প্রকাশনা বিষয়ে সচলায়তনের সাম্প্রতিক উদ্যোগ

সন্দেশ এর ছবি
লিখেছেন সন্দেশ (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৬/০৮/২০০৯ - ৬:০৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আপনারা অবগত আছেন, সচলায়তন নিয়মিতভাবে একটি বার্ষিক সংকলন বই আকারে প্রকাশ করে থাকে। এ ছাড়াও প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে একটি গল্প সংকলন [পূর্ণমুঠি] ও প্রয়াত অগ্রজপ্রতিম লেখক মুহম্মদ জুবায়েরের লেখার একটি সংকলন [সিকি-আধুলি গদ্যগুলি] সচলায়তন ও শুদ্ধস্বরের যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত হয়েছে।

সচলায়তনের লেখক পাঠকেরা পৃথিবীর দেড়শোটি দেশে ছড়িয়ে আছেন। তাঁদের প্রত্যেকের গুরুত্বই আমাদের কাছে অপরিসীম। কিন্তু সচলায়তনের প্রকাশিত গ্রন্থগুলি তাঁদের কাছে পৌঁছাতে গিয়ে আমরা বিদ্যমান বিতরণ ব্যবস্থার দুর্বলতা অনুভব করেছি, এবং ত্রুটিগুলি চিহ্নিত করেছি। জাহাজ বা বিমানে করে প্রবাসে বই পাঠানো এবং তা দীর্ঘ দূরত্বে অবস্থিত সব শহরে বাসরত সচলদের কাছে পৌঁছানো অত্যন্ত ব্যয়বহুল একটি প্রক্রিয়া। আবার ঢাকার বাইরে আমাদের স্থানীয় বিতরণ অবকাঠামোর দুর্বলতার কারণে সেখানকার পাঠকের সাথেও যোগসূত্র স্থাপিত হতে পারছে না। বিশ্লেষণের কাজটি করতে গিয়ে আমরা বিষয়টিকে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি আঙ্গিক থেকে দেখার প্রয়াস পেয়েছি, এবং ফলস্বরূপ একটি বিচিত্র সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি।

আমাদের বিশ্লেষণ নিচে বর্ণিত হলো।

১.

বাংলাদেশে একজন নবীন লেখকের জন্যে প্রকাশনা শিল্প আর্থিকভাবে লাভজনক নয়। তার মূল উদ্দেশ্য থাকে নিজস্ব পাঠকবৃত্তের বাইরে বৃহত্তর পাঠকমণ্ডলের কাছে নিজের নাম ও লেখাকে পরিচিত করা, তাই যদি কিছু আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির সম্মুখীন সে হয়ও, তা সে লোকসানের খাতায় লেখে না।

নবীন লেখক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজের গাঁটের পয়সায় বই ছাপেন। প্রকাশক তাঁকে কারিগরি সহায়তা এবং বিতরণ ব্যবস্থায় জুড়ে দেন কেবল। যদি প্রকাশক নিজের পয়সায় নবীন লেখকের বই ছাপান, সেক্ষেত্রে লেখক বেচারা বঞ্চিত হন রয়্যালটি থেকে (বই ছাপাইয়া দিলাম, আবার পয়সা চান?!)। হয়তো দেশে দুয়েকজন বিরল সৌভাগ্যবান রয়েছেন, যিনি নবীন লেখক হিসেবেই রয়্যালটির পয়সা পেয়ে লেখক জীবন শুরু করেছেন। অগ্রজপ্রতিম এক লেখক জানালেন, আজ থেকে প্রায় কুড়ি বছর আগে ৯% হারে রয়্যালটি পেতেন তিনি।

তবে কি প্রকাশক নতুন পেয়ে লেখককে হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন? ব্যাপারটা তেমন নয়। নবীন লেখক বইয়ের বাজারে নামছেন কোন ধরনের মূল্য সংযোজন ছাড়াই, পাঠকের কাছে তিনি পরীক্ষিত হবেন, তারপর তাঁর মূল্য পরিবর্তিত হবে। মূল্য সংযোজিত না হওয়া পর্যন্ত তিনি লাভজনক নন। অতএব আনকোরা এই মালকে বাজারে ছাড়তে গিয়ে কোন ঝুঁকি নিতে প্রকাশক সম্মত নন। যতদূর সম্ভব কম ঝুঁকিতে নবীন লেখককে নিয়ে ব্যবসা করতে চান তিনি।

আর এখানেই একটা হালকা বিষচক্র আছে। নবীন লেখকের বই বেশি ছাপিয়ে লোকসানে পড়তে প্রকাশক রাজি নন, আবার বই বেশি কপি ছাপা হয় না বলে এর কপি প্রতি খরচ অনেক বেশি হয়। পাঠককে বেশি টাকা দিয়ে এক এক কপি কিনতে হয় বলে আবার বই বিক্রিও হয় কম। ফলে, লোকে কম কেনে বলে বইয়ের দাম বাড়ে, আবার নবীন লেখকের চড়া দামের বই লোকে কম কেনে।

আর এখানে পাঠকের কথাও চলে আসে। আনকোরা নতুন একজন লেখকের বই তাকে কিনতে হচ্ছে চড়া দামে। মানুষের বই কেনার বাজেট বরাবরই সংকীর্ণ থাকে, ফলে ক্রেতার ঝুড়িতে আর নবীন লেখকের খুব একটা চড়া হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রেতার সাধ সাধ্যকে অতিক্রম করতে পারে না।

২.

প্রকাশনা শিল্পে বিতরণ ব্যবস্থার অবস্থাও শোচনীয়। প্রকাশকরা অনেকেই পুরোদস্তুর পেশাদার প্রকাশক নন, এক্স কবি-সাহিত্যিক মানুষ, বিভিন্ন গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দেখে বিরক্ত হয়ে নিজেই প্রকাশক হয়ে এগিয়ে এসেছেন সমমনাদের সাহায্য করার উদ্দেশ্যে। পুরোদস্তুর পেশাদার প্রকাশক তিনি নন বলে এই ব্যবসায় বিতরণ চ্যানেল তিনি প্রসারিত করতে ততটা উদ্যোগী নন। ফলে বইমেলার সিজনে কিছু সক্রিয়তা ছাড়া তাদের বাকিটা সময় মন্দাক্রান্ত। ঢাকা শহরের ভেতরে ও বাইরে যে বিশাল সম্ভাব্য পাঠক সমাজ আছে, তাদের কাছে পণ্য হিসেবে বইকে পৌঁছে দেবার কোন অভিনব উদ্যোগ প্রকাশকদের মধ্যে দেখা যায় না। কোন প্রকাশক কি আছেন, যিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ঘুরে ঘুরে বড় স্কুল ও কলেজের সাথে বৈঠক করেছেন নিজের প্রকাশিত বই বিক্রির ব্যাপারে? মফস্বলের বইয়ের দোকানে কি নবীন লেখকের বই পৌঁছাতে পারছে? উদাহরণ চাইলে সেবা প্রকাশনীর দিকে তাকাতে পারেন, বাংলাদেশে এককালে তাদের বিতরণ নেটওয়ার্কের সমকক্ষ বোধহয় আর একটিও ছিলো না।

৩.

সারমর্মে আমরা যা দেখতে পাই, তা হচ্ছে,

  • নবীন লেখক আর্থিক লাভের আশায় বই প্রকাশ করেন না। তিনি চান পরিচিতি, খ্যাতি বা নামযশ।

  • প্রকাশক নবীন লেখককে নিয়ে কোন বাড়তি ঝুঁকি নিতে রাজি নন। অলওয়েজ ব্যাক দ্য স্ট্রং হর্স, নেভার ব্যাক দ্য রং হর্স নীতিতে তিনি চলেন।

  • পাঠককে চড়া দামে নবীন লেখকের বই কিনতে হয়।

তাহলে প্রকাশনায় বিনিয়োজিত টাকা কিভাবে বণ্টিত হচ্ছে? লেখক এবং/অথবা প্রকাশক টাকা খরচ করছেন নিচের খাতগুলিতে।

  • সম্পাদনা (প্রুফ, পেজিনেশন, ডিজাইন)

  • প্লেট

  • কাগজ, কালি ও মুদ্রণ

  • বাঁধাই

  • প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ

  • বিজ্ঞাপন

এই খরচ উঠে আসছে পাঠকের পকেট থেকে, যার কিয়দংশ নবীন লেখকের পকেটে ফিরে যাবার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। গোটা ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এমন, পাঠক পকেটের পয়সা দিয়ে প্রায় সব ক্ষেত্রে প্রণোদনা দিচ্ছেন বিজ্ঞাপনদাতাকে, প্রচ্ছদচিত্রীকে, বাঁধাইঅলাকে, প্রেসকে, প্লেটমেকারকে, সম্পাদককে এবং এর পর হয়তো প্রকাশককে, কিন্তু নবীন লেখককে কদাচিৎ।

৪.

এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে বিস্তর আলোচনার শেষে এসে আমরা একটি সমান্তরাল ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়াস পাই। যেহেতু নবীন লেখকেরও লাভের আশা নেই, আর পাঠকেরও নবীন লেখকের জন্যে বিস্তর পয়সা খরচের ইচ্ছা নেই, আসুন এই দুইয়ের মাঝখান থেকে তুলে দিই প্রায় সকল নোড (সম্পাদনা, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ বাদে)। প্রবর্তন করি এমন আরো একটি ব্যবস্থার, যেখানে নবীন লেখক বা পাঠককে পয়সা খরচ করতে হয় না, তাদের মধ্যে সম্পর্ক বিক্রেতা আর ক্রেতার হয় না, তাদের মধ্যে সম্পর্ক দাঁড়ায় কুশলী আর সমঝদারের। নবীন লেখক প্রায় বিনামূল্যে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেবেন তাঁর বই, পাঠক বিনামূল্যে তাঁর বই পাঠ করবেন, প্রতিক্রিয়া জানাবেন, তাঁকে চিনবেন, জানবেন। এই প্রক্রিয়া তখনই সম্ভব হবে, যখন বই উৎপাদনের খরচ নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। সেটি এখনই সম্ভব, যদি বইটি হয় ইলেকট্রনিক।

গত দুই বছরে সচলায়তনের সংকলন প্রকাশের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, দেশের বাইরে বইয়ের একটি মোটামুটি চাহিদা বর্তমান, যেটিকে দুর্বল বিতরণ ব্যবস্থার কারণে মেটানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। দেশের পোস্টাল সার্ভিসের মুমূর্ষু অবস্থা, এবং সেখান থেকে উত্তর আমেরিকা বা ইউরোপে বই পাঠানো এক ব্যয়বহুল দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে পাঠকের কাছে মুদ্রিত বই পৌঁছানোর শেষ স্তরটি পাঠকের কাঁধে আরো খরচ চাপিয়ে দিচ্ছে। এই ব্যয় বহনে যাঁরা সম্মত, তাঁরাও অনেক সময় অবকাঠামোগত ত্রুটির কারণে বই হাতে পাচ্ছেন না। অথচ সচলায়তনের বিশাল রিডারশিপের কাছে খুব সহজেই ইলেকট্রনিক বই পৌঁছে দেয়া খুবই সম্ভব।

প্রথমে মনে হতে পারে, এতে করে প্রকাশকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কিন্তু ব্যাপারটি তা নয়, কারণ লেখক যখন পরবর্তীতে বইটির মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশ করবেন, সেটি হবে একটি পিয়ার-রিভিউড, মূল্য-সংযোজিত পণ্য। তাই তাঁরাও ইলেকট্রনিক বইয়ের পাঠকের কাছ থেকে পাওয়া ফিডব্যাকের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, সেই নবীন লেখকের সাথে তাঁরা ব্যবসা করবেন কি করবেন না। প্রি-প্রেস এডিটিং এবং প্রচ্ছদ-অলঙ্করণের শিল্পীদের জন্যে নতুন একটি দিগন্ত উন্মোচিত হবে ইলেকট্রনিক বইয়ের ক্ষেত্রে। আর নিশ্চিতভাবেই লাভবান হবেন নবীন লেখক ও পাঠক। নবীন লেখক শেষ পর্যন্ত মুদ্রিত বই প্রকাশ করবেনই, যেসব পাঠকের কাছে তিনি এই বই প্রচলিত ব্যবস্থায় পৌঁছে দিতে পারছেন না, তাঁরা আর বঞ্চিত থাকবেন না, এক ক্লিকে ডাউনলোড করে পড়া শুরু করতে পারবেন, পড়া শেষে পাঠ প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন। তাঁর বইটি পাঠক সমাদৃত হলে এর মুদ্রিত সংস্করণও সংগ্রহে রাখার একটি চাহিদা তৈরি হবে, যা প্রকাশকের জন্যে আশাব্যঞ্জক একটি ঘটনা। তাছাড়া দেশের ভেতরে যেখানে প্রকাশকের নিজস্ব বিতরণ ব্যবস্থা অনুপস্থিত, সেখানেও ইন্টারনেটের কল্যাণে ইলেকট্রনিক বই পৌঁছে যাবে অগণিত পাঠকের কাছে, বিনামূল্যে।

এ প্রক্রিয়ায় কোন নবীন লেখক যদি চান, তিনি প্রকাশনার ব্যাপারটি ইলেকট্রনিক স্তরেই রেখে দিতে পারেন। অর্থাৎ, মুদ্রণ ব্যবস্থায় প্রবেশ না করেও তিনি পাঠকদের কাছে তাঁর কোন বই পৌঁছে দিতে পারেন। অনলাইনে লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই এই ব্যবস্থাটি সমর্থন করবেন। ডিজিটাল প্রকাশনা কোন কল্পবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয় নয়, এটি বাস্তব, এবং এর ধারাবাহিকতায় আমরা নাম লেখাতে চাই।

৫.

সোজা বাংলায়, আমরা চাই একটি অনলাইন প্রকাশনা ব্যবস্থা, যা ইলেকট্রনিক বই প্রকাশ ও বিতরণ করবে, যেখানে পাঠক গিয়ে ই-বুক ডাউনলোড করে পড়তে পারবেন।

এ প্রত্যাশাকে ঘিরেই গড়ে উঠছে প্রকাশায়তন, আমাদের নতুন অনলাইন প্রকাশনী। এ বছর, ২০০৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আমরা মহা সমারোহে পালন করবো প্রথম অনলাইন ই-বইমেলা। বিস্তারিত জানবেন শীঘ্রই।

জানান আপনাদের ভাবনা ও দুর্ভাবনার কথাগুলো। আমরা কান পেতে আছি।


মন্তব্য

হাসান মোরশেদ এর ছবি

চলুক ড্যাবস!
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ভালো উদ্যোগ। শুভকামনা রইল।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সচলের পুরনো বইগুলো ইবুক আকারে চাই। বৈদেশে আছি বলে পড়তে পারি নাই। বইমেলার সময় অনেকেই বলেছিলেন, তাঁদের বইগুলো ইবুক করে দেবেন। সেগুলোও চাই।

পরিশেষে, কোনো কাজে লাগতে পারলে জানাবেন। দুর্দান্ত কিছু ইবুকের অপেক্ষায় রইলাম।

কনফুসিয়াস এর ছবি
এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সমালোচনা দরকার এই উদ্যোগের। সবাই পজেটিভ দিকগুলোর প্রশংসা করলে চলবে না।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমি আরেকটু যোগ করতে চাই। সেটা হলো বই যেহেতু অনলাইনে প্রকাশিত হবে, এর পেছনে অনেকের খাটাখাটুনিও হবে। শুধু একটা বই ওয়ার্ডে লিখে তার পিডিএফ বানানো তো নয়, এর সাথে আরো দুই চার জনের শ্রম জড়িত থাকবে। তাই আমার পরামর্শ হলো একদম ফ্রি না দিয়ে খুবই কম মূল্যে ছেড়ে দিতে পারেন। মূল্য কিভাবে নির্ধারণ করা হবে সেটা জানিনা। তবে বাঙালিদের বই কেনার যে মানসিকতা তাতে ৫ ডলার ধরলে হয়তো যত পাঠক কিনবে, ২ ডলার হলে তারচে বেশী পাঠক কিনতে পারে। যদিও ২ডলার কোন মূল্যই না, তবুও একটা টোকেন মানি। একেবারে মাগনা দিলে পাবলিক ঠোঙা বানায়, তাই একটা বিনিময় আরকি।

ভেবে দেখতে পারেন।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

পিপি'র সাথে সহমত। তবে এটা নির্ধারিত না করে পাঠকদের উপর ছেড়ে দেয়া ও যেতে পারে। যারা চাইলো তাদের জন্য সুযোগ থাকতে পারে আর্থিক সহযোগীতার।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

২ ডলার পাঠানো একটা বিরাট হাঙ্গামা। সেটা রিসিভ করাও আরেক হাঙ্গামা। পাঠক যেটা করতে পারেন, এককালীন বা বাৎসরিক সহযোগিতা করতে পারেন প্রকাশায়তনকে। ধরা যাক বছরে প্রকাশায়তন থেকে ৪০টি বই বের হলো। পাঠক প্রতিটির প্রতীকী মূল্য ১ ডলার ধরে ৪০ ডলার পাঠিয়ে প্রকাশায়তনকে প্রণোদনা দিলেন। প্রকাশায়তনে তাঁকে একজন পৃষ্ঠপোষক হিসেবে স্বীকৃতিও দেয়া যেতে পারে নামধামসহ। যিনি দিতে পারছেন না এই মুহূর্তি, তিনি পরে দেবেন যখন সাধ্য হবে। কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

আগে রাজারা কবিসাহিত্যিক পালতেন দরবারে। এখন পাঠকরা পালবেন। তাঁদের প্রণোদনাতে প্রকাশায়তন এগিয়ে যাবে, নিয়মিত দারুণ সব প্রচ্ছদ-অলঙ্করণ-লেখা নিয়ে এক একটা বই বিনামূল্যে পাঠককে সরবরাহ করে যাবে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আগে রাজারা কবিসাহিত্যিক পালতেন দরবারে। এখন পাঠকরা পালবেন। তাঁদের প্রণোদনাতে প্রকাশায়তন এগিয়ে যাবে, নিয়মিত দারুণ সব প্রচ্ছদ-অলঙ্করণ-লেখা নিয়ে এক একটা বই বিনামূল্যে পাঠককে সরবরাহ করে যাবে।

চলুক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এটা সহায়তা করার একটা ভালো উপায় বটে। দেখা যাক আর কে কি বলে।

সুজন চৌধুরী এর ছবি

আমার মনে হয় বার্ষিক ৪০ ডলারটা বেশ কাজে দিতে পারে।


লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ

এনকিদু এর ছবি

ছোটকালে সেবার বইয়ের পেছনে লেখা দেখতাম "বার্ষিক সডাক" আর "ষন্মাসিক সডাক" । মনে পড়ে গেল ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

হিমু এর ছবি

আমি আমার প্রথম বইটা প্রকাশায়তন থেকে প্রকাশ করতে আগ্রহী।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

এক্ষত্রে কপিরাইটের বিষয়টি কিভাবে দেখা হবে তা বিস্তারিত জানালে ভাল হত।

প্রথমতঃ বইটির মান ভাল হলে বা সেটি পাঠক প্রিয়তা পেলে যদি কোন অসাধু ব্যবসায়ী সেটি মুদ্রণ করে বিক্রি করা শুরু করে তার বিরুদ্ধে কি করা যাবে ?

দ্বিতীয়তঃ ধরুন একজন ক্রেতা বা পাঠক যিনি অনলাইন থেকে টোকেন মানি দিয়ে বইটি ডাওনলোড করলেন কিন্তু সেটি থেকে কিন্তু অসংখ্য অবৈধ কপি হতে পারে যা দিয়ে অনেকই ব্যবসায়ী মুনাফা লাভ করবে। যেমন বাংলাদেশের অনেক লেখকের স্ক্যান করা বই বিভিন্ন ওয়েসসাইটে বিনামূল্যে পাওয়া যায় যা দিয়ে অনেক ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপনী সুবিধা আদায় করছে।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হিমু এর ছবি

জাহিদ ভাই, কপিরাইট তো লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত থাকবে। অন্য কেউ বিনা অনুমতিতে ব্যবসা করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ থাকবে। এরকম কোন ঘটনা ঘটলে আঁটঘাট বেঁধে একটাকে জেলের রুটি খাওয়ালে একটা উদাহরণও থাকবে। মুজিব ভাইয়ের বই চুরির সময় আমরা দেখেছি, সম্মিলিত প্রয়াস নিলে চোট্টাগুলিকে টাইট দেয়া সম্ভব।

তাছাড়া অনেকেই হয়তো একই সাথে ইলেকট্রনিক সংস্করণ আর মুদ্রিত সংস্করণ দু'টিই অবলম্বন করবেন। সেক্ষেত্রে চোরাই ব্যবসায়ীর বিপদ আরো বাড়বে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সচল জাহিদ এর ছবি

আমার টিপাইমুখ নিয়ে যে ই-বইটা লিখতে চাচ্ছি তা প্রকাশায়তন থেকে প্রকাশ করতে চাই।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আমাদের দুই সচল প্রকাশক আহমেদুর রশীদ ( শুদ্ধস্বর) ও নজমুল আলবাব( শস্যপর্ব) 'র মতামত জরুরী।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

একমত।

হিমু এর ছবি

আমি আয়োজকদের অনুরোধ করবো, অর্থাভাবে মুদ্রিত বইয়ে যেসব ইনোভেটিভ পদক্ষেপ নেয়া যায় না, ইলেকট্রনিক বইতে সেগুলি নিন। ডিজাইন একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। ই-বুক ডিজাইনকে পেশাদারি পর্যায়ে উন্নীত করার সুযোগ আছে আপনাদের হাতে। দারুণ সব প্রচ্ছদ, ইলাসট্রেশন দেখতে চাই এক একটা বইতে। আপনাদের কারো হাতে যদি রিচার্ড ডকিন্সের দ্য অ্যানসেস্টর'স টেইলের হার্ড কাভার থেকে থাকে, একটু দেখবেন সময় করে, কী দুর্দান্ত ডিজাইন!



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

মামুন হক এর ছবি

ভালো উদ্যোগ।
টাকা পয়সার ব্যাপারটা নিয়ে আরও ভাবার অবকাশ আছে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনার ভাবনাটুকু বিস্তারিত বলেন।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চলুক ভাল উদ্যোগ , শুভ কামনা ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সচলায়তনকে হঠাৎ করেই আমার কাছে গুগলের মতো কৌশলবাজ মনে হচ্ছে যারা নিত্য নতুন জিনিস তার ইউজারদের সামনে নিয়ে আসে। ফলে অজান্তেই তারা মনের ভিতরে লুকিয়ে থাকা জিনিসগুলোকে সামনে তুলে নিয়ে আসতে প্রলুব্ধ করছে।

বই বের করার কথা কখনোই সেভাবে চিন্তা করিনি যেমনটা এই মুহূর্তে করছি। অনেক দিন ধরেই আমার বিষয়ের উপর দুটা দরকারী বই (জাতীয় জিনিস) তৈরীর একটা চিন্তা ছিল। আজ এক্ষণে মনে হচ্ছে সেটার বাস্তবায়নে মন দিতে হবে।

প্রশ্ন হচ্ছে, ইংরেজীতে লেখা বই কি প্রকাশ করবেন? একটা বই আমি বাংলায় হয়তো করতে পারবো, কিন্তু আরেকটা বই (গণিত বিষয়ক-- গ্রাফ, লিমিট এসব থাকবে) বাংলায় করতে আমি নিমরাজী। প্রকাশায়তন যেহেতু প্রকাশনার কাজ করবে, তাই ধারণা করছি ভাষা কোন বাধা হয়ে দাঁড়াবেনা।

আবু রেজা এর ছবি

উত্তম ঝাঝা!
নতুন উদ্যোগ নতুন উদ্যম!!
বেশ ভালো, এগিয়ে যান।
আগে বা পিছে নয়, সঙ্গে আছি।
*********************************************************
জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ভালো উদ্যোগ ... অনেকদিন ধরেই টুকটাক চিন্তা করছিলাম বিষয়টা নিয়ে ... সচলায়তন থেকে উদ্যোগ নেয়া হলে চমৎকার হবে

কিছু পয়েন্ট ভেবে দেখতে পারেন:
১। কপিরাইট লঙ্ঘনের ব্যাপারটা বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ ... ফটোকপি তো বটেই, এমনকি মূল বই দেখে দেখে পুরোটা ছেপে ফেলার অভিযোগও শুনি প্রায়ই ... বিশেষ করে কোলকাতার বইগুলোকে নিয়ে বাংলাবাজারে যা তা হয় ... প্রকাশায়তনের বাংলাদেশে নিবন্ধিত প্রকাশনা সংস্থা হওয়া জরূরী, যে অবস্থান থেকে চোরাদের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া যায়

২। বিনামূল্যে দেয়ার চেয়ে উপরে প্রস্তাবিত একটা বাৎসরিক চাঁদার ব্যবস্থা থাকা ভালো। ঐচ্ছিকের চেয়ে আবশ্যক করে দেয়া বেটার। দেশভেদে মানুষের গড় বাৎসরিক আয়ের উপর ভিত্তি করে চাঁদার পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে, যেমন আমেরিকায় ৫০ ডলার হলে বাংলাদেশে ৫০০ টাকা।

৩। লেখকরা শুধু টেক্সট অংশটিই প্রকাশায়তনকে দেবেন, প্রকাশায়তন সেটাকে অনলাইন বইয়ের রূপে পরিণত করবে -- ঠিক? এক্ষেত্রে প্রকাশায়তনের ডিজাইনার'স প্যানেল থাকা ভালো যারা সেমি-ভলান্টিয়ারী পদ্ধতিতে কাজ করবেন। অর্থাৎ, ডিজাইনারকে যথাযথ পারিশ্রমিক না দেয়া গেলেও পাঠকদের বাৎসরিক চাঁদা থেকে একটা সম্মানী দেয়া হবে। এটা প্রকাশায়তন আর ডিজাইনার প্যানেলের মধ্যে বোঝাপড়ার মাধ্যমে ঠিক করা যেতে পারে। ডিজাইন কেমন হবে সেটা লেখক আর ডিজাইনার মতামত আদান-প্রদানের মাধ্যমে ঠিক করবেন।

৪। আমাজনের kindle বা সনি'র reader সম্ভবতঃ ধীরে ধীরে বই পড়ুয়াদের ব্যাগে স্থান করে নেবে। এধরনের ডিভাইসে সহজেই ডাউনলোড করে নেয়া যাবে এমন ফরম্যাটিংয়ের ব্যাপারটিও ভেবে দেখার দাবী রাখে। সবচেয়ে ভালো হয় মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে পড়া যাবে এমন ফরম্যাটিং করতে পারলে। (জাপানে এখন কাগজের চেয়ে মোবাইলে গল্প/উপন্যাস বেশী পড়ে লোকে, এমনকি এখানকার মার্কেটে আমাজন/সনি'র মূল মাথাব্যাথা এই মোবাইলফোন-কাম-গল্পের বইয়ের প্রচলন)

৫। এ্যাডভার্টাইজিং জরূরী। প্রকাশায়তন বলে যে একটা অনলাইন বইয়ের ভান্ডার আছে এটাকে প্রচার করতে হবে, ধীরে ধীরে সম্ভব হলে মূল মাধ্যমগুলোতে। সেজন্য হলেও বাৎসরিক চাঁদা সিস্টেম করা উচিত। প্লাস অন্যান্য বাংলা/বাংলাদেশ সম্পর্কিত ওয়েবপেজগুলোর সাথে সিমবায়োটিক প্রসেসে পারস্পরিক বিজ্ঞাপণ চালানো যেতে পারে।

৬। গুগল-বুক পৃথিবীর তাবৎ বইগুলোকে ডিজিটাইজ করায় হাত দিয়েছে, যেসব বইয়ের কপিরাইট টার্ম এক্সপায়ার করেছে সেসব তো বটেই, এমনকি বর্তমানে যেসব ছাপা হচ্ছে বা মার্কেটে আছে সেগুলোর লেখকদেরকেও তারা এ্যাপ্রোচ করছে যে অনলাইনের মাধ্যমে বইটিকে ছড়িয়ে দেবে কিনা। প্রকাশায়তনে প্রকাশিত বইকে একটা নির্দিষ্ট সময় পর (ধরুন ছ'মাস) গুগল-বুকে দিয়ে দেয়ার ব্যাপারে কিছু করা গেলে আরেকটা চমৎকার ব্যাপার হবে। এতে সবচেয়ে লাভবান হবেন লেখকরা।

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি
দিগন্ত এর ছবি

প্রতিটি প্রস্তাবই অসাধারণ ... সম্পূর্ণ সমর্থন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আরেকটা বুদ্ধি আসছে ... (আমি কিছুটা এক্সাইটেড চোখ টিপি)
প্রকাশায়তনের সাথে বাংলাদেশের (এবং বিদেশেরও যদি ইন্টারেস্টেড হয় কেউ) লাইব্রেরীগুলোর একটা কোলাবরেশনের প্রচেষ্টা নেয়া যেতে পারে... জানিনা
দেশের লাইব্রেরীগুলোতে কম্পিউটার ব্যবহার কিরকম হচ্ছে ... তবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল আর্কাইভিং আর সার্ভিসে তাদের উদ্বুদ্ধ করাও একটা বড় ব্যাপার হতে পারে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

দূর্দান্ত উদ্যোগ। সঙ্গে আছি অবশ্যই। যে কোনো কাজে।

দূর্দান্ত সব বই নিয়ে পূর্ণ হয়ে উঠুক প্রকাশায়তন। কাগুজে প্রকাশনা শিল্পের হুমকি হয়ে উঠুক।
শুভকামনা। আমি নিশ্চিত বিশ্বাস করি, এখান থেকে অসাধারণ কিছু লেখকের জন্ম হবে।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

স্বাধীন এর ছবি

আমি একটু দ্বিমত প্রকাশ করছি বাৎসরিক বা বই প্রতি কোন টোকেন মানি নেওয়ার ক্ষেত্রে। নতুন লেখকের উদ্দেশ্য যেহেতু থাকে খ্যাতি বা যশ এবং সে নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে হলেও বই ছাপিয়ে থাকে, তাই এ ক্ষেত্রেও নতুন লেখকেরা খরচটি বহন করতে পারবেন বলেই আমার মনে হয়। পাঠক প্রতি টাকা না নেওয়ার থেকে বরং ভাল হবে যদি চল্লিশজন নতুন লেখকেরা খরচটি ভাগাভাগি করে নেন। আর ই-বই সম্পাদণার খরচ আশা করি কমই হবে।

কেন বলছি, তা হলে অনেক বেশি পাঠক পাওয়া যাবে। আবার কেউ একজন টাকা দিয়ে ডাউনলোড করে সেটা ফ্রি বিতরণ করলে আরেকজন যিনি পড়ছেন তিনি ফ্রি পড়ছেন। আবার ডাউনলোডের ক্ষেত্রে যদি বেশি কড়াকড়ি করি তবে আমরা পাঠক সংখ্যা হারাবো। তাই আমি পাঠকের উপর কোন প্রকার কর দিতে চাই না। যদি কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে টাকা প্রদান করতে চায় তা ভিন্ন। তবে সে রকম ডোনেশন আমরা নিব কিনা সেটাও আলোচনার দাবী রাখে।

উদ্যোগ সফল হোক এই প্রত্যাশা করি।

হিমু এর ছবি

সেটাই।

তবে যা বুঝতে পারছি, উচ্চাকাঙ্খী উদ্যোগের জন্যে পাঠকদের আর্থিক প্রণোদনা জরুরি প্রকাশায়তনের জন্যে। ইনভেস্টমেন্ট এখানে সরাসরি মানের ওপর প্রভাব ফেলবে। তবে এই প্রণোদনাকে বাধ্যতামূলক না করাই শ্রেয়। আমি বিশ্বাস করি, কম হোক বা বেশি, প্রকাশায়তনের এই উদ্যোগকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার মতো পাঠকের সংখ্যা পৃথিবীতে নিতান্ত নগণ্য হবে না।

আমি পাঠক হিসেবে চাইবো, প্রকাশায়তন যেন পেশাদারিত্ব নিয়ে এক একটা পিস অব আর্ট প্রকাশ করে, এবং এই উদ্যোগ বছরভর চলমান রাখে। অর্থ প্রয়োজন হলে আমি যথাসাধ্য সহায়তা করতে প্রস্তুত।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

সঞ্চারিণী এর ছবি

খুব ভালো উদ্যোগ

সবজান্তা এর ছবি

গত পরশুদিনই একটা চিন্তায় মাথায় ঘুরছিলো। সচলায়তন সংকলনে যেহেতু সকল সচলেরই একটি করে লেখা নির্বাচিত হয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে সচলায়তনের লেখক বৃদ্ধির হার যেহেতু সন্তোষজনক, ফলে এ বছর কিংবা তার পরের বছরগুলিতে সচলায়তন সংকলনের আকৃতি এবং মূল্য কী রকম হতে পারে। সামহোয়্যার ইন ব্লগ যেমন নির্বাচিত লেখকদের লেখা নিয়ে "অপরবাস্তব" সিরিজ বের করেন, তেমনটা করলে অবশ্য অনেক লেখকই বই বের হওয়ার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন।

সামনের বছরগুলির কথা চিন্তা করে মনে হচ্ছে, সচলায়তন সংকলন বের করার ক্ষেত্রে প্রকাশায়তনের এই নতুন রূপ কাজে লাগবে।

এই বিষয়ে নতুন কোন পয়েন্ট মাথায় আসলে এখানে জানাবো ( যেহেতু প্রায় সব কথাই মন্তব্যের ঘরে উঠে এসেছে)। আপাতত শুধু এই উদ্যোগের জন্য শুভ কামনা জানিয়ে গেলাম।


অলমিতি বিস্তারেণ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সচল সংকলন নিয়ে সবজান্তার কথায় মনে হলো, সচলায়তনের পাতায় পাতায় অসংখ্য দুর্দান্ত লেখা জড়িয়ে আছে। পেছনের পাতায় চলে যাওয়ায় অসামান্য এই লেখাগুলো হয়তো আর পাঠক পাবে না। এই লেখাগুলোকে বিষয়- বা লেখক-ভিত্তিক ভাবে আর্কাইভ করার ক্ষেত্রে প্রকাশায়তন কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

গত সংকলনে ৯২ জন লেখকের লেখা প্রকাশিত হয়েছে (চৈনিক উষ্ঠা গণনায় নিলে ৯৩ চোখ টিপি )। এঁদের প্রত্যেকেরই অন্তত গোটা পাঁচেক প্রকাশযোগ্য লেখা আছে। এই লেখাগুলো নিয়ে চমৎকার সব ইবুক হতে পারে। মৌলিক লেখার প্রবাহ অবশ্যই থাকবে, তবে তাই বলে স্বর্ণাক্ষরে বাঁধিয়ে রাখার মতো লেখাগুলোকে অবহেলা করা ঠিক না।

উদাহরণঃ গোয়েন্দা ঝাকানাকা, আদমচরিত, কামরাঙা, অণুগল্প, গাড়ি চলে না, ইত্যাদি সিরিজের অনেক ভালো লেখাই স্থান পায়নি লেখকপ্রতি একটি লেখা নেওয়ায়। এগুলো নিয়ে কী দারুণ সব বই হতে পারে!!

প্রকাশায়তন গ্রুপ তাঁদের কাজ নিয়ে মাথা ঘামান গিয়ে। আমার মনে হয় বাকি সচলেরা মিলে একটা গেরিলা আক্রমণ করতে পারি এদিক দিয়ে। চোখ টিপি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

চৈনিক উষ্ঠা
হো হো হো

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

অর্থায়ন জরুরী, কিন্তু বিশ্বাস জরুরী তার চেয়েও বেশি। আমি বিশ্বাস করি যে প্রকাশায়তন মানসম্মত কিছু বই দেবে। এই বিশ্বাস থেকেই আমি প্রকাশায়তনের বই কিনে পড়বো। তবে, প্রাথমিক অবস্থায় সবার সেই বিশ্বাসটুকু না থাকাই স্বাভাবিক। সম্ভব হলে কিছুদিন বিনামূল্যে বই প্রকাশ করে দেখা যায়। যদি একেবারেই কোনো আর্থিক সহায়তা না আসে, তাহলে ধরে নেবেন এটা প্রোমোশনাল ডিসকাউন্ট ছিলো। খাইছে তখন নাহয় বকেয়া সহ উশুল করে নিয়েন।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

সাধু উদ্যোগ চলুক

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

প্রকাশায়তন কি মানের লেখাকে বই হিসেবে কবুল করবে সেটা জানি না। আমার কয়েকটা লেখা যদি সেই মান অর্জন করে বা করার আভাস ধারণ করে, তাইলে আমিও প্রকাশ করতে পারি।
আমার মনে হয়, এই ক্ষেত্রে আমি কতোটা চাইলাম তার চে বড় হচ্ছে আমি কতোটা প্রকাশযোগ্য লেখা লিখলাম, না কি ভুল বললাম?!

যে কেউ চাইলেই কি লেখা ছাপাতে পারবে? যদি পারে তাহলে বিষয়টা কি প্রকাশায়তনের গুডউইলের জন্য ক্ষতিকর হবে না?!

যদি আমি বিষয়টি পরিস্কার করে থাকি তাহলে ২য় প্রশ্ন হচ্ছে, মান যাচাইয়ের কাজটি কারা করবেন?

আশা করি ২ টা প্রশ্নই প্রসঙ্গিক হয়েছে।
আর সবশেষে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। যারাই এটা ভেবে থাকুক না কেন, তাদের বুদ্ধি শুদ্ধির তারিফ করছি। ফাটফাটি আইডিয়া বলা বাহুল্য!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

একশো ভাগ সমর্থন তিনটা প্রস্তাবনাসহ

এক. ইবুকের ফর্মেটটাকে আরো রিডার ফ্রেন্ডলি করা (এখন পর্যন্ত যা দেখেছি পড়া বেশ কষ্টকর)

দুই. প্রকাশনার সময় মাথায় রাখা দরকার লেখক যাতে প্রিন্ট না করে স্ক্রিনেই সাবলীলভাবে পড়তে পারে
(প্রিন্ট করে পড়বো বলে রেখে দিয়ে রেখে দিয়ে পড়া হয়নি এমন বইয়ের সংখ্যা অনেক আমারই)

তিন. প্রকাশনার অনিবার্য অংশ হিসেবে কন্টেট এডিটিংএর অংশ বাধ্যতামূলকভাবে রাখা

(বাংলাদেশের প্রকাশকরা টেক্সট বদার করে না আর সম্পাদকরা বড়োজোর সূচিপত্র তৈরি করার মধ্যে নিজেদের দাযিত্ব শেষ করে)

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এক আর দুই পয়েন্টদুটো নিয়ে আরেকটু বিশদ বলেন তো লীলেন্দা। পিডিএফ রিডার-এ পড়লে তো স্ক্রীনে সমস্যা হবার কথা না।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

সবজান্তা এর ছবি

এই জিনিসটা সম্ভবত অভ্যাসের কারণে। পিডিএফ পড়াটা আসলে অভ্যাসের ব্যাপার। কিছুদিনের অভ্যস্ততা না হলে চট করেই বড় পিডিএফ পড়া যায় না।

যদি পিডিএফ রিডারে কেউ পড়তে চান, একটু আরামে পড়া যায়, ctrl+L চেপে ফুল স্ক্রীন করে, এর পর ctrl + / - চেপে ফন্ট ছোট বড় করে একটু আরামে পড়া যায়।

তবে এছাড়াও কিছু প্রফেশনাল বুক রিডার আছে, সেগুলোতেও পড়ে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। কারণ সেগুলি ফন্ট ছোট বড় সহ আরো অনেক সুবিধা তো দেয়ই, একই সাথে এক ধরনের ইফেক্টও দেয় পেজের মধ্যে। মনে হয় একদম আসল বই পড়ছি।

তবু বলবো, ই-পাঠক গোষ্ঠীর গ্রোথ কিন্তু এই অভ্যাসের উপরই নির্ভর করবে। সবাই শুরুতেইএ ফরম্যাটে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে বলে মনে হয় না।


অলমিতি বিস্তারেণ

হিমু এর ছবি
ধুসর গোধূলি এর ছবি
কীর্তিনাশা এর ছবি

অসাধারণ উদ্যোগ। সঙ্গে থাকতে আগ্রহী.........

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

নৈষাদ এর ছবি

প্রকাশনা শিল্প এবং ই-বুকের টেকনিক্যাল ব্যাপারে আমার ধারনা বেশ কম। তবে এই ভালো উদ্যোগের আর্থনৈতিক দিকটাতে কিছুটা আলোকপাত করতে পারি।

প্রথমে আসি মোড অভ পেমেন্ট। প্রবাসীরা ইন্টারনেটে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারেন। বাংলাদেশীদের জন্য ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ইন্টারনেটে লেনদেন করা খুবই কঠিন। বিদেশে গিয়ে লেনদেন করা সম্ভব, কিন্তু ইন্টারনেটে লেনদেন করতে হলে USD RFCD A/C থাকতে হবে, (Standard Chartered Bank এর ভাষ্য অনুযায়ী) যা খুব কম মানুষের পক্ষেই সম্ভব। তাহলে দেখা যাচ্ছে প্রতি পাঠকের কাছ থেকে মূল্য নিতে হলে 'ভার্চুয়াল অফিস' দিয়ে হবে না, একটা ভৌত কাঠামো থাকতে হবে।

আমার মনে হয় প্রাথমিক পর্যায়ে, সাবজেক্ট টু নীতিমালা, পাঠকের প্রণোদনাকে বাধ্যতামূলক না করাই শ্রেয়। প্রকাশায়তনের উদ্যোগকে আর্থিক সহযোগীতার দেয়ার মতো প্রাথমিক পাঠক পাওয়া যাবে। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বাধ্যতামূলক পেমেন্টের ব্যবস্থা চালু করা যায়।

সাবজেক্ট টু নীতিমালা, আরো দু'টা পয়েন্টঃ

* জ্বিনের বাদশার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে (... জানি না দেশের লাইব্রেরীগুলোতে কম্পিউটার ব্যবহার কিরকম হচ্ছে...) বলতে পারি যে পি, এম অফিসের একটা ইউনিট আছে, A2I , UNDP funded, যেটা এধরনের ব্যাপারে ইন্টারেস্টড।

* মোবাইল ফোন কোম্পানী গুলো ইন্টারনেট বেইজড কন্টেন্ট/লাইফ স্টাইল নিয়ে ইন্টারেস্টড, প্রাথমিক সহযোগীতার সম্ভাবনা খুব বেশী।

জাহেদ সরওয়ার এর ছবি

চমতকার। সহমত। এতে করে প্রকাশক নামধারী মধ্যসত্ত ভোগী তথা ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের কাছেও ধুরুধুরু বুকে তরুণদের আর যেতে হবেনা।

*********************************************
আমার আত্মা বোমায় দু'হাত উড়ে যাওয়া কোনো আফগান শিশুকন্যা।

*********************************************

স্নিগ্ধা এর ছবি

ভালো উদ্যোগ, নিঃসন্দেহে!

আমি নিজে বই পড়ার ব্যাপারে খুবই পুরনোপন্থী - আমার প্রথম পছন্দ 'হাতে বইটা ধরে, পড়া'। যে সব বই 'বই' আকারে পাওয়া সম্ভব, সাধারণত সেগুলো আমি কম্পিউটারে পড়ি না, দরকার হলে বইটা হাতে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করি।

তার মানে এই না যে, সুন্দর ডিজাইনে করা ই-বুক দেখলেও আমি পড়বো না। তার মানে এটাই যে, যেসব বই ভালো লাগবে সেগুলো 'বই' হিসেবে ছাপা হলে আমি পয়সা খরচ করে সেটা কিনবো - আগে পড়া হলেও।

একইভাবে, যেসব ই-বুক পড়ে ভালো লাগবে না সেগুলো কিনবো না। ই-বুক হিসেবে পড়ার এই সুযোগটা না থাকলে যদিও কিনতাম - নবীন লিখিয়ে কী লিখলেন, কেমন লিখলেন - এই কৌতূহলবশতঃ। অতএব, একদিকে যেমন কোন কোন নবীন লিখিয়ের বই ইতোমধ্যেই মূল্য-সংযোজিত অবস্থায় বাজারে আসছে, একইসাথে কারো কারো ক্ষেত্রে বিক্রী কম হবার ঝুঁকিটা একদিক থেকে বাড়ছে (আমার মতো পাঠকদের কাছে/জন্য)। এখন ভালো লাগা ব্যাপারটা যেহেতু আপেক্ষিক, আমি যার বই কিনবো না বলে সিদ্ধান্ত নিলাম - তারই বই হয়তো দেখা যাবে প্রচন্ড পাঠকপ্রিয়তা পেয়ে উচ্চমূল্য সংযোজিত অবস্থায় প্রকাশিত হচ্ছে। অর্থাৎ - হরে দরে কাশ্যপ গোত্র - ইভেন আউট হয়ে যাবে হয়তো।

আমাদের দুই সচল প্রকাশক - আহমেদুর রশীদ আর নজমুল আলবাব এ ব্যাপারে কী বলেন?

বাৎসরিক প্রণোদনার ব্যাপারটা খুবই জরুরী। বাধ্যবাধকতার তো কিছু নেই, যিনি পারবেন, দেবেন। না পারলেই বা কী অসুবিধে!

ই-বুক যদি সিরিয়াসলিই বের করা হয়, এর ডিজাইনের ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া উচিত - আমার মত রক্ষণশীল পাঠককে আকৃষ্ট করার জন্য হাসি

যে কোন ধরনের সহযোগিতায় আগ্রহী। অবশ্যই জানাবেন।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অসামান্য উদ্যোগ। চলুক
যে কোনো প্রয়োজনে পাশে আছি।

স্নিগ্ধাপু'সহ বেশ কয়েকজনের সাথে ডিজাইনের ব্যাপারে একমত। দেখতে অবশ্যই সুন্দর হওয়া চাই, যেন চোখ পড়লে আপনাআপনি পড়ার আগ্রহ তৈরি হয়।

পুতুল এর ছবি

সবাই সব কথা বলে দিয়েছে। খুব সময় উপযোগী পদক্ষেপ।
আমার শেরালী বইটা প্রকাশের জন্য জমা দিলাম।
ইমেল ঠিকানা পেলে ওর্য়ড কপি পাঠিয়ে দেব।
পিডিএফ আর সচলায়তনে দেবো না। একেবারে ইবুকটাই সবাই পড়ুক।

**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অমিত আহমেদ এর ছবি

প্রথমেই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
এবারে কিছু কথা।

১) প্রকৃতিপ্রেমিক'দার সাথে নীতিগত ভাবে একমত। বই কিনে পড়তে হলেই ভালো। দাম হতে পারে বইপ্রতি $1.50। টাকা লেনদেন হতে পারে পেপ্যালে। একথা সত্যি বই অনলাইনে দিলে সেটা অন্য নানান সাইট ও ইমেইলে চালাচালি হবে। সেক্ষেত্রে অনেকেই বিনামূল্যে পাবার জন্য অপেক্ষা করে থাকতে পারেন। তবে সেটা আমাদের বিবেচ্য হওয়া উচিত নয়। যাদের কিনে পড়ার কথা তারা কিনেই পড়বেন। তবে ব্যাপারটা লেখকের উপরেও ছেড়ে দেয়া যেতে পারে। তিনি চাইলে বই বিনামূল্যেই দেয়া হবে।

২) বাৎসরিক চাঁদা টাইপ ব্যাপারে আমি একদম একমত নই। ঐচ্ছিক হোক আর যাই হোক, এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি কিংবা মুখ কালাকালির ব্যাপার থাকবে। টাকা দিয়ে অনেকেই গলাবাজি করবেন। অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্বেও দৈন্যতার কারণে টাকা দিতে না পেরে মানসিক কষ্টে থাকবেন। অনেকের কাছেই একটানে $40.00 দেয়া সম্ভব নয়।

৩) আমি ধরে নিচ্ছি এই উদ্যোগ শুধু সচলদের জন্য নয়। যদি শুধু সচলদের জন্য হয়ে থাকে তাহলে এই উদ্যোগের তেমন ব্যাপক কার্যকারিতা দেখছি না।

৪) বই এর মান যাচাই বাছাই এর জন্য কমপক্ষে তিন থেকে চার সদস্যের একটা প্যানেল দরকার। মান একদম কড়ায় গন্ডায় যাচাই করে নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সচলের বই বাদ যেতে পারে, আবার মান ভালো হওয়ায় অন্য কারো বই উৎরে যেতে পারে। সচল সদস্য মানেই যে তার বই প্রকাশিত হবে সেটা যেনো না হয়। বই এর মানটা খুব জরুরি, কারণ মান ভালো হলেই কেবল এই উদ্যোগ সফল হবে, ভালো লেখকেরা (হয়তো পাতি-জনপ্রিয় লেখকেরাও) প্রকাশায়তনের লেবেলে বই প্রকাশে আগ্রহী হবেন। পাঠকেরাও কেবল প্রকাশায়তনের নাম দেখেই একটি অচেনা লেখকের বই পড়া শুরু করবেন।

৫) প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন এসবে প্রোফেশনাল হতে হবে। কাজ হতে হবে ঝকঝকে তকতকে।

৬) বইগুলোর জন্য আলাদা সাইট করলে ভালো। সেখানে কেনাকাটাও হবে, বইয়ের তালিকাও দেখা যাবে। সেখানে সদস্য হয়ে বিনামূল্যে ডাউনলোড না করেই এমবেডেড রিডারে বই পড়া যাবে (অনেকটা গুগল রিডারের মতো)।

৭) মোবাইলের জন্য আমরা নিজেরাই একটা রিডার এপ্লইকেশন বানাতে পারি। কিংবা জনপ্রিয় কোনো এপ্লিকেশনের স্ট্যান্ডার্ড মেনে। কম্পিউটারে পড়ার সুবিধার জন্যও একটা রিডার বানানো যায়। শুধু বই পড়ার জন্যই। আমাদের প্রোগ্রামার সচলেরা চাইলে করতে পারেন। এটা একটা চিন্তা। কিন্তু আমার পিডিএফ এ সমস্যা হয় না। সবজান্তা যেমন বললেন, এটা অভ্যাসের ব্যাপার।

এখন এটুকুই। পরে কিছু মনে পড়লে আবার বলবো।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

৩) আমি ধরে নিচ্ছি এই উদ্যোগ শুধু সচলদের জন্য নয়। যদি শুধু সচলদের জন্য হয়ে থাকে তাহলে এই উদ্যোগের তেমন ব্যাপক কার্যকারিতা দেখছি না।

আমি ধরে নিয়েছিলাম এ উদ্যোগ শুধু সচলদের জন্যই।
আচ্ছা অমিত, এ উদ্যোগ শুধু সচলদের জন্য হলে - 'তেমন ব্যাপক কার্যকারিতা' থাকবে না কেনো?

অমিত আহমেদ এর ছবি

একটা সীমানার মধ্যে ব্যাপারটা বেঁধে ফেলা হবে। একজন ভালো কবি বা লেখককে প্রকাশায়তনে বই দিতে হলে আগে সচল হতে হবে, তারপরে প্রকাশায়তনে বই দিতে হবে।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

'একজন ভালো কবি বা লেখক'এর সচল হতে আপত্তি কোথায়?
সীমানা নির্ধারণ না করে দিলে সচলায়তনের প্রথম পাতা যেমন ফ্লাডারদের পোস্টে ডুবে যেতো, তেমনি প্রকাশায়তন উন্মুক্ত করে দিলে 'আপলোডার'দের ভারে ন্যুজ হওয়ার আশংকা করি।
একটি অব্যবসায়িক উদ্যোগের পক্ষে এমন ভার নেয়া সম্ভব কিনা সেটি ভাবনার বিষয়।
এ জন্যই সীমানাটা থাক, এমনটি চাইছি।

অবশ্য যাঁরা সীমানা পেরুতে চান এবং পারেন, তাদের জন্য করতালিতে আপত্তি করবো না। হাসি

অমিত আহমেদ এর ছবি

আপত্তি থাকতেই পারে। লেখক মানেই ব্লগার তা তো নয়। আর এমনো না যে চাইলেই সচল হয়ে যাওয়া যাচ্ছে। সচল হতে অপেক্ষা করতে হয়। এগুলো সবই হবে একজন লেখক ও কবির বই প্রকাশের ক্ষেত্রে বাধা। আমাদের উদ্যোগের মূল কারণই তো প্রকাশনা থেকে বাধা দূর করা।

প্রথম পাতার সাথে প্রকাশায়তনের তুলনা ঠিক হচ্ছে না কারণ এমন না যে বই জমা দিলেই সেটা প্রকাশিত হচ্ছে। মান যাচাই করে প্রকাশিত হবার মতো বই-ই প্রকাশ করা হবে।

অব্যবসায়িক উদ্যোগে এমন ভার নেয়া সম্ভব নাকি সেটা অবশ্য আলোচনা করা যায়। তবে আমরা পারবো না এমনটা আগে থেকে ভেবে রেখে অন্যের জন্য করতালি বরাদ্দ রাখলে অবশ্য কিছু বলার নেই হাসি


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

অব্যবসায়িক উদ্যোগে এমন ভার নেয়া সম্ভব নাকি সেটা অবশ্য আলোচনা করা যায়।

সেই আলোচনাটা করা গেলে এবং কোনো সিদ্ধান্ত পৌঁছা গেলে অবশ্যই তালি গোনার অবসর পাওয়া যাবে চোখ টিপি

অমিত আহমেদ এর ছবি

হা হা হা। ঠিকাছে। দেঁতো হাসি

আমি আসলে ভাবছিলাম আন্তর্জাতিক কনফারেন্সগুলোর কথা। তাদের ছকে আমরা বই সিলেক্ট করতে পারি। লেখক যখন আপলোড করবেন তখন কিছু ক্যাটেগরির আওতায় জমা দিতে হবে। সেই ক্যাটেগরি ধরে আমরা বইগুলো নির্বাচকদের (ধরলাম মোট নির্বাচকের সংখ্যা ৪০) কাছে পাঠিয়ে দেবো। যেমন ধরলাম সচল-১ বললেন তিনি মাসে চারটি গল্পের বই যাচাই করে দেবেন। তাকে আমরা চারটি বই পাঠিয়ে দিলাম। একই বই আরো দুই জনকে (সচল-৪, সচল-২২) পাঠালাম। সবাই লেখার মান, গল্পের প্লট, ইত্যাদিতে ১ থেকে ১০ এর মধ্যে নাম্বার দেবেন। পরে গড় করে যদি রেট ৭ এর উপরে যায়, সেই বই প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত হবে। আর প্রতি ক্যাটেগরির জন্য একজন করে তিন-চারজন (গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ইত্যাদি) প্রধান নির্বাচক থাকতে পারে যারা শুধু প্রাথমিক ভাবে নির্বাচিত বইগুলো থেকে বাছাই করবেন।

বই জমা দেবার সময় দেয়া থাকবে ধরলাম একমাস বা দুই মাস। আর সর্বোচ্চ বই জমা নেয়া হবে ধরলাম ১০০টা। সেক্ষেত্রে আপলোড সংখ্যা ১০০ পেরুলে, কিংবা সময়সীমা পেরুলে আর বই জমা নেয়া হবে না। এভাবে গৃহিত বই এর সংখ্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

এগুলো শুধুই আমার ভাবনা জানালাম।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফ্লিকার | ইমেইল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ভাবনাগুলো খুবই ভালো লাগলো। চলুক

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আমি ধরে নিয়েছিলাম প্রকাশায়তন সচলভিত্তিক কোন প্রকাশনা হবেনা। ফলে সবার জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে। আমার মতে এটি উন্মুক্তই হওয়া উচিত। যে কেউ যেন বই প্রকাশের উদ্দেশ্যে জমা দিতে পারে। তারপর এর প্রকাশযোগ্যতা যাচাই করা যেতে পারে।

যদি সচলের জন্যই প্রকাশায়তন হয় তাহলে এই পোস্টের শুরুতে যে এত কথা সেটা গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে, এবং লেখার মূল বক্তব্যও খানিকটা স্ববিরোধী হয় বলে মনে হয়।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমার কমেন্ট লিখে শেষ করেই দেখি অমিতের এই কমেন্টটি চলে এসেছে। প্রায় সব বিষয়েই একমত।

আমিও মনে করি বাৎসরিক চাঁদাটা না নেয়াই উচিত। তাহলে আমি তো চাঁদা দিলাম এখন আপনার প্রকাশিত লেখক ও বইগুলো আমার প্রত্যাশা মাফিক না হলে আমি মনোক্ষুন্ন হব। লেখক বেইজড চাঁদা থাকতে পারে।
ক নামের লেখকের বইয়ের মূল্য ১ ডলার। আমার আগ্রহ থাকলে কিনব না থাকলে নাই। আমি খ এর বই পড়তে পছন্দ করব, তখন শুধু খ এর বইই কিনব।

কিন্তু সমস্যা দেখা দিবে আমরা যারা বাংলাদেশে থাকি। আমি একটা বই কিনতে চাই, দাম দিতেও আগ্রহী , কিন্তু আমি পেপাল ইউজ করতে পারি না। আমাদের এমন এক দেশ, যেখানে প্লাস্টিক মানিকে গন্দম ফলের কাছাকাছি গন্য করা হয়। আমাদের কী উপায় হবে?

এই বিষয়টি চিন্তা করে কেউ কি একটু সাজেস্ট করবেন ?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

উদ্যোগ চমৎকার। আমি ভাবছিলাম আমার নিজের একটা ইবুক করব যেটা পয়সা দিয়ে পড়তে হবে পাঠককে , সেটা হয়তো ১০ সেন্ট বা ১০ পেনি কিংবা ২ টাকা, কিন্তু পয়সা দিয়েই ডাউনলোড করতে হবে।
আমি প্রকাশায়তনের জন্যও এই ব্যবস্থা প্রস্তাব করি।

কপি রাইটের বিষয়ে আমি মনে করি আমাদের দেশ এখনও এর উপযুক্ত নয়। প্রকাশায়তন যেহেতু প্রথম পর্যায়ে নতুন লেখকদের বই প্রকাশ করবে , সুতরাং এটি এই পর্যায়ে বড় সমস্যা মনে হচ্ছে না। নতুন লেখক তার পাঠকগোষ্ঠী বাড়াতে চান , সুতরাং তার বই যদি কেউ কপি করে ফ্রি বিতরন করে তাতে লেখকের মনোকষ্ট না হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর সেই বই নেট থেকে ডাউনলোড করে কোন প্রকাশক ছেপে ফেলবেন অনুমতি ছাড়া , এটা খুব বেশি ক্ষেত্রে ঘটবে না। কারন নতুন লেখকের লেখা ছাপার ব্যাপারে প্রকাশকের আগ্রহ এমনিতেই কম, খুব আলোচিত হলে সেই বইটি হয়তো প্রকাশক যোগাযোগ করেই নিয়ে যাবেন। তবে সেটা লাখে দুই চারটি ঘটতে পারে।

যে চায় সেই কি ইবুক প্রকাশ করতে পারবে ? সেক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রনের কোন বিষয় থাকবে কি না ?
আমি আশাকরি থাকবে এবং থাকা উচিত। অনেকটা সচলের সদস্যভুক্তির মতো করে বিষয়টাতে একটা মাননিয়ন্ত্রন থাকতে পারে।

প্রকাশনার মান যাতে খুব উন্নত হয়। সচলে অমিত সহ কয়েকজন কয়েকটি ইবুক করেছেন যেগুলো খুবই উন্নত প্রকাশনা।
এভাবে পুরো প্রফেশনাল এপ্রোচ চাইছি। প্রুফ রিডিং ও অন্যান্য সম্পাদনা খুবই জরুরী একটা বিষয়, খেয়াল রাখা দরকার।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

এই ব্যাপারে আমার একটু মিক্সড ফিলিংস আছে। এ কথা ঠিক যে নতুন লেখকরা পাঠকপরিচিতিকেই বেশী দাম দেবেন, এবং সে কারণে ই-বুকটি ফ্রি হওয়াই উচিত। আবার এটাও কিন্তু ঠিক যে অনেক পাঠকই ভালো বই পয়সা দিয়ে কিনতেও রাজী। তাহলে একটা জিনিস করা যেতে পারে।
কিছু কিছু বইকে মাঝামাঝি অবস্থায় রাখা যেতে পারে। অর্থাত, একটি উপন্যাসে প্রথম ছ'টা চ্যাপ্টার বিনামূল্যে প্রকাশ করা হোল। বাদবাকীটা ডাউনলোড করতে হলে কিছু পয়সা দিতে হবে পাঠককে। উপন্যাসটি যদি ভালো হয়, তাহলে দেখা যাবে যে পাঠক হয়তো পয়সা দিতে রাজী।
একজন লেখক এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে তার বইটি কেমন হবে (আধা ফ্রি, না পুরো ফ্রি)। একধরণের জুয়ো খেলা আরকি।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

পুরো প্রক্রিয়ার সফলতা নির্ভর করছে কেউ মাইন্ড বা সেন্টু না খাওয়ার উপর। ব্লগের তুলনায় অনেক বেশি চাঁছা-ছোলা সমালোচনা হবে হয়তো সম্পাদনার বিভিন্ন পর্যায়ে। সেটা নিয়ে কেউ ক্ষিপ্ত না হলেই হয়।

আমি মান নিয়ন্ত্রণের প্রসঙ্গের সাথে একমত। শুরুতে কড়াকড়িটা অনেকের ভালো না লাগলেও অনেকেই মানবেন যে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণের জন্যই সচলে ভালো লেখা আসে। এখানে লেখা জমা দেওয়ার আগে বুক দুরুদুরু করে, মনে হয় আর সবার তুলনায় খুব বাজে কিছু লিখে বসলাম কিনা। এই মানদণ্ড আরও উঁচুতে নিয়ে যাক প্রকাশায়তন।

সবার জন্যই উন্মুক্ত রাখা যায়। পিপিদা ঠিক বলেছেন। উন্মুক্ত না হলে পোস্টের শুরুতে বর্ণিত লক্ষ্যগুলো গুরুত্বহীন হয়ে যায়। একই সাথে এটাও সত্য যে, সচলের সাথে একেবারেই অপরিচিত কেউ এই মান নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ার কোনো পর্যায়ে সেন্টু খেয়ে বসতে পারেন। এই দিক থেকে শিমুল ভাইয়ের কথাও যুক্তিযুক্ত।

"সচল" হতে হবে, এমন কোনো নির্দেশনা না থাকুক। তবে, সচল-সুলভ মান নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়েই যেতে হোক।

মুদ্রণের কাজ চিরাচরিত পথেই হবে, অতএব তার বখরা ও নিরাপত্তা লেখকের দায়িত্ব। প্রকাশায়তন শুধু নতুন পাঠক তৈরি করে দেক এবং বইয়ের মান, অলংকরণ, উপস্থাপনাকে উচ্চতর স্তরে নিয়ে যাক।

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

এমন সুন্দর সবিস্তার এক অভিশংসন পর্যায়ের বিষয়-বিশ্লেষণ! এবং এমন সুভাবিত উদ্যোগ! সকলের এমন সব বিশ্লেষণী ভাবনাযোগ! এমন বড় আর সুন্দর একটা সম্ভাবনার দিগন্ত! সবই অসাধারণ!
সময়াভাবে এত পরে উঁকি দিতে পেরে এতকিছু দেখার পরে আর কিছু অ্যাড করার দুঃসাহসও বোধ হয় থাকার কথা না। মোটামুটিভাবে মন্তব্য-সহই পড়লাম সব।
অনেক ভালো ভালো সমীচীন উপযোগী ব্যাপারস্যাপার এসেছে অনেকের কাছ থেকে! অবশ্যই সমৃদ্ধ সার্থক হবে প্রকাশায়তন। সবাই মিলে যে সিদ্ধান্তই নেয়া হয়, তার অনুগমনে বরং গর্বিতই হবো অনেক।
চলুক
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমার দাবী এবং প্রস্তাবসমূহ...
১.
প্রকাশায়তন একটি পূর্ণাঙ্গ ইবই প্রকাশনা সংস্থা হয়ে উঠুক। সচলের সিস্টার কনসার্ণ হউক, সচলের মতো কঠোরনিয়মি হউক, কিন্তু সচল কেন্দ্রীক না থাকুক। প্রকাশায়তনের বিভিন্ন রঙের একাধিক সম্পাদনা পরিষদ থাকতে পারে (কবিতার জন্য, প্রবন্ধের জন্য, গল্পর জন্য, উপন্যাসের জন্য, রান্নাইবইয়ের জন্য, ফটোইবইয়ের জন্য... ইত্যাদি)। শুধু সচল না, যে কেউ সেখানে পাণ্ডুলিপি জমা দিতে পারলে ভালো। তারপর সেই পারিষদ সিদ্ধান্ত নিবে এই বই প্রকাশ হবে কী হবে না।
এতে দুইদিকেই হইলো। সচল কেন্দ্রীকও থাকলো না বিষয়টা। সচলদের অগ্রাধিকারের বিষয়টাও থাকলো না, আবার সার্বজনীনও হলো। এক্ষেত্রে মান নিয়ন্ত্রণ করবে সম্পাদনা পরিষদ। ফলে মান সম্মানটাও থাকবে আশা করা যায়।

২.
পাণ্ডুলিপি পাশ হওয়ার পরে লেখক প্রকাশক একটা ভার্চুয়াল বৈঠক হতে পারে। সেখানেই পরবর্তী কাজকাম ঠিক হইতে পারে। লেখক যদি আগ্রহ প্রকাশ করে যে বইয়ের প্রচ্ছদ ইলাস্ট্রেশন, বানান ইত্যাদি তার পছন্দের লোক দিয়ে সে করাবে। তাইলে সেই সুযোগ দেওয়া হউক। তবে এক্ষেত্রেও কাজের মান ভালো না হলে প্রকাশায়তন কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানাবে। অথবা প্রকাশায়তন দায়িত্ব নিয়ে পুরো কাজটা করাতে পারে। এসব কিছুই লেখক প্রকাশক আলোচনা সাপেক্ষে হতে পারে।

৩.
আর যদি পুরো ব্যাপারটাই প্রকাশায়তন দেখভাল করতে চায়। তাইলে বিষয়টা কঠিন হইতে পারে। ধরা যাক ২০টা বই... এই বইগুলো সম্পাদনা, প্রুফ দেখা, প্রচ্ছদ, অলঙ্করণ, আপলোড সংক্রান্ত কারিগরী কাজ... সব মিলিয়ে কম না কিন্তু। বেগাড় খাটনি এতোটা দেওয়া কঠিন হয়ে যাবে না তো?

৪.
মূল্যের বিষয়ে বাত্সরিক প্রণোদনা ব্যাপারটা ঠিক জুতের লাগতেছে না। এটাও লেখক প্রকাশক আলোচনা সাপেক্ষে হতে পারে। লেখক যদি বলে তার বই সে বিণামূল্যেই বিতরণ করতে চায়। সেক্ষেত্রে সেটা বিণামূল্যেই যেতে পারে। আবার কোনো লেখক যদি বলে বিণামূল্যে নেহি, কড়ি ফেলো। তখন সেটা বিক্রির ব্যবস্থা থাকতে পারে। বিক্রির টাকা কীভাবে সংগ্রহ করা যাবে, সে ব্যাপারে টেকিরা বলতে পারবেন। আমি ভালো বুঝি না। তবে যেটুকু বুঝতেছি যে বিদেশ থেকে কিনে পড়া সহজ, দেশ থেকে কিনে পড়া কঠিন। সেক্ষেত্রে বিদেশীরা কিনে পড়ুক, আর আমরা ফাউ পড়ি চোখ টিপি

৫.
প্রকাশায়তন নামটার সঙ্গে কোথাও ই প্রত্যয় (প্রত্যয় ফাউ কইলাম) যোগ করে দিলে ভালো হইতো। তাইলে এইটা যে কাগুজে প্রকাশনা না, ইলেকট্রনিক প্রকাশনা সংস্থা... সে ব্যাপারটা পয়লাতেই পরিষ্কার করা যাইতো।

৬.
একটা দারুণ সম্ভাবনা... কম্পিউটারে যেহেতু রঙ বিলাইতে টাকা লাগে না। তাই আসলেই দারুণ ইলাস্ট্রেশন সম্ভব। কাগজের প্রকাশনায় যা ব্যায়বহুল।

৭.
কপিরাইটের বিষয়টা ক্লিয়ার করে নিতে হবে। ইবইটা যদি পরবর্তীতে কাগজে ছাপা বই হয়ে বের হয়। তাহলে এই বইয়ের কপিরাইট আসলে কার থাকবে?
আর বইয়ের প্রচার। ধরা যাক আমার একটা ইবই বের হলো। আমি তো চাইবো সেটার প্রচার চারদিকে ছড়িয়ে যাক। এখানে কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে? ধরা যাক অন্য ব্লগ সাইটগুলোর ব্যাপারে?

৮.
আর কী কী জানি বলবো ভাবছিলাম। কিন্তু আসলে খুব ভীষণ ক্লান্ত, মনোযোগ দিয়া কিছু ভাবতে পারতেছি না। ঘুম পায়। আর কিছু মনে পড়লে বলবোনে...

৯.
আবারো শুভকামনা
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তুলিরেখা এর ছবি

খুবই ভালো লাগলো উদ্যোগটা শুনে। আমি তেমন জানিবুঝি না, তবু কয়েকটা কথা:
১। এরকম যদি হয় যে প্রকাশায়তন ভালো ভালো ই-বই প্রকাশ করতে থাকুক, ইলেকট্রনিক ভার্সনও থাকুক, ছাপা ভার্সনও থাকুক।
২। বইগুলো ন্যায্য দামটাম নিয়েই বিক্রি হোক।
৩।বিদেশের পাঠকগণ কিনুন ইলেকট্রনিক ভার্সন, দাম দিন প্লাসটিক মানিতে (তাদের পক্ষে সহজ)।
৪। দেশের পাঠকগণ কিনুন ছাপা ভার্সন, দাম দিন পেপার মানিতে (তাদের পক্ষে সহজ )।
৫। ছাপা ভার্সনে মুদ্রণ সংখ্যা খুব সীমিত করা হোক প্রথমে(মাত্র ৩০ কি ৪০ টি), পরে পাঠকচাহিদা দেখে আরো ছাপানো হোক।

অনেক শুভেচ্ছা দিলাম আর চোখ কান খুলে রইলাম।
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

তুলিরেখা,

প্রেস পাবলিকেশন সম্পর্কে আপনার জ্ঞান দেখি আমার জ্ঞানের কাছাকাছি হাসি ৩০-৪০ কপি ছাপাতে যা খরচ হবে ৩০০০ কপি ছাপাতেও শুধু কাগজের দামটা বাড়তি যাবে। ফিক্সড কস্ট মোট খরচের প্রায় ৮০ ভাগ (যতটা জানি)

হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

কন কি? চিন্তিত
আমি ছাপা ভার্সন বলতে ভেবেছিলাম ইলেকট্রনিক ভার্সনটার ছাপা রূপ। সেই ক্ষেত্রে ও কি এত খরচ হবে? এডিটিং, প্রচ্ছদ, ইলাসট্রেশন তো ই ভারসনেই হয়ে আছে, এটা শুধু কাগজে রঙচঙসমেত ছাপা হওয়া আর মলাটের খরচ। সে হলেও কি ৩০ আর ৩০০০ একই খরচ হবে?
অবশ্য আমার প্রেস পাবলিকেশন জ্ঞান এক্কেরে সক্রেতিসের কাছাকাছি। দেঁতো হাসি

----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এহ্ হে..তাহলে তো আমি বুঝতে ভুল করেছি। আপনি ছাপা বলতে যা বোঝাচ্ছেন সেটা করতে বোধ হয় তত খরচ হবেনা। সেক্ষেত্রে ৩০ কপিতে নিশ্চই কম খরচ পড়বে। আজকাল কালার ফটোকপিয়ার পাওয়া যায়; ওদের দিয়ে বাল্ক কাজ করালে সস্তা পড়বে হয়তো। কিন্তু কপি করা আর প্রেসে ছাপানো জিনিসের মধ্যে পার্থক্য থাকবে মনে হয়।

হিমু এর ছবি

খুব প্রাণবন্ত মতপ্রকাশ চলছে চলুক । তবে প্রায়োগিক দিক চিন্তা করে মত এলে ভালো।

ইস্যুগুলি একটু লিস্ট করি।

  • কপিরাইট।

  • আভ্যন্তরীণ নাকি সামগ্রিক উদ্যোগ?

  • আর্থিক প্রণোদনা কীভাবে গ্রহণ করা যেতে পারে?

  • মানোন্নয়নের জন্যে কী করা উচিত?

  • বইয়ের ইলেকট্রনিক সংস্করণে আমরা কী চাই, কী চাই না?

আমার মত একটাই। রয়েসয়ে। শুরুটা হোক গোছানো, সুন্দর, ছিমছাম। সেটা করার জন্যে যা কিছু করা জরুরি, করা হোক।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

ব্যাপারটিতে অনেক দায়িত্বের দিক রয়েছে।
সাদা চোখে দেখি আর আমার মতামতগুলো জানাই।

এক, একটা বই বের করার ক্ষেত্রে :
১. প্রুফ দেখা ও এডিট করা
২. মেক-আপ করা
৩. ইলাস্ট্রেশন ও কভার
সবগুলোই পেশাদারি কাজ। এগুলো বিনা পয়সায় হবে না। হওয়া উচিতও না। (মাহবুব লীলেন গত বইমেলায় ৪০টি বইয়ের প্রুফ দেখার ঢেঁকি গিলে মারা পড়তে বসেছিলেন)

আমার প্রস্তাব :
১. লেখক নিজেই যদি সব বন্দোবস্ত করতে পারেন, তাহলে ভালো। পুরো বইটি সম্পন্ন হবার পর তিনি পাঠিয়ে দিতে পারেন প্রকাশায়তনে। সেটি প্রকাশনা পরিষদ উপযুক্ত মনে করলে ই-বুক হিসেবে প্রকাশ করবেন।
২. অথবা, লেখক শুধু লেখাটি দেবেন। প্রকাশায়তন সেটি উপযুক্ত মনে করলে প্রুফ, মেক-আপ, ইলাস্ট্রেশন, কভারসহ সমস্ত কিছুর দায়িত্ব নেবেন।

এখন প্রশ্ন, এগুলোর পয়সা আসবে কোথা থেকে? কভার আঁকার, ইলাস্ট্রেশনের?
প্রকাশায়াতন কতজনের দায়িত্ব নেবে? সেই টাকা উঠে আসার উপায় কী?
পুরো ব্যাপারটিকে একটি পেশাদারি পদ্ধতিতে সাজানো দরকার। যেন ভবিষ্যতেও কোনো ঝামেলা না হয়।

আমার প্রস্তাব :
এই মুহূর্তে টাকাপয়সার হিসেবে আসলে আমাদের না যাওয়াই ভালো। তাহলে আসল ঘরে মশাল জ্বলবে না। আমরা যে প্রজেক্টটি করতে যাচ্ছি, সেটি আসলে আমরা ব্যবসাসফল কিছু করতে চাচ্ছি না, আমরা চাচ্ছি প্রচারসফল কিছু। আমরা চাই, মানুষের কাছে আমাদের বই পৌঁছাতে। বই বিক্রি করে লাভ করতে না। প্রচারই আমাদের সর্বপ্রথম এবং সর্বশেষ লক্ষ্য। আপাতত। তাহলে এটাকে বিনাপয়সাতেই করতে হবে। কপিরাইট আইন নিয়ে না ঘুমিয়ে এক সপ্তা কাটালেও লাভ হবে না। ওটা অন্য ওয়েবসাইটের দেয়ালে শোভা পাবেই। কত মামলা করবেন? কত ঠেকাবেন?
কিন্তু আমি বলি, দোষ কী? এক কপি প্রথম আলো কিনে এক মেসের চোদ্দজন লোক পড়ে, তাতে কি কোনো প্রথম আলোর কোনো ক্ষতি? আমার বই যদি নানাদিকে নানাভাবে ছড়িয়ে যায়, তাহলে আমারই লাভ। আমি মৃদুল আহমেদ বিখ্যাত হয়ে যাব!
কাজেই টাকার দায়ভারটা লেখক নিজে, অথবা প্রকাশায়তন, অথবা প্রকায়াশায়তন ও লেখক দুজন মিলেই বহন করতে পারেন। বিশ হাজার টাকা প্রকাশককে না দিয়ে হাজার এক দুই টাকা দিয়ে আস্ত একটা বই করে ফেলতে পারলে আমারই লাভ। বিশ হাজার দিয়ে আমি চাইলে দশটা বইও করতে পারব! পরে চাইলে এই পুরো বইটিই ছাপিয়েও প্রকাশ করতে পারা যাবে।

দুই, প্রকাশায়তন সচলের বাইরের লেখক নেবে কিনা?
আমার ধারণা : তর্কবিতর্ক পরে, সত্যি কথা যেটা, বাইরের থেকে লেখককে আসতে দিলে একসাথে এত লেখকের ধাক্কা আসলে প্রকাশায়তন সামলাতে পারবে না। মান যাচাই করতেই খবর হয়ে যাবে। সচলে যে পরিমাণ লেখক আছেন, তাদের বই বের করতেই অকহতব্য রকমের পরিশ্রম দিতে হবে তাঁদের।

আমার প্রস্তাব :
প্রকাশায়তন আসুক আগে। ওকে বাড়তে দিন। ওর মেরুদণ্ড শক্ত হোক। বাড়িতে যে কয়টি খেলনা আছে, সেগুলো নিয়েই খেলুক আগে। ওকে এখনই পার্কে সাইকেল চালাতে পাঠালে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাবে। সময় তো চলে যাচ্ছে না। আগে শুরু হোক, সময়ই বলে দেবে, কখন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। অনেক বড় পরিসরে কাজ শুরু করে হাঁপিয়ে থেমে না গিয়ে ছোট আকারে শুরু করে বড় মহীরুহের আকার ধারণ করাই স্বাস্থ্যকর। সচলদের কিছু বই বের হোক সামনের ডিসেম্বরে। প্রচার হোক, বইগুলো হাতে হাতে যাক, মতামত আসুক। সুবিধা, অসুবিধাগুলো যাচাই করে আস্তে আস্তে এগোনো যাক।

ভবিষ্যতে প্রকাশায়তনকে কীভাবে দেখতে চান?
আমি যেটা দেখতে পাচ্ছি সেটা এরকম। রাশি রাশি বইয়েরর দুর্দান্ত সব কভার সামনে। জিভে পানি নিয়ে আমি তাকিয়ে আছি, যেরকম এখন তাকিয়ে থাকি ডিআইভিএক্স মুভি সাইটের দেয়ালের সামনে। প্রতিটি কভার প্রতিটির থেকে আলাদা, দুর্ধর্ষ। লেখককে না চিনলেও পড়তে ইচ্ছে করে।
দেখতে পাচ্ছি, আকতার আহমেদের ছড়াসমগ্র তৃতীয় খণ্ড।
লুৎফুল আরেফীনের বই ‌"আশ্চর্য সব হাসি"
জাহিদ হোসেনের বই "রূপকথা ও অন্যান্য অণুগল্প"
ষষ্ঠ পাণ্ডবের বই "ফুল নিয়ে"
প্রতিটি বইয়ের নিচেই লেখা আছে ই-বুক কত কপি বিক্রি হয়েছে এ পর্যন্ত।
পাশেই ফ্ল্যাশবারে দেখতে পাচ্ছি সেরা বেস্টসেলারদের নাম। যাদের এ পর্যন্ত দশ, পনেরো, বিশ হাজার কপি বিক্রি হয়ে গেছে! দেখে গর্ব লাগল যে অনেক নামই আমার পরিচিত জনদের।
প্রতিটি বইয়ের পাঠক রিভিউয়ে রাশি রাশি সব কথা। কত মানুষ তাদের উচ্ছ্বাসভরা অনুভুতির কথা জানিয়েছে। কেউ জানিয়েছে সমালোচনার কথা।
একটি বইয়ের ওপরে ক্লিক করলাম। চট করে চলে এল বইয়ের কভারটি বড় হয়ে।
পাশেই লেখা বইটির কাহিনীসংক্ষেপ। অথবা ভেতরে কী আছে, তারই খানিক অংশ। বইটির পৃষ্ঠাসংখ্যা, লেখকের তথ্য। এর আগে তার কয়টি বই বেরিয়েছে। কী কী নাম। এই বইটি পড়ে বিভিন্ন পাঠকেরা কী জানিয়েছেন রিভিউতে, তার চুম্বক অংশ। সিনেমার ট্রেলার দেখলেই যেমন সিনেমাটি না দেখে যারা যায় না, বইটি সংক্রান্ত পুরো প্রেজেন্টেশনটি দেখলে এই বই না কিনে বেরিয়ে যাওয়া মুশকিল।
আমিও পারলাম না। এই লেখককে চিনি না। তারপরও।
আর তাছাড়া প্রকাশায়তনের বই মানেই তো সেরা বই, এটা সবাই জানে। অনেক যাচাই বাছাই করেই তবে একটা বই বের হয়।
সারা দুনিয়ার সমস্ত বইপ্রেমী বাংলাভাষী মানুষ এই এক সাইটেই সারাদিন হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকে। নতুন কী বই আসল, তার বিজ্ঞাপন খোঁজ করে।
লুৎফুল আরেফীনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল জি-টকে। সে জানাল, প্রকাশায়তনের অনলাইনে সে ঢুকতেই পারে না। ঢোকামাত্র হাজার হাজার ভক্ত পাঠক টোকা দিতে শুরু করে তাকে। একেকজনের একেক রকম আবদার। কয়জনের সাথে কথা বলা যায়? আর মেইল খুললেই রাশি রাশি মেইল। হো হো হো
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

হিমু এর ছবি

সাধু! সাধু! বুকটা ভরে ওঠে এমন অপূর্ব স্বপ্নের কথা শুনে।

মৃদুলদার এই স্বপ্ন সফল হবে। হতেই হবে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বাহরে মৃদুল বাহ হাসি
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই স্বপ্ন কি দিনে দেখছেন না রাতে? যখনই দেখেন, মারাত্মক স্বপ্ন। এটা তো জাতির বিবেকের স্বপ্ন নয় যে বছরের পর বছর ঝুলে থাকবে, এটা যেন মৃদুলের চোখে দেখা অধিকাংশ সচলেরই স্বপ্ন। এর বাস্তবায়ন হবেই হবে।

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

এহেম এহেম! মৃদূল তুমি তো মিয়া আমারে ভাসাইবার ধান্দা করছো! এমনিতেই শরীর ফোলা, তারপর এরকম উড্ডয়ন, যদি একবার পরে যাই তাইলে তোমারে খাইছি!!

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

বেশ কদিন ধরে মন্তব্য গুলো পড়লাম।
এবার কিছু বলতে চাই।

১। আমার মনে হয় , ইলেকট্রনিক রীডারশিপ বাঙালি
পাঠকমহলে এখনও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে নি।
তাই হার্ড কপি র ওপর আমাদেরকে আরো কিছুদিন
নির্ভর করতে হবে। করা উচিৎ ।
২। সফট কপি করা যেতে পারে। তবে বই আকারেও
করা র কথা টি আবারও ভাবলে ভালো হয়।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে পিসি / ল্যাপটপে বসে বই পড়ায়
অভ্যস্ত না। আড্ডা ব্লগিং এ পর্যন্তই ।
৩/ ৪০/ ৫০ ডলার বছরে দেয়া টা বড় কথা না।
পাঠক যদি আগ্রহী হয়ে না কিনে , তাকে কিভাবে কিনানো
যাবে ?
৪। ই বুক যে এর আগে হয় নাই , তা নয় । হয়েছে।
আমার ও একটা হয়েছে। কলকাতার একটা ই প্রকাশনা
সংস্থা করেছে।
http://www.sristisukh.com/ebook/fakir/index.html
তারপরও আমি মনে করি , বই এর ঘ্রাণ নেবার মজাই আলাদা।

অফটপিক ------- ( জোকস)
প্রকাশায়তন বাজারে এলে আমাদের দুই মাননীয় প্রকাশক
আহমেদুর রশীদ ও নজমুল আলবাব এর বাজারি ক্ষতি হচ্ছে কি না
তা ভেবে দেখার জন্য একটা কমিটি কর্লে কেমন হয় ?

আর

ফকির ইলিয়াস, মাহবুব লীলেন , অমিত আহমেদ - আমরা যারা দুচারটি পদক টদক
পাবার লাইনে আছি , আমাদের গতি কি হবে ?
কারণ পদক বাছাই কমিটির নেতারা তো এখনও সফট কপি পড়ার জন্য অভ্যস্ত না।
ওদেরকে পড়াতে শিখাবার দায়িত্বটা কে নিতে পার্বেন ?

auto

হিমু এর ছবি

১. একসময় ইউনাইটেড স্টেটসে কোন রেলওয়ে ছিলো না। কিছু লোক জান দিয়ে সেগুলি বানাইসে। পূর্বের সাথে পশ্চিমকে যোগ করসে। ইলেকট্রনিক বইয়ের রিডারশিপের ক্ষেত্রেও এই যোগ তৈরি করে হবে নিজের হাতে। এই পরিশ্রম সবাই করতে রাজি হবেন না হয়তো। যারা হবেন তারা সেই সংযোগপথে চলবেন।

২. এখন থেকে লেখকের হাতে দু'টি অপশন আসলে। তিনি চাইলে দু'টিই করতে পারেন। ইলেকট্রনিক ও মুদ্রিত সংস্করণ। ইলেকট্রনিক সংস্করণ প্রকাশ করবে প্রকাশায়তন, আর মুদ্রিত সংস্করণ করবেন অন্য যে কোন প্রকাশনী। কোনো সমস্যা তো নেই। আমি যেমন একটা বই ইলেকট্রনিক সংস্করণে রেখে দেবো বলে ঠিক করেছি। আরেকটি দুই মাধ্যমেই প্রকাশ করতে চাই।

৩. পাঠক যদি কারো বই কিনতে আগ্রহী না হয়, তখন সে প্রকাশায়তন থেকে বিনামূল্যে পড়বে হাসি

৪. অবশ্যই বইয়ের ঘ্রাণ নেয়া দারুণ এক অভিজ্ঞতা। এর বিকল্প নেই। প্রকাশায়তন থেকে ইলেকট্রনিক সংস্করণ পড়তে পড়তে পাঠক হাতের কাছের যে কোন বই খুলে ঘ্রাণ নিতে পারবেন।

অফটপিক (রসিকতা)

এক সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির চেয়ারম্যান হতে পারেন আপনি।

আর পদকদাতাদের পড়ানোর দায়িত্বটাও আপনিই নিন। সবাই উপকৃত হবেন।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

পিডিএফকে ফ্ল্যাশে কনভার্ট করে সরাসরি দেখানোর ব্যবস্থা করা যায়। এতে প্রিন্টের সুযোগ থাকবে না অথচ সরাসরি পড়া যাবে। খানিকটা পড়ে ভালো লাগলে অর্ডারের ভিত্তিতে পিডিএফ ডাউনলোড অথবা প্রিন্টের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুজন চৌধুরী এর ছবি
রেনেট এর ছবি

এত খুঁটিনাটি তো বুঝি না... সচলায়তন প্রথম ছাপা অক্ষরে নিজের লেখা দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। লেখালিখি যদি করে যেতে পারি, তাহলে প্রকাশায়তনের ব্যানারে কোন একদিন বই বের করার স্বপ্ন রাখি।

উদ্যেগের সাথে জড়িত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

ঘটে কোনো বুদ্ধি/পরামর্শ আসছিলোনা বলেই চুপ করে ছিলাম। কিন্তু অলক্ষ্যে এই নিরবতার অন্য অনুবাদ হয়ে যাচ্ছে দেখে লগইন করতেই হলো।
আমি সবসময়ই নতুন আইডিয়ায় পক্ষপাতি । কিছুদিন ধরে শুদ্ধস্বরের ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করছি। সেখানে একটা ইবুকের অপসন রাখা হয়েছে। তাছাড়া আমি গতবারের অভিজ্ঞতার পর এখন থেকে যেভাবে বই প্রকাশের পরিকল্পনা করেছি- তাতে প্রকাশায়তনের এই উদ্যোগের সাথে কোনো বিরোধ-সংঘাতের কিছু দেখছিনা। ব্যবসায়িক ক্ষতি-বৃদ্ধিরও কিছু নাই।
তবে এই বই প্রস্তুত প্রক্রিয়াকে প্রফেশনালি দেখার জন্য আমি সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানাবো। নইলে যেসব লেখক প্রকাশকদের উচ্চস্বত্ত-মধ্যস্বত্ত ভোগী বলে উস্মা প্রকাশ করেন,তারা কখনোই টের পাবেননা- প্রকাশককে বই প্রকাশ করতে কত ধানে কত চাল ভানতে হয়।
আর বই প্রকাশের জন্যও একজন লেখকের সময় নেয়া প্রয়োজন। প্রস্তুতি প্রয়োজন। এই বিবেচনাবোধ বইয়ের বাজার স্মৃষ্টিতে শুভ প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি।
যাত্রা হোক শুভ তবে।
আচ্ছা, প্রকাশকদের বই করার সুযোগ থাকবে কি?

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

সবজান্তা এর ছবি

এই মন্তব্যের একটা অংশের সাথে ভীষণভাবে একমত, সেটা হচ্ছে লেখকদের প্রস্তুতি। ব্লগ লেখা আর বই লেখার মধ্যে একটা পার্থক্য কিন্তু আছেই। ব্লগের ক্ষেত্রে কিছুটা ত্রুটি বিচ্যুতি মেনে নিয়েও চমৎকার চলে যায়। কিন্তু বই বা যে কোন প্রকাশনার ক্ষেত্রে এই ঢিলেমির সুযোগটা নেই। ব্লগের আটপৌরে ভাবটা প্রকাশনার ক্ষেত্রে অনুপস্থিত। তাই একজন লেখককে রীতিমতো পরিশ্রম করে তাঁর বই প্রকাশ করা উচিত। ব্লগের মতো করে বই লেখলে, বিশেষত ই বুক লেখা হলে, ই-বুক অচিরেই তার আবেদন হারাবে।


অলমিতি বিস্তারেণ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

টুটুল ভাই'র সাথে সহমত। সময় ও প্রস্তুতি নেয়া দরকার লেখক, প্রকাশক সব পক্ষ থেকেই। স্লো বাট স্টেডি ই পলিসি হোক।
উষ্মা প্রকাশ করাটা হয়তো তেমন কষ্টসাধ্য কিছু না তবে দায়িত্ব নিয়ে একটা কিছু সুন্দর করতে পারাটা শ্রমসাধ্য অবশ্যই।

টুটুল ভাই,লীলেন ভাই, আলবাবদের প্রকাশনা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা এ ক্ষেত্রে প্রকাশায়তনকে বাড়তি সুবিধাই দেবে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হিমু এর ছবি

প্রকাশায়তনের অন্যতম শক্তি হবে সচলায়তনে প্রকাশনার সাথে যারা জড়িত, তাঁদের অভিজ্ঞতা।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

কনফুসিয়াস এর ছবি

আমার কাছে কিন্তু একবারও ছাপা মাধ্যমের প্রতিযোগী হিসেবে মনে হচ্ছে না ই-বুকের আইডিয়াটাকে। বরং যদি প্রিন্ট রেডি ই-বুক করি আমরা, সেটা বরং সহযোগীই হয়ে উঠবে।

-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

স্পর্শ এর ছবি

১।
বেশ কিছুদিন যাবত ই-বুক পড়ার অভ্যাস করছি। এটাই আসলে ভবিষ্যত।
প্রকাশায়তনের এই উদ্যোগ যুগোপযোগী।

২।
আমরা যারা পুরোনো মানুষ, কাগজের বইএর প্রতি ভালোবাসা হয়তো আমাদের কাটবেনা। কিন্তু ই-বুক ব্যবহার আমরা শিখে নেব। আর নতুনরা আসলে ইবুকের যুগেই বড় হবে। প্রকাশায়তন সে ক্ষেত্রে একটা নতুন যুগের সুচনা করতে যাচ্ছে।

৩।
বাছাই/মান-নিয়ন্ত্রন সংক্রান্ত নীতিমালা সম্পর্কে আরো স্পষ্ট আলোচনার প্রত্যাশা করছি।

৪।
সব চেয়ে বড় ব্যাপার হলো, বই লেখার মতো বড়সড় প্রোজেক্টে অনেক নতুন লেখক হাত দেবেন। এমনিতে হয়তো কোনো প্রকাশকের কাছে যাওয়া হয়ে উঠতোনা তাদের। এটাই একটা আশার বিষয়।

শুভকামনা প্রকাশায়তন।

সচলায়তন রক্স! চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অম্লান অভি এর ছবি

প্রতিটি প্রযুক্তিই একটা ধাক্কা সহ্য করে। সেই সেক্ষেত্রে eবই কিন্তু একটু কমই প্রতিকূলতা সহ্য করবে। কারণ প্রযুক্তি বিরোধী (প্রযুক্তি অবুঝ বক্তারা বৈঠায় পানি পাবে না) কথা বলনেওয়ালারা উত্তর পেতে দেরী হবে না। হয়তো সবার মনে থাকবার কথা (সমসাময়িকদের) ব্লক লেটার প্রেস যখন অফসেট এ ধাবিত হচ্ছে তখন কি এক কর্মহীনতার বুলি উঠেছিল প্রেস পাড়ায়! এমন বিরোধির সুর উঠা অবান্তর নয় তবে সূর্য্য উঠলে অস্ত যাবেই না উঠলেও দিনের আভা গড়িয়ে সন্ধ্যা নামবেই। তাই থাক না বৈপরিত্যের চিন্তাগুলো.......
বিজয়ের দিন উদ্ভাসিত হোক অন্য ভাবে......কমে যাক দূরত্বের ফারাক শুভ হোক- ই-বইমেলা।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

রায়হান আবীর এর ছবি

২০ নম্বর তারাটা আমিই দিলাম। এখন সময় নষ্ট না করে একটা বই লিখি গিয়া খাইছে


পুচ্ছে বেঁধেছি গুচ্ছ রজনীগন্ধা

নজমুল আলবাব এর ছবি

দেখি কি দাড়ায়। এইটা মাথায় রেখে দু'দিন ধরে এই পোস্ট পড়ছি।

বিষয়টা আমার কাছে পরিস্কার না। এমনিতে পাণ্ডুলিপি পেলাম, দেখলাম, পছন্দ হলে কম্পোজ হলো, প্রুফ দেখা শেষে ফর্মেট এর পরে ছাপা। বাঁধাই করে প্রচ্ছদে মুড়ে দেয়ার যে তরিকা হালকায় পাতলায় শিখেছি, তার কোনেটাইতো দেখি এখানে নাই।! প্রোডাক্ট হাতে নিতে না পারলে কেমনে কি??? (প্রোডাক্ট বলায় রাইগেন না আবার)

বাঙগালের নেট ইউজার কতোজন? যে নেটে বই পড়িয়ে পড়িয়ে লোকে পাঠক তৈরি করে ফেলতে পারবে?

তবে ভবিষ্যত চিন্তায় উদ্যোগটা চমৎকার হবে বলেই মনে হচ্ছে। সেই অপেক্ষাতেই আছি। ঘরে ঘরে নেট পৌছে যাক। লোকজন কম্পুতে বসে বই পড়া শিখুক। তাতে আমাদেরই লাভ। ছাপামাধ্যমেতো কেউই পুছে না। এইখানে হালকা পাতলায় ইজ্জত পাইলেও পাইতে পারি।

পাপিষ্ঠ প্রকাশকদের কাছ থেকে যারা যারা ভাবছেন, মুক্তি মিলিল বলে,(!) তাদের জন্যে সমবেদনা প্রকাশ করে বলছি, এত তাড়াতাড়ি সেইটা সম্ভব নাও হইতে পারে। আরও কিছুদিন এই পাপিষ্ঠরা রাজত্য করিবে মনে হয়।

মৃদুলদার স্বপ্নটা আমিও দেখতে শুরু করেছিলাম, যতক্ষণ তার কমেন্ট পড়েছি। সেটা শেষ হলেই আবার ঠিক হয়ে গেছি। হিসাবের সাথে স্বপ্নের বিস্তর ফারাক।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

পলাশ দত্ত এর ছবি

চলুক
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

জিজ্ঞাসু এর ছবি

ই-বুক ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে সচলায়তনে। এখন প্রকাশায়তনে নতুন আঙ্গিকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। পুরো ব্যাপারটা এত সুন্দর করে গুছিয়ে উপস্থাপন করার জন্য সন্দেশ লেখককে ধন্যবাদ।

বইয়ের গ্রন্থস্বত্ব সংরক্ষিত থাকতে হবে।
সকলেই যতখুশি পড়তে পারবে, যতইচ্ছা নানান ওয়েবসাইটে এমবেড করতে পারবে, কিন্তু ডাউনলোড করতে হলেই অর্থের যোগ থাকা দরকার। পাঠক কিংবা ছাত্রদের অনেক সময় প্রিন্ট করার দরকার হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রিন্ট করা যাবে শুধুমাত্র ট্যাক্সট্ ফরম্যাট অর্থাৎ প্রিন্ট করলে সেটা হুবহু বইয়ের পৃষ্ঠা আকারে না এসে, প্রিন্ট হবে ভিন্ন ফন্ট সাইজ ও ভিন্ন পৃষ্ঠাসজ্জায়।

প্রকাশনার উদ্দেশ্যে কেউ বিনা অনুমতিতে বই চুরি করে ছাপানোর বা প্রকাশ করার কোন সুযোগ নেই। যে এমন কাজের চেষ্টা করবে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করার আইনগত ডিসক্লেইমার আশা করি প্রকাশায়তনের প্রতিটি বইয়েই সংযোজিত থাকবে। মাহবুব মোর্শেদ যেমন বলেছেন এডোবি ফ্ল্যাশ প্লেয়ারে পড়ার ব্যবস্থা থাকলে কপি করার সুবিধা হয়তো থাকবে না। তারপরও ইন্টারনেটজুড়ে পড়ার উদ্দেশ্যে কপি হওয়া আর কেউ চুরি করে বই ছাপানো দু'য়ের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য। ইন্টারনেটে (ডিজিটাল) কপি হলেও সেটা কপিরাইটের আওতায় যদিও পড়ে, তথাপি তাকে আমার মত অনেকেই আমলে নিবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না কেউ আর্থিকভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে কাজটা করছে — তা ডিজিটালি হোক বা হার্ডকপি হোক।

আজকাল বাজারে ডিজিটাল বুক রিডার পাওয়া যায় যেগুলোর সাথে অনেকখানি কাগুজে বই পড়ার স্বাদ জড়িত। তাছাড়া পোর্টেবল বলে কোথাও বেড়াতে গেলে আমরা একসাথে শ'পাঁচেক বই নিয়ে যাবার কথা ভাবতে না পারলেও ডিজিটাল রিডারে একসাথে পাচশ' হাজার বই নিয়ে ঘোরা যাবে। সেদিকে চিন্তা করলেও প্রকাশায়তনের উদ্যোগ অবশ্যই সময়োপযোগী।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

হিমু এর ছবি

মাহবুব মোর্শেদ যেমন বলেছেন

হেঁ হেঁ হেঁ জিজ্ঞাসু ভাই, এখানে মুর্শেদ হবে। খুব খিয়াল কইরা। ও-কার উ-কার গুলিয়ে ফেললে একেবারে মানে যাকে বলে বিরাট একটা ইয়ে হয়ে যায়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জিজ্ঞাসু এর ছবি

হ মাহবুব মুর্শেদ হবে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

নাজমুস সামস [অতিথি] এর ছবি

উদ্যোগটি নি:সন্দেহে প্রাপ্তিবাচক!
অনেকদিন পর ভালো একটি ই- চিন্তা পেলাম।
আমারতো আজেকেই ১৬ই ডিসেম্বর ২০০৯ হলে ভালো লাগতো।
তবে প্রস্তুতি পর্ব যেন ভালো হয়।
জানেনেতা পূর্ব প্রস্তুতি
চলমান প্রস্তুতি
পরবতি প্রস্তুতি
হচ্ছে প্রস্তুইতপর্ব।

চাইবো প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার

নাজমুস সামস

ফরিদ এর ছবি

প্রকাশায়তনের বই শুধু প্রকাশায়তনেই পাওয়া গেলে একরকমের বাঁধায় পড়ে যায়। বেশীরভাগ লেখকই চাইবেন না যে তার বই শুধু প্রকাশকের নিজস্ব দোকানে পাওয়া যাবে। বরং দেশের অলিতে গলিতে কানাকঞ্চির সব দোকানের র‌্যাকেই তার বই শোভা পেলে মহাখুশী হবে।

তাই প্রকাশায়তনের বই অন্যান্য অনলাইন বুকস্টোর অথবা সাইটে থাকলে আশা করি আপত্তি থাকবে না। তবে একটা কাজ করা যায়, যেহেতু পাহাড়সমান খাটুনি সম্পাদক, সঙ্কলক, লেখক আর অলঙ্করক ইনারা মাগনা/শস্তায় করে দেবেন, প্রকাশায়তনের জন্য তিন মাস বা ছমাসের এক্সক্লুসিভিটি থাকতে পারে, পরে অন্যরাও শেয়ার করার সুযোগ পাবে। এমন হলে মন্দ হয়না।

ফরিদ
বই-মেলা

হিমু এর ছবি

ফরিদ ভাই, তুলনাটা খাটে না। সিলেটের পাঠক বই কিনতে ঢাকায় যায় না। এই কারণে সিলেটে বইয়ের দোকান আছে। কিন্তু নেটে তো এই ভৌগলিক দূরত্বের ঝামেলা নেই। সিলেট-ঢাকা-ম্যানচেস্টার-আক্রা-সমপাওলো-ক্যানবেরা সব জায়গা থেকেই সরাসরি "প্রকাশকের দোকান" থেকে বই পাওয়া সম্ভব হবে হাসি



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

ফরিদ এর ছবি

হুমম... তুলনাটা একটু জোর করে খাটালেই মনে হয় খাটবে :)। তবে বিষয় হল, এক প্রকাশায়তনে সেখানকার সব বই অবশ্যই পাওয়া যাবে কিন্তু অন্যখানের গণ বইয়ের দোকানে সব বইয়ের সাথে প্রকাশায়তনের বই অবশ্যই থাকবে না এইটা একটু লিমিটিং মনে হয়। পাঠক/ক্রেতা সবসময় লেখক আর বইয়ের নাম ঠিক করে দোকানে আসেনা, অনেক সময়েই দোকান ঘুরে মনে হয় আরে ঐ বইটা বেশ তো। তারপরে দুপাতা উলটে কিনে ফেলে।

আর দ্বিতীয় বিষয় হল, এই বইগুলো এক্কারে ফ্ল্যাশের তলায় তালাচাবি দিয়ে না আটকালে খুব জলদিই মূর্ছনা, বাংলাক্লিক বাংলাবুক ইত্যাদি অসংখ্য সাইটে পিডিএফ হিসেবে জলদিই চলে যাবে। আর এইসব ভূঁইফোড়দের না আছে কোন ঠিকানা, না বিজনেস এনটিটি আর রেভিনিউ মডেল। শুধু এডসেন্স দিয়েই কোনরকমে পেট চালায়। তাই মামলা কমপ্লেন করে ঠেকানো আটকানো মুশকিল। অন্যদিকে যারা বিনা অনুমতিতে অনধিকার চর্চা করবে না তারা সেদিকে পা বাড়াবে না।

যাই হোক, প্রকাশক আর লেখকের সিদ্ধান্তই সর্বশেষ। উভয়ে মিলে অবশ্যই এমন সিদ্ধান্তে পৌছাবেন যা সবার জন্য চমৎকার হয়।

হিমু এর ছবি

পাঠক/ক্রেতা সবসময় লেখক আর বইয়ের নাম ঠিক করে দোকানে আসেনা

এটা একটা খুব বাস্তব সিনারিও ফরিদ ভাই। তবে চেষ্টা থাকা উচিত, যাতে পাঠক প্রকাশায়তনে একবার এলে পরবর্তীতে আবার আসেন, ভালো বই খোঁজার জন্যে প্রকাশায়তনেই আসেন। আর সম্ভব হলে, তিনি যেন লেখক আর বইয়ের নাম মনে মনে ঠিক করেই আসেন, সে ব্যবস্থা করা।

বিনা অনুমতিতে কেউ যদি হোস্ট করে, তাকে ঠেকানো মুশকিল, এ কথা খুবই সত্য। সেক্ষেত্রে সে যে চোর, এটা তার গ্রাহকদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

তবে বিষয় হল, এক প্রকাশায়তনে সেখানকার সব বই অবশ্যই পাওয়া যাবে কিন্তু অন্যখানের গণ বইয়ের দোকানে সব বইয়ের সাথে প্রকাশায়তনের বই অবশ্যই থাকবে না এইটা একটু লিমিটিং মনে হয়। পাঠক/ক্রেতা সবসময় লেখক আর বইয়ের নাম ঠিক করে দোকানে আসেনা, অনেক সময়েই দোকান ঘুরে মনে হয় আরে ঐ বইটা বেশ তো। তারপরে দুপাতা উলটে কিনে ফেলে।
বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ভালো একটা পয়েন্ট। আমি ব্যক্তিগতভাবে অন্য অনলাইন বুকস্টোরে দেয়ার পক্ষে। সাথে সাথে না দেয়ার পক্ষেও মতামত দিতে মন চাইছে। ব্যাপারটা নিয়ে ভাবার অবকাশ আছে। প্রথম দিকে শুধু প্রকাশনীর সাইটেই থাকার পক্ষে আমি। সময়ের সাথে পরিস্থিত দেখে সম্প্রসারণের চিন্তা করা যেতে পারে।

শিক্ষানবিস এর ছবি

অসাধারণ উদ্যোগ। সাথে আছি...

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমি বই লেখায় হাত দিচ্ছি অচিরেই। আমার মতো বলদা লেখকের ফুটা নৌকার পালে উৎসাহের হাওয়া লেগেছে। প্রকাশায়তনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর প্রথম ই-বুক লেখকের জায়গাটা বুক করতে চাই! দেঁতো হাসি
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এই সাইটটা আমার খুব পছন্দে। বাংলায় এমন কিছু তৈরি করা গেলে দারুণ হতো। প্রাথমিক ভাবে এটা থেকে কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

www.lulu.com

রণদীপম বসু এর ছবি

অন্য সব কিছু বাদ দিলেও কেবল একটা যুক্তিতেই আমি প্রকাশায়তন ধারণার সাথে সহমত, আমি যেখানেই ঘুরতে যাই বা মরতে যাই, গোটা প্রকাশায়তন লাইব্রেরিটা আমার সাথেই থাকবে।
অতএব, আর দেরি কেন !.................তবে যত নিয়ম কানুনই করেন, কেবল আমার মতো আম-পাঠকদের জন্য চাহিবামাত্র মাগনা পড়ার সুযোগটা রাইখেন।

জয়তু প্রকাশায়তন !!!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

"মাগনা" পড়ার সুযোগ থাকলে আমিও থাকবো। তা ছাড়া ই-বুক প্রকাশনা উদ্যোগটা মনে হয় আমার জন্য সবচেয়ে ভালো একটি সুযোগ। প্রকাশায়তন, তবে তাই হোক।
.
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভাবলাম লিখলেন, "আমার গোটা তিনেক উপন্যাস তৈরি আছে, প্রকাশায়তনে জমা দেবো ভাবছি।" খাইছে

সমুদ্র এর ছবি

সবগুলো মন্তব্য পড়ার ফুরসত হলোনা, তাই জানিনা এই বিষয়টা কেউ ভেবেছেন কিনা। আমাজনের কিন্ডল এর পর সম্প্রতি সনিও তাদের নতুন ই-বুক রিডার এর ঘোষণা দিয়েছে। এই রিডারগুলো পশ্চিমা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। একটা রিডারের মধ্যে হাজার খানেক ই-বই নিয়ে ঘোরা যায়, ওয়াই-ফাই দিয়ে মুহুর্তেই ডাউনলোড করা যায় যেকোন বই - জনপ্রিয় না হবার কোন কারণও নেই। আর লেখক-প্রকাশকরাও এর সুবিধা নিচ্ছেন; ড্যান ব্রাউনের প্রকাশিতব্য বই "দ্য লস্ট সিম্বল" পেপারব্যাক এডিশানের সাথে একই দিনে বের হবে ই-বুক ভার্সনেও, শুধু কিন্ডলে নামিয়ে নিলেই হলো।

এই ই-বুক রিডারের দিকে এখন কিন্তু অনেক কোম্পানিরই নজর পড়েছে। তাই আশা করা যায় দামটাও আমাদের হাতের নাগালে আসতে খুব একটা দেরি হবে না। আশা করি (!) কমদামে চাইনিজ ই-বুক রিডারও বাজার চলে আসবে।
প্রকাশায়তনের ভবিষ্যৎ তাই উজ্জ্বল, অন্তত আমার তাই ধারণা।

"Life happens while we are busy planning it"

সিরাত এর ছবি

মাত্র পড়লাম। সুউউউউউপার একটা আইডিয়া! চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

[পান্থ বিহোস] ভালো উদ্যোগ। তবে, বইগুলো যদি প্রিন্ট ভার্সন বের করার চিন্তা থাকে তাহলে আরও ভালো হয়...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।