একেকটা সপ্তাহ দেখতে দেখতে শেষ হয়ে যায়। সোম আসে, বিষ্যুদ আসে, আসে আরেকটা উইকএন্ড। ১২-১৪ ঘন্টা ল্যাবে স্কুলে, মাঝে মাঝে ফাঁক বুঝে পাটর্টাইম, জব ইভেন্টে সুট-টাই পরে দাঁত কেলানো বা অন্যকিছু।
কাজের চাপ?
না, ভুল, আসলে কোন কাজই শেষ করতে পারিনা। সবই সিকিভাগ করে, অর্ধেক করে ফেলে রাখি। শেষ হয় না কোনকাজই।
নিজের পড়াশুনা যেখানে আছে, সেইখানেই পড়ে থাকে, রিসার্চ এর কাজ সামান্যতম হয়ে ওঠেনা, টনক নড়ে, যখন মাস্টারমশায় বলে বসেন, এই সপ্তায় সেমিনারে একটু গালি খেয়ে আসো - মানে প্রেজেন্টেশন দাও। চাকুরির অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনগুলো করবো করবো করে করা হয়ে ওঠেনা। শীতের কাপড় কেনা দরকার, একটা ভালো জ্যাকেট, একটা মাফলার - অথবা মোজা - কেনা ফরজ হয়ে গেছে, অথচ সময় করে উঠতে পারিনা। রোজ সকালে সব মোজা র একটা করে কপি খুঁজে পাই, তার জোড়া কে আর পাইনা।
খাবারের অভ্যাস খুব খারাপ হয়ে গেছে। রান্না করিনা অনেকদিন, দুই সপ্তাহ আগে ডাল রেঁধেছিলাম আর চিংড়ি ভর্তা, সেই শেষ। ফ্রিজে মুরগি আছে, কেনো যেনো কিমা করা মাংস কিনেছিলাম, সেটাও আছে। রান্নার সময় পাইনা। স্কুলে যাওয়ার পথে একটা ইন্ডিয়ান খাবারের দোকান হয়েছে দুমাস হলো- বাঙালি মালিক, জাপানি বউ সাথে নিয়ে রেস্ট্যুরেন্ট চালায়। ভালোই রাঁধে, ল্যাবে যাওয়ার পথে প্যাকেট লাঞ্চ কিনে নেই সপ্তায় দুইতিনদিন। আর আছে, ম্যাকডোনাল্ডস এ নতুন মেন্যু, ম্যাকড়্যাপ, না হলে পুরনো বন্ধু ফিলে-ও-ফিশ তো আছেই।
শরীরটা ভালো নেই। বয়স বাড়ছে, সেটা বুঝতে পারি খুব ভালোমতোই ইদানিং। মাঝেমাঝে নিজেই নিজের কাছে ছুটি নেই, কোন একটা সন্ধ্যে বা কোন একটা সকাল - শুয়ে শুয়ে টিভি দেখি বা মুভ্যি। টিভিতে স্ক্রীম-৩ দেখছি এখন। এই ভোররাতে। একবার দেখেছি, আবার দেখছি। গত সপ্তায় য়্যুটিউব ঘেঁটে পারমিতার একদিন দেখেছি বসে বসে। দর্শকের অনুভূতি জাতীয় একটা রিভিউ লেখার চেষ্টা করলাম, শেষ করতে পারছি না। রবীন্দ্রসংগীতগুলো অপূর্ব লাগে ছবিটায়। বিপুল তরঙ্গ রে - গানটাকে যেমন করে তুলে আনা হয়েছে, সেটা অসাধারণ। মনটা অদ্ভূত অনুভূতিতে ভরে ওঠে।
দেখতে দেখতে বছরটা ফুরিয়ে এলো, নভেম্বর মাস পড়ে গেছে। আগামী দুটো মাস কীভাবে যাবে - জানিনা। বছরের শেষে একটা টিকেট বুকিং দেয়া আছে দেশে যাওয়ার। অসম্ভব মনে হচ্ছে যাওয়াটা এই মুহূর্তে। শিগগীরই টিকেট ক্যানসেল করে দেবো মনে হয়।
আমার একটা বদভ্যাস ছিলো, দেশে বন্ধুদের সবাইকে মাঝেমাঝে ফোন করে চমকে দিতাম। অনেকক্ষণ কথা বলতাম। এখন আর করতে ইচ্ছে করেনা। মরে যাচ্ছে অনেক ইচ্ছে।
দিনগুলো সব একরকম মনে হয় মাঝেমধ্যে। পৌনঃপুনিক বৃত্তে পড়ে আছি বোধ হয়। রাত শেষের সকালটা অন্যরকম হবে, অথবা উইকএন্ড শেষের সোমবারটা অন্যকোন অনুভূতি নিয়ে শুরু হবে- প্রত্যাশাই করি খালি। হয় না সেরকম।
একই বৃত্ত ঘুরে আসে। বৃত্তটা ভাঙতে পারিনা।
বিপুল তরঙ্গরে.. পারমিতার একদিন থেকে
ছবি - সিসিএল এর আওতায় ব্যবহার। কৃতজ্ঞতা - ক্রিস ডায়মন্ড
মন্তব্য
ভাগ্যিস ব্লগানোর ইচ্ছাটাও শেষ হইয়া যায় নাই!!!
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
হু,, সেইটা আছে এখনো।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
লেখাটার শেষে গানটা মিলে কি যেন একটা হলো...বিপুল তরঙ্গ রে...
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
গান শুনি সারাদিন। যে কোন ভালো গানের সন্ধান পেলে পাঠায় দিবা।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
পড়ে মনে হলো, এই লিখাটাই আমি লিখতে চাইছিলাম; কিন্তু এত চমৎকারভাবে শব্দগুলোকে সাজাতে পারছিলাম না কিছুতেই। জাঝা
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
সৌরভ, আপনি বেশী বেশী ব্লগ লিখুন। পারলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিন। কল্পনায় মন খুলে আকাশে উড়ে বেড়ান অথবা প্রাণখুলে হাসুন। দেখবেন ভাল লাগবে। আর আমরা তো আছিই। আপনার সৌরভ ছড়িয়ে দিন সবখানে। সবার কাছ থেকে একটু একটু করে ভালবাসা পেতে পেতে আপনার আবার ভাল লাগা শুরু হবে।
হুমম। বাবা আদর করে নাম রেখেছিলো .. সৌরভ ছড়াবো বলে।
আর আমি কি না দুঃখের ডালি নিয়ে বসে থাকি।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
"দেখতে দেখতে আরও একটা দিন চলে যাবে, জীবন থেকে হারিয়ে - - -"
শব্দ বিন্যাস কি দারুণ!!!
গুরু, শিমুলের মতো শব্দ সাজাতে পারলে আমি এ জন্মটা লিখেই কাটিয়ে দিতুম।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
হয়তো রং-চেহারায় সামান্য এদিক-ওদিক, কিন্তু বৃত্তবন্দী হওয়ার গল্পটা আমাদের সবার গল্প। তবে ওই বৃত্তের বাইরে যাওয়ার ইচ্ছেটা জারি রাখা জরুরি।
লেখাটা খুব ভালো লাগলো।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
কৃতজ্ঞতা।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ভালো লাগছে। ভালো লাগছে। ভালো লাগছে। আরও আরও আরও লিখা চাই!!
.if I could wake up at a different place, at a different time, could I wake up as a different person?.
হুমমম। ভয় পেলাম।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
এই ছোকরা যদি বলে তার বয়স বাড়ছে তাহলে আমার কী হবে?
হাঁটুপানির জলদস্যু
আমার বয়েস বায়ো কি তেয়ো!
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
খুব খারাপ একটা লেখা, খুব পঁচা একটা ব্লগ।
সৌরভ মুর্দাবাদ।
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
মাঝি, মরতে কৈলা?
মরেই তো আছি। মরা মানুষ আর মরে ক্যামনে?
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
ভাই, আপনের বয়সটা একটু বলবেন? আমার প্রায় তিরিশ ছুঁই ছুঁই। কিছুদিন আগেও অনেক ইচ্ছাটিচ্ছা ছিল (প্রেম, ভালোবাসা, ইত্যাদি...কপালে জুটে নাই)। এখন দেখি ইচ্ছাটাও মরে গেছে। বিবাহ-শাদির ইচ্ছাও মরে গেছে মনে হয়। ভালইতো আছি। একটু পয়সা বেশি দিয়ে ফার্নিশড স্টুডিওতে একা থাকি, গাড়ি, কেব্ল টিভি, হাইস্পিড ইন্টারনেট...লাইফটা ত খারাপ যাচ্ছে না, এই স্টুডেন্ট অবস্থাতেও। তার পরেও হঠাৎ হঠাৎ মনে হয় কি একটা নাই, কি নাই......
(বেড়াল) কে জাঝা
নতুন মন্তব্য করুন