বদ্ধ ঘরের কাঁচের ওপারে বৃষ্টি
একটা বড় ঘরে বসে আছি, এক দঙ্গল প্রায় বিরক্তিকর মানুষের মাঝে। একেবারে সামনে একজন বক্তা। PON, GPON কীসব ভারী ভারী শব্দ বেরিয়ে আসছে বক্তার মুখ থেকে, যেগুলোর কোনটাই আমি ঠিকমতো বুঝি না। মেজাজ গরম হয়ে যাচ্ছে। ল্যাবের সারাদিনের একটা সেমিনার ইভেন্ট, সকালে আর দুপুরের সেশনে চেয়ার এর কাজ করে বিকেলে ঘরের এক কোনায় বসে ওয়াই-ফাই এর বদৌলতে সচলায়তন উপভোগ করছি। ঘরের এক ধারে কাঁচের দেয়াল, তার ওপারে কালো আকাশ, ভেজা গাছ আর ছাতার নিচে চলন্ত মানুষ।
বদ্ধ ঘরে হালকা গরম। বাইরে ভেজা বৃষ্টি।
বাইরে বেরুতে ইচ্ছে করছে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসা এই গুরুগম্ভীর ঘর ছেড়ে।
বাইরে নতুন বসন্তের বৃষ্টি যেন আমায় ডাকে। অনেক অনেকদিন পর ইচ্ছে করে, ছুঁয়ে যাই অপ্রিয় ঠান্ডা বর্ষণকে খালি গায়ে।
এপ্রিল: মনপাখি ওড়ে কোন আকাশে
এপ্রিল একটা বিচ্ছিরি মাস আমার জীবনে। মন বসাতে পারি না কিছুতেই। বছর ছয়েক আগের এপ্রিলে আমি দেশ ছেড়ে এসেছিলাম। আমার নিজের ব্লগে ২০০৫ আর ২০০৬ এ কোন পোস্ট নেই। অবশ্য ২০০৬ এ থাকবার কথাও নয়। এপ্রিল-মে তে বেশিরভাগ সময় হাসপাতালে ছিলাম। সে গল্প আমি কোথাও বলি না যদিও।
এপ্রিল আর আমার মাঝে কেমন যেন অদ্ভুতুড়ে শত্রুতা আছে। আমি ব্যক্তিগত জীবনে হালকা হতাশাবাদী হলেও মোটামুটি পরিশ্রমী, কিন্তু এপ্রিলে আমি অসুস্থ পাখির মতো ঝিমুতে থাকি কোন কাজকর্ম ছাড়া।
আনিসুল হক এবং সামরিক শাসন
হঠাত লেখক আনিসুল হককে পাওয়া গেল টোকিওতে। বাঙালিদের বৈশাখি আয়োজনে অতিথি হয়ে এসেছেন। দুর্ঘটনাচক্রে খুব ছোট পরিসরে তার সাথে এক টেবিলে ভাত খাওয়ার সুযোগ (ভদ্রলোকেরা "ডিনার" বলে বোধহয়) পেয়েছিলাম।
জিজ্ঞেস করলাম "প্রথম আলো" নামের আমার একসময়ের পছন্দের দৈনিকটির সামরিক সরকার পোষণের কারণ নিয়ে। আমার প্রশ্নটা খুব মানানসই বোধহয় হয়নি আয়োজন আর সময়ের সাথে। (আমি ইদানিং এরকম হয়ে যাচ্ছি, খুব কড়া প্রশ্ন করি সব মানুষকে)
তবে তিনি বিব্রত হন নি। মতিউর-আনাম চাইছেন, পরিবর্তন আসুক, তাই তারা সামরিক সরকারের সমর্থনের স্ট্যান্স থেকে সরে আসছেন না। তবে আনিসুল হক তাদের সাথে একমত নন। আর মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আকবর আলী খানের রেফারেন্স দিয়ে দৃষ্টিপাতের বাংলা ব্লগে (সম্ভবত প্রথম আলো তেও প্রকাশিত) যেমনটা লিখেছেন তেমনটাই শোনা গেলো সরাসরি তার মুখে। বললেন, "অর্থনৈতিক সমস্যার কোনো পুলিশি সমাধান নেই"।
আমি ভাতের বদলে আলু খেতে চাই না
আমি ভাত খেতে চাই।
তাই আমি আশায় থাকি কবে বোরো ফলবে।
এএফপি খবর দিচ্ছে, বোরোর বাম্পার ফলন হচ্ছে এবার। আর সেই ভয়ে চাল মজুত করে রেখেছিলেন যে ব্যবসায়ীরা, তারা বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন চাল।
রিপোর্টটিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে।
আমার বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করছে বোরোর বাম্পার ফলনের এই সংবাদ "চুলায় পানি সিদ্ধ করতে দিয়ে বাচ্চাকে ভাত হচ্ছে ভাত হচ্ছে বলে মা য়ের ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করা" র মতো কোন ব্যাপার নয়।
আমি আশায় বুক বেঁধে বসে আছি, এই রিপোর্টটি সত্য।
আমি ভাত খেতে চাই, আলু নয়।
এপ্রিল ২০, ২০০৮
মন্তব্য
আশায় আছি আমরা সবাই...
---------------------------------
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!
সেটাই।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
"আমি ভাতের বদলে আলু খেতে চাই না"
আমরা সবাই তাই চাই..।সেই দিনের অপেক্ষায়...।
-নিরিবিলি
আনিসুল হক যদি মতি-মাহফুজের সাথে একমত না হন তবে প্র-আলোর চেয়ারে বসে আছেন কেনো? অংপুরের এই ছাওয়াল মংগা নিয়ে গদ্যকার্টুন লিখে বাহবা নিতেই কি বেশি আরামবোধ করেন?
যাক, ক্ষোভটা সৌরভের প্রতি নয়। সেলিব্রেটি কথার জাদুকরদের কারিশমা আজকাল চমক লাগায় না আর। একটা খবরের লিংক রেখে যাই।
সবাই ভালো থাকুন, পেটে-ভাতে।
থাইল্যান্ডের খবরটা দেখলাম।
কারও সর্বনাশ, কারও পৌষ মাস।
এএইচ কেনো ছাড়ছেন না - প্রশ্নের উত্তর তো আপনিই দিয়ে রেখেছেন। পেটে-ভাতে কে মরতে চায় শুনি।
নতুন ধানের গন্ধ পেয়ে মনটা ভালো হয়ে যাচ্ছে।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
মন ভাল হইতেছে এইটা ভালো খবর। কিন্তু খালি ধানের গন্ধ কি সৌরভ ভাই? আর কোন কারণ নাই তো? শালী বিষয়ক কিছু... ?
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
এমনিতেই ডয়েচেল্যান্ড, শ্যামদেশ থাইকা ভাগাভাগি চায়।
তাতেই সমস্যায় আছি।
পিচ্চি তারেকও এই লাইনে আসলে তো বনবাসে চইলা যাইতে হইবো।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
সরকারের সময়োপযোগী কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে নাকি চালের দাম বাড়লেও নিম্নবিত্তদের কোন সমস্যা হয়নি। ওএমএস এর চাল কম দামে কিনছে তারা। কোন এক বিজ্ঞ উপদেষ্টা বলছেন এইটা। তেঁনার নাম আমার মনে নাই।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
বিজ্ঞ বলে কথা!
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
দারুণ বলেছেন সৌরভ ভাই।
প্রথম আলো এককালে আমারও প্রিয় পত্রিকা ছিল।
আর এখন দেখলে গা জ্বলে!
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
এখন পড়ার মতোন পত্রিকা পাই না।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
প্রথম আলোর সেনা-বান্ধব চরিত্র নিয়ে এরই মধ্যে সাংবাদিক মহলে এ রকম একটি কথা চালু হয়েছে:
কারওয়ান বাজারে দুধরণের আলু পাওয়া যায়; একটি গোল আলু, আরেকটি প্রথম আলু!
---
'হালকা হতাশাবাদীর' লেখাটি ভালো লাগলো@ সৌরভ।
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আপনাকে বিপ্লব।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
আলুকে যেভাবে প্রমোট করা হচ্ছে তাতে মনে হয় চালের বদলে আলু মজুত করা শুরু হয়ে যাবে। আলু ব্যবসায়ীদের গান হিসেবে অনেককাল আগে আমার এক বন্ধু একটা প্যারডি গাইতো:
আলু আমার আলু ওগো আলু গুদাম ভরা
বেশি দামে ছাড়বো আলু বাজার হলে চড়া!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
তখন আমরা আলুর স্বপ্ন দেখবো।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
নতুন মন্তব্য করুন