড্রোলজিক প্রভাবের উপর গবেষণা করার জন্য Surface Water Modeling Center সংক্ষেপে SWMC (বর্তমান Institute of Water Modeling IWM) ও NREP দলের বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সেট-আপ করা Northeast Regional Model ব্যবহার করা হয়েছে। NREP এর গবেষণায় এর বেইজ সিনারিও ছিল ১৯৯১-১৯৯২। বেইজ সিনারিও রান দেবার পর আরো দুটি সিনারিও সেট আপ করা হয়ঃ একটি ‘পরিকল্পনা বিহীন ভবিষ্যৎ সিনারিও’ আর আরেকটি ‘পরিকল্পনা সহ ভবিষ্যৎ সিনারিও’। এই দুইয়ের ফলাফলের পার্থক্যই কিন্তু বিভিন্ন উন্নয়ন/পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার ভবিষ্যৎ প্রভাব সম্পর্কে একটি ধারণা দিবে। এই দুই ভবিষ্যৎ সিনারিও আসলে ২০১৫ পর্যন্ত আলোকপাত করা হয় এবং এতে টিপাইমুখ বাঁধ/ কাছাড় সেচ প্রকল্প ( ফুলেরতল প্রকল্প) অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এখানে একটি গুরুত্ত্বপূর্ন তথ্য যোগ করে রাখি এই গবেষণার সময় বাংলাদেশ যুক্ত নদী কমিশনের মাধ্যমে টিপাইমুখ বাঁধের প্রয়োজনীয় উপাত্ত সংগ্রহ করার প্রচেষ্টা চালায় কিন্তু ন্যুনতম পরিমান উপাত্ত নিয়েই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়। পরিশেষে কিছু ধারণার উপর নির্ভর করতে হয়। ধারনা গুলি হলোঃ সেচের জন্য পানি উত্তোলন হবে ১ মিটার আর পানি অপসারন ক্রমাগত ভাবে শুষ্ক মৌসুম (নভেম্বর থেকে এপ্রিল)পর্যন্ত চলবে।
এই গবেষণা অনুযায়ী টিপাইমুখ বাঁধ/কাছাড় যেচ প্রকল্পের প্রভাব নিম্নরূপ ছিলঃ
জলাধার পূরণের সময়কার প্রভাবঃ এটি মুলত বাঁধের জলাধার কিভাবে পূর্ণ করবে তার পরিকল্পনার উপর নির্ভরশীল। অনেক সময় প্রকল্পের সুবিধা তাড়াতাড়ি পাবার জন্য অতিদ্রুত ভাবে জলাধার পূর্ণ করা হয় যা বাংলাদেশের মত ভাটির অঞ্চলে ভয়াবহ পরিবেশ বিশেষ করে বাস্তুসংস্থান বিপর্যয় ঘটাবে।
বর্ষা মৌসুমে প্রভাবঃ বন্যার পানির প্রবাহ কমে যাবে, অমলসিদে অর্থ্যাৎ যেখানে বারাক নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে যেখানে বারাক নদীর ‘সর্বোচ্চ প্রবাহ’ ২৫ শতাংশ হ্রাস পাবে এবং পানির পরিমান শতকরা ২০ ভাগ কমে যাবে। পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় অমলিসিদে বারাক নদীর পানির উচ্চতা ১.৬ মিটার কমে যাবে এর ফলে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে পানি প্রবাহ প্রায় সমভাবে হ্রাস পাবে যা প্রকারান্তে এই দুই নদী বন্যার সম্ভাব্যতা কমিয়ে দেবে এবং সিলেট অববাহিকায় নিম্নাঞ্চলের জলাবদ্ধতার পরিমান হ্রাস পাবে।
শুষ্ক মৌসুমে প্রভাবঃ অমলসিদে পানির সর্বোচ্চ প্রবাহ শতকরা ১০০ ভাগ থেকে ২০০ ভাগ বাড়বে এবং পানির পরিমান শতকরা ৬০ ভাগ বেড়ে যাবে।এই বর্ধিত প্রবাহের কারনে অমলসিদে পানির উচ্চতা ১.৭ মিটার বেড়ে যাবে।
ড্যাম ব্রেকের প্রভাবঃ বাঁধ ভাঙ্গার কারনে বাঁধের স্থলে যে ঢেউ উৎপন্ন হয় তা সাধারনত ঘন্টায় ১০ থেকে ৩০ কিলোমিটার বেগে ভাটির দিকে ধাবিত হয়, যদিও এই বেগ দূরত্ত্বের সাথে হ্রাস পায়। বাঁধ স্থল থেকে অমলসিদের দূরত্ত্বকে ২০০ কিলোমিটার ধরলে এই ঢেউ বাংলাদেশে প্রবেশ করতে সময় লাগবে ২৪ ঘন্টা। বাংলাদেশে প্রবেশের সময় এই ঢেউয়ের উচ্চতা হবে ৫ মিটার। টিপাইমুখ বাঁধের জলাধারের ধারন ক্ষমতা ১৫,০০০ মিলিয়ন ঘনমিটার। এই বিপুল প্রবাহ ১০ দিন ধরে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং সমস্ত বন্যার্ত এলাকা থেকে পানি সরে যেতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে।
সুতরাং শুধুমাত্র প্রাথমিক স্টাডির ফলাফলেও কিন্তু এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গুরুত্ত্বপূর্ন প্রভাব পরিলিক্ষিত হয়েছে।
আর বর্ষায় পানি কমে যাওয়া আর তার সাথে বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুনে পানি বেড়ে যাওয়া ইতিবাচক না নেতিবাচক সেই প্রশ্নের উত্তর 'যুক্তি খন্ডনঃ টিপাইমুখ বাঁধ হলে বাংলাদেশের উপকৃত হবে' শীর্ষক পরিচ্ছেদে পাবেন।
২) একটু ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে প্রায় ২০০ কিমি দূরে। বাঁধের ঠিক ভাটিতে নদী ক্ষয় হয় যেহেতু পলি সব উজানে জমে থাকে। সেই পলি আরো ভাটিতে এসে নদীতে জমে। ধারনা করা হয় টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষেত্রে প্রথম ১৫০ কিমি (এটি নির্ভর করে বাঁধের উচ্চতা, নদীর মাটির প্রকৃতি সহ আরো বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর) পর্যন্ত নদী ক্ষয় হবে আর তার পরে সেই পলি সঞ্চিত হবে ভাটিতে।
অন্যদিকে কাপ্তাই বাঁধ থেকে চট্রগ্রাম বন্দর প্রায় ৫০ কিমি দূরে। সেক্ষেত্রে নদীর এই অংশে পলি সঞ্চয় না বরং নদী ক্ষয়ই সংঘটিত হবে, ক্ষয়িত পলি মোহনায় সঞ্চিত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। যাই হোক ঠিক একারনেই কর্নফুলী নদীর এই অংশে বন্যা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে কাপ্তাই বাঁধের কারবে। এইবারে বোধ হয় বিষয়টি পরিষ্কার হবে আপনার কাছে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্বেগ প্রকাশের প্রতিউত্তরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদ সম্মেলনে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পোষ্টটি আবারো হালনাগাদ করলাম।
সর্বশেষ সংযোজনের ৫ নং পয়েন্ট দ্রষ্টব্য।
বিদ্রঃ ব্যাস্ততার কারনে উপরের মন্তব্যগুলোর উত্তর দিতে একটু দেরী হচ্ছে। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সংবাদ সম্মেলনে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়ার আলোকে পোষ্টটি আবারো হালনাগাদ করলাম।
সর্বশেষ সংযোজনের ৬ নং পয়েন্ট দ্রষ্টব্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে কিছু লাভ হয় আবার ক্ষতিও হয় । আমাদের চিন্তা করতে লাভ না, ক্ষতি কোনটা বেশি ।
আর লাভ-ক্ষতি যাই হোক না কেন সমীক্ষা ছাড়া কিছু বলা যায় না।
আপনার মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে আমরা বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনাধীন কোন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা করছি। মনে রাখবেন এই প্রকল্প ভারতের এবং ভারত শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র ভারতের স্বার্থ বিবেচনা করেই এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পে বাংলাদেশের লাভের দিক থাকলে এটি একটি যৌথ প্রকল্প হতো যেমনটা হচ্ছে ইছামতি নদীর ক্ষেত্রে। এই প্রকল্পে বাংলাদেশের কানাকড়িও লাভের আশা নেই, এবং নেই।
অনেক বছর আগে যখন গঙ্গায় পানি বৃদ্ধির জন্য উজানে ( ভারতে বা নেপালে) বাঁধ নির্মান করার প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ তখন ভারত তা প্রত্যাখ্যান করেছিল, বলতে দ্বিধা নেই এখনো তা করবে। সুতরাং ভারত কখনই বাংলাদেশের লাভের জন্য নিজের অর্থ খরচ করে কিছু করবেনা আর সেটা আশা করাও ঠিক নয়। এখন ভারত বাংলাদেশকে লাভের মুলা দেখিয়ে এই প্রকল্পে অনুমোদন করিয়ে নিতে চাচ্ছে যেমনটা করেছিল ফারাক্কার ক্ষেত্রে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
ভারতের দাবি টিপাইমুখ বাঁধ নাকি বন্যা প্রতিরোধ করবে। কিন্তু গত ৬ বছরে সুরমা অববাহিকায় কোন বন্যা হয়েছে বলে মনে পড়ে না। সিলেটে সর্বশেষ বন্যা হয়েছিলো ২০০৪ সালে।
শেয়ারড টু অল মাই গ্রুপ অলসো...
"এখন ভারত বাংলাদেশকে লাভের মুলা দেখিয়ে এই প্রকল্পে অনুমোদন করিয়ে নিতে চাচ্ছে যেমনটা করেছিল ফারাক্কার ক্ষেত্রে।"
ফরাক্কা বাধের সময় কি মূলা দেখিয়েছিল জানাবেন কি?
ফারাক্কা ব্যারেজ করার উদ্দেশ্য ছিল কলকাতা বন্দরের নাব্যতা রক্ষা করা। এর জন্য গঙ্গা থেকে সংযোগ খাল দিয়ে পানি হুগলী নদীতে স্থানান্তর করা হয় যার নকশাকৃত ধারন ক্ষমতা ৪০,০০০ কিউসেক। এর কম যেকোন প্রবাহ ভারতের প্রয়োজনের তুলনায় কম। গঙ্গা চুক্তির আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে (১৯৫১-১৯৭৬) গঙ্গার পানি বন্টনের সমীকরন নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ব্যার্থ হয়। তবে ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের সাথে একটি অন্তর্বর্তীকালীন মতৈক্যের ভিত্তিতেই ব্যারেজের কার্যক্রম শুরু হয়।মতৈক্যটি কিছুটা এরকমঃ ভারত বিকল্প খাল দিয়ে ১১,০০০ থেকে ১৬,০০০ কিউসেক ( ১ কিউসেক=প্রতি সেকেন্ডে ১ ঘনফুট পানির প্রবাহ) পানি গঙ্গা থেকে অপসারন করবে আর বাকী প্রবাহ বাংলাদেশে চলে যাবে।
এই ছিল মুলাঃ ৪০০০০ কিউসেকের বদলে মাত্র ১১০০০ থেকে ১৬০০০ কিউসেক ভাইভার্ট।
উল্লেখ্য যে এই পরীক্ষামুলক পানিবন্টন মাত্র ৪১ দিন স্থায়ী হয়।১৯৭৬ সালে আগের মতৈক্যের নবায়ন না করে ভারত একতরফা ভাবে গঙ্গার পানি অপসারন করে যার ভয়াবহ প্রভাব পড়ে পদ্মানদী কেন্দ্রিক বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপর এবং একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটে ১৯৭৭ সালে। বাংলাদেশ বিষয়টি জাতিসংঘে উত্থাপন করে এবং সাধারন পরিষদ এক্ষেত্রে একটি মতৈক্যের বিবৃতি দেয় যার ফলশ্রুতিতে বিষয়টির একটি সুষ্ঠূ সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও ভারত ঢাকাতে মন্ত্রীপরিষদ পর্যায়ের বৈঠকের ব্যাপারে একমত হয়।
আশা করি বোঝাতে পেরেছি। আগ্রহী হলে সচলায়তনে প্রকাশিত এই সিরিজ পড়ে নেবেন। কিংবা আরো সংক্ষেপে এইখান থেকে।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
টিপাইমুখ নিয়ে একটি আলোচনা
এটা আলোচনাটি কতটুকু সত্য অথবা যৌক্তিক...জাহিদ আপনি যদি কিছু বলতেন...
টিপাইমুখ নিয়ে একটি আলোচনা
এটা আলোচনাটি কতটুকু সত্য অথবা যৌক্তিক...জাহিদ আপনি যদি কিছু বলতেন...
ধন্যবাদ সাইদ ভাই। আমি সময় করে দেখে মন্তব্য করব।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্টমন্ত্রীর সাম্প্রতিক সাংবাদিক সম্মেলনে করা মন্তব্যের আলোকে পোষ্টটি আবারো হালনাগাদ করলাম।
সর্বশেষ সংযোজনের ৭ নং পয়েন্ট দ্রষ্টব্য।
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
জাহিদ্ভাই, সাথে আসি বস। পরতেছি। সাক্ষাতে বিস্তারিত আলোচনা করুম। তয় এহন খালি আপ্নের কষ্ট, শ্রম আর এই বিষয়ে শত ব্যস্ততার মাঝেও সময় দেওনের লাইগা বুইড়া আঙ্গুল দেখাইয়া গেলাম (বুইড়া আঙ্গুলের ইমো কেমনে দেয় এখনও জানি না, গুতাইয়া ও কিছু বাইর করতে পারলাম না, কবে যে বড় হমু )।
পড়তেছি*
ধন্যবাদ গৃহবাসী বাঊল ভাই। বুইড়া আঙ্গুলের ইমোর লিগা দেখেন উপরে ইমোর একখান বাটন আছে। এছাড়া 'প্রথম ব্র্যাকেটে চলুক' লেইখা দিলেও সেটা বুইড়া আঙ্গুল দেখাইবো, এই ধরেন
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
।ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট।
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।
আফসোস আমরা ভারতীয় ঠুলি পরে কুলুর বলদেরমত ঘুরে বেড়াচ্ছি! সময় এসেছে দেশ প্রেমে উদ্ভুদ্ধ হয়ে দেশমাতৃকার জন্য কিছু করার।
তথ্যবহুল সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।
নতুন মন্তব্য করুন